মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২০ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৮৭৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৭৯। হযরত সুলাইমান ইবনে সুরাদ (রাঃ) বলেন, (খন্দক যুদ্ধের সময় মদীনা আক্রমণের উদ্দেশ্যে মক্কা হইতে আগত) কাফেরদের সম্মিলিত বাহিনী যখন (অকৃতকার্য অবস্থায়) ফিরিয়া যাইতে বাধা হইল, তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন: এখন হইতে আমরাই তাহাদের উপর আক্রমণ করিব। তাহারা আর আমাদের উপর আক্রমণ করিতে পারিবে না, আমরাই তাহাদের দিকে অগ্রসর হইব। বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮০। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খন্দকের যুদ্ধ হইতে ফিরিয়া আসিলেন এবং যুদ্ধের হাতিয়ার রাখিয়া গোসল করিলেন, তখন হযরত জিবরাঈল মাথার ধুলা ঝাড়িতে ঝাড়িতে আসিয়া হাযির হইলেন এবং বলিলেন, আপনি তো অস্ত্রশস্ত্র রাখিয়া দিয়াছেন। কিন্তু আল্লাহর কসম। আমি এখনও উহা পরিত্যাগ করি নাই। আপনি তাহাদের দিকে বাহির হইয়া পড়ুন। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, কোথায়? তখন তিনি বনী কুরায়যার দিকে ইংগিত করিলেন। সেই সময় রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাদের উদ্দেশ্যে (অভিযান) বাহির হইয়া পড়িলেন। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮১। বুখারীর অপর এক বর্ণনায় আছে, আনাস (রাঃ) বলেন: যে সময় জিবরীল আলায়হিস সালাম বানী কুরায়যার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাথে সামনে অগ্রসর হচ্ছিলেন, তখন জিবরীল আলায়হিস সালাম-এর বাহনের পদাঘাতে বানী গনম গোত্রের গলিতে উত্থিত ধুলাবালি যেন আমি এখনো দেখতে পাচ্ছি।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮২। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, হোদাইবিয়া দিবসে লোক পিপাসার্ত হইয়া পড়িল। সেই সময় একটি চামড়ার পাত্র রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মুখে ছিল। তিনি উহা হইতে ওযু করিলেন। অতঃপর লোক তাহার কাছে আসিয়া বলিল, (ইয়া রাসুলাল্লাহ্।) আপনার চর্মপাত্রের পানি ছাড়া আমাদের কাছে পান করিবার বা ওযু করিবার মত কোন পানি নাই। তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহার হাত উক্ত পাত্রে রাখিলেন। ফলে সঙ্গে সঙ্গেই তাহার আঙ্গুলগুলির মধ্যবর্তী জায়গা হইতে ঝর্ণাধারার মত পানি ফুটিয়া বাহির তুইতে লাগিল। হযরত জাবের বলেন, আমরা সেই পানি (তৃপ্তি সহকারে) পান করিলাম এবং তাহা দিয়া আমরা ওযু করিলাম। হযরত জাবেরকে জিজ্ঞাসা করা হইল। সংখ্যায় আপনারা কতজন ছিলেন। তিনি বলিলেন, একলাখ হইলেও সেই পানিই আমাদের জন্য যথেষ্ট হইত। কিন্তু তখন আমাদের সংখ্যা ছিল পনর শত। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮৩। হযরত বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, হোদাইবিয়ার দিন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে আমরা চৌদ্দ শত ছিলাম। হোদাইবিয়া একটি কূপের নাম। উক্ত কূপ হইতে পানি তুলিতে তুলিতে উহার সবটুকু পানি আমরা নিঃশেষ করিয়া ফেলিলাম। এমন কি আমরা উহাতে এক ফোঁটা পানিও অবশিষ্ট রাখি নাই। অতঃপর নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এই সংবাদটি পৌঁছিলে তিনি আসিলেন এবং কূপটির পাড়ে আসিয়া বসিলেন। ইহার পর তিনি এক পাত্র পানি চাহিয়া আনাইয়া ওযু করিলেন এবং কুল্লি করিলেন। তারপর দো'আ করিলেন। অতঃপর উক্ত পানি কূপের ভিতরে ঢালিয়া দিলেন এবং বলিলেন কিছু সময়ের জন্য তোমরা এই কূপ হইতে পানি তোলা বন্ধ রাখ। ইহার পর সকলে নিজে এবং সওয়ারীর জানোয়ারসমূহ এই স্থান ত্যাগ করা পর্যন্ত সেই পানি তৃপ্তি সহকারে ব্যবহার করিলেন। -বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮৪। হযরত আওফ আবু রাজা হইতে এবং তিনি হযরত ইমরান ইবনে হোসাইন (রাঃ) হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেন, একবার আমরা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিত এক সফরে ছিলাম। লোকেরা তাহার নিকট পিপাসার অভিযোগ করিল। তখন তিনি অবতরণ করিলেন এবং অমুককে ডাকিলেন। আবু রাজা তাহার নাম বলিয়াছিলেন; কিন্তু আওফ তাহা ভুলিয়া গিয়াছেন এবং তিনি হযরত আলী (রাঃ)-কেও ডাকিলেন। অতঃপর তাহাদিগকে বলিলেনঃ তোমরা দুইজন যাও এবং পানির তালাশ কর। তাহারা উভয়ে রওয়ানা হইলেন এবং পথিমধ্যে এমন একটি মহিলার সাক্ষাৎ পাইলেন, যে একটি সওয়ারীর (উটের) পিঠে দুই দিকে পানির দুইটি মশক বা দুইটি থলি রাখিয়া নিজে মাঝখানে বসিয়া যাইতেছে। তখন তাহারা মহিলাটিকে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লইয়া আসিলেন এবং লোকেরা মহিলাটিকে তাহার উটের পিঠ হইতে নীচে নামিতে বলিল এবং নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি পাত্র আনাইলেন। তারপর তিনি মশক দুইটির মুখ হইতে ইহাতে পানি ঢালিয়া লইলেন। আর লোকদিগকে ডাকিয়া বলিলেন, তোমরা নিজেরাও পান কর এবং পশুদিগকেও পান করাও। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা চল্লিশজন পিপাসার্ত ব্যক্তি পূর্ণ তৃপ্তি সহকারে পানি পান করিলাম এবং আমাদের সাথে যতগুলি মশক ও অন্যান্য পাত্র ছিল সেইগুলিও প্রত্যেকটি পানি দ্বারা পরিপূর্ণ করিয়া লইলাম। বর্ণনাকারী ইমরান বলেন, আল্লাহর কসম! যখন আমাদিগকে পানির মশক হইতে পৃথক করা হইল, (অর্থাৎ, পানি লওয়া শেষ হইল,) তখন আমাদের এমন মনে হইতেছিল, যেন মশকটি প্রথম অবস্থার তুলনায় আরও অনেক বেশী ভরা রহিয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮৫। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, একদা আমরা রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিত যাইতেছিলাম। চলার পথে আমরা একটি প্রশস্ত ময়দানে অবতরণ করিলাম। এই সময় রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজত পূরণ করার জন্য গেলেন, কিন্তু আড়াল করিবার জন্য তিনি কিছুই পাইলেন না। এই সময় হঠাৎ ময়দানের এক কিনারে দুইটি গাছ দেখা গেল। তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহার একটির কাছে গেলেন “এবং উহার একটি ডাল ধরিয়া বলিলেন: আল্লাহর হুকুমে তুমি আমার অনুগত হও। তৎক্ষণাৎ গাছটি এমনভাবে তাহার অনুগত হইল, যেমন নাকে রশি লাগান উট তাহার চালকের অনুগত হইয়া থাকে। এইবার তিনি দ্বিতীয় বৃক্ষটির কাছে যাইয়া উহার একটি শাখা ধরিয়া বলিলেন, আল্লাহর নির্দেশে তুমি আমার অনুগত হও। সুতরাং বৃক্ষটি সঙ্গে সঙ্গেই তাহার প্রতি অনুরূপ ঝুঁকিয়া পড়িল। অবশেষে যখন তিনি উভয় বৃক্ষের মধ্যখানে যাইয়া দাঁড়াইলেন, তখন বলিলেন, আল্লাহর হুকুমে তোমরা উভয়ে আমার জন্য মিলিত হইয়া যাও। তখনই উহারা মিলিত হইয়া গেল (এবং তিনি উহার আড়ালে হাজত পূরণ করিলেন)। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি বসিয়া এই অদ্ভুত ঘটনার কথা মনে মনে চিন্তা করিতে লাগিলাম। এই অবস্থায় হঠাৎ আমি একদিকে তাকাইতেই দেখি, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তশরীফ আনিতেছেন। আর বৃক্ষ দুইটিকেও দেখিলাম, উহারা পুনরায় পৃথক হইয়া গিয়াছে এবং প্রত্যেকটি আপন আপন জায়গায় গিয়া যথারীতি দাঁড়াইয়া রহিয়াছে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮৬। হযরত ইয়াযীদ ইবনে আবু ওবায়দ বলেন, আমি হযরত সালামা ইবনে আকওয়া (রাঃ)-এর পায়ের গোছায় আঘাতের চিহ্ন দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, হে আবু মুসলিম! আঘাতটা কিসের? তিনি বলিলেন, এই আঘাত খায়বর যুদ্ধে লাগিয়াছিল। (আঘাত এত বেশী লাগিয়াছিল যে,) লোকেরা বলাবলি করিতেছিল, সালামা মৃত্যুবরণ করিয়াছেন। সালামা বলেন, অতঃপর আমি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসিলাম। তিনি আমার জখমের উপর তিনবার ফুঁ দিলেন, ফলে সেই সময় হইতে অদ্যাবধি আর আমার কোন প্রকারের কষ্ট হয় নাই। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮৭। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, যায়দ ইবনে হারেসা, জা'ফর ইবনে আবু তালিব ও আব্দুল্লাহ্ ইবনে রাওয়াহার মৃত্যু-সংবাদ যুদ্ধের ময়দান হইতে আসিবার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদিগকে জানাইয়া দিয়াছেন। রণক্ষেত্রের বিবরণ তিনি এইভাবে দিয়াছেন, যায়দ পতাকা হাতে নিয়াছে, সে শহীদ হইয়াছে। তারপর জা'ফর পতাকা হাতে নিয়াছে, সেও শহীদ হইয়াছে। অতঃপর আব্দুল্লাহ্ ইবনে রাওয়াহা পতাকা ধরিয়াছে, সেও শহীদ হইয়াছে। (বর্ণনাকারী বলেন,) এই সময় রাসুলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর চক্ষুদ্বয় হইতে অশ্রুধারা প্রবাহিত ছিল। ইহার পর রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন : আল্লাহর তরবারিসমূহের এক তরবারি (অর্থাৎ, খালেদ ইবনে ওলীদ) ঝাণ্ডা হাতে তুলিয়া লইয়াছেন। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা কাফেরদের উপর মুসলমানদিগকে বিজয়ী করিয়াছেন। বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮৮। হযরত আব্বাস (রাঃ) বলেন, হোনাইনের যুদ্ধে আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে শরীক ছিলাম। যখন মুসলমানগণ ও কাফেররা মুখোমুখি হইল, তখন মুসলমানগণ ময়দান হইতে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিল। তখন রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লান নিজের সওয়ারী খচ্চরকে তাড়া দিয়া কাফেরদের দিকে অগ্রসর হইলেন। (বর্ণনাকারী হযরত আব্বাস বলেন,) আর আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খচ্চরের লাগাম ধরিয়া রাখিয়াছিলাম এবং আমি তাহাকে অগ্রসর হইতে বাধা দিতেছিলাম, যেন উহা দ্রুত কাফেরদের দলের মধ্যে ঢুকিয়া না পড়ে এবং আবু সুফিয়ান ইবনে হারেস ধরিয়া রাখিয়াছিলেন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সওয়ারীর গদি। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন: হে আব্বাস। সামুরা গাছের নীচে বাইআত গ্রহণকারীদিগকে আহ্বান করুন। আব্বাস ছিলেন উচ্চ স্বর-বিশিষ্ট ব্যক্তি। তিনি বলেন, তৎক্ষণাৎ আমি উচ্চ স্বরে ডাক দিয়া বলিলাম, আসহাবে সামুরাগণ কোথায়? হযরত আব্বাস বলেন, আল্লাহর কসম! আমার আওয়াজ (আহ্বান) শোনার সাথে সাথেই আসহাবে সামুরাগণ এমনভাবে দৌঁড়াইয়া ময়দানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন, যেমন গাভী তাহার বাছুরের দিকে দৌড় দেয়। আর তাহারা ধ্বনি দিতে থাকিল। يا لبيك يا لبيك "ইয়া লাব্বাইকা, ইয়া লাব্বাইকা।" আমরা উপস্থিত। আমরা উপস্থিত!
হযরত আব্বাস (রাঃ) বলেন, অতঃপর মুসলমানগণ কাফেরদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হইয়া গেল। অপর দিকে আনসারদের মধ্যে এই ধ্বনি উচ্চারিত হয়, হে আনসার সম্প্রদায়। হে আনসার সম্প্রদায়। (শত্রু নিধনে ঝাপাইয়া পড়।) আব্বাস (রাঃ) বলেন, অতঃপর তাহাদের ধ্বনি (একমাত্র) বনী হারেস ইবনে খাাজের উপর সীমাবদ্ধ হইয়া গেল। (আনসারদের মধ্যে এই গোত্রটিই ছিল সর্বাপেক্ষা বড়।) এই সময় রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় সওয়ারী খচ্চরের উপরে থাকিয়া মাথা উঠাইয়া যুদ্ধের অবস্থার দিকে তাকাইলেন এবং বলিলেন, এখনই যুদ্ধ জ্বলিয়া উঠিয়াছে। অতঃপর তিনি একমুষ্টি কংকর হাতে লইয়া কাফেরদের মুখের প্রতি নিক্ষেপ করিলেন, ইহার পর বলিলেন, মুহাম্মাদের রবের শপথ। কাফেরদল পরাজিত হইয়াছে। [বর্ণনাকারী আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহর কসম করিয়া বলিতেছি; তাহাদের এই পরাজয় কেবলমাত্র তাহার (হুযুরের) কংকর নিক্ষেপের দ্বারাই ঘটিয়াছে। অতঃপর আমি যুদ্ধের সমাপ্তি পর্যন্ত সর্বক্ষণ ইহাই দেখিতে পাইলাম যে, তাহাদের তলোয়ার ও বর্ণার ধার ভোঁতা হইয়া পড়িয়াছে এবং তাহারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিয়া পালাইতেছে। — মুসলিম
হযরত আব্বাস (রাঃ) বলেন, অতঃপর মুসলমানগণ কাফেরদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হইয়া গেল। অপর দিকে আনসারদের মধ্যে এই ধ্বনি উচ্চারিত হয়, হে আনসার সম্প্রদায়। হে আনসার সম্প্রদায়। (শত্রু নিধনে ঝাপাইয়া পড়।) আব্বাস (রাঃ) বলেন, অতঃপর তাহাদের ধ্বনি (একমাত্র) বনী হারেস ইবনে খাাজের উপর সীমাবদ্ধ হইয়া গেল। (আনসারদের মধ্যে এই গোত্রটিই ছিল সর্বাপেক্ষা বড়।) এই সময় রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় সওয়ারী খচ্চরের উপরে থাকিয়া মাথা উঠাইয়া যুদ্ধের অবস্থার দিকে তাকাইলেন এবং বলিলেন, এখনই যুদ্ধ জ্বলিয়া উঠিয়াছে। অতঃপর তিনি একমুষ্টি কংকর হাতে লইয়া কাফেরদের মুখের প্রতি নিক্ষেপ করিলেন, ইহার পর বলিলেন, মুহাম্মাদের রবের শপথ। কাফেরদল পরাজিত হইয়াছে। [বর্ণনাকারী আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহর কসম করিয়া বলিতেছি; তাহাদের এই পরাজয় কেবলমাত্র তাহার (হুযুরের) কংকর নিক্ষেপের দ্বারাই ঘটিয়াছে। অতঃপর আমি যুদ্ধের সমাপ্তি পর্যন্ত সর্বক্ষণ ইহাই দেখিতে পাইলাম যে, তাহাদের তলোয়ার ও বর্ণার ধার ভোঁতা হইয়া পড়িয়াছে এবং তাহারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিয়া পালাইতেছে। — মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৮৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৮৯। আবু ইসহাক (সারিয়ী) বলেন, এক ব্যক্তি হযরত বারা ইবনে আযেব (রাঃ)]-কে জিজ্ঞাসা করিল, হে আবু উমারা হোনাইনের যুদ্ধের দিন কি তোমরা কাফেরদের মুকাবিলা হইতে পলায়ন করিয়াছিলে? জওয়াবে তিনি বলিলেন, নিশ্চয় না, আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেন নাই। (অবশ্য) সাহাবীদের মধ্যে কতিপয় যুবক, যাহাদের কাছে তেমন বেশী কিছু হাতিয়ার ছিল না, তাহারা তীর নিক্ষেপকারী কাফেরদের আওতায় পড়িয়া গিয়াছিল। তাহারা তীরন্দাযীতে এত পটু ছিল যে, তাহাদের একটি তীরও যমীনে পড়িত না। ফলে তাহাদের নিক্ষিপ্ত প্রতিটি তীর ঐ সমস্ত যুবক (মুসলমান সৈনিকদের) উপর পড়িতে ভুল হইত না। এই অবস্থায় (দুশমনের সম্মুখ হইতে পলায়ন করত) সেই সমস্ত যুবকরা রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসিয়া পৌঁছিল। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহার একটি সাদা বর্ণের খচ্চরের উপর সওয়ার ছিলেন এবং আবু সুফিয়ান ইবনে হারেস লাগাম ধরিয়া তাহার সম্মুখে ছিলেন। এই সময় নবী (ছাঃ) খচ্চরের পৃষ্ঠ হইতে নামিলেন এবং বিজয়ের জন্য (আল্লাহর কাছে) মদদ ও সাহায্যের প্রার্থনা করিলেন। আর (এই পংক্তিটি) উচ্চারণ করিলেন, “আমি যে নবী তাহা মিথ্যা নহে। আমি আব্দুল মুত্তালিবের সন্তান।" অতঃপর তিনি মুসলমানদিগকে পুনরায় সারিবদ্ধ করিলেন। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৯০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৯০। বুখারীর বর্ণনাতে উল্লিখিত হাদীসটির বিষয়বস্তুটি বর্ণিত হয়েছে। আর বুখারী ও মুসলিম এর উভয় বর্ণনায় আছে, বারা ইবনু আযিব (রাঃ) বলেছেন, আল্লাহর শপথ! যখন যুদ্ধ ভয়ানক আকার ধারণ করত, তখন আমরা নবী (সা.) -এর দ্বারা আত্মরক্ষা করতাম। আর আমাদের মাঝে ঐ লোকই অধিক সাহসী বলে গণ্য হত, যে লোক নবী (সা.) -এর পাশাপাশি বরাবর দাঁড়াত।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৯১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৯১। হযরত সালামা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) বলেন, হোনাইনের যুদ্ধে আমরা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে শরীক ছিলাম। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতিপয় সাহাবী কাফেরদের মুকাবিলা হইতে পলায়ন করিলেন। যখন কাফেরগণ রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চতুর্দিক হইতে ঘিরিয়া ফেলিল, তখন তিনি খচ্চরের পিঠ হইতে নীচে নামিলেন। অতঃপর তিনি যমীন হইতে এক মুষ্টি মাটি তুলিয়া লইলেন। তারপর কাফেরদের দিকে মুখ করিয়া দাড়াইয়া شاهت الوجوه "শাহাতিল উজুহ্" (অর্থাৎ, তোমাদের মুখ বিবর্ণ হউক) এই অভিশাপ বাক্যটি উচ্চারণ করিয়া তাহা নিক্ষেপ করিলেন। (বর্ণনাকারী বলেন,) তাহাদের যে কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ সৃষ্টি করিয়াছেন (অর্থাৎ, উপস্থিত কাফেরদের) প্রত্যেকের চক্ষুদ্বয় উক্ত এক মুষ্টি মাটি দ্বারা ভর্তি হইয়া গেল। ফলে তাহারা ময়দান হইতে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিল। এইভাবে আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদিগকে পরাজিত করিলেন। পরে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাদের হইতে লব্ধ গনীমতের মালসমূহ মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করিলেন। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৯২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৯২। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, হোনাইনের যুদ্ধে আমরা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে উপস্থিত ছিলাম। সেই যুদ্ধে তাহার সহিত অংশগ্রহণকারী ইসলামের দাবীদার জনৈক ব্যক্তি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ এই লোকটি দোযখী। যুদ্ধ শুরু হইলে সে ব্যক্তি প্রাণপণ যুদ্ধ করিয়া মারাত্মকভাবে আহত হইল। অতঃপর এক ব্যক্তি আসিয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (লক্ষ্য করুন।) আপনি যেই লোকটি সম্পর্কে বলিয়াছেন সে দোযখী, সে আল্লাহর রাস্তায় প্রাণপণ লড়াই করিয়া এখন মারাত্মকভাবে আহত অবস্থায় আছে। এইবারও তিনি বলিলেন, সে জাহান্নামী। (বর্ণনাকারী বলেন, এই কথা শুনিয়া কাহারও কাহারও মনে সন্দেহের উদ্রেক হইল। এমতাবস্থায় লোকটি ভীষণভাবে জখমের যন্ত্রণায় অস্থির হইয়া নিজের হাতখানা তীরদানের দিকে বাড়াইয়া তীর বাহির করিয়া লইল এবং নিজের বক্ষের মধ্যে গাঁথিয়া দিল (অর্থাৎ, আত্মহত্যা করিল)। ইহা দেখিয়া মুসলমানদের কতিপয় লোক দৌড়িয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসিয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আল্লাহ তাআলা আপনার কথাটিকে সত্যে পরিণত করিয়াছেন। অমুক লোকটি নিজেই আত্মহত্যা করিয়াছে। এই খবর শোনামাত্রই রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়া উঠিলেন, “আল্লাহু আকবর।" আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, নিশ্চয় আমি আল্লাহর বান্দা ও তাহার রাসূল। অতঃপর বলিলেন, হে বেলাল। উঠ। লোকদের মধ্যে এই ঘোষণা দিয়া দাও যে, পূর্ণ মু'মিন ব্যতীত কেহই জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারিবে না। আর আল্লাহ্ তা'আলা (অনেক সময়) বদকার ব্যক্তির দ্বারাও এই দ্বীন ইসলামকে শক্তিশালী করিয়া থাকেন। বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৯৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৯৩। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর জাদু করা হয়। ফলে তাহার অবস্থা এমন হইয়া গিয়াছিল যে, তাহার ধারণা হইত, তিনি কোন একটি কাজ করিয়াছেন অথচ তাহা তিনি করেন নাই। এই অবস্থায় একদিন তিনি আমার নিকট ছিলেন এবং আল্লাহর নিকট বার বার দো'আ করিলেন। অতঃপর (আমাকে লক্ষ্য করিয়া) বলিলেনঃ তুমি কি অবগত হইয়াছ, আমি যাহা জানিতে চাহিয়াছিলাম আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে তাহা জানাইয়া দিয়াছেন। আমার নিকট দুইজন লোক (মানব আকৃতিতে দুইজন ফিরিশতা) আসে। তাহাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং অপরজন আমার পায়ের কাছে বসিয়া পড়িল। ইহার পর তাহাদের একজন আপন সাথীকে বলিল, এই ব্যক্তির অসুখটা কি? বলিল, ইঁহার উপর জাদু করা হইয়াছে। প্রথমজন জিজ্ঞাসা করিল কে তাহাকে জাদু করিয়াছে? সে জওয়াব দিল, ইহুদী লবীদ ইবনে আ'সাম। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করিল; উহা কিসের সাহায্যে (করা হইয়াছে?) দ্বিতীয় লোকটি বলিল, চিরুনি এবং চিরুনিতে ঝরিয়া পড়া চুলের মধ্যে এবং পুরুষ খেজুর গাছের নূতন খোলের মধ্যে। প্রথমজন জিজ্ঞাসা করিল, তাহা কোথায়? দ্বিতীয়জন বলিল, যারওয়ানের কূপের মধ্যে। (হযরত আয়েশা বলেন, অতঃপর নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহার কতিপয় সাহাবীসহ সেই কূপের কাছে গেলেন। ইহার পর বলিলেন, ইহাই সেই কূপ যাহা আমাকে স্বপ্নে দেখান হইয়াছে। উহার পানি মেহেন্দী নিংড়ান। আর কূপের আশপাশের খেজুর গাছগুলির মাথা যেন শয়তানের মাথার মত। অতঃপর উহা কূপ হইতে বাহির করিয়া ফেলিলেন। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৯৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৯৪। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, একবার আমরা রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ছিলাম। তিনি গনীমতের মাল বিতরণ করিতেছিলেন। তখন বনী তামীম গোত্রের যুল-খুওয়াইছেরা' নামক এক ব্যক্তি আসিয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। ইনসাফ করুন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন তোমার প্রতি আফসোস। আমিই যদি ইনসাফ না করি, তাহা হইলে ইনসাফ আর করিবে কে? যদি আমি ইনসাফ না করি, তবে তো তুমি ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্তই হইলে। (অর্থাৎ, আমার নবী হওয়া অস্বীকার করিলে তুমিও ঈমানদার থাকিবে না।) তখন হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, আমাকে অনুমতি দিন, আমি উহার গর্দান মারিয়া দেই। রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন, তাহাকে ছাড়িয়া দাও। কারণ, তাহার আরও কিছু সঙ্গী আছে। তোমাদের কেহ নিজের নামাযকে তাহাদের নামাযের সাথে এবং নিজের রোযাকে তাহাদের রোযার সাথে তুলনা করিলে নিজেদের নামায-রোযাকে তুচ্ছ মনে করিবে। তাহারা কুরআন পাঠ করে। কিন্তু উহা তাহাদের হলকুম অতিক্রম করে না। তাহারা দ্বীন-ইসলাম হইতে এমনভাবে বাহির হইয়া পড়িবে, যেমন তীর শিকার ছেদ করিয়া বাহির হইয়া পড়ে। অতঃপর সে (শিকারী ) তীরের পাট হইতে ধারাল মাথা পর্যন্ত তাকাইয়া দেখে। (কোথাও কোন কিছু লাগিয়া আছে কিনা?) কিন্তু উহাতে কিছুই দেখিতে পাওয়া যায় না। অথচ তীরটি শিকারের নাড়ি-ভুঁড়ি ও রক্ত-মাংস ভেদ করিয়া গিয়াছে। (অর্থাৎ, সেইসমস্ত লোক দ্বীন ইসলাম হইতে এমনভাবে দূরে থাকিবে যে, ইসলামের কোন চিহ্নই তাহাদের মধ্যে পাওয়া যাইবে না।) তাহাদের এক ব্যক্তির চিহ্ন হইবে, সে হইবে কালো বর্ণের, তাহার বাহুদ্বয়ের কোন এক বাহুর উপরে স্ত্রীলোকের স্তনের ন্যায় ফুলা অথবা বলিয়াছেন মাংসের একটি খণ্ডের ন্যায় উঠিয়া থাকিবে, যাহা নড়িতে থাকিবে এবং তাহারা উত্তম একটি দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে লিপ্ত হইবে।
বর্ণনাকারী আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, এই কথাগুলি আমি সরাসরি রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে শুনিয়াছি। আমি আরও সাক্ষ্য দিতেছি যে, হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ) সেই দলের বিরুদ্ধে লড়াই করিয়াছেন। আমিও তাহার সাথে ছিলাম। [সেই যুদ্ধ ছিল খারেজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হযরত আলী (রাঃ) বিজয়ী হইয়াছেন।] যুদ্ধশেষে হযরত আলী (নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ঐ লোকটির খোঁজ লইতে নির্দেশ করেন। সুতরাং তালাশ করিয়া এক ব্যক্তিকে আনা হইল। বর্ণনাকারী আবু সাঈদ খুদরী বলেন, আমি তাহাকে লক্ষ্য করিয়া দেখিয়াছি, ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেই চিহ্নসমূহ বলিয়াছিলেন, তাহার মধ্যে সেইসমস্ত চিহ্নগুলি বিদ্যমান ছিল।
অপর এক রেওয়ায়তে আছে [রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) যখন গনীমতের মাল বন্টন করিতেছিলেন, তখন] এমন এক ব্যক্তি তাহার সম্মুখে আসিল, বাহার চক্ষু দুইটি ছিল কোটরাগত, কপাল উঁচু সম্মুখের দিকে বাহির হইয়া রহিয়াছে, দাড়ি ছিল ঘন, গণ্ডদ্বয় ছিল ফুলা আর মাথা ছিল ন্যাড়া। সে বলিল, হে মুহাম্মাদ আল্লাহকে ভয় কর। জবাবে তিনি বলিলেন, আমিই যদি নাফরমানী করি, তাহা হইলে আল্লাহর আনুগত্য করিবে কে? (তুমি আমাকে আনুগত্যের কি শিক্ষা দিতেছ ?) স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা আমাকে দুনিয়াবাসীর উপর আমানতদার বানাইয়াছেন। আর তোমরা কি আমাকে আমানতদার মনে কর না? এই সময় এক ব্যক্তি [অর্থাৎ, হযরত ওমর (রাঃ)] এই ব্যক্তিকে হত্যা করিবার জন্য [নবী (ছাঃ)-এর কাছে] অনুমতি চাহিলেন; কিন্তু তিনি নিষেধ করিলেন। (বুখারীর রেওয়ায়তে আছে, হত্যা করিবার জন্য হযরত খালেদ ইবনুল ওলীদ অনুমতি চাহিয়াছিলেন।
উক্ত লোকটি যখন চলিয়া গেল, তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, এই ব্যক্তির পরবর্তী বংশধরের মধ্যে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটিবে, যাহারা কুরআন পড়িবে কিন্তু উহা তাহাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করিবে না। তাহারা দ্বীন-ইসলাম হইতে এমনভাবে বাহির হইয়া যাইবে, যেমন শিকার হইতে তাঁর বাহির হইয়া যায়। তাহারা ইসলামের অনুসারীদিগকে হত্যা করিবে এবং মূর্তিপূজারীদিগকে আপন অবস্থায় ছাড়িয়া রাখিবে। (অর্থাৎ, তাহাদের বিরুদ্ধে লড়াই করিবে না।) যদি আমি তাহাদের নাগাল পাইতাম, তাহা হইলে অবশ্যই আমি তাহাদের সকলকে 'আদ জাতির ন্যায় হত্যা করিতাম। মোত্তাঃ
বর্ণনাকারী আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, এই কথাগুলি আমি সরাসরি রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে শুনিয়াছি। আমি আরও সাক্ষ্য দিতেছি যে, হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ) সেই দলের বিরুদ্ধে লড়াই করিয়াছেন। আমিও তাহার সাথে ছিলাম। [সেই যুদ্ধ ছিল খারেজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হযরত আলী (রাঃ) বিজয়ী হইয়াছেন।] যুদ্ধশেষে হযরত আলী (নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ঐ লোকটির খোঁজ লইতে নির্দেশ করেন। সুতরাং তালাশ করিয়া এক ব্যক্তিকে আনা হইল। বর্ণনাকারী আবু সাঈদ খুদরী বলেন, আমি তাহাকে লক্ষ্য করিয়া দেখিয়াছি, ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেই চিহ্নসমূহ বলিয়াছিলেন, তাহার মধ্যে সেইসমস্ত চিহ্নগুলি বিদ্যমান ছিল।
অপর এক রেওয়ায়তে আছে [রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) যখন গনীমতের মাল বন্টন করিতেছিলেন, তখন] এমন এক ব্যক্তি তাহার সম্মুখে আসিল, বাহার চক্ষু দুইটি ছিল কোটরাগত, কপাল উঁচু সম্মুখের দিকে বাহির হইয়া রহিয়াছে, দাড়ি ছিল ঘন, গণ্ডদ্বয় ছিল ফুলা আর মাথা ছিল ন্যাড়া। সে বলিল, হে মুহাম্মাদ আল্লাহকে ভয় কর। জবাবে তিনি বলিলেন, আমিই যদি নাফরমানী করি, তাহা হইলে আল্লাহর আনুগত্য করিবে কে? (তুমি আমাকে আনুগত্যের কি শিক্ষা দিতেছ ?) স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা আমাকে দুনিয়াবাসীর উপর আমানতদার বানাইয়াছেন। আর তোমরা কি আমাকে আমানতদার মনে কর না? এই সময় এক ব্যক্তি [অর্থাৎ, হযরত ওমর (রাঃ)] এই ব্যক্তিকে হত্যা করিবার জন্য [নবী (ছাঃ)-এর কাছে] অনুমতি চাহিলেন; কিন্তু তিনি নিষেধ করিলেন। (বুখারীর রেওয়ায়তে আছে, হত্যা করিবার জন্য হযরত খালেদ ইবনুল ওলীদ অনুমতি চাহিয়াছিলেন।
উক্ত লোকটি যখন চলিয়া গেল, তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, এই ব্যক্তির পরবর্তী বংশধরের মধ্যে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটিবে, যাহারা কুরআন পড়িবে কিন্তু উহা তাহাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করিবে না। তাহারা দ্বীন-ইসলাম হইতে এমনভাবে বাহির হইয়া যাইবে, যেমন শিকার হইতে তাঁর বাহির হইয়া যায়। তাহারা ইসলামের অনুসারীদিগকে হত্যা করিবে এবং মূর্তিপূজারীদিগকে আপন অবস্থায় ছাড়িয়া রাখিবে। (অর্থাৎ, তাহাদের বিরুদ্ধে লড়াই করিবে না।) যদি আমি তাহাদের নাগাল পাইতাম, তাহা হইলে অবশ্যই আমি তাহাদের সকলকে 'আদ জাতির ন্যায় হত্যা করিতাম। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৯৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৯৫। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি সর্বদা আমার মাকে ইসলামের দিকে আহ্বান করিতাম, কিন্তু তিনি ছিলেন মুশরিক (সাবেক নিয়মে) একদিন আমি তাহাকে ইসলামের দিকে আহ্বান করিলে তিনি আমাকে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শানে এমন কিছু (কটূক্তি) শুনাইলেন, যাহা আমার কাছে খুবই খারাপ লাগিয়াছে। অতঃপর আমি রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে আসিলাম এবং কাদিয়া কাঁদিয়া বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তিনি যেন আবু হোরায়বার মাকে হেদায়ত করেন। তখন তিনি এই দো'আ করিলেন, "হে আল্লাহ্ তুমি আবু হোরায়রার মাকে হেদায়ত নসীব কর।" (আবু হোরায়রা বলেন,) নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দো'আ শুনিয়া আমি সন্তুষ্টচিত্তে বাহির হইয়া (বাড়ীর দিকে) ফিরিলাম। অতঃপর আমি আমার মায়ের ঘরের দরজায় পৌঁছিয়া দেখিলাম, দরজাটি বন্ধ। আমার মা আমার পায়ের ধ্বনি শুনিয়া বলিলেন, হে আবু হোরায়রা! তুমি তোমার স্থানে একটু অপেক্ষা কর। অতঃপর আমি পানি পড়ার শব্দ শুনিতে পাইলাম। সুতরাং তিনি গোসল করিলেন, জামা-কাপড় পরিধান করিলেন এবং তাড়াহুড়া করিয়া ওড়না পরিতে পরিতে আসিয়া দরজা খুলিয়া দিলেন। অতঃপর বলিলেন, হে আবু হোরায়রা! আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নাই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাহার বান্দা ও রাসূল। (অর্থাৎ, তিনি ইসলাম গ্রহণ করিলেন।) সাথে সাথে আমি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ফিরিয়া আসিলাম এবং খুশীতে আমি কাঁদিতেছিলাম। তখন তিনি আল্লাহর শোকর আদায় করিলেন এবং মঙ্গলজনক কথা বলিলেন। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৯৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৯৬। হযরত আবু হোরায়রা [(রাঃ) তাহার কোন কোন সমালোচকদের উদ্দেশ্য করিয়া] বলিলেন, তোমরা বলিয়া থাক, আবু হোরায়রা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে অধিক সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করিয়া থাকে। অথচ আল্লাহর সম্মুখে (জওয়াবদেহির জন্য) সকলকে হাযির হইতে হইবে। প্রকৃত ব্যাপার হইল আমার মুহাজির ভাইগণ অধিকাংশ সময় বাজারে ক্রয়-বিক্রয় লইয়া ব্যস্ত থাকিতেন। আর আমার আনসারী ভাইরা বাগানে-খামারে লিপ্ত থাকিতেন। [ফলে তাঁহারা বেশীর ভাগ সময় রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর খেদমত হইতে অনুপস্থিত থাকিতেন।] আর আমি ছিলাম একজন দরিদ্র ব্যক্তি। তাই আমি পেটে যাহা জুটে উহার উপর তৃপ্ত থাকিয়া রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত থাকিতাম। (তিনি আরও বলেন, একদা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন: আমার এই উক্তি (অর্থাৎ, বিশেষ দোআ) শেষ হওয়া পর্যন্ত তোমাদের যে কেহ তাহার কাপড় (চাদর) প্রসারিত রাখিবে এবং আমার কথা শেষ হওয়ার পর তাহা গুটাইয়া নিজের বক্ষের সাথে জড়াইয়া লইবে,সে আমার কোন উক্তি কখনও ভুলিবে না। (আবু হোরায়রা বলেন, এই কথা শোনার পর) আমি আমার চাদরখানা প্রসারিত করিয়া দিলাম, উহা ব্যতীত আমার কাছে অন্য কোন কাপড় ছিল না। অবশেষে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা বলা শেষ করিলে আমি উহাকে আমার বুকের সাথে চাপিয়া ধরিলাম। সেই মহান সত্তার কসম। যিনি তাঁহাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করিয়াছেন, সেই সময় হইতে আজ পর্যন্ত তাহার কোন কথা আর আমি ভুলি নাই। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৯৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৯৭। হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন: তুমি কি আমাকে যুল-খালাসা (ইয়ামামার একটি মন্দির) হইতে শাস্তি দিবে না ? আমি বলিলাম, হ্যাঁ নিশ্চয়ই। আর আমার অবস্থা এই ছিল যে, আমি ঘোড়ার পিঠে মজবুতভাবে বসিতে পারিতাম না। সুতরাং আমি এই কথাটি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উল্লেখ করিলাম, তখন তিনি আমার বুকের উপর তাহার হাত মারিলেন। এমন কি তাহার আঙ্গুলের নিশানগুলি আমি আমার বুকের উপর দেখিতে পাইলাম। অতঃপর তিনি এই বলিয়া আমার জন্য দো'আ করিলেন, হে আল্লাহ্। তাহাকে (ঘোড়ার পিঠে) স্থির রাখ এবং তাহাকে হেদায়তদানকারী ও হেদায়ত লাভকারী বানাইয়া দাও। (হযরত জারীর বলেন,) ইহার পর হইতে আমি আর কখনও ঘোড়া হইতে পড়িয়া যাই নাই। অতঃপর জারীর (কুরাইশ বংশীয়) আহমাস গোত্রের দেড়শত অশ্বারোহী লইয়া রওয়ানা হইলেন এবং যুল-খালাসা গৃহটিকে আগুন দ্বারা পুড়িয়া ও ভাঙ্গিয়া চুরমার করিয়া দিলেন। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৮৯৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৯৮। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অহী লিখিত। পরে সে ইসলাম হইতে মুরতাদ হইয়া মুশরিকদের সহিত গিয়া মিশিল। তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ভবিষ্যদ্বাণী হিসাবে) বলিলেনঃ নিশ্চয়ই মাটি তাহাকে গ্রহণ করিবে না। [বর্ণনাকারী আনাস (রাঃ) বলেন,] হযরত আবু তালহা (রাঃ) আমাকে বলিয়াছেন, ঐ লোকটি যেই জায়গাতে মরিয়াছে, তিনি তথায় গিয়াছিলেন এবং দেখিতে পান, সে (অর্থাৎ, তাহার মৃত দেহটি) যমীনের উপর পড়িয়া রহিয়াছে। তখন তিনি লোকজনকে জিজ্ঞাসা করিলেন, এই লোকটির এই অবস্থা কেন? তাহারা বলিল, আমরা কয়েকবার উহাকে দাফন করিয়াছিলাম, কিন্তু যমীন উহাকে গ্রহণ করে নাই। (তাই এই অবস্থায় পড়িয়া রহিয়াছে।) -মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান