আল মুওয়াত্তা - ইমাম মালিক রহঃ

كتاب الموطأ للإمام مالك

২১. জিহাদের বিধানাবলী সম্পর্কিত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৯৯৪
১৮. জিহাদে উৎসাহ প্রদান
রেওয়ায়ত ৩৯. আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে যখন কোবায় তশরীফ নিয়া যাইতেন তখন উম্মে হারাম বিনতে মিলহান (রাযিঃ)-এর বাড়িতে যাইতেন। উম্মে হারাম (রাযিঃ) তাহাকে সেখানে আহার করাইতেন। উম্মে হারাম (রাযিঃ) ছিলেন উবাদা ইবনে সামেত (রাযিঃ)-এর স্ত্রী। একদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাহার বাড়িতে গেলেন। উম্মে হারাম তাহাকে আহার করাইয়া মাথার চুল বাছিতে বসিয়া গেলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঘুমাইয়া পড়িলেন, হঠাৎ হাসিতে হাসিতে তিনি জাগ্রত হইলেন। উম্মে হারাম (রাযিঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! হাসিতেছেন কেন? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিলেন, আমার উম্মতের কিছু সংখ্যক লোক আমাকে দেখানো হইল বাদশাহগণ যেমন সিংহাসনে আসীন হন তদ্রূপ তাহার জিহাদ করার জন্য সমুদ্রের বুকে আরোহণ করিতেছে। উম্মে হারাম (রাযিঃ) তখন আরয করিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! দোয়া করিয়া দিন আমাকেও যেন আল্লাহ তাআলা ইহাদের মধ্যে শামিল করিয়া নেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দোয়া করিলেন এবং আবার ঘুমাইয়া পড়িলেন । পুনরায় তিনি হাসিয়া জাগ্রত হইয়া উঠিলেন। উম্মে হারাম (রাযিঃ) বলিলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! হাসিতেছেন কেন? তিনি বলিলেন, আমাকে দেখানো হইল আমার উম্মতের কিছু সংখ্যক লোক বাদশাহদের সিংহাসনারোহী হওয়ার মতো জিহাদের উদ্দেশ্যে সমুদ্রের বুকে বিচরণ করিতেছে। উম্মে হারাম (রাযিঃ) আরয করিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! দোয়া করিয়া দিন, আল্লাহ যেন আমাকে ইহাদের অন্তর্ভুক্ত করিয়া দেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিলেনঃ তুমি তো প্রথম দলের অন্তর্ভুক্ত হইয়া পড়িয়াছ। পরে এই উম্মে হারাম (রাযিঃ) মু’আবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রাযিঃ)-এর সহিত জিহাদে সমুদ্রযাত্রায় শরীক হইয়াছিলেন। ফিরিবার পথে জাহাজ হইতে অবতরণ করার পর সওয়ারী হইতে পড়িয়া গিয়া তাহার মৃত্যু হয়।
بَاب التَّرْغِيبِ فِي الْجِهَادِ
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ إِسْحَقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا ذَهَبَ إِلَى قُبَاءٍ يَدْخُلُ عَلَى أُمِّ حَرَامٍ بِنْتِ مِلْحَانَ فَتُطْعِمُهُ وَكَانَتْ أُمُّ حَرَامٍ تَحْتَ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ فَدَخَلَ عَلَيْهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا فَأَطْعَمَتْهُ وَجَلَسَتْ تَفْلِي فِي رَأْسِهِ فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا ثُمَّ اسْتَيْقَظَ وَهُوَ يَضْحَكُ قَالَتْ فَقُلْتُ مَا يُضْحِكُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَيَّ غُزَاةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ يَرْكَبُونَ ثَبَجَ هَذَا الْبَحْرِ مُلُوكًا عَلَى الْأَسِرَّةِ أَوْ مِثْلَ الْمُلُوكِ عَلَى الْأَسِرَّةِ يَشُكُّ إِسْحَقُ قَالَتْ فَقُلْتُ لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ فَدَعَا لَهَا ثُمَّ وَضَعَ رَأْسَهُ فَنَامَ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ يَضْحَكُ قَالَتْ فَقُلْتُ لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا يُضْحِكُكَ قَالَ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَيَّ غُزَاةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ مُلُوكًا عَلَى الْأَسِرَّةِ أَوْ مِثْلَ الْمُلُوكِ عَلَى الْأَسِرَّةِ كَمَا قَالَ فِي الْأُولَى قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ فَقَالَ أَنْتِ مِنْ الْأَوَّلِينَ قَالَ فَرَكِبَتْ الْبَحْرَ فِي زَمَانِ مُعَاوِيَةَ فَصُرِعَتْ عَنْ دَابَّتِهَا حِينَ خَرَجَتْ مِنْ الْبَحْرِ فَهَلَكَتْ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৯৯৫
১৮. জিহাদে উৎসাহ প্রদান
রেওয়ায়ত ৪০. আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন-রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিলেন, আমার উম্মতের জন্য যদি কষ্টকর না হইত তবে আল্লাহর রাহে গমনকারী প্রত্যেকটি সৈন্যদলের সঙ্গে যাইতে আমি বিরত হইতাম না। আমার নিকট এত অধিক বাহন নাই যে, প্রত্যেককেই-এক একটা দিতে পারি আর তাহদের নিজেদের নিকট এমন কোন বাহন নাই যাহাতে আরোহণ করিয়া তাহারা জিহাদে যাইতে পারে। আমি নিজে যদি চলিয়া যাই তবে তাহাদের এইখানে থাকিতে কষ্ট হয়। আমার তো ইচ্ছা হয় আল্লাহর পথে লড়িতে যাইয়া আমি শহীদ হই, আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই, আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই।
بَاب التَّرْغِيبِ فِي الْجِهَادِ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لَأَحْبَبْتُ أَنْ لَا أَتَخَلَّفَ عَنْ سَرِيَّةٍ تَخْرُجُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَكِنِّي لَا أَجِدُ مَا أَحْمِلُهُمْ عَلَيْهِ وَلَا يَجِدُونَ مَا يَتَحَمَّلُونَ عَلَيْهِ فَيَخْرُجُونَ وَيَشُقُّ عَلَيْهِمْ أَنْ يَتَخَلَّفُوا بَعْدِي فَوَدِدْتُ أَنِّي أُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَأُقْتَلُ ثُمَّ أُحْيَا فَأُقْتَلُ ثُمَّ أُحْيَا فَأُقْتَلُ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৯৯৬
১৮. জিহাদে উৎসাহ প্রদান
রেওয়ায়ত ৪১. ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ (রাহঃ) বর্ণনা করেন, উহুদ যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিলেনঃ সা’দ ইবনে রবী আনসারী (রাযিঃ)-এর খবর আমাকে কে আনিয়া দিতে পারিবে? এক ব্যক্তি উঠিয়া বলিলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি পারিব। এই ব্যক্তি সাদকে পড়িয়া থাকা লাশগুলির মধ্যে খুঁজিতে লাগিলেন। এক স্থানে গিয়া তাহাকে আহত হইয়া পড়িয়া থাকিতে দেখিতে পাইলেন। সা’দ বলিলেন, কি ব্যাপার? লোকটি বলিলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তালাশ করিয়া আপনার খবর নিয়া যাইতে আমাকে পাঠাইয়াছেন। সা’দ বলিলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে আমার সালাম দিবে। আমার এই শরীরে বারটি আঘাত লাগিয়াছে। প্রত্যেকটি আঘাতই মারাত্মক। তোমার সম্প্রদায়কে বলিবে, তোমাদের একজন জীবিত থাকিতেও যদি আল্লাহ না করুন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) শহীদ হইয়া যান, তবে আল্লাহর দরবারে তোমাদের কোন ওযর ও জবাবদিহি কবুল হইবে না।
بَاب التَّرْغِيبِ فِي الْجِهَادِ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ يَأْتِينِي بِخَبَرِ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ الْأَنْصَارِيِّ فَقَالَ رَجُلٌ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ فَذَهَبَ الرَّجُلُ يَطُوفُ بَيْنَ الْقَتْلَى فَقَالَ لَهُ سَعْدُ بْنُ الرَّبِيعِ مَا شَأْنُكَ فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ بَعَثَنِي إِلَيْكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِآتِيَهُ بِخَبَرِكَ قَالَ فَاذْهَبْ إِلَيْهِ فَاقْرَأْهُ مِنِّي السَّلَامَ وَأَخْبِرْهُ أَنِّي قَدْ طُعِنْتُ اثْنَتَيْ عَشْرَةَ طَعْنَةً وَأَنِّي قَدْ أُنْفِذَتْ مَقَاتِلِي وَأَخْبِرْ قَوْمَكَ أَنَّهُ لَا عُذْرَ لَهُمْ عِنْدَ اللَّهِ إِنْ قُتِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَوَاحِدٌ مِنْهُمْ حَيٌّ
হাদীস নং:৯৯৭
১৮. জিহাদে উৎসাহ প্রদান
রেওয়ায়ত ৪২. ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ (রাহঃ) বর্ণনা করেন (বদরের যুদ্ধের সময়) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীদেরকে জিহাদের উৎসাহ দিতে যাইয়া জান্নাতের অবস্থা বর্ণনা করেন। এমন সময় জনৈক আনসার সাহাবী* যিনি কয়েকটি খেজুর হাতে নিয়া তখন খাইতেছিলেন, তিনি বলিয়া উঠিলেন, এই খেজুরগুলি খাইয়া শেষ করা পর্যন্ত যদি আমি অপেক্ষা করি তবে সত্যি আমি দুনিয়া লোভী বলিয়া প্রমাণিত হইব। শেষ পর্যন্ত বাকি খেজুরগুলি দূরে ছুড়িয়া ফেলিলেন এবং তলোয়ার হাতে নিয়ে লড়াইয়ের ভিড়ে ঢুকিয়া পড়িলেন এবং লড়াই করিতে করিতে শহীদ হইয়া গেলেন।
بَاب التَّرْغِيبِ فِي الْجِهَادِ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَغَّبَ فِي الْجِهَادِ وَذَكَرَ الْجَنَّةَ وَرَجُلٌ مِنْ الْأَنْصَارِ يَأْكُلُ تَمَرَاتٍ فِي يَدِهِ فَقَالَ إِنِّي لَحَرِيصٌ عَلَى الدُّنْيَا إِنْ جَلَسْتُ حَتَّى أَفْرُغَ مِنْهُنَّ فَرَمَى مَا فِي يَدِهِ فَحَمَلَ بِسَيْفِهِ فَقَاتَلَ حَتَّى قُتِلَ
হাদীস নং:৯৯৮
১৮. জিহাদে উৎসাহ প্রদান
রেওয়ায়ত ৪৩. মুআয ইবনে জাবাল (রাযিঃ) বলিয়াছেনঃ জিহাদ দুই প্রকার। এক হইল যাহাতে একজন সর্বোত্তম সম্পদ ব্যয় করে। সাথীদের সহিত প্রেম-প্রীতির বন্ধনে আব্দ্ধ হইয়া থাকে। সেনাধ্যক্ষের নির্দেশ পালন করে এবং বিশৃংখলা সৃষ্টি হইতে সে বাঁচিয়া থাকে। এই ধরনের জিহাদ সম্পূর্ণভাবে সওয়াবের। আরেক ধরনের জিহাদ হইল যাহাতে একজন উত্তম সম্পদ ব্যয় করে না, সঙ্গীদের সহিত প্রীতির সম্পর্ক রাখে না, সেনাধ্যক্ষের নির্দেশের অবাধ্যতা করে এবং বিশৃংখলা সৃষ্টি করা হইতে বিরত থাকে না। এই ধরনের জিহাদে সওয়াব লাভ হওয়া তো দূরের কথা, গুনাহ না লইয়া ফিরিয়া আসিতে পারাটাই অনেক মুশকিল।
بَاب التَّرْغِيبِ فِي الْجِهَادِ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ أَنَّهُ قَالَ الْغَزْوُ غَزْوَانِ فَغَزْوٌ تُنْفَقُ فِيهِ الْكَرِيمَةُ وَيُيَاسَرُ فِيهِ الشَّرِيكُ وَيُطَاعُ فِيهِ ذُو الْأَمْرِ وَيُجْتَنَبُ فِيهِ الْفَسَادُ فَذَلِكَ الْغَزْوُ خَيْرٌ كُلُّهُ وَغَزْوٌ لَا تُنْفَقُ فِيهِ الْكَرِيمَةُ وَلَا يُيَاسَرُ فِيهِ الشَّرِيكُ وَلَا يُطَاعُ فِيهِ ذُو الْأَمْرِ وَلَا يُجْتَنَبُ فِيهِ الْفَسَادُ فَذَلِكَ الْغَزْوُ لَا يَرْجِعُ صَاحِبُهُ كَفَافًا
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান