শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام
১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৬ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:১২৮
৭- উযুতে মাথা মাসাহ্ ফরয হওয়া প্রসঙ্গে।
১২৮. ইউনুস (রাহঃ), আব্দুল গনী ইব্ন আবী উকাইল (রাহঃ) ও আহমদ ইব্ন আব্দুর রহমান (রাহঃ) ……… আব্দুল্লাহ্ ইব্ন যায়দ ইব্ন আসিম আল-মাযিনী (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ ﷺ থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি সালাতের উযূ করার সময় নিজ হাতে পানি নিয়ে মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করেছেন। তারপর উভয় হাতকে মাথার পিছন দিকে নিয়ে গিয়ে সম্মুখ ভাগে তা ফিরিয়ে আনলেন। ইমাম মালিক (রাহঃ) বলেন, মাসেহ সম্পর্কে আমি যা কিছু শুনেছি, এটি তার মধ্যে সূর্বোত্তম ও ব্যাপকতর।
بَابُ فَرْضِ مَسْحِ الرَّأْسِ فِي الْوُضُوءِ
128 - حَدَّثَنَا يُونُسُ، وَعَبْدُ الْغَنِيِّ بْنُ أَبِي عَقِيلٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالُوا: أنا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَالِمٍ، وَمَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى الْمَازِنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَاصِمٍ الْمَازِنِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَنَّهُ أَخَذَ بِيَدِهِ فِي وُضُوئِهِ لِلصَّلَاةِ مَاءً، فَبَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ، ثُمَّ ذَهَبَ بِيَدِهِ إِلَى مُؤَخَّرِ الرَّأْسِ، ثُمَّ رَدَّهُمَا إِلَى مُقَدَّمِهِ» . قَالَ مَالِكٌ: هَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ وَأَعَمُّهُ فِي مَسْحِ الرَّأْسِ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:১২৯
আন্তর্জাতিক নং: ১৩০
উযুতে মাথা মাসাহ্ ফরয হওয়া প্রসঙ্গে।
১২৯.ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ……… তালহা ইব্ন মুসাররিফ (রাহঃ) তার পিতা-পিতামহ সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি নবী ﷺ-কে দেখেছি, তিনি মাথার সম্মুখভাগ মাসেহ করেছেন, এমনকি ঘাড়ের সম্মুখ ভাগ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন।
১৩০. ইব্ন আবী দাউদ (রাহঃ)……… লায়স (রাহঃ) থেকে অনুরূপ উল্লেখ করেছেন।
১৩০. ইব্ন আবী দাউদ (রাহঃ)……… লায়স (রাহঃ) থেকে অনুরূপ উল্লেখ করেছেন।
باب فرض مسح الرأس في الوضوء
129 - حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، قَالَ: ثنا أَبِي وَحَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ قَالَ: «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَسَحَ مُقَدَّمَ رَأْسِهِ حَتَّى بَلَغَ الْقَذَالَ. مُؤَخَّرُ الرَّأْسِ مِنْ مُقَدَّمِ عُنُقِهِ» .
130- حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ لَيْثٍ. فَذَكَرَ مِثْلَهُ بِإِسْنَادِهِ
130- حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ لَيْثٍ. فَذَكَرَ مِثْلَهُ بِإِسْنَادِهِ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:১৩১
উযুতে মাথা মাসাহ্ ফরয হওয়া প্রসঙ্গে।
১৩১.ইব্ন আবী দাউদ (রাহঃ)……… মু'আবিয়া (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি একবার তাদের (আহলে মসজিদ)-কে রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-এর উযূ দেখিয়েছেন। তিনি যখন মাথা মাসেহ পর্যন্ত পৌঁছেন। তখন নিজ হাতের তালু মাথার সম্মুখ ভাগে স্থাপন করেন। তারপর তা ঘাড়ের পিছন দিক পর্যন্ত নিয়ে গেলেন। এরপর হাত দু'টি আবার যে স্থান থেকে শুরু করেছিলেন সে স্থানে ফিরিয়ে নিয়ে আসলেন।
পর্যালােচনা
একদল আলিম এই মত গ্রহণ করেছেন যে, সালাতের উযূর মধ্যে সমস্ত মাথা মাসেহ করা ফরয। এর মধ্য থেকে কিছুই ছেড়ে দেয়া জায়িয নয়। তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এই সমস্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন।
পক্ষান্তরে এ ব্যাপারে অপরাপর আলিমগণ তাদের বিরােধিতা করে বলেছেন, এই সমস্ত হাদীসের বক্তব্য হচ্ছে নবী ﷺ সালাতের জন্য উযূ করার সময় সমস্ত মাথা মাসেহ করেছেন। আমরাও উযূকারীকে এটিই নির্দেশ প্রদান করি যে, সে সালাতের উযূতে অনুরূপ করবে। কিন্তু আমরা তার জন্য পূর্ণ মাথা মাসেহকে ফরয সাব্যস্ত করি না। আর নবী ﷺ-এর কাজে এরূপ কোন প্রমাণ নেই, যাতে বুঝা যায় যে, তিনি পূর্ণ মাথা মাসেহ এই জন্য করেছেন যে, তা ফরয। আমরা তাঁকে দেখেছি যে, তিনি প্রতিটি অঙ্গ তিনবার করে ধুয়ে উযূ করেছেন এই জন্য নয় যে, তিনবার করে ধোয়া ফরয, এর চাইতে কম করা জায়িয নয়। বরং এইজন্য যে, এর থেকে কিছু (একবার ধােয়া) ফরয এবং কিছু (তিনবার ধােয়া) অতিরিক্ত ছওয়াবের কাজ।
নবী ﷺ থেকে সেই সমস্ত রিওয়ায়াতও বর্ণিত আছে যা দ্বারা তাঁদের (দ্বিতীয় দল আলিমদের) অবস্থান প্রমাণিত হয় যে, মাথার কিছু অংশ মাসেহ করা ফরয ?
পর্যালােচনা
একদল আলিম এই মত গ্রহণ করেছেন যে, সালাতের উযূর মধ্যে সমস্ত মাথা মাসেহ করা ফরয। এর মধ্য থেকে কিছুই ছেড়ে দেয়া জায়িয নয়। তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এই সমস্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন।
পক্ষান্তরে এ ব্যাপারে অপরাপর আলিমগণ তাদের বিরােধিতা করে বলেছেন, এই সমস্ত হাদীসের বক্তব্য হচ্ছে নবী ﷺ সালাতের জন্য উযূ করার সময় সমস্ত মাথা মাসেহ করেছেন। আমরাও উযূকারীকে এটিই নির্দেশ প্রদান করি যে, সে সালাতের উযূতে অনুরূপ করবে। কিন্তু আমরা তার জন্য পূর্ণ মাথা মাসেহকে ফরয সাব্যস্ত করি না। আর নবী ﷺ-এর কাজে এরূপ কোন প্রমাণ নেই, যাতে বুঝা যায় যে, তিনি পূর্ণ মাথা মাসেহ এই জন্য করেছেন যে, তা ফরয। আমরা তাঁকে দেখেছি যে, তিনি প্রতিটি অঙ্গ তিনবার করে ধুয়ে উযূ করেছেন এই জন্য নয় যে, তিনবার করে ধোয়া ফরয, এর চাইতে কম করা জায়িয নয়। বরং এইজন্য যে, এর থেকে কিছু (একবার ধােয়া) ফরয এবং কিছু (তিনবার ধােয়া) অতিরিক্ত ছওয়াবের কাজ।
নবী ﷺ থেকে সেই সমস্ত রিওয়ায়াতও বর্ণিত আছে যা দ্বারা তাঁদের (দ্বিতীয় দল আলিমদের) অবস্থান প্রমাণিত হয় যে, মাথার কিছু অংশ মাসেহ করা ফরয ?
باب فرض مسح الرأس في الوضوء
131 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ بَحْرٍ، قَالَ: ثنا أَبُو الْوَلِيدِ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ الْعَلَاءِ، عَنْ أَبِي الْأَزْهَرِ، عَنْ مُعَاوِيَةَ «أَنَّهُ أَرَاهُمْ وُضُوءَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا بَلَغَ مَسْحَ رَأْسِهِ , وَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى مُقَدَّمِ رَأْسِهِ ثُمَّ مَرَّ بِهِمَا حَتَّى بَلَغَ الْقَفَا , ثُمَّ رَدَّهُمَا حَتَّى بَلَغَ الْمَكَانَ الَّذِي مِنْهُ بَدَأَ» . فَذَهَبَ ذَاهِبُونَ إِلَى أَنَّ مَسْحَ الرَّأْسِ كُلِّهِ وَاجِبٌ فِي وُضُوءِ الصَّلَاةِ , لَا يُجْزِئُ تَرْكُ شَيْءٍ مِنْهُ، وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ بِهَذِهِ الْآثَارِ. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ فَقَالُوا: الَّذِي فِي آثَارِكُمْ هَذِهِ إِنَّمَا هُوَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَسَحَ رَأْسَهُ كُلَّهُ فِي وُضُوئِهِ لِلصَّلَاةِ، فَهَكَذَا نَأْمُرُ الْمُتَوَضِّئَ أَنْ يَفْعَلَ ذَلِكَ فِي وُضُوئِهِ لِلصَّلَاةِ، وَلَا نُوجِبُ ذَلِكَ بِكَمَالِهِ عَلَيْهِ فَرْضًا. وَلَيْسَ فِي فِعْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِيَّاهُ مَا قَدْ دَلَّ عَلَى أَنَّ ذَلِكَ كَانَ مِنْهُ لِأَنَّهُ فَرْضٌ، فَقَدْ رَأَيْنَاهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَوَضَّأَ ثَلَاثًا ثَلَاثًا لَا أَنَّ ذَلِكَ فَرْضٌ لَا يُجْزِئُ أَقَلُّ مِنْهُ , وَلَكِنْ مِنْهُ فَرْضٌ وَمِنْهُ فَضْلٌ. وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْآثَارِ الدَّالَّةِ عَلَى مَا ذَهَبُوا إِلَيْهِ فِي الْفَرْضِ فِي مَسْحِ الرَّأْسِ أَنَّهُ عَلَى بَعْضِهِ مَا قَدْ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:১৩২
উযুতে মাথা মাসাহ্ ফরয হওয়া প্রসঙ্গে।
১৩২.রবীউল মুয়াযযিন (রাহঃ)....... মুগীরা ইব্ন শু’বা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় উযূ করেছেন। তিনি পাগড়ি এবং মাথার সম্মুখ ভাগ মাসেহ করেছেন।
باب فرض مسح الرأس في الوضوء
132 - حَدَّثَنَا رَبِيعٌ الْمُؤَذِّنُ، قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ، قَالَ: ثنا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ وَهْبٍ الثَّقَفِيِّ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَوَضَّأَ وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ فَمَسَحَ عَلَى عِمَامَتِهِ وَمَسَحَ بِنَاصِيَتِهِ»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:১৩৩
উযুতে মাথা মাসাহ্ ফরয হওয়া প্রসঙ্গে।
১৩৩.হুসাইন ইব্ন নসর (রাহঃ)....... মুগীরা ইব্ন শু’বা (রাযিঃ) থেকে এবং তিনি মারফু’ রূপে বর্ণনা করেছেন, একবার এক সফরে আমরা রাসূলুল্লাহ্ ﷺ -এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি সালাতের উযূকালে নিজ পাগড়ির উপর এবং মাথার সম্মুখ ভাগের কিছু অংশের উপর মাসেহ করেন।
বিশ্লেষণ
বস্তুত এই হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ মাথার কিছু অংশে মাসেহ করেছেন। আর তা হচ্ছে মাথার সম্মুখ ভাগ। আর মাথার সম্মুখস্থ অংশ দৃশ্যমান হওয়াটা প্রমাণ বহন করে যে, অবশিষ্ট মাথার বিধানও দৃশ্যমান অংশের বিধানের অনুরূপ হবে। যেহেতু যদি পাগড়ির উপর মাসেহের বিধান থাকত তাহলে তা মােজার উপর মাসেহ করার ন্যায় হত। আর সেখানে তাে পা থাকে অদৃশ্যমান। যদি পায়ের কিছু অংশ দৃশ্যমান হয়, তাহলে এর থেকে দৃশ্যমান অংশকে ধোয়া এবং অদৃশ্যমান অংশকে মাসেহ করা যথেষ্ট হত না। তাই অদৃশ্যমান ও দৃশ্যমানের বিধান এক ও অভিন্ন। যখন দৃশ্যমান অংশে ধােয়া ওয়াজিব, তাই অদৃশ্যমান অংশকে ধােয়াও ওয়াজিব। অনুরূপভাবে মাথা, যখন এর দৃশ্যমান অংশকে মাসেহ ওয়াজিব, তাে সাব্যস্ত হল এর যে অংশ অদৃশ্যমান তার উপরে মাসেহ জায়িয নয়।[১] কেননা সমস্ত মাথার বিধান এক ও অভিন্ন। যেমনিভাবে উভয় পায়ের বিধান, যখন এর কিছু অংশ মােজার মধ্যে অদৃশ্যমান হয় তখন সমস্তের বিধান অভিন্নরূপে বিবেচিত হয়।
বস্তুত যখন নবী ﷺ এই রিওয়ায়াত মুতাবিক অবশিষ্ট মাথা বাদ দিয়ে শুধু মাথার সম্মুখ অংশের মাসেহকে যথেষ্ট মনে করেছেন, এটি প্রমাণ করে যে, মাথা মাসেহের ক্ষেত্রে মাথার সম্মুখ অংশ পরিমাণ মাসেহ করা ফরয। আর তিনি যে মাথার সম্মুখভাগের অতিরিক্ত মাসেহ করেছেন যা অপরাপর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে, তা ফযীলত তথা অধিক ছওয়াব হওয়ার দলীল, ওয়াজিব হওয়ার নয়। এভাবে সমস্ত রিওয়ায়াত এক ও অভিন্ন হয়ে যায় এবং তাতে পারস্পরিক বৈপরিত্য থাকে না। আর এটিই হচ্ছে হাদীস রিওয়ায়াতের ভিত্তিতে এই অনুচ্ছেদের বিধান।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল ও বিশ্লেষণ
বস্তুত আমরা যুক্তির নিরিখে লক্ষ্য করেছি যে, উযূ কয়েকটি অঙ্গে ওয়াজিব, এর মধ্যে কতেকের বিধান হচ্ছে ধৌত করা আর কতেকের বিধান হচ্ছে মাসেহ করা। যে সমস্ত অঙ্গের বিধান হচ্ছে ধৌত করা, তা হচ্ছে মুখমণ্ডল, উভয় হাত ও উভয় পা-যাদের মতে উভয় পা ধোয় ফরয। সুতরাং সকলের ঐকমত্য রয়েছে যে, যে অঙ্গকে ধোয়া ফরয, এর সমস্ত (অংশ) ধােয়া আবশ্যক। এর কতেককে ধােয়া, কতেককে না ধােয়া জায়িয নয়। আর যে অঙ্গে মাসেহ করা ফরয, যেমন মাথা মাসেহ করা,ফরয, সেক্ষেত্রে একদল আলিম বলেছেনঃ এর বিধান হচ্ছে সমস্ত মাথা মাসেহ করা, যেমনিভাবে ধােয়ার অঙ্গগুলােকে পুরাপুরি ধোয়া হয়। অপরদল বলেছেনঃ এর কিছু অংশ মাসেহ করা ফরয।আমরা সেই বস্তুর প্রতি লক্ষ্য করেছি, যার বিধান হল মাসেহ্ করা, তা কি রূপ ? আমরা মােজার উপর মাসেহ করার বিধান দেখেছি, এতে মতবিরােধ রয়েছেঃ এক দল আলিম বলেছেন, এর দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান অংশের উপর মাসেহ্ করাতে হবে। অপর দল বলেছেন, এর দৃশ্যমান অংশকে মাসেহ্ করবে, অদৃশ্যমান অংশকে নয়। সকলের ঐকমত্য রয়েছে যে, এর কতেক অংশের উপর মাসেহ্ করা ফরয, অপর কতেক অংশের উপর নয়। অতএব এরই প্রেক্ষিতে যুক্তির দাবি হল, মাথা মাসেহ্ এর বিধানও অনুরূপ হবে যে, এর কিছু অংশ অপর কিছু অংশ বাদ দিয়ে ফরয হবে। এটি হচ্ছে পূর্ব বর্ণিত মােজার উপর মাসেহ সম্পর্কিত বর্ণনার উপর কিয়াস ও যুক্তি।
এটিই ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান (রাহঃ)-এর অভিমত।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নবী ﷺ-এর পরবর্তীদের থেকেও এরূপ রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে, যা তার সমর্থন করেঃ
[১] এটা যুক্তির কথা, তবে সূক্ষ্মতর যুক্তি হচ্ছে যা মুগীরা (রাযিঃ)-এর হাদীস থেকে প্রমাণিত-মাথার সম্মুখ ভাগ মাসেহ করা ফরয, সারা মাথা মাসেহ করা ওয়জিব নয়, তবে উত্তম। কেননা তেমনটিও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।-সম্পাদক
বিশ্লেষণ
বস্তুত এই হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ মাথার কিছু অংশে মাসেহ করেছেন। আর তা হচ্ছে মাথার সম্মুখ ভাগ। আর মাথার সম্মুখস্থ অংশ দৃশ্যমান হওয়াটা প্রমাণ বহন করে যে, অবশিষ্ট মাথার বিধানও দৃশ্যমান অংশের বিধানের অনুরূপ হবে। যেহেতু যদি পাগড়ির উপর মাসেহের বিধান থাকত তাহলে তা মােজার উপর মাসেহ করার ন্যায় হত। আর সেখানে তাে পা থাকে অদৃশ্যমান। যদি পায়ের কিছু অংশ দৃশ্যমান হয়, তাহলে এর থেকে দৃশ্যমান অংশকে ধোয়া এবং অদৃশ্যমান অংশকে মাসেহ করা যথেষ্ট হত না। তাই অদৃশ্যমান ও দৃশ্যমানের বিধান এক ও অভিন্ন। যখন দৃশ্যমান অংশে ধােয়া ওয়াজিব, তাই অদৃশ্যমান অংশকে ধােয়াও ওয়াজিব। অনুরূপভাবে মাথা, যখন এর দৃশ্যমান অংশকে মাসেহ ওয়াজিব, তাে সাব্যস্ত হল এর যে অংশ অদৃশ্যমান তার উপরে মাসেহ জায়িয নয়।[১] কেননা সমস্ত মাথার বিধান এক ও অভিন্ন। যেমনিভাবে উভয় পায়ের বিধান, যখন এর কিছু অংশ মােজার মধ্যে অদৃশ্যমান হয় তখন সমস্তের বিধান অভিন্নরূপে বিবেচিত হয়।
বস্তুত যখন নবী ﷺ এই রিওয়ায়াত মুতাবিক অবশিষ্ট মাথা বাদ দিয়ে শুধু মাথার সম্মুখ অংশের মাসেহকে যথেষ্ট মনে করেছেন, এটি প্রমাণ করে যে, মাথা মাসেহের ক্ষেত্রে মাথার সম্মুখ অংশ পরিমাণ মাসেহ করা ফরয। আর তিনি যে মাথার সম্মুখভাগের অতিরিক্ত মাসেহ করেছেন যা অপরাপর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে, তা ফযীলত তথা অধিক ছওয়াব হওয়ার দলীল, ওয়াজিব হওয়ার নয়। এভাবে সমস্ত রিওয়ায়াত এক ও অভিন্ন হয়ে যায় এবং তাতে পারস্পরিক বৈপরিত্য থাকে না। আর এটিই হচ্ছে হাদীস রিওয়ায়াতের ভিত্তিতে এই অনুচ্ছেদের বিধান।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল ও বিশ্লেষণ
বস্তুত আমরা যুক্তির নিরিখে লক্ষ্য করেছি যে, উযূ কয়েকটি অঙ্গে ওয়াজিব, এর মধ্যে কতেকের বিধান হচ্ছে ধৌত করা আর কতেকের বিধান হচ্ছে মাসেহ করা। যে সমস্ত অঙ্গের বিধান হচ্ছে ধৌত করা, তা হচ্ছে মুখমণ্ডল, উভয় হাত ও উভয় পা-যাদের মতে উভয় পা ধোয় ফরয। সুতরাং সকলের ঐকমত্য রয়েছে যে, যে অঙ্গকে ধোয়া ফরয, এর সমস্ত (অংশ) ধােয়া আবশ্যক। এর কতেককে ধােয়া, কতেককে না ধােয়া জায়িয নয়। আর যে অঙ্গে মাসেহ করা ফরয, যেমন মাথা মাসেহ করা,ফরয, সেক্ষেত্রে একদল আলিম বলেছেনঃ এর বিধান হচ্ছে সমস্ত মাথা মাসেহ করা, যেমনিভাবে ধােয়ার অঙ্গগুলােকে পুরাপুরি ধোয়া হয়। অপরদল বলেছেনঃ এর কিছু অংশ মাসেহ করা ফরয।আমরা সেই বস্তুর প্রতি লক্ষ্য করেছি, যার বিধান হল মাসেহ্ করা, তা কি রূপ ? আমরা মােজার উপর মাসেহ করার বিধান দেখেছি, এতে মতবিরােধ রয়েছেঃ এক দল আলিম বলেছেন, এর দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান অংশের উপর মাসেহ্ করাতে হবে। অপর দল বলেছেন, এর দৃশ্যমান অংশকে মাসেহ্ করবে, অদৃশ্যমান অংশকে নয়। সকলের ঐকমত্য রয়েছে যে, এর কতেক অংশের উপর মাসেহ্ করা ফরয, অপর কতেক অংশের উপর নয়। অতএব এরই প্রেক্ষিতে যুক্তির দাবি হল, মাথা মাসেহ্ এর বিধানও অনুরূপ হবে যে, এর কিছু অংশ অপর কিছু অংশ বাদ দিয়ে ফরয হবে। এটি হচ্ছে পূর্ব বর্ণিত মােজার উপর মাসেহ সম্পর্কিত বর্ণনার উপর কিয়াস ও যুক্তি।
এটিই ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান (রাহঃ)-এর অভিমত।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নবী ﷺ-এর পরবর্তীদের থেকেও এরূপ রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে, যা তার সমর্থন করেঃ
[১] এটা যুক্তির কথা, তবে সূক্ষ্মতর যুক্তি হচ্ছে যা মুগীরা (রাযিঃ)-এর হাদীস থেকে প্রমাণিত-মাথার সম্মুখ ভাগ মাসেহ করা ফরয, সারা মাথা মাসেহ করা ওয়জিব নয়, তবে উত্তম। কেননা তেমনটিও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।-সম্পাদক
باب فرض مسح الرأس في الوضوء
133 - حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ نَصْرٍ قَالَ: سَمِعْتُ يَزِيدَ بْنَ هَارُونَ قَالَ: أنا ابْنُ عَوْنٍ، عَنْ عَامِرٍ، عَنِ ابْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِيهِ وَابْنِ عَوْنٍ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ وَهْبٍ، عَنِ الْمُغِيرَةِ رَفَعَهُ إِلَيْهِ قَالَ: «كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ، فَتَوَضَّأَ لِلصَّلَاةِ , فَمَسَحَ عَلَى عِمَامَتِهِ. وَقَدْ ذَكَرَ النَّاصِيَةَ بِشَيْءٍ» . فَفِي هَذَا الْأَثَرِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَسَحَ عَلَى بَعْضِ الرَّأْسِ وَهُوَ النَّاصِيَةُ , وَظُهُورُ النَّاصِيَةِ دَلِيلُ أَنَّ بَقِيَّةَ الرَّأْسِ حُكْمُهُ حُكْمُ مَا ظَهَرَ مِنْهُ , لِأَنَّهُ لَوْ كَانَ الْحُكْمُ قَدْ ثَبَتَ بِالْمَسْحِ عَلَى الْعِمَامَةِ لَكَانَ كَالْمَسْحِ عَلَى الْخُفَّيْنِ , فَلَمْ يَكُنْ إِلَّا وَقَدْ غُيِّبَتِ الرِّجْلَانِ فِيهِمَا وَلَوْ كَانَ بَعْضُ الرَّجُلَيْنِ بَادِيًا , لَمَا أَجْزَأَهُ أَنْ يَغْسِلَ مَا ظَهَرَ مِنْهُمَا وَيَمْسَحَ عَلَى مَا غَابَ مِنْهُمَا فَجَعَلَ حُكْمَ مَا غَابَ مِنْهُمَا مُضَمِّنًا بِحُكْمِ مَا بَدَأَ مِنْهُمَا فَلَمَّا وَجَبَ غَسْلُ الظَّاهِرِ وَجَبَ غَسْلُ الْبَاطِنِ فَكَذَلِكَ الرَّأْسُ لَمَّا وَجَبَ مَسْحُ مَا ظَهَرَ مِنْهُ , ثَبَتَ أَنَّهُ لَا يَجُوزُ مَسْحُ مَا بَطَنَ مِنْهُ لِيَكُونَ حُكْمُ كُلِّهِ حُكْمًا وَاحِدًا كَمَا كَانَ حُكْمُ الرِّجْلَيْنِ إِذَا غُيِّبَتْ بَعْضُهَا فِي الْخُفَّيْنِ حُكْمًا وَاحِدًا. فَلَمَّا اكْتَفَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي هَذَا الْأَثَرِ بَمَسْحِ النَّاصِيَةِ عَلَى مَسْحِ مَا بَقِيَ مِنَ الرَّأْسِ دَلَّ ذَلِكَ أَنَّ الْفَرْضَ فِي مَسْحِ الرَّأْسِ هُوَ مِقْدَارُ النَّاصِيَةِ وَأَنَّ مَا فَعَلَهُ فِيمَا جَاوَزَ بِهِ النَّاصِيَةَ فِيمَا سِوَى ذَلِكَ مِنَ الْآثَارِ كَانَ دَلِيلًا عَلَى الْفَضْلِ لَا عَلَى الْوُجُوبِ حَتَّى تَسْتَوِيَ هَذِهِ الْآثَارُ وَلَا تَتَضَادَّ , فَهَذَا حُكْمُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طُرُقِ الْآثَارِ. وَأَمَّا مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا رَأَيْنَا الْوُضُوءَ يَجِبُ فِي أَعْضَاءٍ. فَمِنْهَا مَا حُكْمُهُ أَنْ يُغْسَلَ , وَمِنْهَا مَا حُكْمُهُ أَنْ يُمْسَحَ. فَأَمَّا مَا حُكْمُهُ أَنْ يُغْسَلَ فَالْوَجْهُ وَالْيَدَانِ وَالرِّجْلَانِ فِي قَوْلِ مَنْ يُوجِبُ غَسْلَهُمَا. فَكُلٌّ قَدْ أَجْمَعَ أَنَّ مَا وَجَبَ غَسْلُهُ مِنْ ذَلِكَ فَلَا بُدَّ مِنْ غَسْلِهِ كُلِّهِ وَلَا يُجْزِئُ غَسْلُ بَعْضِهِ دُونَ بَعْضٍ، وَكُلُّ مَا كَانَ مَا وَجَبَ مَسْحُهُ مِنْ ذَلِكَ , وَهُوَ الرَّأْسُ. فَقَالَ قَوْمٌ: حُكْمُهُ أَنْ يُمْسَحَ كُلُّهُ كَمَا تُغْسَلُ تِلْكَ الْأَعْضَاءُ كُلُّهَا , وَقَالَ آخَرُونَ: يُمْسَحُ بَعْضُهُ دُونَ بَعْضِهِ. فَنَظَرْنَا فِي حُكْمِ الْمَسْحِ كَيْفَ هُوَ؟ فَرَأَيْنَا حُكْمَ الْمَسْحِ عَلَى الْخُفَّيْنِ قَدِ اخْتُلِفَ فِيهِ. فَقَالَ قَوْمٌ: يُمْسَحُ ظَاهِرُهُمَا دُونَ بَاطِنِهِمَا , وَقَالَ آخَرُونَ: يُمْسَحُ ظَاهِرُهُمَا دُونَ بَاطِنِهِمَا. فَكُلٌّ قَدِ اتَّفَقَ أَنَّ فَرْضَ الْمَسْحِ فِي ذَلِكَ هُوَ عَلَى بَعْضِهِمَا دُونَ مَسْحِ كُلِّهِمَا. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ حُكْمُ مَسْحِ الرَّأْسِ , هُوَ عَلَى بَعْضِهِ دُونَ بَعْضٍ , قِيَاسًا وَنَظَرًا , عَلَى مَا بَيَّنَّا مِنْ ذَلِكَ. وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ رَحِمَهُمُ اللهُ. وَقَدْ رُوِيَ فِي ذَلِكَ عَمَّنْ بَعْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيْضًا مَا يُوَافِقُ ذَلِكَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:১৩৪
উযুতে মাথা মাসাহ্ ফরয হওয়া প্রসঙ্গে।
১৩৪.ইব্ন আবী দাউদ (রাহঃ)...... সালিম (রাহঃ) তাঁর পিতা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি উযূ করার সময় মাথার সম্মুখভাগে মাসেহ করতেন।
باب فرض مسح الرأس في الوضوء
134 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، عَنِ الزُّبَيْدِيِّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ «أَنَّهُ كَانَ يَمْسَحُ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ إِذَا تَوَضَّأَ»

তাহকীক:
তাহকীক চলমান