কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
كتاب السنن للإمام ابن ماجة
৩৪. ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতপূর্ব আলামতের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৩ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:৩৯৯৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৯৫
ধন-সম্পদের ফিতনা
৩৯৯৫। ঈসা ইব্ন হাম্মাদ মিসরী (রাযিঃ)...... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দাঁড়িয়ে লোকদের সামনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহর শপথ! হে লোক সকল! আমি তোমাদের উপর কোন কিছুর আশংকা করি না, তবে, আল্লাহ তা'আলা দুনিয়ার মোহনীয় ধন-সম্পদ থেকে যা উৎপন্ন করেন (তাতে শংকাবোধ করছি)। তখন এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো। ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! উত্তম কি অধম ডেকে আনে ? তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তুমি কি বলেছিলে ? সে বললোঃ আমি বলেছিলামঃ উত্তমের সাথে অধম থাকতে পারে কি ? তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ নিশ্চয় উত্তম উত্তমই নিয়ে আসে। অথবা তা উত্তম। নিশ্চয় বর্ষাকাল যা কিছু উৎপন্ন করে, তা পেট ভর্তি করে খেলে পশুকে মেরে ফেলে অথবা বদ হযমী সৃষ্টি করে, কিংবা মৃত্যুর কোলে পৌছায় (যখন পশু তা অধিক পরিমাণে খায়)। কিন্তু যে সব পশু খিযির (এক ধরনের তৃণ যা উপাদেয় নয় এবং পশুরা পেট পুরো খায় না) খায় এবং যখন তার পেটের। উভয় প্রান্ত পূর্তি হয়ে যায়, তখন সূর্যের আলোতে গমণ করে এবং রোমখন করে। যখন তা হযম হয়ে যায়, তখন আমার এসে খায়। এমনিভাবে যে কেউ তার অধিকার মাফিক ধন-সম্পদ গ্রহণ করবে, তাতে তার বরকত ও কল্যাণ আসবে এবং যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে মাল অর্জন করে। তার উপমা হচ্ছে সেই ব্যক্তির মত, যে খায় অথচ পরিতৃপ্ত হয় না।
بَاب فِتْنَةِ الْمَالِ
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ حَمَّادٍ الْمِصْرِيُّ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَخَطَبَ فَقَالَ " لاَ وَاللَّهِ مَا أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَيُّهَا النَّاسُ إِلاَّ مَا يُخْرِجُ اللَّهُ لَكُمْ مِنْ زَهْرَةِ الدُّنْيَا " . فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأْتِي الْخَيْرُ بِالشَّرِّ فَصَمَتَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ سَاعَةً ثُمَّ قَالَ " كَيْفَ قُلْتَ " . قَالَ قُلْتُ وَهَلْ يَأْتِي الْخَيْرُ بِالشَّرِّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ الْخَيْرَ لاَ يَأْتِي إِلاَّ بِخَيْرٍ أَوَخَيْرٌ هُوَ إِنَّ كُلَّ مَا يُنْبِتُ الرَّبِيعُ يَقْتُلُ حَبَطًا أَوْ يُلِمُّ إِلاَّ آكِلَةَ الْخَضِرِ أَكَلَتْ حَتَّى إِذَا امْتَلأَتْ خَاصِرَتَاهَا اسْتَقْبَلَتِ الشَّمْسَ فَثَلَطَتْ وَبَالَتْ ثُمَّ اجْتَرَّتْ فَعَادَتْ فَأَكَلَتْ فَمَنْ يَأْخُذُ مَالاً بِحَقِّهِ يُبَارَكُ لَهُ وَمَنْ يَأْخُذُ مَالاً بِغَيْرِ حَقِّهِ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ الَّذِي يَأْكُلُ وَلاَ يَشْبَعُ " .
হাদীস নং:৩৯৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৯৬
ধন-সম্পদের ফিতনা
৩৯৯৬। আমর ইব্ন সাওয়াদ মিসরী (রাহঃ)......... আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইব্ন আ'স (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ যখন পারস্য ও রোম সাম্রাজ্যের ধন-ভান্ডার তোমাদের করতলগত হবে, তোমরা তখন কিরূপ হবে? আব্দুর রহমান ইবন আউফ (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহ যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন আমরা সে ভাবেই বলবো। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এ ছাড়া অন্য কিছু ? তবে তোমরা একে অপরের ধন-সম্পদে আপত্তি প্রকাশ করবে, পরস্পরে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করবে, একে অপরের পিছে লেগে থাকবে, পরিশেষে একে অপরের সাথে শত্রুতা পোষণ করবে অথবা এর অনুরূপ কাজ করবে। অতঃপর তোমরা মিসকীন মুহাজিরদের কাছে যাবে। তাদের কতককে কতকের গর্দান মারার কাজে লাগিয়ে দিবে।
بَاب فِتْنَةِ الْمَالِ
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ الْمِصْرِيُّ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَنْبَأَنَا عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، أَنَّ بَكْرَ بْنَ سَوَادَةَ، حَدَّثَهُ أَنَّ يَزِيدَ بْنَ رَبَاحٍ حَدَّثَهُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ قَالَ " إِذَا فُتِحَتْ عَلَيْكُمْ خَزَائِنُ فَارِسَ وَالرُّومِ أَىُّ قَوْمٍ أَنْتُمْ " . قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ نَقُولُ كَمَا أَمَرَنَا اللَّهُ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " أَوْ غَيْرَ ذَلِكَ تَتَنَافَسُونَ ثُمَّ تَتَحَاسَدُونَ ثُمَّ تَتَدَابَرُونَ ثُمَّ تَتَبَاغَضُونَ أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ ثُمَّ تَنْطَلِقُونَ فِي مَسَاكِينِ الْمُهَاجِرِينَ فَتَجْعَلُونَ بَعْضَهُمْ عَلَى رِقَابِ بَعْضٍ " .

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৩৯৯৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৯৭
ধন-সম্পদের ফিতনা
৩৯৯৭। ইউনুস ইব্ন আব্দুল আ'লা মিসরী (রাহঃ)........ বানু আমির ইব্ন লুই-এর মিত্র ও বাদরী সাহাবী আমর ইবন আউফ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবু উবায়দাহ ইব্ন জাররাহ (রাযিঃ) কে বাহরাইন শহরে জিযিয়া আদায় করার জন্য পাঠান। আর নবী (ﷺ) বাহরাইন বাসীদের সাথে সন্ধিচুক্তি সম্পাদন করেছিলেন এবং আলা ইবন হাদরামী (রাযিঃ) কে তাদের শাসক নিযুক্ত করেছিলেন। আবু উবায়দাহ (রাযিঃ) বাহরাইনের রাজস্ব বাবদ আদায়কৃত ধন-সম্পদ নিয়ে মদীনাতে আসেন। আনসারগণ তার আগমনের কথা শুনতে পেলেন। তারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে সালাতুল ফজর আদায় করেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সালাত থেকে ফারেগ হয়ে ফিরছিলেন, তখন লোকেরা তাঁর সামনে হাযির হলো। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের দেখে মুচকী হাসলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি বুঝতে পারছি, তোমরা শুনেছো যে, আবু উবায়দাহ (রাযিঃ) বাইরাইন থেকে কিছু নিয়ে এসেছেন। তারা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! জ্বি হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা খোশ-খবর গ্রহণ কর এবং আশাবাদী হও সে জিনিসের প্রতি যা তোমাদের খুশী করেছে। আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের ব্যাপারে দারিদ্রকে ভয় করি না। কিন্তু আমি আশংকা করছি যে, দুনিয়া তোমাদের জন্য প্রশস্ত হয়ে যাওয়ার, যেমন পূর্ববর্তীদিগের জন্য প্রশস্ত হয়েছিল। পরিশেষে, তোমরা হিংসা-বিদ্বেষ করতে থাকবে যেমন তারা ঈর্ষাকাতর হয়েছিল পরস্পরে। আর তোমাদের ধ্বংস ডেকে আনবে যেমন পূর্ববর্তীদের ধ্বংস ডেকে এনেছিল।
بَاب فِتْنَةِ الْمَالِ
حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الْمِصْرِيُّ، أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، . أَنَّ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ، أَخْبَرَهُ عَنْ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ، - وَهُوَ حَلِيفُ بَنِي عَامِرِ بْنِ لُؤَىٍّ وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ - أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بَعَثَ أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ إِلَى الْبَحْرَيْنِ يَأْتِي بِجِزْيَتِهَا وَكَانَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ هُوَ صَالَحَ أَهْلَ الْبَحْرَيْنِ وَأَمَّرَ عَلَيْهِمُ الْعَلاَءَ بْنَ الْحَضْرَمِيِّ فَقَدِمَ أَبُو عُبَيْدَةَ بِمَالٍ مِنَ الْبَحْرَيْنِ فَسَمِعَتِ الأَنْصَارُ بِقُدُومِ أَبِي عُبَيْدَةَ فَوَافَوْا صَلاَةَ الْفَجْرِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ انْصَرَفَ فَتَعَرَّضُوا لَهُ فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ حِينَ رَآهُمْ ثُمَّ قَالَ " أَظُنُّكُمْ سَمِعْتُمْ أَنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ قَدِمَ بِشَىْءٍ مِنَ الْبَحْرَيْنِ " . قَالُوا أَجَلْ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " أَبْشِرُوا وَأَمِّلُوا مَا يَسُرُّكُمْ فَوَاللَّهِ مَا الْفَقْرَ أَخْشَى عَلَيْكُمْ وَلَكِنِّي أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَنْ تُبْسَطَ الدُّنْيَا عَلَيْكُمْ كَمَا بُسِطَتْ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ فَتَنَافَسُوهَا كَمَا تَنَافَسُوهَا فَتُهْلِكَكُمْ كَمَا أَهْلَكَتْهُمْ " .