কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ

المجتبى من السنن للنسائي

২৪. হজ্ব আদায়ের পদ্ধতির বিবরণ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:২৯৯৩
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৯৩
ইয়াওমুত তারবিয়া[১] এর আগে খুতবা
২৯৯৬. ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উমরাহ্ করে জিয়িররানা নামক স্থানে ফিরে এসে আবু বকর (রাযিঃ)-কে হজ্জের আমীর নিযুক্ত করে প্রেরণ করেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে আসলাম। যখন আরয নামক স্থানে পৌছলেন তখন সকাল হলে তিনি তাকবীর বলার জন্য প্রস্তুত হলেন। এমন সময় তার পেছনে উটের শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি তাকবীর না দিয়ে বললেন ইহা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর উটনী জাদ’আর শব্দ। হয়তো রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাশরীফ এনেছেন, আমরা তার সঙ্গে নামায আদায় করবো, হঠাৎ দেখা গেল এর আরােহী হলেন আলী (রাযিঃ)। আবু বকর (রাযিঃ) তাকে বললেনঃ আপনি কি আমীর হিসেবে এসেছেন, না সংবাদ বাহক হিসেবে। তিনি বললেনঃ আমি সংবাদ বাহক হিসেবে এসেছি। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাকে অব্যাহতি বাণী (সূরা তাওবা বা বারা’আত) সহ প্রেরণ করেছেন। আমি হজ্জের বিশিষ্ট স্থানসমূহে লোকদের তা শুনাব।

আমরা মক্কায় আগমন করলাম। যিলহজ্জের ৮ তারিখের একদিন পূর্বে আবু বকর (রাযিঃ) লোকের মধ্যে দাঁড়িয়ে খুতবা দিলেন এবং তাদেরকে হজ্জের আহকাম শুনালেন। তিনি তার খুতবা শেষ করলে আলী (রাযিঃ) দাঁড়ালেন এবং তিনি লোকের মধ্যে অব্যাহতি বাণী (সূরা বারাআত) পাঠ করে শুনালেন এবং তা শেষ করলে আমরা তাঁর সঙ্গে বের হলাম। যখন আরাফার দিন উপস্থিত হলো, তখন আবু বকর (রাযিঃ) লোকের মধ্যে দাঁড়িয়ে খুতবা দিলেন, তাদের কাছে হজ্জের আহকাম বর্ণনা করলেন। যখন তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন, তখন আলী (রাযিঃ) দাঁড়িয়ে লোকের মধ্যে সূরা বারাআত পাঠ করে শুনালেন। এরপর কুরবানীর দিন আসলে আমরা তাওয়াফে ইফাযা করলাম।

আবু বকর (রাযিঃ) ফিরে এসে লোকের মধ্যে খুতবা দিলেন। তাতে তিনি প্রত্যাবর্তন ও কুরবানীর আহকাম এবং হজ্জের আহকাম বৰ্ণনা করলেন। তিনি যখন খুতবা শেষ করলেন, তখন আলী (রাযিঃ) দাঁড়িয়ে লোকের মধ্যে বারাআতের ঘােষণা শুনালেন, সূরা বারাআত শুনানাে শেষ করলেন। প্রথম নফরের দিন[২] আসলে আবু বকর (রাযিঃ) লোকের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন; কিরূপে নফর বা যাত্রা করতে হবে এবং রমী করতে হবে সে সমস্ত আহকাম তাদেরকে শিক্ষা দিলেন। তিনি খুতবা শেষ করলে আলী (রাযিঃ) দাঁড়িয়ে লোকের নিকট সূরা বারাআত পড়ে শুনালেন এবং তা শেষ পর্যন্ত পাঠ করলেন।

আবু আব্দুর রহমান (রাহঃ) বলেন, ইবনে খুশায়ম (রাহঃ) হাদীস বর্ণনায় তেমন শক্তিশালী নন। আমি ইবনে জুরায়জ (রাহঃ) আবু যুবায়র (রাহঃ) থেকে এ সনদে বর্ণনা না করে ইবনে জুরায়জ (রাহঃ) ইবনে খুশায়ম (রাহঃ) থেকে, তিনি আবু যুবায়র (রাযিঃ) এ সনদে রেওয়ায় বর্ণনা করেছি। কেননা প্রথমােক্ত সনদে ইবনে জুরায়জ (রাহঃ) ও আবু যুবায়র (রাহঃ)-এর মধ্যের একজন রাবী বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাকে উসূলে হাদীসের ভাষায় মুনকাতি’ বলা হয়। আমি এ হাদীসটি ইসহাক ইবনে রাহওয়াই ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) সূত্রে লিপিবদ্ধ করেছি। ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ আল-কাত্তান (রাহঃ) ইবনে খুশায়ম (রাহঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা বাদ দেননি। আর আব্দুর রহমান থেকেও না। তবে আলী ইবনে মাদীনী (রাহঃ) ইবনে খুশায়ম (রাহঃ)-কে ’মুনকারুল হাদীস’[৩] বলে মন্তব্য করেছেন। আর আলী ইবনে মাদীনী (রাহঃ) হাদীস শাস্ত্রের জন্যেই তাঁর সৃষ্টি।

[১] তারবিয়া অর্থ : তৃপ্তি, এইদিন অর্থাৎ যিলহাজ্জের ৮ম তারিখের দিন হাজিগণ নিজেরাও প্রস্তুতি গ্রহণ করেন এবং উট ও অন্যান্য বাহনদের পানি পান করিয়ে ও ঘাস খাওয়ায়ে তৃপ্ত করেন, তাই এদিনকে ইয়াওমুত্ তারবিয়া’ বলা হয়। তারাবিয়ার আর এক অর্থ : চিন্তা-ভাবনা। হযরত ইবরাহীম (আ) পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানী দিবেন সেই বিষয়ে এই তারিখে চিন্তা ভাবানায় লিপ্ত ছিলেন। দশ তারিখে কুরবানী দেয়ার ফায়সালা করলেন, এই কারণেও ‘ইয়াওমুত্ তারবিয়া' বলা হয়। নাসাঈ শরীফের পাদটীকা অবলম্বনে। – অনুবাদক
[২] প্রথম নফরের দিন; আইয়্যামে-ই- তাশরীকের দ্বিতীয় দিন। -অনুবাদক
[৩] মুনকার : কোন দুর্বল রাবীর বর্ণিত হাদীস অপর কোন মকবূল (গ্রহণযোগ্য) রাবীর বর্ণিত হাদীসের সংগে বিরোধপূর্ণ হলে তাকে বলা 'মুনকার'। এরূপ বর্ণনাকারী রাবীকে 'মুনকারুল হাদীস' বলা হয়। বুখারী শরীফ বাংলা অনুবাদ-এর ভূমিক, ই.ফা.বা থেকে প্রকাশিত। –অনুবাদক
الْخُطْبَةُ قَبْلَ يَوْمِ التَّرْوِيَةِ
أَخْبَرَنَا إِسْحَقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ قَرَأْتُ عَلَى أَبِي قُرَّةَ مُوسَى بْنِ طَارِقٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ رَجَعَ مِنْ عُمْرَةِ الْجِعِرَّانَةِ بَعَثَ أَبَا بَكْرٍ عَلَى الْحَجِّ فَأَقْبَلْنَا مَعَهُ حَتَّى إِذَا كَانَ بِالْعَرْجِ ثَوَّبَ بِالصُّبْحِ ثُمَّ اسْتَوَى لِيُكَبِّرَ فَسَمِعَ الرَّغْوَةَ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَوَقَفَ عَلَى التَّكْبِيرِ فَقَالَ هَذِهِ رَغْوَةُ نَاقَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْجَدْعَاءِ لَقَدْ بَدَا لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْحَجِّ فَلَعَلَّهُ أَنْ يَكُونَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنُصَلِّيَ مَعَهُ فَإِذَا عَلِيٌّ عَلَيْهَا فَقَالَ لَهُ أَبُو بَكْرٍ أَمِيرٌ أَمْ رَسُولٌ قَالَ لَا بَلْ رَسُولٌ أَرْسَلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِبَرَاءَةَ أَقْرَؤُهَا عَلَى النَّاسِ فِي مَوَاقِفِ الْحَجِّ فَقَدِمْنَا مَكَّةَ فَلَمَّا كَانَ قَبْلَ التَّرْوِيَةِ بِيَوْمٍ قَامَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَخَطَبَ النَّاسَ فَحَدَّثَهُمْ عَنْ مَنَاسِكِهِمْ حَتَّى إِذَا فَرَغَ قَامَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَقَرَأَ عَلَى النَّاسِ بَرَاءَةٌ حَتَّى خَتَمَهَا ثُمَّ خَرَجْنَا مَعَهُ حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمُ عَرَفَةَ قَامَ أَبُو بَكْرٍ فَخَطَبَ النَّاسَ فَحَدَّثَهُمْ عَنْ مَنَاسِكِهِمْ حَتَّى إِذَا فَرَغَ قَامَ عَلِيٌّ فَقَرَأَ عَلَى النَّاسِ بَرَاءَةٌ حَتَّى خَتَمَهَا ثُمَّ كَانَ يَوْمُ النَّحْرِ فَأَفَضْنَا فَلَمَّا رَجَعَ أَبُو بَكْرٍ خَطَبَ النَّاسَ فَحَدَّثَهُمْ عَنْ إِفَاضَتِهِمْ وَعَنْ نَحْرِهِمْ وَعَنْ مَنَاسِكِهِمْ فَلَمَّا فَرَغَ قَامَ عَلِيٌّ فَقَرَأَ عَلَى النَّاسِ بَرَاءَةٌ حَتَّى خَتَمَهَا فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ النَّفْرِ الْأَوَّلُ قَامَ أَبُو بَكْرٍ فَخَطَبَ النَّاسَ فَحَدَّثَهُمْ كَيْفَ يَنْفِرُونَ وَكَيْفَ يَرْمُونَ فَعَلَّمَهُمْ مَنَاسِكَهُمْ فَلَمَّا فَرَغَ قَامَ عَلِيٌّ فَقَرَأَ بَرَاءَةٌ عَلَى النَّاسِ حَتَّى خَتَمَهَا قَالَ أَبُو عَبْد الرَّحْمَنِ ابْنُ خُثَيْمٍ لَيْسَ بِالْقَوِيِّ فِي الْحَدِيثِ وَإِنَّمَا أَخْرَجْتُ هَذَا لِئَلَّا يُجْعَلَ ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ وَمَا كَتَبْنَاهُ إِلَّا عَنْ إِسْحَقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ وَيَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ لَمْ يَتْرُكْ حَدِيثَ ابْنِ خُثَيْمٍ وَلَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِلَّا أَنَّ عَلِيَّ بْنَ الْمَدِينِيِّ قَالَ ابْنُ خُثَيْمٍ مُنْكَرُ الْحَدِيثِ وَكَأَنَّ عَلِيَّ بْنَ الْمَدِينِيِّ خُلِقَ لِلْحَدِيثِ