আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৩০- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
হাদীস নং: ৪২৯১
আন্তর্জাতিক নং: ১৭০০-১
৫. যে ব্যক্তি নিজে ব্যভিচার স্বীকার করে
৪২৯১। ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া ও আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা (রাহঃ) ......... বারা ইবনে আযিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী (ﷺ) এর সম্মুখ একজন ইয়াহুদীকে কালি মাখা এবং বেত্রাঘাতকৃত (লাঞ্ছিত) অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন তিনি বলেন, তোমরা কি তোমাদের কিতাবে ব্যভিচারের শাস্তি এরূপই পেয়েছে? তারা বলল, হ্যাঁ। এরপর তাদের মধ্য হতে একজন আলিম ব্যক্তিকে ডাকালেন এবং বললেন, তোমাকে সেই আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, যিনি মুসা (আলাইহিস সালাম) এর প্রতি তাওরাত কিতাব অবতীর্ণ করেছিলেন, তোমরা কি তোমাদের কিতাবে ব্যভিচারীর এরূপই পেয়েছ? তখন ইয়াহুদী আলিম ব্যক্তি বললেন, না। তিনি আরো বললেন, আপনি যদি আমাকে আল্লাহর কসম দিয়ে, এভাবে না বলতেন তবে আমি আপনাকে জানাতাম না। আমরা তা (প্রকৃত শাস্তি) রজম (পাথর নিক্ষেপ করা)-ই পেয়ে থাকি।
কিন্তু আমাদের সমাজের সম্মানীত ব্যক্তিদের মাঝে এর ব্যাপকতা দেখা দিলে আমরা যখন এতে কোন সম্ভ্রান্ত লোককে ধরে ফেললে, তখন তাকে ছেড়ে দিতাম এবং যখন কোন দুর্বল ব্যক্তিকে পাকড়াও করলে তখন তার উপর ’হদ্দ’ [শরীয়তের প্রকৃত শাস্তি] বাস্তবায়িত করতাম। পরিশেষে আমরা বললাম, তোমরা সকলেই এসো, আমরা সম্মিলিতভাবে এ ব্যাপারে একটি শাস্তি নির্ধারিত করে নেই, যা অভিজাত ও দুর্বল সকলের উপরই প্রযোজ্য হবে। সুতরাং আমরা ব্যভিচারের শাস্তি পাথর নিক্ষেপের পরিবর্তে কালি লাগানো এবং বেত্রাঘাত করাকেই স্থির করে নিলাম।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে আল্লাহ! আমিই প্রথম ব্যক্তি, যে আপনার আদেশ رجم বাস্তবায়িত করলাম যা তারা বিলুপ্ত করে ফেলেছিল। সুতরাং তিনি তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিলেন। অবশেষে ঐ ইয়াহুদীকে পাথর মারা হল। এরপর মহান আল্লাহ এই আয়াত يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ لاَ يَحْزُنْكَ الَّذِينَ يُسَارِعُونَ فِي الْكُفْرِ إِلَى قَوْلِهِ إِنْ أُوتِيتُمْ هَذَا فَخُذُوهُ ″হে রাসুল! যারা কাজে দ্রুতগামী তাদের কার্যকলাপ যেন আপনাকে চিন্তিত না করে ...... যদি তোমরা তা প্রদত্ত হও, তবে তা ধারণ কর″ পর্যন্ত অবতীর্ণ করেন।
তারা (ইয়াহুদীরা) বলতো যে, তোমরা মুহাম্মাদ (ﷺ) এর নিকট গমন করো, যদি তিনি তোমাদেরকে এ ব্যাপারে কালি লাগালো এবং বেত্রাঘাতের নির্দেশ প্রদান করেন, তবে তোমরা তা কার্যকর করবে; আর যদি তিনি রজমের নির্দেশ দেন তবে তা প্রত্যাখ্যান করবে। আল্লাহ তাআলা (এই মর্মে) আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
‘যারা আল্লাহর নাযিলকৃত আয়াত মুতাবিক বিচারকার্য পরিচালনা করে না তারাই হলো কাফির সম্প্রদায়। আর যারা আল্লাহর নাযিলকৃত আয়াত অনুসারে বিচার করে না তারাই হলো অত্যচারী দল। আর যারা আল্লাহর নাযিলকৃত আয়াত অনুযায়ী বিচার করে না তারাই হলো সীমালংঘনকারী দল।
এই সবগুলো আয়াত কাফিরদের সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়।
কিন্তু আমাদের সমাজের সম্মানীত ব্যক্তিদের মাঝে এর ব্যাপকতা দেখা দিলে আমরা যখন এতে কোন সম্ভ্রান্ত লোককে ধরে ফেললে, তখন তাকে ছেড়ে দিতাম এবং যখন কোন দুর্বল ব্যক্তিকে পাকড়াও করলে তখন তার উপর ’হদ্দ’ [শরীয়তের প্রকৃত শাস্তি] বাস্তবায়িত করতাম। পরিশেষে আমরা বললাম, তোমরা সকলেই এসো, আমরা সম্মিলিতভাবে এ ব্যাপারে একটি শাস্তি নির্ধারিত করে নেই, যা অভিজাত ও দুর্বল সকলের উপরই প্রযোজ্য হবে। সুতরাং আমরা ব্যভিচারের শাস্তি পাথর নিক্ষেপের পরিবর্তে কালি লাগানো এবং বেত্রাঘাত করাকেই স্থির করে নিলাম।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে আল্লাহ! আমিই প্রথম ব্যক্তি, যে আপনার আদেশ رجم বাস্তবায়িত করলাম যা তারা বিলুপ্ত করে ফেলেছিল। সুতরাং তিনি তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিলেন। অবশেষে ঐ ইয়াহুদীকে পাথর মারা হল। এরপর মহান আল্লাহ এই আয়াত يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ لاَ يَحْزُنْكَ الَّذِينَ يُسَارِعُونَ فِي الْكُفْرِ إِلَى قَوْلِهِ إِنْ أُوتِيتُمْ هَذَا فَخُذُوهُ ″হে রাসুল! যারা কাজে দ্রুতগামী তাদের কার্যকলাপ যেন আপনাকে চিন্তিত না করে ...... যদি তোমরা তা প্রদত্ত হও, তবে তা ধারণ কর″ পর্যন্ত অবতীর্ণ করেন।
তারা (ইয়াহুদীরা) বলতো যে, তোমরা মুহাম্মাদ (ﷺ) এর নিকট গমন করো, যদি তিনি তোমাদেরকে এ ব্যাপারে কালি লাগালো এবং বেত্রাঘাতের নির্দেশ প্রদান করেন, তবে তোমরা তা কার্যকর করবে; আর যদি তিনি রজমের নির্দেশ দেন তবে তা প্রত্যাখ্যান করবে। আল্লাহ তাআলা (এই মর্মে) আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
‘যারা আল্লাহর নাযিলকৃত আয়াত মুতাবিক বিচারকার্য পরিচালনা করে না তারাই হলো কাফির সম্প্রদায়। আর যারা আল্লাহর নাযিলকৃত আয়াত অনুসারে বিচার করে না তারাই হলো অত্যচারী দল। আর যারা আল্লাহর নাযিলকৃত আয়াত অনুযায়ী বিচার করে না তারাই হলো সীমালংঘনকারী দল।
এই সবগুলো আয়াত কাফিরদের সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়।
باب مَنِ اعْتَرَفَ عَلَى نَفْسِهِ بِالزِّنَا
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ كِلاَهُمَا عَنْ أَبِي مُعَاوِيَةَ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ مُرَّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِيَهُودِيٍّ مُحَمَّمًا مَجْلُودًا فَدَعَاهُمْ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " هَكَذَا تَجِدُونَ حَدَّ الزَّانِي فِي كِتَابِكُمْ " . قَالُوا نَعَمْ . فَدَعَا رَجُلاً مِنْ عُلَمَائِهِمْ فَقَالَ " أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ الَّذِي أَنْزَلَ التَّوْرَاةَ عَلَى مُوسَى أَهَكَذَا تَجِدُونَ حَدَّ الزَّانِي فِي كِتَابِكُمْ " . قَالَ لاَ وَلَوْلاَ أَنَّكَ نَشَدْتَنِي بِهَذَا لَمْ أُخْبِرْكَ نَجِدُهُ الرَّجْمَ وَلَكِنَّهُ كَثُرَ فِي أَشْرَافِنَا فَكُنَّا إِذَا أَخَذْنَا الشَّرِيفَ تَرَكْنَاهُ وَإِذَا أَخَذْنَا الضَّعِيفَ أَقَمْنَا عَلَيْهِ الْحَدَّ قُلْنَا تَعَالَوْا فَلْنَجْتَمِعْ عَلَى شَىْءٍ نُقِيمُهُ عَلَى الشَّرِيفِ وَالْوَضِيعِ فَجَعَلْنَا التَّحْمِيمَ وَالْجَلْدَ مَكَانَ الرَّجْمِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اللَّهُمَّ إِنِّي أَوَّلُ مَنْ أَحْيَا أَمْرَكَ إِذْ أَمَاتُوهُ " . فَأَمَرَ بِهِ فَرُجِمَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ( يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ لاَ يَحْزُنْكَ الَّذِينَ يُسَارِعُونَ فِي الْكُفْرِ) إِلَى قَوْلِهِ ( إِنْ أُوتِيتُمْ هَذَا فَخُذُوهُ) يَقُولُ ائْتُوا مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَإِنْ أَمَرَكُمْ بِالتَّحْمِيمِ وَالْجَلْدِ فَخُذُوهُ وَإِنْ أَفْتَاكُمْ بِالرَّجْمِ فَاحْذَرُوا . فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى ( وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ) ( وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ) ( وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ) فِي الْكُفَّارِ كُلُّهَا .
