শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام
১২. জিহাদের বিধানাবলী সম্পর্কিত - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২০ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:৫৪৫৪
আন্তর্জাতিক নং: ৫৪৫৫
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৫৪-৫৫। বিশ্লেষণ
ইমাম আবু জাফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কা বিজয়ের পূর্বে মক্কাবাসীদের সঙ্গে সন্ধি করেছেন, অতঃপর তা জয় করেছেন। একদল আলিম বলেছেন যে, মক্কাবাসীগণ বিশ্বাসঘাতকতা এবং সন্ধি ভঙ্গ করার পর তিনি তা জয় করেছেন। এটা দারুল হারব (শত্রু এলাকা) ছিলাে, তার মাঝে এবং মক্কা বাসীদের মাঝে না সন্ধি ছিলাে না কোন চুক্তি না কোন অঙ্গীকার। এই অভিমত যারা পােষণ করেছেন তাদের মধ্যে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আওযাঈ (রাহঃ), ইমাম মালিক ইবনে আনাস (রাহঃ), ইমাম সুফইয়ান ইবনে সাঈদ ছাওরী (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান (রাহঃ) অন্যতম। পক্ষান্তরে অপর একদল আলিম বলেন, তিনি তা সন্ধি সূত্রে জয় করেছেন। অতঃপর এই দল আলিমদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ মতের সপক্ষে হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করতে প্রয়াস পেয়েছেন, যা আমরা এই গ্রন্থে অতিসত্বর বর্ণনা করব। অধিকন্তু প্রত্যেকের দলীলের বিশুদ্ধতা কিংবা অসারতা বর্ণনা করব ইনশাআল্লাহু তা'আলা।
বস্তুত যারা এই মত গ্রহণ করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ওটা (মক্কা)-কে সন্ধি সূত্রে জয় করেছেন তাদের প্রমাণ হলাে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং মক্কাবাসীদের মাঝে সন্ধি হয়ে গিয়েছিলাে এবং প্রত্যেক দল অপর দল থেকে নিরাপদ হয়ে গিয়েছিলাে। অতঃপর এ ব্যাপারে মক্কাবাসীদের থেকে এরূপ কিছু সংঘটিত হয় নাই, যা চুক্তিভঙ্গকে অপরিহার্য করে তুলে। তবে বানূ নাফাসা যারা কিনা মক্কাবাসীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলােনা, তারা খােযা'আ গােত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং এ ব্যাপারে কুরায়শের কিছু লােক তাদের সাহায্য করে। পক্ষান্তরে অবশিষ্ট মক্কাবাসীরা তাদের চুক্তির উপর বহাল থাকে এবং তারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সঙ্গে যে অঙ্গীকার করেছিলাে তা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে রেখেছিলাে। সুতরাং বানূ নাফাসা এবং তাদের অনুসরণকারীরা উক্ত চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়, যখন কিনা অবশিষ্ট মক্কাবাসী এই চুক্তির উপর বহাল থাকে যা তারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সঙ্গে করেছিলাে।
এরা বলেন, এর দলীল হলাে যে, যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মক্কা মুকাররমা জয় করেছেন তখন তিনি তাতে মালে ফায় বণ্টন করেন নাই এবং না কাউকে গােলাম বানিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে তাদের বিরােধীদের দলীল হলাে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ)-এর আযাদকৃত গােলাম ইকরামা (রাহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনে মুসলিম ইবনে উবায়দুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে শিহাব যুহরী (রাহঃ) যাদের দু'জনের উপর যুদ্ধ বিষয়ক অধিকাংশ হাদীসসমূহের ভিত্তি। তাদের থেকে এরূপ রিওয়ায়াত বর্ণিত যাতে প্রতীয়মান হয় যে, মক্কাবাসীরা নিজেদের কৃতকর্মের কারণে ঐ সন্ধি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাে, যা তারা রাসূলুল্লাহ -এর (ﷺ) সঙ্গে সম্পাদন করেছিলাে।
ইবরাহীম ইবনে মারযুক (রাহঃ) ..... ইকরামা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কাবাসীদের সঙ্গে সন্ধি করলেন এমন অবস্থায় যে, খােযা'আ গোত্র জাহিলী যুগে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর মিত্র ছিলাে। পক্ষান্তরে বানু বকর কুরায়শের মিত্র ছিলাে, অনন্তর খােযা'আ গােত্র রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সন্ধিতে এবং বানূ বকর কুরায়শের সন্ধিতে শামিল হয়ে যায়। অতঃপর খােযাআ গােত্র এবং বানূ বকরের মাঝে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। কুরায়শরা অস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী দ্বারা তাদের সাহায্য করে এবং তাদের উপর ছায়া বিস্তার করে রেখেছিলাে। অনন্তর বানূ বকর খােযা'আ গােত্রের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করে। তারা তাদেরকে হত্যা করে। কুরায়শরা চুক্তি ভঙ্গকারী কাওমের সঙ্গ দেয়ার কারণে শংকিত হয়ে পড়ল। তারা আবু সুফইয়ান (তাদের নেতা) কে বলল, মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট গিয়ে চুক্তির নবায়ন করুন এবং লোকদের মাঝে সন্ধি স্থাপন করুন এবং বলুন যে, যদি কিছু লােকে তাদের অস্ত্র-শস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী দ্বারা সাহায্য করে থাকে এবং তাদেরকে ছত্রচ্ছায়া দিয়ে থাকে তাে এটা তাদের চুক্তি ভঙ্গ করা নয়। অনন্তর আবু সুফইয়ান (সেখান থেকে) চললেন এবং ছফর করে মদীনা পৌঁছান। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আবু সুফইয়ান তােমাদের নিকট এসেছে। কিন্তু সে উদ্দেশ্য হাছিল করা ছাড়াই সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে যাবে। সে আবু বকর (রাযিঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আবু বকর! চুক্তির নবায়ন করুন, লােকদের মাঝে অথবা (বলেছে) আপন কাওমের মাঝে সন্ধি করিয়ে দিন। রাবী বলেন, আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, সংশ্লিষ্ট বিষয় আল্লাহ্ তা'আলা এবং তাঁর রাসূলের (ﷺ) হাতে (নিয়ন্ত্রণে) রয়েছে। সে এরই মধ্যে এটাও বললাে যে, যদি কিছু লােকে তাদের উপর ছায়া বিস্তার করে থাকে এবং অস্ত্র ও খাদ্য দ্বারা তাদের সাহায্য করে থাকে, তাে এর দ্বারা তারা চুক্তি ভঙ্গ করে নাই। রাবী বলেন, আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, বিষয়টি আল্লাহ্ তা'আলা ও তাঁর রাসূলের (ﷺ) হাতে (নিয়ন্ত্রণে) রয়েছে। বলেন, অতঃপর সে উমার ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাকেও সেই কথাই বলল, যা আবু বকর (রাযিঃ) কে বলেছিলাে। উমার (রাযিঃ) বললেন, তােমরা চুক্তি ভঙ্গ করেছ, যে অঙ্গীকার নতুন ছিলাে আল্লাহ্ তা'আলা সেটাকে পুরাতন করে দিয়েছেন এবং যেটা এর চেয়ে কঠোর ছিলাে অথবা বলেছেন সুদৃঢ় ছিলাে আল্লাহ তা'আলা তা ভেঙ্গে দিয়েছেন। আবু সুফইয়ান বলল, আজকের মত কোন কঠোর দিন আমি দেখিনি। অতঃপর সে ফাতিমা (রাযিঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে ফাতিমা! তুমি কি কোন বিষয়ে তােমার কাওমের নারীদের নেতৃত্ব প্রদান করবে। এরপর তাঁকে সে সেই কথাই বলল, যা আবু বকর (রাযিঃ)-কে বলেছিলাে। অনন্তর তাকে বলল, চুক্তির নবায়ন করিয়ে দিন এবং লােকদের মাঝে সন্ধি করিয়ে দিন। তিনি (রাযিঃ) বললেন, বিষয়টি শুধু আল্লাহ তা'আলা ও তাঁর রাসূলের (ﷺ) ইখতিয়ারাধীন। রাবী বলেন, এরপর সে আলী (রাযিঃ)-এর নিকট এল এবং তাকে সেই কথাই বলল, যা আবু বকর (রাযিঃ)-কে বলেছিলাে। আলী (রাযিঃ) বললেন, আমি আজকের ন্যায় (কোন দিন) অত্যন্ত মিশুক ব্যক্তি দেখিনি। তুমি মানুষের নেতা, তুমিই চুক্তি নবায়ন কর এবং মানুষের মাঝে সন্ধি করাও। আবু সুফইয়ান এক পা অপর পায়ের উপর মেরে বলল, আমি লােকদের একজনকে অপরজনের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছি। বলেন, অতঃপর সে বিদায় নিয়ে মক্কা চলে গেলাে। লােকেরা বলল, আল্লাহর কছম! তাে তুমি যুদ্ধের সংবাদ নিয়ে এসেছ যে এর থেকে রক্ষা পাওয়া যেত, না সন্ধির পয়গাম নিয়ে এসেছ যে এর দ্বারা নিরাপদ হওয়া যেত। ফিরে যাও, ফিরে যাও। বলেন, খােযা'আ গােত্রের প্রতিনিধি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর দরবারে উপস্থিত হল এবং সে তাকে কাওমের সংবাদ শুনাল। আর তাঁর কাছে সাহায্যের আবেদন জানাল এবং এ ব্যাপারে নিম্নোক্ত কবিতাগুলাে আবৃত্তি করলঃ
* হে আল্লাহ! আমি মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে আমাদের পিতা এবং তাঁর পিতামহের মাঝে স্থিরকৃত চুক্তি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।
* আমরা পিতা ছিলাম (বয়সে বড় ছিলাম) এবং আপনি ছিলেন সন্তান। অবশ্যই কুরায়শরা তােমার সঙ্গে চুক্তির বিরােধিতা করেছে।
* তারা তােমার সঙ্গে কৃত মজবুত ও সুদৃঢ় অঙ্গীকার ভেঙ্গে দিয়েছে। তারা 'কাদা'তে (মক্কার উঁচু ভূমি) আমার জন্য ঘাঁটি প্রস্তুত করে রেখেছে।
* এবং তারা ধারণা করেছে যে, আমি কাউকে ডাকব না! তারা নিতান্তই দুর্বল এবং স্বল্পসংখ্যক।
*তারা আমাদের উপর ‘ওয়াতীর’ জায়গা থেকে শেষ প্রহরে আক্রমণ করেছে। যখন আমরা ঐ জায়গায় রুকু-সিজদাতে কুরআন তিলাওয়াতে রত ছিলাম।
* আমরা সেখানে সন্ধি করেছি (শান্তি ও নিরাপত্তা থেকে), হাত গুটিয়ে নেই নি। হে আল্লাহ! আল্লাহ্ রাসূলকে (ﷺ) বলিষ্ঠ সাহায্য কর।
* এবং সাহায্যের জন্য খােদায়ী বাহিনী প্রেরণ কর। এরূপ সুবিশাল বাহিনী, যা সমুদ্রের ন্যায় বুদবুদ সৃষ্টি করে।
* তাদের মাঝে রয়েছেন আল্লাহর রাসূল কোষমুক্ত তরবারি নিয়ে। যদি অপমান ও অপদস্থতা নেমে আসে তবে যেন তা পৃথক থাকে তাঁর নূরানী (আলকোজ্জ্বল) চেহারা থেকে।
হাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, এ থেকে কিছু কবিতা আয়্যুব (রাহঃ) থেকে, কিন্তু ইয়াযীদ ইবনে হাযিম (রাহঃ) থেকে এবং এর অধিকাংশ (কবিতা) মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। অতঃপর তিনি (রাবী) ইকরামা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত আয়্যূব (রাহঃ)-এর হাদীসের দিকে ফিরে গেলেন এবং যা কিছু হাস্সান ইবন সাবিত (রাযিঃ) বলেছেন সেটা বর্ণনা করেছেনঃ
* আমার নিকট মক্কা মুকাররমার ময়দানে বানূ কা'ব -এর লােকেরা এসেছে, যাদের গর্দান সমূহ কর্তন করা হচ্ছিলাে, কিন্তু আমি উপস্থিত ছিলাম না।
* এবং ছফওয়ান নামক এরূপ এক কাঠ দ্বারা যা এর শিকড়ের দিক থেকে কর্তিত। সুতরাং এটা যুদ্ধের সময়, যা কিনা কঠিন সময় এসে গিয়েছে।
* হায় আফসােস! আমি জ্ঞাত হতাম যে, আমার সাহায্যে উদ্যামতা এবং বদলা নেয়ার অনুভূতি সুহায়ল ইবনে আমর পেত।
রাবী বলেন, অনন্তর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যাত্রা করার নির্দেশ দিলেন। সাহাবাগণ রওয়ানা হলেন এবং চললেন, এবং মাররুযযাহরান নামক স্থানে অবতরণ করেন। বলেন, আবু সুফইয়ান উপস্থিত হলাে এবং এক রাত সেখানে অবতরণ করল। আগুন এবং বাহিনী দেখে বলল, এটা কি? কেউ বলল, এটা তামীম গােত্র, যাদের শহর দুর্ভিক্ষে পতিত হয়েছে এবং তারা জীবিকার অন্বেষায় তােমাদের এলাকায় এসেছে। বলল, আল্লাহর কসম! এরা তাে মিনাবাসীদের অপেক্ষা অধিক অথবা মিনাবাসীদের অনুরূপ। বস্তুত যখন সে জানতে পারল যে, ইনি তাে নবী (ﷺ) তখন অবস্থা খারাপ হয়ে গেল এবং বলল, আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রাযিঃ)-এর ব্যাপারে আমাকে পথপ্রদর্শন কর। অতঃপর সে আব্বাস (রাযিঃ)-এর নিকট এসে তাকে ঘটনা অবহিত করল। তিনি তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর দরবারে উপস্থিত হলেন। তখন তিনি তার একটি শিবিরে অবস্থান করছিলেন। তিনি বললেন, হে আবু সুফইয়ান! ইসলাম গ্রহণ করে (ঈমান আন) বেঁচে যাবে। সে বলল, লাত এবং উযযার ব্যাপারে কি করব? আয়্যূব (রাহঃ) বলেন, আবুল খলীল (রাহঃ) সাঈদ ইবন যুবাইর (রাহঃ) সূত্রে আমাকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, উমার (রাযিঃ) বলেছেন এবং তিনি ময়দান থেকে বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন, তুমি এই কথা কখনাে বলনি। আবু সুফইয়ান জিজ্ঞাসা করল, এ কে? লােকেরা বল (ইনি হলেন) উমার (রাযিঃ)। অনন্তর আবু সুফইয়ান ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করল। আব্বাস (রাযিঃ) তাকে নিয়ে চললেন। যখন সকাল হল লােকেরা (সাহাবগণ) তাদের পবিত্রতা তথা উযূ'র জন্য দৌড়াল। বলেন, আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, হে আবুল ফযল! (আব্বাস রা) লােকদের কি হল, তারা কি কোন হুকুম প্রাপ্ত হয়েছে। তিনি বললেন, না; বরং তারা সালাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) কে হুকুম করলেন। অনন্তর তিনি উযু করলেন এবং তিনি তাঁকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে নিয়ে গেলেন। যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সালাত আরম্ভকালে আল্লাহু আকবার বললেন, তখন সাহাবগণও আল্লাহু আকবার' বললেন, এরপর তিনি রুকু করেন, তারাও রুকু করেন। এর পর (রুকু থেকে) মাথা উত্তোলন করেন, তারাও উত্তোলন করেন। (সালাত শেষে) আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, আজকের ন্যায় কোন কাওমকে সমবেতভাবে এখান থেকে সেখান পর্যন্ত (স্বীয় নেতার) আনুগত্য করতে দেখিনি। বড় বড় সম্মানিত ইরানীদের এবং ঘােড়াওয়ালা রােমানদেরকে তাদের অপেক্ষা অধিক আনুগত্যশীল দেখিনি। হাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, ইয়াযীদ ইবনে হাযিম (রাহঃ) ইকরামার (রাহঃ) সূত্রে রিওয়ায়াত করে বলেছেন যে, আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বলেছেন, হে আবুল ফযল! (আব্বাস রাঃ এর উপনাম) আল্লাহর কসম, তােমার ভ্রাতুষ্পুত্র তাে অনেক বড় বাদশা হয়ে গেছে। তিনি বললেন, এটা বাদশাহী নয়, বরং নবুওয়াত। তিনি বললেন, চল এটাই সঠিক, চল এটাই সঠিক। বলেন, অতঃপর তিনি (রাবী) ইকরামা (রাহঃ) সূত্রে বর্ণিত আয়্যুব (রাহঃ)-এর হাদীসের দিকে ফিরে গেলেন। তিনি বলেন, আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, কুরায়শদের প্রভাতের উপর আক্ষেপ। বর্ণনাকারী বলেন, আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) আপনি যদি আমাকে অনুমতি প্রদান করতেন তাহলে আমি মক্কাবাসীদের নিকট গিয়ে তাদেরকে আহবান জানাব এবং তাদেরকে নিরাপত্তার সুসংবাদ শুনাব। আপনি আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর জন্য এরূপ কিছু সাব্যস্ত করুন, যা স্মরণীয় হয়ে থাকে। বলেন, অতঃপর আব্বাস (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর সাদা খচ্চরের উপর আরােহণ করে চললেন। বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমার পিতাকে আমার দিকে ফিরিয়ে দাও, আমার পিতাকে আমার দিকে ফিরিয়ে দাও। নিশ্চয়, মানুষের চাচা তার পিতার অনুরূপ হয়। আমার আশংকা হচ্ছে যে, কুরায়শরা তােমার সঙ্গে অনুরূপ আচরণ করবে, যা ছাকীফ গােত্র উরওয়া ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-এর সঙ্গে করেছিলাে। তিনি তাদেরকে আল্লাহর দিকে আহবান করেছিলেন। তারা (ছাকীফ গােত্র) তাকে শহীদ করে দিয়েছে। শুনে রাখ, আল্লাহর কসম! যদি তারাও সেই চালবাজি তথা আচরণ প্রদর্শন করে তবে আমি তাদের উপর অগ্নি বর্ষণ করব।
বলেন, এরপর আব্বাস (রাযিঃ) চললেন এবং বললেন, হে মক্কাবাসী! ইসলাম গ্রহণ কর, নিরাপত্তা লাভ করবে। তােমরা এ উপত্যকায় মুশকিল ও কঠিন বিষয়ে ফেঁসে গেছ। বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যুবাইর (রাযিঃ) কে মক্কার উঁচু এলাকা দিয়ে এবং খালিদ ইবন ওয়ালীদ (রাযিঃ) কে মক্কার নিচু এলাকা দিয়ে প্রেরণ করলেন। বলেন, আব্বাস (রাযিঃ) তাদেরকে বললেন, এ হলাে যুবাইর (রাযিঃ), যিনি মক্কার উঁচু এলাকা দিয়ে এসেছেন এবং এ হলাে খালিদ (রাযিঃ), যিনি মক্কার নিচু এলাকা দিয়ে এসেছেন। খালিদ (রাযিঃ) এবং খােযা'আ গােত্রকে চিন? তারা নাক কর্তনকারী। অতঃপর বললেন, যে ব্যক্তি অস্ত্র ফেলে দিবে সে নিরাপদ, যে ব্যক্তি স্বীয় দরােজা বন্ধ করে দিবে সে নিরাপদ এবং যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। এরপর নবী (ﷺ) তাশরীফ আনলেন। তারা পরস্পরে কিছু তীর নিক্ষেপ করল। অনন্তর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের উপর বিজয় লাভ করেন। লােকদের নিরাপত্তা লাভ হল। কিন্তু খােযা'আ এবং বানূ বকর গােত্রদ্বয়ের যুদ্ধ অব্যাহত থাকল। আর চার ব্যক্তির উল্লেখ করলেনঃ মাকীস ইবনে যাবাবা, আব্দুল্লাহ ইবনে আবী সারহ, ইবনে খাতাল এবং বানূ হাশিমের আযাদকৃত দাসী সারাহ। হাম্মাদ (রাহঃ) আয়্যুব (রাহঃ)-এর হাদীসে অথবা অন্য কারাে হাদীসে তার নাম সাবারা বর্ণনা করেছেন। বলেন, খােযা'আ গোত্র দ্বীপ্রহর পর্যন্ত তাদের সঙ্গে লড়াই করছিলাে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা'আলা আয়াত নাযিল করেছেনঃ *(হাদীসের শেষে লক্ষ্য করুন) সূরা ৯ আয়াতঃ ১৩-১৪ বলেন, এর দ্বারা কবীলা খােয'আ উদ্দেশ্য। এবং ওদের অন্তরের ক্ষোভ দুর করবেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তার প্রতি ক্ষমাপরায়ণ হন, আল্লাই সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
*
اَلَا تُقَاتِلُوْنَ قَوْمًا نَّكَثُوْۤا اَيْمَانَهُمْ وَهَمُّوْا بِاِخْرَاجِ الرَّسُوْلِ وَهُمْ بَدَءُوْكُمْ اَوَّلَ مَرَّةٍ ؕ اَتَخْشَوْنَهُمْ ۚ فَاللّٰهُ اَحَقُّ اَنْ تَخْشَوْهُ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
তোমরা এমন লোকদের বিরুদ্ধে কেন যুদ্ধ করবেনা যারা নিজেদের শপথগুলিকে ভঙ্গ করেছে, আর রাসূলকে দেশান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং তারা তোমাদের বিরুদ্ধে নিজেরাই প্রথমে আক্রমণ করেছে? তোমরা কি তাদেরকে ভয় করছ? বস্তুতঃ আল্লাহকেই তোমাদের ভয় করা উচিত, যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক। (সূরা ৯ আয়াতঃ ১৩)
قَاتِلُوْهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللّٰهُ بِاَيْدِيْكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنْصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُوْرَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِيْنَ ۙ
তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর। আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন এবং তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন, আর তোমাদেরকে তাদের উপর বিজয়ী করবেন এবং মু’মিনের অন্তরসমূহকে প্রশান্ত ও ঠাণ্ডা করবেন। (সূরা ৯ আয়াতঃ ১৪)
ইমাম আবু জাফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কা বিজয়ের পূর্বে মক্কাবাসীদের সঙ্গে সন্ধি করেছেন, অতঃপর তা জয় করেছেন। একদল আলিম বলেছেন যে, মক্কাবাসীগণ বিশ্বাসঘাতকতা এবং সন্ধি ভঙ্গ করার পর তিনি তা জয় করেছেন। এটা দারুল হারব (শত্রু এলাকা) ছিলাে, তার মাঝে এবং মক্কা বাসীদের মাঝে না সন্ধি ছিলাে না কোন চুক্তি না কোন অঙ্গীকার। এই অভিমত যারা পােষণ করেছেন তাদের মধ্যে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আওযাঈ (রাহঃ), ইমাম মালিক ইবনে আনাস (রাহঃ), ইমাম সুফইয়ান ইবনে সাঈদ ছাওরী (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান (রাহঃ) অন্যতম। পক্ষান্তরে অপর একদল আলিম বলেন, তিনি তা সন্ধি সূত্রে জয় করেছেন। অতঃপর এই দল আলিমদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ মতের সপক্ষে হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করতে প্রয়াস পেয়েছেন, যা আমরা এই গ্রন্থে অতিসত্বর বর্ণনা করব। অধিকন্তু প্রত্যেকের দলীলের বিশুদ্ধতা কিংবা অসারতা বর্ণনা করব ইনশাআল্লাহু তা'আলা।
বস্তুত যারা এই মত গ্রহণ করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ওটা (মক্কা)-কে সন্ধি সূত্রে জয় করেছেন তাদের প্রমাণ হলাে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং মক্কাবাসীদের মাঝে সন্ধি হয়ে গিয়েছিলাে এবং প্রত্যেক দল অপর দল থেকে নিরাপদ হয়ে গিয়েছিলাে। অতঃপর এ ব্যাপারে মক্কাবাসীদের থেকে এরূপ কিছু সংঘটিত হয় নাই, যা চুক্তিভঙ্গকে অপরিহার্য করে তুলে। তবে বানূ নাফাসা যারা কিনা মক্কাবাসীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলােনা, তারা খােযা'আ গােত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং এ ব্যাপারে কুরায়শের কিছু লােক তাদের সাহায্য করে। পক্ষান্তরে অবশিষ্ট মক্কাবাসীরা তাদের চুক্তির উপর বহাল থাকে এবং তারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সঙ্গে যে অঙ্গীকার করেছিলাে তা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে রেখেছিলাে। সুতরাং বানূ নাফাসা এবং তাদের অনুসরণকারীরা উক্ত চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়, যখন কিনা অবশিষ্ট মক্কাবাসী এই চুক্তির উপর বহাল থাকে যা তারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সঙ্গে করেছিলাে।
এরা বলেন, এর দলীল হলাে যে, যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মক্কা মুকাররমা জয় করেছেন তখন তিনি তাতে মালে ফায় বণ্টন করেন নাই এবং না কাউকে গােলাম বানিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে তাদের বিরােধীদের দলীল হলাে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ)-এর আযাদকৃত গােলাম ইকরামা (রাহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনে মুসলিম ইবনে উবায়দুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে শিহাব যুহরী (রাহঃ) যাদের দু'জনের উপর যুদ্ধ বিষয়ক অধিকাংশ হাদীসসমূহের ভিত্তি। তাদের থেকে এরূপ রিওয়ায়াত বর্ণিত যাতে প্রতীয়মান হয় যে, মক্কাবাসীরা নিজেদের কৃতকর্মের কারণে ঐ সন্ধি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাে, যা তারা রাসূলুল্লাহ -এর (ﷺ) সঙ্গে সম্পাদন করেছিলাে।
ইবরাহীম ইবনে মারযুক (রাহঃ) ..... ইকরামা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কাবাসীদের সঙ্গে সন্ধি করলেন এমন অবস্থায় যে, খােযা'আ গোত্র জাহিলী যুগে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর মিত্র ছিলাে। পক্ষান্তরে বানু বকর কুরায়শের মিত্র ছিলাে, অনন্তর খােযা'আ গােত্র রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সন্ধিতে এবং বানূ বকর কুরায়শের সন্ধিতে শামিল হয়ে যায়। অতঃপর খােযাআ গােত্র এবং বানূ বকরের মাঝে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। কুরায়শরা অস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী দ্বারা তাদের সাহায্য করে এবং তাদের উপর ছায়া বিস্তার করে রেখেছিলাে। অনন্তর বানূ বকর খােযা'আ গােত্রের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করে। তারা তাদেরকে হত্যা করে। কুরায়শরা চুক্তি ভঙ্গকারী কাওমের সঙ্গ দেয়ার কারণে শংকিত হয়ে পড়ল। তারা আবু সুফইয়ান (তাদের নেতা) কে বলল, মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট গিয়ে চুক্তির নবায়ন করুন এবং লোকদের মাঝে সন্ধি স্থাপন করুন এবং বলুন যে, যদি কিছু লােকে তাদের অস্ত্র-শস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী দ্বারা সাহায্য করে থাকে এবং তাদেরকে ছত্রচ্ছায়া দিয়ে থাকে তাে এটা তাদের চুক্তি ভঙ্গ করা নয়। অনন্তর আবু সুফইয়ান (সেখান থেকে) চললেন এবং ছফর করে মদীনা পৌঁছান। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আবু সুফইয়ান তােমাদের নিকট এসেছে। কিন্তু সে উদ্দেশ্য হাছিল করা ছাড়াই সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে যাবে। সে আবু বকর (রাযিঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আবু বকর! চুক্তির নবায়ন করুন, লােকদের মাঝে অথবা (বলেছে) আপন কাওমের মাঝে সন্ধি করিয়ে দিন। রাবী বলেন, আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, সংশ্লিষ্ট বিষয় আল্লাহ্ তা'আলা এবং তাঁর রাসূলের (ﷺ) হাতে (নিয়ন্ত্রণে) রয়েছে। সে এরই মধ্যে এটাও বললাে যে, যদি কিছু লােকে তাদের উপর ছায়া বিস্তার করে থাকে এবং অস্ত্র ও খাদ্য দ্বারা তাদের সাহায্য করে থাকে, তাে এর দ্বারা তারা চুক্তি ভঙ্গ করে নাই। রাবী বলেন, আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, বিষয়টি আল্লাহ্ তা'আলা ও তাঁর রাসূলের (ﷺ) হাতে (নিয়ন্ত্রণে) রয়েছে। বলেন, অতঃপর সে উমার ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাকেও সেই কথাই বলল, যা আবু বকর (রাযিঃ) কে বলেছিলাে। উমার (রাযিঃ) বললেন, তােমরা চুক্তি ভঙ্গ করেছ, যে অঙ্গীকার নতুন ছিলাে আল্লাহ্ তা'আলা সেটাকে পুরাতন করে দিয়েছেন এবং যেটা এর চেয়ে কঠোর ছিলাে অথবা বলেছেন সুদৃঢ় ছিলাে আল্লাহ তা'আলা তা ভেঙ্গে দিয়েছেন। আবু সুফইয়ান বলল, আজকের মত কোন কঠোর দিন আমি দেখিনি। অতঃপর সে ফাতিমা (রাযিঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে ফাতিমা! তুমি কি কোন বিষয়ে তােমার কাওমের নারীদের নেতৃত্ব প্রদান করবে। এরপর তাঁকে সে সেই কথাই বলল, যা আবু বকর (রাযিঃ)-কে বলেছিলাে। অনন্তর তাকে বলল, চুক্তির নবায়ন করিয়ে দিন এবং লােকদের মাঝে সন্ধি করিয়ে দিন। তিনি (রাযিঃ) বললেন, বিষয়টি শুধু আল্লাহ তা'আলা ও তাঁর রাসূলের (ﷺ) ইখতিয়ারাধীন। রাবী বলেন, এরপর সে আলী (রাযিঃ)-এর নিকট এল এবং তাকে সেই কথাই বলল, যা আবু বকর (রাযিঃ)-কে বলেছিলাে। আলী (রাযিঃ) বললেন, আমি আজকের ন্যায় (কোন দিন) অত্যন্ত মিশুক ব্যক্তি দেখিনি। তুমি মানুষের নেতা, তুমিই চুক্তি নবায়ন কর এবং মানুষের মাঝে সন্ধি করাও। আবু সুফইয়ান এক পা অপর পায়ের উপর মেরে বলল, আমি লােকদের একজনকে অপরজনের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছি। বলেন, অতঃপর সে বিদায় নিয়ে মক্কা চলে গেলাে। লােকেরা বলল, আল্লাহর কছম! তাে তুমি যুদ্ধের সংবাদ নিয়ে এসেছ যে এর থেকে রক্ষা পাওয়া যেত, না সন্ধির পয়গাম নিয়ে এসেছ যে এর দ্বারা নিরাপদ হওয়া যেত। ফিরে যাও, ফিরে যাও। বলেন, খােযা'আ গােত্রের প্রতিনিধি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর দরবারে উপস্থিত হল এবং সে তাকে কাওমের সংবাদ শুনাল। আর তাঁর কাছে সাহায্যের আবেদন জানাল এবং এ ব্যাপারে নিম্নোক্ত কবিতাগুলাে আবৃত্তি করলঃ
* হে আল্লাহ! আমি মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে আমাদের পিতা এবং তাঁর পিতামহের মাঝে স্থিরকৃত চুক্তি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।
* আমরা পিতা ছিলাম (বয়সে বড় ছিলাম) এবং আপনি ছিলেন সন্তান। অবশ্যই কুরায়শরা তােমার সঙ্গে চুক্তির বিরােধিতা করেছে।
* তারা তােমার সঙ্গে কৃত মজবুত ও সুদৃঢ় অঙ্গীকার ভেঙ্গে দিয়েছে। তারা 'কাদা'তে (মক্কার উঁচু ভূমি) আমার জন্য ঘাঁটি প্রস্তুত করে রেখেছে।
* এবং তারা ধারণা করেছে যে, আমি কাউকে ডাকব না! তারা নিতান্তই দুর্বল এবং স্বল্পসংখ্যক।
*তারা আমাদের উপর ‘ওয়াতীর’ জায়গা থেকে শেষ প্রহরে আক্রমণ করেছে। যখন আমরা ঐ জায়গায় রুকু-সিজদাতে কুরআন তিলাওয়াতে রত ছিলাম।
* আমরা সেখানে সন্ধি করেছি (শান্তি ও নিরাপত্তা থেকে), হাত গুটিয়ে নেই নি। হে আল্লাহ! আল্লাহ্ রাসূলকে (ﷺ) বলিষ্ঠ সাহায্য কর।
* এবং সাহায্যের জন্য খােদায়ী বাহিনী প্রেরণ কর। এরূপ সুবিশাল বাহিনী, যা সমুদ্রের ন্যায় বুদবুদ সৃষ্টি করে।
* তাদের মাঝে রয়েছেন আল্লাহর রাসূল কোষমুক্ত তরবারি নিয়ে। যদি অপমান ও অপদস্থতা নেমে আসে তবে যেন তা পৃথক থাকে তাঁর নূরানী (আলকোজ্জ্বল) চেহারা থেকে।
হাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, এ থেকে কিছু কবিতা আয়্যুব (রাহঃ) থেকে, কিন্তু ইয়াযীদ ইবনে হাযিম (রাহঃ) থেকে এবং এর অধিকাংশ (কবিতা) মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। অতঃপর তিনি (রাবী) ইকরামা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত আয়্যূব (রাহঃ)-এর হাদীসের দিকে ফিরে গেলেন এবং যা কিছু হাস্সান ইবন সাবিত (রাযিঃ) বলেছেন সেটা বর্ণনা করেছেনঃ
* আমার নিকট মক্কা মুকাররমার ময়দানে বানূ কা'ব -এর লােকেরা এসেছে, যাদের গর্দান সমূহ কর্তন করা হচ্ছিলাে, কিন্তু আমি উপস্থিত ছিলাম না।
* এবং ছফওয়ান নামক এরূপ এক কাঠ দ্বারা যা এর শিকড়ের দিক থেকে কর্তিত। সুতরাং এটা যুদ্ধের সময়, যা কিনা কঠিন সময় এসে গিয়েছে।
* হায় আফসােস! আমি জ্ঞাত হতাম যে, আমার সাহায্যে উদ্যামতা এবং বদলা নেয়ার অনুভূতি সুহায়ল ইবনে আমর পেত।
রাবী বলেন, অনন্তর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যাত্রা করার নির্দেশ দিলেন। সাহাবাগণ রওয়ানা হলেন এবং চললেন, এবং মাররুযযাহরান নামক স্থানে অবতরণ করেন। বলেন, আবু সুফইয়ান উপস্থিত হলাে এবং এক রাত সেখানে অবতরণ করল। আগুন এবং বাহিনী দেখে বলল, এটা কি? কেউ বলল, এটা তামীম গােত্র, যাদের শহর দুর্ভিক্ষে পতিত হয়েছে এবং তারা জীবিকার অন্বেষায় তােমাদের এলাকায় এসেছে। বলল, আল্লাহর কসম! এরা তাে মিনাবাসীদের অপেক্ষা অধিক অথবা মিনাবাসীদের অনুরূপ। বস্তুত যখন সে জানতে পারল যে, ইনি তাে নবী (ﷺ) তখন অবস্থা খারাপ হয়ে গেল এবং বলল, আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রাযিঃ)-এর ব্যাপারে আমাকে পথপ্রদর্শন কর। অতঃপর সে আব্বাস (রাযিঃ)-এর নিকট এসে তাকে ঘটনা অবহিত করল। তিনি তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর দরবারে উপস্থিত হলেন। তখন তিনি তার একটি শিবিরে অবস্থান করছিলেন। তিনি বললেন, হে আবু সুফইয়ান! ইসলাম গ্রহণ করে (ঈমান আন) বেঁচে যাবে। সে বলল, লাত এবং উযযার ব্যাপারে কি করব? আয়্যূব (রাহঃ) বলেন, আবুল খলীল (রাহঃ) সাঈদ ইবন যুবাইর (রাহঃ) সূত্রে আমাকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, উমার (রাযিঃ) বলেছেন এবং তিনি ময়দান থেকে বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন, তুমি এই কথা কখনাে বলনি। আবু সুফইয়ান জিজ্ঞাসা করল, এ কে? লােকেরা বল (ইনি হলেন) উমার (রাযিঃ)। অনন্তর আবু সুফইয়ান ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করল। আব্বাস (রাযিঃ) তাকে নিয়ে চললেন। যখন সকাল হল লােকেরা (সাহাবগণ) তাদের পবিত্রতা তথা উযূ'র জন্য দৌড়াল। বলেন, আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, হে আবুল ফযল! (আব্বাস রা) লােকদের কি হল, তারা কি কোন হুকুম প্রাপ্ত হয়েছে। তিনি বললেন, না; বরং তারা সালাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) কে হুকুম করলেন। অনন্তর তিনি উযু করলেন এবং তিনি তাঁকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে নিয়ে গেলেন। যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সালাত আরম্ভকালে আল্লাহু আকবার বললেন, তখন সাহাবগণও আল্লাহু আকবার' বললেন, এরপর তিনি রুকু করেন, তারাও রুকু করেন। এর পর (রুকু থেকে) মাথা উত্তোলন করেন, তারাও উত্তোলন করেন। (সালাত শেষে) আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, আজকের ন্যায় কোন কাওমকে সমবেতভাবে এখান থেকে সেখান পর্যন্ত (স্বীয় নেতার) আনুগত্য করতে দেখিনি। বড় বড় সম্মানিত ইরানীদের এবং ঘােড়াওয়ালা রােমানদেরকে তাদের অপেক্ষা অধিক আনুগত্যশীল দেখিনি। হাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, ইয়াযীদ ইবনে হাযিম (রাহঃ) ইকরামার (রাহঃ) সূত্রে রিওয়ায়াত করে বলেছেন যে, আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বলেছেন, হে আবুল ফযল! (আব্বাস রাঃ এর উপনাম) আল্লাহর কসম, তােমার ভ্রাতুষ্পুত্র তাে অনেক বড় বাদশা হয়ে গেছে। তিনি বললেন, এটা বাদশাহী নয়, বরং নবুওয়াত। তিনি বললেন, চল এটাই সঠিক, চল এটাই সঠিক। বলেন, অতঃপর তিনি (রাবী) ইকরামা (রাহঃ) সূত্রে বর্ণিত আয়্যুব (রাহঃ)-এর হাদীসের দিকে ফিরে গেলেন। তিনি বলেন, আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, কুরায়শদের প্রভাতের উপর আক্ষেপ। বর্ণনাকারী বলেন, আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) আপনি যদি আমাকে অনুমতি প্রদান করতেন তাহলে আমি মক্কাবাসীদের নিকট গিয়ে তাদেরকে আহবান জানাব এবং তাদেরকে নিরাপত্তার সুসংবাদ শুনাব। আপনি আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর জন্য এরূপ কিছু সাব্যস্ত করুন, যা স্মরণীয় হয়ে থাকে। বলেন, অতঃপর আব্বাস (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর সাদা খচ্চরের উপর আরােহণ করে চললেন। বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমার পিতাকে আমার দিকে ফিরিয়ে দাও, আমার পিতাকে আমার দিকে ফিরিয়ে দাও। নিশ্চয়, মানুষের চাচা তার পিতার অনুরূপ হয়। আমার আশংকা হচ্ছে যে, কুরায়শরা তােমার সঙ্গে অনুরূপ আচরণ করবে, যা ছাকীফ গােত্র উরওয়া ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-এর সঙ্গে করেছিলাে। তিনি তাদেরকে আল্লাহর দিকে আহবান করেছিলেন। তারা (ছাকীফ গােত্র) তাকে শহীদ করে দিয়েছে। শুনে রাখ, আল্লাহর কসম! যদি তারাও সেই চালবাজি তথা আচরণ প্রদর্শন করে তবে আমি তাদের উপর অগ্নি বর্ষণ করব।
বলেন, এরপর আব্বাস (রাযিঃ) চললেন এবং বললেন, হে মক্কাবাসী! ইসলাম গ্রহণ কর, নিরাপত্তা লাভ করবে। তােমরা এ উপত্যকায় মুশকিল ও কঠিন বিষয়ে ফেঁসে গেছ। বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যুবাইর (রাযিঃ) কে মক্কার উঁচু এলাকা দিয়ে এবং খালিদ ইবন ওয়ালীদ (রাযিঃ) কে মক্কার নিচু এলাকা দিয়ে প্রেরণ করলেন। বলেন, আব্বাস (রাযিঃ) তাদেরকে বললেন, এ হলাে যুবাইর (রাযিঃ), যিনি মক্কার উঁচু এলাকা দিয়ে এসেছেন এবং এ হলাে খালিদ (রাযিঃ), যিনি মক্কার নিচু এলাকা দিয়ে এসেছেন। খালিদ (রাযিঃ) এবং খােযা'আ গােত্রকে চিন? তারা নাক কর্তনকারী। অতঃপর বললেন, যে ব্যক্তি অস্ত্র ফেলে দিবে সে নিরাপদ, যে ব্যক্তি স্বীয় দরােজা বন্ধ করে দিবে সে নিরাপদ এবং যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। এরপর নবী (ﷺ) তাশরীফ আনলেন। তারা পরস্পরে কিছু তীর নিক্ষেপ করল। অনন্তর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের উপর বিজয় লাভ করেন। লােকদের নিরাপত্তা লাভ হল। কিন্তু খােযা'আ এবং বানূ বকর গােত্রদ্বয়ের যুদ্ধ অব্যাহত থাকল। আর চার ব্যক্তির উল্লেখ করলেনঃ মাকীস ইবনে যাবাবা, আব্দুল্লাহ ইবনে আবী সারহ, ইবনে খাতাল এবং বানূ হাশিমের আযাদকৃত দাসী সারাহ। হাম্মাদ (রাহঃ) আয়্যুব (রাহঃ)-এর হাদীসে অথবা অন্য কারাে হাদীসে তার নাম সাবারা বর্ণনা করেছেন। বলেন, খােযা'আ গোত্র দ্বীপ্রহর পর্যন্ত তাদের সঙ্গে লড়াই করছিলাে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা'আলা আয়াত নাযিল করেছেনঃ *(হাদীসের শেষে লক্ষ্য করুন) সূরা ৯ আয়াতঃ ১৩-১৪ বলেন, এর দ্বারা কবীলা খােয'আ উদ্দেশ্য। এবং ওদের অন্তরের ক্ষোভ দুর করবেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তার প্রতি ক্ষমাপরায়ণ হন, আল্লাই সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
*
اَلَا تُقَاتِلُوْنَ قَوْمًا نَّكَثُوْۤا اَيْمَانَهُمْ وَهَمُّوْا بِاِخْرَاجِ الرَّسُوْلِ وَهُمْ بَدَءُوْكُمْ اَوَّلَ مَرَّةٍ ؕ اَتَخْشَوْنَهُمْ ۚ فَاللّٰهُ اَحَقُّ اَنْ تَخْشَوْهُ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
তোমরা এমন লোকদের বিরুদ্ধে কেন যুদ্ধ করবেনা যারা নিজেদের শপথগুলিকে ভঙ্গ করেছে, আর রাসূলকে দেশান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং তারা তোমাদের বিরুদ্ধে নিজেরাই প্রথমে আক্রমণ করেছে? তোমরা কি তাদেরকে ভয় করছ? বস্তুতঃ আল্লাহকেই তোমাদের ভয় করা উচিত, যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক। (সূরা ৯ আয়াতঃ ১৩)
قَاتِلُوْهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللّٰهُ بِاَيْدِيْكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنْصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُوْرَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِيْنَ ۙ
তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর। আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন এবং তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন, আর তোমাদেরকে তাদের উপর বিজয়ী করবেন এবং মু’মিনের অন্তরসমূহকে প্রশান্ত ও ঠাণ্ডা করবেন। (সূরা ৯ আয়াতঃ ১৪)
كِتَابُ الْحُجَّةِ فِي فَتْحِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ عَنْوَةً
قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: اجْتَمَعَتِ الْأُمَّةُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , صَالَحَ أَهْلَ مَكَّةِ قَبْلَ افْتِتَاحِهِ إِيَّاهَا , ثُمَّ افْتَتَحَهَا بَعْدَ ذَلِكَ , فَقَالَ قَوْمٌ: كَانَ افْتِتَاحُهُ إِيَّاهَا بَعْدَ أَنْ نَقَضَ أَهْلُ مَكَّةَ الْعَهْدَ وَخَرَجُوا مِنَ الصُّلْحِ , فَافْتَتَحَهَا يَوْمَ افْتَتَحَهَا وَهِيَ دَارُ حَرْبٍ , لَا صُلْحَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَهْلِهَا , وَلَا عَقْدَ وَلَا عَهْدَ , وَمِمَّنْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ: أَبُو حَنِيفَةَ , وَالْأَوْزَاعِيُّ , وَمَالِكُ بْنُ أَنَسٍ , وَسُفْيَانُ بْنُ سَعِيدٍ الثَّوْرِيُّ , وَأَبُو يُوسُفَ , وَمُحَمَّدُ بْنُ الْحَسَنِ رَحِمَهُمُ اللهُ، وَقَالَ قَوْمٌ: بَلِ افْتَتَحَهَا صُلْحًا , ثُمَّ احْتَجَّ كُلُّ فَرِيقٍ مِنْ هَذَيْنِ الْفَرِيقَيْنِ لِقَوْلِهِ , مِنَ الْآثَارِ بِمَا سَنُبَيِّنُهُ فِي كِتَابِي هَذَا , وَنَذْكُرُ مَعَ ذَلِكَ , صِحَّةَ مَا احْتَجَّ بِهِ أَوْ فَسَادَهُ , إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى , وَكَانَ حُجَّةُ مَنْ ذَهَبَ إِلَى أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ افْتَتَحَهَا صُلْحًا , أَنْ قَالَ: أَمَّا الصُّلْحُ فَقَدْ كَانَ بَيْنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَيْنَ أَهْلِ مَكَّةَ , فَأَمِنَ كُلُّ فَرِيقٍ مِنْهُ وَمِنْ أَهْلِ مَكَّةَ , مِنَ الْفَرِيقِ الْآخِرِ , ثُمَّ لَمْ يَكُنْ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ فِي ذَلِكَ , مَا يُوجِبُ نَقْضَ الصُّلْحِ , وَإِنَّمَا كَانَ بَنُو نُفَاثَةَ , وَهُمْ غَيْرٌ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ , قَاتَلُوا خُزَاعَةَ , وَأَعَانَهُمْ عَلَى ذَلِكَ رِجَالٌ مِنْ قُرَيْشٍ , وَثَبَتَ بَقِيَّةُ أَهْلِ مَكَّةَ عَلَى صُلْحِهِمْ , وَتَمَسَّكُوا بِعَهْدِهِمُ الَّذِي عَاهَدُوا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَرَجَتْ بَنُو نُفَاثَةَ , وَمَنْ تَابَعَهُمْ , عَلَى مَا فَعَلُوا مِنْ ذَلِكَ مِنَ الصُّلْحِ , وَثَبَتَ بَقِيَّةُ أَهْلِ مَكَّةَ عَلَى الصُّلْحِ الَّذِي كَانُوا صَالَحُوا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , قَالُوا: وَالدَّلِيلُ عَلَى ذَلِكَ , أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا افْتَتَحَهَا , لَمْ يَقْسِمْ فِيهَا فَيْئًا , وَلَمْ يَسْتَعْبِدْ فِيهَا أَحَدًا , وَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ عَلَيْهِمْ فِي ذَلِكَ لِمُخَالِفِهِمْ , أَنَّ عِكْرِمَةَ , مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا , وَمُحَمَّدَ بْنَ مُسْلِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ شِهَابٍ الزُّهْرِيَّ , وَعَلَيْهِمَا يَدُورُ أَكْثَرُ أَخْبَارِ الْمَغَازِي , قَدْ رُوِيَ عَنْهُمَا مَا يَدُلُّ عَلَى خُرُوجِ أَهْلِ مَكَّةَ مِنَ الصُّلْحِ الَّذِي كَانُوا صَالَحُوا عَلَيْهِ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَحْدَاثٍ أَحْدَثُوهَا
5454 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ , قَالَ: ثنا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ , قَالَ: ثنا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ , عَنْ أَيُّوبَ , عَنْ عِكْرِمَةَ , قَالَ: " لَمَّا وَادَعَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَهْلَ مَكَّةَ , وَكَانَتْ خُزَاعَةُ حُلَفَاءَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ , وَكَانَتْ بَنُو بَكْرٍ حُلَفَاءَ قُرَيْشٍ , فَدَخَلَتْ خُزَاعَةُ فِي صُلْحِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَدَخَلَتْ بَنُو بَكْرٍ فِي صُلْحِ قُرَيْشٍ , فَكَانَ بَيْنَ خُزَاعَةَ وَبَيْنَ بَنِي بَكْرٍ بَعْدُ قِتَالٌ , فَأَمَدَّهُمْ قُرَيْشٌ بِسِلَاحٍ وَطَعَامٍ , وَظَلَّلُوا عَلَيْهِمْ , وَظَهَرَتْ بَنُو بَكْرٍ عَلَى خُزَاعَةَ , فَقَتَلُوا فِيهِمْ , فَخَافَتْ قُرَيْشٌ أَنْ يَكُونُوا عَلَى قَوْمٍ قَدْ نَقَضُوا , فَقَالُوا لِأَبِي سُفْيَانَ: اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ فَأَجِدَّ الْحِلْفَ , وَأَصْلِحْ بَيْنَ النَّاسِ وَأَنْ لَيْسَ فِي قَوْمٍ ظَلَّلُوا عَلَى قَوْمٍ وَأَمَدُّوهُمْ بِسِلَاحٍ وَطَعَامٍ مَا إِنْ يَكُونُوا نَقَضُوا , فَانْطَلَقَ أَبُو سُفْيَانَ وَسَارَ , حَتَّى قَدِمَ الْمَدِينَةَ , فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَدْ جَاءَكُمْ أَبُو سُفْيَانَ , وَسَيَرْجِعُ رَاضِيًا بِغَيْرِ حَاجَةٍ , فَأَتَى أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , فَقَالَ: يَا أَبَا بَكْرٍ أَجِدَّ الْحِلْفَ وَأَصْلِحْ بَيْنَ النَّاسِ أَوْ بَيْنَ قَوْمِكَ , قَالَ: فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ الْأَمْرُ إِلَى اللهِ تَعَالَى وَإِلَى رَسُولِهِ , وَقَدْ قَالَ فِيمَا قَالَ لَهُ بِأَنْ لَيْسَ فِي قَوْمٍ ظَلَّلُوا عَلَى قَوْمٍ وَأَمَدُّوهُمْ بِسِلَاحٍ وَطَعَامٍ , مَا إِنْ يَكُونُوا نَقَضُوا , قَالَ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: الْأَمْرُ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ , وَإِلَى رَسُولِهِ , قَالَ: ثُمَّ أَتَى عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَذَكَرَ لَهُ نَحْوًا مِمَّا ذَكَرَ لِأَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , [ص:313] فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: أَنَقَضْتُمْ؟ فَمَا كَانَ مِنْهُ جَدِيدًا , فَأَبْلَاهُ اللهُ تَعَالَى , وَمَا كَانَ مِنْهُ شَدِيدًا , أَوْ قَالَ مَتِينًا , فَقَطَعَهُ اللهُ تَعَالَى , فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: وَمَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ شَاهِدَ عَشَرَةٍ , ثُمَّ أَتَى فَاطِمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا , فَقَالَ لَهَا: يَا فَاطِمَةُ , هَلْ لَكِ فِي أَمْرٍ تَسُودِينَ فِيهِ نِسَاءَ قَوْمِكَ , ثُمَّ ذَكَرَ لَهَا نَحْوًا مِمَّا قَالَ لِأَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , ثُمَّ قَالَ لَهَا: فَتُجَدِّدِينَ الْحِلْفَ , وَتُصْلِحِينَ بَيْنَ النَّاسِ , فَقَالَتْ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: لَيْسَ إِلَّا إِلَى اللهِ وَإِلَى رَسُولِهِ , قَالَ: ثُمَّ أَتَى عَلِيًّا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , فَقَالَ لَهُ نَحْوًا مِمَّا قَالَ لِأَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , فَقَالَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ رَجُلًا أَصِلُ , أَنْتَ سَيِّدُ النَّاسِ فَأَجِدَّ الْحِلْفَ وَأَصْلِحْ بَيْنَ النَّاسِ , فَضَرَبَ أَبُو سُفْيَانَ إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى وَقَالَ قَدْ أَخَذْتُ بَيْنَ النَّاسِ بَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ , قَالَ: ثُمَّ انْطَلَقَ حَتَّى قَدِمَ , وَاللهِ مَا أَتَيْتنَا بِحَرْبٍ فَيَحْذَرُ , وَلَا أَتَيْتنَا بِصُلْحٍ فَيَأْمَنُ , ارْجِعِ ارْجِعْ , قَالَ وَقَدِمَ وَفْدُ خُزَاعَةَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ بِمَا صَنَعَ الْقَوْمُ , وَدَعَاهُ بِالنُّصْرَةِ وَأَنْشَدَ فِي ذَلِكَ:
[البحر الرجز]
لَاهُمَّ إِنِّي نَاشِدٌ مُحَمَّدَا ... حِلْفَ أَبِينَا وَأَبِيهِ الْأَتْلَدَا
وَالِدًا كُنَّا وَكُنْتَ وَلَدَا ... إِنَّ قُرَيْشًا أَخْلَفُوكَ الْمَوْعِدَا
وَنَقَضُوا مِيثَاقَكَ الْمُؤَكَّدَا ... وَجَعَلُوا لِي بِكَدَاءَ رُصَّدَا
وَزَعَمُوا أَنْ لَسْتَ تَدْعُوَا أَحَدَا ... وَهُمْ أَذَلُّ وَأَقَلُّ عَدَدَا
وَهُمْ أَتَوْنَا بِالْوَتِيرِ هُجَّدَا ... نَتْلُوا الْقُرْآنَ رُكَّعًا وَسُجَّدَا
ثَمَّتَ أَسْلَمْنَا وَلَمْ نَنْزِعْ يَدَا ... فَانْصُرْ رَسُولَ اللهِ نَصْرًا أَعْتَدَا
وَابْعَثْ جُنُودَ اللهِ تَأْتِي مَدَدَا ... فِي فَيْلَقٍ كَالْبَحْرِ يَأْتِي مُزْبِدَا
فِيهِمْ رَسُولُ اللهِ قَدْ تَجَرَّدَا ... إِنْ سِيمَ خَسْفًا وَجْهُهُ تَرَبَّدَا
قَالَ حَمَّادٌ: هَذَا الشَّعْرُ بَعْضُهُ عَنْ أَيُّوبَ , وَبَعْضُهُ عَنْ يَزِيدَ بْنِ حَازِمٍ , وَأَكْثَرُهُ , عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ , ثُمَّ رَجَعَ إِلَى حَدِيثِ أَيُّوبَ , " عَنْ عِكْرِمَةَ قَالَ: مَا قَالَ حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ:
[البحر الطويل]
أَتَانِي وَلَمْ أَشْهَدْ بِبَطْحَاءِ مَكَّةَ ... رِجَالَ بَنِي كَعْبٍ تُحَزُّ رِقَابُهَا
وَصَفْوَانُ عَوْدٍ خَرَّ مِنْ وَدْقِ اسْتِهِ ... فَذَاكَ أَوَانُ الْحَرْبِ حَانَ غِضَابُهَا
فَيَا [ص:314] لَيْتَ شِعْرِي هَلْ لَنَا مَرَّةً ... سُهَيْلَ بْنَ عَمْرٍو حَوْلَهَا وَعِقَابُهَا
قَالَ: فَأَمَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالرَّحِيلِ فَارْتَحَلُوا فَسَارُوا , حَتَّى نَزَلُوا بِمَرِّ الظَّهْرَانِ , قَالَ: وَجَاءَ أَبُو سُفْيَانَ حَتَّى نَزَلَ لَيْلًا , فَرَأَى الْعَسْكَرَ وَالنِّيرَانَ , فَقَالَ: مَا هَذَا؟ قِيلَ: هَذِهِ تَمِيمٌ , أَمْحَلَتْ بِلَادُهَا فَانْتَجَعَتْ بِلَادَكُمْ , قَالَ: هَؤُلَاءِ وَاللهِ أَكْثَرُ مِنْ أَهْلِ مِنًى , أَوْ مِثْلُ أَهْلِ مِنًى , فَلَمَّا عَلِمَ أَنَّهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَنَكَّرَ وَقَالَ: دُلُّونِي عَلَى الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ , وَأَتَى الْعَبَّاسَ فَأَخْبَرَهُ الْخَبَرَ وَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَأَتَى بِهِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي قُبَّةٍ لَهُ فَقَالَ يَا أَبَا سُفْيَانَ , أَسْلِمْ تَسْلَمْ قَالَ: وَكَيْفَ أَصْنَعُ بِاللَّاتَ وَالْعُزَّى "؟ قَالَ أَيُّوبُ:
5455 - حَدَّثَنِي أَبُو الْخَلِيلِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ رَحِمَهُ اللهُ قَالَ: " قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَهُوَ خَارِجٌ مِنَ التِّيهِ مَا قُلْتُهَا أَبَدًا , قَالَ أَبُو سُفْيَانَ: مَنْ هَذَا؟ قَالُوا: عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , فَأَسْلَمَ أَبُو سُفْيَانَ فَانْطَلَقَ بِهِ الْعَبَّاسُ , فَلَمَّا أَصْبَحُوا , ثَارَ النَّاسُ لِظُهُورِهِمْ , قَالَ: فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: يَا أَبَا الْفَضْلِ , مَا لِلنَّاسِ أُمِرُوا فِي شَيْءٍ؟ قَالَ: فَقَالَ: لَا , وَلَكِنَّهُمْ قَامُوا إِلَى الصَّلَاةِ فَأَمَرَهُ فَتَوَضَّأَ , وَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , [ص:315] فَلَمَّا دَخَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصَّلَاةَ , كَبَّرَ , فَكَبَّرَ النَّاسُ , ثُمَّ رَكَعَ فَرَكَعُوا , ثُمَّ رَفَعَ فَرَفَعُوا , فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ طَاعَةَ قَوْمٍ جَمَعَهُمْ مِنْ هَاهُنَا وَهَاهُنَا، وَلَا فَارِسَ الْأَكَارِمَ وَلَا الرُّومَ ذَاتَ الْقُرُونِ بِالطَّوْعِ مِنْهُمْ " , قَالَ حَمَّادٌ: وَزَعَمَ يَزِيدُ بْنُ حَازِمٍ عَنْ عِكْرِمَةَ قَالَ: قَالَ أَبُو سُفْيَانَ: يَا أَبَا الْفَضْلِ أَصْبَحَ , وَاللهِ , ابْنُ أَخِيكَ عَظِيمَ الْمُلْكِ , قَالَ: لَيْسَ بِمُلْكٍ وَلَكِنَّهَا نُبُوَّةٌ , قَالَ: أَوْ ذَاكَ أَوْ ذَاكَ " قَالَ: ثُمَّ رَجَعَ إِلَى حَدِيثِ أَيُّوبَ عَنْ عِكْرِمَةِ قَالَ: فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: وَاصَبَاحَ قُرَيْشٍ , قَالَ: " فَقَالَ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: يَا رَسُولَ اللهِ , لَوْ أَذِنْتَ لِي فَأَتَيْتُ أَهْلَ مَكَّةَ فَدَعَوْتُهُمْ وَأَمَّنْتُهُمْ , وَجَعَلْتُ لِأَبِي سُفْيَانَ شَيْئًا يُذْكَرُ بِهِ , قَالَ: فَانْطَلَقَ فَرَكِبَ بَغْلَةَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الشَّهْبَاءَ , وَانْطَلَقَ , قَالَ: فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رُدُّوا عَلَيَّ أَبِي , رُدُّوا عَلَيَّ أَبِي , إِنَّ عَمَّ الرَّجُلِ صِنْوُ أَبِيهِ , إِنِّي أَخَافُ أَنْ تَفْعَلَ بِكَ قُرَيْشٌ , كَمَا فَعَلَتْ ثَقِيفٌ بِعُرْوَةِ بْنِ مَسْعُودٍ , دَعَاهُمْ إِلَى اللهِ فَقَتَلُوهُ , أَمَا وَاللهِ لَئِنْ رَكِبُوهَا مِنْهُ , لَأُضْرِمَنَّهَا عَلَيْهِمْ نَارًا» قَالَ: فَانْطَلَقَ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: فَقَالَ يَا أَهْلَ مَكَّةَ , أَسْلِمُوا تَسْلَمُوا , فَقَدِ اسْتَبْطَنْتُمْ بِأَشْهَبَ بَازِلٍ , قَالَ: وَقَدْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ الزُّبَيْرَ مِنْ قِبَلِ أَعْلَى مَكَّةَ , وَبَعَثَ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ مِنْ قِبَلِ أَسْفَلِ مَكَّةَ , قَالَ: فَقَالَ لَهُمْ: هَذَا الزُّبَيْرُ مِنْ قِبَلِ أَعْلَى مَكَّةَ , وَهَذَا خَالِدٌ مِنْ قِبَلِ أَسْفَلِ مَكَّةَ , وَخَالِدٌ وَمَا خَالِدٌ , وَخُزَاعَةُ مُجَدَّعَةُ الْأُنُوفِ , ثُمَّ قَالَ: مَنْ أَلْقَى سِلَاحَهُ فَهُوَ آمِنٌ , وَمَنْ أَغْلَقَ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ , وَمَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ , ثُمَّ قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَتَرَامَوْا بِشَيْءٍ مِنَ النَّبْلِ , ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ظَهَرَ عَلَيْهِمْ فَأَمَّنَ النَّاسَ إِلَّا خُزَاعَةَ عَنْ بَنِي بَكْرٍ , وَذَكَرَ أَرْبَعَةً , مِقْيَسَ بْنَ ضَبَابَةَ , وَعَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِي سَرْحٍ , وَابْنَ خَطَلٍ , وَسَارَةَ مَوْلَاةَ بَنِي هَاشِمٍ " , قَالَ حَمَّادٌ: سَارَةُ فِي حَدِيثِ أَيُّوبَ , أَوْ فِي حَدِيثِ غَيْرِهِ , قَالَ: " فَقَاتَلَهُمْ خُزَاعَةُ إِلَى نِصْفِ النَّهَارِ , فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {أَلَا تُقَاتِلُونَ قَوْمًا نَكَثُوا أَيْمَانَهُمْ وَهَمُّوا بِإِخْرَاجِ الرَّسُولِ} [التوبة: 13] إِلَى قَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ {وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ} [التوبة: 14] قَالَ: خُزَاعَةُ , {وَيُذْهِبْ غَيْظَ قُلُوبِهِمْ وَيَتُوبُ اللهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ} [التوبة: 15]
5454 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ , قَالَ: ثنا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ , قَالَ: ثنا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ , عَنْ أَيُّوبَ , عَنْ عِكْرِمَةَ , قَالَ: " لَمَّا وَادَعَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَهْلَ مَكَّةَ , وَكَانَتْ خُزَاعَةُ حُلَفَاءَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ , وَكَانَتْ بَنُو بَكْرٍ حُلَفَاءَ قُرَيْشٍ , فَدَخَلَتْ خُزَاعَةُ فِي صُلْحِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَدَخَلَتْ بَنُو بَكْرٍ فِي صُلْحِ قُرَيْشٍ , فَكَانَ بَيْنَ خُزَاعَةَ وَبَيْنَ بَنِي بَكْرٍ بَعْدُ قِتَالٌ , فَأَمَدَّهُمْ قُرَيْشٌ بِسِلَاحٍ وَطَعَامٍ , وَظَلَّلُوا عَلَيْهِمْ , وَظَهَرَتْ بَنُو بَكْرٍ عَلَى خُزَاعَةَ , فَقَتَلُوا فِيهِمْ , فَخَافَتْ قُرَيْشٌ أَنْ يَكُونُوا عَلَى قَوْمٍ قَدْ نَقَضُوا , فَقَالُوا لِأَبِي سُفْيَانَ: اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ فَأَجِدَّ الْحِلْفَ , وَأَصْلِحْ بَيْنَ النَّاسِ وَأَنْ لَيْسَ فِي قَوْمٍ ظَلَّلُوا عَلَى قَوْمٍ وَأَمَدُّوهُمْ بِسِلَاحٍ وَطَعَامٍ مَا إِنْ يَكُونُوا نَقَضُوا , فَانْطَلَقَ أَبُو سُفْيَانَ وَسَارَ , حَتَّى قَدِمَ الْمَدِينَةَ , فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَدْ جَاءَكُمْ أَبُو سُفْيَانَ , وَسَيَرْجِعُ رَاضِيًا بِغَيْرِ حَاجَةٍ , فَأَتَى أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , فَقَالَ: يَا أَبَا بَكْرٍ أَجِدَّ الْحِلْفَ وَأَصْلِحْ بَيْنَ النَّاسِ أَوْ بَيْنَ قَوْمِكَ , قَالَ: فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ الْأَمْرُ إِلَى اللهِ تَعَالَى وَإِلَى رَسُولِهِ , وَقَدْ قَالَ فِيمَا قَالَ لَهُ بِأَنْ لَيْسَ فِي قَوْمٍ ظَلَّلُوا عَلَى قَوْمٍ وَأَمَدُّوهُمْ بِسِلَاحٍ وَطَعَامٍ , مَا إِنْ يَكُونُوا نَقَضُوا , قَالَ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: الْأَمْرُ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ , وَإِلَى رَسُولِهِ , قَالَ: ثُمَّ أَتَى عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَذَكَرَ لَهُ نَحْوًا مِمَّا ذَكَرَ لِأَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , [ص:313] فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: أَنَقَضْتُمْ؟ فَمَا كَانَ مِنْهُ جَدِيدًا , فَأَبْلَاهُ اللهُ تَعَالَى , وَمَا كَانَ مِنْهُ شَدِيدًا , أَوْ قَالَ مَتِينًا , فَقَطَعَهُ اللهُ تَعَالَى , فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: وَمَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ شَاهِدَ عَشَرَةٍ , ثُمَّ أَتَى فَاطِمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا , فَقَالَ لَهَا: يَا فَاطِمَةُ , هَلْ لَكِ فِي أَمْرٍ تَسُودِينَ فِيهِ نِسَاءَ قَوْمِكَ , ثُمَّ ذَكَرَ لَهَا نَحْوًا مِمَّا قَالَ لِأَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , ثُمَّ قَالَ لَهَا: فَتُجَدِّدِينَ الْحِلْفَ , وَتُصْلِحِينَ بَيْنَ النَّاسِ , فَقَالَتْ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا: لَيْسَ إِلَّا إِلَى اللهِ وَإِلَى رَسُولِهِ , قَالَ: ثُمَّ أَتَى عَلِيًّا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , فَقَالَ لَهُ نَحْوًا مِمَّا قَالَ لِأَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , فَقَالَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ رَجُلًا أَصِلُ , أَنْتَ سَيِّدُ النَّاسِ فَأَجِدَّ الْحِلْفَ وَأَصْلِحْ بَيْنَ النَّاسِ , فَضَرَبَ أَبُو سُفْيَانَ إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى وَقَالَ قَدْ أَخَذْتُ بَيْنَ النَّاسِ بَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ , قَالَ: ثُمَّ انْطَلَقَ حَتَّى قَدِمَ , وَاللهِ مَا أَتَيْتنَا بِحَرْبٍ فَيَحْذَرُ , وَلَا أَتَيْتنَا بِصُلْحٍ فَيَأْمَنُ , ارْجِعِ ارْجِعْ , قَالَ وَقَدِمَ وَفْدُ خُزَاعَةَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ بِمَا صَنَعَ الْقَوْمُ , وَدَعَاهُ بِالنُّصْرَةِ وَأَنْشَدَ فِي ذَلِكَ:
[البحر الرجز]
لَاهُمَّ إِنِّي نَاشِدٌ مُحَمَّدَا ... حِلْفَ أَبِينَا وَأَبِيهِ الْأَتْلَدَا
وَالِدًا كُنَّا وَكُنْتَ وَلَدَا ... إِنَّ قُرَيْشًا أَخْلَفُوكَ الْمَوْعِدَا
وَنَقَضُوا مِيثَاقَكَ الْمُؤَكَّدَا ... وَجَعَلُوا لِي بِكَدَاءَ رُصَّدَا
وَزَعَمُوا أَنْ لَسْتَ تَدْعُوَا أَحَدَا ... وَهُمْ أَذَلُّ وَأَقَلُّ عَدَدَا
وَهُمْ أَتَوْنَا بِالْوَتِيرِ هُجَّدَا ... نَتْلُوا الْقُرْآنَ رُكَّعًا وَسُجَّدَا
ثَمَّتَ أَسْلَمْنَا وَلَمْ نَنْزِعْ يَدَا ... فَانْصُرْ رَسُولَ اللهِ نَصْرًا أَعْتَدَا
وَابْعَثْ جُنُودَ اللهِ تَأْتِي مَدَدَا ... فِي فَيْلَقٍ كَالْبَحْرِ يَأْتِي مُزْبِدَا
فِيهِمْ رَسُولُ اللهِ قَدْ تَجَرَّدَا ... إِنْ سِيمَ خَسْفًا وَجْهُهُ تَرَبَّدَا
قَالَ حَمَّادٌ: هَذَا الشَّعْرُ بَعْضُهُ عَنْ أَيُّوبَ , وَبَعْضُهُ عَنْ يَزِيدَ بْنِ حَازِمٍ , وَأَكْثَرُهُ , عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ , ثُمَّ رَجَعَ إِلَى حَدِيثِ أَيُّوبَ , " عَنْ عِكْرِمَةَ قَالَ: مَا قَالَ حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ:
[البحر الطويل]
أَتَانِي وَلَمْ أَشْهَدْ بِبَطْحَاءِ مَكَّةَ ... رِجَالَ بَنِي كَعْبٍ تُحَزُّ رِقَابُهَا
وَصَفْوَانُ عَوْدٍ خَرَّ مِنْ وَدْقِ اسْتِهِ ... فَذَاكَ أَوَانُ الْحَرْبِ حَانَ غِضَابُهَا
فَيَا [ص:314] لَيْتَ شِعْرِي هَلْ لَنَا مَرَّةً ... سُهَيْلَ بْنَ عَمْرٍو حَوْلَهَا وَعِقَابُهَا
قَالَ: فَأَمَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالرَّحِيلِ فَارْتَحَلُوا فَسَارُوا , حَتَّى نَزَلُوا بِمَرِّ الظَّهْرَانِ , قَالَ: وَجَاءَ أَبُو سُفْيَانَ حَتَّى نَزَلَ لَيْلًا , فَرَأَى الْعَسْكَرَ وَالنِّيرَانَ , فَقَالَ: مَا هَذَا؟ قِيلَ: هَذِهِ تَمِيمٌ , أَمْحَلَتْ بِلَادُهَا فَانْتَجَعَتْ بِلَادَكُمْ , قَالَ: هَؤُلَاءِ وَاللهِ أَكْثَرُ مِنْ أَهْلِ مِنًى , أَوْ مِثْلُ أَهْلِ مِنًى , فَلَمَّا عَلِمَ أَنَّهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَنَكَّرَ وَقَالَ: دُلُّونِي عَلَى الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ , وَأَتَى الْعَبَّاسَ فَأَخْبَرَهُ الْخَبَرَ وَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَأَتَى بِهِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي قُبَّةٍ لَهُ فَقَالَ يَا أَبَا سُفْيَانَ , أَسْلِمْ تَسْلَمْ قَالَ: وَكَيْفَ أَصْنَعُ بِاللَّاتَ وَالْعُزَّى "؟ قَالَ أَيُّوبُ:
5455 - حَدَّثَنِي أَبُو الْخَلِيلِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ رَحِمَهُ اللهُ قَالَ: " قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَهُوَ خَارِجٌ مِنَ التِّيهِ مَا قُلْتُهَا أَبَدًا , قَالَ أَبُو سُفْيَانَ: مَنْ هَذَا؟ قَالُوا: عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , فَأَسْلَمَ أَبُو سُفْيَانَ فَانْطَلَقَ بِهِ الْعَبَّاسُ , فَلَمَّا أَصْبَحُوا , ثَارَ النَّاسُ لِظُهُورِهِمْ , قَالَ: فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: يَا أَبَا الْفَضْلِ , مَا لِلنَّاسِ أُمِرُوا فِي شَيْءٍ؟ قَالَ: فَقَالَ: لَا , وَلَكِنَّهُمْ قَامُوا إِلَى الصَّلَاةِ فَأَمَرَهُ فَتَوَضَّأَ , وَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , [ص:315] فَلَمَّا دَخَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصَّلَاةَ , كَبَّرَ , فَكَبَّرَ النَّاسُ , ثُمَّ رَكَعَ فَرَكَعُوا , ثُمَّ رَفَعَ فَرَفَعُوا , فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ طَاعَةَ قَوْمٍ جَمَعَهُمْ مِنْ هَاهُنَا وَهَاهُنَا، وَلَا فَارِسَ الْأَكَارِمَ وَلَا الرُّومَ ذَاتَ الْقُرُونِ بِالطَّوْعِ مِنْهُمْ " , قَالَ حَمَّادٌ: وَزَعَمَ يَزِيدُ بْنُ حَازِمٍ عَنْ عِكْرِمَةَ قَالَ: قَالَ أَبُو سُفْيَانَ: يَا أَبَا الْفَضْلِ أَصْبَحَ , وَاللهِ , ابْنُ أَخِيكَ عَظِيمَ الْمُلْكِ , قَالَ: لَيْسَ بِمُلْكٍ وَلَكِنَّهَا نُبُوَّةٌ , قَالَ: أَوْ ذَاكَ أَوْ ذَاكَ " قَالَ: ثُمَّ رَجَعَ إِلَى حَدِيثِ أَيُّوبَ عَنْ عِكْرِمَةِ قَالَ: فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: وَاصَبَاحَ قُرَيْشٍ , قَالَ: " فَقَالَ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: يَا رَسُولَ اللهِ , لَوْ أَذِنْتَ لِي فَأَتَيْتُ أَهْلَ مَكَّةَ فَدَعَوْتُهُمْ وَأَمَّنْتُهُمْ , وَجَعَلْتُ لِأَبِي سُفْيَانَ شَيْئًا يُذْكَرُ بِهِ , قَالَ: فَانْطَلَقَ فَرَكِبَ بَغْلَةَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الشَّهْبَاءَ , وَانْطَلَقَ , قَالَ: فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رُدُّوا عَلَيَّ أَبِي , رُدُّوا عَلَيَّ أَبِي , إِنَّ عَمَّ الرَّجُلِ صِنْوُ أَبِيهِ , إِنِّي أَخَافُ أَنْ تَفْعَلَ بِكَ قُرَيْشٌ , كَمَا فَعَلَتْ ثَقِيفٌ بِعُرْوَةِ بْنِ مَسْعُودٍ , دَعَاهُمْ إِلَى اللهِ فَقَتَلُوهُ , أَمَا وَاللهِ لَئِنْ رَكِبُوهَا مِنْهُ , لَأُضْرِمَنَّهَا عَلَيْهِمْ نَارًا» قَالَ: فَانْطَلَقَ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: فَقَالَ يَا أَهْلَ مَكَّةَ , أَسْلِمُوا تَسْلَمُوا , فَقَدِ اسْتَبْطَنْتُمْ بِأَشْهَبَ بَازِلٍ , قَالَ: وَقَدْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ الزُّبَيْرَ مِنْ قِبَلِ أَعْلَى مَكَّةَ , وَبَعَثَ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ مِنْ قِبَلِ أَسْفَلِ مَكَّةَ , قَالَ: فَقَالَ لَهُمْ: هَذَا الزُّبَيْرُ مِنْ قِبَلِ أَعْلَى مَكَّةَ , وَهَذَا خَالِدٌ مِنْ قِبَلِ أَسْفَلِ مَكَّةَ , وَخَالِدٌ وَمَا خَالِدٌ , وَخُزَاعَةُ مُجَدَّعَةُ الْأُنُوفِ , ثُمَّ قَالَ: مَنْ أَلْقَى سِلَاحَهُ فَهُوَ آمِنٌ , وَمَنْ أَغْلَقَ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ , وَمَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ , ثُمَّ قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَتَرَامَوْا بِشَيْءٍ مِنَ النَّبْلِ , ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ظَهَرَ عَلَيْهِمْ فَأَمَّنَ النَّاسَ إِلَّا خُزَاعَةَ عَنْ بَنِي بَكْرٍ , وَذَكَرَ أَرْبَعَةً , مِقْيَسَ بْنَ ضَبَابَةَ , وَعَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِي سَرْحٍ , وَابْنَ خَطَلٍ , وَسَارَةَ مَوْلَاةَ بَنِي هَاشِمٍ " , قَالَ حَمَّادٌ: سَارَةُ فِي حَدِيثِ أَيُّوبَ , أَوْ فِي حَدِيثِ غَيْرِهِ , قَالَ: " فَقَاتَلَهُمْ خُزَاعَةُ إِلَى نِصْفِ النَّهَارِ , فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {أَلَا تُقَاتِلُونَ قَوْمًا نَكَثُوا أَيْمَانَهُمْ وَهَمُّوا بِإِخْرَاجِ الرَّسُولِ} [التوبة: 13] إِلَى قَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ {وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ} [التوبة: 14] قَالَ: خُزَاعَةُ , {وَيُذْهِبْ غَيْظَ قُلُوبِهِمْ وَيَتُوبُ اللهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ} [التوبة: 15]

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৫৫
empty
৫৪।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৫৬
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৫৬। ফাহাদ ইবনে সুলায়মান (রাহঃ) ..... ইবনে ইসহাক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরকে মুহাম্মাদ ইবনে মুসলিম ইবনে শিহাব যুহরী (রাহঃ) প্রমুখ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হুদায়বিয়ার বছর কুরায়শের সঙ্গে এ মর্মে সন্ধি করেছেন যে, যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর অঙ্গীকারে প্রবেশ করতে ইচ্ছা করে সে যেন তাতে প্রবেশ করে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কুরায়শের অঙ্গীকারে প্রবেশ করতে চায় সে যেন তাতে প্রবেশে করে। সুতরাং খােযা'আ ও বানূ কা'ব ইত্যাদি গোত্র ঝাপিয়ে পড়ল এবং তাদের সঙ্গে অন্য কিছু লােক তারা বলল, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর অঙ্গীকারে প্রবেশ করেছি। অপর পক্ষে বানূ বকর তাড়াতাড়ি করে বলল, আমরা কুরায়শের অঙ্গীকারে প্রবেশ করছি। কুরায়শরা এক বছরের কিছু বেশী এই ওয়াদার উপর বহাল ছিলাে। অতঃপর বানূ বকর মক্কার নিচ দিক দিয়ে খােযা'আ গােত্রের মাল লুট করে নিলাে। যুবাইর (রাযিঃ) তাকে বললেন, ওই সময়ই (রাতে) তাদের উপর আক্রমণ কর এবং তারা তাদের এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। আর কাওম সম্মুখে অগ্রসর হলাে এবং তারা পরস্পরে যুদ্ধ করল। কুরায়শরা বানূ বকরকে অস্ত্র দ্বারা সাহায্য করল এবং গােপনে তাদের সঙ্গে তীর দিয়ে লড়াই করল। অবশেষে তারা হারামের দিকে খােযা'আ কবীলা অপেক্ষা সম্মুখে অগ্রসর হয়ে গেলাে। সেই দিন বানূ বকরের নেতৃত্ব নওফল ইবনে মুআবিয়া'র হাতে ছিলাে। যখন তারা হারামে পৌছাল, বানূ বকর বলল, হে নওফল! ধ্বংস, ধ্বংস। অবশ্যই আমরা হারামে প্রবেশ করে ফেলেছি। তখন সে একটি গুরুতর কথা বলল যে, আজ এর কোন মা'বুদ নেই, হে বানূ বকর! তােমরা নিজেদের বদলা নাও। খােযা'আ কবীলা ইসলামের পূর্বে তিন ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলাে এবং তারা যুদ্ধ থেকে আলাদা ছিলাে। (তাদের নাম ছিলাে এইঃ) দুওয়াইব, কুলসূম ও সুলায়মান ইবনে আসওয়াদ ইবনে যুরাইক ইবনে ইয়া'মুর। আমার বয়সের কসম, হে বানূ বকর! তােমরা হারামে পৌঁছে গিয়েছ, তােমরা কি এতে তােমাদের বদলা নিবেনা। রাবী বলেন, তারা রাতে তাদের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলাে। তারা ওয়াতীর নামক জায়গায় তাদের বিরুদ্ধে রাতে অতর্কিত আক্রমণ করল। তার সঙ্গে তার কাওমের এক ব্যক্তি ছিলাে, যাকে ‘মুনইয়া’ বলা হত, সে একা ছিলাে। সে এবং তামীম বের হল। মুনইয়া বলল, হে তামীম! তুমি তােমার জীবনের প্রতি সদয় হও। আল্লাহর কসম, আমি তাে মরেই গিয়েছি, তারা আমাকে হত্যা করুক অথবা না করুক। তামীম চলল এবং সে মুনইয়াকে এই অবস্থায় পেল যে, লােকেরা তাকে হত্যা করে ফেলেছিলাে। তামীম রক্ষা পেল। সে যখন মক্কাতে গেল তখন বুদাইল ইবনে ওয়ারাকা এবং তাদের গােলাম রাফি'-এর বাড়িতে গিয়ে মিলিত হল। আর আমর ইবনে সালিম বেরিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাে। সে দাড়িয়ে গেল, যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মসজিদে বসা ছিলেন। অনন্তর আমর সেখানে এই কবিতা গুচ্ছ আবৃত্তি করেঃ
* হে আল্লাহ! আমি মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে আমাদের পিতা এবং তার পিতামহের মাঝে স্থিরকৃত চুক্তি স্মরণ করে দিচ্ছি।
* আমরা পিতা ছিলাম (বয়সে বড় ছিলাম) এবং আপনি ছিলেন সন্তান।
আমরা সেখানে সন্ধি করেছি (শান্তি ও নিরাপত্তা), তা থেকে হাত ঘুটিয়ে নেইনি।
* হে আল্লাহ! আল্লাহর রাসূলকে (ﷺ) বলিষ্ঠ সাহায্য কর। আপনি আল্লাহর বান্দাদেরকে আহবান করুন সাহায্যের জন্য, তারা এগিয়ে আসবে।
* তাদের মাঝে রয়েছেন আল্লাহর রাসূল (ﷺ) কোষ মুক্ত তরবারি নিয়ে। যদি অপমান ও অপদস্ততা নেমে আসে তবে যেন তা পৃথক থাকে তাঁর নূরানী (আলকোজ্জ্বল) চেহারা থেকে (তিনি নিরাপদ থাকবেন)।
* এরূপ সু-বিশাল বাহিনী, যা সমুদ্রের ন্যায় বুদবুদ সৃষ্টি করে। অবশ্যই কুরায়শরা তােমার সঙ্গে কৃত চুক্তির বিরােধিতা করেছে।
* তারা তােমার সঙ্গে কৃত মজবুত ও সুদৃঢ় অঙ্গীকারকে ভেঙ্গে দিয়েছে। তারা কাদা'তে (মক্কার উঁচু এলাকা) আমার জন্য ঘাটি প্রস্তুত করে রেখেছে।
* এবং তারা ধারণা করেছে যে, আমি কাউকে ডাকব না। তারা নিতান্তই দুর্বল এবং স্বল্প সংখ্যক।
* তারা আমাদের বিরুদ্ধে ওয়াতীর জায়গা থেকে শেষ প্রহরে আক্রমণ করেছে। তারা আমাদেরকে রুকু-সিজদা অবস্থায় হত্যা করেছে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, বানূ কা'ব-এর বিজয় সূচিত হয়েছে। অতঃপর বুদায়ল ইবনে ওয়ারাকা কবীলা খােযা আ’র কতিপয় ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে মদীনায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাে এবং যা কিছু তাদের উপর ঘটেছে তা তাকে অবহিত করে তারা ফিরে আসে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, বােধ হয় তােমরা আবু সুফইয়ান-এর সঙ্গে মিলিত হবে। যে এই জন্য এসেছে যে, চুক্তি এবং মেয়াদ বৃদ্ধি করবে। অতঃপর অনুরূপ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। আয়্যূব (রাহঃ) ইকরামা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে আবু সুফইয়ান কর্তৃক আবু বকর (রাযিঃ), উমার (রাযিঃ), আলী (রাযিঃ) ও ফাতিমা (রাহঃ) থেকে জবাব প্রত্যাশায় এবং তাঁকে তাঁদের প্রত্যেকের জবাব যা তারা তাকে দিয়েছেন, যা ইকরামা (রাহঃ) সূত্রে আয়্যূব (রাহঃ)-এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে। তবে তিনি আব্বাস (রাযিঃ)-এর সঙ্গে আবু সুফইয়ানের আলােচনা এবং আব্বাস (রাযিঃ) কর্তৃক তাকে নিরাপত্তা প্রদান, অধিকন্তু তার ইসলাম গ্রহণের বিষয় উল্লেখ করেন নাই, না তিনি অবশিষ্ট হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আবু জাফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এই দুই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এবং মক্কাবাসীদের মাঝে যে সন্ধি সংঘটিত হয়েছিলাে তাতে কবীলা খােযাআ তাঁর সন্ধিতে শামিল হলাে। এর কারণ হল সেই পুরাতন চুক্তি যা তাঁর এবং তাদের মাঝে স্থাপিত হয়েছিলাে। বানূ বকর ঐ চুক্তির কারণে যা তাদের এবং কুরায়শের মাঝে স্থাপিত হয়েছিলাে, কুরায়শের সন্ধিতে শামিল হলাে। সুতরাং সন্ধির ব্যাপারে এদের প্রত্যেক দলের মিত্রদের হুকুম তার অনুরূপ হয়ে গিয়েছিলাে অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মিত্রের হুকুম তার হুকুমের অনুরূপ এবং কুরায়শের মিত্রের হুকুম তাদের হুকুমের অনুরূপ হয়ে গিয়েছিলাে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মিত্রদের এবং কুরায়শদের মিত্রদের মাঝে যুদ্ধ হলাে। তাই এটা কুরায়শদের মিত্রদের পক্ষ থেকে ওই সন্ধিকে ভঙ্গ করা ছিলাে যাতে তারা শামিল হয়ে গিয়েছিলাে এবং ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া ছিলাে। এতে করে তারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকারী সাব্যস্ত হলাে। অতঃপর কুরায়শরা তাদের মিত্রদের সাহায্য করে কবীলা-খােযাআ'র বিরুদ্ধে লড়াই করলাে। ফলে তাদের কিছু লােক নিহত হলাে। অথচ সন্ধি তাদেরকে এ থেকে বাধা দিচ্ছিলাে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা যা কিছু করেছে তা চুক্তি ভঙ্গ এবং কৃত সন্ধি থেকে বেরিয়ে যাওয়া ছিলাে। তাই এভাবে কুরায়শরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকারী ছিলাে।
পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ বলেন যে, যা কিছু তােমরা উল্লেখ করেছ সেটা কিরূপে সম্ভব, যখন কিনা তােমরা রিওয়ায়াত করেছ যে, আবু সুফইয়ান মদীনায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হয়েছে। আর এই উপস্থিতি বানূ বকর এবং কবীলা খােযাআ’র মাঝে লড়াই-এর পরে হয়েছে এবং কুরায়শরা ইতিপূর্বে বানূ বকরের সাহায্য করে ফেলেছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর তার (আবু সুফইয়ান-এর) অবস্থা সম্পর্কে জানা ছিলাে। এতদসত্ত্বেও নাতাে তিনি তার সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করেছেন না তাকে বাধা দিয়েছেন। এটা প্রমাণ বহন করে যে, সে তার কাছে তার নিরাপত্তায় ছিলাে। বানূ বকর এবং খােযাআর মাঝে সংঘটিত যুদ্ধের কারণে ওই নিরাপত্তা থেকে বের হয়ে যায়নি। আর কুরায়শরা খাদ্যসামগ্রী অস্ত্রশস্ত্র এবং ছত্রচ্ছায়া প্রদানের দ্বারা বানু বকরের যে সাহায্য করেছে, তাতেও সেই সন্ধি ভঙ্গ হয়নি, যা তাদের ও রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মাঝে স্থাপিত হয়েছিলাে এবং না সে এর থেকে বের হয়ে গিয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে অপরাপর আলিমদের দলীল হলাে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক আবু সুফইয়ানকে বাধা প্রদান না করার কারণ এটা ছিলাে না যে, তাঁর ও মক্কাবাসীদের মাঝে সন্ধি অবশিষ্ট ছিলাে। বরং তিনি তাকে এই জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন যে, সে প্রথমােক্ত সন্ধি ব্যতীত দ্বিতীয় সন্ধির জন্য মক্কাবাসীদের পক্ষ থেকে তাঁর দরবারে প্রতিনিধি হিসাবে এসেছিলাে। কেননা প্রথমােক্ত সন্ধি ভেঙ্গে গিয়েছিলাে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হত্যা ইত্যাদি দ্বারা তাকে প্রতিরােধ করেন নাই। বরং দূতদের ব্যাপারে (সাধারণ) নিয়ম হলাে তাদেরকে হত্যা না করা।
অতঃপর এ বিষয়ে তার থেকে নিম্নোক্ত হাদীস বর্ণিত আছেঃ
* হে আল্লাহ! আমি মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে আমাদের পিতা এবং তার পিতামহের মাঝে স্থিরকৃত চুক্তি স্মরণ করে দিচ্ছি।
* আমরা পিতা ছিলাম (বয়সে বড় ছিলাম) এবং আপনি ছিলেন সন্তান।
আমরা সেখানে সন্ধি করেছি (শান্তি ও নিরাপত্তা), তা থেকে হাত ঘুটিয়ে নেইনি।
* হে আল্লাহ! আল্লাহর রাসূলকে (ﷺ) বলিষ্ঠ সাহায্য কর। আপনি আল্লাহর বান্দাদেরকে আহবান করুন সাহায্যের জন্য, তারা এগিয়ে আসবে।
* তাদের মাঝে রয়েছেন আল্লাহর রাসূল (ﷺ) কোষ মুক্ত তরবারি নিয়ে। যদি অপমান ও অপদস্ততা নেমে আসে তবে যেন তা পৃথক থাকে তাঁর নূরানী (আলকোজ্জ্বল) চেহারা থেকে (তিনি নিরাপদ থাকবেন)।
* এরূপ সু-বিশাল বাহিনী, যা সমুদ্রের ন্যায় বুদবুদ সৃষ্টি করে। অবশ্যই কুরায়শরা তােমার সঙ্গে কৃত চুক্তির বিরােধিতা করেছে।
* তারা তােমার সঙ্গে কৃত মজবুত ও সুদৃঢ় অঙ্গীকারকে ভেঙ্গে দিয়েছে। তারা কাদা'তে (মক্কার উঁচু এলাকা) আমার জন্য ঘাটি প্রস্তুত করে রেখেছে।
* এবং তারা ধারণা করেছে যে, আমি কাউকে ডাকব না। তারা নিতান্তই দুর্বল এবং স্বল্প সংখ্যক।
* তারা আমাদের বিরুদ্ধে ওয়াতীর জায়গা থেকে শেষ প্রহরে আক্রমণ করেছে। তারা আমাদেরকে রুকু-সিজদা অবস্থায় হত্যা করেছে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, বানূ কা'ব-এর বিজয় সূচিত হয়েছে। অতঃপর বুদায়ল ইবনে ওয়ারাকা কবীলা খােযা আ’র কতিপয় ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে মদীনায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাে এবং যা কিছু তাদের উপর ঘটেছে তা তাকে অবহিত করে তারা ফিরে আসে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, বােধ হয় তােমরা আবু সুফইয়ান-এর সঙ্গে মিলিত হবে। যে এই জন্য এসেছে যে, চুক্তি এবং মেয়াদ বৃদ্ধি করবে। অতঃপর অনুরূপ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। আয়্যূব (রাহঃ) ইকরামা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে আবু সুফইয়ান কর্তৃক আবু বকর (রাযিঃ), উমার (রাযিঃ), আলী (রাযিঃ) ও ফাতিমা (রাহঃ) থেকে জবাব প্রত্যাশায় এবং তাঁকে তাঁদের প্রত্যেকের জবাব যা তারা তাকে দিয়েছেন, যা ইকরামা (রাহঃ) সূত্রে আয়্যূব (রাহঃ)-এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে। তবে তিনি আব্বাস (রাযিঃ)-এর সঙ্গে আবু সুফইয়ানের আলােচনা এবং আব্বাস (রাযিঃ) কর্তৃক তাকে নিরাপত্তা প্রদান, অধিকন্তু তার ইসলাম গ্রহণের বিষয় উল্লেখ করেন নাই, না তিনি অবশিষ্ট হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আবু জাফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এই দুই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এবং মক্কাবাসীদের মাঝে যে সন্ধি সংঘটিত হয়েছিলাে তাতে কবীলা খােযাআ তাঁর সন্ধিতে শামিল হলাে। এর কারণ হল সেই পুরাতন চুক্তি যা তাঁর এবং তাদের মাঝে স্থাপিত হয়েছিলাে। বানূ বকর ঐ চুক্তির কারণে যা তাদের এবং কুরায়শের মাঝে স্থাপিত হয়েছিলাে, কুরায়শের সন্ধিতে শামিল হলাে। সুতরাং সন্ধির ব্যাপারে এদের প্রত্যেক দলের মিত্রদের হুকুম তার অনুরূপ হয়ে গিয়েছিলাে অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মিত্রের হুকুম তার হুকুমের অনুরূপ এবং কুরায়শের মিত্রের হুকুম তাদের হুকুমের অনুরূপ হয়ে গিয়েছিলাে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মিত্রদের এবং কুরায়শদের মিত্রদের মাঝে যুদ্ধ হলাে। তাই এটা কুরায়শদের মিত্রদের পক্ষ থেকে ওই সন্ধিকে ভঙ্গ করা ছিলাে যাতে তারা শামিল হয়ে গিয়েছিলাে এবং ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া ছিলাে। এতে করে তারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকারী সাব্যস্ত হলাে। অতঃপর কুরায়শরা তাদের মিত্রদের সাহায্য করে কবীলা-খােযাআ'র বিরুদ্ধে লড়াই করলাে। ফলে তাদের কিছু লােক নিহত হলাে। অথচ সন্ধি তাদেরকে এ থেকে বাধা দিচ্ছিলাে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা যা কিছু করেছে তা চুক্তি ভঙ্গ এবং কৃত সন্ধি থেকে বেরিয়ে যাওয়া ছিলাে। তাই এভাবে কুরায়শরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকারী ছিলাে।
পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ বলেন যে, যা কিছু তােমরা উল্লেখ করেছ সেটা কিরূপে সম্ভব, যখন কিনা তােমরা রিওয়ায়াত করেছ যে, আবু সুফইয়ান মদীনায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হয়েছে। আর এই উপস্থিতি বানূ বকর এবং কবীলা খােযাআ’র মাঝে লড়াই-এর পরে হয়েছে এবং কুরায়শরা ইতিপূর্বে বানূ বকরের সাহায্য করে ফেলেছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর তার (আবু সুফইয়ান-এর) অবস্থা সম্পর্কে জানা ছিলাে। এতদসত্ত্বেও নাতাে তিনি তার সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করেছেন না তাকে বাধা দিয়েছেন। এটা প্রমাণ বহন করে যে, সে তার কাছে তার নিরাপত্তায় ছিলাে। বানূ বকর এবং খােযাআর মাঝে সংঘটিত যুদ্ধের কারণে ওই নিরাপত্তা থেকে বের হয়ে যায়নি। আর কুরায়শরা খাদ্যসামগ্রী অস্ত্রশস্ত্র এবং ছত্রচ্ছায়া প্রদানের দ্বারা বানু বকরের যে সাহায্য করেছে, তাতেও সেই সন্ধি ভঙ্গ হয়নি, যা তাদের ও রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মাঝে স্থাপিত হয়েছিলাে এবং না সে এর থেকে বের হয়ে গিয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে অপরাপর আলিমদের দলীল হলাে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক আবু সুফইয়ানকে বাধা প্রদান না করার কারণ এটা ছিলাে না যে, তাঁর ও মক্কাবাসীদের মাঝে সন্ধি অবশিষ্ট ছিলাে। বরং তিনি তাকে এই জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন যে, সে প্রথমােক্ত সন্ধি ব্যতীত দ্বিতীয় সন্ধির জন্য মক্কাবাসীদের পক্ষ থেকে তাঁর দরবারে প্রতিনিধি হিসাবে এসেছিলাে। কেননা প্রথমােক্ত সন্ধি ভেঙ্গে গিয়েছিলাে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হত্যা ইত্যাদি দ্বারা তাকে প্রতিরােধ করেন নাই। বরং দূতদের ব্যাপারে (সাধারণ) নিয়ম হলাে তাদেরকে হত্যা না করা।
অতঃপর এ বিষয়ে তার থেকে নিম্নোক্ত হাদীস বর্ণিত আছেঃ
5456 - حَدَّثَنَا فَهْدُ بْنُ سُلَيْمَانَ , قَالَ: ثنا يُوسُفُ بْنُ بُهْلُولٍ , قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيسَ , قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ إِسْحَاقَ , يَقُولُ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُسْلِمِ بْنِ شِهَابٍ الزُّهْرِيُّ , وَغَيْرُهُ , قَالَ: " كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ صَالَحَ قُرَيْشًا عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ عَلَى أَنَّهُ مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَدْخُلَ فِي عَقْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَهْدِهِ دَخَلَ فِيهِ , وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يَدْخُلَ فِي عَقْدِ قُرَيْشٍ وَعَهْدِهِمْ دَخَلَ فِيهِ , فَتَوَاثَبَتْ خُزَاعَةُ وَبَنُو كَعْبٍ وَغَيْرُهُمْ مَعَهُمْ , فَقَالُوا: نَحْنُ فِي عَقْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَهْدِهِ , [ص:316] وَتَوَاثَبَتْ بَنُو بَكْرٍ , فَقَالُوا: نَحْنُ فِي عَقْدِ قُرَيْشٍ وَعَهْدِهِمْ , وَقَامَتْ قُرَيْشٌ عَلَى الْوَفَاءِ بِذَلِكَ سَنَةً وَبَعْضَ سَنَةٍ , ثُمَّ إِنَّ بَنِي بَكْرٍ عَدَوْا عَلَى خُزَاعَةَ , عَلَى مَا لَهُمْ بِأَسْفَلِ مَكَّةَ , فَقَالَ لَهُ الزُّبَيْرُ: بَيَّتُوهُمْ فِيهِ , فَأَصَابُوا مِنْهُمْ رَجُلًا وَتَجَاوَزَ الْقَوْمُ فَاقْتَتَلُوا , وَرَفَدَتْ قُرَيْشٌ بَنِي بَكْرٍ بِالسِّلَاحِ وَقَاتَلَ مَعَهُمْ مَنْ قَاتَلَ مِنْ قُرَيْشٍ بِالنَّبْلِ مُسْتَخْفِيًا , حَتَّى جَاوَزُوا خُزَاعَةَ إِلَى الْحَرَمِ , وَقَائِدُ بَنِي بَكْرٍ يَوْمَئِذٍ , نَوْفَلُ بْنُ مُعَاوِيَةَ , فَلَمَّا انْتَهَوْا إِلَى الْحَرَمِ قَالَتْ بَنُو بَكْرٍ: يَا نَوْفَلُ إِلَهَكَ إِلَهَكَ , إِنَّا قَدْ دَخَلْنَا الْحَرَمَ , فَقَالَ كَلِمَةً عَظِيمَةً: لَا إِلَهَ لَهُ الْيَوْمَ يَا بَنِي بَكْرٍ , أَصِيبُوا ثَأْرَكُمْ , قَدْ كَانَتْ خُزَاعَةُ أَصَابَتْ قَبْلَ الْإِسْلَامِ نَفَرًا ثَلَاثَةً , وَهُمْ مُتَحَرِّفُونَ , دُوَيْبًا , وَكُلْثُومًا , وَسُلَيْمَانَ بْنَ الْأَسْوَدِ بْنِ زُرَيْقِ بْنِ يَعْمُرَ , فَلَعَمْرِي يَا بَنِي بَكْرٍ , إِنَّكُمْ تَسْرِقُونَ فِي الْحَرَمِ , أَفَلَا تُصِيبُونَ ثَأْرَكُمْ فِيهِ؟ قَالَ: وَقَدْ كَانُوا أَصَابُوا مِنْهُمْ رَجُلًا لَيْلَةَ بَيَّتُوهُمْ بِالْوَتِيرِ , وَمَعَهُ رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ يُقَالُ لَهُ مُنَبِّهٌ رَجُلًا مُفْرَدًا فَخَرَجَ هُوَ وَتَمِيمٌ , فَقَالَ مُنَبِّهٌ: يَا تَمِيمُ , انْجُ بِنَفْسِكَ , فَأَمَّا أَنَا , فَوَاللهِ إِنِّي لَمَيِّتٌ , قَتَلُونِي أَوْ لَمْ يَقْتُلُونِي , فَانْطَلَقَ تَمِيمٌ فَأُدْرِكَ مُنَبِّهٌ فَقَتَلُوهُ وَأَفْلَتَ تَمِيمٌ , فَلَمَّا دَخَلَ مَكَّةَ , لَحِقَ إِلَى دَارِ بُدَيْلِ بْنِ وَرْقَاءَ , وَدَارِ رَافِعٍ مَوْلًى لَهُمْ , وَخَرَجَ عَمْرُو بْنُ سَالِمٍ , حَتَّى قَدِمَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوَقَفَ وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ فِي الْمَسْجِدِ , فَقَالَ عَمْرٌو:
[البحر الرجز]
لَاهُمَّ إِنِّي نَاشِدٌ مُحَمَّدَا ... حِلْفَ أَبِينَا وَأَبِيهِ الْأَتْلَدَا
وَالِدًا كُنَّا وَكُنْتَ وَلَدَا ... ثُمَّةَ أَسْلَمْنَا فَلَمْ نَنْزِعْ يَدَا
فَانْصُرْ رَسُولَ اللهِ نَصْرًا أَعْتَدَا ... وَادْعُ عِبَادَ اللهِ يَأْتُوا مَدَدَا
فِيهِمْ رَسُولُ اللهِ قَدْ تَجَرَّدَا ... إِنْ سِيمَ خَسْفًا وَجْهُهُ تَرَبَّدَا
فِي فَيْلَقٍ كَالْبَحْرِ يَأْتِي مُزْبِدَا ... إِنَّ قُرَيْشًا أَخْلَفُوكَ الْمَوْعِدَا
وَنَقَضُوا مِيثَاقَكَ الْمُؤَكَّدَا ... وَجَعَلُوا لِي فِي كَدَاءَ رُصَّدَا
وَزَعَمُوا أَنْ لَسْتُ أَدْعُو أَحَدًا ... وَهُمْ أَذَلُّ وَأَقَلُّ عَدَدَا
هُمْ بَيَّتُونَا بِالْوَتِيرِ هُجَّدَا ... فَقَتَلُونَا رُكَّعًا وَسُجَّدَا
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ نَصَرْتُ بَنِي كَعْبٍ , ثُمَّ خَرَجَ بُدَيْلُ بْنُ وَرْقَاءَ فِي نَفَرٍ مِنْ خُزَاعَةَ حَتَّى قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْمَدِينَةِ فَأَخْبَرُوهُ بِمَا أُصِيبَ مِنْهُمْ وَقَدْ رَجَعُوا , [ص:317] وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: كَأَنَّكُمْ بِأَبِي سُفْيَانَ قَدْ قَدِمَ لِيَزِيدَ فِي الْعَهْدِ , وَيَزِيدَ فِي الْمُدَّةِ " , ثُمَّ ذَكَرَ نَحْوًا مِمَّا فِي حَدِيثِ أَيُّوبَ عَنْ عِكْرِمَةَ فِي طَلَبِ أَبِي سُفْيَانَ الْجَوَابَ مِنْ أَبِي بَكْرٍ , وَمِنْ عُمَرَ , وَمِنْ عَلِيٍّ , وَمِنْ فَاطِمَةَ رِضْوَانُ اللهُ عَلَيْهِمْ أَجْمَعِينَ , وَجَوَابِ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ لَهُ بِمَا أَجَابَهُ فِي ذَلِكَ , عَلَى مَا فِي حَدِيثِ أَيُّوبَ , عَنْ عِكْرِمَةَ , وَلَمْ يَذْكُرْ خَبَرَ أَبِي سُفْيَانَ مَعَ الْعَبَّاسِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , وَلَا أَمَانَ الْعَبَّاسِ إِيَّاهُ وَلَا إِسْلَامَهُ , وَلَا بَقِيَّةَ الْحَدِيثِ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فِي هَذَيْنِ الْحَدِيثَيْنِ أَنَّ الصُّلْحَ الَّذِي كَانَ بَيْنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَيْنَ أَهْلِ مَكَّةَ , دَخَلَتْ خُزَاعَةُ فِي صُلْحِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلْحِلْفِ الَّذِي كَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَهُ , وَدَخَلَتْ بَنُو بَكْرٍ فِي صُلْحِ قُرَيْشٍ , لِلْحِلْفِ الَّذِي كَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَهُ , فَصَارَ حُكْمُ حُلَفَاءِ كُلِّ فَرِيقٍ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمِنْ قُرَيْشٍ فِي الصُّلْحِ , كَحُكْمِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَحُكْمِ قُرَيْشٍ , وَكَانَ بَيْنَ حُلَفَاءِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَيْنَ حُلَفَاءِ قُرَيْشٍ مِنَ الْقِتَالِ , مَا كَانَ , فَكَانَ ذَلِكَ نَقْضًا مِنْ حُلَفَاءِ قُرَيْشٍ لِلصُّلْحِ الَّذِي كَانُوا دَخَلُوا فِيهِ , وَخُرُوجًا مِنْهُمْ بِذَلِكَ مِنْهُ , فَصَارُوا بِذَلِكَ , حَرْبًا لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابِهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ , ثُمَّ أَمَدَّتْ قُرَيْشٌ حُلَفَاءَهَا هَؤُلَاءِ بِمَا قَوَّوْهُمْ بِهِ عَلَى قِتَالِ خُزَاعَةَ , حَتَّى قُتِلَ مِنْهُمْ مَنْ قُتِلَ وَقَدْ كَانَ الصُّلْحُ مَنَعَهُمْ مِنْ ذَلِكَ , فَكَانَ فِيمَا فَعَلُوا مِنْ ذَلِكَ , نَقْضًا لِلْعَهْدِ , وَخُرُوجًا مِنَ الصُّلْحِ , فَصَارَتْ قُرَيْشٌ بِذَلِكَ , حَرْبًا لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلِأَصْحَابِهِ , فَقَالَ الْآخَرُونَ: وَكَيْفَ يَكُونُ بِمَا ذَكَرْتُمْ كَمَا وَصَفْتُمْ , وَقَدْ رَوَيْتُمْ أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ وَفَدَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ بَعْدَ أَنْ كَانَ بَيْنَ بَنِي بَكْرٍ وَبَيْنَ خُزَاعَةَ مِنَ الْقِتَالِ مَا كَانَ , وَبَعْدَ أَنْ كَانَ مِنْ قُرَيْشٍ لِبَنِي بَكْرٍ مِنَ الْمَعُونَةِ لَهُمْ مَا كَانَ عَلِمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَوْضِعِهِ , فَلَمْ يَصِلْهُ وَلَمْ يَعْرِضْ لَهُ , فَدَلَّ ذَلِكَ عَلَى أَنَّهُ كَانَ عِنْدَهُ فِي أَمَانِهِ عَلَى حَالِهِ , غَيْرَ خَارِجٍ مِنْهُ مِمَّا كَانَ مِنْ بَنِي بَكْرٍ فِي قِتَالِ خُزَاعَةَ , وَمَا كَانَ مِنْ قُرَيْشٍ فِي مَعُونَةِ بَنِي بَكْرٍ بِمَا أَعَانُوهُمْ بِهِ مِنَ الطَّعَامِ وَالسِّلَاحِ وَالتَّظْلِيلِ , غَيْرِ نَاقِضٍ لِأَمَانِهِ بِصُلْحِهِ الَّذِي كَانَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَغَيْرَ مُخْرِجٍ لَهُ مِنْهُ , فَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ عَلَيْهِمْ لِلْآخَرِينَ أَنَّ تَرْكَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التَّعَرُّضَ لِأَبِي سُفْيَانَ , لَمْ يَكُنْ لِأَنَّ الصُّلْحَ الَّذِي كَانَ بَيْنَ رَسُولِ اللهِ وَبَيْنَ أَهْلِ مَكَّةَ قَائِمٌ , وَلَكِنَّهُ تَرَكَهُ , لِأَنَّهُ كَانَ وَافِدًا إِلَيْهِ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ , طَالِبًا الصُّلْحَ الثَّانِيَ , سِوَى الصُّلْحِ الْأَوَّلِ , لِانْتِقَاضِ الصُّلْحِ الْأَوَّلِ , فَلَمْ يَعْرِضْ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَتْلٍ وَلَا غَيْرِهِ , لِأَنَّ مِنْ سُنَّةِ الرُّسُلِ أَنْ لَا يُقْتَلُوا ثُمَّ قَدْ رُوِيَ عَنْهُ فِي ذَلِكَ , مَا
[البحر الرجز]
لَاهُمَّ إِنِّي نَاشِدٌ مُحَمَّدَا ... حِلْفَ أَبِينَا وَأَبِيهِ الْأَتْلَدَا
وَالِدًا كُنَّا وَكُنْتَ وَلَدَا ... ثُمَّةَ أَسْلَمْنَا فَلَمْ نَنْزِعْ يَدَا
فَانْصُرْ رَسُولَ اللهِ نَصْرًا أَعْتَدَا ... وَادْعُ عِبَادَ اللهِ يَأْتُوا مَدَدَا
فِيهِمْ رَسُولُ اللهِ قَدْ تَجَرَّدَا ... إِنْ سِيمَ خَسْفًا وَجْهُهُ تَرَبَّدَا
فِي فَيْلَقٍ كَالْبَحْرِ يَأْتِي مُزْبِدَا ... إِنَّ قُرَيْشًا أَخْلَفُوكَ الْمَوْعِدَا
وَنَقَضُوا مِيثَاقَكَ الْمُؤَكَّدَا ... وَجَعَلُوا لِي فِي كَدَاءَ رُصَّدَا
وَزَعَمُوا أَنْ لَسْتُ أَدْعُو أَحَدًا ... وَهُمْ أَذَلُّ وَأَقَلُّ عَدَدَا
هُمْ بَيَّتُونَا بِالْوَتِيرِ هُجَّدَا ... فَقَتَلُونَا رُكَّعًا وَسُجَّدَا
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ نَصَرْتُ بَنِي كَعْبٍ , ثُمَّ خَرَجَ بُدَيْلُ بْنُ وَرْقَاءَ فِي نَفَرٍ مِنْ خُزَاعَةَ حَتَّى قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْمَدِينَةِ فَأَخْبَرُوهُ بِمَا أُصِيبَ مِنْهُمْ وَقَدْ رَجَعُوا , [ص:317] وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: كَأَنَّكُمْ بِأَبِي سُفْيَانَ قَدْ قَدِمَ لِيَزِيدَ فِي الْعَهْدِ , وَيَزِيدَ فِي الْمُدَّةِ " , ثُمَّ ذَكَرَ نَحْوًا مِمَّا فِي حَدِيثِ أَيُّوبَ عَنْ عِكْرِمَةَ فِي طَلَبِ أَبِي سُفْيَانَ الْجَوَابَ مِنْ أَبِي بَكْرٍ , وَمِنْ عُمَرَ , وَمِنْ عَلِيٍّ , وَمِنْ فَاطِمَةَ رِضْوَانُ اللهُ عَلَيْهِمْ أَجْمَعِينَ , وَجَوَابِ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ لَهُ بِمَا أَجَابَهُ فِي ذَلِكَ , عَلَى مَا فِي حَدِيثِ أَيُّوبَ , عَنْ عِكْرِمَةَ , وَلَمْ يَذْكُرْ خَبَرَ أَبِي سُفْيَانَ مَعَ الْعَبَّاسِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , وَلَا أَمَانَ الْعَبَّاسِ إِيَّاهُ وَلَا إِسْلَامَهُ , وَلَا بَقِيَّةَ الْحَدِيثِ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فِي هَذَيْنِ الْحَدِيثَيْنِ أَنَّ الصُّلْحَ الَّذِي كَانَ بَيْنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَيْنَ أَهْلِ مَكَّةَ , دَخَلَتْ خُزَاعَةُ فِي صُلْحِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلْحِلْفِ الَّذِي كَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَهُ , وَدَخَلَتْ بَنُو بَكْرٍ فِي صُلْحِ قُرَيْشٍ , لِلْحِلْفِ الَّذِي كَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَهُ , فَصَارَ حُكْمُ حُلَفَاءِ كُلِّ فَرِيقٍ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمِنْ قُرَيْشٍ فِي الصُّلْحِ , كَحُكْمِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَحُكْمِ قُرَيْشٍ , وَكَانَ بَيْنَ حُلَفَاءِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَيْنَ حُلَفَاءِ قُرَيْشٍ مِنَ الْقِتَالِ , مَا كَانَ , فَكَانَ ذَلِكَ نَقْضًا مِنْ حُلَفَاءِ قُرَيْشٍ لِلصُّلْحِ الَّذِي كَانُوا دَخَلُوا فِيهِ , وَخُرُوجًا مِنْهُمْ بِذَلِكَ مِنْهُ , فَصَارُوا بِذَلِكَ , حَرْبًا لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابِهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ , ثُمَّ أَمَدَّتْ قُرَيْشٌ حُلَفَاءَهَا هَؤُلَاءِ بِمَا قَوَّوْهُمْ بِهِ عَلَى قِتَالِ خُزَاعَةَ , حَتَّى قُتِلَ مِنْهُمْ مَنْ قُتِلَ وَقَدْ كَانَ الصُّلْحُ مَنَعَهُمْ مِنْ ذَلِكَ , فَكَانَ فِيمَا فَعَلُوا مِنْ ذَلِكَ , نَقْضًا لِلْعَهْدِ , وَخُرُوجًا مِنَ الصُّلْحِ , فَصَارَتْ قُرَيْشٌ بِذَلِكَ , حَرْبًا لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلِأَصْحَابِهِ , فَقَالَ الْآخَرُونَ: وَكَيْفَ يَكُونُ بِمَا ذَكَرْتُمْ كَمَا وَصَفْتُمْ , وَقَدْ رَوَيْتُمْ أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ وَفَدَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ بَعْدَ أَنْ كَانَ بَيْنَ بَنِي بَكْرٍ وَبَيْنَ خُزَاعَةَ مِنَ الْقِتَالِ مَا كَانَ , وَبَعْدَ أَنْ كَانَ مِنْ قُرَيْشٍ لِبَنِي بَكْرٍ مِنَ الْمَعُونَةِ لَهُمْ مَا كَانَ عَلِمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَوْضِعِهِ , فَلَمْ يَصِلْهُ وَلَمْ يَعْرِضْ لَهُ , فَدَلَّ ذَلِكَ عَلَى أَنَّهُ كَانَ عِنْدَهُ فِي أَمَانِهِ عَلَى حَالِهِ , غَيْرَ خَارِجٍ مِنْهُ مِمَّا كَانَ مِنْ بَنِي بَكْرٍ فِي قِتَالِ خُزَاعَةَ , وَمَا كَانَ مِنْ قُرَيْشٍ فِي مَعُونَةِ بَنِي بَكْرٍ بِمَا أَعَانُوهُمْ بِهِ مِنَ الطَّعَامِ وَالسِّلَاحِ وَالتَّظْلِيلِ , غَيْرِ نَاقِضٍ لِأَمَانِهِ بِصُلْحِهِ الَّذِي كَانَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَغَيْرَ مُخْرِجٍ لَهُ مِنْهُ , فَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ عَلَيْهِمْ لِلْآخَرِينَ أَنَّ تَرْكَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التَّعَرُّضَ لِأَبِي سُفْيَانَ , لَمْ يَكُنْ لِأَنَّ الصُّلْحَ الَّذِي كَانَ بَيْنَ رَسُولِ اللهِ وَبَيْنَ أَهْلِ مَكَّةَ قَائِمٌ , وَلَكِنَّهُ تَرَكَهُ , لِأَنَّهُ كَانَ وَافِدًا إِلَيْهِ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ , طَالِبًا الصُّلْحَ الثَّانِيَ , سِوَى الصُّلْحِ الْأَوَّلِ , لِانْتِقَاضِ الصُّلْحِ الْأَوَّلِ , فَلَمْ يَعْرِضْ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَتْلٍ وَلَا غَيْرِهِ , لِأَنَّ مِنْ سُنَّةِ الرُّسُلِ أَنْ لَا يُقْتَلُوا ثُمَّ قَدْ رُوِيَ عَنْهُ فِي ذَلِكَ , مَا

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৫৭
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৫৭। আবু গাসসান (রাহঃ) ..... ইবনে মুয়াইয সা'দী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার ঘােড়াকে বৃক্ষের সাথে বাঁধার জন্য সম্মুখে অগ্রসর হলাম। অনন্তর আমি বানূ হানীফার একটি মসজিদের কাছ দিয়ে অতিক্রম করলাম। আমি শুনলাম, তারা সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, মুসায়লামা আল্লাহর রাসুল। আমি আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-এর নিকট ফিরে গেলাম এবং তাঁকে তাদের বিষয়ে অবহিত করলাম। তিনি কিছু সিপাহী পাঠালেন। তারা তাদেরকে পাকড়াও করে এবং তাদেরকে তাঁর দরবারে উপস্থিত করা হয়। তারা তাওবা করে নিজেদের উক্তি থেকে ফিরে আসে এবং বলে, আমরা আগামীতে এরূপ কথা পুনঃ বলবনা। অনন্তর তিনি তাদেরকে ছেড়ে দিলেন। অতঃপর তাদের থেকে এক ব্যক্তি এল, যাকে আব্দুল্লাহ্ ইবনে নাওয়াহা বলা হত। তিনি তার গর্দান উড়িয়ে দিলেন। লােকেরা বলল, আপনি এক কাওমকে এক অভিন্ন বিষয়ে পাকড়াও করে তাদের কতককে ছেড়ে দিলেন এবং কতককে হত্যা করলেন। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় তার কাছে ইবনে নাওয়াহা এবং তার সঙ্গে অন্য এক ব্যক্তি আসে, যাকে ওয়াসসাল ইবনে হাজার বলা হত। এরা দুজন মুসায়লামার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হয়ে এসেছিলাে। রাসূলুল্লাহু (ﷺ) তাদের উভয়কে বললেন, তােমরা কি সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, আমি আল্লাহর রাসূল। তারা বলল, আপনি কি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুসায়লামা আল্লাহর রাসূল। তিনি বললেন, আমি আল্লাহ তা'আলা ও তার রাসূলের উপর ঈমান এনেছি।
বস্তুত আমি যদি কোন দূতকে হত্যা করতাম তবে তােমাদের দু'জনকে হত্যা করতাম। (আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ রা বলেন) আমি একে এ জন্যই হত্যা করেছি। কেননা এ মুসায়লামা-কে রাসূল মেনে রাসূল (ﷺ)-এর নবুওয়তকে অস্বীকার করে হারবী কাফির হয়ে গিয়েছিলাে]।
বস্তুত আমি যদি কোন দূতকে হত্যা করতাম তবে তােমাদের দু'জনকে হত্যা করতাম। (আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ রা বলেন) আমি একে এ জন্যই হত্যা করেছি। কেননা এ মুসায়লামা-কে রাসূল মেনে রাসূল (ﷺ)-এর নবুওয়তকে অস্বীকার করে হারবী কাফির হয়ে গিয়েছিলাে]।
5457 - حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ: ثنا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ , قَالَ: ثنا عَاصِمُ بْنُ بَهْدَلَةَ , قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو وَائِلٍ قَالَ: ثنا ابْنُ مُعَيْزٍ السَّعْدِيُّ , قَالَ: خَرَجْتُ أَسْتَبِقُ فَرَسًا لِي بِالشَّجَرِ , فَمَرَرْتُ عَلَى مَسْجِدٍ مِنْ مَسَاجِدِ بَنِي حَنِيفَةَ , فَسَمِعْتُهُمْ يَشْهَدُونَ أَنَّ مُسَيْلِمَةَ رَسُولُ اللهِ , فَرَجَعْتُ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ [ص:318] رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ , فَذَكَرْتُ لَهُ أَمْرَهُمْ , فَبَعَثَ الشُّرَطَ فَأَخَذُوهُمْ , وَجِيءَ بِهِمْ إِلَيْهِ , فَتَابُوا وَرَجَعُوا عَمَّا قَالُوا , وَقَالُوا لَا نَعُودُ , فَخَلَّى سَبِيلَهُمْ , وَقَدِمَ رَجُلٌ مِنْهُمْ يُقَالُ لَهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ النَّوَّاحَةِ , فَضَرَبَ عُنُقَهُ فَقَالَ النَّاسُ: أَخَذْتَ قَوْمًا فِي أَمْرٍ وَاحِدٍ , فَخَلَّيْتَ سَبِيلَ بَعْضِهِمْ , وَقَتَلْتَ بَعْضَهُمْ , فَقَالَ: " كُنْتُ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسًا فَجَاءَهُ ابْنُ النَّوَّاحَةِ وَرَجُلٌ مَعَهُ يُقَالُ لَهُ ابْنُ وَثَّالِ بْنِ حَجَرٍ , وَافِدَيْنِ مِنْ عِنْدِ مُسَيْلِمَةَ , فَقَالَ لَهُمَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَشْهَدَانِ أَنِّي رَسُولُ اللهِ؟ فَقَالَا: أَتَشْهَدُ أَنْتَ أَنَّ مُسَيْلِمَةَ رَسُولُ اللهِ؟ فَقَالَ آمَنْتُ بِاللهِ وَبِرَسُولِهِ , لَوْ كُنْتُ قَاتِلًا وَفْدًا , لَقَتَلْتُكُمَا " فَلِذَلِكَ قَتَلْتُ هَذَا

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৫৮
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৫৮। ইউনুস (রাহঃ) ..... হাসান ইবনে আলী ইবনে আবু রাফি' (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবু রাফি (রাযিঃ) তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, সে কুরায়শদের পত্র নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাে। বলেন, আমি যখন নবী (ﷺ)-কে দেখলাম তখন আমার অন্তরে ইসলাম ঢেলে দেয়া হলাে, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ!(ﷺ) আল্লাহর কসম, আমি তাদের দিকে কস্মিন কালেও ফিরে যাবনা। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমি বিশ্বাস ঘাতকতা করিনা এবং না দূতদেরকে বাধা প্রদান করি। এই জন্য তুমি ফিরে যাও। যদি তােমার হৃদয়ে সেই অবস্থা সৃষ্টি হয় যা এখন বিদ্যমান, তবে পুনঃ চলে এস। বলেন, এরপর আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দিকে মনােনিবেশ করলাম এবং ইসলাম গ্রহণ করলাম। বুকায়র (রাহঃ) বলেন, আমাকে হাসান (রাহঃ) সংবাদ দিয়েছেন যে, আবু রাফি' (রাহঃ) কিবৃতী বংশীয় লােক ছিলেন।
5458 - حَدَّثَنَا يُونُسُ قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ , قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ , عَنْ بُكَيْرِ بْنِ الْأَشَجِّ أَنَّ الْحَسَنَ بْنَ عَلِيِّ بْنِ أَبِي رَافِعٍ حَدَّثَهُ , " أَنَّ أَبَا رَافِعٍ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ أَقْبَلَ بِكِتَابٍ مِنْ قُرَيْشٍ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , قَالَ: فَلَمَّا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُلْقِيَ فِي قَلْبِي الْإِسْلَامُ , فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ , إِنِّي وَاللهِ لَا أَرْجِعُ إِلَيْهِمْ أَبَدًا , فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَمَا إِنِّي لَا أَخِيسُ بِالْعَهْدِ وَلَا أَحْبِسُ الْبُرْدَ , وَلَكِنِ ارْجِعْ , فَإِنْ كَانَ فِي قَلْبِكَ الَّذِي فِي قَلْبِكَ الْآنَ فَارْجِعْ , قَالَ: فَرَجَعْتُ ثُمَّ أَقْبَلْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَأَسْلَمْتُ , قَالَ بُكَيْرٌ: وَأَخْبَرَنِي , أَنَّ أَبَا رَافِعٍ كَانَ قِبْطِيًّا "

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৫৯
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৫৯। ফাহাদ ইবনে সুলায়মান (রাহঃ) ..... মাসলামা ইবনে নুআইম (রাহঃ) তৎ পিতা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ)-এর নিকট ছিলাম, যখন তার কাছে মুসায়লামার দূত তার পত্র বহন করে নিয়ে আসে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঐ দুই দূতকে বলছিলেন, তােমরাও কি সেই কথা বলছ, যা সে (মুসায়লামা) বলে? তারা বল, জ্বী হ্যাঁ! অনন্তর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, যদি দূতদেরকে হত্যা না করার নিয়ম না হত তবে আমি তােমাদের দু'জনের গর্দান উড়িয়ে দিতাম।
ঐ কথার সপক্ষে দলীল হলাে যে, বানূ বকর এবং খােযা'আর মাঝে লড়াই হওয়া এবং কুরায়শ কর্তৃক তাদের সাহায্য করার কারণে মক্কাবাসীদের থেকে সন্ধি বাতিল হয়ে গেছে। আবু সুফইয়ান কর্তৃক চুক্তির নবায়ন করা এবং সন্ধির দৃঢ়তা তলব করা যখন মক্কাবাসীরা তার কাছে এটা দাবি করেছিলাে। যদি সন্ধি খতম না হয়ে যেত তবে তাদের এটার প্রয়ােজন ছিলাে না এবং যখন আবু বকর (রাযিঃ), উমার ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ), আলী (রাযিঃ) ও রাসূল (ﷺ) এর কন্যা ফাতিমা (রাযিঃ)-কে আবু সুফইয়ান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যা সওয়াল করার সওয়াল করেছে তাহলে তারা জিজ্ঞাসা করতেন যে, তােমার এরং মক্কাবাসীদের এর প্রয়ােজনীয়তা কি, তারা তাে সকলে সন্ধি এবং নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে। এখন আর তাদের এছাড়া অন্য কোন সন্ধির প্রয়ােজন নেই। অতঃপর এই আমর ইবনে সালিম কবীলা খােযা’আর একজন, যিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে ওই (কবিতা গুচ্ছের উপর ভিত্তি) অঙ্গীকার শুনাচ্ছেন যা আমরা ইকরামা (রাহঃ) ও যুহরী (রাহঃ)-এর রিওয়ায়াতে উল্লেখ করেছি এবং তিনি এ ব্যাপারে তার কাছে সাহায্য চেয়েছেন। ওই সমস্ত কবিতা গুচ্ছের অধীনে তিনি তাকে বলছেনঃ
অবশ্যই কুরায়শরা তােমার সঙ্গে কৃত চুক্তির বিরােধিতা করছে।
তারা তােমার সঙ্গে কৃত মজবুত ও সুদৃঢ় অঙ্গীকার ভেঙ্গে দিয়েছে।
আর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তার এ কথা অস্বীকার করেন নাই। অতঃপর আমর ইবনে সালিম তাকে ওই কথা স্পষ্ট করে বিবৃত করেন, যার কারণে তার সঙ্গে কুরায়শদের কৃত অঙ্গীকার ভেঙ্গে গিয়েছে। তিনি বলছেনঃ
তারা রাতের শেষ প্রহরে (অন্ধকারে) ‘ওয়াতীর' জায়গায় আমাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছে। এবং তারা আমাদেরকে রুকু-সিজদারত অবস্থায় হত্যা করেছে। তিনি এ বিষয়ে কুরায়শদের ব্যতীত বানূ নাফাসা প্রমুখ কাউকে উল্লেখ করেন নাই। অতঃপর হাসসান ইবনে সাবিত (রাযিঃ) তার ঐ কবিতায় এর উল্লেখ করেছেন, যা আমরা তার সূত্রে ইকরামা (রাহঃ)-এর রিওয়ায়াতে নকল করেছি। এর বিষয়বস্তু সেটাই, যা আমর ইবনে সালিম ঐ কবিতায় বিকৃত করেছেন যা তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সম্মুখে আবৃত্তি করেছেন।
বস্তুত এতে প্রমাণিত হয় যে, বানূ কা'ব-এর লোকদের যে দুর্ভোগ পােহাতে হয়েছে, তা কুরায়শ কর্তৃক ঐ চুক্তিভঙ্গের কারণে পােহাতে হয়েছে, যা তারা মক্কা উপত্যকায় সম্পাদন করেছিলাে। তুমি কি লক্ষ্য করছনা যে, তিনি (আমর ইবনে সালিম) বলছেনঃ
বানূ কা'ব-এর কিছু লােক যাদের গর্দান কর্তিত হয়েছে, মক্কা উপত্যকায় আমার নিকট এসেছে এবং সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। অতঃপর তিনি কয়েদীদের অবস্থা বর্ণনা করেছেন যা আমরা উল্লেখ করেছি। তাদের মধ্যে কুরায়শ এবং তাদের কিছু লােক ছিলাে। তিনি বলেনঃ
আফসােস, আমি জানতে পারতাম, (কতই ভাল হত) যে, আমার সাহায্যের উদ্যামতা, বদলা নেয়ার অনুভূতি সুহায়ল ইবনে আমর (যদি) পেত। আর এই সুহায়ল ইবনে আমর সেই সমস্ত লােকদের অন্যতম, যাদের সঙ্গে রাসূলুল্লাহু (ﷺ) সন্ধি করেছিলেন।
থাকল এ বিষয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মক্কা বিজয়ের পর মাল বণ্টন করেন নাই, এবং কাউকে গােলামও বানান নাই এবং ভূমিকে গনীমতও সাব্যস্ত করেন নাই। সুতরাং তিনি সেই সমস্ত লােকদেরকে কিভাবে গােলাম বানাবেন যাদের উপর তাদের জান-মালের বিষয়ে ইহসান করেছিলেন।
নবী (ﷺ) কর্তৃক তাতে হস্তক্ষেপ না করার ব্যাপারে আলিমগণ মতবিরােধ করেছেন। কতিপয়ের মতে তিনি ওটা (মক্কা) কে বলপূর্বক বিজয় করেছেন। তারা বলেন, তিনি তাদের উপর ইহুসান করে ওটাকে ওভাবে ছেড়ে দিয়েছেন। যেমন তাদের জান ও অপরাপর মালসমূহের ব্যাপারে ইহসান করেছেন। এই মতামত পােষণকারীদের মধ্যে ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) অন্যতম। কেননা তার মাযহাব হলাে যে, মক্কার ভূমিতে মালিকানা জারী হবে, যেভাবে অপরাপর সমগ্র ভূমিতে মালিকানা জারি হয়। পক্ষান্তরে অপরাপর কতক আলিম বলেন যে, মক্কার ভূমি সেই সমস্ত ভুমিসমূহের অন্তর্ভুক্ত নয়, যার উপর গনীমত প্রবর্তিত হয়। কেননা তাদের মতে মক্কার ভূমিতে মালিকানা জারি হতে পারে না, বা কেউ মালিক হতে পারে না। এই মতের অনুসারীদের মধ্যে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম সুফইয়ান সওরী (রাহঃ) অন্যতম।
বস্তুত আমরা এই অনুচ্ছেদে (বিষয়ে) ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) তাদের দুজনের মাযহাবের উপর তাদের রিওয়ায়াতকৃত রিওয়ায়াতসমূহকে ক্রয়-বিক্রয় অধ্যায়ে নকল করেছি। আহকাম বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণিত বিভিন্ন রিওয়ায়াতের বিষয়বস্তু ও মর্ম স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছি। এখানে সেগুলাে পুনঃ বর্ণনা করার প্রয়ােজন নেই।
অতঃপর আলােচনা সেই বিষয়কে সাব্যস্ত করার দিকে ফিরে গেছে যে, মক্কা মুকাররমা বলপূর্বক বিজিত হয়েছে। যদি তােমরা এটা বল যে, যুহরী (রাহঃ) ও ইকরামা (রাহঃ)-এর যে দুই রিওয়ায়াত আমরা উল্লেখ করেছি তা 'মুনকাতি' বা বিচ্ছিন্ন (সনদসূত্রে বর্ণিত)।
তােমাদেরকে (উত্তরে) বলা হবে যে, ইবন আব্বাস (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে, যা আমাদের বর্ণনাকৃত বিষয়ের সপক্ষে প্রমাণ বহন করেঃ
ঐ কথার সপক্ষে দলীল হলাে যে, বানূ বকর এবং খােযা'আর মাঝে লড়াই হওয়া এবং কুরায়শ কর্তৃক তাদের সাহায্য করার কারণে মক্কাবাসীদের থেকে সন্ধি বাতিল হয়ে গেছে। আবু সুফইয়ান কর্তৃক চুক্তির নবায়ন করা এবং সন্ধির দৃঢ়তা তলব করা যখন মক্কাবাসীরা তার কাছে এটা দাবি করেছিলাে। যদি সন্ধি খতম না হয়ে যেত তবে তাদের এটার প্রয়ােজন ছিলাে না এবং যখন আবু বকর (রাযিঃ), উমার ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ), আলী (রাযিঃ) ও রাসূল (ﷺ) এর কন্যা ফাতিমা (রাযিঃ)-কে আবু সুফইয়ান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যা সওয়াল করার সওয়াল করেছে তাহলে তারা জিজ্ঞাসা করতেন যে, তােমার এরং মক্কাবাসীদের এর প্রয়ােজনীয়তা কি, তারা তাে সকলে সন্ধি এবং নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে। এখন আর তাদের এছাড়া অন্য কোন সন্ধির প্রয়ােজন নেই। অতঃপর এই আমর ইবনে সালিম কবীলা খােযা’আর একজন, যিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে ওই (কবিতা গুচ্ছের উপর ভিত্তি) অঙ্গীকার শুনাচ্ছেন যা আমরা ইকরামা (রাহঃ) ও যুহরী (রাহঃ)-এর রিওয়ায়াতে উল্লেখ করেছি এবং তিনি এ ব্যাপারে তার কাছে সাহায্য চেয়েছেন। ওই সমস্ত কবিতা গুচ্ছের অধীনে তিনি তাকে বলছেনঃ
অবশ্যই কুরায়শরা তােমার সঙ্গে কৃত চুক্তির বিরােধিতা করছে।
তারা তােমার সঙ্গে কৃত মজবুত ও সুদৃঢ় অঙ্গীকার ভেঙ্গে দিয়েছে।
আর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তার এ কথা অস্বীকার করেন নাই। অতঃপর আমর ইবনে সালিম তাকে ওই কথা স্পষ্ট করে বিবৃত করেন, যার কারণে তার সঙ্গে কুরায়শদের কৃত অঙ্গীকার ভেঙ্গে গিয়েছে। তিনি বলছেনঃ
তারা রাতের শেষ প্রহরে (অন্ধকারে) ‘ওয়াতীর' জায়গায় আমাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছে। এবং তারা আমাদেরকে রুকু-সিজদারত অবস্থায় হত্যা করেছে। তিনি এ বিষয়ে কুরায়শদের ব্যতীত বানূ নাফাসা প্রমুখ কাউকে উল্লেখ করেন নাই। অতঃপর হাসসান ইবনে সাবিত (রাযিঃ) তার ঐ কবিতায় এর উল্লেখ করেছেন, যা আমরা তার সূত্রে ইকরামা (রাহঃ)-এর রিওয়ায়াতে নকল করেছি। এর বিষয়বস্তু সেটাই, যা আমর ইবনে সালিম ঐ কবিতায় বিকৃত করেছেন যা তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সম্মুখে আবৃত্তি করেছেন।
বস্তুত এতে প্রমাণিত হয় যে, বানূ কা'ব-এর লোকদের যে দুর্ভোগ পােহাতে হয়েছে, তা কুরায়শ কর্তৃক ঐ চুক্তিভঙ্গের কারণে পােহাতে হয়েছে, যা তারা মক্কা উপত্যকায় সম্পাদন করেছিলাে। তুমি কি লক্ষ্য করছনা যে, তিনি (আমর ইবনে সালিম) বলছেনঃ
বানূ কা'ব-এর কিছু লােক যাদের গর্দান কর্তিত হয়েছে, মক্কা উপত্যকায় আমার নিকট এসেছে এবং সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। অতঃপর তিনি কয়েদীদের অবস্থা বর্ণনা করেছেন যা আমরা উল্লেখ করেছি। তাদের মধ্যে কুরায়শ এবং তাদের কিছু লােক ছিলাে। তিনি বলেনঃ
আফসােস, আমি জানতে পারতাম, (কতই ভাল হত) যে, আমার সাহায্যের উদ্যামতা, বদলা নেয়ার অনুভূতি সুহায়ল ইবনে আমর (যদি) পেত। আর এই সুহায়ল ইবনে আমর সেই সমস্ত লােকদের অন্যতম, যাদের সঙ্গে রাসূলুল্লাহু (ﷺ) সন্ধি করেছিলেন।
থাকল এ বিষয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মক্কা বিজয়ের পর মাল বণ্টন করেন নাই, এবং কাউকে গােলামও বানান নাই এবং ভূমিকে গনীমতও সাব্যস্ত করেন নাই। সুতরাং তিনি সেই সমস্ত লােকদেরকে কিভাবে গােলাম বানাবেন যাদের উপর তাদের জান-মালের বিষয়ে ইহসান করেছিলেন।
নবী (ﷺ) কর্তৃক তাতে হস্তক্ষেপ না করার ব্যাপারে আলিমগণ মতবিরােধ করেছেন। কতিপয়ের মতে তিনি ওটা (মক্কা) কে বলপূর্বক বিজয় করেছেন। তারা বলেন, তিনি তাদের উপর ইহুসান করে ওটাকে ওভাবে ছেড়ে দিয়েছেন। যেমন তাদের জান ও অপরাপর মালসমূহের ব্যাপারে ইহসান করেছেন। এই মতামত পােষণকারীদের মধ্যে ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) অন্যতম। কেননা তার মাযহাব হলাে যে, মক্কার ভূমিতে মালিকানা জারী হবে, যেভাবে অপরাপর সমগ্র ভূমিতে মালিকানা জারি হয়। পক্ষান্তরে অপরাপর কতক আলিম বলেন যে, মক্কার ভূমি সেই সমস্ত ভুমিসমূহের অন্তর্ভুক্ত নয়, যার উপর গনীমত প্রবর্তিত হয়। কেননা তাদের মতে মক্কার ভূমিতে মালিকানা জারি হতে পারে না, বা কেউ মালিক হতে পারে না। এই মতের অনুসারীদের মধ্যে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম সুফইয়ান সওরী (রাহঃ) অন্যতম।
বস্তুত আমরা এই অনুচ্ছেদে (বিষয়ে) ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) তাদের দুজনের মাযহাবের উপর তাদের রিওয়ায়াতকৃত রিওয়ায়াতসমূহকে ক্রয়-বিক্রয় অধ্যায়ে নকল করেছি। আহকাম বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণিত বিভিন্ন রিওয়ায়াতের বিষয়বস্তু ও মর্ম স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছি। এখানে সেগুলাে পুনঃ বর্ণনা করার প্রয়ােজন নেই।
অতঃপর আলােচনা সেই বিষয়কে সাব্যস্ত করার দিকে ফিরে গেছে যে, মক্কা মুকাররমা বলপূর্বক বিজিত হয়েছে। যদি তােমরা এটা বল যে, যুহরী (রাহঃ) ও ইকরামা (রাহঃ)-এর যে দুই রিওয়ায়াত আমরা উল্লেখ করেছি তা 'মুনকাতি' বা বিচ্ছিন্ন (সনদসূত্রে বর্ণিত)।
তােমাদেরকে (উত্তরে) বলা হবে যে, ইবন আব্বাস (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে, যা আমাদের বর্ণনাকৃত বিষয়ের সপক্ষে প্রমাণ বহন করেঃ
5459 - حَدَّثَنَا فَهْدُ بْنُ سُلَيْمَانَ , قَالَ: ثنا أَبُو كُرَيْبٍ , قَالَ: ثنا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ , عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ , قَالَ: حَدَّثَنِي سَعْدُ بْنُ طَارِقٍ , عَنْ سَلَمَةَ بْنِ نُعَيْمٍ , عَنْ أَبِيهِ , قَالَ: كُنْتُ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ جَاءَهُ رَسُولُ مُسَيْلِمَةَ بِكِتَابِهِ , وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لَهُمَا: وَأَنْتُمَا تَقُولَانِ مِثْلَ مَا يَقُولُ؟ فَقَالَا: نَعَمْ , فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَا لَوْلَا أَنَّ الرُّسُلَ لَا تُقْتَلُ , لَضَرَبْتُ أَعْنَاقَكُمَا» وَالدَّلِيلُ عَلَى خُرُوجِ أَهْلِ مَكَّةَ مِنَ الصُّلْحِ , بِمَا كَانَ بَيْنَ بَنِي بَكْرٍ وَبَيْنَ خُزَاعَةَ , وَبِمَا كَانَ مِنْ مَعُونَةِ قُرَيْشٍ لِبَنِي بَكْرٍ فِي ذَلِكَ , طَلَبُ أَبِي سُفْيَانَ تَجْدِيدَ الْحِلْفِ , وَتَوْكِيدَ الصُّلْحِ عِنْدَ سُؤَالِ أَهْلِ مَكَّةَ إِيَّاهُ ذَلِكَ , وَلَوْ كَانَ الصُّلْحُ لَمْ يَنْتَقِضْ , إِذًا لَمَا كَانَ بِهِمْ إِلَى ذَلِكَ حَاجَةٌ , وَلَكَانَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ , وَعُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ , وَعَلِيٌّ , وَفَاطِمَةُ بِنْتُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَمَا سَأَلَهُمْ أَبُو سُفْيَانَ مَا سَأَلَهُمْ مِنْ ذَلِكَ يَقُولُونَ: مَا حَاجَتُكَ وَحَاجَةُ أَهْلِ مَكَّةَ إِلَى ذَلِكَ؟ إِنَّهُمْ جَمِيعًا فِي صُلْحٍ وَفِي أَمَانٍ , لَا تَحْتَاجُونَ مَعَهُمَا إِلَى غَيْرِهِمَا , ثُمَّ هَذَا عَمْرُو بْنُ سَالِمٍ , وَاحِدُ خُزَاعَةَ , يُنَاشِدُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَا قَدْ ذَكَرْنَا مِنْ مُنَاشَدَتِهِ إِيَّاهُ , فِي حَدِيثِ عِكْرِمَةَ , وَالزُّهْرِيِّ , وَسَأَلَهُ فِي ذَلِكَ النَّصْرَ وَيَقُولُ فِيمَا يُنَاشِدُهُ مِنْ ذَلِكَ:
[البحر الرجز]
إِنَّ قُرَيْشًا أَخْلَفُوكَ الْمَوْعِدَا
وَنَقَضُوا مِيثَاقَكَ الْمُؤَكَّدَا وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُنْكِرُ ذَلِكَ عَلَيْهِ [ص:319] ثُمَّ كَشَفَ لَهُ عَمْرُو بْنُ سَالِمٍ الْمَعْنَى الَّذِي بِهِ كَانَ نَقْضُ قُرَيْشٍ , مَا كَانُوا عَاهَدُوهُ عَلَيْهِ , وَوَافَقُوهُ بِأَنْ قَالَ:
وَهُمْ أَتَوْنَا بِالْوَتِيرِ هُجَّدَا ... فَقَتَلُونَا رُكَّعًا وَسُجَّدَا
وَلَمْ يَذْكُرْ فِي ذَلِكَ أَحَدًا غَيْرَ قُرَيْشٍ , مِنْ بَنِي نُفَاثَةَ , وَلَا مِنْ غَيْرِهِمْ , ثُمَّ أَنْشَدَ حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ فِي الشِّعْرِ الَّذِي ذَكَرْنَاهُ عَنْهُ , فِي حَدِيثِ عِكْرِمَةَ , الْمَعْنَى الَّذِي ذَكَرَهُ عَمْرُو بْنُ سَالِمٍ فِي الشِّعْرِ الَّذِي نَاشَدَ بِهِ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَفِي ذَلِكَ دَلِيلٌ أَنَّ رِجَالَ بَنِي كَعْبٍ , أَصَابَهُمْ مِنْ نَقْضِ قُرَيْشٍ الَّذِي بِهِ خَرَجُوا مِنْ عَهْدِهِمْ بِبَطْنِ مَكَّةَ , أَلَا تَرَاهُ يَقُولُ:
[البحر الطويل]
أَتَانِي وَلَمْ أَشْهَدْ بِبَطْحَاءِ مَكَّةَ ... رِجَالَ بَنِي كَعْبٍ تُحَزُّ رِقَابُهَا
ثُمَّ ذَكَرَ مَا بَيَّنَّاهُ لِمَنْ كَانَ سَبَبًا مِنْ ذَلِكَ قُرَيْشٌ وَرِجَالُهَا فَقَالَ:
فَيَا لَيْتَ شِعْرِي هَلْ لَنَا لِزُمْرَةٍ ... سُهَيْلُ بْنُ عَمْرٍو حَوْلُهَا وَعِقَابُهَا
وَسُهَيْلُ بْنُ عَمْرٍو , هُوَ كَانَ أَحَدَ مَنْ عَاقَدَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصُّلْحَ , فَأَمَّا مَا ذُكِرَ لَكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا افْتَتَحَهَا , لَمْ يَقْسِمْ مَالًا , وَلَمْ يَسْتَعْبِدْ أَحَدًا , وَلَمْ يَغْنَمْ أَرْضًا , فَكَيْفَ يَسْتَعْبِدُ مَنْ قَدْ مَنَّ عَلَيْهِ فِي دَمِهِ وَمَالِهِ , فَأَمَّا أَرْضُ مَكَّةَ , فَإِنَّ النَّاسَ قَدِ اخْتَلَفُوا فِي تَرْكِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التَّعَرُّضَ لَهَا , فَمَنْ يَذْهَبُ إِلَى أَنَّهُ افْتَتَحَهَا عَنْوَةً فَقَالَ: تَرَكَهَا مِنَّةً عَلَيْهِمْ , كَمِنَّتِهِ عَلَيْهِمْ فِي دِمَائِهِمْ , وَفِي سَائِرِ أَمْوَالِهِمْ , وَمِمَّنْ ذَهَبَ إِلَى ذَلِكَ أَبُو يُوسُفَ , لِأَنَّهُ كَانَ يَذْهَبُ إِلَى أَنَّ أَرْضَ مَكَّةَ , تَجْرِي عَلَيْهَا الْأَمْلَاكُ , كَمَا تَجْرِي عَلَى سَائِرِ الْأَرْضِينَ , وَقَالَ بَعْضُهُمْ: لَمْ تَكُنْ أَرْضُ مَكَّةَ مِمَّا وَقَعَتْ عَلَيْهِ الْغَنَائِمُ , لِأَنَّ أَرْضَ مَكَّةَ عِنْدَهُمْ , لَا تَجْرِي عَلَيْهَا الْأَمْلَاكُ , وَمِمَّنْ ذَهَبَ إِلَى ذَلِكَ أَبُو حَنِيفَةَ , وَسُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ رَحِمَهُمَا اللهُ , وَقَدْ ذَكَرْنَا فِي هَذَا الْبَابِ الْآثَارَ الَّتِي رَوَاهَا كُلُّ فَرِيقٍ , مِمَّنْ ذَهَبَ إِلَى مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ أَبُو حَنِيفَةُ , وَأَبُو يُوسُفَ رَحِمَهُمَا اللهُ , فِي كِتَابِ الْبُيُوعِ , مِنْ شَرْحِ مَعَانِي الْآثَارِ الْمُخْتَلِفَةِ الْمَرْوِيَّةِ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْأَحْكَامِ فَأَغْنَانَا ذَلِكَ عَنْ إِعَادَتِهِ هَاهُنَا , ثُمَّ رَجَعَ الْكَلَامُ إِلَى مَا يُثْبِتُ أَنَّ مَكَّةَ فُتِحَتْ عَنْوَةً , فَإِنْ قُلْتُمْ إِنَّ حَدِيثَيِ الزُّهْرِيِّ وَعِكْرِمَةَ اللَّذَيْنِ ذَكَرْنَا , مُنْقَطِعَانِ , قِيلَ لَكُمْ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا حَدِيثٌ يَدُلُّ عَلَى مَا رَوَيْنَاهُ
[البحر الرجز]
إِنَّ قُرَيْشًا أَخْلَفُوكَ الْمَوْعِدَا
وَنَقَضُوا مِيثَاقَكَ الْمُؤَكَّدَا وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُنْكِرُ ذَلِكَ عَلَيْهِ [ص:319] ثُمَّ كَشَفَ لَهُ عَمْرُو بْنُ سَالِمٍ الْمَعْنَى الَّذِي بِهِ كَانَ نَقْضُ قُرَيْشٍ , مَا كَانُوا عَاهَدُوهُ عَلَيْهِ , وَوَافَقُوهُ بِأَنْ قَالَ:
وَهُمْ أَتَوْنَا بِالْوَتِيرِ هُجَّدَا ... فَقَتَلُونَا رُكَّعًا وَسُجَّدَا
وَلَمْ يَذْكُرْ فِي ذَلِكَ أَحَدًا غَيْرَ قُرَيْشٍ , مِنْ بَنِي نُفَاثَةَ , وَلَا مِنْ غَيْرِهِمْ , ثُمَّ أَنْشَدَ حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ فِي الشِّعْرِ الَّذِي ذَكَرْنَاهُ عَنْهُ , فِي حَدِيثِ عِكْرِمَةَ , الْمَعْنَى الَّذِي ذَكَرَهُ عَمْرُو بْنُ سَالِمٍ فِي الشِّعْرِ الَّذِي نَاشَدَ بِهِ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَفِي ذَلِكَ دَلِيلٌ أَنَّ رِجَالَ بَنِي كَعْبٍ , أَصَابَهُمْ مِنْ نَقْضِ قُرَيْشٍ الَّذِي بِهِ خَرَجُوا مِنْ عَهْدِهِمْ بِبَطْنِ مَكَّةَ , أَلَا تَرَاهُ يَقُولُ:
[البحر الطويل]
أَتَانِي وَلَمْ أَشْهَدْ بِبَطْحَاءِ مَكَّةَ ... رِجَالَ بَنِي كَعْبٍ تُحَزُّ رِقَابُهَا
ثُمَّ ذَكَرَ مَا بَيَّنَّاهُ لِمَنْ كَانَ سَبَبًا مِنْ ذَلِكَ قُرَيْشٌ وَرِجَالُهَا فَقَالَ:
فَيَا لَيْتَ شِعْرِي هَلْ لَنَا لِزُمْرَةٍ ... سُهَيْلُ بْنُ عَمْرٍو حَوْلُهَا وَعِقَابُهَا
وَسُهَيْلُ بْنُ عَمْرٍو , هُوَ كَانَ أَحَدَ مَنْ عَاقَدَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصُّلْحَ , فَأَمَّا مَا ذُكِرَ لَكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا افْتَتَحَهَا , لَمْ يَقْسِمْ مَالًا , وَلَمْ يَسْتَعْبِدْ أَحَدًا , وَلَمْ يَغْنَمْ أَرْضًا , فَكَيْفَ يَسْتَعْبِدُ مَنْ قَدْ مَنَّ عَلَيْهِ فِي دَمِهِ وَمَالِهِ , فَأَمَّا أَرْضُ مَكَّةَ , فَإِنَّ النَّاسَ قَدِ اخْتَلَفُوا فِي تَرْكِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التَّعَرُّضَ لَهَا , فَمَنْ يَذْهَبُ إِلَى أَنَّهُ افْتَتَحَهَا عَنْوَةً فَقَالَ: تَرَكَهَا مِنَّةً عَلَيْهِمْ , كَمِنَّتِهِ عَلَيْهِمْ فِي دِمَائِهِمْ , وَفِي سَائِرِ أَمْوَالِهِمْ , وَمِمَّنْ ذَهَبَ إِلَى ذَلِكَ أَبُو يُوسُفَ , لِأَنَّهُ كَانَ يَذْهَبُ إِلَى أَنَّ أَرْضَ مَكَّةَ , تَجْرِي عَلَيْهَا الْأَمْلَاكُ , كَمَا تَجْرِي عَلَى سَائِرِ الْأَرْضِينَ , وَقَالَ بَعْضُهُمْ: لَمْ تَكُنْ أَرْضُ مَكَّةَ مِمَّا وَقَعَتْ عَلَيْهِ الْغَنَائِمُ , لِأَنَّ أَرْضَ مَكَّةَ عِنْدَهُمْ , لَا تَجْرِي عَلَيْهَا الْأَمْلَاكُ , وَمِمَّنْ ذَهَبَ إِلَى ذَلِكَ أَبُو حَنِيفَةَ , وَسُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ رَحِمَهُمَا اللهُ , وَقَدْ ذَكَرْنَا فِي هَذَا الْبَابِ الْآثَارَ الَّتِي رَوَاهَا كُلُّ فَرِيقٍ , مِمَّنْ ذَهَبَ إِلَى مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ أَبُو حَنِيفَةُ , وَأَبُو يُوسُفَ رَحِمَهُمَا اللهُ , فِي كِتَابِ الْبُيُوعِ , مِنْ شَرْحِ مَعَانِي الْآثَارِ الْمُخْتَلِفَةِ الْمَرْوِيَّةِ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْأَحْكَامِ فَأَغْنَانَا ذَلِكَ عَنْ إِعَادَتِهِ هَاهُنَا , ثُمَّ رَجَعَ الْكَلَامُ إِلَى مَا يُثْبِتُ أَنَّ مَكَّةَ فُتِحَتْ عَنْوَةً , فَإِنْ قُلْتُمْ إِنَّ حَدِيثَيِ الزُّهْرِيِّ وَعِكْرِمَةَ اللَّذَيْنِ ذَكَرْنَا , مُنْقَطِعَانِ , قِيلَ لَكُمْ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا حَدِيثٌ يَدُلُّ عَلَى مَا رَوَيْنَاهُ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬০
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬০। ফাহাদ ইবনে সুলায়মান ইবনে ইয়াহইয়া (রাহঃ) ..... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মাহে রামাযানের এগার তারিখে সফরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। সাহাবগণ তাঁর সঙ্গে সিয়াম পালন করেন। যখন তিনি ‘কুদাইদ’ নামক জায়গায় পৌছান তখন সিয়াম ভঙ্গ করে ফেলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সম্মুখে চলে গেলেন। অবশেষে দশ হাজার মুসলমান (সাহাবা) নিয়ে মারু্যযাহরান জায়গায় অবতরণ করেন। যখন তিনি মারু্যযাহরানে অবতরণ করেন, এ কথা কবীলা সুলায়ম ও কবীলা মুযায়না শুনল এবং কুরায়শের উপর তার (আগমনের) সংবাদাদি বন্ধ হয়ে গিয়েছিলাে। সুতরাং তাদের কাছে তার আগমনের খবর পৌঁছায়নি। না তারা অবহিত ছিলাে যে, তিনি কি করতে যাচ্ছেন। ঐ রাতে আবু সুফইয়ান ইবনে হারব, হাকীম ইবনে হিযাম ও বুদায়ল ইবনে ওয়ারাকা এটা প্রত্যক্ষ করার জন্য বের হলাে যে, তারা তার কোন সংবাদ পায় কিনা কিংবা তার ব্যাপারে তারা কিছু শুনে কিনা।
যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মারু্যযাহরানে অবতরণ করেন, তখন আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রাযিঃ) বললেন, কুরায়শের জন্য মন্দ প্রভাত, যদি তারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট এসে নিরাপত্তা প্রার্থনা না করে এবং তিনি মক্কায় বলপূর্বক প্রবেশ করেন তবে কুরায়শের জন্য হবে সমগ্র জীবনের ধ্বংস। বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাদা খচ্চরের উপর বসে বেরিয়ে গেলাম এবং পীল বৃক্ষের (ঝাড়ে) প্রবেশ করলাম, যেন কাঠুরে, দুধওয়ালা ও শ্রমিকদের সাথে মিলিত হয়ে তাদেরকে বলব যে, তারা কুরায়শদেরকে গিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সেখানে আগমনের সংবাদ দেয় এবং বলে যে, তারা যেন তাঁর কাছে বেরিয়ে আসে। বলেন, আমি আমার উদ্দেশ্যের অনুসন্ধানে ছিলাম যে, হঠাৎ আবু সুফইয়ান ও বুদায়লের কথা শুনলাম, তারা উভয়ে প্রত্যাবর্তন করছিলাে। আবু সুফইয়ান বলছিলাে, আজ রাতের ন্যায় আমি কখনাে (এত) আগুন দেখিনি, না এরূপ বাহিনী দেখেছি। বুদায়ল বলল, আল্লাহর কসম! এরা কবীলা খােযা'আ; যারা যুদ্ধের জন্য সমবেত হয়েছে। আবু সুফইয়ান বলল, আল্লাহর কসম, কবীলা খােযা'আ তাে নিতান্তই দুর্বল, তাদের এরূপ আগুন কোথায়! (আব্বাস রা বলেন) আমি আবু সুফইয়ানের আওয়াজ চিনে ফেলি, আমি বললাম, হে আবু হানযালা! বলেন, সেও আমার আওয়াজ চিনে ফেলে এবং বলল, আবুল ফযল নাকি? বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ! আমিই। সে বলল, তােমার কি হয়েছে, আমার মাতা-পিতা তােমার উপর উৎসর্গ হােক। বলেন, আমি বললাম, তােমার জন্য ধ্বংস, আল্লাহর কসম! ইনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও তাঁর সাহাবা কিরাম। কুরায়শের প্রভাতের উপর আফসােস! আল্লাহর কসম, যদি রাসূলুল্লাহু (ﷺ) বলপূর্বক মক্কাতে প্রবেশ করেন এবং এর পূর্বে যদি তারা এসে তাঁর নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা না করে তবে কুরায়শের জন্য চিরস্থায়ী ধ্বংস। সে বলল, তাহলে এর উপায় কি, আমার মাতা-পিতা তােমার উপর উৎসর্গ হােক। বলেন, আমি বললাম, আল্লাহর কসম, কোন
উপায় নেই। তবে তুমি আমার এই সওয়ারীর পিছনে আরােহণ কর, আমি তােমাকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দরবারে নিয়ে যাব। আল্লাহ্ কসম! যদি তিনি তােমার উপর কাবু পেয়ে যান তবে তােমার গর্দান উড়িয়ে দেবেন। বলেন, সে খচ্চরের পিঠে আরােহণ করলাে, আর তার দুই সাথী ফিরে চলে গেলাে। আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমি যখন মুসলমানদের কোন এক আগুনের (অর্থাৎ ছাউনি) কাছ দিয়ে যেতাম, তারা জিজ্ঞাসা করত, এ কে? যখন তারা লক্ষ্য করত তাে বলত, ইনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর চাচা, যিনি তার খচ্চরের উপর সওয়ার। অবশেষে আমি উমার ইবন খাত্তাব (রাযিঃ) -এর আগুনের (ছাউনি) কাছ দিয়ে অতিক্রম করলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এ কে? এবং আমার দিকে উঠে এলেন।
যখন আবু সুফইয়ানকে সওয়ারীর উপরে আমার পিছনে দেখলেন তখন তাকে চিনে ফেললেন এবং বললেন, আবু সুফইয়ান? আল্লাহর দুশমন, ঐ আল্লাহর জন্য প্রশংসা, যিনি তােকে আমার নিয়ন্ত্রণে দিয়েছেন। আর দ্রুত রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দিকে বেরিয়ে গেলেন। আমিও খচ্চরকে আঘাত করলাম (দ্রুত) দৌড়ালাম। আমি তার আগে চলে গেলাম, যেমনিভাবে মন্থর গতিসম্পন্ন সওয়ারী মন্থর গতিসম্পন্ন মানুষের থেকে আগে চলে যায়। অতঃপর আমি খচ্চর থেকে দ্রুত নেমে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাম। উমার (রাযিঃ) ও এলেন এবং প্রবেশ করে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) এ হলাে আবু সুফইয়ান। আল্লাহ্ তা'আলা কোন চুক্তি ও অঙ্গীকার ব্যতীত তার উপর নিয়ন্ত্রণ দিয়েছেন। আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দিব। (আব্বাস রা) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) আমি তাকে আশ্রয় দিয়েছি। বলেন, এর পর আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে বসে গেলাম এবং তাঁর মাথা ধরে বললাম, আল্লাহর কসম, আপনার সঙ্গে আমি ব্যতীত কেউ গােপন কথা (পরামর্শ) বলবেনা। বলেন, যখন উমার (রাযিঃ) তার ব্যাপারে অধিক বলতে লাগলেন, আমি বললাম, হে উমার! থামুন, যদি বানূ আদী ইবনে কা'ব থেকে কোন ব্যক্তি হত তবে আপনি এ কথা বলতেন না। কিন্তু আপনি জানেন যে, এ বানূ আব্দ মানাফ থেকে এক ব্যক্তি। তিনি বললেন, হে আব্বাস! থামুন আল্লাহর কসম, যেদিন আপনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন আপনার ইসলাম গ্রহণ করাটা আমার কাছে (আমার পিতা) খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ অপেক্ষা অধিক পসন্দনীয় ছিলাে। (অর্থাৎ যদি সে ইসলাম গ্রহণ করতাে তবে আমার এতটুকু আনন্দ হত না, যতটুকু আনন্দ আপনার ইসলাম গ্রহণে হয়েছে)। আর এটা এই জন্য যে, আমি অবহিত যে, আপনার ইসলাম গ্রহণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর অধিক পসন্দনীয়। অনন্তর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তাকে তার নিবাসে নিয়ে যাও। সকালে আমার কাছে নিয়ে এস।
বলেন, যখন সকাল হলাে তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাম। তিনি তাকে দেখে বললেন, হে আবু সুফইয়ান। তােমার জন্য আফসােস, তােমার জন্য কি এখনাে সেই সময় আসেনি, যাতে তুমি সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, আল্লাহ্ তা'আলা ব্যতীত কোন মা'বুদ নেই? সে বলল, আমার মাতা-পিতা আপনার জন্য উৎসর্গ হােক, আপনি কতইনা ধৈর্যশীল, মহান ও আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষাকারী। আল্লাহর কসম! আমার হৃদয়ে একথা এসেছে যে, যদি আল্লাহর সঙ্গে অন্য কেউ (মা'বুদ) হত তবে এখন পর্যন্ত কিছু একটা উপকার দিত। তিনি বললেন, হে আবু সুফইয়ান! তােমার জন্য আক্ষেপ। তােমার জন্য কি এখনাে সময় আসেনি যে তুমি এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, আমি আল্লাহু তা'আলার রাসূল? সে বলল, আমার মাতা-পিতা আপনার উপর উৎসর্গ, আপনি কতইনা ধৈর্যশীল, মহান ও আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষাকারী। আল্লাহর কসম! এই একটি মাত্র বিষয়, যে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আমার হৃদয়ে খটকা বা সন্দেহ বিরাজমান। আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, তােমার জন্য ধ্বংস, তােমার গর্দান উড়িয়ে দেয়ার পূর্বে ইসলাম গ্রহণ কর এবং এ কথার সাক্ষ্য প্রদান কর যে, আল্লাহ্ তা'আলা ব্যতীত কোন মা'বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল। বলেন, অনন্তর সে সত্য সাক্ষ্য প্রদান করল এবং ইসলাম গ্রহণ করল। আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! (ﷺ) আবু সুফইয়ান ফখর বা সুখ্যাতিকে পসন্দ করে। তাঁর জন্য কিছু একটা সম্মানের বস্তু নির্ধারণ করুন। তিনি বললেন, হ্যাঁ, যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ানের গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। যে ব্যক্তি নিজের দরােজা বন্ধ করে দিবে (বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেনা) সে নিরাপদ। অতঃপর আমি যখন ফিরে চললাম, তিনি বললেন, হে আব্বাস! তাকে উপত্যকার কোন সংকীর্ণ গিরিপথে সৈন্য বাহিনী অতিক্রম করার জায়গায় দাড় করে দাও। এবং সেখান দিয়ে আল্লাহর বাহিনী অতিক্রম করবে, তিনি তা প্রত্যক্ষ করবেন।
বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে যে জায়গার নির্দেশ দিয়েছেন আমি তাঁকে সেই জায়গায় দাঁড় করালাম। বলেন, সেখান দিয়ে বিভিন্ন কবীলা নিজ নিজ ঝাণ্ডা নিয়ে অতিক্রম করছিলাে। যখন তাঁর কাছ দিয়ে একটি কবীলা অতিক্রম করত তাে জিজ্ঞাসা করতেনঃ এটা কোন কবীলা (-এর বাহিনী)? আমি বললাম, কবীলা বানূ সুলায়মা। বলেন, আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, বানূ সুলায়ম দিয়ে আমার কাজ কি? এরপর আরেকটি কবীলা অতিক্রম করল। জিজ্ঞাসা করলেন, এরা কোন কবীলার (বাহিনী)? আমি বললাম, কবীলা মুযায়না। বললেন, মুযায়নার সাথে আমার কি সম্পর্ক। এমনিভাবে অপরাপর কবীলাগুলাে অতিক্রম করে গেল। যে কবীলাই অতিক্রম করত তিনি আমাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন এবং আমি তাকে সে ব্যাপারে বলে দিতাম; তিনি বলতেন, অমুক কবীলা দিয়ে আমার কি হবে।
অবশেষে (সর্বশেষ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সবুজ রংা বাহিনীতে অতিক্রম করেন। তাতে মুহাজির ও আনসার উভয়ে ছিলেন। তাদের থেকে প্রত্যেক লােহাতে নড়াচড়াকারী দেখাচ্ছিলাে। (অর্থাৎ পূর্ণরূপে অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত) আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, সুবহানাল্লাহ্! হে আব্বাস! এরা কারা? আমি বললাম, ইনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এবং তার সঙ্গে মুহাজির ও আনসার (সাহাবা কিরাম রা)। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! এদের সঙ্গে কারাে মুকাবিলা করার শক্তি নেই। হে আবু ফযল! আল্লাহর কসম, তােমার ভ্রাতুস্পুত্র তাে শত্রুদের উপর বাদশাহ হয়ে গেছে। বলেন, আমি বললাম, হে আবু সুফইয়ান! তােমার জন্য ধ্বংস। এটা নবুওয়াত (বাদশাহী নয়)। আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, হ্যাঁ! বলেন, আমি বললাম, তােমার কাওমের শরণাপন্ন হও, তাদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাও। অবশেষে তিনি যখন তাদের কাছে গেলেন, তখন উঁচু আওয়াজে চিৎকার করে বললেন, হে কুরায়শের দল! এই সে মুহাম্মাদ (ﷺ) এই রূপ বাহিনী নিয়ে এসেছেন, যাদের প্রতিরােধ বা মুকাবিলা করতে তােমরা সক্ষম নও। যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ান (রা-এর) গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। তখন হিন্দ বিনতে উতবা ইবন রবী'আ তাঁর উদ্দেশ্যে দাঁড়াল এবং খুঁটি ধরে বলতে লাগল, কতশক্ত চর্বি সম্পন্ন (বীর) নিহত হয়েছে, এটা তাে নিতান্তই মন্দ বাহিনী। আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, তােমার জন্য ধ্বংস! তােমাদের পক্ষ থেকে এটা যেন তােমাদেরকে ধোকায় না ফেলে। তােমাদের কাছে ঐ বাহিনী এসে গেছে, যার মােকাবিলা করার কারাে শক্তি নেই। যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ানের গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। তারা বলল, আল্লাহ্ তােমাকে ধ্বংস করুক। তােমার গৃহ দ্বারা কি-ই আর লাভ হবে। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি নিজের দরজা বন্ধ করবে সেও নিরাপদ।
বস্তুত এই হাদীসের সনদ মুত্তাসিল (অবিচ্ছিন্ন) ও সহীহ্। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মক্কা মুকাররমা বলপূর্বক বিজিত হয়েছে এবং সন্ধি সূত্রে বিজিত হয়নি। আর এটা সাব্যস্ত হয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও কুরায়শের মাঝে যে সন্ধি স্থাপিত ছিলাে তা তাঁর মক্কা আগমনের পূর্বে খতম হয়ে গিয়েছিলাে।
সে ব্যক্তি কি আব্বাস (রাযিঃ)-এর এই বক্তব্যের প্রতি লক্ষ্য করছেনা যে, “কুরায়শের প্রভাতের উপর আফসােস” - যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট তারা এসে নিরাপত্তা প্রার্থনা করার পূর্বে তিনি মক্কাতে বলপূর্বক প্রবেশ করেন তবে কুরায়শের জন্য চিরস্থায়ী ধ্বংস নেমে আসবে।
তবে তােমাদের কি ধারণা যে, আব্বাস (রাযিঃ) নিজের সর্বোত্তম অভিমত ও বুদ্ধি সত্ত্বেও এই ধারণা করতেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিরাপত্তা এবং সন্ধি সত্ত্বেও কুরায়শকে শায়েস্তা করবেন। এটা অসম্ভব ব্যাপার যা আদৌ হতে পারেনা এবং কোন বুদ্ধিমান ও দ্বীনদারের জন্য জায়িয নেই যে, সে তার ব্যাপারে এরূপ ধারণা পােষণ করবে। অতঃপর এই আব্বাস (রাযিঃ) আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-কে এভাবে সম্বােধন করেছেন, বলেছেন, আল্লাহর কসম! যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তােমাকে বাগে পেয়ে যান তবে তােমাকে হত্যা করে ফেলবেন। আল্লাহর কসম! যদি তিনি বলপূর্বক মক্কাতে প্রবেশ করেন তাহলে কুরায়শের জন্য ধ্বংস। এবং আবু সুফইয়ান তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করে নাই। আর তাকে এটা বলেন নাই যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মক্কাতে প্রবেশ করার ব্যাপারে আমার ও কুরায়শের ভয় কিসের। আমাদের তাে তাঁর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা অর্জিত আছে। তিনি তাে মক্কায় প্রবেশ করে বানূ ‘নাফাসা’ থেকে কবীলা খােযা'আর বদলা নিবেন, অবশিষ্ট কুরায়শদের থেকে নয় এবং না সমস্ত মক্কাবাসীদের থেকে। যখন তাকে আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, “আল্লাহর কসম! যদি তােমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বাগে পেয়ে যান তবে তিনি তােমার গর্দান উড়িয়ে দিবেন।” এর উত্তরে আবু সুফইয়ান এটা বলেননি যে, তিনি আমার গর্দান কেন উড়িয়ে দিবেন, আমার তাে তার পক্ষ থেকে নিরাপত্তা অর্জিত রয়েছে। অতঃপর এই উমার ইবন খাত্তাব (রাযিঃ) আবু সুফইয়ানকে দেখে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলছেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) এ হলাে আবু সুফইয়ান। আল্লাহ্ তা'আলা কোন চুক্তি এবং অঙ্গীকার ব্যতীত তাকে আপনার বাগে নিয়ে এসেছেন। আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান মেরে দেই। এতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তার এ কথার প্রতিবাদ করেন নাই। কেননা তাঁর মতে আবু সুফইয়ানের জন্য রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও চুক্তি অর্জিত ছিলােনা। অতঃপর আবু সুফইয়ান এ ব্যাপারে উমার (রাযিঃ) -এর সঙ্গে বিবাদ করেন নাই, না তার পক্ষ থেকে আব্বাস (রাযিঃ) প্রমাণ পেশ করেছেন। বরং আব্বাস (রাযিঃ) তাকে বলেছেন, আমি তাকে আশ্রয় প্রদান করেছি। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ), উমার (রাযিঃ) ও আব্বাস (রাযিঃ) তাদের উভয়ের কথাকে প্রত্যাখ্যান করেন নাই। এটা প্রমাণ করে যে, যদি আব্বাস (রাযিঃ)-এর পক্ষ থেকে আশ্রয় বা নিরাপত্তা অর্জিত না হত তাহলে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উমার (রাযিঃ) কে আবু সুফইয়ানের হত্যার সংকল্প থেকে বিরত রাখতেন না। সুতরাং সন্ধি বিলুপ্তির এর চেয়ে স্পষ্ট প্রমাণ আর কী হতে পারে?
অতঃপর আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) যখন মক্কাতে প্রবেশ করেন তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে সম্মান তাকে দান করেছেন উচু আওয়াজে এর ঘােষণা দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ, যে ব্যক্তি নিজের দরজা বন্ধ করে দিবে সে নিরাপদ। বস্তুত কুরায়শরাও তখন তাকে বলেনি যে, আমাদের তােমার গৃহে প্রবেশ করার এবং আমাদের দরজা বন্ধ করার প্রয়ােজন নেই, আমাদের নিরাপত্তা অর্জিত আছে যা আমাদেরকে অন্য কোন নিরাপত্তা তলব করা থেকে অমুখাপেক্ষী করে দিয়েছে। কিন্তু তারা জেনে গিয়েছিলাে যে, তারা প্রথমােক্ত নিরাপত্তা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে এবং তাদের ও রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মাঝে স্থাপিত যে সন্ধি ছিলাে তা ভেঙ্গে গিয়েছে। যখন তাদেরকে এই শব্দাবলী দ্বারা সম্বােধন করা হয়েছে তখন তারা নিরাপত্তায় নেই। তবে তারা ঐ নিরাপত্তা অর্জন করবে যা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদেরকে (নতুনভাবে) দান করেছেন। অর্থাৎ তারা আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর গৃহে প্রবেশ করবে কিংবা নিজেদের দরজা বন্ধ করে দিবে।
এর পর উম্মুহানি বিনতে আবী তালিব (রাযিঃ) থেকে এরূপ বিষয়বস্তু বর্ণিত আছে, যা প্রমাণ করে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন মক্কাতে প্রবেশ করেছেন তখন সেটা দারুল হারব ছিলাে, দারুল আমান ছিলােনাঃ
যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মারু্যযাহরানে অবতরণ করেন, তখন আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রাযিঃ) বললেন, কুরায়শের জন্য মন্দ প্রভাত, যদি তারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট এসে নিরাপত্তা প্রার্থনা না করে এবং তিনি মক্কায় বলপূর্বক প্রবেশ করেন তবে কুরায়শের জন্য হবে সমগ্র জীবনের ধ্বংস। বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাদা খচ্চরের উপর বসে বেরিয়ে গেলাম এবং পীল বৃক্ষের (ঝাড়ে) প্রবেশ করলাম, যেন কাঠুরে, দুধওয়ালা ও শ্রমিকদের সাথে মিলিত হয়ে তাদেরকে বলব যে, তারা কুরায়শদেরকে গিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সেখানে আগমনের সংবাদ দেয় এবং বলে যে, তারা যেন তাঁর কাছে বেরিয়ে আসে। বলেন, আমি আমার উদ্দেশ্যের অনুসন্ধানে ছিলাম যে, হঠাৎ আবু সুফইয়ান ও বুদায়লের কথা শুনলাম, তারা উভয়ে প্রত্যাবর্তন করছিলাে। আবু সুফইয়ান বলছিলাে, আজ রাতের ন্যায় আমি কখনাে (এত) আগুন দেখিনি, না এরূপ বাহিনী দেখেছি। বুদায়ল বলল, আল্লাহর কসম! এরা কবীলা খােযা'আ; যারা যুদ্ধের জন্য সমবেত হয়েছে। আবু সুফইয়ান বলল, আল্লাহর কসম, কবীলা খােযা'আ তাে নিতান্তই দুর্বল, তাদের এরূপ আগুন কোথায়! (আব্বাস রা বলেন) আমি আবু সুফইয়ানের আওয়াজ চিনে ফেলি, আমি বললাম, হে আবু হানযালা! বলেন, সেও আমার আওয়াজ চিনে ফেলে এবং বলল, আবুল ফযল নাকি? বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ! আমিই। সে বলল, তােমার কি হয়েছে, আমার মাতা-পিতা তােমার উপর উৎসর্গ হােক। বলেন, আমি বললাম, তােমার জন্য ধ্বংস, আল্লাহর কসম! ইনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও তাঁর সাহাবা কিরাম। কুরায়শের প্রভাতের উপর আফসােস! আল্লাহর কসম, যদি রাসূলুল্লাহু (ﷺ) বলপূর্বক মক্কাতে প্রবেশ করেন এবং এর পূর্বে যদি তারা এসে তাঁর নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা না করে তবে কুরায়শের জন্য চিরস্থায়ী ধ্বংস। সে বলল, তাহলে এর উপায় কি, আমার মাতা-পিতা তােমার উপর উৎসর্গ হােক। বলেন, আমি বললাম, আল্লাহর কসম, কোন
উপায় নেই। তবে তুমি আমার এই সওয়ারীর পিছনে আরােহণ কর, আমি তােমাকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দরবারে নিয়ে যাব। আল্লাহ্ কসম! যদি তিনি তােমার উপর কাবু পেয়ে যান তবে তােমার গর্দান উড়িয়ে দেবেন। বলেন, সে খচ্চরের পিঠে আরােহণ করলাে, আর তার দুই সাথী ফিরে চলে গেলাে। আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমি যখন মুসলমানদের কোন এক আগুনের (অর্থাৎ ছাউনি) কাছ দিয়ে যেতাম, তারা জিজ্ঞাসা করত, এ কে? যখন তারা লক্ষ্য করত তাে বলত, ইনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর চাচা, যিনি তার খচ্চরের উপর সওয়ার। অবশেষে আমি উমার ইবন খাত্তাব (রাযিঃ) -এর আগুনের (ছাউনি) কাছ দিয়ে অতিক্রম করলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এ কে? এবং আমার দিকে উঠে এলেন।
যখন আবু সুফইয়ানকে সওয়ারীর উপরে আমার পিছনে দেখলেন তখন তাকে চিনে ফেললেন এবং বললেন, আবু সুফইয়ান? আল্লাহর দুশমন, ঐ আল্লাহর জন্য প্রশংসা, যিনি তােকে আমার নিয়ন্ত্রণে দিয়েছেন। আর দ্রুত রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দিকে বেরিয়ে গেলেন। আমিও খচ্চরকে আঘাত করলাম (দ্রুত) দৌড়ালাম। আমি তার আগে চলে গেলাম, যেমনিভাবে মন্থর গতিসম্পন্ন সওয়ারী মন্থর গতিসম্পন্ন মানুষের থেকে আগে চলে যায়। অতঃপর আমি খচ্চর থেকে দ্রুত নেমে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাম। উমার (রাযিঃ) ও এলেন এবং প্রবেশ করে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) এ হলাে আবু সুফইয়ান। আল্লাহ্ তা'আলা কোন চুক্তি ও অঙ্গীকার ব্যতীত তার উপর নিয়ন্ত্রণ দিয়েছেন। আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দিব। (আব্বাস রা) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) আমি তাকে আশ্রয় দিয়েছি। বলেন, এর পর আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে বসে গেলাম এবং তাঁর মাথা ধরে বললাম, আল্লাহর কসম, আপনার সঙ্গে আমি ব্যতীত কেউ গােপন কথা (পরামর্শ) বলবেনা। বলেন, যখন উমার (রাযিঃ) তার ব্যাপারে অধিক বলতে লাগলেন, আমি বললাম, হে উমার! থামুন, যদি বানূ আদী ইবনে কা'ব থেকে কোন ব্যক্তি হত তবে আপনি এ কথা বলতেন না। কিন্তু আপনি জানেন যে, এ বানূ আব্দ মানাফ থেকে এক ব্যক্তি। তিনি বললেন, হে আব্বাস! থামুন আল্লাহর কসম, যেদিন আপনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন আপনার ইসলাম গ্রহণ করাটা আমার কাছে (আমার পিতা) খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ অপেক্ষা অধিক পসন্দনীয় ছিলাে। (অর্থাৎ যদি সে ইসলাম গ্রহণ করতাে তবে আমার এতটুকু আনন্দ হত না, যতটুকু আনন্দ আপনার ইসলাম গ্রহণে হয়েছে)। আর এটা এই জন্য যে, আমি অবহিত যে, আপনার ইসলাম গ্রহণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর অধিক পসন্দনীয়। অনন্তর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তাকে তার নিবাসে নিয়ে যাও। সকালে আমার কাছে নিয়ে এস।
বলেন, যখন সকাল হলাে তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাম। তিনি তাকে দেখে বললেন, হে আবু সুফইয়ান। তােমার জন্য আফসােস, তােমার জন্য কি এখনাে সেই সময় আসেনি, যাতে তুমি সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, আল্লাহ্ তা'আলা ব্যতীত কোন মা'বুদ নেই? সে বলল, আমার মাতা-পিতা আপনার জন্য উৎসর্গ হােক, আপনি কতইনা ধৈর্যশীল, মহান ও আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষাকারী। আল্লাহর কসম! আমার হৃদয়ে একথা এসেছে যে, যদি আল্লাহর সঙ্গে অন্য কেউ (মা'বুদ) হত তবে এখন পর্যন্ত কিছু একটা উপকার দিত। তিনি বললেন, হে আবু সুফইয়ান! তােমার জন্য আক্ষেপ। তােমার জন্য কি এখনাে সময় আসেনি যে তুমি এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, আমি আল্লাহু তা'আলার রাসূল? সে বলল, আমার মাতা-পিতা আপনার উপর উৎসর্গ, আপনি কতইনা ধৈর্যশীল, মহান ও আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষাকারী। আল্লাহর কসম! এই একটি মাত্র বিষয়, যে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আমার হৃদয়ে খটকা বা সন্দেহ বিরাজমান। আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, তােমার জন্য ধ্বংস, তােমার গর্দান উড়িয়ে দেয়ার পূর্বে ইসলাম গ্রহণ কর এবং এ কথার সাক্ষ্য প্রদান কর যে, আল্লাহ্ তা'আলা ব্যতীত কোন মা'বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল। বলেন, অনন্তর সে সত্য সাক্ষ্য প্রদান করল এবং ইসলাম গ্রহণ করল। আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! (ﷺ) আবু সুফইয়ান ফখর বা সুখ্যাতিকে পসন্দ করে। তাঁর জন্য কিছু একটা সম্মানের বস্তু নির্ধারণ করুন। তিনি বললেন, হ্যাঁ, যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ানের গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। যে ব্যক্তি নিজের দরােজা বন্ধ করে দিবে (বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেনা) সে নিরাপদ। অতঃপর আমি যখন ফিরে চললাম, তিনি বললেন, হে আব্বাস! তাকে উপত্যকার কোন সংকীর্ণ গিরিপথে সৈন্য বাহিনী অতিক্রম করার জায়গায় দাড় করে দাও। এবং সেখান দিয়ে আল্লাহর বাহিনী অতিক্রম করবে, তিনি তা প্রত্যক্ষ করবেন।
বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে যে জায়গার নির্দেশ দিয়েছেন আমি তাঁকে সেই জায়গায় দাঁড় করালাম। বলেন, সেখান দিয়ে বিভিন্ন কবীলা নিজ নিজ ঝাণ্ডা নিয়ে অতিক্রম করছিলাে। যখন তাঁর কাছ দিয়ে একটি কবীলা অতিক্রম করত তাে জিজ্ঞাসা করতেনঃ এটা কোন কবীলা (-এর বাহিনী)? আমি বললাম, কবীলা বানূ সুলায়মা। বলেন, আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, বানূ সুলায়ম দিয়ে আমার কাজ কি? এরপর আরেকটি কবীলা অতিক্রম করল। জিজ্ঞাসা করলেন, এরা কোন কবীলার (বাহিনী)? আমি বললাম, কবীলা মুযায়না। বললেন, মুযায়নার সাথে আমার কি সম্পর্ক। এমনিভাবে অপরাপর কবীলাগুলাে অতিক্রম করে গেল। যে কবীলাই অতিক্রম করত তিনি আমাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন এবং আমি তাকে সে ব্যাপারে বলে দিতাম; তিনি বলতেন, অমুক কবীলা দিয়ে আমার কি হবে।
অবশেষে (সর্বশেষ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সবুজ রংা বাহিনীতে অতিক্রম করেন। তাতে মুহাজির ও আনসার উভয়ে ছিলেন। তাদের থেকে প্রত্যেক লােহাতে নড়াচড়াকারী দেখাচ্ছিলাে। (অর্থাৎ পূর্ণরূপে অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত) আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, সুবহানাল্লাহ্! হে আব্বাস! এরা কারা? আমি বললাম, ইনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এবং তার সঙ্গে মুহাজির ও আনসার (সাহাবা কিরাম রা)। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! এদের সঙ্গে কারাে মুকাবিলা করার শক্তি নেই। হে আবু ফযল! আল্লাহর কসম, তােমার ভ্রাতুস্পুত্র তাে শত্রুদের উপর বাদশাহ হয়ে গেছে। বলেন, আমি বললাম, হে আবু সুফইয়ান! তােমার জন্য ধ্বংস। এটা নবুওয়াত (বাদশাহী নয়)। আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, হ্যাঁ! বলেন, আমি বললাম, তােমার কাওমের শরণাপন্ন হও, তাদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাও। অবশেষে তিনি যখন তাদের কাছে গেলেন, তখন উঁচু আওয়াজে চিৎকার করে বললেন, হে কুরায়শের দল! এই সে মুহাম্মাদ (ﷺ) এই রূপ বাহিনী নিয়ে এসেছেন, যাদের প্রতিরােধ বা মুকাবিলা করতে তােমরা সক্ষম নও। যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ান (রা-এর) গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। তখন হিন্দ বিনতে উতবা ইবন রবী'আ তাঁর উদ্দেশ্যে দাঁড়াল এবং খুঁটি ধরে বলতে লাগল, কতশক্ত চর্বি সম্পন্ন (বীর) নিহত হয়েছে, এটা তাে নিতান্তই মন্দ বাহিনী। আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, তােমার জন্য ধ্বংস! তােমাদের পক্ষ থেকে এটা যেন তােমাদেরকে ধোকায় না ফেলে। তােমাদের কাছে ঐ বাহিনী এসে গেছে, যার মােকাবিলা করার কারাে শক্তি নেই। যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ানের গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। তারা বলল, আল্লাহ্ তােমাকে ধ্বংস করুক। তােমার গৃহ দ্বারা কি-ই আর লাভ হবে। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি নিজের দরজা বন্ধ করবে সেও নিরাপদ।
বস্তুত এই হাদীসের সনদ মুত্তাসিল (অবিচ্ছিন্ন) ও সহীহ্। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মক্কা মুকাররমা বলপূর্বক বিজিত হয়েছে এবং সন্ধি সূত্রে বিজিত হয়নি। আর এটা সাব্যস্ত হয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও কুরায়শের মাঝে যে সন্ধি স্থাপিত ছিলাে তা তাঁর মক্কা আগমনের পূর্বে খতম হয়ে গিয়েছিলাে।
সে ব্যক্তি কি আব্বাস (রাযিঃ)-এর এই বক্তব্যের প্রতি লক্ষ্য করছেনা যে, “কুরায়শের প্রভাতের উপর আফসােস” - যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট তারা এসে নিরাপত্তা প্রার্থনা করার পূর্বে তিনি মক্কাতে বলপূর্বক প্রবেশ করেন তবে কুরায়শের জন্য চিরস্থায়ী ধ্বংস নেমে আসবে।
তবে তােমাদের কি ধারণা যে, আব্বাস (রাযিঃ) নিজের সর্বোত্তম অভিমত ও বুদ্ধি সত্ত্বেও এই ধারণা করতেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিরাপত্তা এবং সন্ধি সত্ত্বেও কুরায়শকে শায়েস্তা করবেন। এটা অসম্ভব ব্যাপার যা আদৌ হতে পারেনা এবং কোন বুদ্ধিমান ও দ্বীনদারের জন্য জায়িয নেই যে, সে তার ব্যাপারে এরূপ ধারণা পােষণ করবে। অতঃপর এই আব্বাস (রাযিঃ) আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-কে এভাবে সম্বােধন করেছেন, বলেছেন, আল্লাহর কসম! যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তােমাকে বাগে পেয়ে যান তবে তােমাকে হত্যা করে ফেলবেন। আল্লাহর কসম! যদি তিনি বলপূর্বক মক্কাতে প্রবেশ করেন তাহলে কুরায়শের জন্য ধ্বংস। এবং আবু সুফইয়ান তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করে নাই। আর তাকে এটা বলেন নাই যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মক্কাতে প্রবেশ করার ব্যাপারে আমার ও কুরায়শের ভয় কিসের। আমাদের তাে তাঁর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা অর্জিত আছে। তিনি তাে মক্কায় প্রবেশ করে বানূ ‘নাফাসা’ থেকে কবীলা খােযা'আর বদলা নিবেন, অবশিষ্ট কুরায়শদের থেকে নয় এবং না সমস্ত মক্কাবাসীদের থেকে। যখন তাকে আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, “আল্লাহর কসম! যদি তােমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বাগে পেয়ে যান তবে তিনি তােমার গর্দান উড়িয়ে দিবেন।” এর উত্তরে আবু সুফইয়ান এটা বলেননি যে, তিনি আমার গর্দান কেন উড়িয়ে দিবেন, আমার তাে তার পক্ষ থেকে নিরাপত্তা অর্জিত রয়েছে। অতঃপর এই উমার ইবন খাত্তাব (রাযিঃ) আবু সুফইয়ানকে দেখে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলছেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) এ হলাে আবু সুফইয়ান। আল্লাহ্ তা'আলা কোন চুক্তি এবং অঙ্গীকার ব্যতীত তাকে আপনার বাগে নিয়ে এসেছেন। আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান মেরে দেই। এতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তার এ কথার প্রতিবাদ করেন নাই। কেননা তাঁর মতে আবু সুফইয়ানের জন্য রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও চুক্তি অর্জিত ছিলােনা। অতঃপর আবু সুফইয়ান এ ব্যাপারে উমার (রাযিঃ) -এর সঙ্গে বিবাদ করেন নাই, না তার পক্ষ থেকে আব্বাস (রাযিঃ) প্রমাণ পেশ করেছেন। বরং আব্বাস (রাযিঃ) তাকে বলেছেন, আমি তাকে আশ্রয় প্রদান করেছি। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ), উমার (রাযিঃ) ও আব্বাস (রাযিঃ) তাদের উভয়ের কথাকে প্রত্যাখ্যান করেন নাই। এটা প্রমাণ করে যে, যদি আব্বাস (রাযিঃ)-এর পক্ষ থেকে আশ্রয় বা নিরাপত্তা অর্জিত না হত তাহলে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উমার (রাযিঃ) কে আবু সুফইয়ানের হত্যার সংকল্প থেকে বিরত রাখতেন না। সুতরাং সন্ধি বিলুপ্তির এর চেয়ে স্পষ্ট প্রমাণ আর কী হতে পারে?
অতঃপর আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) যখন মক্কাতে প্রবেশ করেন তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে সম্মান তাকে দান করেছেন উচু আওয়াজে এর ঘােষণা দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ, যে ব্যক্তি নিজের দরজা বন্ধ করে দিবে সে নিরাপদ। বস্তুত কুরায়শরাও তখন তাকে বলেনি যে, আমাদের তােমার গৃহে প্রবেশ করার এবং আমাদের দরজা বন্ধ করার প্রয়ােজন নেই, আমাদের নিরাপত্তা অর্জিত আছে যা আমাদেরকে অন্য কোন নিরাপত্তা তলব করা থেকে অমুখাপেক্ষী করে দিয়েছে। কিন্তু তারা জেনে গিয়েছিলাে যে, তারা প্রথমােক্ত নিরাপত্তা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে এবং তাদের ও রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মাঝে স্থাপিত যে সন্ধি ছিলাে তা ভেঙ্গে গিয়েছে। যখন তাদেরকে এই শব্দাবলী দ্বারা সম্বােধন করা হয়েছে তখন তারা নিরাপত্তায় নেই। তবে তারা ঐ নিরাপত্তা অর্জন করবে যা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদেরকে (নতুনভাবে) দান করেছেন। অর্থাৎ তারা আবু সুফইয়ান (রাযিঃ)-এর গৃহে প্রবেশ করবে কিংবা নিজেদের দরজা বন্ধ করে দিবে।
এর পর উম্মুহানি বিনতে আবী তালিব (রাযিঃ) থেকে এরূপ বিষয়বস্তু বর্ণিত আছে, যা প্রমাণ করে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন মক্কাতে প্রবেশ করেছেন তখন সেটা দারুল হারব ছিলাে, দারুল আমান ছিলােনাঃ
5460 - حَدَّثَنَا فَهْدُ بْنُ سُلَيْمَانَ بْنِ يَحْيَى , قَالَ: ثنا يُوسُفُ بْنُ بُهْلُولٍ , قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيسَ , قَالَ: حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ , قَالَ: قَالَ الزُّهْرِيُّ حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ , عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا [ص:320] أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَضَى لِسَفْرَةٍ وَخَرَجَ لِعَشْرٍ مَضَيْنَ مِنْ رَمَضَانَ , فَصَامَ وَصَامَ النَّاسُ مَعَهُ حَتَّى إِذَا كَانَ بِالْكَدِيدِ أَفْطَرَ ثُمَّ مَضَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , حَتَّى نَزَلَ مَرَّ الظَّهْرَانِ فِي عَشَرَةِ آلَافٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ , فَسَمِعَتْ سُلَيْمٌ وَمُزَيْنَةُ , فَلَمَّا نَزَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ الظَّهْرَانِ , وَقَدْ عَمِيَتِ الْأَخْبَارُ عَلَى قُرَيْشٍ , فَلَا يَأْتِيهِمْ خَبَرُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا يَدْرُونَ مَا هُوَ فَاعِلٌ , وَخَرَجَ فِي تِلْكَ اللَّيْلَةِ أَبُو سُفْيَانَ بْنُ حَرْبٍ , وَحَكِيمُ بْنُ حِزَامٍ وَبُدَيْلُ بْنُ وَرْقَاءَ , يَنْظُرُونَ هَلْ يَجِدُونَ خَيْرًا , أَوْ يَسْمَعُونَهُ , فَلَمَّا نَزَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ الظَّهْرَانِ , قَالَ الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قُلْتُ: وَاصَبَاحَ قُرَيْشٍ , لَئِنْ دَخَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ عَنْوَةً قَبْلَ أَنْ يَأْتُوهُ فَيَسْتَأْمِنُوهُ , إِنَّهُ لَهَلَاكُ قُرَيْشٍ إِلَى آخِرِ الدَّهْرِ , قَالَ: فَجَلَسْتُ عَلَى بَغْلَةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْبَيْضَاءِ , فَخَرَجْتُ عَلَيْهَا حَتَّى دَخَلْتُ الْأَرَاكَ , فَلَقِيَ بَعْضَ الْحَطَّابَةِ , أَوْ صَاحِبَ لَبَنٍ , أَوْ ذَا حَاجَةٍ يَأْتِيهِمْ , يُخْبِرُهُمْ بِمَكَانِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِيَخْرُجُوا إِلَيْهِ , قَالَ: فَإِنِّي لَأُشِيرُ عَلَيْهِ , وَأَلْتَمِسُ مَا خَرَجْتُ لَهُ , إِذْ سَمِعْتُ كَلَامَ أَبِي سُفْيَانَ وَبُدَيْلٍ , وَهُمَا يَتَرَاجَعَانِ , وَأَبُو سُفْيَانَ يَقُولُ: مَا رَأَيْتُ كَاللَّيْلَةِ نِيرَانًا قَطُّ وَلَا عَسْكَرًا , قَالَ بُدَيْلٌ: هَذِهِ , وَاللهِ خُزَاعَةُ حَمَشَتْهَا الْحَرْبُ , فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: خُزَاعَةُ وَاللهِ , أَذَلُّ مِنْ أَنْ يَكُونَ هَذِهِ نِيرَانَهُمْ , فَعَرَفْتُ صَوْتَ أَبِي سُفْيَانَ , فَقُلْتُ: يَا أَبَا حَنْظَلَةَ , قَالَ: فَعَرَفَ صَوْتِي فَقَالَ: أَبُو الْفَضْلِ؟ قَالَ: قُلْتُ: نَعَمْ قَالَ: مَا لَكَ فِدَاكَ أَبِي وَأُمِّي؟ قَالَ قُلْتُ: وَيْلَكَ , هَذَا , وَاللهِ رَسُولُ اللهِ فِي النَّاسِ , وَاصَبَاحَ قُرَيْشٍ وَاللهِ لَئِنْ دَخَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ عَنْوَةً قَبْلَ أَنْ يَأْتُوهُ فَيَسْتَأْمِنُوهُ , إِنَّهُ لَهَلَاكُ قُرَيْشٍ إِلَى آخِرِ الدَّهْرِ , قَالَ: فَمَا الْحِيلَةُ , فِدَاكَ أَبِي وَأُمِّي؟ قَالَ قُلْتُ: لَا وَاللهِ إِلَّا أَنْ تَرْكَبَ فِي عَجُزِ هَذِهِ الدَّابَّةِ فَآتِيَ بِكَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِنَّهُ وَاللهِ لَئِنْ ظَفِرَ بِكَ , لِيَضْرِبَنَّ عُنُقَكَ , قَالَ: فَرَكِبَ فِي عَجُزِ الْبَغْلَةِ , وَرَجَعَ صَاحِبَاهُ , قَالَ: وَكُلَّمَا مَرَرْتُ بِنَارٍ مِنْ نِيرَانِ الْمُسْلِمِينَ قَالُوا: مَنْ هَذَا؟ فَإِذَا نَظَرُوا , قَالُوا: عَمُّ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى بَغْلَتِهِ حَتَّى مَرَرْتُ بِنَارِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَقَالَ: مَنْ هَذَا؟ وَقَامَ إِلَيَّ , فَلَمَّا رَآهُ عَلَى عَجُزِ الدَّابَّةِ , عَرَفَهُ وَقَالَ: أَبُو سُفْيَانَ عَدُوُّ اللهِ؟ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَمْكَنَ مِنْكَ , وَخَرَجَ يَشْتَدُّ نَحْوَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَكَضْتُ الْبَغْلَةَ فَسَبَقْتُهُ , كَمَا تَسْبِقُ الدَّابَّةُ الْبَطِيئَةُ الرَّجُلَ الْبَطِيءَ , ثُمَّ اقْتَحَمْتُ عَنِ الْبَغْلَةِ وَدَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَجَاءَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَدَخَلَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ , هَذَا أَبُو سُفْيَانَ , قَدْ أَمْكَنَ اللهُ مِنْهُ بِلَا عَقْدٍ وَلَا عَهْدٍ , فَدَعْنِي فَأَضْرِبُ عُنُقَهُ , قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي قَدْ أَجَرْتُهُ , [ص:321] قَالَ: ثُمَّ جَلَسْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَأَخَذْتُ بِرَأْسِهِ فَقُلْتُ: وَاللهِ لَا يُنَاجِيهِ رَجُلٌ دُونِي , قَالَ: فَلَمَّا أَكْثَرَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي شَأْنِهِ , فَقُلْتُ: مَهْلًا يَا عُمَرُ وَاللهِ لَوْ كَانَ رَجُلًا مِنْ بَنِي عَدِيِّ بْنِ كَعْبٍ مَا قُلْتَ هَذَا , وَلَكِنْ قَدْ عَرَفْتَ أَنَّهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ , قَالَ فَقَالَ: مَهْلًا يَا عَبَّاسُ لَإِسْلَامُكَ يَوْمَ أَسْلَمْتَ , كَانَ أَحَبَّ إِلَيَّ مِنْ إِسْلَامِ الْخَطَّابِ وَمَا لِي إِلَّا أَنِّي قَدْ عَرَفْتُ أَنَّ إِسْلَامَكَ كَانَ أَحَبَّ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ إِسْلَامِ الْخَطَّابِ , فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " اذْهَبْ بِهِ إِلَى رَحْلِكَ فَإِذَا أَصْبَحْتَ فَأْتِنَا بِهِ , قَالَ: فَلَمَّا أَصْبَحْتُ غَدَوْتُ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَلَمَّا رَآهُ قَالَ وَيْحَكَ يَا أَبَا سُفْيَانَ , أَلَمْ يَأْنِ لَكَ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ؟ , قَالَ: بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي فَمَا أَحْلَمَكَ وَأَكْرَمَكَ وَأَوْصَلَكَ , أَمَا وَاللهِ لَقَدْ كَادَ يَقَعُ فِي نَفْسِي أَنْ لَوْ كَانَ مَعَ اللهِ غَيْرُهُ لَقَدْ أَغْنَى شَيْئًا بَعْدُ , وَقَالَ: وَيْلَكَ يَا أَبَا سُفْيَانَ أَلَمْ يَأْنِ لَكَ أَنْ تَشْهَدَ أَنِّي رَسُولُ اللهِ؟ , قَالَ: بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي مَا أَحْلَمَكَ وَأَكْرَمَكَ وَأَوْصَلَكَ أَمَّا وَاللهِ هَذِهِ فَإِنَّ فِي النَّفْسِ مِنْهَا حَتَّى الْآنَ شَيْئًا , قَالَ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: قُلْتُ: وَيْلَكَ أَسْلِمْ وَاشْهَدْ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ قَبْلَ أَنْ يُضْرَبَ عُنُقُكَ , قَالَ: فَشَهِدَ شَهَادَةَ الْحَقِّ وَأَسْلَمَ , قَالَ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ يُحِبُّ هَذَا الْفَخْرَ فَاجْعَلْ لَهُ شَيْئًا , قَالَ: «نَعَمْ مَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ أَغْلَقَ عَلَيْهِ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ» , فَلَمَّا ذَهَبْتُ لِأَنْصَرِفَ قَالَ يَا عَبَّاسُ احْبِسْهُ بِمَضِيقِ الْوَادِي عِنْدَ حَطِيمِ الْجُنْدِ حَتَّى يَمُرَّ بِهِ جُنُودُ اللهِ فَيَرَاهَا , قَالَ: فَحَبَسْتُهُ حَيْثُ أَمَرَنِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: وَمَرَّتْ بِهِ الْقَبَائِلُ عَلَى رَايَاتِهَا بِهَا فَكُلَّمَا مَرَّتْ قَبِيلَةٌ قَالَ: مَنْ هَذِهِ؟ قُلْتُ: بَنُو سُلَيْمٍ قَالَ: يَقُولُ: مَا لِي وَلِبَنِي سُلَيْمٍ ثُمَّ تَمُرُّ بِهِ قَبِيلَةٌ فَيَقُولُ: مَنْ هَذِهِ فَأَقُولُ: مُزَيْنَةُ فَقَالَ: مَا لِي وَلِمُزَيْنَةَ , حَتَّى نَفِدَتِ الْقَبَائِلُ لَا تَمُرُّ بِهِ قَبِيلَةٌ إِلَّا سَأَلَنِي عَنْهَا فَأُخْبِرُهُ إِلَّا قَالَ: مَا لِي وَلِبَنِي فُلَانٍ , حَتَّى مَرَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْخَضْرَاءِ كَتِيبَةٍ فِيهَا الْمُهَاجِرُونَ , وَالْأَنْصَارُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ لَا يُرَى مِنْهُمْ إِلَّا الْحَدَقُ فِي الْحَدِيدِ , فَقَالَ: سُبْحَانَ اللهِ مَنْ هَؤُلَاءِ يَا عَبَّاسُ؟ قُلْتُ: هَذَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمُهَاجِرِينَ , وَالْأَنْصَارِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ , فَقَالَ: مَا لِأَحَدٍ بِهَؤُلَاءِ قِبَلٌ وَاللهِ يَا أَبَا الْفَضْلِ لَقَدْ أَصْبَحَ مُلْكُ ابْنِ أَخِيكَ الْغَدَاةَ عَظِيمًا , [ص:322] قَالَ: قُلْتُ: وَيْلَكَ يَا أَبَا سُفْيَانَ إِنَّهَا النُّبُوَّةُ قَالَ: فَنَعَمْ , قَالَ: قُلْتُ الْتَجِئْ إِلَى قَوْمِكَ اخْرُجْ إِلَيْهِمْ , حَتَّى إِذَا جَاءَهُمْ صَرَخَ بِأَعْلَى صَوْتِهِ: يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ هَذَا مُحَمَّدٌ قَدْ جَاءَكُمْ فِيمَا لَا قِبَلَ لَكُمْ بِهِ فَمَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ , فَقَامَتْ إِلَيْهِ هِنْدُ بِنْتُ عُتْبَةَ بْنِ رَبِيعَةَ فَأَخَذَتْ شَارِبَهُ فَقَالَتِ: اقْتُلُوا الْحَمِيتَ الدَّسِمَ فَبِئْسَ طَلِيعَةُ قَوْمٍ , قَالَ: وَيْلَكُمْ لَا تَغُرَّنَّكُمْ هَذِهِ مِنْ أَنْفُسِكُمْ وَإِنَّهُ قَدْ جَاءَ مَا لَا قِبَلَ لَكُمْ بِهِ مَنْ دَخَلَ دَارِ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ , قَالُوا: قَاتَلَكَ اللهُ وَمَا يُغْنِي غَنَاءَ دَارِكَ قَالَ: وَمَنْ أَغْلَقَ عَلَيْهِ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ فَهَذَا حَدِيثٌ مُتَّصِلُ الْإِسْنَادِ صَحِيحٌ مَا فِيهِ مَعْنًى يَدُلُّ عَلَى فَتْحِ مَكَّةَ عَنْوَةً وَيَنْفِي أَنْ يَكُونَ صُلْحًا وَيُثْبِتُ أَنَّ الْهُدْنَةَ الَّتِي كَانَتْ تَقَدَّمَتْ بَيْنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَيْنَ قُرَيْشٍ قَدْ كَانَتِ انْقَطَعَتْ وَذَهَبَتْ قَبْلَ وُرُودِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ , أَلَا يَرَى إِلَى قَوْلِ الْعَبَّاسِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: وَاصَبَاحَ قُرَيْشٍ وَاللهِ لَئِنْ دَخَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ عَنْوَةً قَبْلَ أَنْ يَأْتُوهُ فَيَسْتَأْمِنُوهُ إِنَّهُ لَهَلَاكُ قُرَيْشٍ إِلَى آخِرِ الدَّهْرِ , أَفَتَرَى الْعَبَّاسَ , عَلَى فَضْلِ رَأْيِهِ وَعَقْلِهِ يَتَوَهَّمُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَعَرَّضُ قُرَيْشًا وَهُمْ مِنْهُ فِي أَمَانٍ وَصُلْحٍ وَهُدْنَةٍ؟ هَذَا مِنَ الْمُحَالِ الَّذِي لَا يَجُوزُ كَوْنُهُ وَلَا يَنْبَغِي لِذِي لُبٍّ أَوْ لِذِي عَقْلٍ أَوْ لِذِي دِينٍ أَنْ يَتَوَهَّمَ ذَلِكَ عَلَيْهِ , ثُمَّ هَذَا الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَدْ خَاطَبَ أَبَا سُفْيَانَ بِذَلِكَ فَقَالَ: وَاللهِ لَئِنْ ظَفِرَ بِكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيَقْتُلَنَّكَ وَاللهِ إِنَّهُ لَهَلَاكُ قُرَيْشٍ إِنْ دَخَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ عَنْوَةً , فَلَا يَدْفَعُ أَبُو سُفْيَانَ قَوْلَهُ وَلَا يَقُولُ لَهُ: وَمَا خَوْفِي وَخَوْفِ قُرَيْشٍ مِنْ دُخُولِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ وَنَحْنُ فِي أَمَانٍ مِنْهُ؟ , إِنَّمَا يَقْصِدُ بِدُخُولِهِ أَنْ يَنْتَصِفَ خُزَاعَةَ مِنْ بَنِي نُفَاثَةَ دُونَ قُرَيْشٍ وَسَائِرِ أَهْلِ مَكَّةَ , وَلَمْ يَقُلْ لَهُ أَبُو سُفْيَانَ: وَلِمَ يَضْرِبُ عُنُقِي؟ , إِذْ قَالَ لَهُ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ: وَاللهِ لَئِنْ ظَفِرَ بِكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِيَضْرِبَنَّ عُنُقَكَ , وَأَنَا فِي أَمَانٍ مِنْهُ , ثُمَّ هَذَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُولُ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَمَّا رَأَى أَبَا سُفْيَانَ , يَا رَسُولَ اللهِ هَذَا أَبُو سُفْيَانَ قَدْ أَمْكَنَ اللهُ مِنْهُ بِلَا عَهْدٍ وَلَا عَقْدٍ فَدَعْنِي أَضْرِبْ عُنُقَهُ , وَلَمْ يُنْكِرْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَلِكَ عَلَيْهِ إِذْ كَانَ أَبُو سُفْيَانَ , عِنْدَهُ , لَيْسَ فِي أَمَانِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا فِي صُلْحٍ مِنْهُ , ثُمَّ لَمْ يُحَاجَّ أَبُو سُفْيَانَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بِذَلِكَ وَلَا حَاجَّهُ عَنْهُ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَلْ قَالَ لَهُ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: إِنِّي قَدْ أَجَرْتُهُ , [ص:323] فَلَمْ يُنْكِرْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى عُمَرَ وَلَا عَلَى الْعَبَّاسِ مَا كَانَ مِنْهُمَا مِنَ الْقَوْلِ الَّذِي ذَكَرْنَاهُ عَنْهُمَا , فَدَلَّ ذَلِكَ أَنَّهُ لَوْلَا جِوَارُ الْعَبَّاسِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ إِذًا لَمَا مَنَعَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِيمَا أَرَادَ مِنْ قَتْلِ أَبِي سُفْيَانَ , فَأَيُّ خُرُوجٍ مِنَ الصُّلْحِ مُنْعَدِمٍ؟ وَأَيُّ نَقْضٍ لَهُ يَكُونُ أَبْيَنَ مِنْ هَذَا؟ ثُمَّ أَبُو سُفْيَانَ لَمَّا دَخَلَ مَكَّةَ بَعْدَ ذَلِكَ نَادَى بِأَعْلَى صَوْتِهِ بِمَا جَعَلَهُ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ أَغْلَقَ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ , وَلَمْ يَقُلْ لَهُ قُرَيْشٌ وَمَا حَاجَتُنَا إِلَى دُخُولِنَا دَارَكَ وَإِلَى إِغْلَاقِنَا أَبْوَابِنَا وَنَحْنُ فِي أَمَانٍ قَدْ أَغْنَانَا عَنْ طَلَبِ الْأَمَانِ بِغَيْرِهِ , وَلَكِنَّهُمْ عَرَفُوا خُرُوجَهُمْ مِنَ الْأَمَانِ الْأَوَّلِ وَانْتِقَاضَ الصُّلْحِ الَّذِي كَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَّهُمْ عِنْدَمَا خُوطِبُوا بِمَا خُوطِبُوا بِهِ مِنْ هَذَا الْكَلَامِ غَيْرُ آمَنِينَ إِلَّا أَنْ يَفْعَلُوا مَا جَعَلَهُمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهِ آمَنِينَ أَنْ يَفْعَلُوهُ مِنْ دُخُولِهِمْ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ أَوْ مِنْ إِغْلَاقِهِمْ أَبْوَابَهُمْ , ثُمَّ قَدْ رُوِيَ عَنْ أُمِّ هَانِئٍ بِنْتِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا مَا يَدُلُّ عَلَى أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ مَكَّةَ وَهِيَ دَارُ حَرْبٍ لَا دَارَ أَمَانٍ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬১
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬১। ফাহাদ (রাহঃ) .....আকীল ইবনে আবী তালিবের আযাদকৃত গােলাম আবু মুররা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মুহানি বিনতে আবী তালিব (রাযিঃ) বলেন, (মক্কা বিজয়ের প্রাক্কালে) যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কার উচু এলাকায় অবতরণ করেন তখন আমার দেবরদের থেকে দুই ব্যক্তি, যারা বানূ মাখযুম গােত্রভুক্ত ছিলাে, পলায়ন করে আমার কাছে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং তিনি হুবায়রা ইবনে আবী ওয়াহব মাখযুমীর স্ত্রী ছিলেন। বলেন, অনন্তর আমার ভাই আলী ইবনে আবী তালিব (রাযিঃ) আমার নিকট এলেন এবং তিনি বললেন, আমি তাদের দুজনকে অবশ্যই হত্যা করব। আমি তাদের উপর আমার গৃহ (দরজা) বন্ধ করে দিলাম। অতঃপর আমি মক্কার উঁচু এলাকায় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাম। আমি তাঁকে একটি গামলায় গােসলরত পেলাম। তাতে আটার চিহ্ন ছিলাে। তার কন্যা ফাতিমা (রাযিঃ) (সম্মুখে) কাপড় দিয়ে পর্দা দিয়ে রাখছিলেন, যখন তিনি গােসল শেষ করলেন তখন কাপড় দিয়ে শরীর জড়িয়ে নিলেন। অতঃপর তিনি চাশতের (সূর্যোদয় ও দ্বিপহরের মধ্যবর্তী সময়) আট রাআত সালাত আদায় করেন। সালাত শেষে আমার দিকে ফিরে বললেন, উম্মু হানির আগমন মুবারক হােক, কেন এসেছ? বলেন, আমি তাকে ঐ দু’ব্যক্তি ও আলী (রাযিঃ)-এর ঘটনা শুনালাম। তিনি বললেন, তুমি যাকে আশ্রয় দিয়েছ আমি তাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম, এবং তুমি যাকে নিরাপত্তা প্রদান করেছ আমিও তাকে নিরাপত্তা প্রদান করলাম।
5461 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ , قَالَ: ثنا يُوسُفُ بْنُ بُهْلُولٍ , قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيسَ , عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ , قَالَ: حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ , عَنْ أَبِي مُرَّةَ , مَوْلَى عَقِيلِ بْنِ أَبِي طَالِبٍ أَنَّ أُمَّ هَانِئٍ بِنْتَ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ: " لَمَّا نَزَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَعْلَى مَكَّةَ فَرَّ إِلَيَّ رَجُلَانِ مِنْ أَحْمَائِي مِنْ بَنِي مَخْزُومٍ وَكَانَتْ عِنْدَ هُبَيْرَةَ بْنِ أَبِي وَهْبٍ الْمَخْزُومِيِّ فَدَخَلَ عَلَيَّ أَخِي عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَقَالَ: لَأَقْتُلَنَّهُمَا , فَغَلَّقْتُ عَلَيْهِمَا بَيْتِي ثُمَّ جِئْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَعْلَى مَكَّةَ فَوَجَدْتُهُ يَغْتَسِلُ فِي جَفْنَةٍ إِنَّ فِيهَا أَثَرَ الْعَجِينِ وَفَاطِمَةُ ابْنَتُهُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا تَسْتُرُهُ بِثَوْبٍ , فَلَمَّا اغْتَسَلَ أَخَذَ ثَوْبَهُ فَتَوَشَّحَ بِهِ ثُمَّ صَلَّى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الضُّحَى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَيَّ فَقَالَ: مَرْحَبًا وَأَهْلًا بِأُمِّ هَانِئٍ مَا جَاءَ بِكِ؟ فَأَخْبَرْتُهُ خَبَرَ الرَّجُلَيْنِ وَخَبَرَ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَقَالَ: «قَدْ أَجَرْنَا مَنْ أَجَرْتِ وَأَمَّنَّا مَنْ أَمَّنْتِ»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬২
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬২। ইবরাহীম ইবনে মারযূক (রাহঃ) ..... ফাখিতা অর্থাৎ উম্মুহানি (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কা বিজয়ের দিন গােসল করলেন। অতঃপর এক কাপড়ে (জড়িয়ে) আট রাকআত (চাশতের সালাত) আদায় করলেন। তিনি ঐ কাপড়ের দুই প্রান্তকে বিপরীত দিকে করে বেঁধে নিয়েছিলেন। বলেন, আমি বললাম, আমি আমার মুশরিক দেবরদেরকে আশ্রয় প্রদান করেছি এবং আলী (রাযিঃ) তাদেরকে হত্যা করার জন্য লেগে পড়ছেন। বলেন, তিনি বললেন, তার এই অধিকার নেই, যাকে তুমি আশ্রয় দিয়েছ তাকে আমিও আশ্রয় দিলাম এবং যাকে তুমি নিরাপত্তা দিয়েছ তাকে আমিও নিরাপত্তা দিলাম।
তুমি কি লক্ষ্য করছনা যে, আলী (রাযিঃ) মক্কার দুই মাখযুমী ব্যক্তিকে হত্যা করার সংকল্প করেছেন। যদি তারা নিরাপত্তায় থাকত তাহলে তিনি তাদেরকে হত্যা করার জন্য পিছনে পড়তেন না। অতঃপর উম্মুহানি (রাযিঃ) তাদেরকে আশ্রয় প্রদান করেছেন। এতে করে যেন আলী (রাযিঃ) -এর উপর তাদের খুন হারাম হয়ে যায়। কিন্তু তিনি (আলী রা) বলেন নাই যে, আপনি তাদেরকে হত্যা করতে পারবেন না। কেননা এরা দু’জন এবং সমগ্র মক্কাবাসী সন্ধি ও নিরাপত্তায় রয়েছে।
বস্তুত উম্মহানি (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে ঐ দুই মাখযুমী ব্যক্তির ব্যাপারে, আলী (রাযিঃ)-এর সংকল্প এবং নিজের পক্ষ থেকে সেই দুই মাখযুমী ব্যক্তিকে আশ্রয় প্রদানের বিষয়ে বলেছেন। অনন্তর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বলেছেন, তুমি যাকে আশ্রয় দিয়েছ আমিও তাকে আশ্রয় দিয়েছি এবং তুমি যাকে নিরাপত্তা প্রদান করেছ আমিও তাকে নিরাপত্তা প্রদান করেছি। তিনি (উম্মুহানি রা) কর্তৃক তাদের আশ্রয় প্রদানের পূর্বে আলী (রাযিঃ)-কে তাদেরকে হত্যা করার সংকল্পের কারণে ভর্ৎসনা করেন নাই। এতে প্রতীয়মান হয় যে, যদি তার পক্ষ থেকে আশ্রয় প্রদান সঠিক না হত তাহলে ঐ দু’জনকে হত্যা করা শুদ্ধ হত। আর এটা অসম্ভব যে, পূর্ববর্তী সন্ধি ও নিরাপত্তা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় তাদেরকে হত্যা করা তার জন্য বৈধ হবে, এটাই ছিলাে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মক্কাতে প্রবেশ। সুতরাং এর চেয়ে অধিক স্পষ্ট কথা আর কোনটি হতে পারে?
অতঃপর এই বিষয়ে আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে এর থেকেও অধিকতর স্পষ্ট কথা বর্ণিত আছেঃ
তুমি কি লক্ষ্য করছনা যে, আলী (রাযিঃ) মক্কার দুই মাখযুমী ব্যক্তিকে হত্যা করার সংকল্প করেছেন। যদি তারা নিরাপত্তায় থাকত তাহলে তিনি তাদেরকে হত্যা করার জন্য পিছনে পড়তেন না। অতঃপর উম্মুহানি (রাযিঃ) তাদেরকে আশ্রয় প্রদান করেছেন। এতে করে যেন আলী (রাযিঃ) -এর উপর তাদের খুন হারাম হয়ে যায়। কিন্তু তিনি (আলী রা) বলেন নাই যে, আপনি তাদেরকে হত্যা করতে পারবেন না। কেননা এরা দু’জন এবং সমগ্র মক্কাবাসী সন্ধি ও নিরাপত্তায় রয়েছে।
বস্তুত উম্মহানি (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে ঐ দুই মাখযুমী ব্যক্তির ব্যাপারে, আলী (রাযিঃ)-এর সংকল্প এবং নিজের পক্ষ থেকে সেই দুই মাখযুমী ব্যক্তিকে আশ্রয় প্রদানের বিষয়ে বলেছেন। অনন্তর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বলেছেন, তুমি যাকে আশ্রয় দিয়েছ আমিও তাকে আশ্রয় দিয়েছি এবং তুমি যাকে নিরাপত্তা প্রদান করেছ আমিও তাকে নিরাপত্তা প্রদান করেছি। তিনি (উম্মুহানি রা) কর্তৃক তাদের আশ্রয় প্রদানের পূর্বে আলী (রাযিঃ)-কে তাদেরকে হত্যা করার সংকল্পের কারণে ভর্ৎসনা করেন নাই। এতে প্রতীয়মান হয় যে, যদি তার পক্ষ থেকে আশ্রয় প্রদান সঠিক না হত তাহলে ঐ দু’জনকে হত্যা করা শুদ্ধ হত। আর এটা অসম্ভব যে, পূর্ববর্তী সন্ধি ও নিরাপত্তা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় তাদেরকে হত্যা করা তার জন্য বৈধ হবে, এটাই ছিলাে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মক্কাতে প্রবেশ। সুতরাং এর চেয়ে অধিক স্পষ্ট কথা আর কোনটি হতে পারে?
অতঃপর এই বিষয়ে আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে এর থেকেও অধিকতর স্পষ্ট কথা বর্ণিত আছেঃ
5462 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ قَالَ: ثنا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ الزَّهْرَانِيُّ قَالَ: ثنا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ أَبِي مُرَّةَ مَوْلَى عَقِيلٍ عَنْ فَاخِتَةَ أُمِّ هَانِئٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا " أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اغْتَسَلَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ ثُمَّ صَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ مُخَالِفًا بَيْنَ طَرَفَيْهِ , قَالَتْ: فَقُلْتُ: إِنِّي أَجَرْتُ حَمَوَيَّ مِنَ الْمُشْرِكِينَ، وَإِنَّ عَلِيًّا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يُفَلِّتُ عَلَيْهِمَا لِيَقْتُلَهُمَا , قَالَتْ: فَقَالَ: مَا كَانَ لَهُ ذَلِكَ قَدْ أَجَرْنَا مَنْ أَجَرْتِ وَأَمَّنَّا مَنْ أَمَّنْتِ " أَفَلَا تَرَى أَنَّ عَلِيًّا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَدْ أَرَادَ قَتْلَ الْمَخْزُومِيِّينَ لِمَكَّةَ؟ وَلَوْ كَانَا فِي أَمَانٍ لَمَا طَلَبَ ذَلِكَ مِنْهُمَا [ص:324] فَأَمَّنَتْهُمَا أُمُّ هَانِئٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا لِيَحْرُمَ بِذَلِكَ دِمَاؤُهُمَا عَلَى عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَلَمْ تَقُلْ لَهُ: مَا لَكَ إِلَى قَتْلِهِمَا مِنْ سَبِيلٍ لِأَنَّهُمَا وَسَائِرَ أَهْلِ مَكَّةَ فِي صُلْحٍ وَأَمَانٍ , ثُمَّ أَخْبَرَتْ أُمُّ هَانِئٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَا كَانَ مِنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَبِمَا كَانَ مِنْ جِوَارِ هَذَيْنِ الْمَخْزُومِيِّينَ , فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «قَدْ أَجَرْنَا مَنْ أَجَرْتِ وَأَمَّنَّا مَنْ أَمَّنْتِ» وَلَمْ يُعَنِّفْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلِيًّا رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ فِي إِرَادَتِهِ قَتْلَهُمَا قَبْلَ جِوَارِ أُمِّ هَانِئٍ إِيَّاهُمَا , فَدَلَّ ذَلِكَ أَنَّهُ لَوْلَا جِوَارُهَا لَصَحَّ قَتْلُهُمَا وَمُحَالٌ أَنْ يَكُونَ لَهُ قَتْلُهُمَا وَثَمَّةَ أَمَانٌ قَائِمٌ وَصُلْحٌ مُتَقَدِّمٌ لَهُمَا وَهَذَا دُخُولُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ فَأَيُّ شَيْءٍ أَبْيَنُ مِنْ هَذَا؟ ثُمَّ قَدْ رَوَى أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي هَذَا الْبَابِ مَا هُوَ أَبْيَنُ مِنْ هَذَا

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬৩
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬৩। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে সাঈদ ইবনে আবী মারইয়াম (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ্ ইবনে রিবাহ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিনিধি দল মু'আবিয়া (রাযিঃ)-এর খিদমতে উপস্থিত হয় এবং আমাদের মাঝে আবু হুরায়রা (রাযিঃ) ও বিদ্যমান ছিলেন। তিনি বললেন, হে আনসারের দল! আমি কি তােমাদেরকে তােমাদের সম্পর্কিত একটি হাদীস শুনাব না? অতঃপর তিনি মক্কা বিজয়ের বিষয় উল্লেখ করে বললেন, যখন নবী (ﷺ) মক্কাতে আগমন করেন তখন তিনি এভাবে প্রবেশ করেন যে, যুবাইর ইবনে আওয়াম (রাযিঃ) কে সৈন্য বাহিনীর একাংশের উপর নির্ধারণ করেন, খালিদ ইবনে ওলীদ (রাযিঃ)-কে অপরাংশের উপর নির্ধারণ করেন এবং আবু উবায়দা (রাযিঃ) কে সম্মুখাংশের উপর নির্ধারণ করেন। তারা বাতনে ওয়াদীতে চলে গিয়েছিলেন। আর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সৈন্য বাহিনীর একাংশে ছিলেন। তিনি লক্ষ্য করলেন এবং আমাকে দেখলেন। বললেন, হে আবু হুরায়রা! আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! (ﷺ) আমি উপস্থিত। বললেন, আনসারদেরকে আমার কাছে ডাক এবং আনসারদের ব্যতীত অন্য কাউকে ডেকনা। বলেন, তিনি তাদেরকে ডাকলেন। তারা তার চারপাশে সমবেত হলাে এবং কুরায়শরা নিজেদের লম্পট ও তাদের অনুসারীদেকে একত্রিত করল। তারা বলল, এরা সম্মুখে অগ্রসর হয়েছে, যদি তারা সফল হয় তবে আমরা তাদের সঙ্গী হয়ে যাব। আর যদি তারা মারা যায়। তাহলে আমরা তাদেরকে ততটুকু সম্পদ প্রদান করব যা তারা চাইবে। নবী (ﷺ)-এর পাশে যখন আনসারগণ একত্রিত হলেন তখন তিনি তাদেরকে বললেন, কুরায়শদের লম্পট ও তাদের অনুসারীদের প্রতি লক্ষ্য রেখ। অতঃপর এক হাত অপর হাতের উপর রেখে বললেন, তাদেরকে উত্তমরূপে কাট (হত্যা কর)। অবশেষে তােমরা সাফা (পাহাড়ে) আমার সঙ্গে এসে মিলিত হও। সুতরাং তারা চললেন, আমাদের থেকে যে কেউ যাকে ইচ্ছা করত হত্যা করত এবং তাদের কেউ আমাদের দিকে মনােনিবেশ করে নাই। আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) কুরায়শের যুবকদেরকে রক্ষা করুন। (অন্যথায়) আজকের পরে কুরায়শের অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকবেনা। নবী (ﷺ) বললেন, যে ব্যক্তি নিজের দরজা বন্ধ করে দিবে সে নিরাপদ, যে ব্যক্তি আবু সুফইয়ানের গৃহে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। অনন্তর লোকেরা তাদের দরজা বন্ধ করে দিল। নবী (ﷺ) তাশরীফ আনলেন এবং হাজরে আসওয়াদ-এর নিকট এসে তা চুম্বন করলেন, এর পর বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করলেন। অতঃপর বায়তুল্লাহর একপাশে স্থাপিত মূর্তির কাছে এলেন, যাকে তারা উপাসনা করত। তার হাতে ধনুক ছিলাে, তিনি ধনুকের প্রান্ত ধারণ করেছিলেন। যখন তিনি মূর্তির কাছে এলেন তখন এর চোখগুলােতে (ধনুকের প্রান্ত) বিদ্ধ করতে লাগলেন আর বলতে লাগলেনঃ
جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا
যখন তিনি তাওয়াফ থেকে অবসর হলেন তখন সাফা'র দিকে তাশরীফ নিয়ে গেলেন এবং এর উপর আরােহণ করে বায়তুল্লাহর দিকে দৃষ্টিপাত করলেন। তারপর তাঁর হাত উত্তোলন করে আল্লাহ্ তা'আলার প্রশংসা করতে লাগলেন এবং তার কাছে দু'আ করলেন, যা আল্লাহ্ তা'আলা চেয়েছেন। আনসারগণ এর নীচে ছিলেন। আনসারগণ পরস্পরে বলতে লাগলেন, তাঁকে আত্মীয়তার প্রতি আকর্ষণ এবং গােত্রের প্রতি মেহেরবানী পেয়ে বসেছে। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, তাঁর উপর এই মর্মে ওহী এলাে আর যখন তার উপর ওহী আসত সেটা আমাদের (সাহাবাদের) উপর গােপন থাকত না এবং (আমাদের) লােকদের থেকে কেউ নবী (ﷺ)-এর দিকে মাথা উঠাতে পারত না; অবশেষে ওহী (অবতরণ) সমাপ্ত হয়ে যেত। নবী (ﷺ) বললেন, হে আনসারের দল! তােমরা কি এটা বলেছ যে, ঐ ব্যক্তিকে (তাকে) আত্মীয়তার প্রতি আকর্ষণ এবং কবীলার প্রতি মেহেরবানী পেয়ে বসেছে। তারা বললেন, সম্ভবত এই আলােচনা হয়েছে। তিনি বললেন, কস্মিনকালেও নয়, আমি আল্লাহর বান্দা ও তার রাসূল। আমি আল্লাহ্ তা'আলার দিকে এবং তােমাদের দিকে হিজরত করেছি। আমার জীবন তােমাদের জীবনের সাথে এবং আমার মৃত্যু তােমাদের মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত। অনন্তর তারা কাঁদতে কাঁদতে সম্মুখে অগ্রসর হলেন এবং বলতে লাগলেন, আল্লাহর কসম! আমরাতাে এই কথা শুধু আল্লাহ্ তা'আলা ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে কৃপণতার কারণে বলেছি (অর্থাৎ আমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সাঃ কে অন্য কাউকে দিতে চাইনি)। তিনি বললেন, আল্লাহ্ তা'আলা ও তার রাসূল তােমাদের সত্যায়ন করছেন এবং তােমাদের ওযর গ্রহণ করছেন।
বস্তুত, এই আবু হুরায়রা (রাযিঃ), লােকটি বলছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (মক্কা বিজয়ের প্রাক্কালে) মক্কাতে প্রবেশ করার সময় কুরায়শরা তাদের লম্পটদের এবং তাদের অনুসারীদেরকে যুদ্ধের জন্য একত্রিত করে এবং বলেছিলাে, এরা অগ্রসর হয়েছে (এসেছে)। যদি তারা সফলকাম হয় তবে আমরা তাদের সঙ্গী হয়ে যাব। আর যদি তারা নিহত হয় তাহলে তারা যা কিছু আমাদের কাছে চাইবে আমরা প্রদান করব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের একথা সম্পর্কে অবহিত হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আনসরদেরকে বললেন, কুরায়শদের লম্পটদের ও তাদের অনুসারীদের প্রতি লক্ষ্য রেখ । অতঃপর তিনি তাঁর এক হাত অপর হাতের উপর মেরে বললেন, তাদেরকে উত্তমরূপে কাট। অবশেষে তােমরা সাফা পাহাড়ে এসে আমার সঙ্গে মিলিত হবে। অনন্তর আমাদের থেকে যে ব্যক্তি যাকে ইচ্ছা করছে হত্যা করেছে এবং তাদের থেকে কেউ আমাদের দিকে মনােনিবেশ করে নাই। এই প্রবেশ কি নিরাপত্তার উপর ছিলাে। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের প্রতি ইহসান ও ক্ষমা করেছেন। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত এই হাদীসে সুলায়মান ইবনে মুগীরা (রাযিঃ)-এর রিওয়ায়াত অপেক্ষা কিছুটা অতিরিক্তও বর্ণিত আছে।
جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا
যখন তিনি তাওয়াফ থেকে অবসর হলেন তখন সাফা'র দিকে তাশরীফ নিয়ে গেলেন এবং এর উপর আরােহণ করে বায়তুল্লাহর দিকে দৃষ্টিপাত করলেন। তারপর তাঁর হাত উত্তোলন করে আল্লাহ্ তা'আলার প্রশংসা করতে লাগলেন এবং তার কাছে দু'আ করলেন, যা আল্লাহ্ তা'আলা চেয়েছেন। আনসারগণ এর নীচে ছিলেন। আনসারগণ পরস্পরে বলতে লাগলেন, তাঁকে আত্মীয়তার প্রতি আকর্ষণ এবং গােত্রের প্রতি মেহেরবানী পেয়ে বসেছে। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, তাঁর উপর এই মর্মে ওহী এলাে আর যখন তার উপর ওহী আসত সেটা আমাদের (সাহাবাদের) উপর গােপন থাকত না এবং (আমাদের) লােকদের থেকে কেউ নবী (ﷺ)-এর দিকে মাথা উঠাতে পারত না; অবশেষে ওহী (অবতরণ) সমাপ্ত হয়ে যেত। নবী (ﷺ) বললেন, হে আনসারের দল! তােমরা কি এটা বলেছ যে, ঐ ব্যক্তিকে (তাকে) আত্মীয়তার প্রতি আকর্ষণ এবং কবীলার প্রতি মেহেরবানী পেয়ে বসেছে। তারা বললেন, সম্ভবত এই আলােচনা হয়েছে। তিনি বললেন, কস্মিনকালেও নয়, আমি আল্লাহর বান্দা ও তার রাসূল। আমি আল্লাহ্ তা'আলার দিকে এবং তােমাদের দিকে হিজরত করেছি। আমার জীবন তােমাদের জীবনের সাথে এবং আমার মৃত্যু তােমাদের মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত। অনন্তর তারা কাঁদতে কাঁদতে সম্মুখে অগ্রসর হলেন এবং বলতে লাগলেন, আল্লাহর কসম! আমরাতাে এই কথা শুধু আল্লাহ্ তা'আলা ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে কৃপণতার কারণে বলেছি (অর্থাৎ আমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সাঃ কে অন্য কাউকে দিতে চাইনি)। তিনি বললেন, আল্লাহ্ তা'আলা ও তার রাসূল তােমাদের সত্যায়ন করছেন এবং তােমাদের ওযর গ্রহণ করছেন।
বস্তুত, এই আবু হুরায়রা (রাযিঃ), লােকটি বলছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (মক্কা বিজয়ের প্রাক্কালে) মক্কাতে প্রবেশ করার সময় কুরায়শরা তাদের লম্পটদের এবং তাদের অনুসারীদেরকে যুদ্ধের জন্য একত্রিত করে এবং বলেছিলাে, এরা অগ্রসর হয়েছে (এসেছে)। যদি তারা সফলকাম হয় তবে আমরা তাদের সঙ্গী হয়ে যাব। আর যদি তারা নিহত হয় তাহলে তারা যা কিছু আমাদের কাছে চাইবে আমরা প্রদান করব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের একথা সম্পর্কে অবহিত হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আনসরদেরকে বললেন, কুরায়শদের লম্পটদের ও তাদের অনুসারীদের প্রতি লক্ষ্য রেখ । অতঃপর তিনি তাঁর এক হাত অপর হাতের উপর মেরে বললেন, তাদেরকে উত্তমরূপে কাট। অবশেষে তােমরা সাফা পাহাড়ে এসে আমার সঙ্গে মিলিত হবে। অনন্তর আমাদের থেকে যে ব্যক্তি যাকে ইচ্ছা করছে হত্যা করেছে এবং তাদের থেকে কেউ আমাদের দিকে মনােনিবেশ করে নাই। এই প্রবেশ কি নিরাপত্তার উপর ছিলাে। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের প্রতি ইহসান ও ক্ষমা করেছেন। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত এই হাদীসে সুলায়মান ইবনে মুগীরা (রাযিঃ)-এর রিওয়ায়াত অপেক্ষা কিছুটা অতিরিক্তও বর্ণিত আছে।
5463 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ , قَالَ: ثنا أُمَيَّةُ بْنُ مُوسَى , قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ , قَالَ أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ , عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ , عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ رَبَاحٍ , قَالَ: وَفَدْنَا إِلَى مُعَاوِيَةَ , وَفِينَا أَبُو هُرَيْرَةَ فَقَالَ: أَلَا أُخْبِرْكُمْ بِحَدِيثٍ مِنْ حَدِيثِكُمْ يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ؟ ثُمَّ ذَكَرَ فَتْحَ مَكَّةَ فَقَالَ: أَقْبَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ قَدِمَ مَكَّةَ فَبَعَثَ الزُّبَيْرَ بْنَ الْعَوَّامِ عَلَى إِحْدَى الْمُجَنَّبَتَيْنِ وَبَعَثَ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ عَلَى الْمُجَنَّبَةِ الْأُخْرَى وَبَعَثَ أَبَا عُبَيْدَةَ عَلَى الْحُسَّرِ فَأَخَذُوا بَطْنَ الْوَادِي وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي كَتِيبَةٍ فَنَظَرَ فَرَآنِي فَقَالَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَقُلْتُ: يَا نَبِيَّ اللهِ قَالَ: اهْتِفْ لِي بِالْأَنْصَارِ وَلَا يَأْتِنِي إِلَّا أَنْصَارِيٌّ , قَالَ: فَهَتَفَ بِهِمْ حَتَّى إِذَا طَافُوا بِهِ وَقَدْ وَبَّشَتْ قُرَيْشٌ أَوْبَاشَهَا وَأَتْبَاعَهَا فَقَالُوا: تَقَدَّمَ هَؤُلَاءِ فَإِنْ كَانَ لَهُمْ شَيْءٌ كُنَّا مَعَهُمْ وَإِنْ أُصِيبُوا أُعْطِينَا الَّذِي سَأَلْنَا , فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلْأَنْصَارِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ , حِينَ طَافُوا بِهِ , انْظُرُوا إِلَى أَوْبَاشِ قُرَيْشٍ وَأَتْبَاعِهِمْ ثُمَّ قَالَ بِإِحْدَى يَدَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى احْصُدُوهُمْ حَصَادًا حَتَّى تُوَافُونِي بِالصَّفَا فَانْطَلَقُوا فَمَا يَشَاءُ أَحَدٌ مِنَّا أَنْ يَقْتُلَ مَا شَاءَ إِلَّا قَتَلَ وَمَا تَوَجَّهَ إِلَيْنَا أَحَدٌ مِنْهُمْ , فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ: يَا رَسُولَ اللهِ أُبِيحَتْ خَضْرَاءُ قُرَيْشٍ وَلَا قُرَيْشَ بَعْدَ الْيَوْمِ , فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَغْلَقَ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ فَأَغْلَقَ النَّاسُ أَبْوَابَهُمْ , وَأَقْبَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى أَتَى الْحَجَرَ فَاسْتَلَمَهُ ثُمَّ طَافَ بِالْبَيْتِ فَأَتَى عَلَى صَنَمٍ إِلَى جَنْبِ الْبَيْتِ يَعْبُدُونَهُ , وَفِي يَدِهِ قَوْسٌ فَهُوَ آخِذٌ بِسِيَةِ الْقَوْسِ , فَلَمَّا أَنْ أَتَى عَلَى الصَّنَمِ جَعَلَ يَطْعَنُ فِي عَيْنَيْهِ وَيَقُولُ «جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا» , [ص:325] حَتَّى إِذَا فَرَغَ مِنْ طَوَافِهِ أَتَى الصَّفَا فَصَعِدَ عَلَيْهَا حَتَّى نَظَرَ إِلَى الْبَيْتِ فَرَفَعَ يَدَيْهِ فَجَعَلَ يَحْمَدُ اللهَ وَيَدْعُوهُ بِمَا شَاءَ اللهُ , وَالْأَنْصَارُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ تَحْتَهُ , فَقَالَتِ الْأَنْصَارُ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ: أَمَّا الرَّجُلُ فَقَدْ أَدْرَكَتْهُ رَغْبَةٌ فِي قَرَابَتِهِ وَرَأْفَةٌ بِعَشِيرَتِهِ , فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: وَجَاءَهُ الْوَحْيُ بِهِ وَكَانَ إِذَا جَاءَ لَمْ يَخْفَ عَلَيْنَا فَلَيْسَ أَحَدٌ مِنَ النَّاسِ يَرْفَعُ رَأْسَهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى يُقْضَى الْوَحْيُ , قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ أَقُلْتُمْ: أَمَّا الرَّجُلُ فَقَدْ أَدْرَكَتْهُ رَغْبَةٌ فِي قَرَابَتِهِ وَرَأْفَةٌ بِعَشِيرَتِهِ؟ قَالُوا: لَوْ كَانَ ذَكَرَ , قَالَ كَلًّا إِنِّي عَبْدُ اللهِ وَرَسُولُهُ هَاجَرْتُ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَإِلَيْكُمْ , وَالْمَحْيَا مَحْيَاكُمْ , وَالْمَمَاتُ مَمَاتُكُمْ فَأَقْبَلُوا يَبْكُونَ إِلَيْهِ وَيَقُولُونَ: وَاللهِ مَا قُلْنَا الَّذِي قُلْنَا إِلَّا ضَنًّا بِاللهِ وَرَسُولِهِ قَالَ فَإِنَّ اللهَ وَرَسُولَهُ يُصَدِّقَانِكُمْ وَيَعْذِرَانِكُمْ " فَهَذَا أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يُخْبِرُ أَنَّ قُرَيْشًا عِنْدَ دُخُولِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ وَبَّشَتْ أَوْبَاشَهَا وَأَتْبَاعَهَا فَقَالُوا: تَقَدَّمَ هَؤُلَاءِ فَإِنْ كَانَ لَهُمْ شَيْءٌ كُنَّا مَعَهُمْ وَإِنْ أُصِيبُوا أُعْطِينَا الَّذِي سَأَلْنَا وَأَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَفَ عَلَى ذَلِكَ مِنْهُمْ فَقَالَ لِلْأَنْصَارِ انْظُرُوا إِلَى أَوْبَاشِ قُرَيْشٍ وَأَتْبَاعِهِمْ «ثُمَّ قَالَ بِإِحْدَى يَدَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى» احْصُدُوهُمْ حَصَادًا حَتَّى تُوَافُونِي بِالصَّفَا " فَمَا يَشَاءُ أَحَدٌ مِنَّا أَنْ يَقْتُلَ مَنْ شَاءَ إِلَّا قَتَلَ وَمَا تَوَجَّهَ إِلَيْنَا أَحَدٌ مِنْهُمْ فَيَكُونُ مِنْ هَذَا دُخُولًا عَلَى أَمَانٍ ثُمَّ كَانَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ ذَلِكَ الْمَنُّ عَلَيْهِمْ , وَالصَّفْحُ , وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ زِيَادَةٌ عَلَى مَا فِي حَدِيثِ سُلَيْمَانَ بْنِ الْمُغِيرَةِ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬৪
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬৪। ইবরাহীম ইবনে আবী দাউদ (রাহঃ) ....আব্দুল্লাহ্ ইবনে রিবাহ (রাহঃ) সূত্রে আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন মক্কা বিজয়ের উদ্দেশ্যে সফর করলেন, তখন আবু উবায়দা ইবনে জাররাহ (রাযিঃ), যুবাইর ইবনে আওয়াম (রাযিঃ) ও খালিদ ইবনে ওলীদ (রাযিঃ)-কে প্রেরণ করেন। যখন তাদেরকে প্রেরণ করেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-কে বললেন, আনসারদেরকে আওয়াজ দাও। তিনি ডাকলেন, হে আনসারের দল! রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খিদমতে হাযির হও। তারা হাযির হলাে যেমন তাদের অভ্যাস ছিলাে। অতঃপর বললেন, এই পথে চল এবং যে কেউ উঁচু এলাকা থেকে আসবে তাকে হত্যা কর। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) চললেন, আর আল্লাহ্ তা'আলা তাদের বিজয় দান করলেন। সেই দিন তাদের চার ব্যক্তি নিহত হয়। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, অতঃপর কুরায়শের মুশরিক সরদারগণ কা'বাতে প্রবেশ করে। তাদের ধারণা ছিলাে যে, তাদের থেকে তারবারি (আর) উঠানাে হবে না। অতঃপর তিনি তাওয়াফ করেন এবং দু'রাকআত সালাত আদায় করেন। এরপর কা'বার কাছে এসে দরজার চৌকাঠের দুই প্রান্ত ধরে বললেন, তােমরা কি বলছ, তােমাদের কি ধারণা? তারা বলল, আমরা বলছি, আপনি ভাই, চাচাত ভাই এবং দয়ালু ও ধৈর্যশীল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, আমি সেই কথা বলছি, যা ইউসুফ (আ) বলেছিলেনঃ আজকে তােমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযােগ নেই। আল্লাহ্ তা'আলা তােমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তিনি সর্বাপেক্ষা দয়ালু। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, তারা তাে বেরিয়ে গেল, যেন তাদেরকে কবর থেকে বের করা হয়েছে। (অর্থাৎ নতুন জীবন লাভ হয়েছে)। তারা ইসলাম গ্রহণ করল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ঐ দরজা দিয়ে বের হলেন, যা ‘সাফা’র সাথে মিলিত। তিনি খুতবা (ভাষণ) দিলেন। আনসারগণ এর নীচে ছিলেন। আনসারগণ পরস্পরে বলতে লাগল, তাঁকে তাঁর কাওমের প্রতি মেহেরবানী এবং আত্মীয়তার প্রতি আকর্ষণ পেয়ে বসেছে। বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা তার উপর ওহী অবতীর্ণ করেন। তিনি বললেন, হে আনসারের দল? তােমরা কি বলেছ যে, তাঁকে কাওমের প্রতি মেহেরবানী এবং আত্মীয়তার প্রতি আকর্ষণ বেষ্টন করে নিয়েছে। ওই অবস্থায় তাে আমি নবী হব না। কস্মিনকালেও নয়, আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহর সত্য রাসূল। অবশ্যই আমার জীবন তােমাদের জীবনের সঙ্গে আমার মৃত্যু তােমাদের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত। তারা বলল, আল্লাহর কসম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (ﷺ) আমরা এ কথা শুধু এই আশংকায় বলেছিলাম, যেন আপনি আমাদের থেকে পৃথক হয়ে না যান এবং আমরা আপনার বিষয়ে (অন্যদের সাথে) কৃপণতা করি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তােমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কাছে সত্য। বলেন, আল্লাহর কসম! তাদের থেকে কেউ এরূপ ছিলাে না, যে কিনা অশ্রুসজল চোখে তাঁর সম্মুখে অবনত না হয়েছে।
সে ব্যক্তি কি লক্ষ্য করছেনা যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কাতে প্রবেশ করার পর কুরায়শদের ধারণা ছিলাে যে, তাদের থেকে তরবারি (আর) উঠানাে হবে না। তােমারদের ধারণা কি যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক তাদেরকে নিরাপত্তা প্রদান সত্ত্বেও তারা তাকে ভয় পাচ্ছিলাে। আল্লাহর কসম! তাঁর পবিত্র সত্তা ভীতির জায়গায় ছিলােনা। বরং তারা জানত যে, তার ইখতিয়ার রয়েছে, ইচ্ছা করলে হত্যা করবেন এবং ইচ্ছা করলে ইহসান তথা ক্ষমা প্রদর্শন করবেন। কেননা আল্লাহ্ তা'আলা তাঁকে তাদের বিরুদ্ধে বিজয়ী করেছেন এবং তাঁকে ইখতিয়ার প্রদান করেছেন যে, তাদের ব্যাপারে পূর্বেও এবং এর পরেও যা আল্লাহ্ তা'আলা চান ফয়সালা করবেন। আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। অতঃপর সেই দিন তিনি তাদেরকে বলেছেনঃ আজকের পরে মক্কাতে (নগরীতে) কখনও লড়াই সংঘটিত হবে না।
সে ব্যক্তি কি লক্ষ্য করছেনা যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কাতে প্রবেশ করার পর কুরায়শদের ধারণা ছিলাে যে, তাদের থেকে তরবারি (আর) উঠানাে হবে না। তােমারদের ধারণা কি যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক তাদেরকে নিরাপত্তা প্রদান সত্ত্বেও তারা তাকে ভয় পাচ্ছিলাে। আল্লাহর কসম! তাঁর পবিত্র সত্তা ভীতির জায়গায় ছিলােনা। বরং তারা জানত যে, তার ইখতিয়ার রয়েছে, ইচ্ছা করলে হত্যা করবেন এবং ইচ্ছা করলে ইহসান তথা ক্ষমা প্রদর্শন করবেন। কেননা আল্লাহ্ তা'আলা তাঁকে তাদের বিরুদ্ধে বিজয়ী করেছেন এবং তাঁকে ইখতিয়ার প্রদান করেছেন যে, তাদের ব্যাপারে পূর্বেও এবং এর পরেও যা আল্লাহ্ তা'আলা চান ফয়সালা করবেন। আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। অতঃপর সেই দিন তিনি তাদেরকে বলেছেনঃ আজকের পরে মক্কাতে (নগরীতে) কখনও লড়াই সংঘটিত হবে না।
5464 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ أَبِي دَاوُدَ , قَالَ: ثنا الْقَاسِمُ بْنُ سَلَّامِ بْنِ مِسْكِينٍ , قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ ,: ثنا ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ , عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ رَبَاحٍ , عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ " أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , حِينَ سَارَ إِلَى مَكَّةَ لِيَسْتَفْتِحَهَا , فَسَرَّحَ أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ , وَالزُّبَيْرَ بْنَ الْعَوَّامِ وَخَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ , فَلَمَّا بَعَثَهُمْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ اهْتِفْ بِالْأَنْصَارِ فَنَادَى: يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ أَجِيبُوا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَجَاءُوا كَمَا كَانُوا عَلَى مُعْتَادٍ , ثُمَّ قَالَ: اسْلُكُوا هَذَا الطَّرِيقَ وَلَا يُشْرِفَنَّ أَحَدٌ إِلَّا أَيْ: قَتَلْتُمُوهُ , وَسَارَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفَتَحَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِنْ قَتْلَ يَوْمَئِذٍ الْأَرْبَعَةِ , قَالَ: ثُمَّ دَخَلَ صَنَادِيدُ قُرَيْشٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ الْكَعْبَةَ وَهُمْ يَظُنُّونَ أَنَّ السَّيْفَ لَا يُرْفَعُ عَنْهُمْ ثُمَّ طَافَ وَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَتَى الْكَعْبَةَ فَأَخَذَ بِعِضَادَتَيِ الْبَابِ فَقَالَ مَا تَقُولُونَ وَمَا تَظُنُّونَ؟ , فَقَالُوا: نَقُولُ أَخٌ وَابْنُ عَمٍّ حَلِيمٌ رَحِيمٌ , فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقُولُ كَمَا قَالَ يُوسُفُ {لَا تَثْرِيبَ عَلَيْكُمُ الْيَوْمَ يَغْفِرُ اللهُ لَكُمْ وَهُوَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ} [يوسف: 92] , [ص:326] قَالَ: فَخَرَجُوا كَأَنَّمَا نُشِرُوا مِنَ الْقُبُورِ فَدَخَلُوا فِي الْإِسْلَامِ , فَخَرَجَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْبَابِ الَّذِي يَلِي الصَّفَا فَخَطَبَ , وَالْأَنْصَارُ أَسْفَلَ مِنْهُ , فَقَالَتِ الْأَنْصَارُ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ أَمَا إِنَّ الرَّجُلَ أَخَذَتْهُ الرَّأْفَةُ بِقَوْمِهِ وَأَدْرَكَتْهُ الرَّغْبَةُ فِي قَرَابَتِهِ , قَالَ: فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْهِ الْوَحْيَ فَقَالَ: يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ أَقُلْتُمْ: أَخَذَتْهُ الرَّأْفَةُ بِقَوْمِهِ وَأَدْرَكَتْهُ الرَّغْبَةُ فِي قَرَابَتِهِ فَمَا نَبِيٌّ أَنَا إِذًا كَلًّا وَاللهِ إِنِّي رَسُولُ اللهِ حَقًّا إِنَّ الْمَحْيَا لَمَحْيَاكُمْ وَإِنَّ الْمَمَاتَ لَمَمَاتُكُمْ , قَالُوا: وَاللهِ يَا رَسُولَ اللهِ، مَا قُلْنَا إِلَّا مَخَافَةَ أَنْ تُفَارِقَنَا إِلَّا ضِنًّا بِكَ , فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْتُمْ صَادِقُونَ عِنْدَ اللهِ وَرَسُولِهِ , قَالَ: فَوَاللهِ مَا بَقِيَ مِنْهُمْ رَجُلٌ إِلَّا نَكَّسَ نَحْرَهُ بِدُمُوعِ عَيْنَيْهِ «أَفَلَا يَرَى أَنَّ قُرَيْشًا بَعْدَ دُخُولِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ قَدْ كَانُوا يَظُنُّونَ أَنَّ السَّيْفَ لَا يُرْفَعُ عَنْهُمْ أَفَتُرَاهُمْ كَانُوا يَخَافُونَ ذَلِكَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ أَمَّنَهُمْ قَبْلَ ذَلِكَ؟ هَذَا وَاللهِ غَيْرُ مَخُوفٍ مِنْهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَكِنَّهُمْ عَلِمُوا أَنَّ إِلَيْهِ قَتْلَهُمْ إِنْ شَاءَ وَأَنَّ إِلَيْهِ الْمَنَّ عَلَيْهِمْ إِنْ شَاءَ وَأَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ أَظْهَرَهُ عَلَيْهِمْ وَصَيَّرَهُمْ فِي يَدِهِ يَحْكُمُ فِيهِمْ بِمَا أَرَادَ اللهُ تَعَالَى مِنْ قَبْلُ , وَمَنَّ بَعْدَ ذَلِكَ عَلَيْهِمْ وَعَفَا عَنْهُمْ , ثُمَّ قَالَ لَهُمْ يَوْمَئِذٍ» لَا تُغْزَى مَكَّةُ بَعْدَ هَذَا الْيَوْمِ أَبَدًا "

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬৫
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬৫। রাওহ ইবনুল ফারাজ (রাহঃ) .....হারিস ইবনে বারসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি, তিনি মক্কা বিজয়ের দিন বলেছেনঃ আজকের পরে মক্কা নগরীতে কখনও লড়াই সংঘটিত হবে না। আবু সুফইয়ান (রাযিঃ) বলেন, এই হাদীসের বিশ্লেষণ হলাে যে, তারা আর কখনও কুফরী করবে না এবং কুফরীর প্রেক্ষীতে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই হবে না। বস্তুত তাঁর একথা বলা তখন-ই হতে পারে যখন তাতে (মক্কাতে) তাঁর প্রবেশ লড়াইর জন্য হবে। অতঃপর তিনি (ﷺ) বলেছেনঃ আজকের পরে কোন কুরায়শীকে বন্দী করে হত্যা করা হবে না।
5465 - حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ الْفَرَجِ قَالَ: ثنا حَامِدُ بْنُ يَحْيَى قَالَ: ثنا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ الْبَرْصَاءِ قَالَ: " سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ يَقُولُ: «لَا تُغْزَى مَكَّةُ بَعْدَ هَذَا الْيَوْمِ أَبَدًا» قَالَ أَبُو سُفْيَانَ: تَفْسِيرُ هَذَا الْحَدِيثِ لِأَنَّهُمْ لَا يَكْفُرُونَ أَبَدًا فَلَا يُغْزَوْنَ عَلَى الْكُفْرِ , هَذَا لَا يَكُونُ إِلَّا وَدُخُولُهُ إِيَّاهَا دُخُولَ غَزْوٍ , ثُمَّ قَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «لَا يُقْتَلُ قُرَشِيٌّ بَعْدَ هَذَا الْيَوْمِ صَبْرًا»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬৬
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬৬। আব্দুল্লাহ্ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আবী মারয়াম (রাহঃ) ..... আব্দুল্লাহ্ ইবনে মুতী‘ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুতী (রাযিঃ) কে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে মক্কা বিজয়ের দিন বলতে শুনেছি, আজকের পরে কিয়ামত পর্যন্ত কোন কুরায়শীকে বন্দী করে হত্যা করা হবে না। বলেন, এতে প্রতীয়মান হয় যে, ঐ দিনের পরে কুরায়শের রক্ত হারাম হয়ে গিয়েছে। কেননা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পক্ষ থেকে সেই দিন তাদের উপর সেটা হারাম ঘােষিত হয়েছে। অতঃপর তিনি সেই দিন খুতবা (ভাষণ) দিয়েছেন। তাতে তিনি মক্কায় প্রবেশ করার পূর্বের বিধান, তাতে প্রবেশ করার সময়ের এবং এর পরবর্তী বিধান বর্ণনা করেছেন।
5466 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ , قَالَ: ثنا أَسَدُ بْنُ مُوسَى , قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا , قَالَ: ثنا أَبِي , عَنِ الشَّعْبِيِّ , قَالَ: قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُطِيعٍ: سَمِعْتُ مُطِيعًا , يَقُولُ: " سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ يَقُولُ: لَا يُقْتَلُ قُرَشِيٌّ صَبْرًا بَعْدَ هَذَا الْيَوْمِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ " قَالَ: فَدَلَّ ذَلِكَ أَنَّ دِمَاءَ قُرَيْشٍ إِنَّمَا حُرِّمَتْ بَعْدَ ذَلِكَ الْيَوْمِ لِمَا كَانَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُرْمَتُهُ يَوْمَئِذٍ عَلَيْهِمْ , ثُمَّ خَطَبَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَئِذٍ خُطْبَةً بَيَّنَ فِيهَا حُكْمَ مَكَّةَ قَبْلَ دُخُولِهِ إِيَّاهَا وَحُكْمَهَا وَقْتَ دُخُولِهِ إِيَّاهَا وَحُكْمَهَا بَعْدَ ذَلِكَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬৭
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬৭। ইবরাহীম ইবনে আবী দাউদ (রাহঃ) ..... আমর ইবনে আওন ইবনে ইসমাঈল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ অবশ্যই আল্লাহ্ তা'আলা মক্কাকে ঐ দিন হারাম সাব্যস্ত করেছেন, যে দিন তিনি আসমানসমূহ, যমীন, সূর্য ও চাঁদকে সৃষ্টি করেছেন এবং ওটাকে এই দুই পাথুরে পাহাড়ের মাঝে স্থাপন করেছেন। অতঃপর আমার পূর্বে কারাে জন্য হালাল করা হয়নি এবং আমার জন্যও দিনের কিছুক্ষণের জন্য হালাল করা হয়েছে। এর ঘাস কর্তন করা যাবে না, না এর বৃক্ষ কর্তন করা যাবে। এর শিকার তাড়ানাে যাবে না, এর পতিত সম্পদকেও ঐ ব্যক্তি তুলতে পারবে, যে এর ঘােষণা দিবে। আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, তবে ‘ইযখির' (সুগন্ধিময় ঘাস) কর্তন করা যেতে পারে।
5467 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ أَبِي دَاوُدَ قَالَ: ثنا عَمْرُو بْنُ عَوْنِ بْنُ إِسْمَاعِيلَ أَنَّهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «إِنَّ اللهَ [ص:327] حَرَّمَ مَكَّةَ يَوْمَ خَلَقَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ السَّمَاوَاتِ , وَالْأَرْضَ , وَالشَّمْسَ , وَالْقَمَرَ وَوَضَعَهَا بَيْنَ هَذَيْنِ الْأَخْشَبَيْنِ ثُمَّ لَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ قَبْلِي وَلَمْ تَحِلَّ لِي إِلَّا سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ وَلَا يُخْتَلَى خَلَاهَا وَلَا يُعْضَدُ شَجَرُهَا وَلَا يُنَفَّرُ صَيْدُهَا وَلَا يَرْفَعُ لُقَطَتُهَا إِلَّا مُنْشِدُهَا» , فَقَالَ الْعَبَّاسُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: إِلَّا الْإِذْخِرَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬৮
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬৮। মুহাম্মাদ ইবনে খুযায়মা (রাহঃ) ..... সাঈদ মাকবুরী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবু শুরায়হ কা'বী (রাযিঃ) থেকে শুনেছি। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ মক্কাকে আল্লাহ্ তা'আলা 'হারাম’ করেছেন। কোন মানুষ তাকে 'হারাম' করেনি। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের উপর ঈমান রাখে সে কখনও এখানে রক্ত প্রবাহিত করবে না, না এর কোন বৃক্ষ কর্তন করবে। যদি কোন (অনুসন্ধানকারী) অবকাশ খুঁজে বেড়ায় এবং বলে যে, তা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্য হালাল সাব্যস্ত করা হয়েছিলাে। (শুনে রাখ) আল্লাহ্ তাআলা তা আমার জন্য হালাল করেছেন, অন্য লােকদের জন্য হালাল করেননি। আর আমার জন্যও কেবল (দিনের) কিছুক্ষণের জন্য হালাল করেছেন।
5468 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ , قَالَ: ثنا يَحْيَى , عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ , قَالَ: ثنا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ , قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا شُرَيْحٍ الْكَعْبِيَّ , يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «إِنَّ اللهَ حَرَّمَ مَكَّةَ وَلَمْ يُحَرِّمْهَا النَّاسُ فَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ , وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلَا يَسْفِكَنَّ فِيهَا دَمًا وَلَا يَعْضِدَنَّ فِيهَا شَجَرًا , فَإِنْ تَرَخَّصَ مُتَرَخِّصٌ فَقَالَ قَدْ أُحِلَّتْ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِنَّ اللهَ أَحَلَّهَا لِي وَلَمْ يُحِلَّهَا لِلنَّاسِ وَإِنَّمَا أَحَلَّهَا لِي سَاعَةً»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৬৯
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৬৯। ফাহাদ ইবনে সুলায়মান (রাহঃ) ..... আবু শুরায়হ আল-খুযাই (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদীনার গভর্ণর আমর ইবনে সাঈদ যখন আব্দুল্লাহ্ ইবনে যুবাইর (রাযিঃ)-এর বিরুদ্ধে মক্কা অভিমুখে সৈন্য বাহিনী প্রেরণ করছিল তখন আবু শুরায়হ (রাযিঃ) তার কাছে এসে যা কিছু রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে শুনেছেন বর্ণনা করেন। অতঃপর তিনি তার কাওমের এক মজলিসের দিকে বেরিয়ে গেলেন এবং সেখানে বসে পড়েন। (আবু শুরায়হ রাঃ বলেন) আমিও উঠে তার কাছে গেলাম এবং তার কাছে বসে পড়লাম। তাকে তিনি সেই হাদীস বর্ণনা করেন যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করে আমর ইবনে সাঈদ (রাযিঃ) কে বর্ণনা করেছিলেন এবং আমর ইবনে সাঈদ (রাযিঃ) যা কিছু বলেছেন তাও বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি তাকে বললাম, যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মক্কা বিজয় করেছেন তখন আমরা তার সঙ্গে ছিলাম। মক্কা বিজয়ের পর দিন খােযা'আ গােত্র কবীলা হুযায়ল-এর এক ব্যক্তির উপর অবিচার করে, তারা তাকে মক্কাতে হত্যা করে এবং সে মুশরিক ছিলাে। বলেন, অনন্তর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের মাঝে খুতবা (ভাষণ) দিতে দাঁড়ালেন। তিনি ﷺ (তার ভাষণে) বললেনঃ হে লােক সকল! অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা ঐ দিন মক্কাকে হারাম করেছেন, যেই দিন আসমানসমূহ ও যমীনকে সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং এটা কিয়ামত পর্যন্তের জন্য হারাম। এরূপ ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহ্ তা'আলা ও আখিরাত দিবসের উপর ঈমান রাখে তার জন্য হালাল নয় এখানে রক্ত প্রবাহিত করা। এখানকার কোন বৃক্ষ কর্তন করা। আমার পূর্বে এটা কারাে জন্য হালাল ছিলাে না এবং না আমার পরে কারাে জন্য হালাল হবে। আর আমার জন্যও শুধু (দিনের) এই কিছুক্ষণের জন্য আল্লাহর গযবের বহিঃপ্রকাশের নিমিত্ত হালাল হয়েছে। শােন! এর পর এর হারাম হওয়ার বিধান প্রত্যর্পিত হয়েছে। শােন! যে ব্যক্তি তােমাদেরকে বলবে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তা হালাল সাব্যস্ত করেছেন, তাকে বলে দিবে, আল্লাহ্ তা'আলা কেবল তার রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্যই তা হালাল সাব্যস্ত করেছেন, তােমাদের জন্য হালাল করেননি। হে খােযাআ'র দল! তােমাদের হাতকে বিরত রাখ । তােমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছ। আমি অবশ্যই তার দিয়াত রক্তপণ পরিশােধ করব। এর পরে যে ব্যক্তি এখানে হত্যা করবে তবে তার (নিহতের ওয়ারিছদের) জন্য দুই বস্তু থেকে একটি ইখতিয়ার লাভ হবে। হয়ত (কিসাস হিসাবে) হত্যাকারীর রক্ত প্রবাহিত করবে, নয়ত দিয়াত বা রক্তপণ উসূল করবে। তিনি (আবু সাঈদ র) বলেন, হে শায়খ! এর হারাম হওয়া আপনার চেয়ে অধিক কে অবহিত। ওটা (মক্কা) হত্যাকারী, হুরমতের বিঘ্নকারী ও বিদ্রোহী (এর হত্যা) থেকে বাধা প্রদান করে না। (আবু শুরায়হ রাঃ) বলেন, আমি বললাম যে, আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম এবং তুমি অনুপস্থিত ছিলে। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমাদের উপস্থিত জন (একথা) অনুপস্থিত জনকে পৌঁছে দিবে। আমি অবশ্যই তােমাকে পৌঁছে দিয়েছি।
5469 - حَدَّثَنَا فَهْدُ بْنُ سُلَيْمَانَ , قَالَ: ثنا يُوسُفُ بْنُ بُهْلُولٍ , قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيسَ , عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ , قَالَ: وَحَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيُّ , عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ , قَالَ: لَمَّا بَعَثَ عَمْرُو بْنُ سَعِيدٍ الْبَعْثَ إِلَى مَكَّةَ لِغَزْوِ ابْنِ الزُّبَيْرِ أَتَاهُ أَبُو شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيُّ فَكَلَّمَهُ بِمَا سَمِعَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى نَادِي قَوْمِهِ فَجَلَسَ فَقُمْتُ إِلَيْهِ فَجَلَسْتُ مَعَهُ فَحَدَّثَ عَمَّا حَدَّثَ عَمْرُو بْنُ سَعِيدٍ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَمَّا جَاءَ بِهِ عَمْرُو بْنُ سَعِيدٍ , قَالَ: قُلْتُ لَهُ: " إِنَّا كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ افْتَتَحَ مَكَّةَ فَلَمَّا كَانَ الْغَدُ مِنْ يَوْمِ الْفَتْحِ عَدَتْ خُزَاعَةُ عَلَى رَجُلٍ مِنْ هُذَيْلٍ فَقَتَلُوهُ بِمَكَّةَ وَهُوَ مُشْرِكٌ , قَالَ: فَقَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِينَا خَطِيبًا فَقَالَ: " أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللهَ حَرَّمَ مَكَّةَ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ , وَالْأَرْضَ فَهِيَ حَرَامٌ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا يَحِلُّ لِأَحَدٍ يُؤْمِنُ بِاللهِ , وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ يَسْفِكَ بِهَا دَمًا وَلَا يَعْضِدَ بِهَا شَجَرًا لَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ كَانَ قَبْلِي وَلَا تَحِلُّ لِأَحَدٍ بَعْدِي وَلَمْ تَحِلَّ لِي إِلَّا هَذِهِ السَّاعَةَ غَضَبًا أَلَا ثُمَّ عَادَتْ كَحُرْمَتِهَا أَلَا فَمَنْ قَالَ لَكُمْ: إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ أَحَلَّهَا فَقُولُوا: إِنَّ اللهَ قَدْ أَحَلَّهَا لِرَسُولِهِ وَلَمْ يُحِلَّهَا لَكَ , يَا مَعْشَرَ خُزَاعَةَ كُفُّوا أَيْدِيَكُمْ فَقَدْ قَتَلْتُمْ قَتِيلًا لَأَدِيَنَّهُ فَمَنْ قُتِلَ بَعْدَ مَقَامِي هَذَا فَهُوَ بِخَيْرِ نَظَرَيْنِ إِنْ أَحَبَّ فَدَمُ قَاتِلِهِ وَإِنْ أَحَبَّ فَعَقْلُهُ " قَالَ: انْصَرِفْ أَيُّهَا الشَّيْخُ فَنَحْنُ أَعْلَمُ بِحُرْمَتِهَا مِنْكَ إِنَّهَا لَا تَمْنَعُ سَافِكَ دَمٍ وَلَا مَانِعَ حُرْمَةٍ لَا خَالِعَ طَاعَةٍ , قَالَ: قُلْتُ قَدْ كُنْتُ شَاهِدًا وَكُنْتَ غَائِبًا وَقَدْ أَمَرَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُبَلِّغَ شَاهِدُنَا غَائِبَنَا قَدْ أَبْلَغْتُكَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৭০
আন্তর্জাতিক নং: ৫৪৭১
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৭০-৭১। মুহাম্মাদ ইবনে হুমায়দ ইবনে হিশাম রাঈনী (রাহঃ) ..... আবু সাঈদ মাকবরী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবু শুরায়হ আল-খােযাই (রাযিঃ) কে শুনেছি। তিনি আমর ইবনে সাঈদকে বলছিলেন, যখন তিনি মিম্বরের উপর উপবিষ্ট ছিলেন। যখন তিনি (আব্দুল্লাহ) ইবনে যুবাইর (রাযিঃ)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য মক্কা অভিমুখে সৈন্য বাহিনী প্রেরণ করেছেন। (আবু শুরায়হ রাঃ বলেন,) হে শােন! আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে শুনেছি, তিনি বলেছেন, অবশ্যই মক্কা মুকাররমা হারাম! আল্লাহ্ তা'আলা তা হারাম করে দিয়েছেন। কোন মানুষ তাকে হারাম করেনি। আল্লাহ তা'আলা আমার জন্যও দিনের কিছুক্ষণ তাতে লড়াই করা জায়িয সাব্যস্ত করেছেন। সম্ভবত আমার পরে কিছু লােক তাতে লড়াই করাকে জায়িয ও হালাল মনে করবে। তাদের থেকে যে এরূপ করবে তাকে তোমরা বলে দিবে, অবশ্যই আল্লাহ্ তা'আলা তা তাঁর রাসূল (ﷺ)-এর জন্য হালাল সাব্যস্ত করেছেন, তােমার জন্য হালাল করেননি। বলেন, তােমাদের উপস্থিত জন (একথা) অনুপস্থিত জনকে পৌঁছে দিও। পক্ষান্তরে যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একথা না বলতেন যে, “তােমাদের উপস্থিত জন (একথা) অনুপস্থিত জনকে পৌঁছে দিও” তাহলে আমি তােমাকে এই হাদীস বর্ণনা করতাম না। আমর ইবনে সাঈদ বলেন, তুমি বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছ, তােমার বুদ্ধি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমি তােমাকে শাস্তি প্রদান করব। তিনি বললেন, শােন! আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই সত্য কথা বলব, যদিও তুমি আমাদের উপর কঠোরতা কর না কেন।
বাহর ইবনে নসর (রাহঃ) .....আবু শুরায়হ আল খােয়াই (রাহঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে ফাহাদ (রাহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বিষয়বস্তু রিওয়ায়াত করেছেন; যা এই হাদীসের পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাহর ইবনে নসর (রাহঃ) .....আবু শুরায়হ আল খােয়াই (রাহঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে ফাহাদ (রাহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বিষয়বস্তু রিওয়ায়াত করেছেন; যা এই হাদীসের পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।
5470 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدِ بْنِ هِشَامٍ الرُّعَيْنِيُّ , قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ صَالِحٍ , قَالَ: حَدَّثَنِي اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ , عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ , أَنَّهُ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيَّ , يَقُولُ لِعَمْرِو بْنِ سَعِيدٍ وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ حِينَ قَطَعَ بَعْثًا إِلَى مَكَّةَ لِقِتَالِ ابْنِ الزُّبَيْرِ , يَا هَذَا إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " إِنَّ مَكَّةَ حَرَامٌ حَرَّمَهَا اللهُ وَلَمْ يُحَرِّمْهَا النَّاسُ وَإِنَّ اللهَ إِنَّمَا أَحَلَّ لِي [ص:328] الْقِتَالَ بِهَا سَاعَةً مِنَ النَّهَارِ وَلَعَلَّهُ أَنْ يَكُونَ بَعْدِي رِجَالٌ يَسْتَحِلُّونَ الْقِتَالَ بِهَا فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ مِنْهُمْ فَقُولُوا: إِنَّ اللهَ أَحَلَّهَا لِرَسُولِهِ وَلَمْ يُحِلَّهَا لَكَ وَلْيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ وَلَوْلَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ مَا حَدَّثْتُكَ بِهَذَا الْحَدِيثِ , قَالَ عَمْرٌو: إِنَّكَ شَيْخٌ قَدْ خَرِفْتَ وَقَدْ هَمَمْتُ بِكَ قَالَ: أَمَا وَاللهِ لَأَتَكَلَّمَنَّ بِالْحَقِّ وَإِنْ شَدَدْتَ رِقَابَنَا "
5471 - حَدَّثَنَا بَحْرُ بْنُ نَصْرٍ , عَنْ شُعَيْبِ بْنِ اللَّيْثِ , عَنْ أَبِيهِ , عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ , عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمِثْلِ مَعْنَى حَدِيثِ فَهْدٍ الَّذِي قَبْلَ هَذَا الْحَدِيثِ
5471 - حَدَّثَنَا بَحْرُ بْنُ نَصْرٍ , عَنْ شُعَيْبِ بْنِ اللَّيْثِ , عَنْ أَبِيهِ , عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ , عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمِثْلِ مَعْنَى حَدِيثِ فَهْدٍ الَّذِي قَبْلَ هَذَا الْحَدِيثِ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৭১
empty
৫৪৭১।
5471 -

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৭২
আন্তর্জাতিক নং: ৫৪৭৩
২০. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কর্তৃক মক্কা বলপূর্বক বিজয় করার প্রমাণ
৫৪৭২-৭৩। আলী ইবনে আব্দুর রহমান (রাহঃ) ..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ “হাযূন' পাহাড়ের উপর দাঁড়ালেন। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! অবশাই তুমি আল্লাহ্ তা'আলার যমীনসমূহ থেকে সর্বোত্তম ও আল্লাহর কাছে প্রিয় যমীন। আমার পূর্বে কারো জন্য এবং না আমার পরে কারাে জন্য হালাল ছিলাে। আর আমার জন্যও দিনের কিছুক্ষণ (যুদ্ধ করা) হালাল করা হয়েছে। এখন তা এই সময়ের পরে কিয়ামত পর্যন্ত হারাম।
মুহাম্মাদ ইবনে খুযায়মা (রাহঃ) ..... মুহাম্মাদ ইবনে আমর (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। অতঃপর তিনি নিজস্ব সনদে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
মুহাম্মাদ ইবনে খুযায়মা (রাহঃ) ..... মুহাম্মাদ ইবনে আমর (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। অতঃপর তিনি নিজস্ব সনদে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
5472 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ , قَالَ: ثنا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ , قَالَ أَخْبَرَنَا الدَّرَاوَرْدِيُّ , قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَلْقَمَةَ , عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ , عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: " وَقَفَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْحَجُونِ ثُمَّ قَالَ: «وَاللهِ إِنَّكِ لَخَيْرُ أَرْضِ اللهِ وَأَحَبُّ أَرْضِ اللهِ إِلَى اللهِ لَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ كَانَ قَبْلِي وَلَا تَحِلُّ لِأَحَدٍ بَعْدِي وَمَا أُحِلَّتْ لِي إِلَّا سَاعَةً مِنَ النَّهَارِ وَهِيَ بَعْدَ سَاعَتِهَا هَذِهِ حَرَامٌ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ»
5473 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ , قَالَ: ثنا حَجَّاجُ بْنُ الْمِنْهَالِ , وَأَبُو سَلَمَةَ قَالَا: ثنا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ , عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو , فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ
5473 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ , قَالَ: ثنا حَجَّاجُ بْنُ الْمِنْهَالِ , وَأَبُو سَلَمَةَ قَالَا: ثنا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ , عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو , فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫৪৭৩
empty
৫৪৭৩।
5473 -

তাহকীক:
তাহকীক চলমান