আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

المسند الصحيح لمسلم

৩৩- জিহাদের বিধানাবলী ও নবীজীর যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং: ৪৪৮৯
আন্তর্জাতিক নং: ১৭৮৮
৩৬. আহযাবের (খন্দক ও পরীখার) যুদ্ধ
৪৪৮৯। যুহাইর ইবনে হারব ও ইসহাক ইবনে ইবরাহীম, ইবরাহীম তায়মীর পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, আমরা হুযাইফা (রাযিঃ) এর কাছে ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠলো, হায়, আমি যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে পেতাম, তবে তাঁর সঙ্গে মিলে একত্রে যুদ্ধ করতাম এবং তাতে যথাসাধ্য করতাম (কোনরূপ পিছপা হতাম না)। হুযাইফা (রাযিঃ) বললেন, তুমি তাই করতে? কিন্তু আমি তো আহযাবের রাতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে ছিলাম। (সে রাতে) প্রচন্ড বায়ু ও তীব্র শীত আমাদের কাবু করে ফেলেছিল। এমন সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঘোযণা করলেন, ওহে! এমন কেউ আছে কি, যে আমাকে শক্রর খবর এনে দেবে; আল্লাহর তাআলা তাকে কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গে রাখবেন?

আমরা তখন চুপ করে রইলাম এবং আমাদের মধ্যে কেউ তার সে আহবানে সাড়া দেয়নি। তিনি আবার বললেন, “ওহে! এমন কোন ব্যক্তি আছে কি যে আমাকে শক্রপক্ষের খবর এনে দেবে, আল্লাহ তাআলা তাকে কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গে রাখবেন” এবারও আমরা চুপ রইলাম আর আমাদের মধ্যে কেউ তাঁর আহবানে সাড়া দেয়নি। তিনি আবার ঘোষণা করলেন, ওহে! এমন কেউ আছে কি যে আমাকে শক্র পক্ষের খবর এনে দেবে, আল্লাহ তাআলা তাকে কিয়ামতের দিন তাকে আমার সঙ্গে রাখবেন। এবারও আমরা চুপ করে রইলাম এবং আমাদের কেউ তাঁর আহবানে সাড়া দেয়নি।

এবার তিনি বললেনঃ হে হুযাইফা, ওঠো এবং তুমি শক্র পক্ষের খবর আমাদের এনে দাও। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন এবার আমার নাম ধরেই ডাক দিলেন, তাই উঠা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিল না। এবার তিনি বললেনঃ শক্রপক্ষের খবর আমাকে এনে দাও, কিন্তু সাবধান তাদের আমার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করো না।

তারপর আমি যখন তাঁর নিকট থেকে প্রস্থান করলাম, তখন মনে হচ্ছিল আমি যেন হাম্মামের (উষ্ণ আবহাওয়ার) মধ্য দিয়ে চলেছি। এভাবে আমি তাদের (শক্রপক্ষের) নিকটে পৌছে গেলাম। তখন আমি লক্ষ্য করলাম আবু সুফিয়ান আগুনের দ্বারা তাঁর পিঠে ছেক দিচ্ছেন। আমি তখন একটি তীর ভুলে ধনুকে সংযোজন করলাম এবং তা নিক্ষেপ করতে মনস্থ করলাম এমন সময় আমার মনে পড়ে গেল যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলে দিয়েছেন, ″তাদেরকে আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলো না।″ আমি যদি তখন তীর নিক্ষেপ করতাম তবে তীর নির্ঘাৎ লক্ষ্যভেদ করতো।

অগত্যা আমি ফিরে আসলাম এবং ফিরে আসার সময়ও উষ্ণ হাম্মামের মধ্য দিয়ে অতিক্রমের মতো উষ্ণতা অনুভব করলাম। তারপর যখন ফিরে এলাম, তখন প্রতিপক্ষের খবর তাঁকে প্রদান করলাম। আমার দায়িত্ব পালন করে অবসর হতেই আবার আমি শীতের তীব্রতা অনুভব করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার খোলা অতিরিক্ত জুব্বার অংশ দিয়ে আমাকে আবৃত করে দিলেন, যা তিনি নামায আদায়ের সময় গায়ে দিতেন। তারপর আমি ভোর পর্যন্ত একটানা নিদ্রায় আচ্ছন্ন রইলাম। যখন ভোর হল তখন তিনি বললেনঃ হে ঘুমকাতুরে! এখন উঠে পড়ো।
باب غَزْوَةِ الأَحْزَابِ
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ حُذَيْفَةَ فَقَالَ رَجُلٌ لَوْ أَدْرَكْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَاتَلْتُ مَعَهُ وَأَبْلَيْتُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ أَنْتَ كُنْتَ تَفْعَلُ ذَلِكَ لَقَدْ رَأَيْتُنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الأَحْزَابِ وَأَخَذَتْنَا رِيحٌ شَدِيدَةٌ وَقُرٌّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينِي بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ ثُمَّ قَالَ " أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ ثُمَّ قَالَ " أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ فَقَالَ " قُمْ يَا حُذَيْفَةُ فَأْتِنَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ " . فَلَمْ أَجِدْ بُدًّا إِذْ دَعَانِي بِاسْمِي أَنْ أَقُومَ قَالَ " اذْهَبْ فَأْتِنِي بِخَبَرِ الْقَوْمِ وَلاَ تَذْعَرْهُمْ عَلَىَّ " . فَلَمَّا وَلَّيْتُ مِنْ عِنْدِهِ جَعَلْتُ كَأَنَّمَا أَمْشِي فِي حَمَّامٍ حَتَّى أَتَيْتُهُمْ فَرَأَيْتُ أَبَا سُفْيَانَ يَصْلِي ظَهْرَهُ بِالنَّارِ فَوَضَعْتُ سَهْمًا فِي كَبِدِ الْقَوْسِ فَأَرَدْتُ أَنْ أَرْمِيَهُ فَذَكَرْتُ قَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَلاَ تَذْعَرْهُمْ عَلَىَّ " . وَلَوْ رَمَيْتُهُ لأَصَبْتُهُ فَرَجَعْتُ وَأَنَا أَمْشِي فِي مِثْلِ الْحَمَّامِ فَلَمَّا أَتَيْتُهُ فَأَخْبَرْتُهُ بِخَبَرِ الْقَوْمِ وَفَرَغْتُ قُرِرْتُ فَأَلْبَسَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ فَضْلِ عَبَاءَةٍ كَانَتْ عَلَيْهِ يُصَلِّي فِيهَا فَلَمْ أَزَلْ نَائِمًا حَتَّى أَصْبَحْتُ فَلَمَّا أَصْبَحْتُ قَالَ " قُمْ يَا نَوْمَانُ " .