আল মুওয়াত্তা - ইমাম মালিক রহঃ

كتاب الموطأ للإمام مالك

২২. শপথ ও মান্নতের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:১০১১
২. বায়তুল্লাহ পর্যন্ত হ্যাঁটিয়া যাওয়ার মান্নত করা এবং পরে অক্ষম হওয়া
রেওয়ায়ত ৪. উরওয়াহ ইবনে উয়াইনী লাইসী (রাযিঃ) বর্ণনা করেন-আমার দাদী বায়তুল্লাহ পর্যন্ত হাটিয়া যাওয়ার মান্নত করিয়াছিলেন। তিনি যখন মান্নত পূরণ করিতে যাত্রা করেন আমিও তাহার সহিত চলিলাম। শেষে হ্যাঁটিতে হ্যাঁটিতে অত্যন্ত ক্লান্ত হইয়া পড়িলে তিনি স্বীয় গোলামকে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ)-এর নিকট এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করিতে প্রেরণ করেন। আমিও তাহার সহিত গেলাম। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) জবাবে বলিলেনঃ এখন সে কিছুতে আরোহণ করিয়া যাক। পরে যে স্থান হইতে আরোহণ করিয়াছিল সেই স্থান হইতে পুনরায় তাহাকে হ্যাঁটিয়া যাইতে হইবে।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ ইহার সহিত এই ধরনের ব্যক্তিকে একটি কুরবানীও করিতে হইবে।

মালিক (রাহঃ) জ্ঞাত হইয়াছেন-সাঈদ ইবনে মুসায়্যাব (রাহঃ) এবং আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমানও এই বিষয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ)-এর মতো অভিমত ব্যক্ত করেন।
بَاب مَا جَاءَ فِيمَنْ نَذَرَ مَشْيًا إِلَى بَيْتِ اللَّهِ فَعَجَزَ
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ عُرْوَةَ بْنِ أُذَيْنَةَ اللَّيْثِيِّ أَنَّهُ قَالَ خَرَجْتُ مَعَ جَدَّةٍ لِي عَلَيْهَا مَشْيٌ إِلَى بَيْتِ اللَّهِ حَتَّى إِذَا كُنَّا بِبَعْضِ الطَّرِيقِ عَجَزَتْ فَأَرْسَلَتْ مَوْلًى لَهَا يَسْأَلُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ فَخَرَجْتُ مَعَهُ فَسَأَلَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ فَقَالَ لَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ مُرْهَا فَلْتَرْكَبْ ثُمَّ لْتَمْشِ مِنْ حَيْثُ عَجَزَتْ قَالَ يَحْيَى وَسَمِعْت مَالِك يَقُولُ وَنَرَى عَلَيْهَا مَعَ ذَلِكَ الْهَدْيَ وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ وَأَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ كَانَا يَقُولَانِ مِثْلَ قَوْلِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:১০১২
২. বায়তুল্লাহ পর্যন্ত হ্যাঁটিয়া যাওয়ার মান্নত করা এবং পরে অক্ষম হওয়া
রেওয়ায়ত ৫. ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ (রাহঃ) বলেন, আমি বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত হাটিয়া যাওয়ার মান্নত করিয়াছিলাম, কিন্তু কোমরের ব্যথায় আক্রান্ত হইয়া পড়ি। তাই বাহনে চড়িয়া আমাকে মক্কায় আসিতে হইল। আতা ইবনে আবু রাবাহ (রাহঃ) অন্যদেরকে এই সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলে তাহারা বলিলেনঃ তোমাকে একটা কুরবানী দিতে হইবে । মদীনায় আসিয়া সেখানকার আলিমদের নিকটও এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিলাম। তাহারা বলিলেনঃ যে স্থান হইতে সওয়ার হইয়াছিলে সেই স্থান হইতে তোমাকে আবার হ্যাঁটিয়া যাইতে হইবে। শেষে আমি তাহাই করিলাম।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পায়ে হ্যাঁটিয়া যাওয়া আমার ওপর ওয়াজিব। এই কথা বলিয়া যদি কেহ হ্যাঁটিয়া যাত্রা শুরু করে এবং পরে অপারক হইয়া যায় তবে সে সওয়ার হইয়া যাইবে এবং পরবর্তী সময়ে যে স্থান হইতে সে অপারক হইয়াছিল সেই স্থান হইতে পুনরায় হ্যাঁটিয়া যাইবে। হ্যাঁটিতে না পারিলে যতদূর সামর্থে কুলায় হ্যাঁটিয়া যাইবে আর বাকীটুকু সওয়ার হইয়া যাইবে এবং একটি উট বা গরু কুরবানী করিবে। সম্ভব না হইলে একটি বকরী কুরবানী করিবে।

মালিক (রাহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল, যদি কেহ অন্য একজনকে বলে, তোমাকে আমি বায়তুল্লাহ পর্যন্ত বহন করিয়া লইয়া যাইব, তবে কি হকুম হইবে? তিনি বলিলেন, যদি এই কথা বলার সময় কথকের এই নিয়্যত হইয়া থাকে যে, তাহার ঘাড়ে উঠাইয়া নিয়া যাইবে এবং এইভাবে নিজেকে কষ্টে ফেলাই তাহার উদ্দেশ্য হয়, তবে তাহার উপর কিছুই ওয়াজিব হইবে না বরং সে পায়ে হ্যাঁটিয়া যাইবে এবং একটি কুরবানী দিবে। আর বলার সময় যদি তাহার কিছু নিয়্যত না থাকে, তবে সে সওয়ার হইয়া যাইবে এবং ঐ ব্যক্তিকেও সঙ্গে নিয়া যাইবে। কারণ সে তাহাকে বহন করিয়া লইয়া যাওয়ার অঙ্গীকার করিয়াছিল। ঐ ব্যক্তি যদি সঙ্গে যাইতে না চায় তবে তাহার উপর কিছুই ওয়াজিব হইবে না। কেননা সে আপন অঙ্গীকার রক্ষা করিয়াছে।

মালিক (রাহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল-কেহ যদি নির্দিষ্ট কতিপয় মানতের শপথ করে যাহা প্রতি বৎসর চেষ্টা করিলেও সারা জীবনে পূরণ করা অসম্ভব, যেমন সে বলিল, পায়ে হাটিয়া বায়তুল্লাহ যাইব বা এক হাজার বার হজ্জ করিব, ভাই অথবা পিতার সহিত কথা বলিব না ইত্যাদি। সে কি একটি মান্নতই পূরণ করিবে, না সবগুলিই তাহাকে পূরণ করিতে হইবে?

মালিক (রাহঃ) বললেন, আমার মতে সবগুলিই তাহাকে পূরণ করিতে হইবে, যতদিন এবং যতদূর পর্যন্ত সম্ভব হয় সে উহা পূরণ করিতে থাকিবে এবং নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করিয়া যাইবে।
بَاب مَا جَاءَ فِيمَنْ نَذَرَ مَشْيًا إِلَى بَيْتِ اللَّهِ فَعَجَزَ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّهُ قَالَ كَانَ عَلَيَّ مَشْيٌ فَأَصَابَتْنِي خَاصِرَةٌ فَرَكِبْتُ حَتَّى أَتَيْتُ مَكَّةَ فَسَأَلْتُ عَطَاءَ بْنَ أَبِي رَبَاحٍ وَغَيْرَهُ فَقَالُوا عَلَيْكَ هَدْيٌ فَلَمَّا قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ سَأَلْتُ عُلَمَاءَهَا فَأَمَرُونِي أَنْ أَمْشِيَ مَرَّةً أُخْرَى مِنْ حَيْثُ عَجَزْتُ فَمَشَيْتُ قَالَ يَحْيَى وَسَمِعْت مَالِك يَقُولُ فَالْأَمْرُ عِنْدَنَا فِيمَنْ يَقُولُ عَلَيَّ مَشْيٌ إِلَى بَيْتِ اللَّهِ أَنَّهُ إِذَا عَجَزَ رَكِبَ ثُمَّ عَادَ فَمَشَى مِنْ حَيْثُ عَجَزَ فَإِنْ كَانَ لَا يَسْتَطِيعُ الْمَشْيَ فَلْيَمْشِ مَا قَدَرَ عَلَيْهِ ثُمَّ لْيَرْكَبْ وَعَلَيْهِ هَدْيُ بَدَنَةٍ أَوْ بَقَرَةٍ أَوْ شَاةٍ إِنْ لَمْ يَجِدْ إِلَّا هِيَ
وَسُئِلَ مَالِك عَنْ الرَّجُلِ يَقُولُ لِلرَّجُلِ أَنَا أَحْمِلُكَ إِلَى بَيْتِ اللَّهِ فَقَالَ مَالِك إِنْ نَوَى أَنْ يَحْمِلَهُ عَلَى رَقَبَتِهِ يُرِيدُ بِذَلِكَ الْمَشَقَّةَ وَتَعَبَ نَفْسِهِ فَلَيْسَ ذَلِكَ عَلَيْهِ وَلْيَمْشِ عَلَى رِجْلَيْهِ وَلْيُهْدِ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ نَوَى شَيْئًا فَلْيَحْجُجْ وَلْيَرْكَبْ وَلْيَحْجُجْ بِذَلِكَ الرَّجُلِ مَعَهُ وَذَلِكَ أَنَّهُ قَالَ أَنَا أَحْمِلُكَ إِلَى بَيْتِ اللَّهِ فَإِنْ أَبَى أَنْ يَحُجَّ مَعَهُ فَلَيْسَ عَلَيْهِ شَيْءٌ وَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ قَالَ يَحْيَى سُئِلَ مَالِك عَنْ الرَّجُلِ يَحْلِفُ بِنُذُورٍ مُسَمَّاةٍ مَشْيًا إِلَى بَيْتِ اللَّهِ أَنْ لَا يُكَلِّمَ أَخَاهُ أَوْ أَبَاهُ بِكَذَا وَكَذَا نَذْرًا لِشَيْءٍ لَا يَقْوَى عَلَيْهِ وَلَوْ تَكَلَّفَ ذَلِكَ كُلَّ عَامٍ لَعُرِفَ أَنَّهُ لَا يَبْلُغُ عُمْرُهُ مَا جَعَلَ عَلَى نَفْسِهِ مِنْ ذَلِكَ فَقِيلَ لَهُ هَلْ يُجْزِيهِ مِنْ ذَلِكَ نَذْرٌ وَاحِدٌ أَوْ نُذُورٌ مُسَمَّاةٌ فَقَالَ مَالِك مَا أَعْلَمُهُ يُجْزِئُهُ مِنْ ذَلِكَ إِلَّا الْوَفَاءُ بِمَا جَعَلَ عَلَى نَفْسِهِ فَلْيَمْشِ مَا قَدَرَ عَلَيْهِ مِنْ الزَّمَانِ وَلْيَتَقَرَّبْ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى بِمَا اسْتَطَاعَ مِنْ الْخَيْرِ