শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام

১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৬০৬
১৯- যার নিকট শুধু খেজুরের নাবীয (ভিজানো পানি) রয়েছে সে এর দ্বারা উযূ করবে, না তায়াম্মুম করবে
৬০৬। রবী'উল মুয়াযযিন (রাহঃ)..... ইবন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, উন মাসউদ (রাযিঃ) জিন-রাতে (যে রাতে জিনদের দ্বীনের দাওয়াত দেন) রাসূলুল্লাহ্ = -এর সঙ্গে গিয়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে ইবন মাসউদ, তোমার নিকট পানি আছে? তিনি বললেন, আমার পাত্রে শুধু নাবীয (খেজুর ভিজানো পানি) আছে। রাসূলুল্লাহ্ বললেন, আমাকে ঢেলে দাও । তারপর তিনি এর দ্বারা উযূ করলেন এবং বললেনঃ (এটা) পানীয় এবং পবিত্রকারী ।
بَابُ الرَّجُلِ لَا يَجِدُ إِلَّا نَبِيذَ التَّمْرِ , هَلْ يَتَوَضَّأُ بِهِ , أَوْ يَتَيَمَّمُ؟
606 - حَدَّثَنَا رَبِيعٌ الْمُؤَذِّنُ قَالَ: ثنا أَسَدٌ قَالَ: ثنا ابْنُ لَهِيعَةَ قَالَ: ثنا قَيْسُ بْنُ الْحَجَّاجِ , عَنْ حَنَشٍ الصَّنْعَانِيِّ , عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: أَنَّ ابْنَ مَسْعُودٍ خَرَجَ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةَ الْجِنِّ , فَسَأَلَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَمَعَكَ يَا ابْنَ مَسْعُودٍ مَاءٌ؟ قَالَ: مَعِي نَبِيذٌ فِي إِدَاوَتِي فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَصْبِبْ عَلَيَّ» فَتَوَضَّأَ بِهِ , وَقَالَ: «شَرَابٌ وَطَهُورٌ»
হাদীস নং:৬০৭
যার নিকট শুধু খেজুরের নাবীয (ভিজানো পানি) রয়েছে সে এর দ্বারা উযূ করবে, না তায়াম্মুম করবে
৬০৭। আবু বাকরা (রাহঃ).... উমার (রাযিঃ) এর আযাদকৃত গোলাম আবু রাফি' (রাহঃ) আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি জিন-রাতে রাসূলুল্লাহ্ -এর সঙ্গে ছিলেন। একপর্যায়ে রাসূলুল্লাহ্ পানির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন, যাতে এর দ্বারা উযূ করতে পারেন। তাঁর সঙ্গে শুধুমাত্র (খেজুরের) নাবীয ছিল রাসূলুল্লাহ্ বললেনঃ খেজুর পবিত্র, পানিও পাক। তারপর রাসূলুল্লাহ্ তা দিয়ে উযূ করলেন।

ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর ভাষ্য

ইমাম আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেন: একদল আলিম এ মত গ্রহণ করেছেন যে, কোন ব্যক্তি যদি সফরে খেজুরের নাবীয (ভিজানো পানি) ব্যতীত কিছু না পায় তাহলে সে এর দ্বারা উযূ করবে। তাঁরা এই বিষয়ে এই সমস্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন। এ মত যারা পোষণ করেছেন, ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) তাঁদের অন্যতম।
পক্ষান্তরে এ বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাদের বিরোধিতা করে বলেছেন : খেজুরের নাবীয দ্বারা উযূ করবে না। কোন ব্যক্তি যদি অন্য কিছু না পায় তাহলে সে তায়াম্মুম করবে, এর দ্বারা উযূ করবেনা। এমত পোষণকারীদের মধ্যে ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) অন্যতম।
প্রথমোক্ত মত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দলের প্রমাণ : আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাহঃ) এর হাদীস যা আমরা অনুচ্ছেদের শুরুভাগে তাঁরই সূত্রে এরূপ যে পদ্ধতিতে উল্লেখ করেছি তা তাদের মতে প্রমাণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না, যারা খবরে ওয়াহিদকে গ্রহণ করেন। যেহেতু রাবী সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন নি। মুতাওয়াতির পদ্ধতিতে বর্ণিত রিওয়ায়াত হলে তা গ্রহণযোগ্য হত। সুতরাং এই রিওয়ায়াত মুতাবিক আমল করা উভয় দলের নিকট বাধ্যতামূলক নয়। উপরন্তু আবু উবায়দা ইন আব্দিল্লাহ্ (রাহঃ) থেকে যা বর্ণিত আছে, সে অনুযায়ী বুঝা যাচ্ছে যে, উক্ত রাতে আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ এর সঙ্গে ছিলেন না।
607 - حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ، قَالَ: ثنا أَبُو عُمَرَ الْحَوْضِيُّ، قَالَ: ثنا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، مَوْلَى عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةَ الْجِنِّ وَأَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ احْتَاجَ إِلَى مَاءٍ يَتَوَضَّأُ بِهِ وَلَمْ يَكُنْ مَعَهُ إِلَّا النَّبِيذُ , فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَمْرَةٌ طَيِّبَةٌ , وَمَاءٌ طَهُورٌ» فَتَوَضَّأَ بِهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى أَنَّ مَنْ لَمْ يَجِدْ إِلَّا نَبِيذَ التَّمْرِ فِي سَفَرِهِ تَوَضَّأَ بِهِ , وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ بِهَذِهِ الْآثَارِ. وَمِمَّنْ ذَهَبَ إِلَى ذَلِكَ أَبُو حَنِيفَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَقَالُوا: لَا يُتَوَضَّأُ بِنَبِيذِ التَّمْرِ , وَمَنْ لَمْ يَجِدْ غَيْرَهُ , تَيَمَّمَ , وَلَا يَتَوَضَّأُ بِهِ. وَمِمَّنْ ذَهَبَ إِلَى هَذَا الْقَوْلِ أَبُو يُوسُفَ وَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ لِأَهْلِ هَذَا الْقَوْلِ عَلَى أَهْلِ الْقَوْلِ الْأَوَّلِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ إِنَّمَا رُوِيَ مَا ذَكَرْنَا عَنْهُ فِي أَوَّلِ هَذَا الْبَابِ , مِنَ الطُّرُقِ الَّتِي وَصَفْنَا , وَلَيْسَتْ هَذِهِ الطُّرُقُ , طُرُقًا تَقُومُ بِهَا الْحُجَّةُ عِنْدَ مَنْ يَقْبَلُ خَبَرَ الْوَاحِدِ , وَلَمْ يَجِئْ , أَيْضًا الْمَجِيءَ الظَّاهِرَ. فَيَجِبُ عَلَى مَنْ يَسْتَعْمِلُ الْخَبَرَ إِذَا تَوَاتَرَتِ الرِّوَايَاتُ بِهِ. فَهَذَا مِمَّا لَا يَجِبُ اسْتِعْمَالُهُ , لِمَا ذَكَرْنَا , عَلَى مَذْهَبِ الْفَرِيقَيْنِ الَّذِينَ ذَكَرْنَا. وَلَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللهِ , مَا يَدُلُّ عَلَى أَنَّ عَبْدَ اللهِ , لَمْ يَكُنْ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَتئِذٍ
হাদীস নং:৬০৮
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৯
যার নিকট শুধু খেজুরের নাবীয (ভিজানো পানি) রয়েছে সে এর দ্বারা উযূ করবে, না তায়াম্মুম করবে
৬০৮-৬০৯। ইবন আবী দাউদ (রাহঃ).... আমর ইব্‌ন মুররা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছে, আমি আবু উবায়দা (রাহঃ) কে বললাম, আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাযিঃ) জিন-রাতে রাসূলুল্লাহ্ -এর সঙ্গে ছিলেন? তিনি বললেন, না (ছিলেন না)।

ইব্‌ন মারযূক (রাহঃ).... ওয়াহব (রাহঃ) শু'বা (রাহঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।

বিশ্লেষণ

যখন আবু উবায়দা (রাহঃ) তাঁর পিতা সেই রাতে রাসূলুল্লাহ্ -এর সঙ্গী হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন, আর এটা এরূপ বিষয়, যা এরূপ ব্যক্তিত্বের (পুত্রের) কাছে গোপন থাকতে পারে না। সুতরাং এ বিষয়ে অন্যদের রিওয়ায়াত বাতিল হয়ে গেল, যাতে বলা হয়েছে যে, নবী রাসূলুল্লাহ সেই রাতে উক্ত আমল করেছেন। যেহেতু তিনি (আব্দুল্লাহ্ রা) তাঁর সঙ্গে ছিলেন। যদি কোন প্রশ্ন উত্থাপনকারী প্রশ্ন উত্থান করে বলে যে, প্রথমোক্ত রিওয়ায়াতসমূহ এটা অপেক্ষা উত্তম। যেহেতু তা হচ্ছে 'মুত্তাসিল' এবং এটা হচ্ছে 'মুনকাতি'। কারণ আবু উবায়দা (রাহঃ) তাঁর পিতা থেকে কিছু শুনেন নি।
তাকে উত্তরে বলা হবেঃ বস্তুত আমরা আবু উবায়দা (রাহঃ)-এর বক্তব্য দ্বারা এদিক দিয়ে প্রমাণ পেশ করিনি। বরং আমরা এর দ্বারা এজন্য প্রমাণ পেশ করেছি যে, তাঁর মত এরূপ ব্যক্তিত্ব যিনি জ্ঞানের দিক দিয়ে অগ্রণী, আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ)-এর সঙ্গে তাঁর নৈকট্য, এবং তাঁর সঙ্গে তিনি বিশেষ মেলামেশার সম্পর্ক রাখতেন। তাঁর কাছে এরূপ বিষয় গোপন থাকতে পারে না। আমরা এদিক দিয়ে তাঁর থেকে প্রমাণ পেশ করেছি, সেই দিক দিয়ে নয়, যেভাবে তোমরা প্রশ্ন উত্থান করেছ।
আমরা আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে তাঁর বক্তব্য মুত্তাসিল সনদের সাথেও রিওয়ায়াত করেছি, যা আবু উবায়দা (রাহঃ)-এর বক্তব্যের অনুকূলে রয়েছে।
608 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَ: ثنا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، قَالَ: قُلْتُ لِأَبِي عُبَيْدَةَ: " أَكَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْعُودٍ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةَ الْجِنِّ فَقَالَ: لَا "

609 - حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ، قَالَ: ثنا وَهْبٌ، عَنْ شُعْبَةَ، فَذَكَرَ مِثْلَهُ بِإِسْنَادِهِ فَلَمَّا انْتَفَى عِنْدَ أَبِي عُبَيْدَةَ أَنَّ أَبَاهُ كَانَ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَتئِذٍ , وَهَذَا أَمْرٌ لَا يَخْفَى مِثْلُهُ عَلَى مِثْلِهِ , بَطَلَ بِذَلِكَ مَا رَوَاهُ غَيْرُهُ مِمَّا يُخْبِرُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَلَ لَيْلَتئِذٍ , إِذْ كَانَ مَعَهُ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: الْآثَارُ الْأُوَلُ أَوْلَى مِنْ هَذَا لِأَنَّهَا مُتَّصِلَةٌ , وَهَذَا مُنْقَطِعٌ لِأَنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ , لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أَبِيهِ شَيْئًا. قِيلَ لَهُ: لَيْسَ مِنْ هَذِهِ الْجِهَةِ احْتَجَجْنَا بِكَلَامِ أَبِي عُبَيْدَةَ , إِنَّمَا احْتَجَجْنَا بِهِ لِأَنَّ مِثْلَهُ , عَلَى تَقَدُّمِهِ فِي الْعِلْمِ , وَمَوْضِعِهِ مِنْ عَبْدِ اللهِ , وَخُلْطَتِهِ لِخَاصَّتِهِ مِنْ بَعْدِهِ لَا يَخْفَى عَلَيْهِ مِثْلُ هَذَا مِنْ أُمُورِهِ. فَجَعَلْنَا قَوْلَهُ ذَلِكَ حُجَّةً فِيمَا ذَكَرْنَاهُ , لَا مِنَ الطَّرِيقِ الَّذِي وُضِعَتْ. وَقَدْ رَوَيْنَا عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ مِنْ كَلَامِهِ بِالْإِسْنَادِ الْمُتَّصِلِ , مَا قَدْ وَافَقَ مَا قَالَ: أَبُو عُبَيْدَةَ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৬১০
যার নিকট শুধু খেজুরের নাবীয (ভিজানো পানি) রয়েছে সে এর দ্বারা উযূ করবে, না তায়াম্মুম করবে
৬১০। ইব্‌ন আবী দাউদ (রাহঃ)...... আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন: আমি জিন-রাতে নবী (ﷺ) -এর সঙ্গে ছিলাম না। অথচ আমার আকাঙ্খা ছিল যে, আমি যদি তাঁর সঙ্গে থাকতাম!
610 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، قَالَ: ثنا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي مَعْشَرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: «لَمْ أَكُنْ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةَ الْجِنِّ , وَلَوَدِدْتُ أَنِّي كُنْتُ مَعَهُ»
হাদীস নং:৬১১
যার নিকট শুধু খেজুরের নাবীয (ভিজানো পানি) রয়েছে সে এর দ্বারা উযূ করবে, না তায়াম্মুম করবে
৬১১। রবীউল মুয়াযিন (রাহঃ)...... আলকামা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি ইবন মাসউদ (রাযিঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছি যে, জিন-রাতে নবী -এর সঙ্গে কেউ ছিল? তিনি বললেন : আমাদের থেকে কেউ তাঁর সঙ্গে ছিলেন না। কিন্তু আমরা এক রাতে তাঁকে পাচ্ছিলাম না। এতে আমরা বললাম, সম্ভবত তাঁকে কেউ উড়িয়ে নিয়ে গেছে অথবা তাঁকে কোন ধোঁকা দেয়া হয়েছে। তারপর আমরা তার খোঁজে গিরিপথে এবং উপত্যাকায় ছড়িয়ে পড়লাম এবং আমরা নিতান্ত খারাপ রাত অতিবাহিত করলাম। লোকেরা রাতব্যাপী বলতে লাগল যে, তাকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিংবা তাঁকে ধোঁকা দেয়া হয়েছে। (এরপর তিনি ফিরে আসার পর) বললেন : আমার নিকট জিনদের দূত এসেছিল, আমি তাদেরকে কুরআন শিক্ষা দেয়ার জন্য গিয়েছিলাম। তিনি আমাদেরকে তাদের নিদর্শনাদিও দেখিয়ে দেন।

ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর বিশ্লেষণ

বস্তুত এই আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাযিঃ) জিনরাতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর সঙ্গে থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। যদি এ বিষয়টিকে সনদের বিশুদ্ধ পদ্ধতিতে গ্রহণ করা হয়, তাহলে এই হাদীসটি যাতে অস্বীকৃতি রয়েছে-এর সূত্র ও মূল পাঠের (মতনের) সুদৃঢ়তা এবং রাবীদের সাবাত (আদালাত ও স্মৃতিশক্তি)-এর কারণে সর্বোত্তমরূপে বিবেচিত। আর যদি যুক্তির নিরিখে লক্ষ্য করা হয়, তাহলে আমরা এক ঐকমত্যের নীতি দেখছি যে, কিশমিশের নাবীয এবং সিরকা দ্বারা উযূ করা যাবে না। সুতরাং এরই ভিত্তিতে যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, খেজুরের নাবীয (এর বিধান) ও অনুরূপ হবে।
আলিমদের ঐকমত্য যে, পানি বিদ্যমান থাকা অবস্থায় খেজুরের নাবীয দ্বারা উযূ করা যাবে না। যেহেতু তা পানি নয়। সুতরাং যখন পানি থাকা অবস্থায় তা পানির বিধান থেকে বহির্ভূত, তাহলে পানি না থাকা অবস্থায়ও অনুরূপ হবে। আর ইবন মাসউদ (রাযিঃ)-এর হাদীস, যাতে খেজুরের নাবীয দ্বারা উযূ করার বিষয়টি উল্লিখিত আছে; তাতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ তা দ্বারা মুসাফির অবস্থায় নয় বরং মুকীম অবস্থায় উযূ করেছেন। যেহেতু তিনি মক্কা থেকে তাদের (জিনদেরকে দ্বীনের দাওয়াতের) উদ্দেশ্যে বের হয়ে গিয়েছিলেন। তাই বলা হয়েছে যে, তিনি সেই স্থানে খেজুরের নাবীয দ্বারা উযূ করেছেন, যা কিনা মক্কায় অবস্থানকারী ব্যক্তির বিধানের অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু তিনি সালাত পূর্ণ আদায় করেছেন। সেখানে তাঁর নাবীয ব্যবহার করা মক্কায় ব্যবহার করার বিধানের অনুরূপ। যদি এ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে, নাবীয সেই সমস্ত বস্তু থেকে, যা দিয়ে শহর এবং উপত্যকায় উযূ করা জায়িয, তাহলে সাব্যস্ত হবে যে, পানি বিদ্যমান ও অবিদ্যমান উভয় অবস্থায় এর দ্বারা উযূ করা জায়িয হবে।
তাঁরা (ফকীহগণ) যখন এটা পরিত্যাগ করার উপর ঐকমত্য পোষণ করেছেন এবং এর বিপরীতের উপর আমল রয়েছে। তাই তাঁরা এর দ্বারা শহরে উযূ করা জায়িয সাব্যস্ত করেন নি এবং না সেই স্থানে যা শহরের বিধানের অন্তর্ভুক্ত। তাই এতে তাদের সেই হাদীস পরিত্যাগ করা সাব্যস্ত হয়ে গেল এবং উক্ত নাবীযের বিধান অপরাপর পানি সমূহের বিধান থেকে বের হয়ে গেল। এতে প্রমাণিত হল যে, এর দ্বারা কোন অবস্থাতেই উযূ করা জায়িয হবে না। আর এটা ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ)-এর অভিমত এবং আমাদের নিকট যুক্তির দাবিও তা-ই। আল্লাহ্ই সবিশেষ জ্ঞাত।
611 - حَدَّثَنَا رَبِيعٌ الْمُؤَذِّنُ , قَالَ: ثنا أَسَدٌ قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ قَالَ: ثنا دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ عَنْ عَامِرٍ , عَنْ عَلْقَمَةَ , عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: هَلْ كَانَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةَ الْجِنِّ أَحَدٌ؟ فَقَالَ: لَمْ يَصْحَبْهُ مِنَّا أَحَدٌ , وَلَكِنْ فَقَدْنَاهُ ذَاتَ لَيْلَةٍ , فَقُلْنَا: اسْتُطِيرَ أَوِ اغْتِيلَ فَتَفَرَّقْنَا فِي الشِّعَابِ وَالْأَوْدِيَةِ نَلْتَمِسُهُ , وَبِتْنَا بِشَرِّ لَيْلَةٍ بَاتَ بِهَا قَوْمٌ نَقُولُ: اسْتُطِيرَ , أَمِ اغْتِيلَ. فَقَالَ: «إِنَّهُ أَتَانِي دَاعِي الْجِنِّ , فَذَهَبْتُ أُقْرِئُهُمُ الْقُرْآنَ فَأَرَانَا آثَارَهُمْ» فَهَذَا عَبْدُ اللهِ قَدْ أُنْكِرَ أَنْ يَكُونَ كَانَ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةَ الْجِنِّ. فَهَذَا الْبَابُ إِنْ كَانَ يُؤْخَذُ مِنْ طَرِيقِ صِحَّةِ الْإِسْنَادِ , فَهَذَا الْحَدِيثُ , الَّذِي فِيهِ الْإِنْكَارُ أَوْلَى , لِاسْتِقَامَةِ طَرِيقِهِ وَمَتْنِهِ , وَثَبْتِ رُوَاتِهِ. وَإِنْ كَانَ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا قَدْ رَأَيْنَا الْأَصْلَ الْمُتَّفَقَ عَلَيْهِ , أَنَّهُ لَا يُتَوَضَّأُ بِنَبِيذِ الزَّبِيبِ , وَلَا بِالْخَلِّ , فَكَانَ النَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ نَبِيذُ التَّمْرِ أَيْضًا كَذَلِكَ. وَقَدْ أَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ أَنَّ نَبِيذَ التَّمْرِ إِذَا كَانَ مَوْجُودًا فِي حَالِ وُجُودِ الْمَاءِ , أَنَّهُ لَا يُتَوَضَّأُ بِهِ لِأَنَّهُ لَيْسَ بِمَاءٍ. فَلَمَّا كَانَ خَارِجًا مِنْ حُكْمِ الْمِيَاهِ فِي حَالِ وُجُودِ الْمَاءِ , كَانَ كَذَلِكَ هُوَ فِي حَالِ عَدَمِ الْمَاءِ. وَحَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ الَّذِي فِيهِ التَّوَضُّؤُ بِنَبِيذِ التَّمْرِ إِنَّمَا فِيهِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَوَضَّأَ بِهِ , وَهُوَ غَيْرُ مُسَافِرٍ لِأَنَّهُ إِنَّمَا خَرَجَ مِنْ مَكَّةَ يُرِيدُهُمْ , فَقِيلَ إِنَّهُ تَوَضَّأَ بِنَبِيذِ التَّمْرِ فِي ذَلِكَ الْمَكَانِ , وَهُوَ فِي حُكْمِ مَنْ هُوَ بِمَكَّةَ , لِأَنَّهُ يُتِمُّ الصَّلَاةَ , فَهُوَ أَيْضًا فِي حُكْمِ اسْتِعْمَالِهِ ذَلِكَ النَّبِيذَ هُنَالِكَ فِي حُكْمِ اسْتِعْمَالِهِ إِيَّاهُ بِمَكَّةَ. فَلَوْ ثَبَتَ هَذَا الْأَثَرُ أَنَّ النَّبِيذَ مِمَّا يَجُوزُ التَّوَضُّؤُ بِهِ فِي الْأَمْصَارِ وَالْبَوَادِي , ثَبَتَ أَنَّهُ يَجُوزُ التَّوَضُّؤُ لَا بِهِ فِي حَالِ وُجُودِ الْمَاءِ , وَفِي حَالِ عَدَمِهِ. فَلَمَّا أَجْمَعُوا عَلَى تَرْكِ ذَلِكَ , وَالْعَمَلِ بِضِدِّهِ , فَلَمْ يُجِيزُوا التَّوَضُّؤَ بِهِ فِي الْأَمْصَارِ , وَلَا فِيمَا حُكْمُهُ حُكْمُ الْأَمْصَارِ , ثَبَتَ بِذَلِكَ تَرْكُهُمْ لِذَلِكَ الْحَدِيثِ , وَخَرَجَ حُكْمُ ذَلِكَ النَّبِيذِ , مِنْ حُكْمِ سَائِرِ الْمِيَاهِ. فَثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّهُ لَا يَجُوزُ التَّوَضُّؤُ بِهِ فِي حَالٍ مِنَ الْأَحْوَالِ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي يُوسُفَ , وَهُوَ النَّظَرُ عِنْدَنَا , وَاللهُ أَعْلَمُ