আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
الجامع الكبير للترمذي
৩৩. ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের বিবরণ - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:২২৪০
আন্তর্জাতিক নং: ২২৪০
দাজ্জালের ফিতনা।
২২৪৩. আলী ইবনে হুজর (রাহঃ) ...... নাওওয়ান ইবনে সামআন কিলাবী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন সকালে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দাজ্জালের আলোচনা করলেন এবং বিষয়টির ভীষণতা এবং নিকৃষ্টতা সব কিছু তুলে ধরেন। এমনকি আমাদের ধারণা হচ্ছিল, যে সে খেজুর বাগানে উপস্থিত রয়েছে।
নাওওয়াস (রাযিঃ) বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছ থেকে ফিরে গেলাম। পরে বিকালে আবার তাঁর কাছে এলাম। তিনি আমাদের মাঝে দাজ্জালের ভীতির চিহ্ন দেখে বললেনঃ তোমাদের একি অবস্থা? আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনি সকালে দাজ্জালের আলোচনা করেছিলেন এবং বিষয়টির ভীষণতা এবং নিকৃষ্টতা এমন উল্লেখ করেছিলেন যে, আমাদের মনে হচ্ছিল সে বুঝি খেজুর বাগানে কিনারে এসে হাজির। তিনি বললেনঃ তোমাদের জন্য দাজ্জাল ছাড়া অন্যকিছুর অধিক আশঙ্কা আমার রয়েছে। তোমাদের মাঝে আমার জীবদ্দশায় যদি এর আবির্ভাব হয় তবে আমিই তোমাদের পক্ষে এর বিরুদ্ধে বিতর্কে জয়ী হব। আর আমি যদি তোমাদের মাঝে না থাকি তখন যদি সে বের হয় তবে প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের পক্ষে তার বিরুদ্ধে বিতর্ককারী হবে। প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আমার স্থলে আল্লাহ তাআলা নিজেই সহায়ক হবেন।
দাজ্জাল হল এক যুবক। তার চুল অতিশয় কুকড়ানো, চোখ তার স্থির। আব্দুল উযযা ইবনে কাতান সদৃশ হবে। তোমাদের কেউ যদি তাকে পায় তবে সে যেন সূরাতুল কাহফ-এর শুরুর আয়াতগুলো তিলাওয়াত করে। তিনি আরো বলেনঃ শাম ও ইরাকের মধ্যবর্তী অঞ্চল থেকে সে বের হবে। ডান দিক ও বাম দিক সে ফেতনা-ফাসাতের সৃষ্টি করে ফিরবে। হে আল্লাহর বান্দাগণ, তোমরা দৃঢ় থাকবে।
আমরা বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, এ পৃথিবীতে তার কতদিনের অবস্থান হবে?
তিনি বললেন, চল্লিশ দিন; একদিন হপবে এক বছরের মত, একদিন হবে এক মাসের মত, আর একদিন হবে এক সপ্তাহের মত, আর বাকি দিনগুলো হবে তোমাদের স্বাভাবিক দিনগুলোর মত।
আমরা বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, যে দিনটি হবে এক বছরের মত বড় সে দিন কি একদিনের নামাযেই আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে বলে আপনি মনে করেন? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমরা এর জন্য (স্বাভাবিক দিনের পরিমাণ) আন্দায করে নিবে (এবং সে হিসাবে নামায আদায় করবে)।
আমরা বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ পৃথিবীতে কত দ্রুত হবে তার গতি?
তিনি বললেনঃ বায়ু তাড়িত মেঘমালার মত। কোন এক সম্প্রদায়ের কাছে আসবে। তাদেরকে সে নিজের দলে ডাকবে। কিন্তু তারা তাকে অস্বীকার করবে এবং তার দাবী প্রত্যাখান করবে। সে তখন তাদের থেকে ফিরে আসবে আর তার পিছে পিছে তাদের সব সম্পদও চলে আসবে। তাদের হাতে আর কিছুই থাকবে না। তারপর সে আরেক সম্প্রদায়ের কাছে যাবে। সে তাদেরকে নিজের দিকে ডাকবে। তারা তার কথা গ্রহণ করবে এবং তাকে সত্য বলে স্বীকার করে নিবে। তখন সে আকাশকে বৃষ্টি ঝড়াতে নির্দেশ দিবে। তারপর তদানুসারে বৃষ্টি নামবে। যমীনকে সে উদ্ভিদ জন্মাতে নির্দেশ দিবে ফলে ফসল হবে। বিকালে তাদের পশুপালগুলো পূর্বের চেয়েও লম্বা, কুঁজ, বিস্তৃত নিতম্ব, দুগ্ধপুষ্ট ওলান বিশিষ্ট হয়ে ফিরে আসবে।
তারপর সে এক বিরান ধবংসস্তুপে আসবে। সেটিকে লক্ষ্য করে বলবেঃ তোমার ধনভাণ্ডার বের করে দাও। তারপর সে এখান থেকে ফিরে আসবে আর যেভাবে রানী মৌমাছিকে ঘিরে ধরে অন্যগুলি তার অনুসরণ করে থাকে তেমনিভাবে সব ধনভাণ্ডার তার অনুসরণ করবে।
এরপর সে যৌবনে পরিপূর্ণ এক তরুন যুবককে তার দিকে আহবান জানাবে। তাকে সে তলোয়ারের আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলবে। পরে তাকে ডাকবে। যুবকটি (জীবিত হয়ে) হাস্যোজ্জ্বল চেহারা নিয়ে এদিকে আসবে।
এমতাবস্থায় এদিকে ঈসা (আলাইহিস সালাম) দুই ফিরিশতার পাখনায় তাঁর হাত রেখে গেরুয়া রং্গের বসনে স্বেত-শুভ্র মিনারার কাছে পূর্ব দামিশকে অবতরণ করবেন। তাঁর মাথা নীচু করলে পানি ঝরতে থাকবে আর তা উঠানে মোতির মত ফোটায় ফোটায় পানি পড়বে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ যাকেই তাঁর শ্বাস প্রশ্বাস স্পর্শ করবে সেই মারা যাবে। চক্ষু দৃষ্টি যেখানে গিয়ে শেষ হবে সেখানে পর্যন্ত তাঁর নিঃশ্বাসের বাতাস পৌছবে। তিনি দাজ্জালকে তালাশ করবেন এবং লুদ (বায়তুল মুকাদ্দাসের নিকটবর্তী একটি শহর)-এর নগর দরজার কাছে তাকে পাবেন। তারপর একে তিনি হত্যা করবেন।
আল্লাহ যতদিন চান তিনি এভাবে বসবাস করবেন। পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তাকে ওহী পাঠাবেনঃ আমার বান্দাদেরকে তুর পাহাড়ে সরিয়ে নাও। আমি আমার এমন একদল বান্দা নামাচ্ছি যাদের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা কারো নেই। এরপর আল্লাহ তাআলা ইয়াজুজ-মাজুজের দল পাঠাবেন। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলার বিবরণ মত প্রতি উচ্চ ভূমি থেকে তারা ছুটে আসবে’। তাদের প্রথম দলটি তাবারিয়া উপসাগর (শামে অবস্থিত একটি ছোট সাগর) অতিক্রম করা কালে এর মাঝে যা পানি আছে সব পান করে ফেলবে। এমন অবস্থা হবে যে, পরে তাদের শেষ দলটি যখন এই উপসাগর অতিক্রম করবে তখন তারা বলবে, 'এখানে এক কালে হয়ত পানি ছিল’। আবার তারা চলবে এবং বায়তুল মুকাদ্দাসে পর্বতে গিয়ে তাদের এই যাত্রার শেষ হবে। তারা পরস্পর বলবেঃ পৃথিবীতে যারা ছিল তাদেরকে তো বধ করেছি এস এবার আসমানে যারা আছে তাদের শেষ করে দইে। তারপর তারা আসমানের দিকে তাদের তীর ছুড়বে। আল্লাহ তাআলা তাদের তীরগুলোকে রক্ত রঞ্জিত করে ফিরিয়ে দিবেন। ঈসা ইবনে মারয়াম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সঙ্গীগণ অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকবেন। তাদের অবস্থা এমন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে যে, আজকে তোমাদের কাছে একশত স্বর্ণ মুদ্রার যে দাম তাদের কাছে তখন একটি ষাড়ের মাথাও তদপেক্ষা অনেক উত্তম বলে মনে হবে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ তারপর ঈসা (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সঙ্গীগণ আল্লাহর কাছে মিনতি জানাবেন। আল্লাহ তাআলা তাদের গর্দানে ’‘নাগাফ’’ জাতীয় এক জীবানু মহামারীরূপে প্রেরণ করবেন। তারা সব ধ্বংস হয়ে মরে যাবে যেন একটি মাত্র প্রাণের মৃত্যু হল। এরপর ঈসা (আলাইহিস সালাম) ও তার সঙ্গীগণ পাহাড় থেকে নেমে আসবেন, কিন্তু তারা এব বিঘৎ জায়গাও এমন পাবেন না যেখানে ইয়জুজ-মাজুজের গলিত চর্বি, রক্ত ও দুগন্ধ ছড়িয়ে না আছে। তারপর ঈসা (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সঙ্গীগণ আল্লাহর কাছে আবার মিনতি জানাবেন। তখন আল্লাহ তাআলা উটের মত লম্বা গলা বিশিষ্ট এক প্রকার পাখি প্রেরণ করবেন। পাখিগুলি ইয়াজুজ-মাজুজদের লাশ উঠিয়ে নীচু গর্তে নিয়ে ফেলে দিবে। মুসলিমগণ তাদের ফেলে যাওয়া ধনুকে জ্যা, তীর এবং তুলীর সাত বছর পর্যন্ত জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করবে। আল্লাহ তাআলা প্রবল বৃষ্টি করবেন শহর বা গ্রামের কোন বাড়িঘরই তা থেকে রক্ষা পাবে না। সমস্ত যমীন ধৌত হয়ে যাবে এবং তা আয়নার মত ঝক ঝকে হয়ে উঠবে।
পরে যমীনকে বলা হবে, তোমার সব ফল ও ফসল বের করে দাও, সব বরকত ফিরিয়ে দাও। এমন হবে যে সেদিন একটি আনার একদল লোক খেতে পারবে এবং একদল লোক এর খোসার নীচে ছায়া গ্রহণ করতে পারবে। দুধের মধ্যেও এমন বরকত হবে যে, একটি দুগ্ধবতী উট বহুসংখ্যক লোক বিশিষ্ট দলের জন্য যথেষ্ট হবে। একটি দুগ্ধবতী গাভী একটি গোত্রের জন্য যথেষ্ট হবে। একটি দুগ্ধবতী ছাগল একটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে।
এমন অবস্থায় তারা দিন গুযরান করতে থাকবে হঠাৎ আল্লাহ তাআলা এক হাওয়া চালাবেন। এই হাওয়া প্রত্যেক মুমিনের রূহ কবয করে নিয়ে যাবে। বাকী কেবল দুষ্টু লোকেরা থেকে যাবে। এরা গাধার মত নির্লজ্জভাবে নারী সঙ্গমে লিপ্ত হবে। এদের উপরই কিয়ামত সংঘটিত হবে।
নাওওয়াস (রাযিঃ) বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছ থেকে ফিরে গেলাম। পরে বিকালে আবার তাঁর কাছে এলাম। তিনি আমাদের মাঝে দাজ্জালের ভীতির চিহ্ন দেখে বললেনঃ তোমাদের একি অবস্থা? আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনি সকালে দাজ্জালের আলোচনা করেছিলেন এবং বিষয়টির ভীষণতা এবং নিকৃষ্টতা এমন উল্লেখ করেছিলেন যে, আমাদের মনে হচ্ছিল সে বুঝি খেজুর বাগানে কিনারে এসে হাজির। তিনি বললেনঃ তোমাদের জন্য দাজ্জাল ছাড়া অন্যকিছুর অধিক আশঙ্কা আমার রয়েছে। তোমাদের মাঝে আমার জীবদ্দশায় যদি এর আবির্ভাব হয় তবে আমিই তোমাদের পক্ষে এর বিরুদ্ধে বিতর্কে জয়ী হব। আর আমি যদি তোমাদের মাঝে না থাকি তখন যদি সে বের হয় তবে প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের পক্ষে তার বিরুদ্ধে বিতর্ককারী হবে। প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আমার স্থলে আল্লাহ তাআলা নিজেই সহায়ক হবেন।
দাজ্জাল হল এক যুবক। তার চুল অতিশয় কুকড়ানো, চোখ তার স্থির। আব্দুল উযযা ইবনে কাতান সদৃশ হবে। তোমাদের কেউ যদি তাকে পায় তবে সে যেন সূরাতুল কাহফ-এর শুরুর আয়াতগুলো তিলাওয়াত করে। তিনি আরো বলেনঃ শাম ও ইরাকের মধ্যবর্তী অঞ্চল থেকে সে বের হবে। ডান দিক ও বাম দিক সে ফেতনা-ফাসাতের সৃষ্টি করে ফিরবে। হে আল্লাহর বান্দাগণ, তোমরা দৃঢ় থাকবে।
আমরা বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, এ পৃথিবীতে তার কতদিনের অবস্থান হবে?
তিনি বললেন, চল্লিশ দিন; একদিন হপবে এক বছরের মত, একদিন হবে এক মাসের মত, আর একদিন হবে এক সপ্তাহের মত, আর বাকি দিনগুলো হবে তোমাদের স্বাভাবিক দিনগুলোর মত।
আমরা বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, যে দিনটি হবে এক বছরের মত বড় সে দিন কি একদিনের নামাযেই আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে বলে আপনি মনে করেন? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমরা এর জন্য (স্বাভাবিক দিনের পরিমাণ) আন্দায করে নিবে (এবং সে হিসাবে নামায আদায় করবে)।
আমরা বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ পৃথিবীতে কত দ্রুত হবে তার গতি?
তিনি বললেনঃ বায়ু তাড়িত মেঘমালার মত। কোন এক সম্প্রদায়ের কাছে আসবে। তাদেরকে সে নিজের দলে ডাকবে। কিন্তু তারা তাকে অস্বীকার করবে এবং তার দাবী প্রত্যাখান করবে। সে তখন তাদের থেকে ফিরে আসবে আর তার পিছে পিছে তাদের সব সম্পদও চলে আসবে। তাদের হাতে আর কিছুই থাকবে না। তারপর সে আরেক সম্প্রদায়ের কাছে যাবে। সে তাদেরকে নিজের দিকে ডাকবে। তারা তার কথা গ্রহণ করবে এবং তাকে সত্য বলে স্বীকার করে নিবে। তখন সে আকাশকে বৃষ্টি ঝড়াতে নির্দেশ দিবে। তারপর তদানুসারে বৃষ্টি নামবে। যমীনকে সে উদ্ভিদ জন্মাতে নির্দেশ দিবে ফলে ফসল হবে। বিকালে তাদের পশুপালগুলো পূর্বের চেয়েও লম্বা, কুঁজ, বিস্তৃত নিতম্ব, দুগ্ধপুষ্ট ওলান বিশিষ্ট হয়ে ফিরে আসবে।
তারপর সে এক বিরান ধবংসস্তুপে আসবে। সেটিকে লক্ষ্য করে বলবেঃ তোমার ধনভাণ্ডার বের করে দাও। তারপর সে এখান থেকে ফিরে আসবে আর যেভাবে রানী মৌমাছিকে ঘিরে ধরে অন্যগুলি তার অনুসরণ করে থাকে তেমনিভাবে সব ধনভাণ্ডার তার অনুসরণ করবে।
এরপর সে যৌবনে পরিপূর্ণ এক তরুন যুবককে তার দিকে আহবান জানাবে। তাকে সে তলোয়ারের আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলবে। পরে তাকে ডাকবে। যুবকটি (জীবিত হয়ে) হাস্যোজ্জ্বল চেহারা নিয়ে এদিকে আসবে।
এমতাবস্থায় এদিকে ঈসা (আলাইহিস সালাম) দুই ফিরিশতার পাখনায় তাঁর হাত রেখে গেরুয়া রং্গের বসনে স্বেত-শুভ্র মিনারার কাছে পূর্ব দামিশকে অবতরণ করবেন। তাঁর মাথা নীচু করলে পানি ঝরতে থাকবে আর তা উঠানে মোতির মত ফোটায় ফোটায় পানি পড়বে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ যাকেই তাঁর শ্বাস প্রশ্বাস স্পর্শ করবে সেই মারা যাবে। চক্ষু দৃষ্টি যেখানে গিয়ে শেষ হবে সেখানে পর্যন্ত তাঁর নিঃশ্বাসের বাতাস পৌছবে। তিনি দাজ্জালকে তালাশ করবেন এবং লুদ (বায়তুল মুকাদ্দাসের নিকটবর্তী একটি শহর)-এর নগর দরজার কাছে তাকে পাবেন। তারপর একে তিনি হত্যা করবেন।
আল্লাহ যতদিন চান তিনি এভাবে বসবাস করবেন। পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তাকে ওহী পাঠাবেনঃ আমার বান্দাদেরকে তুর পাহাড়ে সরিয়ে নাও। আমি আমার এমন একদল বান্দা নামাচ্ছি যাদের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা কারো নেই। এরপর আল্লাহ তাআলা ইয়াজুজ-মাজুজের দল পাঠাবেন। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলার বিবরণ মত প্রতি উচ্চ ভূমি থেকে তারা ছুটে আসবে’। তাদের প্রথম দলটি তাবারিয়া উপসাগর (শামে অবস্থিত একটি ছোট সাগর) অতিক্রম করা কালে এর মাঝে যা পানি আছে সব পান করে ফেলবে। এমন অবস্থা হবে যে, পরে তাদের শেষ দলটি যখন এই উপসাগর অতিক্রম করবে তখন তারা বলবে, 'এখানে এক কালে হয়ত পানি ছিল’। আবার তারা চলবে এবং বায়তুল মুকাদ্দাসে পর্বতে গিয়ে তাদের এই যাত্রার শেষ হবে। তারা পরস্পর বলবেঃ পৃথিবীতে যারা ছিল তাদেরকে তো বধ করেছি এস এবার আসমানে যারা আছে তাদের শেষ করে দইে। তারপর তারা আসমানের দিকে তাদের তীর ছুড়বে। আল্লাহ তাআলা তাদের তীরগুলোকে রক্ত রঞ্জিত করে ফিরিয়ে দিবেন। ঈসা ইবনে মারয়াম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সঙ্গীগণ অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকবেন। তাদের অবস্থা এমন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে যে, আজকে তোমাদের কাছে একশত স্বর্ণ মুদ্রার যে দাম তাদের কাছে তখন একটি ষাড়ের মাথাও তদপেক্ষা অনেক উত্তম বলে মনে হবে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ তারপর ঈসা (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সঙ্গীগণ আল্লাহর কাছে মিনতি জানাবেন। আল্লাহ তাআলা তাদের গর্দানে ’‘নাগাফ’’ জাতীয় এক জীবানু মহামারীরূপে প্রেরণ করবেন। তারা সব ধ্বংস হয়ে মরে যাবে যেন একটি মাত্র প্রাণের মৃত্যু হল। এরপর ঈসা (আলাইহিস সালাম) ও তার সঙ্গীগণ পাহাড় থেকে নেমে আসবেন, কিন্তু তারা এব বিঘৎ জায়গাও এমন পাবেন না যেখানে ইয়জুজ-মাজুজের গলিত চর্বি, রক্ত ও দুগন্ধ ছড়িয়ে না আছে। তারপর ঈসা (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সঙ্গীগণ আল্লাহর কাছে আবার মিনতি জানাবেন। তখন আল্লাহ তাআলা উটের মত লম্বা গলা বিশিষ্ট এক প্রকার পাখি প্রেরণ করবেন। পাখিগুলি ইয়াজুজ-মাজুজদের লাশ উঠিয়ে নীচু গর্তে নিয়ে ফেলে দিবে। মুসলিমগণ তাদের ফেলে যাওয়া ধনুকে জ্যা, তীর এবং তুলীর সাত বছর পর্যন্ত জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করবে। আল্লাহ তাআলা প্রবল বৃষ্টি করবেন শহর বা গ্রামের কোন বাড়িঘরই তা থেকে রক্ষা পাবে না। সমস্ত যমীন ধৌত হয়ে যাবে এবং তা আয়নার মত ঝক ঝকে হয়ে উঠবে।
পরে যমীনকে বলা হবে, তোমার সব ফল ও ফসল বের করে দাও, সব বরকত ফিরিয়ে দাও। এমন হবে যে সেদিন একটি আনার একদল লোক খেতে পারবে এবং একদল লোক এর খোসার নীচে ছায়া গ্রহণ করতে পারবে। দুধের মধ্যেও এমন বরকত হবে যে, একটি দুগ্ধবতী উট বহুসংখ্যক লোক বিশিষ্ট দলের জন্য যথেষ্ট হবে। একটি দুগ্ধবতী গাভী একটি গোত্রের জন্য যথেষ্ট হবে। একটি দুগ্ধবতী ছাগল একটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে।
এমন অবস্থায় তারা দিন গুযরান করতে থাকবে হঠাৎ আল্লাহ তাআলা এক হাওয়া চালাবেন। এই হাওয়া প্রত্যেক মুমিনের রূহ কবয করে নিয়ে যাবে। বাকী কেবল দুষ্টু লোকেরা থেকে যাবে। এরা গাধার মত নির্লজ্জভাবে নারী সঙ্গমে লিপ্ত হবে। এদের উপরই কিয়ামত সংঘটিত হবে।
بَابُ مَا جَاءَ فِي فِتْنَةِ الدَّجَّالِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ، دَخَلَ حَدِيثُ أَحَدِهِمَا فِي حَدِيثِ الآخَرِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ جَابِرٍ الطَّائِيِّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ عَنِ النَّوَّاسِ بْنِ سَمْعَانَ الْكِلاَبِيِّ قَالَ ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الدَّجَّالَ ذَاتَ غَدَاةٍ فَخَفَّضَ فِيهِ وَرَفَّعَ حَتَّى ظَنَنَّاهُ فِي طَائِفَةِ النَّخْلِ . قَالَ فَانْصَرَفْنَا مِنْ عِنْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ رَجَعْنَا إِلَيْهِ فَعَرَفَ ذَلِكَ فِينَا فَقَالَ " مَا شَأْنُكُمْ " . قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَكَرْتَ الدَّجَّالَ الْغَدَاةَ فَخَفَّضْتَ فِيهِ وَرَفَّعْتَ حَتَّى ظَنَنَّاهُ فِي طَائِفَةِ النَّخْلِ . قَالَ " غَيْرُ الدَّجَّالِ أَخْوَفُ لِي عَلَيْكُمْ إِنْ يَخْرُجْ وَأَنَا فِيكُمْ فَأَنَا حَجِيجُهُ دُونَكُمْ وَإِنْ يَخْرُجْ وَلَسْتُ فِيكُمْ فَامْرُؤٌ حَجِيجُ نَفْسِهِ وَاللَّهُ خَلِيفَتِي عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ إِنَّهُ شَابٌّ قَطَطٌ عَيْنُهُ قَائِمَةٌ شَبِيهٌ بِعَبْدِ الْعُزَّى بْنِ قَطَنٍ فَمَنْ رَآهُ مِنْكُمْ فَلْيَقْرَأْ فَوَاتِحَ سُورَةِ أَصْحَابِ الْكَهْفِ قَالَ يَخْرُجُ مَا بَيْنَ الشَّامِ وَالْعِرَاقِ فَعَاثَ يَمِينًا وَشِمَالاً يَا عِبَادَ اللَّهِ اثْبُتُوا " . قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا لُبْثُهُ فِي الأَرْضِ قَالَ " أَرْبَعِينَ يَوْمًا يَوْمٌ كَسَنَةٍ وَيَوْمٌ كَشَهْرٍ وَيَوْمٌ كَجُمُعَةٍ وَسَائِرُ أَيَّامِهُ كَأَيَّامِكُمْ " . قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ الْيَوْمَ الَّذِي كَالسَّنَةِ أَتَكْفِينَا فِيهِ صَلاَةُ يَوْمٍ قَالَ " لاَ وَلَكِنِ اقْدُرُوا لَهُ " . قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ فَمَا سُرْعَتُهُ فِي الأَرْضِ قَالَ " كَالْغَيْثِ اسْتَدْبَرَتْهُ الرِّيحُ فَيَأْتِي الْقَوْمَ فَيَدْعُوهُمْ فَيُكَذِّبُونَهُ وَيَرُدُّونَ عَلَيْهِ قَوْلَهُ فَيَنْصَرِفُ عَنْهُمْ فَتَتْبَعُهُ أَمْوَالُهُمْ فَيُصْبِحُونَ لَيْسَ بِأَيْدِيهِمْ شَيْءٌ ثُمَّ يَأْتِي الْقَوْمَ فَيَدْعُوهُمْ فَيَسْتَجِيبُونَ لَهُ وَيُصَدِّقُونَهُ فَيَأْمُرُ السَّمَاءَ أَنْ تُمْطِرَ فَتُمْطِرَ وَيَأْمُرُ الأَرْضَ أَنْ تُنْبِتَ فَتُنْبِتَ فَتَرُوحُ عَلَيْهِمْ سَارِحَتُهُمْ كَأَطْوَلِ مَا كَانَتْ ذُرًى وَأَمَدِّهِ خَوَاصِرَ وَأَدَرِّهِ ضُرُوعًا قَالَ ثُمَّ يَأْتِي الْخَرِبَةَ فَيَقُولُ لَهَا أَخْرِجِي كُنُوزَكِ فَيَنْصَرِفُ مِنْهَا فَتَتْبَعُهُ كَيَعَاسِيبِ النَّحْلِ ثُمَّ يَدْعُو رَجُلاً شَابًّا مُمْتَلِئًا شَبَابًا فَيَضْرِبُهُ بِالسَّيْفِ فَيَقْطَعُهُ جِزْلَتَيْنِ ثُمَّ يَدْعُوهُ فَيُقْبِلُ يَتَهَلَّلُ وَجْهُهُ يَضْحَكُ فَبَيْنَمَا هُوَ كَذَلِكَ إِذْ هَبَطَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ بِشَرْقِيِّ دِمَشْقَ عِنْدَ الْمَنَارَةِ الْبَيْضَاءِ بَيْنَ مَهْرُودَتَيْنِ وَاضِعًا يَدَيْهِ عَلَى أَجْنِحَةِ مَلَكَيْنِ إِذَا طَأْطَأَ رَأْسَهُ قَطَرَ وَإِذَا رَفَعَهُ تَحَدَّرَ مِنْهُ جُمَانٌ كَاللُّؤْلُؤِ قَالَ وَلاَ يَجِدُ رِيحَ نَفَسِهِ يَعْنِي أَحَدٌ إِلاَّ مَاتَ وَرِيحُ نَفَسِهِ مُنْتَهَى بَصَرِهِ قَالَ فَيَطْلُبُهُ حَتَّى يُدْرِكَهُ بِبَابِ لُدٍّ فَيَقْتُلَهُ قَالَ فَيَلْبَثُ كَذَلِكَ مَا شَاءَ اللَّهُ . قَالَ ثُمَّ يُوحِي اللَّهُ إِلَيْهِ أَنْ حَرِّزْ عِبَادِي إِلَى الطُّورِ فَإِنِّي قَدْ أَنْزَلْتُ عِبَادًا لِي لاَ يَدَانِ لأَحَدٍ بِقِتَالِهِمْ . قَالَ وَيَبْعَثُ اللَّهُ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ وَهُمْ كَمَا قَالَ اللَّهُ: ( مِنْ كُلِّ حَدَبٍ يَنْسِلُونَ ) . قَالَ فَيَمُرُّ أَوَّلُهُمْ بِبُحَيْرَةِ الطَّبَرِيَّةِ فَيَشْرَبُ مَا فِيهَا ثُمَّ يَمُرُّ بِهَا آخِرُهُمْ فَيَقُولُ لَقَدْ كَانَ بِهَذِهِ مَرَّةً مَاءٌ ثُمَّ يَسِيرُونَ حَتَّى يَنْتَهُوا إِلَى جَبَلِ بَيْتِ الْمَقْدِسِ فَيَقُولُونَ لَقَدْ قَتَلْنَا مَنْ فِي الأَرْضِ هَلُمَّ فَلْنَقْتُلْ مَنْ فِي السَّمَاءِ . فَيَرْمُونَ بِنُشَّابِهِمْ إِلَى السَّمَاءِ فَيَرُدُّ اللَّهُ عَلَيْهِمْ نُشَّابَهُمْ مُحْمَرًّا دَمًا وَيُحَاصَرُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ وَأَصْحَابُهُ حَتَّى يَكُونَ رَأْسُ الثَّوْرِ يَوْمَئِذٍ خَيْرًا لأَحَدِهِمْ مِنْ مِائَةِ دِينَارٍ لأَحَدِكُمُ الْيَوْمَ . قَالَ فَيَرْغَبُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ إِلَى اللَّهِ وَأَصْحَابُهُ قَالَ فَيُرْسِلُ اللَّهُ إِلَيْهِمُ النَّغَفَ فِي رِقَابِهِمْ فَيُصْبِحُونَ فَرْسَى مَوْتَى كَمَوْتِ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ قَالَ وَيَهْبِطُ عِيسَى وَأَصْحَابُهُ فَلاَ يَجِدُ مَوْضِعَ شِبْرٍ إِلاَّ وَقَدْ مَلأَتْهُ زَهَمَتُهُمْ وَنَتَنُهُمْ وَدِمَاؤُهُمْ قَالَ فَيَرْغَبُ عِيسَى إِلَى اللَّهِ وَأَصْحَابُهُ قَالَ فَيُرْسِلُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ طَيْرًا كَأَعْنَاقِ الْبُخْتِ قَالَ فَتَحْمِلُهُمْ فَتَطْرَحُهُمْ بِالْمَهْبِلِ وَيَسْتَوْقِدُ الْمُسْلِمُونَ مِنْ قِسِيِّهِمْ وَنُشَّابِهِمْ وَجِعَابِهِمْ سَبْعَ سِنِينَ قَالَ وَيُرْسِلُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مَطَرًا لاَ يَكُنُّ مِنْهُ بَيْتُ وَبَرٍ وَلاَ مَدَرٍ قَالَ فَيَغْسِلُ الأَرْضَ فَيَتْرُكُهَا كَالزَّلَفَةِ قَالَ ثُمَّ يُقَالُ لِلأَرْضِ أَخْرِجِي ثَمَرَتَكِ وَرُدِّي بَرَكَتَكِ . فَيَوْمَئِذٍ تَأْكُلُ الْعِصَابَةُ مِنَ الرُّمَّانَةِ وَيَسْتَظِلُّونَ بِقِحْفِهَا وَيُبَارَكُ فِي الرِّسْلِ حَتَّى إِنَّ الْفِئَامَ مِنَ النَّاسِ لَيَكْتَفُونَ بِاللَّقْحَةِ مِنَ الإِبِلِ وَإِنَّ الْقَبِيلَةَ لَيَكْتَفُونَ بِاللَّقْحَةِ مِنَ الْبَقَرِ وَإِنَّ الْفَخِذَ لَيَكْتَفُونَ بِاللَّقْحَةِ مِنَ الْغَنَمِ فَبَيْنَمَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ بَعَثَ اللَّهُ رِيحًا فَقَبَضَتْ رُوحَ كُلِّ مُؤْمِنٍ وَيَبْقَى سَائِرُ النَّاسِ يَتَهَارَجُونَ كَمَا تَتَهَارَجُ الْحُمُرُ فَعَلَيْهِمْ تَقُومُ السَّاعَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ .

তাহকীক:
তাহকীক চলমান

বর্ণনাকারী: