আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
المسند الصحيح لمسلم
৫৫- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৪ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং: ৭১১৯
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৪২-১
২৪. জাসসাসাহ্ (দাজ্জালের গুপ্তচর) প্রাণীর ঘটনা
৭১১৯। আব্দুল ওয়ারিস ইবনে আব্দুস সামাদ ইবনে আব্দুল ওয়ারিস ও হাজ্জাজ ইবনে শাঈর (রাহঃ) ......... আমির ইবনে শারাহীল শা’বী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি যাহহাক ইবনে কায়সের বোন ফাতিমা বিনতে কায়স (রাযিঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন। যে সমন্ত মহিলাগণ প্রথমে হিজরত করেছিলেন, তিনি তাদের অন্যতম। তিনি বলেন, আপনি, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে যে হাদীস শুনেছেন, অন্যের দিকে সম্বোধন করা ব্যতিরেকে, এমন একটি হাদীস আপনি আমার নিকট বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, আচ্ছা, তুমি যদি শুনতে চাও, তবে অবশ্যই আমি বর্ণনা করবো। সে বলল, হ্যাঁ আপনি বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, আমি ইবনে মুগীরাকে বিবাহ করেছি। তখন তিনি কুরাইশী যুবকদের উত্তম ব্যক্তি ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে প্রথম যুদ্ধে শরীক হয়েই তিনি শহীদ হয়ে যান। আমি বিধবা হয়ে যাবার পর আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ) আমার নিকট বিবাহের পয়গাম পাঠান। পয়গাম পাঠান রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আরো কতিপয় সাহাবী।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিজেও তাঁর আযাদকৃত গোলাম উসামা ইবনে যায়দের জন্য পয়গাম পাঠান। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর এ হাদীসটি আমি পূর্বেই শুনেছিলাম যে, তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসে সে যেন উসামাকেও ভালবাসে। ফাতিমা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ বিষয়ে আমার সাথে আলোচনা করার পর আমি তাকে বলেছি, আমার বিষয়টি আপনার ইখতিয়ারে ছেড়ে দিলাম। আপনি যার সাথে ইচ্ছা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিন। অতঃপর তিনি বললেন, তুমি উম্মে শারীকের নিকট চলে যাও। উম্মে শরীক একজন আনসারী বিত্তশালী মহিলা। আল্লাহর পথে সে অধিক ব্যয় করে এবং তার নিকট অধিক অতিথি আসে। একথা শুনে আমি বললাম, আমি তাই করব।
তখন তিনি বললেন, তুমি উম্মে শরীকের নিকট যেয়ো না। কেননা উম্মে শরীকের কাছে অনেক মেহমানের আনাগোনা এবং আমি এটাও পছন্দ করিনা যে, তোমার ওড়না পড়ে যাক বা তোমার পায়ের গোছা হতে কাপড় খসে যাক আর লোকেরা তোমার শরীরের এমন স্থান দেখে নিক যা তুমি কখনো পছন্দ করনা। তবে তুমি তোমার চাচাতো ভাই আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুমের নিকট চলে যাও। তিনি বনী ফিহরের এক ব্যক্তি। ফিহর কুরাইশেরই একটি শাখা গোত্র। ফাতিমা যে খান্দানের লোক তিনিও সে খান্দানেরই মানুষ।
আমি তার নিকট চলে গেলাম। অতঃপর আমার ইদ্দত সমাপ্ত হলে আমি জনৈক আহবানকারীর আওয়াজ শুনতে পেলাম। বস্তুতঃ তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কর্তৃক নির্ধারিত আহবানকারী ছিলেন। তিনি এ মর্মে আহবান করছিলেন যে নামাযের উদ্দেশ্যে তোমরা একত্রিত হয়ে যাও। অতঃপর আমি মসজিদের দিকে রওয়ানা হলাম এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে নামায আদায় করলাম। তিনি বলেন, কওমের পেছনে যে কাতারে মহিলাগণ ছিলেন আমি সে কাতারেই ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নামাযান্তে হাসিমুখে মিম্বরে বসে গেলেন। অতঃপর বললেনঃ প্রত্যেকেই আপন আপন স্থানে বসে যাও। অতঃপর তিনি বললেন, তোমরা কি জান, আমি কি জন্য তোমাদেরকে একত্রিত করেছি? সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে কোন আশা বা ভীতি প্রদর্শনের জন্য একত্রিত করিনি। তবে আমি তোমাদেরকে কেবল এ জন্য একত্রিত করেছি যে, তামীম দারী (রাযিঃ) প্রথমে খ্রীষ্টান ছিল। সে আমার নিকট এসে বায়আত গ্রহণ করেছে এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। সে আমার কাছে এমন একটি কাহিনী বর্ণনা করেছে যদ্বারা আমার সেই বর্ণনার সত্যায়ন হয়ে যায়, যা আমি দাজ্জাল সম্পর্কে তোমাদের বর্ণনা করেছিলাম।
সে আমাকে বলেছে যে, একবার সে লাখম ও জুযাম গোত্রের ত্রিশজন লোকসহ একটি সামুদ্রিক নৌকায় আরোহণ করেছিল। সামুদ্রিক তুফান এক মাস পর্যন্ত তাদেরকে নিয়ে খেলা করতে থাকে। অতঃপর (একদিন) সূর্যাস্তের সময় তারা সমুদ্রের এক দ্বীপে আশ্রয় গ্রহণ করে। এরপর তারা ছোট ছোট নৌকায় বসে ঐ দ্বীপে প্রবেশ করে। দ্বীপে নামতেই একটি জন্তু তাদের দৃষ্টিগোচর হল। তার সমগ্র দেহ লোমে আবৃত ছিল। লোমের কারণে তার সম্মুখ অঙ্গ ও পশ্চাত অঙ্গ চিনা যাচ্ছিল না। লোকেরা তাকে বলল, হতভাগা, তুই কে? সে বলল, আমি দাজ্জালের গুপ্তচর। লোকেরা বলল, গুপ্তচর আবার কি? সে বলল! লোক সকল! ঐ যে গীর্জা দেখা যায় সেখানে চল। সেখানে এক ব্যক্তি অধীর আগ্রহে তোমাদের অপেক্ষা করছে।
তামীমদারী (রাযিঃ) বলেন, তার মুখে এক ব্যক্তির কথা শুনে আমরা ভীত ছিলাম যে, সে আবার শয়তান তো নয়! আমরা দ্রুত হেটে গীর্জায় প্রবেশ করতঃ এক বিশালদেহী ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম। ইতিপূর্বে এমন আমরা আর কখনো দেখিনি। লোহার শিকলে বাধা অবস্থায় দুই হাঁটুর মধ্য দিয়ে তার উভয় হাত ঘাড়ের সাথে মিলানো। আমরা তাকে বললাম, তোর সর্বনাশ হোক, তুই কে? সে বলল, তোমরা আমার সন্ধান কিছু না কিছু পেয়েই গেছ। এখন তোমরা বল, তোমাদের পরিচয় কি? তারা বলল, আমরা আরবের বাসিন্দা। আমরা সমুদ্রে নৌকায় চড়ে ভ্রমণ করছিলাম। আমরা সমূদ্রকে উত্তাল তরং্গে উদ্বেলিত অবস্থায় পেয়েছি। এক মাস পর্যন্ত ঝাড়ের কবলে থেকে আমরা তোমার এ দ্বীপে এসে পৌছেছি। অতঃপর ছোট ছোট নৌকায় আরোহণ করে এ দ্বীপে আমরা প্রবেশ করেছি। এখানে আমরা একটি সর্বাঙ্গ লোমে আবৃত জন্তুকে দেখতে পেয়েছি। লোমের আধিক্যের কারণে আমরা তার সম্মুখ অঙ্গ ও পশ্চাত অঙ্গ চিহ্নিত করতে পারছিলাম না। আমরা তাকে বলেছি, তোর সর্বনাশ হোক, তুই কে? সে বলেছে, সে নাকি দাজ্জালের গুপ্তচর। আমরা বললাম, গুপ্তচর আবার কি! তখন সে বলেছে, ঐ যে গীর্জা দেখা যায়, তোমরা সেখানে চল। সেখানে এক ব্যক্তি অধীর আগ্রন্থে তোমাদের অপেক্ষায় আছে। তাই আমরা দ্রুত তোর কাছে এসে গেছি।
আমরা তার কথায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি; না জানি এ আবার কোন শয়তান (জ্বীন) কিনা? অতঃপর সে বলল, তোমরা আমাকে বায়সানের খেজুর বাগানের খবর বল। আমরা বললাম, এর কোন বিষয়টি সম্পর্কে তুই সংবাদ জানতে চাচ্ছিস? সে বলল, বায়সানের খেজুর বাগানে ফল আসে কি না, এ সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করছি। তাকে আমরা বললাম, হ্যাঁ, আছে। সে বলল, সেদিন নিকটেই যেদিন এগুলোতে ফল ধরবে না। অতঃপর সে বলল, আচ্ছা, তাবারিয়া সমুদ্র সম্পর্কে আমাকে অবগত কর। আমরা বললাম, এর কোন বিষয় সম্পর্কে তুই আমাদের থেকে জানতে চাচ্ছিস! সে বলল, এর মধ্যে পানি আছে কি? তারা বলল, হ্যাঁ, সেখানে বহু পানি আছে। অতঃপর সে বলল, সেদিন বেশী দূরে নয়, যখন এ সাগরে পানি থাকবে না।
সে আবার বলল, যুগার এর ঝর্ণা সম্পর্কে তোমরা আমাকে অবহিত কর। তারা বলল, তুই এর কি সম্পর্কে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে চাচ্ছিস। সে বলল, এতে পানি আছে কি? এবং এ জনপদের লোকেরা তাদের ক্ষেত্রে এ ঝর্ণার পানি দেয় কি! আমরা বললাম- হ্যাঁ, এ তে বহু পানি আছে এবং এ জনপদের লোকেরা এ পস্রবনের পানি দ্বারা চাষাবাদ করে কি? সে পূনরায় বলল, তোমরা আমাকে উম্মীদের নবী সম্পর্কে সংবাদ দাও। সে এখন কি করছে? তারা বলল, তিনি মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় চলে এসেছেন। সে জিজ্ঞাসা করল, আরবের লোকেরা তার সাথে যুদ্ধ করছে কি? আমরা বললাম, হ্যাঁ, করেছে। সে বলল, সে তাদের সাথে কিরূপ আচরণ করেছে। আমরা তাকে সংবাদ দিলাম যে, তিনি আরবের পার্শ্ববর্তী এলাকায় জয়ী হয়েছেন এবং তারা তার বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছে। সে বলল, এ কি হয়েই গেছে? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে বলল, বশ্যতা স্বীকার করে নেয়াই জনগণের জন্য মঙ্গলজনক ছিল।
এখন আমি নিজের সম্পর্কে তোমাদেরকে বলছি, আমিই মাসীহ দাজ্জাল। অতিসত্ত্বরই আমি এখান থেকে বাইরে যাবার অনুমতি পেয়ে যাব। বাইরে যেয়ে আমি সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠ প্রদক্ষিণ করবো। চল্লিশ দিনের ভেতর এমন কোন জনপদ থাকবে না, যেখানে আমি প্রবেশ না করব। তবে মক্কা ও তায়বা এ দু’টি স্থানে আমি প্রবেশ করব না। যখন আমি এ দুটির কোন একটিতে প্রবেশের ইচ্ছা করব, তখন এক ফিরিশতা উন্মুক্ত তরবারি হাতে সামনে এসে আমাকে বাধা দিবে। এ দুটি স্থানের সকল রাস্তায় ফিরিশতাদের পাহারা থাকবে।
বর্ণনাকারী বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার ছড়ি দ্বারা মিম্বরে আঘাত করে বললেন, এই হচ্ছে তায়বা, এই হচ্ছে তায়বা, এই হচ্ছে তায়বা। অর্থাৎ তায়বা অর্থ এই মদীনাই। সাবধান! আমি কি এ কথাটি ইতিপূর্বে তোমাদেরকে বলিনি? তখন লোকেরা বলল, হ্যাঁ, আপনি বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তামীমদারীর বর্ণনাটি আমাকে বিমোহিত করেছে। যেহেতু তা সামঞ্জস্যপূর্ণ আমার ঐ বর্ণনার, যা আমি তোমাদেরকে দাজ্জাল, মাদীনা ও মক্কা সম্পর্কে ইতিপূর্বে বলেছি। তিনি আরো বললেন, সিরিয়া সাগরে অথবা ইয়ামান সাগরে বরং পূর্বদিকে রয়েছে, পূর্বদিকে রয়েছে, পূর্বদিকে রয়েছে। এসময় তিনি তার হাত দ্বারা পূর্ব দিকে ইশারাও করলেন। বর্ণনাকারী ফাতিমা বিনতে কায়স (রাযিঃ) বলেন, এ হাদীস আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে মুখস্থ করেছি।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিজেও তাঁর আযাদকৃত গোলাম উসামা ইবনে যায়দের জন্য পয়গাম পাঠান। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর এ হাদীসটি আমি পূর্বেই শুনেছিলাম যে, তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসে সে যেন উসামাকেও ভালবাসে। ফাতিমা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ বিষয়ে আমার সাথে আলোচনা করার পর আমি তাকে বলেছি, আমার বিষয়টি আপনার ইখতিয়ারে ছেড়ে দিলাম। আপনি যার সাথে ইচ্ছা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিন। অতঃপর তিনি বললেন, তুমি উম্মে শারীকের নিকট চলে যাও। উম্মে শরীক একজন আনসারী বিত্তশালী মহিলা। আল্লাহর পথে সে অধিক ব্যয় করে এবং তার নিকট অধিক অতিথি আসে। একথা শুনে আমি বললাম, আমি তাই করব।
তখন তিনি বললেন, তুমি উম্মে শরীকের নিকট যেয়ো না। কেননা উম্মে শরীকের কাছে অনেক মেহমানের আনাগোনা এবং আমি এটাও পছন্দ করিনা যে, তোমার ওড়না পড়ে যাক বা তোমার পায়ের গোছা হতে কাপড় খসে যাক আর লোকেরা তোমার শরীরের এমন স্থান দেখে নিক যা তুমি কখনো পছন্দ করনা। তবে তুমি তোমার চাচাতো ভাই আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুমের নিকট চলে যাও। তিনি বনী ফিহরের এক ব্যক্তি। ফিহর কুরাইশেরই একটি শাখা গোত্র। ফাতিমা যে খান্দানের লোক তিনিও সে খান্দানেরই মানুষ।
আমি তার নিকট চলে গেলাম। অতঃপর আমার ইদ্দত সমাপ্ত হলে আমি জনৈক আহবানকারীর আওয়াজ শুনতে পেলাম। বস্তুতঃ তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কর্তৃক নির্ধারিত আহবানকারী ছিলেন। তিনি এ মর্মে আহবান করছিলেন যে নামাযের উদ্দেশ্যে তোমরা একত্রিত হয়ে যাও। অতঃপর আমি মসজিদের দিকে রওয়ানা হলাম এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে নামায আদায় করলাম। তিনি বলেন, কওমের পেছনে যে কাতারে মহিলাগণ ছিলেন আমি সে কাতারেই ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নামাযান্তে হাসিমুখে মিম্বরে বসে গেলেন। অতঃপর বললেনঃ প্রত্যেকেই আপন আপন স্থানে বসে যাও। অতঃপর তিনি বললেন, তোমরা কি জান, আমি কি জন্য তোমাদেরকে একত্রিত করেছি? সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে কোন আশা বা ভীতি প্রদর্শনের জন্য একত্রিত করিনি। তবে আমি তোমাদেরকে কেবল এ জন্য একত্রিত করেছি যে, তামীম দারী (রাযিঃ) প্রথমে খ্রীষ্টান ছিল। সে আমার নিকট এসে বায়আত গ্রহণ করেছে এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। সে আমার কাছে এমন একটি কাহিনী বর্ণনা করেছে যদ্বারা আমার সেই বর্ণনার সত্যায়ন হয়ে যায়, যা আমি দাজ্জাল সম্পর্কে তোমাদের বর্ণনা করেছিলাম।
সে আমাকে বলেছে যে, একবার সে লাখম ও জুযাম গোত্রের ত্রিশজন লোকসহ একটি সামুদ্রিক নৌকায় আরোহণ করেছিল। সামুদ্রিক তুফান এক মাস পর্যন্ত তাদেরকে নিয়ে খেলা করতে থাকে। অতঃপর (একদিন) সূর্যাস্তের সময় তারা সমুদ্রের এক দ্বীপে আশ্রয় গ্রহণ করে। এরপর তারা ছোট ছোট নৌকায় বসে ঐ দ্বীপে প্রবেশ করে। দ্বীপে নামতেই একটি জন্তু তাদের দৃষ্টিগোচর হল। তার সমগ্র দেহ লোমে আবৃত ছিল। লোমের কারণে তার সম্মুখ অঙ্গ ও পশ্চাত অঙ্গ চিনা যাচ্ছিল না। লোকেরা তাকে বলল, হতভাগা, তুই কে? সে বলল, আমি দাজ্জালের গুপ্তচর। লোকেরা বলল, গুপ্তচর আবার কি? সে বলল! লোক সকল! ঐ যে গীর্জা দেখা যায় সেখানে চল। সেখানে এক ব্যক্তি অধীর আগ্রহে তোমাদের অপেক্ষা করছে।
তামীমদারী (রাযিঃ) বলেন, তার মুখে এক ব্যক্তির কথা শুনে আমরা ভীত ছিলাম যে, সে আবার শয়তান তো নয়! আমরা দ্রুত হেটে গীর্জায় প্রবেশ করতঃ এক বিশালদেহী ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম। ইতিপূর্বে এমন আমরা আর কখনো দেখিনি। লোহার শিকলে বাধা অবস্থায় দুই হাঁটুর মধ্য দিয়ে তার উভয় হাত ঘাড়ের সাথে মিলানো। আমরা তাকে বললাম, তোর সর্বনাশ হোক, তুই কে? সে বলল, তোমরা আমার সন্ধান কিছু না কিছু পেয়েই গেছ। এখন তোমরা বল, তোমাদের পরিচয় কি? তারা বলল, আমরা আরবের বাসিন্দা। আমরা সমুদ্রে নৌকায় চড়ে ভ্রমণ করছিলাম। আমরা সমূদ্রকে উত্তাল তরং্গে উদ্বেলিত অবস্থায় পেয়েছি। এক মাস পর্যন্ত ঝাড়ের কবলে থেকে আমরা তোমার এ দ্বীপে এসে পৌছেছি। অতঃপর ছোট ছোট নৌকায় আরোহণ করে এ দ্বীপে আমরা প্রবেশ করেছি। এখানে আমরা একটি সর্বাঙ্গ লোমে আবৃত জন্তুকে দেখতে পেয়েছি। লোমের আধিক্যের কারণে আমরা তার সম্মুখ অঙ্গ ও পশ্চাত অঙ্গ চিহ্নিত করতে পারছিলাম না। আমরা তাকে বলেছি, তোর সর্বনাশ হোক, তুই কে? সে বলেছে, সে নাকি দাজ্জালের গুপ্তচর। আমরা বললাম, গুপ্তচর আবার কি! তখন সে বলেছে, ঐ যে গীর্জা দেখা যায়, তোমরা সেখানে চল। সেখানে এক ব্যক্তি অধীর আগ্রন্থে তোমাদের অপেক্ষায় আছে। তাই আমরা দ্রুত তোর কাছে এসে গেছি।
আমরা তার কথায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি; না জানি এ আবার কোন শয়তান (জ্বীন) কিনা? অতঃপর সে বলল, তোমরা আমাকে বায়সানের খেজুর বাগানের খবর বল। আমরা বললাম, এর কোন বিষয়টি সম্পর্কে তুই সংবাদ জানতে চাচ্ছিস? সে বলল, বায়সানের খেজুর বাগানে ফল আসে কি না, এ সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করছি। তাকে আমরা বললাম, হ্যাঁ, আছে। সে বলল, সেদিন নিকটেই যেদিন এগুলোতে ফল ধরবে না। অতঃপর সে বলল, আচ্ছা, তাবারিয়া সমুদ্র সম্পর্কে আমাকে অবগত কর। আমরা বললাম, এর কোন বিষয় সম্পর্কে তুই আমাদের থেকে জানতে চাচ্ছিস! সে বলল, এর মধ্যে পানি আছে কি? তারা বলল, হ্যাঁ, সেখানে বহু পানি আছে। অতঃপর সে বলল, সেদিন বেশী দূরে নয়, যখন এ সাগরে পানি থাকবে না।
সে আবার বলল, যুগার এর ঝর্ণা সম্পর্কে তোমরা আমাকে অবহিত কর। তারা বলল, তুই এর কি সম্পর্কে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে চাচ্ছিস। সে বলল, এতে পানি আছে কি? এবং এ জনপদের লোকেরা তাদের ক্ষেত্রে এ ঝর্ণার পানি দেয় কি! আমরা বললাম- হ্যাঁ, এ তে বহু পানি আছে এবং এ জনপদের লোকেরা এ পস্রবনের পানি দ্বারা চাষাবাদ করে কি? সে পূনরায় বলল, তোমরা আমাকে উম্মীদের নবী সম্পর্কে সংবাদ দাও। সে এখন কি করছে? তারা বলল, তিনি মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় চলে এসেছেন। সে জিজ্ঞাসা করল, আরবের লোকেরা তার সাথে যুদ্ধ করছে কি? আমরা বললাম, হ্যাঁ, করেছে। সে বলল, সে তাদের সাথে কিরূপ আচরণ করেছে। আমরা তাকে সংবাদ দিলাম যে, তিনি আরবের পার্শ্ববর্তী এলাকায় জয়ী হয়েছেন এবং তারা তার বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছে। সে বলল, এ কি হয়েই গেছে? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে বলল, বশ্যতা স্বীকার করে নেয়াই জনগণের জন্য মঙ্গলজনক ছিল।
এখন আমি নিজের সম্পর্কে তোমাদেরকে বলছি, আমিই মাসীহ দাজ্জাল। অতিসত্ত্বরই আমি এখান থেকে বাইরে যাবার অনুমতি পেয়ে যাব। বাইরে যেয়ে আমি সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠ প্রদক্ষিণ করবো। চল্লিশ দিনের ভেতর এমন কোন জনপদ থাকবে না, যেখানে আমি প্রবেশ না করব। তবে মক্কা ও তায়বা এ দু’টি স্থানে আমি প্রবেশ করব না। যখন আমি এ দুটির কোন একটিতে প্রবেশের ইচ্ছা করব, তখন এক ফিরিশতা উন্মুক্ত তরবারি হাতে সামনে এসে আমাকে বাধা দিবে। এ দুটি স্থানের সকল রাস্তায় ফিরিশতাদের পাহারা থাকবে।
বর্ণনাকারী বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার ছড়ি দ্বারা মিম্বরে আঘাত করে বললেন, এই হচ্ছে তায়বা, এই হচ্ছে তায়বা, এই হচ্ছে তায়বা। অর্থাৎ তায়বা অর্থ এই মদীনাই। সাবধান! আমি কি এ কথাটি ইতিপূর্বে তোমাদেরকে বলিনি? তখন লোকেরা বলল, হ্যাঁ, আপনি বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তামীমদারীর বর্ণনাটি আমাকে বিমোহিত করেছে। যেহেতু তা সামঞ্জস্যপূর্ণ আমার ঐ বর্ণনার, যা আমি তোমাদেরকে দাজ্জাল, মাদীনা ও মক্কা সম্পর্কে ইতিপূর্বে বলেছি। তিনি আরো বললেন, সিরিয়া সাগরে অথবা ইয়ামান সাগরে বরং পূর্বদিকে রয়েছে, পূর্বদিকে রয়েছে, পূর্বদিকে রয়েছে। এসময় তিনি তার হাত দ্বারা পূর্ব দিকে ইশারাও করলেন। বর্ণনাকারী ফাতিমা বিনতে কায়স (রাযিঃ) বলেন, এ হাদীস আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে মুখস্থ করেছি।
باب قِصَّةِ الْجَسَّاسَةِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ بْنِ عَبْدِ الْوَارِثِ، وَحَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الصَّمَدِ، - وَاللَّفْظُ لِعَبْدِ الْوَارِثِ بْنِ عَبْدِ الصَّمَدِ - حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ جَدِّي، عَنِ الْحُسَيْنِ، بْنِ ذَكْوَانَ حَدَّثَنَا ابْنُ بُرَيْدَةَ، حَدَّثَنِي عَامِرُ بْنُ شَرَاحِيلَ الشَّعْبِيُّ، شَعْبُ هَمْدَانَ أَنَّهُ سَأَلَ فَاطِمَةَ بِنْتَ قَيْسٍ أُخْتَ الضَّحَّاكِ بْنِ قَيْسٍ وَكَانَتْ مِنَ الْمُهَاجِرَاتِ الأُوَلِ فَقَالَ حَدِّثِينِي حَدِيثًا سَمِعْتِيهِ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تُسْنِدِيهِ إِلَى أَحَدٍ غَيْرِهِ فَقَالَتْ لَئِنْ شِئْتَ لأَفْعَلَنَّ فَقَالَ لَهَا أَجَلْ حَدِّثِينِي . فَقَالَتْ نَكَحْتُ ابْنَ الْمُغِيرَةِ وَهُوَ مِنْ خِيَارِ شَبَابِ قُرَيْشٍ يَوْمَئِذٍ فَأُصِيبَ فِي أَوَّلِ الْجِهَادِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا تَأَيَّمْتُ خَطَبَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فِي نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَخَطَبَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى مَوْلاَهُ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ وَكُنْتُ قَدْ حُدِّثْتُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَحَبَّنِي فَلْيُحِبَّ أُسَامَةَ " . فَلَمَّا كَلَّمَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ أَمْرِي بِيَدِكَ فَأَنْكِحْنِي مَنْ شِئْتَ فَقَالَ " انْتَقِلِي إِلَى أُمِّ شَرِيكٍ " . وَأُمُّ شَرِيكٍ امْرَأَةٌ غَنِيَّةٌ مِنَ الأَنْصَارِ عَظِيمَةُ النَّفَقَةِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ يَنْزِلُ عَلَيْهَا الضِّيفَانُ فَقُلْتُ سَأَفْعَلُ فَقَالَ " لاَ تَفْعَلِي إِنَّ أُمَّ شَرِيكٍ امْرَأَةٌ كَثِيرَةُ الضِّيفَانِ فَإِنِّي أَكْرَهُ أَنْ يَسْقُطَ عَنْكِ خِمَارُكِ أَوْ يَنْكَشِفَ الثَّوْبُ عَنْ سَاقَيْكِ فَيَرَى الْقَوْمُ مِنْكِ بَعْضَ مَا تَكْرَهِينَ وَلَكِنِ انْتَقِلِي إِلَى ابْنِ عَمِّكِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو ابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ " . - وَهُوَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي فِهْرٍ فِهْرِ قُرَيْشٍ وَهُوَ مِنَ الْبَطْنِ الَّذِي هِيَ مِنْهُ - فَانْتَقَلْتُ إِلَيْهِ فَلَمَّا انْقَضَتْ عِدَّتِي سَمِعْتُ نِدَاءَ الْمُنَادِي مُنَادِي رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُنَادِي الصَّلاَةَ جَامِعَةً . فَخَرَجْتُ إِلَى الْمَسْجِدِ فَصَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَكُنْتُ فِي صَفِّ النِّسَاءِ الَّتِي تَلِي ظُهُورَ الْقَوْمِ فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلاَتَهُ جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ وَهُوَ يَضْحَكُ فَقَالَ " لِيَلْزَمْ كُلُّ إِنْسَانٍ مُصَلاَّهُ " . ثُمَّ قَالَ " أَتَدْرُونَ لِمَ جَمَعْتُكُمْ " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " إِنِّي وَاللَّهِ مَا جَمَعْتُكُمْ لِرَغْبَةٍ وَلاَ لِرَهْبَةٍ وَلَكِنْ جَمَعْتُكُمْ لأَنَّ تَمِيمًا الدَّارِيَّ كَانَ رَجُلاً نَصْرَانِيًّا فَجَاءَ فَبَايَعَ وَأَسْلَمَ وَحَدَّثَنِي حَدِيثًا وَافَقَ الَّذِي كُنْتُ أُحَدِّثُكُمْ عَنْ مَسِيحِ الدَّجَّالِ حَدَّثَنِي أَنَّهُ رَكِبَ فِي سَفِينَةٍ بَحْرِيَّةٍ مَعَ ثَلاَثِينَ رَجُلاً مِنْ لَخْمٍ وَجُذَامَ فَلَعِبَ بِهِمُ الْمَوْجُ شَهْرًا فِي الْبَحْرِ ثُمَّ أَرْفَئُوا إِلَى جَزِيرَةٍ فِي الْبَحْرِ حَتَّى مَغْرِبِ الشَّمْسِ فَجَلَسُوا فِي أَقْرُبِ السَّفِينَةِ فَدَخَلُوا الْجَزِيرَةَ فَلَقِيَتْهُمْ دَابَّةٌ أَهْلَبُ كَثِيرُ الشَّعَرِ لاَ يَدْرُونَ مَا قُبُلُهُ مِنْ دُبُرِهِ مِنْ كَثْرَةِ الشَّعَرِ فَقَالُوا وَيْلَكِ مَا أَنْتِ فَقَالَتْ أَنَا الْجَسَّاسَةُ . قَالُوا وَمَا الْجَسَّاسَةُ قَالَتْ أَيُّهَا الْقَوْمُ انْطَلِقُوا إِلَى هَذَا الرَّجُلِ فِي الدَّيْرِ فَإِنَّهُ إِلَى خَبَرِكُمْ بِالأَشْوَاقِ . قَالَ لَمَّا سَمَّتْ لَنَا رَجُلاً فَرِقْنَا مِنْهَا أَنْ تَكُونَ شَيْطَانَةً - قَالَ - فَانْطَلَقْنَا سِرَاعًا حَتَّى دَخَلْنَا الدَّيْرَ فَإِذَا فِيهِ أَعْظَمُ إِنْسَانٍ رَأَيْنَاهُ قَطُّ خَلْقًا وَأَشَدُّهُ وِثَاقًا مَجْمُوعَةٌ يَدَاهُ إِلَى عُنُقِهِ مَا بَيْنَ رُكْبَتَيْهِ إِلَى كَعْبَيْهِ بِالْحَدِيدِ قُلْنَا وَيْلَكَ مَا أَنْتَ قَالَ قَدْ قَدَرْتُمْ عَلَى خَبَرِي فَأَخْبِرُونِي مَا أَنْتُمْ قَالُوا نَحْنُ أُنَاسٌ مِنَ الْعَرَبِ رَكِبْنَا فِي سَفِينَةٍ بَحْرِيَّةٍ فَصَادَفْنَا الْبَحْرَ حِينَ اغْتَلَمَ فَلَعِبَ بِنَا الْمَوْجُ شَهْرًا ثُمَّ أَرْفَأْنَا إِلَى جَزِيرَتِكَ هَذِهِ فَجَلَسْنَا فِي أَقْرُبِهَا فَدَخَلْنَا الْجَزِيرَةَ فَلَقِيَتْنَا دَابَّةٌ أَهْلَبُ كَثِيرُ الشَّعَرِ لاَ يُدْرَى مَا قُبُلُهُ مِنْ دُبُرِهِ مِنْ كَثْرَةِ الشَّعَرِ فَقُلْنَا وَيْلَكِ مَا أَنْتِ فَقَالَتْ أَنَا الْجَسَّاسَةُ . قُلْنَا وَمَا الْجَسَّاسَةُ قَالَتِ اعْمِدُوا إِلَى هَذَا الرَّجُلِ فِي الدَّيْرِ فَإِنَّهُ إِلَى خَبَرِكُمْ بِالأَشْوَاقِ فَأَقْبَلْنَا إِلَيْكَ سِرَاعًا وَفَزِعْنَا مِنْهَا وَلَمْ نَأْمَنْ أَنْ تَكُونَ شَيْطَانَةً فَقَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ نَخْلِ بَيْسَانَ قُلْنَا عَنْ أَىِّ شَأْنِهَا تَسْتَخْبِرُ قَالَ أَسْأَلُكُمْ عَنْ نَخْلِهَا هَلْ يُثْمِرُ قُلْنَا لَهُ نَعَمْ . قَالَ أَمَا إِنَّهُ يُوشِكُ أَنْ لاَ تُثْمِرَ قَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ بُحَيْرَةِ الطَّبَرِيَّةِ . قُلْنَا عَنْ أَىِّ شَأْنِهَا تَسْتَخْبِرُ قَالَ هَلْ فِيهَا مَاءٌ قَالُوا هِيَ كَثِيرَةُ الْمَاءِ . قَالَ أَمَا إِنَّ مَاءَهَا يُوشِكُ أَنْ يَذْهَبَ . قَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ عَيْنِ زُغَرَ . قَالُوا عَنْ أَىِّ شَأْنِهَا تَسْتَخْبِرُ قَالَ هَلْ فِي الْعَيْنِ مَاءٌ وَهَلْ يَزْرَعُ أَهْلُهَا بِمَاءِ الْعَيْنِ قُلْنَا لَهُ نَعَمْ هِيَ كَثِيرَةُ الْمَاءِ وَأَهْلُهَا يَزْرَعُونَ مِنْ مَائِهَا . قَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ نَبِيِّ الأُمِّيِّينَ مَا فَعَلَ قَالُوا قَدْ خَرَجَ مِنْ مَكَّةَ وَنَزَلَ يَثْرِبَ . قَالَ أَقَاتَلَهُ الْعَرَبُ قُلْنَا نَعَمْ . قَالَ كَيْفَ صَنَعَ بِهِمْ فَأَخْبَرْنَاهُ أَنَّهُ قَدْ ظَهَرَ عَلَى مَنْ يَلِيهِ مِنَ الْعَرَبِ وَأَطَاعُوهُ قَالَ لَهُمْ قَدْ كَانَ ذَلِكَ قُلْنَا نَعَمْ . قَالَ أَمَا إِنَّ ذَاكَ خَيْرٌ لَهُمْ أَنْ يُطِيعُوهُ وَإِنِّي مُخْبِرُكُمْ عَنِّي إِنِّي أَنَا الْمَسِيحُ وَإِنِّي أُوشِكُ أَنْ يُؤْذَنَ لِي فِي الْخُرُوجِ فَأَخْرُجَ فَأَسِيرَ فِي الأَرْضِ فَلاَ أَدَعَ قَرْيَةً إِلاَّ هَبَطْتُهَا فِي أَرْبَعِينَ لَيْلَةً غَيْرَ مَكَّةَ وَطَيْبَةَ فَهُمَا مُحَرَّمَتَانِ عَلَىَّ كِلْتَاهُمَا كُلَّمَا أَرَدْتُ أَنْ أَدْخُلَ وَاحِدَةً أَوْ وَاحِدًا مِنْهُمَا اسْتَقْبَلَنِي مَلَكٌ بِيَدِهِ السَّيْفُ صَلْتًا يَصُدُّنِي عَنْهَا وَإِنَّ عَلَى كُلِّ نَقْبٍ مِنْهَا مَلاَئِكَةً يَحْرُسُونَهَا قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَطَعَنَ بِمِخْصَرَتِهِ فِي الْمِنْبَرِ " هَذِهِ طَيْبَةُ هَذِهِ طَيْبَةُ هَذِهِ طَيْبَةُ " . يَعْنِي الْمَدِينَةَ " أَلاَ هَلْ كُنْتُ حَدَّثْتُكُمْ ذَلِكَ " . فَقَالَ النَّاسُ نَعَمْ " فَإِنَّهُ أَعْجَبَنِي حَدِيثُ تَمِيمٍ أَنَّهُ وَافَقَ الَّذِي كُنْتُ أُحَدِّثُكُمْ عَنْهُ وَعَنِ الْمَدِينَةِ وَمَكَّةَ أَلاَ إِنَّهُ فِي بَحْرِ الشَّامِ أَوْ بَحْرِ الْيَمَنِ لاَ بَلْ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ ما هُوَ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ مَا هُوَ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ مَا هُوَ " . وَأَوْمَأَ بِيَدِهِ إِلَى الْمَشْرِقِ . قَالَتْ فَحَفِظْتُ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .

তাহকীক:

বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৭১২০
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৪২-২
২৪. জাসসাসাহ্ (দাজ্জালের গুপ্তচর) প্রাণীর ঘটনা
৭১২০। ইয়াহয়া ইবনে হাবীব হারেসী (রাহঃ) ......... শা’বী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি ফাতিমা বিনতে কায়স (রাযিঃ) এর নিকট গেলাম। অতঃপর তিনি আমাকে তাজা খেজুর হাদিয়া দিলেন। এ খেজুরকে رُطَبُ ابْنِ طَابٍ ’ইবনে তা'ব খেজুর’ নামে পরিচিতি এবং যবের ছাতু পান করালেন। এরপর আমি তাকে তিন তালাক- প্রাপ্তা মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম যে সে কোথায় ইদ্দত পালন করবে? জবাবে তিনি বললেন আমার স্বামী আমাকে তিন তালাক দেয়ার পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে আমার বাপের বাড়ীতে ইদ্দত পালনের অনুমতি দিয়েছিলেন। ফাতিমা বিনতে কায়স (রাযিঃ) বলেন, তখন লোকদের উদ্দেশ্যে ঘোষনা দেয়া হল, নামাযের উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়ে যাও। অতঃপর এ ঘোষণা শুনে যারা সমবেত হলেন তাদের সাথে আমিও গেলাম এবং পুরুষের কাতারের পেছনে মহিলাদের কাতারের প্রথম সারিতে আমি দাঁড়ালাম। নামাযান্তে নবী (ﷺ) কে মিম্বরে বসে খুতবারত অবস্থায় একথা বলতে শুনলাম যে, তামীম দারীর জ্ঞাতি ভাই একবার সমুদ্রে নৌকায় ভ্রমণ করছিল। অতঃপর তিনি হাদীসটি অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এতে রাবী আরো বলেছেন যে, তিনি (ফাতিমা) বলেন, আমি যেন এখনো দেখতে পাচ্ছি যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর কোমর হেলিয়ে মাটির দিকে ইশারা করে বলেছেন, এই হচ্ছে তায়বা অর্থ মদীনা।
باب قِصَّةِ الْجَسَّاسَةِ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ الْهُجَيْمِيُّ أَبُو عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا قُرَّةُ، حَدَّثَنَا سَيَّارٌ أَبُو الْحَكَمِ، حَدَّثَنَا الشَّعْبِيُّ، قَالَ دَخَلْنَا عَلَى فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ فَأَتْحَفَتْنَا بِرُطَبٍ يُقَالُ لَهُ رُطَبُ ابْنِ طَابٍ وَأَسْقَتْنَا سَوِيقَ سُلْتٍ فَسَأَلْتُهَا عَنِ الْمُطَلَّقَةِ، ثَلاَثًا أَيْنَ تَعْتَدُّ قَالَتْ طَلَّقَنِي بَعْلِي ثَلاَثًا فَأَذِنَ لِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَعْتَدَّ فِي أَهْلِي - قَالَتْ - فَنُودِيَ فِي النَّاسِ إِنَّ الصَّلاَةَ جِامِعَةً - قَالَتْ - فَانْطَلَقْتُ فِيمَنِ انْطَلَقَ مِنَ النَّاسِ - قَالَتْ - فَكُنْتُ فِي الصَّفِّ الْمُقَدَّمِ مِنَ النِّسَاءِ وَهُوَ يَلِي الْمُؤَخَّرَ مِنَ الرِّجَالِ - قَالَتْ - فَسَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَخْطُبُ فَقَالَ " إِنَّ بَنِي عَمٍّ لِتَمِيمٍ الدَّارِيِّ رَكِبُوا فِي الْبَحْرِ " . وَسَاقَ الْحَدِيثَ وَزَادَ فِيهِ قَالَتْ فَكَأَنَّمَا أَنْظُرُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَهْوَى بِمِخْصَرَتِهِ إِلَى الأَرْضِ وَقَالَ " هَذِهِ طَيْبَةُ " . يَعْنِي الْمَدِينَةَ .

তাহকীক:

বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৭১২১
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৪২-৩
২৪. জাসসাসাহ্ (দাজ্জালের গুপ্তচর) প্রাণীর ঘটনা
৭১২১। হাসান ইবনে আলী আল হুলওয়ানী ও আহমাদ ইবনে উসমান নাওফিলী (রাহঃ) ......... ফাতিমা বিনতে কায়স (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট তামীমদারী আসল এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে এ মর্মে অবগত করল যে, একদা সে সমুদ্রে নৌযান আরোহণ করল। তখন তার জাহাজ পথ হারিয়ে এক দ্বীপে গিয়ে ভিড়ল। অতঃপর সে পানির উদ্দেশ্যে দ্বীপ অভ্যন্তরে প্রবেশ করল। সেখানে পৌছে সে এমন এক ব্যক্তিকে দেখল, যে তার লোম টানছিল ...... অতঃপর তিনি হাদীসের পূর্ণ রূপে বর্ণনা করলেন।
তবে এতে এও রয়েছে যে, সে (দাজ্জাল) বলবে, আমাকে যদি বের হওয়ার অনুমতি প্রদান করা হয় তবে আমি তায়বা ব্যতীত সমগ্র পৃথিবী প্রদক্ষিণ করব। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তামীমদারীকে লোকদের মাঝে নিয়ে এলেন এবং সে তাদেরকে পূর্ণ বৃত্তান্ত বর্ণনা করে শুনালেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এই হলো তায়বা এবং ঐ ব্যক্তি দাজ্জাল।
তবে এতে এও রয়েছে যে, সে (দাজ্জাল) বলবে, আমাকে যদি বের হওয়ার অনুমতি প্রদান করা হয় তবে আমি তায়বা ব্যতীত সমগ্র পৃথিবী প্রদক্ষিণ করব। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তামীমদারীকে লোকদের মাঝে নিয়ে এলেন এবং সে তাদেরকে পূর্ণ বৃত্তান্ত বর্ণনা করে শুনালেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এই হলো তায়বা এবং ঐ ব্যক্তি দাজ্জাল।
باب قِصَّةِ الْجَسَّاسَةِ
وَحَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، وَأَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ النَّوْفَلِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَهْبُ، بْنُ جَرِيرٍ حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ غَيْلاَنَ بْنَ جَرِيرٍ، يُحَدِّثُ عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ، قَيْسٍ قَالَتْ قَدِمَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَمِيمٌ الدَّارِيُّ فَأَخْبَرَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ رَكِبَ الْبَحْرَ فَتَاهَتْ بِهِ سَفِينَتُهُ فَسَقَطَ إِلَى جَزِيرَةٍ فَخَرَجَ إِلَيْهَا يَلْتَمِسُ الْمَاءَ فَلَقِيَ إِنْسَانًا يَجُرُّ شَعَرَهُ . وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ وَقَالَ فِيهِ ثُمَّ قَالَ أَمَا إِنَّهُ لَوْ قَدْ أُذِنَ لِي فِي الْخُرُوجِ قَدْ وَطِئْتُ الْبِلاَدَ كُلَّهَا غَيْرَ طَيْبَةَ . فَأَخْرَجَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى النَّاسِ فَحَدَّثَهُمْ قَالَ " هَذِهِ طَيْبَةُ وَذَاكَ الدَّجَّالُ " .

তাহকীক:

বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৭১২২
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৪২-৪
২৪. জাসসাসাহ্ (দাজ্জালের গুপ্তচর) প্রাণীর ঘটনা
৭১২২। আবু বকর ইবনে ইসহাক (রাহঃ) ......... ফাতিমা বিনতে কায়স (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিম্বরে বসে বললেন, হে লোক সকল! তামীমদারী আমার নিকট বর্ণনা করেছে যে, এক সময় তার গোত্রের কতিপয় লোক জাহাজে করে সমুদ্রে ভ্রমণ করছিল। অতঃপর তাদের জাহাজটি ভেঙ্গে যায়। তখন তাদের কেউ কেউ জাহাজের কাঠে চড়ে সাগরের কোন দ্বীপে গিয়ে পৌছে ...... অতঃপর আবু যিনাদ হাদীসটি অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
باب قِصَّةِ الْجَسَّاسَةِ
حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ، - يَعْنِي الْحِزَامِيَّ - عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَعَدَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ " أَيُّهَا النَّاسُ حَدَّثَنِي تَمِيمٌ الدَّارِيُّ أَنَّ أُنَاسًا مِنْ قَوْمِهِ كَانُوا فِي الْبَحْرِ فِي سَفِينَةٍ لَهُمْ فَانْكَسَرَتْ بِهِمْ فَرَكِبَ بَعْضُهُمْ عَلَى لَوْحٍ مِنْ أَلْوَاحِ السَّفِينَةِ فَخَرَجُوا إِلَى جَزِيرَةٍ فِي الْبَحْرِ " . وَسَاقَ الْحَدِيثَ

তাহকীক:

বর্ণনাকারী: