আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৩৩- জিহাদের বিধানাবলী ও নবীজীর যুদ্ধাভিযানসমূহ

হাদীস নং: ৪৫১৭
আন্তর্জাতিক নং: ১৮০২-১
৪৪. খন্দকের যুদ্ধ
৪৫১৭। কুতায়বা ইবনে সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনে আব্বাদ (রাহঃ) ......... সালামা ইবনে আকওয়া (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে খায়বর অভিযানে বের হলাম। আমরা রাতের বেলা সফর করলাম। তখন এক ব্যক্তি (আমার ভাই) আমির ইবনে আকওয়া (রাযিঃ) কে বললোঃ ওহে! তুমি কি তোমার রণ সঙ্গীত থেকে আমাদেরকে কিছু কবিতা শুনাবে না? আমির (রাযিঃ) ছিলেন একজন কবি। তখন তিনি সওয়ারী থেকে অবতরণ করে সকলকে শুনিয়ে জানিয়ে তার হুদী সঙ্গীত শোনাতে লাগলেন। তাতে তিনি বললেনঃ

“ইয়া আল্লাহ! আপনি না হলে আমরা হিদায়াত পেতাম না, আমরা সাদ্‌কা ও নামায আদায় করতাম না। আপনার জন্য আমাদের জান কোরবান, আমাদের পিছনের সকল অপরাধ আপনি মাফ করে দিন শক্রর সম্মুখীন হলে আমাদের পা অটল রাখুন। আমাদের উপর প্রশান্তি বর্ষণ করুন। যখন আমাদের (জিহাদের জন্য) ডাকা হয় আমরা উপস্থিত হই এবং তারা চিৎকার করে আমাদের বিরুদ্ধে লোক জমা করে।

তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এ চালকটি কে? সাহাবীগণ বললেন, আমির। তিনি বললেন, আল্লাহ তার প্রতি রহমত করুন। তখন দলের একব্যক্তি বলল, তার জন্যে তো শাহাদত অবধারিত হয়ে গেছে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের যদি তাঁর দ্বারা আরো উপকৃত করতেন। রাবী বলেন, তারপর আমরা খায়বরে আসলাম এবং তাদের অবরোধ করলাম। (অবরোধ দীর্ঘ হল) এমন কি আমাদের দারুন খাদ্যাভাব দেখা দিল।

তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করেছেন। তারপর বিজয়ের দিন যখন লোকদের সন্ধ্যা হলো তখন তারা বহু স্থানে আগুন জ্বালালো। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেঃ এ আগুন কিসের? কিসের উপর (কি রান্না করার জন্যে) লোকজন এ আগুন জ্বালিয়েছে? তারা বললেন, গোশতের উপরে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ কিসের গোশত? তারা বললেন, গৃহপালিত গাধার গোশত। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এগুলো ফেলে দাও আর রান্নার পাত্রগুলো ভেঙ্গে ফেল। এক ব্যক্তি বলল, তারা কি এগুলো ফেলে দেবে এবং রান্নার পাত্রগুলো ধুয়ে ফেলবে? তিনি বললেনঃ তা হতে পারে।

রাবী বলেন, এরপর যখন লোকজন (যুদ্ধের জন্য) সারিবদ্ধ হল, আমির (রাযিঃ) এর তরবারীখানা ছিল খাটো। তিনি জনৈক ইয়াহুদীর পায়ের নলা লক্ষ্য করে যেই আঘাত করলেন, অমনি তরবারির ধারাল দিক তার নিজ হাটুতে এসে লাগলো। এতে আমির (রাযিঃ) শহীদ হলেন। রাবী বলেন, তারপর যখন লোকজন (খায়বর থেকে) ফিরে এলো, তখন সালামা আমার হাত ধরে বললেন, (রাবী বললেনঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন আমাকে (সালামাকে) নির্বাক অবস্থায় দেখতে পেলেন, তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম, “আমার পিতামাতা আপনার জন্যে কুরবান হোক! লোকজনের ধারণা আমের (আত্মহত্যা) করে তাঁর (সারা জীবনের) আমল বরবাদ করে দিয়েছেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তা কে বলেছে? আমি বললাম, অমুক অমুক এবং উসায়দ ইবনে হুযায়র আনসারী।

তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ যে এরূপ বলেছে, সে যথার্থ বলেনি। অবশ্যই তার (আমেরের) জন্যে দুটি পুরস্কার রয়েছে। তখন তিনি তার দুটি আঙ্গুল একত্রিত করলেন (এবং বললেনঃ), সে (আল্লাহর রাস্তায়) সত্যিকার সাধক মুজাহিদ। খুব কম আরবই তাঁর মতো চলেছে (বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেছে)।

কুতায়বা এ হাদীস বর্ণনায় মুহাম্মাদের সাথে দুটি শব্দে দ্বিমত করেছেন। ইবনে আব্বাদ (রাহঃ) এর রেওয়ায়েতে والقين سَكِينَة عَلَيْنَا স্থলে وَأَلْقِ سَكِينَةً عَلَيْنَا উল্লেখ রয়েছে।
باب غَزْوَةِ الأَحْزَابِ وَهِيَ الْخَنْدَقُ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ عَبَّادٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، - وَهُوَ ابْنُ إِسْمَاعِيلَ - عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ، مَوْلَى سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَيْبَرَ فَتَسَيَّرْنَا لَيْلاً فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لِعَامِرِ بْنِ الأَكْوَعِ أَلاَ تُسْمِعُنَا مِنْ هُنَيْهَاتِكَ وَكَانَ عَامِرٌ رَجُلاً شَاعِرًا فَنَزَلَ يَحْدُو بِالْقَوْمِ يَقُولُ اللَّهُمَّ لَوْلاَ أَنْتَ مَا اهْتَدَيْنَا وَلاَ تَصَدَّقْنَا وَلاَ صَلَّيْنَا فَاغْفِرْ فِدَاءً لَكَ مَا اقْتَفَيْنَا وَثَبِّتِ الأَقْدَامَ إِنْ لاَقَيْنَا وَأَلْقِيَنْ سَكِينَةً عَلَيْنَا إِنَّا إِذَا صِيحَ بِنَا أَتَيْنَا وَبِالصِّيَاحِ عَوَّلُوا عَلَيْنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ هَذَا السَّائِقُ " . قَالُوا عَامِرٌ . قَالَ " يَرْحَمُهُ اللَّهُ " . فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ وَجَبَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْلاَ أَمْتَعْتَنَا بِهِ . قَالَ فَأَتَيْنَا خَيْبَرَ فَحَصَرْنَاهُمْ حَتَّى أَصَابَتْنَا مَخْمَصَةٌ شَدِيدَةٌ ثُمَّ قَالَ " إِنَّ اللَّهَ فَتَحَهَا عَلَيْكُمْ " . قَالَ فَلَمَّا أَمْسَى النَّاسُ مَسَاءَ الْيَوْمِ الَّذِي فُتِحَتْ عَلَيْهِمْ أَوْقَدُوا نِيرَانًا كَثِيرَةً فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا هَذِهِ النِّيرَانُ عَلَى أَىِّ شَىْءٍ تُوقِدُونَ " . فَقَالُوا عَلَى لَحْمٍ . قَالَ " أَىُّ لَحْمٍ " . قَالُوا لَحْمُ حُمُرِ الإِنْسِيَّةِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَهْرِيقُوهَا وَاكْسِرُوهَا " . فَقَالَ رَجُلٌ أَوْ يُهَرِيقُوهَا وَيَغْسِلُوهَا فَقَالَ " أَوْ ذَاكَ " . قَالَ فَلَمَّا تَصَافَّ الْقَوْمُ كَانَ سَيْفُ عَامِرٍ فِيهِ قِصَرٌ فَتَنَاوَلَ بِهِ سَاقَ يَهُودِيٍّ لِيَضْرِبَهُ وَيَرْجِعُ ذُبَابُ سَيْفِهِ فَأَصَابَ رُكْبَةَ عَامِرٍ فَمَاتَ مِنْهُ قَالَ فَلَمَّا قَفَلُوا قَالَ سَلَمَةُ وَهُوَ آخِذٌ بِيَدِي قَالَ فَلَمَّا رَآنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَاكِتًا قَالَ " مَا لَكَ " . قُلْتُ لَهُ فِدَاكَ أَبِي وَأُمِّي زَعَمُوا أَنَّ عَامِرًا حَبِطَ عَمَلُهُ قَالَ " مَنْ قَالَهُ " . قُلْتُ فُلاَنٌ وَفُلاَنٌ وَأُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ الأَنْصَارِيُّ فَقَالَ " كَذَبَ مَنْ قَالَهُ إِنَّ لَهُ لأَجْرَيْنِ " . وَجَمَعَ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ " إِنَّهُ لَجَاهِدٌ مُجَاهِدٌ قَلَّ عَرَبِيٌّ مَشَى بِهَا مِثْلَهُ " . وَخَالَفَ قُتَيْبَةُ مُحَمَّدًا فِي الْحَدِيثِ فِي حَرْفَيْنِ وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ عَبَّادٍ وَأَلْقِ سَكِينَةً عَلَيْنَا .
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)