কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ

المجتبى من السنن للنسائي

৪৯. আদালত - বিচারকের নীতিমালা সংক্রান্ত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৫৪০০
আন্তর্জাতিক নং: ৫৪০০
(وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمْ الْكَافِرُونَ) এর তাফসীর
৫৩৯৯. হুসায়ন ইবনে হুরায়স (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঈসা ইবনে মারয়াম (আলাইহিস সালাম)-এর পর এমন কয়েকজন বাদশাহ ছিলেন, যারা তাওরাত এবং ইঞ্জিলে পরিবর্তন সাধন করেন। তাদের মধ্যে এমন কিছু ঈমানদার লোকও ছিলেন, যারা তাওরাত পাঠ করতেন। তখন তাদের বাদশাহদেরকে বলা হলো—এ সকল লোক আমাদেরকে যে গালি দিচ্ছে, এর চেয়ে কঠিন গালি আর কি হতে পারে? তারা পাঠ করেঃ “যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান দ্বারা মীমাংসা করে না, তারা কাফির। তাদের পড়ার মধ্যে থাকে এই আয়াত এবং ঐ সকল আয়াত, যাতে আমাদের কর্মকাণ্ডের দোষ প্রকাশ পায়। তাদেরকে আহবান করুন, তারা যেন আমরা যেরূপ পাঠ করি, সেরূপ পাঠ করে, আর আমরা যেরূপ ঈমান এনেছি, সেরূপ ঈমান আনে।

বাদশাহ তাদের সকলকে ডেকে একত্র করলেন এবং তাদের সামনে পেশ করলেন যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে, যদিনা তারা তাওরাত ও ইঞ্জিল পাঠ ত্যাগ করে, তবে ঐ সকল আয়াত ব্যতীত, যা পরিবর্তন হয়েছে। তারা বললোঃ এর দ্বারা তোমাদের উদ্দেশ্য কী? আমাদেরকে আমাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দাও। তাদের একদল বললোঃ আমাদের জন্য একটি স্তম্ভ তৈরী কর, এরপর আমাদেরকে তাতে চড়িয়ে দাও এবং আমাদেরকে এমন কিছু দান কর, যা দ্বারা আমরা আমাদের খাদ্য ও পানীয় উঠিয়ে নিতে পারি, তা হলে আমরা আর তোমাদের নিকট আসবো না।

তাদের আর একদল বললোঃ আমাদেরকে ছেড়ে দাও, আমরা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবে এবং বন্য পশুর ন্যায় আহার ও পান করবো। আর এরপর যদি তোমাদের দেশে আমাদেরকে পাও, তবে আমাদেরকে হত্যা করো। তাদের আর একদল বললোঃ মরুভূমিতে আমাদের জন্য গির্জা তৈরী করে দাও। আমরা কূপ খনন করবো এবং তরি-তরকারি ফলাব, আমরা তোমাদের কাছেও আসবাে না এবং তোমাদের পাশ দিয়ে কোথাও যাব না। আর এমন কোন গোত্র ছিল না, যাতে তাদের আত্মীয়-স্বজন না ছিল। পরে তারা এরূপই করলো। তখন আল্লাহ্ তাআলা আয়াত নাযিল করেনঃ “তারা নিজেরাই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য সন্যাসবাদ প্রবর্তন করেছিল। আমি তাদেরকে এর বিধান দেইনি, অথচ তারা তাও যথাযথভাবে পালন করেনি” (হাদীদঃ ২৭)।

অন্যান্য লোকেরা বলতে লাগলোঃ আমরাও ইবাদত-বন্দেগী করব, যেমন অমুক করে থাকে, আমরাও ভ্রমণ করব, যেমন অমুক ভ্রমণ করে থাকে এবং আমরাও গির্জা তৈরী করব, যেমন অমুক লোকেরা করে থাকে। অথচ তারা শিরকে পতিত ছিল, তারা যাদের অনুকরণ করছিল, তাদের ঈমান সম্বন্ধেও অবহিত ছিল না। যখন আল্লাহ্ তাআলা নবী (ﷺ)-কে প্রেরণ করলেন, তখন তাদের মধ্যে কিছু লোক অবশিষ্ট ছিল। তাদের মধ্যে যে ইবাদতখানায় ছিল, সে ইবাদতখানা হতে নেমে আসলো, ভ্রমণকারী তার ভ্রমণ হতে ফিরে আসলো, গির্জাবাসী তার গিজা হতে নেমে আসলো। তারা তাঁর প্রতি ঈমান আনলো এবং তাকে বিশ্বাস করলো।

এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তাআলা বলেন, “হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনয়ন কর, তা হলে তিনি তোমাদেরকে তাঁর রহমতে দ্বিগুণ দান করবেন (হাদীদঃ ২৮)। এক তো ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর উপর ঈমান আনয়ন ও তাওরাত-ইঞ্জিলে বিশ্বাস স্থাপনের কারণে। আর দ্বিতীয়ত মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর উপর ঈমান আনা এবং তাঁকে সত্যবাদী জানার কারণে। আল্লাহ্ বলেন, “তিনি তোমাদেরকে দেবেন আলো, যার সাহায্যে তোমরা চলবে [অর্থাৎ কুরআন এবং নবী (ﷺ) এর অনুসরণ] যেন আহলে কিতাব জানতে পারে, আল্লাহর সামান্যতম অনুগ্রহের উপরও তাদের কোন অধিকার নেই। (হাদীদঃ ২৮), অর্থাৎ যেই কিতাবীগণ তোমাদের অনুকরণ করে, অথচ ঈমান আনে না, তারা ।
تَأْوِيلُ قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمْ الْكَافِرُونَ
أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ قَالَ أَنْبَأَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى عَنْ سُفْيَانَ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَتْ مُلُوكٌ بَعْدَ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ عَلَيْهِ الصَّلَاة وَالسَّلَامُ بَدَّلُوا التَّوْرَاةَ وَالْإِنْجِيلَ وَكَانَ فِيهِمْ مُؤْمِنُونَ يَقْرَءُونَ التَّوْرَاةَ قِيلَ لِمُلُوكِهِمْ مَا نَجِدُ شَتْمًا أَشَدَّ مِنْ شَتْمٍ يَشْتِمُونَّا هَؤُلَاءِ إِنَّهُمْ يَقْرَءُونَ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمْ الْكَافِرُونَ وَهَؤُلَاءِ الْآيَاتِ مَعَ مَا يَعِيبُونَّا بِهِ فِي أَعْمَالِنَا فِي قِرَاءَتِهِمْ فَادْعُهُمْ فَلْيَقْرَءُوا كَمَا نَقْرَأُ وَلْيُؤْمِنُوا كَمَا آمَنَّا فَدَعَاهُمْ فَجَمَعَهُمْ وَعَرَضَ عَلَيْهِمْ الْقَتْلَ أَوْ يَتْرُكُوا قِرَاءَةَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ إِلَّا مَا بَدَّلُوا مِنْهَا فَقَالُوا مَا تُرِيدُونَ إِلَى ذَلِكَ دَعُونَا فَقَالَتْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ ابْنُوا لَنَا أُسْطُوَانَةً ثُمَّ ارْفَعُونَا إِلَيْهَا ثُمَّ اعْطُونَا شَيْئًا نَرْفَعُ بِهِ طَعَامَنَا وَشَرَابَنَا فَلَا نَرِدُ عَلَيْكُمْ وَقَالَتْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ دَعُونَا نَسِيحُ فِي الْأَرْضِ وَنَهِيمُ وَنَشْرَبُ كَمَا يَشْرَبُ الْوَحْشُ فَإِنْ قَدَرْتُمْ عَلَيْنَا فِي أَرْضِكُمْ فَاقْتُلُونَا وَقَالَتْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ ابْنُوا لَنَا دُورًا فِي الْفَيَافِي وَنَحْتَفِرُ الْآبَارَ وَنَحْتَرِثُ الْبُقُولَ فَلَا نَرِدُ عَلَيْكُمْ وَلَا نَمُرُّ بِكُمْ وَلَيْسَ أَحَدٌ مِنْ الْقَبَائِلِ إِلَّا وَلَهُ حَمِيمٌ فِيهِمْ قَالَ فَفَعَلُوا ذَلِكَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَرَهْبَانِيَّةً ابْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَاهَا عَلَيْهِمْ إِلَّا ابْتِغَاءَ رِضْوَانِ اللَّهِ فَمَا رَعَوْهَا حَقَّ رِعَايَتِهَا وَالْآخَرُونَ قَالُوا نَتَعَبَّدُ كَمَا تَعَبَّدَ فُلَانٌ وَنَسِيحُ كَمَا سَاحَ فُلَانٌ وَنَتَّخِذُ دُورًا كَمَا اتَّخَذَ فُلَانٌ وَهُمْ عَلَى شِرْكِهِمْ لَا عِلْمَ لَهُمْ بِإِيمَانِ الَّذِينَ اقْتَدَوْا بِهِ فَلَمَّا بَعَثَ اللَّهُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ إِلَّا قَلِيلٌ انْحَطَّ رَجُلٌ مِنْ صَوْمَعَتِهِ وَجَاءَ سَائِحٌ مِنْ سِيَاحَتِهِ وَصَاحِبُ الدَّيْرِ مِنْ دَيْرِهِ فَآمَنُوا بِهِ وَصَدَّقُوهُ فَقَالَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَآمِنُوا بِرَسُولِهِ يُؤْتِكُمْ كِفْلَيْنِ مِنْ رَحْمَتِهِ أَجْرَيْنِ بِإِيمَانِهِمْ بِعِيسَى وَبِالتَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَبِإِيمَانِهِمْ بِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَصْدِيقِهِمْ قَالَ يَجْعَلْ لَكُمْ نُورًا تَمْشُونَ بِهِ الْقُرْآنَ وَاتِّبَاعَهُمْ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِئَلَّا يَعْلَمَ أَهْلُ الْكِتَابِ يَتَشَبَّهُونَ بِكُمْ أَنْ لَا يَقْدِرُونَ عَلَى شَيْءٍ مِنْ فَضْلِ اللَّهِ الْآيَةَ