শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام
৩. জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৬ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:২৮৬৮
৭-শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৬৮। ইউনুস (রাহঃ) ..... জাবির ইবন আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উহুদ যুদ্ধে নিহত (শহীদ)দের রক্ত সহই দাফন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁদের জন্য সালাতুল জানাযাও আদায় কর হয়নি এবং তাদেরকে গোসলও দেওয়া হয়নি।
আবু জা’ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ একদল আলিম এই হাদীসের মর্ম গ্রহণ করেছেন এবং তাঁরা বলেছেনঃ যুদ্ধের ময়দানে নিহত শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে না। (অনুরূপভাবে) তাদের থেকে যে ব্যক্তি আহত হয়ে নিজ স্থান থেকে উঠিয়ে নেয়ার পূর্বে ইনতিকাল করে তার জন্যও সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে না। যেমনিভাবে গোসল দেওয়া হয় না। এটি হলো মদীনাবাসী আলিমগণের অভিমত।
পক্ষান্তরে এ বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাদের বিরোধিতা করেছেন এবং তারা বলেছেনঃ বরং শহীদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে। এ বিষয়ে তাদের বিরোধীদের বিপক্ষে তাদের দলীল হল সেটি, যা জাবির (রাযিঃ)-এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, নবী করীম (ﷺ) তাদের উপর সালাতুল জানাযা আদায় করেননি। সম্ভবত তিনি তা (সালাত) এই জন্য পরিত্যাগ করেছিলেন যে, তাদের জন্য সুন্নত তরীকা হল, তাদের সালাতুল জানাযা আদায় না করা। যেমনিভাবে তাদেরকে গোসল দেয়া ব্যতীত দাফন করা সুন্নত। আর এটিও হতে পারে যে, তিনি নিজে তাদের সালাতুল জানাযা আদায় করেননি; বরং অন্যরা তাদের সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন। যেহেতু সেদিন তিনি জখমের যন্ত্রণা ও দান্দান মুবারক শহীদ হওয়াসহ পৌত্তলিকদের বিভিন্ন আঘাতে জর্জরিত ছিলেন। (যার কারণে নিজে তাঁদের সালাত আদায় করতে পারেননি)। যেহেতু সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিম্মোক্ত হাদীস সমূহ বর্ণিত আছেঃ
আবু জা’ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ একদল আলিম এই হাদীসের মর্ম গ্রহণ করেছেন এবং তাঁরা বলেছেনঃ যুদ্ধের ময়দানে নিহত শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে না। (অনুরূপভাবে) তাদের থেকে যে ব্যক্তি আহত হয়ে নিজ স্থান থেকে উঠিয়ে নেয়ার পূর্বে ইনতিকাল করে তার জন্যও সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে না। যেমনিভাবে গোসল দেওয়া হয় না। এটি হলো মদীনাবাসী আলিমগণের অভিমত।
পক্ষান্তরে এ বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাদের বিরোধিতা করেছেন এবং তারা বলেছেনঃ বরং শহীদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে। এ বিষয়ে তাদের বিরোধীদের বিপক্ষে তাদের দলীল হল সেটি, যা জাবির (রাযিঃ)-এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, নবী করীম (ﷺ) তাদের উপর সালাতুল জানাযা আদায় করেননি। সম্ভবত তিনি তা (সালাত) এই জন্য পরিত্যাগ করেছিলেন যে, তাদের জন্য সুন্নত তরীকা হল, তাদের সালাতুল জানাযা আদায় না করা। যেমনিভাবে তাদেরকে গোসল দেয়া ব্যতীত দাফন করা সুন্নত। আর এটিও হতে পারে যে, তিনি নিজে তাদের সালাতুল জানাযা আদায় করেননি; বরং অন্যরা তাদের সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন। যেহেতু সেদিন তিনি জখমের যন্ত্রণা ও দান্দান মুবারক শহীদ হওয়াসহ পৌত্তলিকদের বিভিন্ন আঘাতে জর্জরিত ছিলেন। (যার কারণে নিজে তাঁদের সালাত আদায় করতে পারেননি)। যেহেতু সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিম্মোক্ত হাদীস সমূহ বর্ণিত আছেঃ
بَابُ الصَّلَاةِ عَلَى الشُّهَدَاءِ
2868 - حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ , قَالَ: أَخْبَرَنِي اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ , عَنِ ابْنِ شِهَابٍ , حَدَّثَهُ , عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ , أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ أَخْبَرَهُ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ بِدَفْنِ قَتْلَى أُحُدٍ بِدِمَائِهِمْ , ولَمْ يُصَلِّ عَلَيْهِمْ , وَلَمْ يُغَسَّلُوا» قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالُوا: لَا يُصَلَّى عَلَى مَنْ قُتِلَ مِنَ الشُّهَدَاءِ فِي الْمَعْرَكَةِ , وَلَا عَلَى مَنْ جُرِحَ مِنْهُمْ فَمَاتَ قَبْلَ أَنْ يُحْمَلَ مِنْ مَكَانِهِ , كَمَا لَا يُغَسَّلُ , وَمِمَّنْ قَالَ بِذَلِكَ أَهْلُ الْمَدِينَةِ وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَقَالُوا: بَلْ يُصَلَّى عَلَى الشَّهِيدِ. وَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ لَهُمْ فِي ذَلِكَ عَلَى مُخَالِفِهِمْ , أَنَّ الَّذِي فِي حَدِيثِ جَابِرٍ إِنَّمَا هُوَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يُصَلِّ عَلَيْهِمْ. فَقَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ تَرْكُهُ ذَلِكَ , لِأَنَّ سُنَّتَهُمْ أَنْ لَا يُصَلَّى عَلَيْهِمْ , كَمَا كَانَ مِنْ سُنَّتِهِمْ أَنْ لَا يُغَسَّلُوا. وَيَجُوزُ أَنْ يَكُونَ لَمْ يُصَلِّ عَلَيْهِمْ , وَصَلَّى عَلَيْهِمْ غَيْرُهُ , لِمَا كَانَ بِهِ حِينَئِذٍ مِنْ أَلَمِ الْجِرَاحِ , وَكَسْرِ الرُّبَاعِيَّةِ , وَمَا أَصَابَهُ يَوْمئِذٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৬৯
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৬৯। ইউনুস (রাহঃ) ..... সাহ্ল (ইবন সা'দ) (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে, উহুদ যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর চেহারা মুবারকে কি দিয়ে ঔষধ দেয়া হয়ে ছিল? সাহ্ল (রাযিঃ) বলেনঃ তার (লৌহ) শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে মাথায় ঢুকে গিয়েছিল, তাঁর দান্দান মুবারক শহীদ হয়ে গিয়েছিল এবং চেহারা মুবারক জখম হয়ে গিয়েছিল। ফাতিমা (রাযিঃ) তা ধৌত করছিলেন এবং আলী (রাযিঃ) ঢাল দ্বারা পানি এনে তা ঢালছিলেন। ফাতিমা (রাযিঃ) যখন দেখলেন পানিতে রক্ত বন্ধ হচ্ছে না, বরং রক্ত আরো অধিক প্রবাহিত হচ্ছে। তখন তিনি একটি চাটাইর টুকরা নিয়ে তা জ্বালিয়ে এর ছাই তাঁর ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলেন, যাতে রক্ত বন্ধ হয়ে গেল। এই হাদীসে ইবন আবী হাযিম (রাহঃ) ও সাঈদ (রাহঃ)-এর শব্দ ভিন্ন; কিন্তু অর্থ অভিন্ন।
2869 - فَإِنَّهُ حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ , قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي حَازِمٍ , وَسَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْجُمَحِيُّ , عَنْ أَبِي حَازِمٍ. قَالَ سَعِيدٌ فِي حَدِيثِهِ: سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ. وَقَالَ ابْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ سَهْلٍ: إِنَّهُ سُئِلَ عَنْ وَجْهِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ أُحُدٍ بِأَيِّ شَيْءٍ دُووِيَ؟ قَالَ: سَهْلٌ: كُسِرَتِ الْبَيْضَةُ عَلَى رَأْسِهِ , وكُسِرَتْ رُبَاعِيَتُهُ , وَجُرِحَ وَجْهُهُ , فَكَانَتْ فَاطِمَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا تَغْسِلُهُ , وَكَانَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَسْكُبُ الْمَاءَ بِالْمِجَنِّ.فَلَمَّا رَأَتْ فَاطِمَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا , أَنَّ الْمَاءَ لَا يَزِيدُ الدَّمَ إِلَّا كَثْرَةً , أَخَذَتْ قِطْعَةَ حَصِيرٍ فَأَحْرَقَتْهَا وَأَلْصَقَتْهَا عَلَى جُرْحِهِ , فَاسْتَمْسَكَ الدَّمُ " يَخْتَلِفُ لَفْظُ ابْنِ أَبِي حَازِمٍ , وَسَعِيدٍ فِي هَذَا الْحَدِيثِ , وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭০
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭০। ইউনুস (রাহঃ) ..... সাহ্ল (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উহুদ যুদ্ধে চেহারা মুবারকে জখমপ্রাপ্ত হন। তার কন্যা ফাতিমা (রাযিঃ) এক টুকরা চাটাই জালিয়ে তা ভস্ম করে তাঁর চেহারায় প্রলেপ দিয়ে দিলেন। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলছিলেনঃ সেই সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহ তা'আলার রোষ কঠোর রূপ ধারণ করেছে, যে কাওম আল্লাহ্র রাসূলের চেহারাকে রক্তাক্ত করে দিয়েছে।
2870 - حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ نَافِعٍ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلٍ «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُصِيبَ يَوْمَ أُحُدٍ فِي وَجْهِهِ فَجُرِحَ , وَأَنَّ فَاطِمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا ابْنَتَهُ , أَحْرَقَتْ قِطْعَةً مِنْ حَصِيرٍ , فَجَعَلَتْهُ رَمَادًا وَأَلْصَقَتْهُ عَلَى وَجْهِهِ. وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى قَوْمٍ , أَدْمُوا وَجْهَ رَسُولِ اللهِ»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭১
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭১। ইবন আবী দাউদ (রাহঃ) ..... সাহ্ল ইবন সা'দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ উহুদ যুদ্ধের দিন রাসূলুলাহ (ﷺ)-এর (লৌহ) শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে মাথায় ঢুকে গিয়েছিল, তাঁর দান্দান মুবারক শহীদ হয়ে গিয়েছিল এবং তার চেহারা জখমপ্রাপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
2871 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ: أنا أَبُو غَسَّانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ: «هَشَّتِ الْبَيْضَةُ عَلَى رَأْسِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ أُحُدٍ , وكُسِرَتْ رُبَاعِيَتُهُ , وَجُرِحَ وَجْهُهُ»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭২
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭২। ইবন আবী দাউদ (রাহঃ) .....আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ সেই সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহর গযব কঠোর রূপ ধারণ করেছে, যে সম্প্রদায় আল্লাহর রাসূলের চেহারাকে রক্তাক্ত করে দিয়েছে। সেদিন তারা (কাফিরগণ) তাঁর চেহারাকে রক্তাক্ত করে দিয়েছিল, তারা তার শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে দিয়েছিল এবং তাঁর দান্দান মুবারক শহীদ করে দিয়েছিল।
2872 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، قَالَ: أنا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ تَعَالَى عَلَى قَوْمِ أَدْمُوا وَجْهَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» وَكَانُوا أَدْمُوا وَجْهَهُ يَوْمَئِذٍ , وَهَشَّمُوا عَلَيْهِ الْبَيْضَةَ , وَكَسَرُوا رُبَاعِيَتَهُ "

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭৩
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭৩। আব্দুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদ (রাহঃ) .....আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, উহুদ যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দান্দান মুবারক শহীদ হয়ে গিয়েছিল, তার চেহারা জখম হয়ে গিয়েছিল, যার কারণে তাঁর চেহারা থেকে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল। তিনি বলছিলেনঃ সেই সম্প্রদায় সফলতা লাভ করবে কিভাবে, যারা তাদের নবীর চেহারাকে জখম করে দিয়েছে এবং ভেঙ্গে দিয়েছে তার দান্দান মুবারককে। তিনি তাদের জন্য আল্লাহ্ তাআলার নিকট দুআ করছিলেন। তখন আল্লাহ তাআলা আয়াত আবতীর্ণ করেনঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ -এই বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নেই। (৩ঃ ১২৮)
অতএব এই সম্ভাবনা থাকছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদের উপর সালাতুল জানাযা পড়া থেকে বিরত থেকেছেন, তার সে দিনকার আঘাত জনিত জ্বালা যন্ত্রণার কারণে এবং তাদের উপর তিনি ব্যতীত অন্য কেউ সালাত পড়েছেন।
অতএব এই সম্ভাবনা থাকছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদের উপর সালাতুল জানাযা পড়া থেকে বিরত থেকেছেন, তার সে দিনকার আঘাত জনিত জ্বালা যন্ত্রণার কারণে এবং তাদের উপর তিনি ব্যতীত অন্য কেউ সালাত পড়েছেন।
2873 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ خُشَيْشٍ، قَالَ: ثنا الْقَعْنَبِيُّ، قَالَ: ثنا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُسِرَتْ رُبَاعِيَتُهُ , يَوْمَ أُحُدٍ , وَشُجَّ وَجْهُهُ , فَجَعَلَ يَسْلُتُ الدَّمُ عَلَى وَجْهِهِ , وَيَقُولُ: «كَيْفَ يُفْلِحُ قَوْمٌ شَجُّوا وَجْهَ نَبِيِّهِمْ , وَكَسَرُوا رُبَاعِيَتَهُ , وَهُوَ يَدْعُوهُمْ إِلَىاللهِ عَزَّ وَجَلَّ» فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} [آل عمران: 128] فَيَجُوزُ أَنْ يَكُونَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَخَلَّفَ عَنِ الصَّلَاةِ عَلَيْهِمْ لِأَلَمِ مَا نَزَلَ بِهِ وَصَلَّى عَلَيْهِمْ غَيْرُهُ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭৪
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭৪। ইউনুস (রাহঃ) .....আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ উহুদ যুদ্ধের শহীদদেরকে গোসল দেয়া হয়নি তাদেরকে তাঁদের রক্তসহই দাফন করা হয়েছিল, এবং তাদের সালাতুল জানাযা আদায় করা হয়নি। .
এই হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও অন্যদের পক্ষ থেকে তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। এই হাদীসের মর্ম সম্পর্কে আমরা বিচার বিবেচনা করেছি যে, এটির বক্তব্য কী? এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইবন ওয়াহব (রাহঃ) কর্তৃক বর্ণিত রিওয়ায়াতের উপর কোন কিছু অতিরিক্ত করা হয়েছে কিনা? এই বিষয়ে নিম্মোক্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছেঃ
এই হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও অন্যদের পক্ষ থেকে তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। এই হাদীসের মর্ম সম্পর্কে আমরা বিচার বিবেচনা করেছি যে, এটির বক্তব্য কী? এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইবন ওয়াহব (রাহঃ) কর্তৃক বর্ণিত রিওয়ায়াতের উপর কোন কিছু অতিরিক্ত করা হয়েছে কিনা? এই বিষয়ে নিম্মোক্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছেঃ
2874 - وَقَدْ حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ , قَالَ: ثنا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ اللَّيْثِيُّ أَنَّ ابْنَ شِهَابٍ حَدَّثَهُ أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حَدَّثَهُ «أَنَّ شُهَدَاءَ أُحُدٍ , لَمْ يُغَسَّلُوا , وَدُفِنُوا بِدِمَائِهِمْ , وَلَمْ يُصَلَّ عَلَيْهِمْ» فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ مَا يَنْفِي الصَّلَاةَ عَلَيْهِمْ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمِنْ غَيْرِهِ. فَنَظَرْنَا فِي هَذَا الْحَدِيثِ , كَيْفَ هُوَ؟ وَهَلْ زِيدَ عَلَى ابْنِ وَهْبٍ فِيهِ شَيْءٌ؟

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭৫
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭৫। ইবরাহীম ইবন মারযূক (রাহঃ) ..... আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উহুদের (যুদ্ধের) দিন হামযা (রাযিঃ)-এর (লাশের) কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। (দেখলেন) তাঁর নাক-কান কেটে চেহারা বিকৃত করে ফেলা হয়েছে। তিনি বললেন, সাফিয়্যার (হামযা রা)-এর বোন ধৈর্য হারা হওয়ার আশংকা না থাকলে আমি তার লাশ এভাবেই ফেলে রাখতাম। তারপর আল্লাহ তা'আলা তাঁকে হিংস্রজন্তু ও পাখীদের পেট থেকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করতেন। এরপর তিনি তাকে একটি সাদা-কাল ডোরা যুক্ত চাদরে কাফন দেন। এটি এত ছোট ছিল যে, মাথা ঢাকলে তার দুই পা খুলে যেত, আর পা ঢেকে দিলে তার মাথা খুলে যেত। এরপর তিনি তার মাথা ঢেকে দিলেন। তাঁকে ব্যতীত অন্য আর কোন শহীদের উপরে তিনি সালাতুল জানাযা আদায় করেননি। তিনি বললেন, “আমি কিয়ামতের দিন তোমাদের জন্য সাক্ষী হব”।
এই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, নবী করীম (ﷺ) সেই দিন হামযা (রাযিঃ) ব্যতীত অন্য কোন শহীদের উপর সালাতুল জানাযা আদায় করেননি। তিনি (ﷺ) তার উপরে নিজে সালাত পড়েছেন এবং তিনি উহুদের শহীদের মধ্যেকার শ্রেষ্ঠ শহীদ। যদি শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা আদায় না করাই সুন্নত হত, তাহলে তিনি (ﷺ) হামযা (রাযিঃ)-এর সালাতুল জানাযা পড়তেন না, যেমনিভাবে তাকে গোসল দেননি, যেহেতু শহীদদের জন্য সুন্নত হল তাদেরকে গোসল না দেয়া। তাহলে এ হাদীস দ্বারা এটিই প্রমাণিত হল যে, নবী করীম (ﷺ) হামযা (রাযিঃ)-এর উপর সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন এবং অন্যদের উপরে সালাত আদায় করেননি।
অতএব এতে সম্ভাবনা থাকছে যে, তাঁর কঠিন অবস্থার কারণে যা আমরা উল্লেখ করেছি, তিনি অন্যদের জানাযার সালাত পড়েননি এবং অন্য লোকেরা তাঁদের (অপরাপর শহীদদের) জানাযার সালাত পড়েছেন।
অন্য হাদীসে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সেই (উহুদের) দিন হামযা (রাযিঃ) সহ অপরাপর শহীদদের সালাতুল জানাযা আদায় করেছেনঃ
এই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, নবী করীম (ﷺ) সেই দিন হামযা (রাযিঃ) ব্যতীত অন্য কোন শহীদের উপর সালাতুল জানাযা আদায় করেননি। তিনি (ﷺ) তার উপরে নিজে সালাত পড়েছেন এবং তিনি উহুদের শহীদের মধ্যেকার শ্রেষ্ঠ শহীদ। যদি শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা আদায় না করাই সুন্নত হত, তাহলে তিনি (ﷺ) হামযা (রাযিঃ)-এর সালাতুল জানাযা পড়তেন না, যেমনিভাবে তাকে গোসল দেননি, যেহেতু শহীদদের জন্য সুন্নত হল তাদেরকে গোসল না দেয়া। তাহলে এ হাদীস দ্বারা এটিই প্রমাণিত হল যে, নবী করীম (ﷺ) হামযা (রাযিঃ)-এর উপর সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন এবং অন্যদের উপরে সালাত আদায় করেননি।
অতএব এতে সম্ভাবনা থাকছে যে, তাঁর কঠিন অবস্থার কারণে যা আমরা উল্লেখ করেছি, তিনি অন্যদের জানাযার সালাত পড়েননি এবং অন্য লোকেরা তাঁদের (অপরাপর শহীদদের) জানাযার সালাত পড়েছেন।
অন্য হাদীসে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সেই (উহুদের) দিন হামযা (রাযিঃ) সহ অপরাপর শহীদদের সালাতুল জানাযা আদায় করেছেনঃ
2875 - فَإِذَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ قَدْ حَدَّثَنَا , قَالَ: ثنا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ بْنِ فَارِسٍ , قَالَ: أنا أُسَامَةُ , عَنِ الزُّهْرِيِّ , عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ يَوْمَ أُحُدٍ بِحَمْزَةَ , وَقَدْ جُدِعَ وَمُثِّلَ بِهِ فَقَالَ: «لَوْلَا أَنْ تَجْزَعَ صَفِيَّةُ لَتَرَكْتُهُ حَتَّى يَحْشُرَهُ اللهُ مِنْ بُطُونِ الطَّيْرِ وَالسِّبَاعِ» فَكَفَّنَهُ فِي نَمِرَةٍ , إِذَا خَمَّرَ رَأْسَهُ بَدَتْ رِجْلَاهُ , وَإِذَا خَمَّرَ رِجْلَيْهِ بَدَا رَأْسُهُ , فَخَمَّرَ رَأْسَهُ , ولَمْ يُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنَ الشُّهَدَاءِ غَيْرَهُ وَقَالَ: «أَنَا شَهِيدٌ عَلَيْكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَمْ يُصَلِّ يَوْمَئِذٍ , عَلَى أَحَدٍ مِنَ الشُّهَدَاءِ غَيْرَ حَمْزَةَ , فَإِنَّهُ صَلَّى عَلَيْهِ , وَهُوَ أَفْضَلُ شُهَدَاءِ أُحُدٍ. فَلَوْ كَانَ مِنْ سُنَّةِ الشُّهَدَاءِ أَنْ لَا يُصَلَّى عَلَيْهِمْ , لَمَا صَلَّى عَلَى حَمْزَةَ , كَمَا لَمْ يُغَسِّلْهُ , إِذْ كَانَ مِنْ سُنَّةِ الشُّهَدَاءِ أَنْ لَا يُغَسَّلُوا. وَصَارَ مَا فِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , صَلَّى عَلَى حَمْزَةَ , وَلَمْ يُصَلِّ عَلَى غَيْرِهِ. فَهَذَا يَحْتَمِلُ أَنْ يَكُونَ لَمْ يُصَلِّ عَلَى غَيْرِهِ , لِشِدَّةِ مَا بِهِ مِمَّا ذَكَرْنَا , وَصَلَّى عَلَيْهِمْ غَيْرُهُ مِنَ النَّاسِ. وَقَدْ جَاءَ فِي غَيْرِ هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى يَوْمَئِذٍ , عَلَى حَمْزَةَ , وَعَلَى سَائِرِ الشُّهَدَاءِ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭৬
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭৬। ইবরাহীম ইবন আবী দাউদ (রাহঃ) ..... ইবন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, উহুদের দিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সম্মুখে দশজন করে শহীদের লাশ রাখা হত, তিনি হামযা' (রাযিঃ) সহ তাদের সালাতুল জানাযা আদায় করতেন। তারপর হামযা (রাযিঃ)-এর লাশ রেখে দশজনের (নয় জনের) লাশ উঠিয়ে নেয়া হত। এরপর (আবার) দশজন শহীদের (লাশ) রাখা হত, তিনি তাদের উপরে সালাতুল জানাযা পড়তেন এবং তাদের সাথে হামযা (রাযিঃ) ও।
2876 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ نُمَيْرٍ، قَالَ: ثنا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي زِيَادٍ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُوضَعُ بَيْنَ يَدَيْهِ يَوْمَ أُحُدٍ عَشَرَةٌ فَيُصَلِّي عَلَيْهِمْ , وَعَلَى حَمْزَةَ , ثُمَّ يُرْفَعُ الْعَشَرَةُ , وَحَمْزَةُ مَوْضُوعٌ , ثُمَّ يُوضَعُ عَشَرَةٌ , فَيُصَلِّي عَلَيْهِمْ , وَعَلَى حَمْزَةَ مَعَهُمْ»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭৭
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭৭। ফাহাদ (রাহঃ) ..... ইবন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উহুদের দিন শহীদদের ব্যাপারে নির্দেশ দিলেন (সালাতের জন্য তাদেরকে যেন সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়)। নয় জন করে রাখা হত এবং হামযা (রাযিঃ) সহ (দশজন), তিনি তাদের উপরে সাতবার তাকবীর পাঠ করে সালাত আদায় করতেন। তারপর হামযা (রাযিঃ)-এর লাশ রেখে অন্য সকলের লাশ সরিয়ে ফেলা হত। তারপর আরো নয়জন আনা হত, তিনি তাদের উপরে সাত তাকবীর দিয়ে সালাত আদায় করতেন, এভাবে তিনি তাদের সকলের সালাত শেষ করেন।
2877 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ، قَالَ: ثنا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ يُونُسَ، قَالَ: ثنا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي زِيَادٍ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ: «أَمَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ أُحُدٍ بِالْقَتْلَى , فَجَعَلَ يُصَلِّي عَلَيْهِمْ , فَيُوضَعُ تِسْعَةٌ وَحَمْزَةُ , فَيُكَبِّرُ عَلَيْهِمْ سَبْعَ تَكْبِيرَاتٍ , ثُمَّ يُرْفَعُونَ وَيُتْرَكُ حَمْزَةُ , ثُمَّ يُجَاءُ بِتِسْعَةٍ , فَيُكَبِّرُ عَلَيْهِمْ سَبْعًا حَتَّى فَرَغَ عَنْهُمْ»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭৮
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭৮। ফাহাদ (রাহঃ) ..... আব্দুল্লাহ ইবন যুবায়র (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উহুদের দিন হামযা (রাযিঃ)-কে চাদর দিয়ে ঢেকে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন। তাকে তার চাদরে ঢেকে দেয়ার পর তিনি নয় বার তাকবীর পাঠ করে তার সালাতুল জানাযা পড়লেন। তারপর অপরাপর নিহতদের সারিবদ্ধ ভাবে আনা হত, তিনি তাদের উপরে এবং তাঁদের সাথে তার উপরে সালাত আদায় করতেন ।
বস্তুত এই ইবন আববাস (রাযিঃ) ও ইবনুয যুবায়র (রাযিঃ) উভয়ে আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ)-এর হাদীসের বিরোধিতা করেছেন, যা আমরা তাঁরই সূত্রে ইতিপূর্বে রিওয়ায়াত করে এসেছি।
আবু মালিক আল-গিফারী (রাযিঃ) থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
বস্তুত এই ইবন আববাস (রাযিঃ) ও ইবনুয যুবায়র (রাযিঃ) উভয়ে আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ)-এর হাদীসের বিরোধিতা করেছেন, যা আমরা তাঁরই সূত্রে ইতিপূর্বে রিওয়ায়াত করে এসেছি।
আবু মালিক আল-গিফারী (রাযিঃ) থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
2878 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ، قَالَ: ثنا يُوسُفُ بْنُ بُهْلُولٍ، قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ: حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ أَبِيهِ، يَعْنِي عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ يَوْمَ أُحُدٍ بِحَمْزَةَ فَسُجِّيَ بِبُرْدِهِ ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهِ , فَكَبَّرَ تِسْعَ تَكْبِيرَاتٍ , ثُمَّ أُتِيَ بِالْقَتْلَى يُصَفُّونَ , وَيُصَلِّي عَلَيْهِمْ وَعَلَيْهِ مَعَهُمْ» فَهَذَا ابْنُ عَبَّاسٍ , وَابْنُ الزُّبَيْرِ , قَدْ خَالَفَا أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فِيمَا رَوَيْنَاهُ عَنْهُ قَبْلَ هَذَا. وَقَدْ رُوِيَ مِثْلُ هَذَا أَيْضًا عَنْ أَبِي مَالِكٍ الْغِفَارِيِّ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৭৯
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৭৯। বকর ইবন ইদ্রিস (রাহঃ)......হুসায়ন ইবন আব্দুর রহমান (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি আবু মালিক আল-গিফারী (রাযিঃ)-কে বলতে শুনেছি, উহুদের (যুদ্ধে) নিহতদের নয়জন করে আনা হত এবং তাদের দশম জন হতেন হামযা (রাযিঃ)-এর পর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদের সালাতুল জানাযা আদায় করতেন। তারপর তাঁদেরকে বহন করে নিয়ে যাওয়া হত। তারপর আবার নয় জন আনা হত, তিনি তাদের সালাত পড়তেন এবং হামযা (রাযিঃ)-এর লাশ স্ব-স্থানে বিদ্যমান থাকত। এমনি ভাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদের সালাতুল জানাযা পড়েছেন।
উকবা ইবন আমির (রাযিঃ) থেকেও বর্ণিত আছে যে, নবী করীম (ﷺ) উহুদের (শহীদদের) উপরে তাঁদের নিহত হওয়ার আট বছর পরে সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন।
উকবা ইবন আমির (রাযিঃ) থেকেও বর্ণিত আছে যে, নবী করীম (ﷺ) উহুদের (শহীদদের) উপরে তাঁদের নিহত হওয়ার আট বছর পরে সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন।
2879 - حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ إِدْرِيسَ، قَالَ: ثنا آدَمُ بْنُ إِيَاسٍ، قَالَ: ثنا شُعْبَةُ، عَنْ حُصَيْنِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا مَالِكٍ الْغِفَارِيَّ، قَالَ: «كَانَ قَتْلَى أُحُدٍ يُؤْتَى بِتِسْعَةٍ وَعَاشِرُهُمْ حَمْزَةُ , فَيُصَلِّي عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , ثُمَّ يُحْمَلُونَ , ثُمَّ يُؤْتَى بِتِسْعَةٍ , فَيُصَلِّي عَلَيْهِمْ وَحَمْزَةُ مَكَانَهُ , حَتَّى صَلَّى عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» وَقَدْ رُوِيَ أَيْضًا عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ , أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى عَلَى قَتْلَى أُحُدٍ , بَعْدَ مَقْتَلِهِمْ بِثَمَانِ سِنِينَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৮০
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৮০। ইউনুস (রাহঃ) ..... উকবা ইবন আমির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদেরকে সর্বশেষ যে খুতবা দেন, তাহল, তিনি উহুদের শহীদদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করেন, তারপর মিম্বরে আরোহণ পূর্বক আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও স্তুতি বর্ণনা করেন। তারপর বললেনঃ আমি তোমাদের জন্য অগ্রবর্তী এবং তোমাদের জন্য সাক্ষী।
2880 - حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ: أنا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، وَابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، أَنَّ أَبَا الْخَيْرِ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ يَقُولُ: إِنَّ آخِرَ مَا خَطَبَ لَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ صَلَّى عَلَى شُهَدَاءِ أُحُدٍ , ثُمَّ رَقِيَ عَلَى الْمِنْبَرِ , فَحَمِدَ اللهَ , وَأَثْنَى عَلَيْهِ , ثُمَّ قَالَ: «إِنِّي لَكُمْ فَرَطٌ وَأَنَا عَلَيْكُمْ شَهِيدٌ»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৮১
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৮১। আলী ইবন মা’বাদ (রাহঃ) ..... উকবা ইবন আমির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক দিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বের হলেন, তারপর তিনি উহুদের শহীদদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করলেন।
উকবা (রাযিঃ) এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে, যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উহুদের শহীদদের উপরে তাদের নিহত হওয়ার আট বছর পরে সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন। বস্তুত সে সময়ে তাঁদের উপরে তার সালাত আদায় করার মধ্যে তিন সম্ভাবনার কোন একটি বিদ্যমান থাকতে পারে। (ক) শহীদদের ব্যাপারে (প্রথম অবস্থায়) হয়ত এই নীতি ছিল যে, তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করা যাবে না। তারপর পরবতীতে সেই বিধান রহিত হয়ে গিয়ে তাদের উপরে সালাত পড়ার বিধান প্রবর্তিত হয়। (খ) অথবা তাদের উপরে তিনি যে সালাত পড়েছেন তা নফল হিসাবে ছিল, ওয়াজিব বা সুন্নত হিসাবে ছিল না, (গ) অথবা তাদের সালাতের ব্যাপারে সুন্নত হল দাফনের সময় তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় না করা বরং (দাফনের পরে) সুদীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরে তাঁদের উপরে সালাত পড়া হবে। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর আমলা এই তিন সম্ভাবনা থেকে মুক্ত নয়, (একটি অবশ্যই হবে)।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ
অতএব আমরা আলোচ্য বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখতে পেয়েছি যে, সমস্ত মৃতের সালাতুল জানাযার বিধান হল তাদের দাফনের পূর্বে সালাত আদায় করা। তারপর আলিমগণ মৃতের উপরে দাফন করার পূর্বে অথবা পরে সালাতুল জানাযা নফল হিসাবে আদায় করা সম্পর্কে মতবিরোধ করেছেন। কেউ তা জায়িয বলেছেন, আবার কেউ কেউ মাকরূহ বলেছেন। এতে সুন্নতের বিষয়টি নফল অপেক্ষা অত্যন্ত গুরুত্ববাহী। যেহেতু তাঁরা তা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ, আর তা নফল হওয়ার ব্যাপারে বিরোধে লিপ্ত।
যদি উহুদের শহীদগণ এরূপ হয় যে, তাদের উপরে সালাতুল জানাযা নফল হিসাবে পড়া হয়েছে, তাহলে উক্ত নফল প্রমাণিত হওয়ার কারণে তাদের উপরে যে সময়ে নফল পড়া হয়েছে, সে সময়ের পূর্বে তাদের উপরে সালাতুল জানাযা সুন্নত হওয়া সাব্যস্ত হবে। কারণ প্রত্যেক নফলের জন্য ফরযের মধ্যে কোন উৎস থাকা বাঞ্ছনীয়! যদি [(উকবা ইবন আমর (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসে ব্যক্ত)] উক্ত সালাত নবী করীম (ﷺ)-এর পক্ষ থেকে নফল হিসাবে সাব্যস্ত হয়, তাহলে সমস্ত মৃতদের ন্যায় শহীদদের সালাতুল জানাযা সুন্নত হওয়াটা সাব্যস্ত হবে। আর যদি তাঁদের উপরে (আটবছর পর) তাঁর সালাত পড়াটা তার প্রথম কার্য (তথা শহীদদেরকে সালাত ব্যতীত দাফন করে দেয়া) রহিত হয়ে যাওয়ার কারণে ছিল। তাদের উপরে তাদের (আট বছর পর) এই সালাত আদায় করা আবশ্যক রূপে প্রমাণ করছে যে, তাঁদের (শহীদদের) উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করা সুন্নত; তাদের দাফনের সময়ে তাদের জন্য তার সালাতুল জানাযা পরিত্যাগ করার (বিধান) রহিত হয়ে গিয়েছে।
আর যদি (আট বছর পর) তাঁদের উপরে তাঁর সালাত পড়াটা এজন্য হয়ে থাকে যে, তাদের (শহীদদের) জন্য সালাত পড়ার সুন্নত তরীকাই হল তাদের জন্য এই (দীর্ঘ) সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর (কবরের নিকট গিয়ে) সালাত পড়া হবে। এবং এটি অন্য শহীদদের ব্যতীত একমাত্র উহুদের শহীদদের বৈশিষ্ট্য হয়ে থাকে, তাহলে এরূপ অবস্থায় এ সম্ভাবনা জরুরী যে, অপরাপর সমস্ত শহীদদের বিধানও উহুদের শহীদদের অনুরূপ হবে যে, এরূপ দীর্ঘ (সাত আট বছর) সময় অতিবাহিত হওয়ার পর (কবরের নিকট) সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে। আবার এরূপ সম্ভাবনাও আছে যে, উহ্নদের শহীদদের ব্যতীত অপরাপর সমস্ত শহীদদের সালাতুল জানাযা (দাফনের পূর্বে) তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করা হবে। (ওরূপ বিলম্ব করার বিধান প্রযোজ্য হবে না)। যেহেতু উহুদের শহীদদের সালাতের বিষয়ে সুন্নত তরীকা হল তাদের সালাতকে বিলম্বিত করা। তবে উল্লিখিত এই তিন (সম্ভাবনার) প্রত্যেকটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তাদের (শহীদদের) ব্যাপারে সুন্নত তরীকায় সালাতুল জানাযার বিধান সাব্যস্ত রয়েছে, চাই সেটি এক নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরে হোক, কিংবা দাফনের পূর্বে হোক।
তারপর আমাদের এই সময়ে বিরোধকারীদের মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু এটিই থাকছে যে, শহীদদের উপরে দাফনের পূর্বে সালাতুল জানাযার বিধান রয়েছে, না তা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করা। (উকবা রা)-এর এই হাদীসে যখন তাদের উপরে দাফনের পরে সালাতুল জানাযার বিধান সাব্যস্ত হয়েছে তাহলে দাফনের পূর্বে তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করার বিষয়টি উত্তম সাব্যস্ত হবে।
নবী করীম (ﷺ) থেকে উহুদ ব্যতীত অপরাপর শহীদদের ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন। সেই সমস্ত (হাদীস) থেকে নিন্মোক্ত হাদীসটি অন্যতমঃ
উকবা (রাযিঃ) এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে, যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উহুদের শহীদদের উপরে তাদের নিহত হওয়ার আট বছর পরে সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন। বস্তুত সে সময়ে তাঁদের উপরে তার সালাত আদায় করার মধ্যে তিন সম্ভাবনার কোন একটি বিদ্যমান থাকতে পারে। (ক) শহীদদের ব্যাপারে (প্রথম অবস্থায়) হয়ত এই নীতি ছিল যে, তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করা যাবে না। তারপর পরবতীতে সেই বিধান রহিত হয়ে গিয়ে তাদের উপরে সালাত পড়ার বিধান প্রবর্তিত হয়। (খ) অথবা তাদের উপরে তিনি যে সালাত পড়েছেন তা নফল হিসাবে ছিল, ওয়াজিব বা সুন্নত হিসাবে ছিল না, (গ) অথবা তাদের সালাতের ব্যাপারে সুন্নত হল দাফনের সময় তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় না করা বরং (দাফনের পরে) সুদীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরে তাঁদের উপরে সালাত পড়া হবে। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর আমলা এই তিন সম্ভাবনা থেকে মুক্ত নয়, (একটি অবশ্যই হবে)।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ
অতএব আমরা আলোচ্য বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখতে পেয়েছি যে, সমস্ত মৃতের সালাতুল জানাযার বিধান হল তাদের দাফনের পূর্বে সালাত আদায় করা। তারপর আলিমগণ মৃতের উপরে দাফন করার পূর্বে অথবা পরে সালাতুল জানাযা নফল হিসাবে আদায় করা সম্পর্কে মতবিরোধ করেছেন। কেউ তা জায়িয বলেছেন, আবার কেউ কেউ মাকরূহ বলেছেন। এতে সুন্নতের বিষয়টি নফল অপেক্ষা অত্যন্ত গুরুত্ববাহী। যেহেতু তাঁরা তা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ, আর তা নফল হওয়ার ব্যাপারে বিরোধে লিপ্ত।
যদি উহুদের শহীদগণ এরূপ হয় যে, তাদের উপরে সালাতুল জানাযা নফল হিসাবে পড়া হয়েছে, তাহলে উক্ত নফল প্রমাণিত হওয়ার কারণে তাদের উপরে যে সময়ে নফল পড়া হয়েছে, সে সময়ের পূর্বে তাদের উপরে সালাতুল জানাযা সুন্নত হওয়া সাব্যস্ত হবে। কারণ প্রত্যেক নফলের জন্য ফরযের মধ্যে কোন উৎস থাকা বাঞ্ছনীয়! যদি [(উকবা ইবন আমর (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসে ব্যক্ত)] উক্ত সালাত নবী করীম (ﷺ)-এর পক্ষ থেকে নফল হিসাবে সাব্যস্ত হয়, তাহলে সমস্ত মৃতদের ন্যায় শহীদদের সালাতুল জানাযা সুন্নত হওয়াটা সাব্যস্ত হবে। আর যদি তাঁদের উপরে (আটবছর পর) তাঁর সালাত পড়াটা তার প্রথম কার্য (তথা শহীদদেরকে সালাত ব্যতীত দাফন করে দেয়া) রহিত হয়ে যাওয়ার কারণে ছিল। তাদের উপরে তাদের (আট বছর পর) এই সালাত আদায় করা আবশ্যক রূপে প্রমাণ করছে যে, তাঁদের (শহীদদের) উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করা সুন্নত; তাদের দাফনের সময়ে তাদের জন্য তার সালাতুল জানাযা পরিত্যাগ করার (বিধান) রহিত হয়ে গিয়েছে।
আর যদি (আট বছর পর) তাঁদের উপরে তাঁর সালাত পড়াটা এজন্য হয়ে থাকে যে, তাদের (শহীদদের) জন্য সালাত পড়ার সুন্নত তরীকাই হল তাদের জন্য এই (দীর্ঘ) সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর (কবরের নিকট গিয়ে) সালাত পড়া হবে। এবং এটি অন্য শহীদদের ব্যতীত একমাত্র উহুদের শহীদদের বৈশিষ্ট্য হয়ে থাকে, তাহলে এরূপ অবস্থায় এ সম্ভাবনা জরুরী যে, অপরাপর সমস্ত শহীদদের বিধানও উহুদের শহীদদের অনুরূপ হবে যে, এরূপ দীর্ঘ (সাত আট বছর) সময় অতিবাহিত হওয়ার পর (কবরের নিকট) সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে। আবার এরূপ সম্ভাবনাও আছে যে, উহ্নদের শহীদদের ব্যতীত অপরাপর সমস্ত শহীদদের সালাতুল জানাযা (দাফনের পূর্বে) তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করা হবে। (ওরূপ বিলম্ব করার বিধান প্রযোজ্য হবে না)। যেহেতু উহুদের শহীদদের সালাতের বিষয়ে সুন্নত তরীকা হল তাদের সালাতকে বিলম্বিত করা। তবে উল্লিখিত এই তিন (সম্ভাবনার) প্রত্যেকটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তাদের (শহীদদের) ব্যাপারে সুন্নত তরীকায় সালাতুল জানাযার বিধান সাব্যস্ত রয়েছে, চাই সেটি এক নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরে হোক, কিংবা দাফনের পূর্বে হোক।
তারপর আমাদের এই সময়ে বিরোধকারীদের মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু এটিই থাকছে যে, শহীদদের উপরে দাফনের পূর্বে সালাতুল জানাযার বিধান রয়েছে, না তা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করা। (উকবা রা)-এর এই হাদীসে যখন তাদের উপরে দাফনের পরে সালাতুল জানাযার বিধান সাব্যস্ত হয়েছে তাহলে দাফনের পূর্বে তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করার বিষয়টি উত্তম সাব্যস্ত হবে।
নবী করীম (ﷺ) থেকে উহুদ ব্যতীত অপরাপর শহীদদের ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি তাদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন। সেই সমস্ত (হাদীস) থেকে নিন্মোক্ত হাদীসটি অন্যতমঃ
2881 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ، قَالَ: ثنا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: ثنا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ يَوْمًا , فَصَلَّى عَلَى أَهْلِ أُحُدٍ , صَلَاتَهُ عَلَى الْمَيِّتِ» فَفِي حَدِيثِ عُقْبَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى عَلَى قَتْلَى أُحُدٍ , بَعْدَ مَقْتَلِهِمْ بِثَمَانِ سِنِينَ , فَلَا يَخْلُو صَلَاتُهُ عَلَيْهِمْ فِي ذَلِكَ الْوَقْتِ مِنْ أَحَدِ ثَلَاثَةِ مَعَانٍ: إِمَّا أَنْ يَكُونَ سُنَّتُهُمْ كَانَتْ أَنْ لَا يُصَلَّى عَلَيْهِمْ , ثُمَّ نُسِخَ ذَلِكَ الْحُكْمُ بَعْدُ , بِأَنْ يُصَلَّى عَلَيْهِمْ. أَوْ أَنْ تَكُونَ تِلْكَ الصَّلَاةُ الَّتِي صَلَّاهَا عَلَيْهِمْ تَطَوُّعًا , وَلَيْسَ لِلصَّلَاةِ عَلَيْهِمْ أَصْلٌ فِي السُّنَّةِ وَالْإِيجَابِ. أَوْ يَكُونَ مِنْ سُنَّتِهِمْ أَنْ لَا يُصَلَّى عَلَيْهِمْ بِحَضْرَةِ الدَّفْنِ , وَيُصَلَّى عَلَيْهِمْ بَعْدَ طُولِ هَذِهِ الْمُدَّةِ. لَا يَخْلُو فِعْلُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ هَذِهِ الْمَعَانِي الثَّلَاثَةِ. فَاعْتَبَرْنَا ذَلِكَ , فَوَجَدْنَا أَمْرَ الصَّلَاةِ عَلَى سَائِرِ الْمَوْتَى , هُوَ أَنْ يُصَلَّى عَلَيْهِمْ قَبْلَ دَفْنِهِمْ. ثُمَّ تَكَلَّمَ النَّاسُ فِي التَّطَوُّعِ عَلَيْهِمْ قَبْلَ أَنْ يُدْفَنُوا , وَبَعْدَمَا يُدْفَنُونَ , فَجَوَّزَ ذَلِكَ قَوْمٌ وَكَرِهَهُ آخَرُونَ. فَأَمْرُ السُّنَّةِ فِيهِ أَوْكَدُ مِنَ التَّطَوُّعِ لِاجْتِمَاعِهِمْ عَلَى السُّنَّةِ وَاخْتِلَافِهِمْ فِي التَّطَوُّعِ. فَإِنْ كَانَ قَتْلَى أُحُدٍ مِمَّنْ تَطَوَّعَ بِالصَّلَاةِ عَلَيْهِمْ كَانَ فِي ثُبُوتِ ذَلِكَ ثُبُوتُ السُّنَّةِ فِي الصَّلَاةِ عَلَيْهِمْ قَبْلَ أَوَانِ وَقْتِ التَّطَوُّعِ بِهَا عَلَيْهِمْ وَكُلُّ تَطَوُّعٍ , فَلَهُ أَصْلٌ فِي الْفَرْضِ. فَإِنْ ثَبَتَ أَنَّ تِلْكَ الصَّلَاةَ كَانَتْ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَطَوُّعًا تَطَوَّعَ بِهِ , فَلَا يَكُونُ ذَلِكَ إِلَّا وَالصَّلَاةُ عَلَيْهِمْ سُنَّةٌ , كَالصَّلَاةِ عَلَى غَيْرِهِمْ. وَإِنْ كَانَتْ صَلَاتُهُ عَلَيْهِمْ , لِعِلَّةِ نَسْخِ فِعْلِهِ الْأَوَّلِ , وَتَرْكِهِ الصَّلَاةَ عَلَيْهِمْ , فَإِنَّ صَلَاتَهُ هَذِهِ عَلَيْهِمْ , تُوجِبُ أَنَّ مِنْ سُنَّتِهِمُ الصَّلَاةَ عَلَيْهِمْ , وَأَنَّ تَرْكَهُ الصَّلَاةَ عَلَيْهِمْ عِنْدَ دَفْنِهِمْ مَنْسُوخٌ. وَإِنْ كَانَتْ صَلَاتُهُ عَلَيْهِمْ , إِنَّمَا كَانَتْ لِأَنَّ هَكَذَا سُنَّتَهُمْ , أَنْ لَا يُصَلَّى عَلَيْهِمْ إِلَّا بَعْدَ هَذِهِ الْمُدَّةِ , وَأَنَّهُمْ خُصُّوا بِذَلِكَ , فَقَدْ يُحْتَمَلُ أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ حُكْمُ سَائِرِ الشُّهَدَاءِ , أَنْ لَا يُصَلَّى عَلَيْهِمْ إِلَّا بَعْدَ مُضِيِّ مِثْلِ هَذِهِ الْمُدَّةِ. وَيَجُوزُ أَنْ يَكُونَ سَائِرُ الشُّهَدَاءِ يُعَجَّلُ الصَّلَاةُ عَلَيْهِمْ غَيْرَ شُهَدَاءِ أُحُدٍ , فَإِنَّ سُنَّتَهُمْ كَانَتْ تَأْخِيرَ الصَّلَاةِ عَلَيْهِمْ أَنَّهُ قَدْ ثَبَتَ بِكُلِّ هَذِهِ الْمَعَانِي أَنَّ مِنْ سُنَّتِهِمْ ثُبُوتَ الصَّلَاةِ عَلَيْهِمْ إِمَّا بَعْدَ حِينٍ وَإِمَّا قَبْلَ الدَّفْنِ. ثُمَّ كَانَ الْكَلَامُ بَيْنَ الْمُخْتَلِفِينَ فِي وَقْتِنَا هَذَا , إِنَّمَا هُوَ فِي إِثْبَاتِ الصَّلَاةِ عَلَيْهِمْ قَبْلَ الدَّفْنِ , أَوْ فِي تَرْكِهَا أَلْبَتَّةَ. فَلَمَّا ثَبَتَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ , الصَّلَاةُ عَلَيْهِمْ بَعْدَ الدَّفْنِ كَانَتِ الصَّلَاةُ عَلَيْهِمْ قَبْلَ الدَّفْنِ أَحْرَى وَأَوْلَى. ثُمَّ قَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَيْرِ شُهَدَاءِ أُحُدٍ , أَنَّهُ صَلَّى عَلَيْهِمْ
فَمِنْ ذَلِكَ
فَمِنْ ذَلِكَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৮২
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৮২। ইবন আবী দাউদ (রাহঃ) ..... শাদ্দাদ ইব্নুল হা’দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, জনৈক বেদুঈন নবী (ﷺ)-এর দরবারে এসে ঈমান গ্রহণ করে তাঁর অনুসরণ (শুরু) করলেন। তিনি বললেন, আমি আপনার সাথে হিজরত করে মুহাজির হিসাবে জীবন অতিবাহিত করব। নবী করীম (ﷺ) (তার আবেদন গ্রহণ করে) তার কোন এক সাহাবীর সাথে তাকে ভ্রাতৃত্ব-বন্ধনে আব্দ্ধ করে দিলেন। তারপর কোন এক জিহাদে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অনেক গনীমতের সম্পদ লাভ করলেন। তিনি তা বন্টন করলেন এবং তাঁর জন্যও বন্টন করলেন। তাঁর জন্য বন্টনকৃত সম্পদ তাঁর সাথীদের কাছে দিয়ে দিলেন। সেই (বেদুঈন) তাদের উট চরাতে গিয়েছিলেন। যখন আসল তখন তারা তাকে তা দিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, এগুলো কি? তাঁরা বললেন, (গনীমাতের মাল) বন্টন করা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তা তোমার জন্য বন্টন করেছেন। তিনি তা গ্রহণ করলেন এবং তা নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট নিয়ে এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ (ﷺ) এগুলো কি? তিনি বললেন, আমি তোমার জন্য তা বন্টন করে দিয়েছে। তিনি বললেন, এর জন্য তো আমি আপনার অনুসরণ করিনি। বরং নিজ কণ্ঠনালীর দিকে ইশারা করে বললেন, এই স্থানে তীরের আঘাতে শহীদ হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আপনার অনুসরণ করেছি। তিনি বললেন, তুমি যদি আল্লাহকে সত্য করে দেখাও তাহলে তিনিও তোমাকে সত্য করে দেখাবেন। তারপর তাঁরা অল্প সময় অবস্থান করে শক্রর মোকাবেলায় অবতীর্ণ হলেন, এরপর তাঁকে নবী করীম (ﷺ) এর নিকট এ অবস্থায় বহন করে নিয়ে আসা হল যে যেখানে তিনি ইশারা করেছিলেন সেখানে তকে তীর আঘাত হেনেছিল। নবী (ﷺ) বললেন, এ কি সেই ব্যক্তি? তাঁরা বললেন, জ্বী, হ্যাঁ! তিনি বললেন, সে আল্লাহকে সত্য করে দেখিয়েছে, তাই আল্লাহও তাকে সত্য করে দেখিয়েছেন। এরপর নবী করীম (ﷺ) তাকে নিজের জুব্বায় কাফন পরালেন, তারপর সম্মুখে রেখে তার সালাতুল জানাযা আদায় করলেন। তাঁর জন্য তিনি যে দু'আ করেন তা ছিল এরূপঃ “হে আল্লাহ! নিশ্চয় এ হচ্ছে তোমার বান্দা, তোমার রাস্তায় মুহাজির হয়ে বের হয়েছে। তারপর শহীদ হিসাবে নিহত হয়েছে। আমি তার সাক্ষ্যদাতা”।
বস্তুত এই হাদীসে শহীদদের উপরে সালাতুল জানাযার প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে, যাদেরকে গোসল দেয়া হয় না। যেহেতু এই হাদীসে নবী করীম (ﷺ) উক্ত বেদুঈন ব্যক্তিকে গোসল না দিয়ে সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন। অতএব এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল যে, আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের ময়দানে নিহত শহীদের বিধান অনুরূপ যে, তার সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে এবং গোসল দেয়া হবে না। এটিই হচ্ছে রিওয়ায়াতের দিক থেকে এই অনুচ্ছেদের হাদীসসমূহের অর্থাবলীর সঠিক মর্ম নিরূপণের যথার্থ পন্থা।
তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল
এ বিষয়ে যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ হচ্ছে এই, আমরা লক্ষ্য করছি যে, স্বাভাবিক মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির গোসল দেয়া হয় এবং তার উপরে সালাতুল জানাযাও পড়া হয়। আর তার ব্যাপারে এটিও লক্ষ্য করেছি যে, যদি তাকে গোসল না দিয়ে সালাত পড়া হয় তাহলে সে সেই ব্যক্তির বিধানের অন্তর্ভুক্ত হবে, যার সালাতুল জানাযা আদায় করা হয়নি। সুতরাং তার সালাত গোসলের অধীন করা হয়েছে, যা সালাতের পূর্ববর্তী হবে। যদি তাকে গোসল ব্যতীত সালাত পড়া হয় তাহলে তার সালাতুল জানাযা জায়িয হবে না।
তারপর আমরা শহীদের ব্যাপারটি দেখছি যে, তাকে গোসল দেয়া থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অতএব যুক্তির দাবি হচ্ছে, সেই বস্তু (সালাত) থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হবে, যা গোসলের বিধানের অধীন। বস্তুত এতে শহীদের উপরে সালাতুল জানাযা পরিহার করার বিষয়টি অপরিহার্য হল। তবে সালাত পরিহার করার বিষয়ে (বিশেষ) কারণ নিহিত রয়েছে। আর তা হচ্ছে যে, আমরা লক্ষ্য করেছি, শহীদ ব্যতীত অপরাপর (মৃত)দেরকে পবিত্র করার নিমিত্ত গোসল দেয়া হয় এবং তাকে গোসল দেয়ার পূর্বে নাপাকের বিধানের অন্তর্ভুক্ত (অপবিত্র থাকে) যে অবস্থায় তার সালাতুল জানাযা এবং দাফন কার্য সঠিক হবে না, যতক্ষণ না তাকে গোসল দ্বারা উক্ত (নাপাক) অবস্থা থেকে পরিবর্তিত করা হয়। আর শহীদের ব্যাপারটি আমরা দেখছি যে, গোসলের পূর্বে তাকে উক্ত নিজস্ব অবস্থায় দাফন করতে কোনরূপ অসুবিধা নেই এবং সে অপরাপর সেই সমস্ত মৃতদের বিধানের অন্তর্ভূক্ত, যাদেরকে গোসল দেয়া হয়েছে।
সুতরাং ব্যক্তির দাবি হচ্ছে যে, গোসল ব্যতীত (শহীদদের) সালাতুল জানাযা আদায় করা এরূপ হবে যেমনিভাবে অপরাপর মৃতদেরকে গোসল দিয়ে সালাতুল জানাযা আদায় করার বিধান রয়েছে। এটিই হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ, হাদীসসমূহ যার সাক্ষ্য বহন করছে এবং এটিই ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
বস্তুত এই হাদীসে শহীদদের উপরে সালাতুল জানাযার প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে, যাদেরকে গোসল দেয়া হয় না। যেহেতু এই হাদীসে নবী করীম (ﷺ) উক্ত বেদুঈন ব্যক্তিকে গোসল না দিয়ে সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন। অতএব এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল যে, আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের ময়দানে নিহত শহীদের বিধান অনুরূপ যে, তার সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে এবং গোসল দেয়া হবে না। এটিই হচ্ছে রিওয়ায়াতের দিক থেকে এই অনুচ্ছেদের হাদীসসমূহের অর্থাবলীর সঠিক মর্ম নিরূপণের যথার্থ পন্থা।
তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল
এ বিষয়ে যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ হচ্ছে এই, আমরা লক্ষ্য করছি যে, স্বাভাবিক মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির গোসল দেয়া হয় এবং তার উপরে সালাতুল জানাযাও পড়া হয়। আর তার ব্যাপারে এটিও লক্ষ্য করেছি যে, যদি তাকে গোসল না দিয়ে সালাত পড়া হয় তাহলে সে সেই ব্যক্তির বিধানের অন্তর্ভুক্ত হবে, যার সালাতুল জানাযা আদায় করা হয়নি। সুতরাং তার সালাত গোসলের অধীন করা হয়েছে, যা সালাতের পূর্ববর্তী হবে। যদি তাকে গোসল ব্যতীত সালাত পড়া হয় তাহলে তার সালাতুল জানাযা জায়িয হবে না।
তারপর আমরা শহীদের ব্যাপারটি দেখছি যে, তাকে গোসল দেয়া থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অতএব যুক্তির দাবি হচ্ছে, সেই বস্তু (সালাত) থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হবে, যা গোসলের বিধানের অধীন। বস্তুত এতে শহীদের উপরে সালাতুল জানাযা পরিহার করার বিষয়টি অপরিহার্য হল। তবে সালাত পরিহার করার বিষয়ে (বিশেষ) কারণ নিহিত রয়েছে। আর তা হচ্ছে যে, আমরা লক্ষ্য করেছি, শহীদ ব্যতীত অপরাপর (মৃত)দেরকে পবিত্র করার নিমিত্ত গোসল দেয়া হয় এবং তাকে গোসল দেয়ার পূর্বে নাপাকের বিধানের অন্তর্ভুক্ত (অপবিত্র থাকে) যে অবস্থায় তার সালাতুল জানাযা এবং দাফন কার্য সঠিক হবে না, যতক্ষণ না তাকে গোসল দ্বারা উক্ত (নাপাক) অবস্থা থেকে পরিবর্তিত করা হয়। আর শহীদের ব্যাপারটি আমরা দেখছি যে, গোসলের পূর্বে তাকে উক্ত নিজস্ব অবস্থায় দাফন করতে কোনরূপ অসুবিধা নেই এবং সে অপরাপর সেই সমস্ত মৃতদের বিধানের অন্তর্ভূক্ত, যাদেরকে গোসল দেয়া হয়েছে।
সুতরাং ব্যক্তির দাবি হচ্ছে যে, গোসল ব্যতীত (শহীদদের) সালাতুল জানাযা আদায় করা এরূপ হবে যেমনিভাবে অপরাপর মৃতদেরকে গোসল দিয়ে সালাতুল জানাযা আদায় করার বিধান রয়েছে। এটিই হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ, হাদীসসমূহ যার সাক্ষ্য বহন করছে এবং এটিই ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
2882 - مَا حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ , قَالَ: ثنا نُعَيْمُ بْنُ حَمَّادٍ , قَالَ: أنا عَبْدُ اللهِ بْنُ الْمُبَارَكِ , قَالَ: أنا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي عِكْرِمَةُ بْنُ خَالِدٍ أَنَّ ابْنَ أَبِي عَمَّارٍ , أَخْبَرَهُ , عَنْ شَدَّادِ بْنِ الْهَادِ: أَنَّ رَجُلًا مِنَ الْأَعْرَابِ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَآمَنَ بِهِ وَاتَّبَعَهُ وَقَالَ: أُهَاجِرُ مَعَكَ فَأَوْصَى بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْضَ أَصْحَابِهِ. فَلَمَّا كَانَتْ غَزْوَةٌ , غَنِمَ فِيهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشْيَاءَ , فَقَسَمَ وَقَسَمَ لَهُ فَأَعْطَى أَصْحَابَهُ مَا قَسَمَ لَهُ وَكَانَ يَرَى ظَهْرَهُمْ. فَلَمَّا جَاءَ دَفَعُوهُ إِلَيْهِ فَقَالَ: مَا هَذَا؟ قَالُوا: قِسْمٌ قَسَمَهُ لَكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَأَخَذَهُ فَجَاءَ بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ , مَا هَذَا؟ قَالَ: «قَسَمْتُهُ لَكَ» . قَالَ: مَا عَلَى هَذَا اتَّبَعْتُكَ , وَلَكِنِّي اتَّبَعْتُكَ أَنْ أُرْمَى هَاهُنَا وَأَشَارَ إِلَى حَلْقِهِ بِسَهْمٍ فَأَمُوتَ وَأَدْخُلَ الْجَنَّةَ. فَقَالَ: «إِنْ تَصْدُقِ اللهَ يَصْدُقْكَ» فَلَبِثُوا قَلِيلًا , ثُمَّ نَهَضُوا إِلَى الْعَدُوِّ , فَأُتِيَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحْمَلُ , قَدْ أَصَابَهُ سَهْمٌ حَيْثُ أَشَارَ. فَقَالَ النَّبِيُّ: «أَهُوَ هُوَ؟» قَالُوا: نَعَمْ قَالَ: «صَدَقَ اللهَ فَصَدَقَهُ» وَكَفَّنَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي جُبَّةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , ثُمَّ قَدَّمَهُ فَصَلَّى عَلَيْهِ. فَكَانَ مِمَّا ظَهَرَ مِنْ صَلَاتِهِ عَلَيْهِ: «اللهُمَّ إِنَّ هَذَا عَبْدُكَ , خَرَجَ مُهَاجِرًا فِي سَبِيلِكَ , فَقُتِلَ شَهِيدًا , أَنَا شَهِيدٌ عَلَيْهِ» فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ , إِثْبَاتُ الصَّلَاةِ عَلَى الشُّهَدَاءِ الَّذِينَ لَا يُغَسَّلُونَ , لِأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ , لَمْ يُغَسِّلِ الرَّجُلَ وَصَلَّى عَلَيْهِ. فَثَبَتَ بِهَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ كَذَلِكَ حُكْمَ الشَّهِيدِ الْمَقْتُولِ فِي سَبِيلِ اللهِ فِي الْمَعْرَكَةِ , يُصَلَّى عَلَيْهِ وَلَا يُغَسَّلُ. فَهَذَا حُكْمُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ تَصْحِيحِ مَعَانِي الْآثَارِ. وَأَمَّا النَّظَرُ فِي ذَلِكَ , فَإِنَّا رَأَيْنَا الْمَيِّتَ حَتْفَ أَنْفِهِ , يُغَسَّلُ وَيُصَلَّى عَلَيْهِ , وَرَأَيْنَاهُ إِذَا صُلِّيَ عَلَيْهِ وَلَمْ يُغَسَّلْ , كَانَ فِي حُكْمِ مَنْ لَمْ يُصَلَّ عَلَيْهِ. فَكَانَتِ الصَّلَاةُ عَلَيْهِ مُضْمَنَةً بِالْغُسْلِ الَّذِي يَتَقَدَّمُهَا. فَإِنْ كَانَ الْغُسْلُ قَدْ كَانَ , جَازَتِ الصَّلَاةُ عَلَيْهِ , وَإِنْ لَمْ يَكُنْ غُسْلٌ , لَمْ تَجُزِ الصَّلَاةُ عَلَيْهِ. ثُمَّ رَأَيْنَا الشَّهِيدَ قَدْ سَقَطَ أَنْ يُغَسَّلَ , فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَسْقُطَ مَا هُوَ مُضْمَنٌ بِحُكْمِ الْغُسْلِ. فَفِي هَذَا مَا يُوجِبُ تَرْكَ الصَّلَاةِ عَلَيْهِ إِلَّا أَنَّ فِي ذَلِكَ مَعْنًى , وَهُوَ أَنَّا رَأَيْنَا غَيْرَ الشَّهِيدِ يُغَسَّلُ , لِيُطَهَّرَ , وَهُوَ قَبْلَ أَنْ يُغَسَّلَ فِي حُكْمِ غَيْرِ الطَّاهِرِ , لَا يَنْبَغِي الصَّلَاةُ عَلَيْهِ وَلَا دَفْنُهُ عَلَى حَالِهِ تِلْكَ , حَتَّى يُنْقَلَ عَنْهَا بِالْغُسْلِ. ثُمَّ رَأَيْنَا الشَّهِيدَ لَا بَأْسَ بِدَفْنِهِ عَلَى حَالِهِ تِلْكَ قَبْلَ أَنْ يُغَسَّلَ , وَهُوَ فِي حُكْمِ سَائِرِ الْمَوْتَى الَّذِينَ قَدْ غُسِّلُوا. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ الصَّلَاةُ عَلَيْهِمْ فِي حُكْمِ سَائِرِ الْمَوْتَى الَّذِينَ قَدْ غُسِّلُوا. هَذَا هُوَ النَّظَرُ فِي هَذَا الْبَابِ مَعَ مَا قَدْ شَهِدَ لَهُ مِنَ الْآثَارِ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:২৮৮৩
শহীদদের উপর সালাতুল জানাযা প্রসঙ্গে
২৮৮৩। ইবন আবী দাউদ (রাহঃ) ….. মাকহুল (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, উবাদা ইবন আওফা আননুমায়রী (রাযিঃ)-কে শহীদদের উপরে সালাতুল জানাযা আদায় করা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে উবাদা (রাযিঃ) বললেন, হ্যাঁ, (তাদের উপরে সালাত পড়া হবে)।
বস্তুত এই উবাদা ইবন আওফা (রাযিঃ) এমনটি বলছেন এবং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ইন্তিকালের পরে তাঁর সাহাবীদের বড় বড় যুদ্ধাভিযানগুলো সিরিয়া অভিমুখে সংঘটিত হয়েছিল। এ কারণে সিরিয়াবাসীদের উপরে গোপন ছিল না যে, তাঁরা তাঁদের শহীদদের গোসল, সালাতুল জানাযা ইত্যাদির ব্যাপারে কী করতেন।
বস্তুত এই উবাদা ইবন আওফা (রাযিঃ) এমনটি বলছেন এবং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ইন্তিকালের পরে তাঁর সাহাবীদের বড় বড় যুদ্ধাভিযানগুলো সিরিয়া অভিমুখে সংঘটিত হয়েছিল। এ কারণে সিরিয়াবাসীদের উপরে গোপন ছিল না যে, তাঁরা তাঁদের শহীদদের গোসল, সালাতুল জানাযা ইত্যাদির ব্যাপারে কী করতেন।
2883 - وَقَدْ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ , قَالَ: ثنا الْخَطَّابُ بْنُ عُثْمَانَ الْفَوْزِيُّ , قَالَ: ثنا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ: سَمِعْتُ مَكْحُولًا يَسْأَلُ عُبَادَةَ بْنِ أَوْفَى النُّمَيْرِيَّ عَنِ الشُّهَدَاءِ يُصَلَّى عَلَيْهِمْ؟ , فَقَالَ عُبَادَةَ: «نَعَمْ» فَهَذَا عُبَادَةَ بْنُ أَوْفَى يَقُولُ هَذَا وَمَغَازِي أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا كَانَ جُلُّهَا هُنَاكَ نَحْوَ الشَّامِ , فَلَمْ يَكُنْ يَخْفَى عَلَى أَهْلِهِ مَا كَانُوا يَصْنَعُونَ بِشُهَدَائِهِمْ مِنَ الْغُسْلِ وَالصَّلَاةِ وَغَيْرِ ذَلِكَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান