আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

২০- লি'আনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৬০৮
আন্তর্জাতিক নং: ১৪৯৩-১
শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৬০৮। মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে নুমাইর ও আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা (রাহঃ) ......... সাঈদ ইবনে জুবাইর (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুসআবের স্ত্রীর ব্যাপারে আমাকে দুই লিআনকারীর মাসআলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, তাদের বিচ্ছিন্ন করা হবে কি না। তিনি বলেন, তখন আমি কী বলব তা আমার ভাষা ছিল না এরপর আমি মক্কায় ইবনে উমর (রাযিঃ) এর বাসভবনে গেলাম। আমি তার গোলামকে বললাম, আমার জন্য অনুমতি নিয়ে এসো। সে বলল, তিনি এখন বিশ্রাম নিচ্ছেন। কিন্তু তিনি আমার কণ্ঠস্বর শুনতে পেলেন। তিনি বললেন, ইবনে জুবাইর? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, ভিতরে এসো। আল্লাহর কসম! এই সময় তোমার বিশেষ প্রয়োজনই নিয়ে এসেছে।

আমি ভিতরে গিয়ে দেখতে পেলাম তিনি একটি কম্বল বিছিয়ে একটি বালিশের উপর হেলান দিয়ে আছেন। বালিশটি খেজুর ছোবড়ায় ভর্তি ছিলো। আমি বললাম, হে আবু আব্দুর রহমান! দু’জন লি আনকারী এদের কি পৃথক করা হবে? তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! হ্যাঁ। সর্বপ্রথম এই বিষয়ে অমুকের পুত্র অমুক জিজ্ঞাসা করেছিল। সে বলেছিল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কী বলেন, যদি আমাদের মধ্যে কেউ তার স্ত্রীকে অশ্লীল কাজে লিপ্ত দেখতে পায় তাহলে সে কী করবে? যদি সে বলাবলি করে তাহলে তো গুরুতর আকার ধারণ করবে। যদি সে নীরব থাকে, তাহলে এমন সাংঘাতিক বিষয়ে কি করে নীরব থাকবে?

তিনি বলেন, তখন নবী (ﷺ) চুপ রইলেন; কোন উত্তর দিলেন না। সে ব্যক্তি আবার তার কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! যে বিষয়টি সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমার নিজের উপরই তা ঘটেছে। তখন আল্লাহ সূরা নূরের এই আয়াত গুলো নাযিল করেনঃ ″আর যারা তাদের স্ত্রীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথচ তারা নিজেরা ব্যতীত তাদের কোন সাক্ষী নেই, তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্যের ধরন হরে এই যে, সে চারবার আল্লাহর নামে কসম করে বলবে, সে অবশ্যি সত্যবাদী এবং পঞ্চমবার বলবে, সে মিথ্যাবাদী হলে তার উপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হবে। আর স্ত্রীর শাস্তি রহিত করা হবে যদি সে চারবার আল্লাহর নামে কসম করে সাক্ষ্য দেয় যে, তার স্বামীই মিথ্যাবাদী এবং পঞ্চমবারে বলবে, তার স্বামী সত্যবাদী হলে তার নিজের উপর নেমে আসবে আল্লাহর গযব″ (সূরা নূরঃ ৬-৯)।

তিনি তাকে এই আয়াতগুলো তিলাওয়াত করে শোনালেন। এরপর তাকে নসীহত করলেন এবং স্মরণ করিয়ে দিলেন যে, দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তির তুলনায় সহজতর। সে বলল, না। সেই মহান সত্তার কসম যিনি আপনাকে নবী হিসেবে সত্যসহ পাঠিয়েছেন, আমি তার (আমার স্ত্রীর) উপর কোন মিথ্যা আরোপ করি নি। এরপর তিনি মহিলাকে ডেকে পাঠালেন এবং এবং তাকে নসীহাত করলেন, তাকে পরকালের ভয় দেখালেন, সর্বোপরি তাকে জানিয়ে দিলেন যে, দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তির তুলনায় সহজতর। সে বলল, না সেই মহান সত্তার কসম যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, নিশ্চয়ই সে মিথ্যাবাদী।

এরপর তিনি পুরুষ লোকটির দ্বারা লিআন বাক্য পাঠ করাতে শুরু করলেন। তখন সে চারবার আল্লাহর নামে কসম করে সাক্ষ্য দিল যে, সে তার কথায় সত্যবাদী। পঞ্চমবারে সে বলল, যদি সে মিথ্যবাদী হয় তা হলে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ নেমে আসুক। এরপর তিনি (নবী (ﷺ) স্ত্রীলোকটিকে ডেকে পাঠালেন। সেও আল্লাহর নামে কসম করে চারবার সাক্ষ্য দিল যে, সে মিথ্যাবাদী। পঞ্চমবারে সে বলল, যদি সে (তার স্বামী) সত্যবাদী হয় তাহলে তার (মহিলার) উপর আল্লাহর গযব পতিত হোক। তখন নবী (ﷺ) তাদের উভয়কে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ، جُبَيْرٍ قَالَ سُئِلْتُ عَنِ الْمُتَلاَعِنَيْنِ، فِي إِمْرَةِ مُصْعَبٍ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا قَالَ فَمَا دَرَيْتُ مَا أَقُولُ فَمَضَيْتُ إِلَى مَنْزِلِ ابْنِ عُمَرَ بِمَكَّةَ فَقُلْتُ لِلْغُلاَمِ اسْتَأْذِنْ لِي . قَالَ إِنَّهُ قَائِلٌ فَسَمِعَ صَوْتِي . قَالَ ابْنُ جُبَيْرٍ قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ ادْخُلْ فَوَاللَّهِ مَا جَاءَ بِكَ هَذِهِ السَّاعَةَ إِلاَّ حَاجَةٌ فَدَخَلْتُ فَإِذَا هُوَ مُفْتَرِشٌ بَرْذَعَةً مُتَوَسِّدٌ وِسَادَةً حَشْوُهَا لِيفٌ قُلْتُ أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُتَلاَعِنَانِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا قَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ نَعَمْ إِنَّ أَوَّلَ مَنْ سَأَلَ عَنْ ذَلِكَ فُلاَنُ بْنُ فُلاَنٍ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ أَنْ لَوْ وَجَدَ أَحَدُنَا امْرَأَتَهُ عَلَى فَاحِشَةٍ كَيْفَ يَصْنَعُ إِنْ تَكَلَّمَ تَكَلَّمَ بِأَمْرٍ عَظِيمٍ . وَإِنْ سَكَتَ سَكَتَ عَلَى مِثْلِ ذَلِكَ قَالَ فَسَكَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يُجِبْهُ فَلَمَّا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَتَاهُ فَقَالَ إِنَّ الَّذِي سَأَلْتُكَ عَنْهُ قَدِ ابْتُلِيتُ بِهِ . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَؤُلاَءِ الآيَاتِ فِي سُورَةِ النُّورِ ( وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ) فَتَلاَهُنَّ عَلَيْهِ وَوَعَظَهُ وَذَكَّرَهُ وَأَخْبَرَهُ أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ قَالَ لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا كَذَبْتُ عَلَيْهَا . ثُمَّ دَعَاهَا فَوَعَظَهَا وَذَكَّرَهَا وَأَخْبَرَهَا أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ . قَالَتْ لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ إِنَّهُ لَكَاذِبٌ فَبَدَأَ بِالرَّجُلِ فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ ثُمَّ ثَنَّى بِالْمَرْأَةِ فَشَهِدَتْ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ وَالْخَامِسَةُ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ ثُمَّ فَرَّقَ بَيْنَهُمَا.
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)