আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

المسند الصحيح لمسلم

২৭- মান্নতের যাবতীয় বিধান - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং: ৪০৯৯
আন্তর্জাতিক নং: ১৬৪১-১
৩. আল্লাহর নাফরমানীর মান্নত পূর্ণ করা যাবে না এবং বান্দা যার মালিক নয় তাতেও (মান্নত সাব্যস্ত হবে না)
৪০৯৯। যুহাইর ইবনে হারব ও আলী ইবনে হুজর সা’দী (রাহঃ) ......... ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাকীফ গোত্র ছিল বনু উকায়ল গোত্রের মিত্র। সাফীফ গোত্রের লোকেরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর দুজন সাহাবীকে বন্দী করে। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাহাবীরা বনু উকায়ল গোত্রের এক ব্যক্তিকে বন্দী করে এবং তার সাথে আযবা (নাম্নী উট) কেও আটক করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার কাছে আসলেন। তখন সে বাধা অবস্থায় ছিল। সে ডাক দিল, ইয়া মুহাম্মাদ! রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার নিকট এলেন এবং বললেনঃ তোমার কী অবস্থা? সে বললো, আমাকে কী কারণে বন্দী করেছেন? আর কেনই বা হাজ্জীদের অগ্রগামী উটকে আটক করেছেন?

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, (বিরাট কারণে)। তোমার মিত্র সাকীফ গোত্রের অপরাধের জন্য (তোমাকে বন্দী করেছি)। এরপর তিনি তার কাছ থেকে ফিরলেন। সে আবার তাঁকে ডেকে বলছেন, ইয়া মুহাম্মাদ! ইয়া মুহাম্মাদ! আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন বড়ই দয়ালু এবং নম্র স্বভাবের। তাই তিনি তার দিকে আবার এলেন, এবং বললেন, তোমার কি অবস্থা? সে বললো, আমি একজন মুসলমান। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তুমি যদি এ কথা তখন বলতে, যখন তোমার ব্যাপার তোমার অধিকারে ছিল, তবে তুমি পুরোপুরি সফল হতে।

এরপর তিনি ফিরলেন। সে আবারও তাকে ডাক দিয়ে বললো, ইয়া মুহাম্মাদ! ইয়া মুহাম্মাদ! তিনি আবার তার কাছে এলেন এবং বললেন, তোমার কী হয়েছে? সে বললো, আমি ক্ষুধার্ত, আমাকে খাবার দিন, এবং তৃষ্ণার্ত, আমাকে পান করান। নবী (ﷺ) বললেন, এটা তোমার (স্বীকার্য) প্রয়োজন? অতঃপর তাকে সেই দু’ব্যক্তির বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়।

রাবী বলেন, একবার এক আনসার মহিলা বন্দী হয় এবং আযবা নাম্নী উট (তাদের হাতে) ধরা পড়ে। মহিলাটি বাধা অবস্থায় ছিল। গোত্রের লোকদের নিয়ম ছিল বিকালে তারা তাদের পশু তাদের বাড়ি ঘরের সামনে রাখত। এক রাতে সে মহিলা বন্ধন মুক্ত হয়ে পলায়ন করে এবং উটের কাছে আসে। সে যখনই কোন উটের কাছে আসতো, উট আওয়াজ করতো এবং তখন সে তাকে পরিত্যাগ করতো। অবশেষে সে আযবার কাছে এসে পৌছে। আযবা কোন আওয়াজ করলো না। এ ছিল বড়ই বাধ্যগত উটনী। সে তার পিঠের উপর বসে এবং তাকে হাঁকা দিলে সে চলতে থাকে।

তখন তারা তার পলায়ন টের পেয়ে গেল এবং তার অন্বেষণে ছুটল। কিন্তু আযবা তাদেরকে ব্যর্থ করে দেয়। রাবী বলেন, মহিলাও আল্লাহর নামে মান্নত করে যে, আল্লাহ যদি এ উটের সাহায্যে তাকে মুক্তি দেন, তবে সে অবশ্যই উটকে কুরবানী করবে। যখন সে মদীনায় পৌঁছে, তখন লোকজন তাকে দেখে বললো, এতো রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর উট আযবা। তখন সে বলল যে, সে মান্নত করেছে যে, আল্লাহ যদি তাকে এ উটের উপর রক্ষা করেন, তবে সে অবশ্যই তাকে কুরবানী দিবে।

তারপর তারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট এসে ঘটনাটি তাকে বললো। তিনি বললেন, ’সুবাহানাল্লাহ’ কি মন্দ প্রতিদান, যা সে তাকে দিয়েছে। সে আল্লাহর নামে মান্নত করেছে যে, যদি আল্লাহ তাকে এ উটের উপর রক্ষা করেন তবে সে তাকেই কুরবানী করে দিবে। (জেনে রাখ) পাপের ব্যাপারে মান্নত করলে সে মান্নত পূরণ করতে নেই। আর বান্দা যার মালিক নয় সে বস্তুর মান্নতও পূরণযোগ্য নয়। ইবনে হুজর (রাহঃ) এর বর্ণনায় আছে যে, আল্লাহর নাফরমানীর বিষয়ে মান্নত সংঘটিত হয় না।
باب لاَ وَفَاءَ لِنَذْرٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ وَلاَ فِيمَا لاَ يَمْلِكُ الْعَبْدُ
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، - وَاللَّفْظُ لِزُهَيْرٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ كَانَتْ ثَقِيفُ حُلَفَاءَ لِبَنِي عُقَيْلٍ فَأَسَرَتْ ثَقِيفُ رَجُلَيْنِ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَسَرَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً مِنْ بَنِي عُقَيْلٍ وَأَصَابُوا مَعَهُ الْعَضْبَاءَ فَأَتَى عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ فِي الْوَثَاقِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ . فَأَتَاهُ فَقَالَ " مَا شَأْنُكَ " . فَقَالَ بِمَ أَخَذْتَنِي وَبِمَ أَخَذْتَ سَابِقَةَ الْحَاجِّ فَقَالَ إِعْظَامًا لِذَلِكَ " أَخَذْتُكَ بِجَرِيرَةِ حُلَفَائِكَ ثَقِيفَ " . ثُمَّ انْصَرَفَ عَنْهُ فَنَادَاهُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ يَا مُحَمَّدُ . وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَحِيمًا رَقِيقًا فَرَجَعَ إِلَيْهِ فَقَالَ " مَا شَأْنُكَ " . قَالَ إِنِّي مُسْلِمٌ . قَالَ " لَوْ قُلْتَهَا وَأَنْتَ تَمْلِكُ أَمْرَكَ أَفْلَحْتَ كُلَّ الْفَلاَحِ " . ثُمَّ انْصَرَفَ فَنَادَاهُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ يَا مُحَمَّدُ . فَأَتَاهُ فَقَالَ " مَا شَأْنُكَ " . قَالَ إِنِّي جَائِعٌ فَأَطْعِمْنِي وَظَمْآنُ فَأَسْقِنِي . قَالَ " هَذِهِ حَاجَتُكَ " . فَفُدِيَ بِالرَّجُلَيْنِ - قَالَ - وَأُسِرَتِ امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ وَأُصِيبَتِ الْعَضْبَاءُ فَكَانَتِ الْمَرْأَةُ فِي الْوَثَاقِ وَكَانَ الْقَوْمُ يُرِيحُونَ نَعَمَهُمْ بَيْنَ يَدَىْ بُيُوتِهِمْ فَانْفَلَتَتْ ذَاتَ لَيْلَةٍ مِنَ الْوَثَاقِ فَأَتَتِ الإِبِلَ فَجَعَلَتْ إِذَا دَنَتْ مِنَ الْبَعِيرِ رَغَا فَتَتْرُكُهُ حَتَّى تَنْتَهِيَ إِلَى الْعَضْبَاءِ فَلَمْ تَرْغُ قَالَ وَنَاقَةٌ مُنَوَّقَةٌ فَقَعَدَتْ فِي عَجُزِهَا ثُمَّ زَجَرَتْهَا فَانْطَلَقَتْ وَنَذِرُوا بِهَا فَطَلَبُوهَا فَأَعْجَزَتْهُمْ - قَالَ - وَنَذَرَتْ لِلَّهِ إِنْ نَجَّاهَا اللَّهُ عَلَيْهَا لَتَنْحَرَنَّهَا فَلَمَّا قَدِمَتِ الْمَدِينَةَ رَآهَا النَّاسُ . فَقَالُوا الْعَضْبَاءُ نَاقَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَتْ إِنَّهَا نَذَرَتْ إِنْ نَجَّاهَا اللَّهُ عَلَيْهَا لَتَنْحَرَنَّهَا . فَأَتَوْا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرُوا ذَلِكَ لَهُ . فَقَالَ " سُبْحَانَ اللَّهِ بِئْسَمَا جَزَتْهَا نَذَرَتْ لِلَّهِ إِنْ نَجَّاهَا اللَّهُ عَلَيْهَا لَتَنْحَرَنَّهَا لاَ وَفَاءَ لِنَذْرٍ فِي مَعْصِيَةٍ وَلاَ فِيمَا لاَ يَمْلِكُ الْعَبْدُ " . وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ حُجْرٍ " لاَ نَذْرَ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ " .
হাদীস নং: ৪১০০
আন্তর্জাতিক নং: ১৬৪১-২
৩. আল্লাহর নাফরমানীর মান্নত পূর্ণ করা যাবে না এবং বান্দা যার মালিক নয় তাতেও (মান্নত সাব্যস্ত হবে না)
৪১০০। আবু রাবী আল আতাকী, ইসহাক ইবনে ইবরাহীম ও ইবনে আবু উমর (রাহঃ) ......... আইয়ুব (রাহঃ) এর সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আবু হাম্মাদ (রাহঃ) বর্ণিত হাদীসে আছে যে, ’আযবা’ ছিল উকায়ল গোত্রের জনৈক ব্যক্তির এবং হাজীদের উটের মধ্যে অগ্রগামী। তার হাদীসে আরও আছে যে, মহিলাটি একটি উটের নিকট আসে, যা ছিল বাধ্যগত ও সওয়ারীতে অভ্যস্ত। আর সাকাফীর হাদীসে আছে যে, তা ছিল একটি প্রশিক্ষিত উট।
باب لاَ وَفَاءَ لِنَذْرٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ وَلاَ فِيمَا لاَ يَمْلِكُ الْعَبْدُ
حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الْعَتَكِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ يَعْنِي ابْنَ زَيْدٍ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ عَنْ عَبْدِ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيِّ، كِلاَهُمَا عَنْ أَيُّوبَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ وَفِي حَدِيثِ حَمَّادٍ قَالَ كَانَتِ الْعَضْبَاءُ لِرَجُلٍ مِنْ بَنِي عُقَيْلٍ وَكَانَتْ مِنْ سَوَابِقِ الْحَاجِّ وَفِي حَدِيثِهِ أَيْضًا فَأَتَتْ عَلَى نَاقِةٍ ذَلُولٍ مُجَرَّسَةٍ . وَفِي حَدِيثِ الثَّقَفِيِّ وَهِيَ نَاقَةٌ مُدَرَّبَةٌ .
tahqiq

তাহকীক: