মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৮- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৪ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৪১১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪১১। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হইবে না, যতদিন না তোমরা পশমের জুতা পরিধানকারী এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে এবং যতক্ষণ না তোমরা তুর্কীদের সাথে যুদ্ধ করিবে, যাহারা ক্ষুদ্র চক্ষু, লাল চেহারা, চেপ্টা নাকবিশিষ্ট, তাহাদের মুখমণ্ডল হইবে পরতে পরতে ভাজ, চামড়ার ঢালের ন্যায়। -মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪১২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪১২। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ যেই পর্যন্ত তোমরা আজমী খুয ও কিরমান' জাতির সহিত যুদ্ধ করিবে না, সেই পর্যন্ত কিয়ামত কায়েম হইবে না। তাহাদের চেহারা হইবে লাল বর্ণের, চেপ্টা নাক, ক্ষুদ্র চক্ষু বিশিষ্ট এবং মুখমণ্ডল হইবে পরতে পরতে ভাজ, চামড়ার ঢালের ন্যায়। আর তাহাদের জুতা হইবে পশমের। বুখারী, বুখারীর অপর এক রেওয়ায়ত আমর ইবনে তালিব (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তাহাদের চেহারা হইবে চওড়া।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪১৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪১৩। অপর এক বর্ণনাতে ’আমর ইবনু তাগলিব (রাঃ) বর্ণনা করেন, তাদের চেহারা হবে চওড়া।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪১৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪১৪। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন মুসলমানগণ ইহুদীদের সহিত যুদ্ধে লিপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হইবে না। তখন মুসলমানগণ তাহাদিগকে হত্যা করিবে। এমন কি ইহুদী পাথর এবং বৃক্ষের আড়ালে লুকাইয়া আত্মগোপন করিবে, তখন সেই পাথর ও বৃক্ষ বলিবে, হে মুসলিম। ওহে আল্লাহর বান্দা। এই যে ইহুদী আমার পিছনে রহিয়াছে। সুতরাং এইদিকে আস এবং তাহাকে হত্যা কর। তবে শুধু 'গারকদ' নামক বৃক্ষ ডাকিয়া বলিবে না, কেননা, উহা ইহুদীদের বৃক্ষ। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪১৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪১৫। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: কিয়ামত কায়েম হইবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না 'কাহ্তান' গোত্র হইতে এক ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটিবে সে লোকদিগকে লাঠি দ্বারা পরিচালিত করিবে। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪১৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪১৬। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ জাহজাহ্ নামক এক ব্যক্তি মানুষের শাসক না হওয়া পর্যন্ত রাত্র-দিনের আবর্তন শেষ হইবে না (অর্থাৎ, কিয়ামত হইবে না)। অপর এক বর্ণনায় আছে, যেই পর্যন্ত গোলাম বংশ হইতে ‘জাহজাহ্' নামক এক ব্যক্তি শাসক হইবে না। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪১৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪১৭। হযরত জাবের ইবনে সামুরা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি; মুসলমানদের এক দল নিশ্চয় ‘কিসরার’ (পারস্যের) সম্রাট বংশের গুপ্ত সম্পদ জয় করিবে—যাহা একটি শ্বেত প্রাসাদে রক্ষিত রহিয়াছে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪১৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪১৮। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: (পারস্য সম্রাট) কিসরা নিশ্চিতভাবে ধ্বংস হইবে, অতঃপর আর কেহই কিসরা হইবে না। আর অচিরেই (রোম সম্রাট) কায়সার ধ্বংস হইবে, অতঃপর আর কেহই কায়সার হইবে না। ইহাও নিশ্চিত যে, তাহাদের রক্ষিত ধন-সম্পদ বিজিত হইয়া আল্লাহর রাস্তায় বন্টিত হইবে এবং নবী (ছাঃ) যুদ্ধকে ধোঁকা বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। —মোত্রাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪১৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪১৯। হযরত নাফে' ইবনে উতবা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমরা আরব উপদ্বীপে যুদ্ধ অভিযান চালাইবে এবং আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদিগকে উহাতে বিজয়ী করিবেন। অতঃপর পারস্যের সহিত যুদ্ধ করিবে, উহাতেও আল্লাহ্ তোমাদিগকে জয়যুক্ত করিবেন। তারপর রোমকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে, উহাতেও আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদিগকে জয়যুক্ত করিবেন। সর্বশেষে তোমরা দাজ্জালের সহিত লড়াই করিবে, উহাতেও আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদিগকে বিজয়ী করিবেন। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪২০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪২০। হযরত আওফ ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, তবুকের যুদ্ধের সময় আমি নবী (ﷺ)-এর খেদমতে আসিলাম। এই সময় তিনি একটি চামড়ার তাঁবুতে অবস্থান করিতেছিলেন। তখন তিনি বলিলেনঃ কিয়ামতের পূর্বের ছয়টি নিদর্শনকে তুমি গনিয়া রাখ। (১) আমার ওফাত। (২) অতঃপর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়। (৩) ব্যাপক মহামারী—যাহা তোমাদেরকে বকরীর মড়কের ন্যায় আক্রমণ করিবে। (৪) ধন-সম্পদের এত প্রাচুর্য হইবে যে, কোন ব্যক্তিকে একশত দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) প্রদান করিলেও সে (উহাকে নগণ্য মনে করিয়া) অসন্তুষ্টি প্রকাশ করিবে। (৫) এমন এক ফিতনা দেখা দিবে, যাহা আরবের প্রত্যেকটি ঘরেই প্রবেশ করিবে। (৬) অতঃপর রোমকদের সহিত তোমাদের একটি সন্ধি-চুক্তি হইবে, পরে তাহারা উক্ত চুক্তি ভঙ্গ করিয়া তোমাদের বিরুদ্ধে আশিটি পতাকা লইয়া মুকাবিলায় আসিবে এবং প্রত্যেক পতাকার অধীনে বার হাজার সৈন্য থাকিবে। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪২১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪২১। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত কায়েম হইবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না রোমকগণ (মুসলমানদের বিরুদ্ধে) 'আমাক' অথবা 'দাবাক' নামক স্থানে অবতরণ করিবে এবং মদীনার তৎকালীন উত্তম লোকদের একটি সেনাদল উহাদের মুকাবিলায় বাহির হইবে। লড়াইয়ের জন্য যখন মুসলমানগণ কাতারবন্দী হইবে, তখন রোমকগণ বলিবে, তোমরা আমাদের জন্য ঐ সব লোকদের রাস্তা ছাড়িয়া দাও, যাহারা আমাদের সহিত যুদ্ধ করিয়া আমাদের কিছুসংখ্যক লোকজনকে কয়েদ করিয়া নিয়া আসিয়াছে। তাহাদের সহিতই আমরা যুদ্ধ করিব। মুসলমানগণ বলিবেন, আল্লাহর কসম! ইহা কখনও হইতে পারে না। আমরা আমাদের সেই সমস্ত মুসলমান ভাইদিগকে তোমাদের সহিত যুদ্ধ করিবার জন্য ছাড়িয়া দিতে পারি না। ইহার পর মুসলমানগণ রোমক কাফেরদের সহিত যুদ্ধে লিপ্ত হইবে, কিন্তু মুসলমানদের এক-তৃতীয়াংশ রোমকদের মুকাবিলা হইতে পলায়ন করিবে। আল্লাহ্ এই পলায়নকারীদের তওবা কখনও কবুল করিবেন না। আর এক-তৃতীয়াংশ নিহত হইবে, তাহারা আল্লাহ্ তা'আলার নিকট উত্তম শহীদ হিসাবে গণ্য হইবে। আর এক-তৃতীয়াংশ রোমকদের উপর বিজয়ী হইবে, আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদিগকে কখনও ফিতনায় নিপতিত করিবেন না। অবশেষে তাহারাই কনস্টান্টিনোপল জয় করিবে। অতঃপর যখন তাহারা গনীমতের মাল-সম্পদ বণ্টনে ব্যস্ত হইবে এবং তাহাদের তরবারিসমূহ যয়তুন গাছের সাথে ঝুলাইয়া রাখিবে, ঠিক এমতাবস্থায় হঠাৎ শয়তান এই ঘোষণা দিবে যে, তোমাদের অনুপস্থিতিতে মাসীহে দাজ্জাল তোমাদের বাড়ী-ঘরে ঢুকিয়া পড়িয়াছে। এতদশ্রবণে মদীনার সেই সেনাদল সেই দিকে বাহির হইয়া পড়িবে। অথচ সেই ঘোষণাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। যখন মুসলমানগণ কনস্টান্টিনোপল ত্যাগ করিয়া সিরিয়ায় প্রবেশ করিবে তখনই দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটিবে। এই সময় মুসলমানগণ দাজ্জালের সহিত যুদ্ধ করিতে প্রস্তুতি নিতে থাকিবে এবং সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াইয়া যাইবে, তৎক্ষণাৎ নামাযের উদ্দেশ্যে (মুয়াযযিন কর্তৃক) একামত দেওয়া হইবে এবং এই মুহূর্তে হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ) আকাশ হইতে দামেশকের জামে মসজিদের মিনারায়) অবতরণ করিবেন এবং মুসলমানদিগকে ইমামতি করিয়া নামায পড়াইবেন। অতঃপর যখন আল্লাহর দুশমন (দাজ্জাল) তাঁহাকে দেখিতে পাইবে, তখন সে এমনিভাবে গলিয়া যাইতে থাকিবে যেমনিভাবে লবণ পানিতে গলিয়া যায়। আর যদি হযরত ঈসা (আঃ) তাহাকে এমনিতেই ছাড়িয়া দিতেন, তবুও সে এমনিতেই গলিয়া ধ্বংস হইয়া যাইত, কিন্তু 'আল্লাহ তা'আলা তাহাকে হযরত ঈসা (আঃ)-এর হাতেই হত্যা করাইবেন। অতঃপর হযরত ঈসা (আঃ) যেই বর্শা দ্বারা তাহাকে হত্যা করিবেন, রক্তমাখা সেই বর্শাটি তিনি লোকদিগকে সকলকেই দেখাইবেন। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪২২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪২২। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত কায়েম হইবে না; যেই পর্যন্ত না এমন সময় আসিবে যে, মীরাস বণ্টিত হইবে না এবং গনীমতের মালেও লোকেরা আনন্দিত হইবে না। অতঃপর হযরত ইবনে মাসউদ [(রাঃ) ইহার ব্যাখ্যায়] বলিয়াছেন, দুশমন অর্থাৎ, রোমক নাসারাগণ সিরিয়ার মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক বিরাট সেনাদল সমাবেশ করিবে। আর মুসলমানগণও রোমকদের মুকাবিলায় এক বিরাট বাহিনী একত্রিত করিবে। অতঃপর মুসলমানগণ নিজেদের একটি দলকে নির্বাচন করিয়া শত্রুর মুকাবিলায় মৃত্যু পর্যন্ত যুদ্ধ চালাইয়া যাইবার জন্য পাঠাইয়া দিবে, পূর্ণ বিজয় লাভ না করিয়া যাহারা ফিরিয়া আসিবে না। তারপর উভয়পক্ষ যুদ্ধ করিতে থাকিবে রাত্রির অন্ধকার নামিয়া বাধা সৃষ্টি না করা পর্যন্ত। অতঃপর উভয় পক্ষের প্রত্যেকেই আপন আপন শিবিরে ফিরিয়া আসিবে। কেহই কাহারও উপর বিজয়ী হইবে না। অবশ্য উভয় সেনাদলের অগ্রগামী সৈন্যরা সকলেই নিহত হইয়া যাইবে। অতঃপর (দ্বিতীয় দিন) মুসলমানগণ নিজেদের একটি দলকে নির্বাচন করিয়া মৃত্যু পর্যন্ত যুদ্ধ চালাইয়া যাইবার জন্য প্রেরণ করিবে, যাহারা বিজয়ী হওয়া ছাড়া ফিরিয়া আসিবে না বলিয়া প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইবে, তারপর উভয় পক্ষ যুদ্ধে লিপ্ত হইয়া পড়িবে। অবশেষে রাত্র তাহাদের মধ্যে আড়াল হইয়া যাইবে এবং উভয় দলই বিজয় ছাড়া ফিরিয়া আসিবে। ইহাদের অগ্রগামী দলও নিহত হইয়া যাইবে। ইহার পর তৃতীয় দিনও মুসলমানগণ একদল সৈন্য প্রেরণ করিবে এবং বিজয়ী হওয়া ব্যতীত ফিরিয়া আসিবে না বলিয়া প্রতিজ্ঞা করিবে। অতঃপর সন্ধ্যা পর্যন্ত উভয় পক্ষ যুদ্ধ চালাইয়া যাইবে। পরিশেষে উভয় পক্ষই বিজয়ী হওয়া ছাড়া ফিরিয়া আসিবে। ইহাদের অগ্রগামী দলটিও নিঃশেষ হইয়া যাইবে। অতঃপর চতুর্থ দিন মুসলমানদের অবশিষ্ট সকলেই একত্রে মুকাবিলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করিবে, তখন আল্লাহ্ তা'আলা কাফেরদিগকে পরাজিত করিয়া মুসলমানদিগকে তাহাদের উপর বিজয় দান করিবেন। এই যুদ্ধে মুসলমানগণ এমন লড়াই করিবে যে, ইতিপূর্বে এই ধরনের ঘোরতর যুদ্ধ আর কখনও দেখা যায় নাই। এমন কি যদি কোন উড়ন্ত পাখী উক্ত লড়াইয়ের ময়দানের নিকট দিয়া অতিক্রম করে, তবে উহা সেনাদলকে পিছনে ফেলিয়া যাইতে সক্ষম হইবে না। বরং উহা মরিয়া পড়িয়া যাইবে (পচা লাশের দুর্গন্ধের কারণে অথবা যুদ্ধক্ষেত্র অতিক্রম করিতে অক্ষম হইয়া)। কোন পিতা বা পরিবারের একশত সন্তান থাকিলে যুদ্ধ শেষে গনিয়া দেখিবে, উহাদের মধ্যে মাত্র একটি লোক বাঁচিয়া আছে, এমতাবস্থায় কিভাবে গনীমতের মাল দ্বারা কোন ব্যক্তি আনন্দিত হইতে পারে ? আর কারই বা মীরাস বন্টিত হইবে? মুসলমাগণ এই অবস্থায় থাকিতেই হঠাৎ ইহা অপেক্ষা আরও একটি বিরাট যুদ্ধের সংবাদ শুনিতে পাইবে। তাহারা এই ঘোষণা শুনিতে পাইবে যে, তাহাদের অনুপস্থিতিতে দাজ্জাল (সদলবলে) তাহাদের পরিবার-পরিজনদের মধ্যে পৌঁছিয়া গিয়াছে। এই সংবাদ শ্রবণমাত্রই তাহাদের হাতে যাহাকিছু ছিল উহা সেখানে ফেলিয়া দিয়াই দাজ্জালের উদ্দেশ্যে ছুটিয়া চলিবে এবং শত্রুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করিবার জন্য দশ জন অশ্বারোহীকে অগ্রগামী হিসাবে প্রেরণ করিবে। রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : যেই দশ জন অশ্বারোহীকে অগ্রগামী হিসাবে পাঠান হইবে, আমি নিশ্চিতভাবে তাহাদের ও তাহাদের বাপ-দাদাদের নাম-ধাম এবং তাহাদের অশ্বগুলির বর্ণ কিরূপ হইবে উহা অবগত আছি। তাহারা হইবে সর্বাপেক্ষা উত্তম অশ্বারোহী। অথবা বলিয়াছেন, তৎকালীন ভূপৃষ্ঠের উত্তম সওয়ারীদের অন্যতম। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪২৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪২৩। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: তোমরা কি এমন একটি শহরের নাম শুনিয়াছ, যাহার একদিকে মুক্ত ময়দান এবং অপর দিকে সাগর রহিয়াছে ? তাহারা বলিলেন, জি হা শুনিয়াছি, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ । তিনি বলিলেন, কিয়ামত কায়েম হইবে না যতক্ষণ না হযরত ইসহাক (আঃ)-এর বংশধরের সত্তর হাজার লোক উক্ত শহরে যুদ্ধ করিবে। তাহারা যখন তথায় আসিবে তখন তাহারা উহার আশেপাশে অবস্থান করিবে, কিন্তু অস্ত্র দ্বারা আক্রমণ করিবে না এবং কোন বর্শা তীরও নিক্ষেপ করিবে না। বরং তাহারা শুধুমাত্র 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার' ধ্বনি উচ্চারণ করিবে। ইহাতেই শহরের এক পার্শ্বের প্রাচীর ভাঙ্গিয়া পড়িবে। বর্ণনাকারী সাওর ইবনে ইয়াযীদ বলেন, আমার ধারণা, রাবী আবু হোরায়রা বলিয়াছেন, (প্রথম ধ্বনিতে) সাগর পার্শ্বের প্রাচীরটি ভাঙ্গিয়া পড়িবে। অতঃপর তাহারা দ্বিতীয়বার 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার' ধ্বনি উচ্চারণ করিবে। এইবার অপর দিকের প্রাচীরটি (যাহা ময়দানের দিকে ছিল) ভাঙ্গিয়া পড়িবে। তারপর যখন তৃতীয়বার তাহারা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার' বলিয়া তীর ধ্বনি উচ্চারণ করিবে, তখন শহরের প্রবেশ দ্বারটি প্রশস্ত হইয়া যাইবে এবং তাহারা উহাতে প্রবেশ করিবে, আর গনীমত সংগ্রহ করিতে থাকিবে। তাহারা যখন এই গনীমতের মাল বন্টনে ব্যস্ত হইবে, তখন হঠাৎ ঘোষণা শুনিতে পাইবে যে, দাজ্জালের আবির্ভাব হইয়াছে। তখন তাহারা সেই সমস্ত মাল-সম্পদ ফেলিয়া (দাজ্জালের মুকাবিলায়) ফিরিয়া আসিবে। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪২৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪২৪। হযরত মু'আয ইবনে জবল (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বায়তুল মুকাদ্দাসের পার্থিব উন্নতি মদীনা শরীফ ধ্বংস হওয়ার কারণ হইবে। আর মদীনার ধ্বংস নানা ফিতনা ও মহাযুদ্ধের সূচনা করিবে এবং মহাযুদ্ধ কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের পূর্বাভাস হইবে, আর কনস্টান্টিনোপলের বিজয় হইবে দাজ্জালের আবির্ভাবের পূর্বাভাস। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান