আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

الجامع الكبير للترمذي

৪০. ঈমানের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:২৬৩৮
আন্তর্জাতিক নং: ২৬৩৮
’আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই’-এ কথার সাক্ষ্য দিয়ে যে ব্যক্তি মারা যায়।
২৬৩৯. কুতায়বা (রাহঃ) ......... সুনাবিহী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উবাদা ইবনুল সামিত (রাযিঃ) এর কাছে গেলাম। তার তখন মৃত্যু কষ্ট হচ্ছিল। আমি (তাঁর অবস্থা দেখে) কেঁদে ফেললাম। তিনি বললেনঃ থাম, কাঁদছ কেন? আল্লাহর কসম, যদি আমাকে (আখিরাতে) সাক্ষী মানা হয় তবে অবশ্যই তোমার পক্ষে আমি সাক্ষ্য দিব। যদি আমাকে সুপারিশের অনুমতি দেওয়া হয় তবে অবশ্যই তোমার জন্য সুপারিশ করব। যদি আমি সক্ষম হই তবে অবশ্যই তোমার উাপকার করব।

এরপর তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ কসম, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর নিকট থেকে যত হাদীস আমি শুনেছি এবং যাতে ছিল তোমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত সে সবের কোন হাদীসও এমন নেই যা আমি তোমাদের বর্ণনা করিনি। তবে একটি হাদীস ছিল বাকী যা আজ তোমাদের আমি এমন অবস্থায় বর্ণনা করতে যাচ্ছি যে, চতুর্দিক থেকে মৃত্যু আমাকে বেষ্টন করে নিয়েছে। আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি এই কথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল। আল্লাহ্ তাআলা তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন। - মুসলিম

এই বিষয়ে আবু বকর, উমর, উসমান, আলী তালহা, জাবির ইবনে উমর, যায়দ ইবনে খালিদ (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। সুনাবিহী (রাহঃ) হলেন আব্দুর রহমান ইবনে উসায়লা আবু আব্দুল্লাহ্। হাদীসটি হাসান-সহীহ। তবে এই সূত্রে গারীব।

যুহরী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী (ﷺ) এর বাণী "যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ছাড়া মা’বুদ নাই, এ কথা স্বীকার করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’’- সম্পর্কে তাকে (যুহরী) জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছিলেনঃ এটি ছিল ইসলামের শুরুতে যখন ফরয, আদেশ, নিষেধ ইত্যাদি বিধি-বিধান নাযিল হয়নি তখনকার যুগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

কোন কোন আলিম এই হাদীসটির মর্ম প্রসঙ্গে বলেন যে, তওহীদে বিশ্বাসীরা অবশ্য একদিন জান্নাতে প্রবেশ করবে। যদিও গুনাহের দরুন তাদেরকে জাহান্নামে শাস্তি দেওয়া হবে। তারা তাদের জাহান্নামে সব সময়ের জন্য অবস্থান করতে হবে না।

ইবনে মাসউদ, আবু যর, ইমরান ইবনে হুসাইন, জাবিন ইবনে আব্দুল্লাহ্, ইবনে আব্বাস, আবু সাঈদ খুদরী ও আনাস (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেনঃ তাওহীদে বিশ্বাসী এক দল লোক জাহান্নাম থেকে বের হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে।

(رُبَمَا يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ كَانُوا مُسْلِمِينَ) কখনও কখনও কাফিররা আকঙ্ক্ষা করবে যে, তারা যদি মুসলিম হত। (হিজর ১৫ : ২) আয়াতটির তাফসীরেও সাঈদ জুবাইর, ইবরাহীম নাখঈ প্রমূখ তাবিঈন (রাহঃ) থেকে এরূপ অভিমত বর্ণিত আছে। তাঁরা বলেছেনঃ তাওহীদে বিশ্বাসীগণকে জাহান্নাম থেকে বের করে আনা এবং তাদের জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে তখন কাফিররা আকাঙ্ক্ষা করবে যে, হায় তারা যদি মুসলিম হত।
باب مَا جَاءَ فِيمَنْ يَمُوتُ وَهُوَ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، عَنِ ابْنِ مُحَيْرِيزٍ، عَنِ الصُّنَابِحِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّهُ قَالَ دَخَلْتُ عَلَيْهِ وَهُوَ فِي الْمَوْتِ فَبَكَيْتُ فَقَالَ مَهْلاً لِمَ تَبْكِي فَوَاللَّهِ لَئِنِ اسْتُشْهِدْتُ لأَشْهَدَنَّ لَكَ وَلَئِنْ شُفِّعْتُ لأَشْفَعَنَّ لَكَ وَلَئِنِ اسْتَطَعْتُ لأَنْفَعَنَّكَ ثُمَّ قَالَ وَاللَّهِ مَا مِنْ حَدِيثٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَكُمْ فِيهِ خَيْرٌ إِلاَّ حَدَّثْتُكُمُوهُ إِلاَّ حَدِيثًا وَاحِدًا وَسَوْفَ أُحَدِّثُكُمُوهُ الْيَوْمَ وَقَدْ أُحِيطَ بِنَفْسِي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ شَهِدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ النَّارَ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ وَعَلِيٍّ وَطَلْحَةَ وَجَابِرٍ وَابْنِ عُمَرَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ . قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي عُمَرَ يَقُولُ سَمِعْتُ ابْنَ عُيَيْنَةَ يَقُولُ مُحَمَّدُ بْنُ عَجْلاَنَ كَانَ ثِقَةً مَأْمُونًا فِي الْحَدِيثِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَالصُّنَابِحِيُّ هُوَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عُسَيْلَةَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ الزُّهْرِيِّ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ " . فَقَالَ إِنَّمَا كَانَ هَذَا فِي أَوَّلِ الإِسْلاَمِ قَبْلَ نُزُولِ الْفَرَائِضِ وَالأَمْرِ وَالنَّهْىِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَوَجْهُ هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ أَهْلَ التَّوْحِيدِ سَيَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَإِنْ عُذِّبُوا بِالنَّارِ بِذُنُوبِهِمْ فَإِنَّهُمْ لاَ يُخَلَّدُونَ فِي النَّارِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي ذَرٍّ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " سَيَخْرُجُ قَوْمٌ مِنَ النَّارِ مِنْ أَهْلِ التَّوْحِيدِ وَيَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ " . هَكَذَا رُوِيَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ وَإِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ وَغَيْرِ وَاحِدٍ مِنَ التَّابِعِينَ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي تَفْسِيرِ هَذِهِ الآيَةَِ: (رُبَمَا يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ كَانُوا مُسْلِمِينَ) قَالُوا إِذَا أُخْرِجَ أَهْلُ التَّوْحِيدِ مِنَ النَّارِ وَأُدْخِلُوا الْجَنَّةَ يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ كَانُوا مُسْلِمِينَ .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা
হাদীস নং:২৬৩৯
আন্তর্জাতিক নং: ২৬৩৯
’আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই’-এ কথার সাক্ষ্য দিয়ে যে ব্যক্তি মারা যায়।
২৬৪০. সুওয়ায়দ ইবনে নসর (রাহঃ) ..... আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ্ তাআলা কিয়ামতের দিন আমার উম্মতের এক ব্যক্তিকে সমস্ত সৃষ্টির সম্মুখে আলাদা করে এনে হাযির করবেন। তার সামনে নিরানব্বইটি (আমলের) নিবন্ধন খাতা খুলে দিবেন। এক একটি নিবন্ধন খাতা হবে যতদূর দৃষ্টি যায় ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এরপর তিনি তাকে বললেনঃ এর একটি কিছুও কি অস্বীকার করতে পার? আমার সংরক্ষণকারী লিপিকারগণ (কিরামান কাতিবীন) কি তোমার উপর কোন যুলুম করেছে?

লোকটি বলবেঃ না, হে আমার পরওয়ারদিগার।

আল্লাহ্ তাআলা বলবেন, তোমার কিছু বলার আছে কি? লোকটি বলবেঃ না, হে পরওয়ারদিগার।

তিনি বলবেনঃ হ্যাঁ, আমার কাছে তোমার একটি নেকী আছে। আজ তো তোমার উপর কোন যুলুম হবে না।

তখন একটি ছোট্ট কাগজের টুকরা বের করা হবে। এতে আছে ’আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু’ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, কোন ইলাহা নেই আল্লাহ্ ছাড়া আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁর বান্দা ও রাসূল।

আল্লাহ্ তাআলা বলবেনঃ চল, এর ওজনের ক্ষেত্রে হাযির হও। লোকটি বলবেঃ ওহে আমার রব, এই একটি ছোট্ট টুকরা আর এতগুলো নিবন্ধন খাতা। কোথায় কি?

তিনি বলবেনঃ তোমার উপর অবশ্যই কোন যুলুম করা হবে না।

অনন্তর সবগুলো নিবন্ধন খাতা এক পাল্লায় রাখা হবে আর ছোট্র সেই টুকরাটিকে আরেক পাল্লায় রাখা হবে। (আল্লাহর কি মহিমা) সবগুলো দপ্তর (ওজনে) হালকা হয়ে যাবে আর ছোট্ট টুকরাটিই হয়ে পড়বে ভারী। আল্লাহর নামের মুকাবেলায় কোন জিনিসই ভারী হবে না। - ইবনে মাজাহ

হাদীসটি হাসান-গারীব। কুতায়বা (রাহঃ) ......... আমির ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) থেকে এই সনদে উক্ত মর্মে অনুরূপ বর্ণিত আছে।

البِطاقة টুকরা, খণ্ড।
باب مَا جَاءَ فِيمَنْ يَمُوتُ وَهُوَ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ لَيْثِ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنِي عَامِرُ بْنُ يَحْيَى، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَعَافِرِيِّ، ثُمَّ الْحُبُلِيِّ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ سَيُخَلِّصُ رَجُلاً مِنْ أُمَّتِي عَلَى رُءُوسِ الْخَلاَئِقِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَنْشُرُ عَلَيْهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ سِجِلاًّ كُلُّ سِجِلٍّ مِثْلُ مَدِّ الْبَصَرِ ثُمَّ يَقُولُ أَتُنْكِرُ مِنْ هَذَا شَيْئًا أَظَلَمَكَ كَتَبَتِي الْحَافِظُونَ فَيَقُولُ لاَ يَا رَبِّ . فَيَقُولُ أَفَلَكَ عُذْرٌ فَيَقُولُ لاَ يَا رَبِّ . فَيَقُولُ بَلَى إِنَّ لَكَ عِنْدَنَا حَسَنَةً فَإِنَّهُ لاَ ظُلْمَ عَلَيْكَ الْيَوْمَ فَتَخْرُجُ بِطَاقَةٌ فِيهَا أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ فَيَقُولُ احْضُرْ وَزْنَكَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ مَا هَذِهِ الْبِطَاقَةُ مَعَ هَذِهِ السِّجِلاَّتِ فَقَالَ إِنَّكَ لاَ تُظْلَمُ . قَالَ فَتُوضَعُ السِّجِلاَّتُ فِي كِفَّةٍ وَالْبِطَاقَةُ فِي كِفَّةٍ فَطَاشَتِ السِّجِلاَّتُ وَثَقُلَتِ الْبِطَاقَةُ فَلاَ يَثْقُلُ مَعَ اسْمِ اللَّهِ شَيْءٌ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ عَامِرِ بْنِ يَحْيَى، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ