আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

الجامع الكبير للترمذي

৪৬. কুরআনের তাফসীর অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৩২৩২
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৩২
সূরা সা’দ
৩২৩২. মাহমুদ ইবনে গায়লান ও আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ..... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবু তালিব অসুস্থ হয়ে পড়লে কুরাইশরা (দলপতিরা) তাকে দেখতে আসে। নবী (ﷺ)ও তার কাছে আসলেন। আবু তালিবের কাছে একজন লোক বসতে পারে মাত্র ততটুকু জায়গা ছিল। আবু জাহল নবীজীকে সেখানে বসতে বাধা দেওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াল। কুরাইশরা আবু তালিবের কাছে নবীজীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। আবু তালিব তখন তাঁকে বললঃ হে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র, তুমি তোমার কওম থেকে চাচ্ছ কি?

নবীজী (ﷺ) বললেনঃ আমি তো তাদের কাছ থেকে এমন একটা কথার স্বীকৃতি চাই যে এদ্বারা সমস্ত আরব তাদের অনুগত হয়ে পড়বে আর সব অনারব তাদের জিযিয়া দিবে।

আবু তালিব বললঃ মাত্র একটা কথা। নবীজী বললেনঃ হ্যাঁ, মাত্র একটা কথা। হে চাচা, আপনারা বলুন, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। কুরাইশীরা বললঃ একজন মাত্র ইলাহ! আগের মিল্লাত সমূহেও তো এমন কথা আমরা শুনি নি। এতো মনগড়া কথা বৈ কিছূই নয়। রাবী বলেন, এদের বিষয়েই কুরআন মজীদে নাযিল হয়ঃ

ص* وَالْقُرْآنِ ذِي الذِّكْرِ * بَلِ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي عِزَّةٍ وَشِقَاقٍ إِلَى قَوْلِهِ : ما سَمِعْنَا بِهَذَا فِي الْمِلَّةِ الآخِرَةِ إِنْ هَذَا إِلاَّ اخْتِلاَقٌ

সা’দ, কসম উপদেশ পূর্ণ কুরআনের (আপনি অবশ্যই সত্য নবী) কিন্তু কাফিরগণ ঔদ্ধত্য ও বিরোধিতায় ডুবে আছে। এদের পূর্বে আমি কত জনগোষ্ঠী ধ্বংস করেছি; তখন তারা আর্ত চিৎকার করেছিল। কিন্তু তখন পরিত্রাণের কোন উপায় ছিল না। এরা বিস্ময়বোধ করে যে, তাদের নিকট তাদের মধ্য থেকেই একজন সতর্ককারী এসেছে। কাফিররা বলেঃ এ তো এক যাদুকর, মিথ্যাবাদী। সে কি বহু ইলাহের পরিবর্তে এক ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? এ তো এক অত্যাশ্চর্য ব্যাপার! তাদের প্রধানরা এই বলে সরে পড়ে, তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের দেবতাদের উপাসনায় তোমরা অবিচলিত থাক। নিশ্চয়ই এই বিষয়টি উদ্দেশ্যমূলক। আমরা তো অন্য ধর্মাদর্শে এরূপ কথা শুনিনি। এ তো মনগড়া উক্তি মাত্র। (সূরা সা’দ ৩৮ঃ ১-৭)।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ ص
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، - الْمَعْنَى وَاحِدٌ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ يَحْيَى، قَالَ عَبْدٌ هُوَ ابْنُ عَبَّادٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ مَرِضَ أَبُو طَالِبٍ فَجَاءَتْهُ قُرَيْشٌ وَجَاءَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَ أَبِي طَالِبٍ مَجْلِسُ رَجُلٍ فَقَامَ أَبُو جَهْلٍ كَىْ يَمْنَعَهُ وَشَكَوْهُ إِلَى أَبِي طَالِبٍ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِي مَا تُرِيدُ مِنْ قَوْمِكَ قَالَ " إِنِّي أُرِيدُ مِنْهُمْ كَلِمَةً وَاحِدَةً تَدِينُ لَهُمْ بِهَا الْعَرَبُ وَتُؤَدِّي إِلَيْهِمُ الْعَجَمُ الْجِزْيَةَ " . قَالَ كَلِمَةً وَاحِدَةً قَالَ " كَلِمَةً وَاحِدَةً " . قَالَ " يَا عَمِّ قُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ " . فَقَالُوا: إِلَهًا وَاحِدًا؟ ( ما سَمِعْنَا بِهَذَا فِي الْمِلَّةِ الآخِرَةِ إِنْ هَذَا إِلاَّ اخْتِلاَقٌ ) قَالَ فَنَزَلَ فِيهِمُ الْقُرْآنُ : (ص* وَالْقُرْآنِ ذِي الذِّكْرِ * بَلِ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي عِزَّةٍ وَشِقَاقٍ ) إِلَى قَوْلِهِ : (ما سَمِعْنَا بِهَذَا فِي الْمِلَّةِ الآخِرَةِ إِنْ هَذَا إِلاَّ اخْتِلاَقٌ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
হাদীস নং:৩২৩৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৩৩
সূরা সা’দ
৩২৩৩. সালামা ইবনে শাবীব্ ও আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ...... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ একদা রাতে সুমহান ও বরকতময় আমার রব আমার কাছে সুন্দরতম রূপে এসেছিলেন। (রাবী বলেন, যতদূর মনে পড়ে নবীজী (ﷺ) ’স্বপ্নে’ কথাটি বলেছিলেন।) তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কি নিয়ে মালা-এ-আলা (সর্বোচ্চ ফিরিশতা পরিষদ)-এ বিতর্ক হচ্ছে? আমি বললামঃ না।

নবীজী বলেনঃ তখন তিনি আমার কাঁধের মাঝে তার হাত রাখলেন। এমনকি এর স্নিগ্ধতা আমি আমার বুকেও অনুভব করলাম। এতে আসমান ও যমীনের যা কিছু আছে সব আমি জানতে পারলাম।

তিনি বললঃ হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কি নিয়ে মালা-এ আলায় আলোচনা হচ্ছে?

আমি বললামঃ হ্যাঁ, গুনাহের কাফফারা বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। নামাযের পর মসজিদে অবস্থান করাও কাফফারা, জামাআতে পায়ে হেঁটে যাওয়া, কষ্টের সময় পরিপূর্ণভাবে উযু করাও কাফফারা। যে ব্যক্তি এই কাজ করবে তার জীবন হবে কল্যাণময়, আর মৃত্যুও হবে কল্যাণময়। যেই দিন তাঁর মা তাকে ভূমিষ্ঠ করলেন গুনাহর ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থা হবে সেই দিনের মত। আমার রব বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! নামায শেষে বলবেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَإِذَا أَرَدْتَ بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ

হে আল্লাহ্! আপনার কাছে আমি যাঞ্ছা করি ভাল কাজ করা এবং মন্দ কাজ পরিত্যাগের, দরিদ্রদের প্রতি ভালবাসা পোষণের তাওফীক। আপনি যখন বান্দাদের বিষয়ে ফেতনা মুসীবতের ইরাদা করবেন তখন আমাকে যেন ফেতনা মুক্ত অবস্থায় উঠায়ে নেন।

নবী (ﷺ) বলেনঃ (মালা-এ-আ’লায় আরো আলোচনা হচ্ছে) উচ্চ মর্যদা লাভের বিষয়ে। তা হল, সালামের প্রসার সাধন, আহার প্রদান এবং লোকেরা যখন নিদ্রাভিভূত তখন রাতের নফল নামাযে (তাহাজ্জুদে) নিমগ্ন হওয়া।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ ص
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَتَانِي اللَّيْلَةَ رَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ قَالَ أَحْسَبُهُ قَالَ فِي الْمَنَامِ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قَالَ قُلْتُ لاَ . قَالَ فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَىَّ أَوْ قَالَ فِي نَحْرِي فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ فِي الْكَفَّارَاتِ . وَالْكَفَّارَاتُ الْمُكْثُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَالْمَشْىُ عَلَى الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي الْمَكَارِهِ وَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِذَا صَلَّيْتَ فَقُلِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَإِذَا أَرَدْتَ بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ قَالَ وَالدَّرَجَاتُ إِفْشَاءُ السَّلاَمِ وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ وَالصَّلاَةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ " .
হাদীস নং:৩২৩৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৩৪
সূরা সা’দ
৩২৩৪. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেছেনঃ আমার রব আমার কাছে আবির্ভূত হলেন সুন্দরতম সূরতে। বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! আমি বললামঃ প্রভূ আমি হাজির, হে কল্যাণের প্রতিভূ, আমি হাজির।

তিনি বললেনঃ মালা-এ-আ’লায় কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে? আমি বললামঃ হে আমার রব, আমি তো জানি না।

তিনি আমার কাঁধের দুই হাড্ডির মাঝে তাঁর হাত রাখলেন। এমনকি এর স্নিগ্ধতা আমি আমার বুকে অনুভব করলাম। পূর্ব-পশ্চিমের যা কিছু আছে এতে আমি তা জানতে পারলাম।

তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ!

আমি বললামঃ বান্দা হাজির, হে কল্যাণের প্রতিভূ, আমি হাজির।

তিনি বললেনঃ কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে মালা-এ-আ’লায়?

আমি বললামঃ উচ্চ মর্যাদা লাভ ও গুনাহে্র কাফফারাসমূহের বিষয়ে। আর জামাআতের দিকে পায়ে হেঁটে যাওয়া, কষ্টের সময়েও পরিপূর্ণভাবে উযু করা, এক নামাযের পর আরেক নামাযের জন্য অপেক্ষা করার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। যে ব্যক্তি এগুলোর হিফাজত করবে, তাতে অবিচল থাকবে জীবন হবে তার কল্যাণময় আর মৃত্যুও হবে তার কল্যাণময়। আর মাতৃ উদয় থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিনের মত গুনাহ্ থেকে সে পবিত্র হয়ে যাবে।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ ص
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ اللَّجْلاَجِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَتَانِي رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّي وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ رَبِّي لاَ أَدْرِي فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَىَّ فَعَلِمْتُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ . فَقُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ فِي الدَّرَجَاتِ وَالْكَفَّارَاتِ وَفِي نَقْلِ الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغِ الْوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ وَانْتِظَارِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ وَمَنْ يُحَافِظْ عَلَيْهِنَّ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِطُولِهِ وَقَالَ " إِنِّي نَعَسْتُ فَاسْتَثْقَلْتُ نَوْمًا فَرَأَيْتُ رَبِّي فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى " .
হাদীস নং:৩২৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৩৫
সূরা সা’দ
৩২৩৫. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ..... মুআয ইবনে জাবাল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ভোরে নবী (ﷺ) ফজরের নামাযে আসতে দেরী করলেন। এমনকি আমরা প্রায় সূর্য উঠে যাচ্ছে বলে প্রত্যক্ষ করছিলাম। এমন সময় তিনি দ্রুত বেরিয়ে আসলেন। নামাযের ইকামত দেওয়া হল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সংক্ষিপ্তভাবে নামায আদায় করলেন। সালাম শেষে তিনি উচ্চস্বরে ডাকলেন। আমাদের বললেনঃ যেভাবে তোমরা আছ সেভাবেই তোমাদের কাতারে বসে থাক। এরপর তিনি আমাদের দিকে ফিরলেন। বললেনঃ আজ ভোরে তোমাদের কাছে (যথাসময়ে বের হয়ে) আসতে আমাকে কিসে বিরত রেখেছিল সে বিষয়ে আমি তোমাদের বলছি। আমি রাতেই উঠেছিলাম। উযু করে যা আমার তাকদীরে ছিল সে পরিমাণ (তাহাজ্জুদের নামায আদায় করলাম। আমি নামাযে তন্দ্রাভিভূত হয়ে পড়লাম। ঘুম ভারী হয়ে এল। হঠাৎ দেখি, মহান আল্লাহ্ তাআলা সুন্দরতম রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ!

আমি বললামঃ প্রভু আমার, বান্দা হাযির।

তিনি বললেনঃ মালা-এ-আলায় কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে?

আমি বললামঃ হে আমার রব, আমি তো জানি না।

আল্লাহ্ তাআলা তিন বার উল্লেখিত উক্তি করলেন।

রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেনঃ আমি দেখলাম তিনি আমার কাঁধের দুই হাড্ডির মাঝে তাঁর হাত রাখলেন। আমার বুকে তাঁর অঙ্গুলীসমূহের শীতল ছোয়া আমি অনুভব করলাম। এতে প্রতিটি বস্ত আমার সামনে প্রতিবাত হয়ে উঠল। সব আমি চিনে নিলাম। তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ!

আমি বললামঃ প্রভু আমার, বান্দা হাযির

তিনি বললেনঃ মালা-এ-আলায় কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে?

আমি বললামঃ গুনাহের কাফফারা নিয়ে।

তিনি বললেনঃ সেগুলো কি?

আমি বললামঃ জামাআতের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে যাওয়া, নামাযের পরও মসজিদে অবস্থান করা, কষ্টের সময়ও পরিপূর্ণভাবে উযু করা।

তিনি বললেনঃ এরপর কি বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে?

আমি বললামঃ খাদ্য দান, নরম কথা, মানুষ যখন নিদ্রামগ্ন তখন রাতে নামায (তাহাজ্জুদ) আদায় করা।

তিনি বললেনঃ আমার কাছে চাও।

আমি বললামঃ হে আল্লাহ্! আমি যাঞ্ছা করি কল্যাণকর কাজের। মন্দ কাজ পরিত্যাগ করার। মিসকীনদের প্রতি ভালবাসা; মাফ করে দিন আমাকে, রহম করুন আমার উপর। কোন সম্প্রদায়ের উপর যখন ফিতনা-মুসীবতের ইরাদা করেন তখন আমাকে আপনি ফিতনামুক্ত মৃত্যু দিন। আমি চাই আপনার প্রতি ভালবাসা। আপনাকে যারা ভালবাসেন তাদের ভালবাসা এবং যে সব আমল আমাকে আপনার নিকট করবে সেসব আমলের ভালবাসা। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আরো বলেছেনঃ এ বিষয়টি সত্য তোমরা এটি পড় এবং তা শিখে নাও।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ ص
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هَانِئٍ أَبُو هَانِئٍ الْيَشْكُرِيُّ حَدَّثَنَا جَهْضَمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ سَلاَّمِ عَنْ أَبِي سَلاَّمٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ الْحَضْرَمِيِّ أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَنْ مَالِكِ بْنِ يُخَامِرَ السَّكْسَكِيِّ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رضى الله عنه قَالَ احْتُبِسَ عَنَّا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ غَدَاةٍ عَنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ حَتَّى كِدْنَا نَتَرَاءَى عَيْنَ الشَّمْسِ فَخَرَجَ سَرِيعًا فَثُوِّبَ بِالصَّلاَةِ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَجَوَّزَ فِي صَلاَتِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِهِ قَالَ لَنَا " عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ " . ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا ثُمَّ قَالَ " أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمُ الْغَدَاةَ إِنِّي قُمْتُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ وَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلاَتِي حَتَّى اسْتَثْقَلْتُ فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ . قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ . قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ لاَ أَدْرِي . قَالَهَا ثَلاَثًا قَالَ فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَىَّ فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ . قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ فِي الْكَفَّارَاتِ قَالَ مَا هُنَّ قُلْتُ مَشْىُ الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَالْجُلُوسُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ . قَالَ فِيمَ قُلْتُ إِطْعَامُ الطَّعَامِ وَلِينُ الْكَلاَمِ وَالصَّلاَةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ . قَالَ سَلْ . قُلْتُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةَ قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . سَأَلْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَالَ هَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ الْوَلِيدِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ . قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ اللَّجْلاَجِ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَائِشٍ الْحَضْرَمِيُّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْحَدِيثَ وَهَذَا غَيْرُ مَحْفُوظٍ . هَكَذَا ذَكَرَ الْوَلِيدُ فِي حَدِيثِهِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَرَوَى بِشْرُ بْنُ بَكْرٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ هَذَا الْحَدِيثَ بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِشٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهَذَا أَصَحُّ . وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَائِشٍ لَمْ يَسْمَعْ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .