কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
كتاب السنن للإمام ابن ماجة
২৩. হজ্ব - উমরার অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৪ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:৩০৫৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩০৫৫
কুরবানীর দিন ভাষণ প্রদান
৩০৫৫। আবু বাক্র ইবন আবু শাইবা (রাহঃ)...... সুলাইমান ইবন আমর ইবন আহওয়াস সূত্রে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) কে বিদায় হজ্জে বলতে শুনেছিঃ হে লোক সকল! কোন দিনটি সর্বাধিক সম্মানিত? তিনি তিনবার একথা বলেন। তাঁরা বললেনঃ হজ্জে আকবরের দিন।[১] তিনি বলেন, তোমাদের রক্ত (জীবন), তোমাদের সম্পদ, তোমাদের মান-সম্ভ্রম তোমাদের পরস্পরের জন্য (তাতে হস্তক্ষেপ করা) হারাম- যেভাবে তোমাদের এই দিনে, এই মাসে এবং এই শহরে হারাম। সাবধান! কেউ অপরাধ করলে সেজন্য তাকেই দায়ী করা হবে। পিতার অপরাধের জন্য পুত্রকে দায়ী করা যাবে না এবং পুত্রের অপরাধের জন্য পিতাকে দায়ী করা যাবে না। জেনে রাখ! তোমাদের এই শহরে শয়তান নিজের ইবাদত পাওয়া থেকে চিরকালের জন্য নিরাশ হয়ে গেছে । কিন্তু কতগুলো কাজ যা তোমরা তুচ্ছজ্ঞানে করতে গিয়ে শয়তানের আনুগত্য কর এবং তাতে সে খুশী হয়ে যায়। সাবধান! জাহিলী যুগের সকল রক্তের (হত্যার) দাবী রহিত হল। এসব দাবীর মধ্যে আমি সর্বপ্রথমে হারিস ইব্ন আব্দুল মুত্তালিবের রক্তের দাবী রহিত (সে লাইস গোত্রে প্রতিপালিত হওয়াকালীন হুযাইল গোত্রের লোকেরা তাকে হত্যা করে)। সাবধান! জাহিলী যুগের সমস্ত সূদের দাবী রহিত হল। তবে তোমরা মূলধন ফেরত পাবে, তোমরা যুলুমও করবে না, যুলুমের শিকারও হবে না। শুন হে আমার উম্মাত! আমি কি পৌঁছে দিয়েছি? একথা তিনি তিনবার জিজ্ঞেস করেন। তারা বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! সাক্ষী থাক। এ কথাও তিনি তিনবার বলেন।
[১] 'হজ্জের বড় দিন' (ইয়াওমুল-হাজ্জিল আকবার)-এর ব্যাখ্যা মতভেদ আছে। কারো মতে এই বাক্যাংশ দ্বারা ৯ম হিজরীতে অনুষ্ঠিত হজ্জ এবং কারো মতে ১০ম হিজরীতে অনুষ্ঠিত হজ্জ বুঝানো হয়েছে। অপর একদল আলেমের মতে 'হজ্জ আকবার' বলে হজ্জকে উমরা থেকে পৃথক করা হয়েছে। কারণ ইসলাম-পূর্ব যুগে আরবরা হজ্জকে বড় হজ্জ এবং উমরাকে ছোট হজ্জ বলত। হজ্জের দিনটিই যে একটি মহান, মহিমান্বিত ও গৌরবময় দিন-উক্ত ব্যাখ্যাংশ দ্বারা বরং তাই বুঝানো হয়েছে- (অনুবাদক)।
[১] 'হজ্জের বড় দিন' (ইয়াওমুল-হাজ্জিল আকবার)-এর ব্যাখ্যা মতভেদ আছে। কারো মতে এই বাক্যাংশ দ্বারা ৯ম হিজরীতে অনুষ্ঠিত হজ্জ এবং কারো মতে ১০ম হিজরীতে অনুষ্ঠিত হজ্জ বুঝানো হয়েছে। অপর একদল আলেমের মতে 'হজ্জ আকবার' বলে হজ্জকে উমরা থেকে পৃথক করা হয়েছে। কারণ ইসলাম-পূর্ব যুগে আরবরা হজ্জকে বড় হজ্জ এবং উমরাকে ছোট হজ্জ বলত। হজ্জের দিনটিই যে একটি মহান, মহিমান্বিত ও গৌরবময় দিন-উক্ত ব্যাখ্যাংশ দ্বারা বরং তাই বুঝানো হয়েছে- (অনুবাদক)।
بَاب الْخُطْبَةِ يَوْمَ النَّحْرِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَهَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ شَبِيبِ بْنِ غَرْقَدَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَلاَ أَىُّ يَوْمٍ أَحْرَمُ " . ثَلاَثَ مَرَّاتٍ قَالُوا يَوْمُ الْحَجِّ الأَكْبَرِ . قَالَ " فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ بَيْنَكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا أَلاَ لاَ يَجْنِي جَانٍ إِلاَّ عَلَى نَفْسِهِ وَلاَ يَجْنِي وَالِدٌ عَلَى وَلَدِهِ وَلاَ مَوْلُودٌ عَلَى وَالِدِهِ . أَلاَ إِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ أَيِسَ أَنْ يُعْبَدَ فِي بَلَدِكُمْ هَذَا أَبَدًا وَلَكِنْ سَيَكُونُ لَهُ طَاعَةٌ فِي بَعْضِ مَا تَحْتَقِرُونَ مِنْ أَعْمَالِكُمْ فَيَرْضَى بِهَا أَلاَ وَكُلُّ دَمٍ مِنْ دِمَاءِ الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ وَأَوَّلُ مَا أَضَعُ مِنْهَا دَمُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ - كَانَ مُسْتَرْضِعًا فِي بَنِي لَيْثٍ فَقَتَلَتْهُ هُذَيْلٌ - أَلاَ وَإِنَّ كُلَّ رِبًا مِنْ رِبَا الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ لَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَالِكُمْ لاَ تَظْلِمُونَ وَلاَ تُظْلَمُونَ أَلاَ يَا أُمَّتَاهُ هَلْ بَلَّغْتُ " . ثَلاَثَ مَرَّاتٍ قَالُوا نَعَمْ . قَالَ " اللَّهُمَّ اشْهَدْ " . ثَلاَثَ مَرَّاتٍ .

তাহকীক:
তাহকীক চলমান

বর্ণনাকারী:
হাদীস নং:৩০৫৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩০৫৬
কুরবানীর দিন ভাষণ প্রদান
৩০৫৬। মুহাম্মাদ ইব্ন আব্দুল্লাহ ইবন নুমাইর (রাহঃ)...... মুহাম্মাদ ইবন জুবায়র ইবন মুতঈম সূত্রে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মিনার মসজিদুল খায়ফ-এ দাঁড়ালেন এবং বললেনঃ আল্লাহ তা'আলা সেই ব্যক্তিকে সজীব রাখুন- যে আমার কথা শুনে, অতঃপর তা (অন্যদের নিকট) পৌঁছে দেয়। জ্ঞানের অনেক বাহক মূলত জ্ঞানী নয়। কোন কোন জ্ঞানের বাহক যার নিকট জ্ঞান বয়ে নিয়ে যায়- সে তার চেয়ে অধিক জ্ঞানী। তিনটি বিষয়ে মু'মিন ব্যক্তির অন্তর প্রতারণা করতে পারে না। (১) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমলকে ইখলাসের সাথে (সন্তোষ লাভের) জন্য সম্পন্ন করা, (২) মুসলিম শাসকদের নসীহত করা এবং (৩) মুসলিম জামাআতের (সমাজের) সাথে অবিচ্ছিন্ন থাকার কারণ মুসলমানদের দোয়া তাদেরকে পেছন থেকে পরিবেষ্টন করে রাখে।
بَاب الْخُطْبَةِ يَوْمَ النَّحْرِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ السَّلاَمِ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِالْخَيْفِ مِنْ مِنًى فَقَالَ " نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مَقَالَتِي فَبَلَّغَهَا فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ غَيْرُ فَقِيهٍ وَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ ثَلاَثٌ لاَ يُغِلُّ عَلَيْهِنَّ قَلْبُ مُؤْمِنٍ إِخْلاَصُ الْعَمَلِ لِلَّهِ وَالنَّصِيحَةُ لِوُلاَةِ الْمُسْلِمِينَ وَلُزُومُ جَمَاعَتِهِمْ فَإِنَّ دَعْوَتَهُمْ تُحِيطُ مِنْ وَرَائِهِمْ " .

তাহকীক:
তাহকীক চলমান

বর্ণনাকারী:
হাদীস নং:৩০৫৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩০৫৭
কুরবানীর দিন ভাষণ প্রদান
৩০৫৭। ইসমাঈল ইবন তাওবা (রাহঃ)...... আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আরাফাতের ময়দানে তাঁর কানকাটা উটনীর উপর আরোহণ করা অবস্থায় বলেনঃ তোমরা কি জান- আজ কোন দিন, এটা কোন মাস এবং এটা কোন শহর ? তাঁরা বলেন, এটা (মক্কা) সম্মানিত শহর, সম্মানিত মাস ও সম্মানিত দিন। তিনি (আরো) বলেনঃ সাবধান! তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের রক্ত তোমাদের পরস্পরের প্রতি তেমনি হারাম যেমনি- তোমাদের এই মাসের সম্মান রয়েছে তোমাদের এই শহরে তোমাদের এই দিনে। শুনে রাখ! আমি তোমাদের আগেই হাওয কাওসারে উপস্থিত থাকব। অন্যান্য উম্মাতের তুলনায় তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে আমি গৌরব করব। তোমরা যেন আমার চেহারা কালিমালিপ্ত না কর। সাবধান! কিছু লোককে আমি মুক্ত করতে পারব, আর কিছু লোককে আমার নিকট থেকে ছিনিয়ে নেয়া হবে। তখন আমি বলব, হে আল্লাহ! এরা তো আমার সাহাবী! তখন তিনি বলবেনঃ তোমার পরে এরা কি নতুন কাজ করেছে, তা তুমি জান না।
بَاب الْخُطْبَةِ يَوْمَ النَّحْرِ
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ تَوْبَةَ، حَدَّثَنَا زَافِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي سِنَانٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَهُوَ عَلَى نَاقَتِهِ الْمُخَضْرَمَةِ بِعَرَفَاتٍ فَقَالَ " أَتَدْرُونَ أَىُّ يَوْمٍ هَذَا وَأَىُّ شَهْرٍ هَذَا وَأَىُّ بَلَدٍ هَذَا " . قَالُوا هَذَا بَلَدٌ حَرَامٌ وَشَهْرٌ حَرَامٌ وَيَوْمٌ حَرَامٌ . قَالَ " أَلاَ وَإِنَّ أَمْوَالَكُمْ وَدِمَاءَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ شَهْرِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا فِي يَوْمِكُمْ هَذَا أَلاَ وَإِنِّي فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ وَأُكَاثِرُ بِكُمُ الأُمَمَ فَلاَ تُسَوِّدُوا وَجْهِي أَلاَ وَإِنِّي مُسْتَنْقِذٌ أُنَاسًا وَمُسْتَنْقَذٌ مِنِّي أُنَاسٌ فَأَقُولُ يَا رَبِّ أُصَيْحَابِي . فَيَقُولُ إِنَّكَ لاَ تَدْرِي مَا أَحْدَثُوا بَعْدَكَ " .

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৩০৫৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩০৫৮
কুরবানীর দিন ভাষণ প্রদান
৩০৫৮। হিশাম ইবন আম্মার (রাহঃ)..... ইবন উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যে বছর হজ্জ করেন, সেই বছর কুরবানীর দিন জামরাসমূহের মধ্যস্থলে দাঁড়ালেন এবং জিজ্ঞাসা করলেনঃ আজ কোন দিন? সাহাবীগণ বললেন, কুরবানীর দিন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ এটি কোন শহর? তাঁরা বললেন, এটা আল্লাহর সম্মানিত শহর। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ এটি কোন মাস ? তাঁরা বললেন, আল্লাহর সম্মানিত মাস। তিনি বললেনঃ এটি হজ্জে আকবরের দিন। তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ তোমাদের মান-সম্ভ্রম (প্রভৃতির উপর হস্তক্ষেপ) তোমাদের জন্য হারাম- যেমন এই শহরের হুরমাত (সম্মান) এই মাসে এবং এই দিনে। এরপর তিনি বললেনঃ আমি কি পৌঁছে দিয়েছি। তাঁরা বললেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বলতে শুরু করলেনঃ হে আল্লাহ! সাক্ষী থাকুন। অতঃপর তিনি লোকদের বিদায় দেন। তখন তারা বলেন, এটা বিদায় হজ্জ।
بَاب الْخُطْبَةِ يَوْمَ النَّحْرِ
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ الْغَازِ، قَالَ سَمِعْتُ نَافِعًا، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَقَفَ يَوْمَ النَّحْرِ بَيْنَ الْجَمَرَاتِ فِي الْحَجَّةِ الَّتِي حَجَّ فِيهَا فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " أَىُّ يَوْمٍ هَذَا " . قَالُوا يَوْمُ النَّحْرِ . قَالَ " فَأَىُّ بَلَدٍ هَذَا " . قَالُوا هَذَا بَلَدُ اللَّهِ الْحَرَامُ . قَالَ " فَأَىُّ شَهْرٍ هَذَا " . قَالُوا شَهْرُ اللَّهِ الْحَرَامُ . قَالَ " هَذَا يَوْمُ الْحَجِّ الأَكْبَرِ وَدِمَاؤُكُمْ وَأَمْوَالُكُمْ وَأَعْرَاضُكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ هَذَا الْبَلَدِ فِي هَذَا الشَّهْرِ فِي هَذَا الْيَوْمِ " . ثُمَّ قَالَ " هَلْ بَلَّغْتُ " . قَالُوا نَعَمْ . فَطَفِقَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " اللَّهُمَّ اشْهَدْ " . ثُمَّ وَدَّعَ النَّاسَ فَقَالُوا هَذِهِ حَجَّةُ الْوَدَاعِ .

তাহকীক:
তাহকীক চলমান