কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

كتاب السنن للإمام ابن ماجة

৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:১০৬০
আন্তর্জাতিক নং: ১০৬০
যথাযথভাবে সালাত আদায় করা
১০৬০। আবু বকর ইবন আবু শায়বা (রাহঃ) ........ আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদের এক কোণে অবস্থান করছিলেন, ইতিমধ্যে এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করল। সে তাঁর কাছে এসে সালাম দিল। তিনি বললেনঃ তোমার প্রতিও সালাম। তুমি ফিরে যাও এবং সালাত আদায় করে নাও। কেননা তুমি সালাত আদায় করনি। সে ফিরে গেল এবং সালাত আদায় করলো। তারপর সে নবী (ﷺ)-এর কাছে এসে সালাম দিল। তিনি বললেনঃ তোমার প্রতিও সালাম। তুমি ফিরে যাও এবং সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। তৃতীয়বারে সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ) আমাকে সালাত আদায়ের পদ্ধতি শিখিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ তুমি যখন সালাত আদায়ের ইচ্ছা করবে, তখন পুরাপুরিভাবে উযূ করে নেবে। তারপর কিবলামুখী হয়ে তাকবীর বলবে। এরপর কুরআনের যে অংশ তোমার কাছে সহজ মনে হয় সেখান থেকে কিরাআত পাঠ করবে। তারপর ধীর স্থিরভাবে রুকূ করবে। এর পর রুকূ থেকে সোজা স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে যাবে। তারপর তুমি ধীর স্থিরতার সাথে সিজদা করবে। এর পর মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসবে। এভাবে তুমি তোমার সালাতের রুকনগুলো আদায় করবে।
بَاب إِتْمَامِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَجُلاً، دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَصَلَّى وَرَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي نَاحِيَةٍ مِنَ الْمَسْجِدِ فَجَاءَ فَسَلَّمَ فَقَالَ ‏"‏ وَعَلَيْكَ فَارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ ‏"‏ ‏.‏ فَرَجَعَ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ ‏"‏ وَعَلَيْكَ فَارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ بَعْدُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فِي الثَّالِثَةَ فَعَلِّمْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَأَسْبِغِ الْوُضُوءَ ثُمَّ اسْتَقْبِلِ الْقِبْلَةَ وَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ رَأْسَكَ حَتَّى تَسْتَوِيَ قَاعِدًا ثُمَّ افْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا ‏"‏ ‏.‏
হাদীস নং:১০৬১
আন্তর্জাতিক নং: ১০৬১
যথাযথভাবে সালাত আদায় করা
১০৬১। মুহাম্মাদ ইবন বাশশার (রাহঃ) .....মুহাম্মাদ ইবন 'আমর ইবন 'আতা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবু হুমায়দ সা'য়িদী (রাযিঃ)-কে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দশজন সাহাবীর উপস্থিতিতে, যাঁদের মধ্যে আবু কাতাদা (রাযিঃ)-ও ছিলেন, বলতে শুনেছিঃ আবু হুমায়দ (রাযিঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সালাতের ব্যাপারে আমি তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞাত। তারা বললঃ তা কী ভাবে? আল্লাহর কসম! তুমি আমাদের চেয়ে তাঁর অধিক অনুসরণকারী নও এবং সাহচর্যলাভের দিক থেকেও তুমি আমাদের অগ্রগামী নও। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তাঁরা বললঃ তুমি তোমার বক্তব্য পেশ কর। তিনি বললেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন সালাতে দাঁড়াতেন সঙ্গে সঙ্গে তাকবীর বলতেন। তারপর তিনি তাঁর উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এ সময় তাঁর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্ব-স্ব স্থানে থাকত। এরপর তিনি কিরাআত পাঠ করতেন, তারপর তাকবীর বলে তাঁর উভয় কাঁধ বরাবর উভয় হাত উঠালেন। এরপর তিনি রুকূ করতেন তাঁর দু'হাত যথাযথভাবে দু’ হাঁটুর উপরে রাখতেন। তবে মাথা অধিক উঁচু কিংবা নীচু না করে সমানভাবে রাখতেন। এরপর তিনি 'সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ' বলে উভয় হাত উভয় কাঁধ বরাবর উঠাতেন, এমনকি তাঁর প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ স্ব স্ব স্থানে থাকত। এরপর তিনি (সিজদার জন্য) যমীনের দিকে ঝুঁকে পড়তেন এবং সিজদার সময় পার্শ্বদেশ থেকে উভয় হাত পৃথক রাখতেন। তারপর তিনি মাথা উঠিয়ে বাঁ পা বিছিয়ে এর উপর বসতেন এবং তিনি সিজদার সময় উভয় পায়ের আংগুলগুলো ছড়িয়ে রাখতেন, তারপর সিজদা করতেন। এরপর তাকবীর বলে (সিজদা থেকে উঠে) বাম পায়ের উপর বসতেন। এমনকি তাঁর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্ব স্ব স্থানে থাকত। এরপর তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন এবং দ্বিতীয় রাক'আতেও অনুরূপ করতেন। এরপর তিনি যখন দ্বিতীয় রাক'আত থেকে দাঁড়াতেন, তখন তিনি তাঁর উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন, যেমন উঠাতেন সালাত শুরু করার সময়। আর তিনি অবশিষ্ট সালাত এভাবে আদায় করেন, এমনকি শেষ সিজদা করে সালাম ফিরিয়ে এক পা আগে-পিছে করে, বাম দিকের নিতম্বের উপর ভর করে বসতেন। তারা বলল তুমি ঠিকই বলেছ। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এভাবেই সালাত আদায় করতেন।
بَاب إِتْمَامِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا حُمَيْدٍ السَّاعِدِيَّ، فِي عَشْرَةٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِيهِمْ أَبُو قَتَادَةَ فَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ أَنَا أَعْلَمُكُمْ بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏.‏ قَالُوا لِمَ فَوَاللَّهِ مَا كُنْتَ بِأَكْثَرِنَا لَهُ تَبَعَةً وَلاَ أَقْدَمَنَا لَهُ صُحْبَةً ‏.‏ قَالَ بَلَى ‏.‏ قَالُوا فَاعْرِضْ ‏.‏ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ كَبَّرَ ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ وَيَقِرَّ كُلُّ عُضْوٍ مِنْهُ فِي مَوْضِعِهِ ثُمَّ يَقْرَأُ ثُمَّ يُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ يَرْكَعُ وَيَضَعُ رَاحَتَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ مُعْتَمِدًا لاَ يَصُبُّ رَأْسَهُ وَلاَ يُقْنِعُ مُعْتَدِلاً ثُمَّ يَقُولُ ‏ "‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ‏"‏ ‏.‏ وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ حَتَّى يَقِرَّ كُلُّ عَظْمٍ إِلَى مَوْضِعِهِ ثُمَّ يَهْوِي إِلَى الأَرْضِ وَيُجَافِي يَدَيْهِ عَنْ جَنْبَيْهِ ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ وَيَثْنِي رِجْلَهُ الْيُسْرَى فَيَقْعُدُ عَلَيْهَا وَيَفْتَخُ أَصَابِعَ رِجْلَيْهِ إِذَا سَجَدَ ثُمَّ يَسْجُدُ ثُمَّ يُكَبِّرُ وَيَجْلِسُ عَلَى رِجْلِهِ الْيُسْرَى حَتَّى يَرْجِعَ كُلُّ عَظْمٍ مِنْهُ إِلَى مَوْضِعِهِ ثُمَّ يَقُومُ فَيَصْنَعُ فِي الرَّكْعَةِ الأُخْرَى مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ إِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ كَمَا صَنَعَ عِنْدَ افْتِتَاحِ الصَّلاَةِ ثُمَّ يُصَلِّي بَقِيَّةَ صَلاَتِهِ هَكَذَا حَتَّى إِذَا كَانَتِ السَّجْدَةُ الَّتِي يَنْقَضِي فِيهَا التَّسْلِيمُ أَخَّرَ إِحْدَى رِجْلَيْهِ وَجَلَسَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْسَرِ مُتَوَرِّكًا ‏.‏ قَالُوا صَدَقْتَ هَكَذَا كَانَ يُصَلِّي رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏.‏
হাদীস নং:১০৬২
আন্তর্জাতিক নং: ১০৬২
যথাযথভাবে সালাত আদায় করা
১০৬২। আবু বকর ইবন আবু শায়বা (রাহঃ) …… 'আমরা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সালাত কিরূপ ছিল, সে বিষয়ে আমি 'আয়েশা (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ তিনি উযূ করার সময় বিসমিল্লাহ বলে পাত্রে দুটো হাত রেখে পূর্ণরূপে উযু করে নিতেন। এরপর তিনি কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে তাকবীর বলতেন এবং তাঁর উভয় হাত উভয় কাঁধ বরাবর উঠাতেন। তারপর রুকুকালে উভয় হাত হাঁটুতে রাখতেন এবং হাত দুটোকে পৃথক করে রাখতেন। তারপর মাথা উঠিয়ে পিঠ সোজা করে দাঁড়িয়ে যেতেন। তোমরা যতক্ষণ কিয়াম কর, এর চেয়ে তিনি দীর্ঘ কিয়াম করতেন। এরপর সিজদা করতেন এবং তাঁর হাত দুটো কিবলামুখী করে রাখতেন। আমি যথাসম্ভব তাকে হাত দুটো পৃথক রাখতে দেখেছি। এরপর তিনি তাঁর মাথা উঠিয়ে বাঁ পায়ের উপর বসতেন এবং ডান পায়ের পাতা খাড়া করে রাখতেন। তিনি বাঁ দিক ঝুঁকে বসতে অপছন্দ করতেন।
بَاب إِتْمَامِ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ حَارِثَةَ بْنِ أَبِي الرِّجَالِ، عَنْ عَمْرَةَ، قَالَتْ سَأَلْتُ عَائِشَةَ كَيْفَ كَانَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِذَا تَوَضَّأَ فَوَضَعَ يَدَيْهِ فِي الإِنَاءِ سَمَّى اللَّهَ وَيُسْبِغُ الْوُضُوءَ ثُمَّ يَقُومُ فَيَسْتَقْبِلُ الْقِبْلَةَ فَيُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ حِذَاءَ مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ يَرْكَعُ فَيَضَعُ يَدَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ وَيُجَافِي بِعَضُدَيْهِ ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ فَيُقِيمُ صُلْبَهُ وَيَقُومُ قِيَامًا هُوَ أَطْوَلُ مِنْ قِيَامِكُمْ قَلِيلاً ثُمَّ يَسْجُدُ فَيَضَعُ يَدَيْهِ تِجَاهَ الْقِبْلَةِ وَيُجَافِي بِعَضُدَيْهِ مَا اسْتَطَاعَ فِيمَا رَأَيْتُ ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ فَيَجْلِسُ عَلَى قَدَمِهِ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ الْيُمْنَى وَيَكْرَهُ أَنْ يَسْقُطَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْسَرِ ‏.‏