মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৮- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১২ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৩৯৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৩৯৭। হযরত আবু যর (রাঃ) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পিছনে একটি গাধার উপরে আরোহী ছিলাম। যখন আমরা মদীনার জনপদ অতিক্রম করিয়া বাহিরে গেলাম, তখন তিনি আমাকে বলিলেনঃ হে আবু যর! তখন তোমার কি অবস্থা হইবে যখন মদীনায় এমন দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে যে, ক্ষুধার তাড়নায় তুমি স্বীয় বিছানা হইতে উঠিয়া মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছিতে পারিবে না, এমন কি ক্ষুধা তোমাকে অস্থির করিয়া ফেলিবে। আমি বলিলাম, আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলই বেশী জানেন। তিনি বলিলেন; হে আবু যর! তখন তুমি আত্মসংযম করিবে (অর্থাৎ, মানুষের নিকট হাত পাতিও না, হারাম কিংবা সন্দেহযুক্ত মাল ভক্ষণ করিও না)। তিনি আবার বলিলেন ; হে আবু যর। তখন তোমার অবস্থা কেমন হইবে যখন মদীনায় এমন মড়ক দেখা দিবে যে, একটি ঘর একটি গোলামের মূল্যের সমপরিমাণে পৌঁছিবে, এমন কি একটি কবরের জায়গা একটি গোলামের বিনিময়ে বিক্রয় হইবে। আমি বলিলাম, আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূল বেশী জানেন। তিনি বলিলেন; হে আবু যর! ধৈর্যধারণ করিবে। তিনি পুনরায় বলিলেন; হে আবু যর! তখন তোমার অবস্থা কি হইবে যখন মদীনায় এমন এক হত্যাযজ্ঞ শুরু হইবে, যাহার রক্ত আহজারুয্ যায়ত' নামক স্থানকে ডুবাইয়া ফেলিবে। আমি বলিলাম, আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূল অধিক ভাল জানেন। তিনি বলিলেন ; তখন তুমি তাহার নিকটই চলিয়া যাইবে যাহার সহিত তুমি সম্পর্কিত (অর্থাৎ, নিজের পরিবার অথবা নিজ ইমামের নিকট)। আমি বলিলাম, তবে কি আমি অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হইব? তিনি বলিলেন; যদি তুমি এইরূপ কর তাহা হইলে তুমিও সেই দলের সহিত শামিল হইয়া যাইবে। আমি বলিলাম, তাহা হইলে আমি কি করিব ? ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তখন তিনি বলিলেন; যদি তুমি তলোয়ারের চাকচিক্যকে ভয় কর (অর্থাৎ, তলোয়ারের সম্মুখে জীবন দিতে ভয় পাও), তাহা হইলে পরিহিত কাপড়ের একাংশ নিজের মুখের উপরে ঢালিয়া দিবে, যাহাতে সে তোমার ও নিজের পাপ বহন করে। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৩৯৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৩৯৮। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা নবী (ﷺ) তাঁহাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ হে আব্দুল্লাহ্! তখন তোমার কি অবস্থা হইবে? যখন তুমি নিকৃষ্ট ও ইতর লোকদের মধ্যে থাকিয়া যাইবে, তাহাদের অঙ্গীকার ও আমানতের মধ্যে ভেজাল আসিয়া যাইবে এবং পরস্পরে বিরোধে লিপ্ত হইয়া পড়িবে। তাহাদের অবস্থা হইবে এইরূপ এবং (এই কথা বলিয়া তিনি) উভয় হাতের অঙ্গুলীসমূহকে পরস্পরের মধ্যে ঢুকাইলেন। আব্দুল্লাহ্ বলিলেন, তখন আমার করণীয় কাজ কি হইবে, আপনিই আমাকে নির্দেশ করুন। তখন নবী (ﷺ) বলিলেন; যেই কাজটি তুমি সত্য ও ভাল বলিয়া জান, কেবলমাত্র তাহাই করিবে এবং যাহা অসত্য ও মন্দ বলিয়া জান তাহা বর্জন করিবে; আর শুধু নিজের আত্মরক্ষার চেষ্টা করিবে এবং সাধারণ মানুষ হইতে নিজেকে দূরে সরাইয়া রাখিবে। অপর এক বর্ণনায় আছে—আপন ঘরে বসিয়া থাক, নিজের মুখ ও রসনাকে আপন আয়ত্তে রাখ। আর যাহা ভাল মনে কর, শুধু তাহাই কর এবং মন্দকে বর্জন কর। কেবলমাত্র নিজের ব্যাপারে সচেতন থাক এবং সর্বসাধারণ মানুষ সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা পরিহার কর। —তিরমিযী। এবং তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি সহীহ্।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৩৯৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৩৯৯। হযরত আবু মুসা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ কিয়ামত আসার পূর্বে ঘোর অন্ধকার রাত্রির একাংশের ন্যায় ফিতনা সংঘটিত হইতে থাকিবে, উহাতে কোন ব্যক্তি সকালে মু'মেন এবং বিকালে কাফের এবং বিকালে মু'মেন আর সকালে কাফেরে পরিণত হইতে থাকিবে। (অর্থাৎ, ফিতনার তাণ্ডব এত প্রবল হইবে যে, অল্প সময়ের ব্যবধানেই মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হইতে থাকিবে।) উহাতে উপবিষ্ট ব্যক্তি দণ্ডায়মান ব্যক্তি হইতে উত্তম হইবে। আর চলমান ব্যক্তি দ্রুতগামী ব্যক্তি অপেক্ষা উত্তম হইবে। তখন তোমরা তোমাদের ধনুকগুলি ভাঙ্গিয়া ফেলিবে এবং উহার রশিগুলি কাটিয়া ফেলিবে। আর তোমাদের তলোয়ার পাথরে ঘষিয়া উহার ধার নষ্ট করিয়া দিবে। এই সময় যদি কেহ আগ্রাসী হইয়া তোমাদের কাহাকেও আক্রমণ করে, তখন সে যেন আদম (আঃ)-এর দুই ছেলের মধ্যে উত্তম ছেলের নীতি অবলম্বন করে। –আবু দাউদ
আবু দাউদের অপর এক বর্ণনায় خَيْرٌ مِنَ السَّاعِي (দ্রুতগামী অপেক্ষা উত্তম) পর্যন্ত বর্ণনা করা হইয়াছে। অতঃপর সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাদিগকে তখন কি করিতে নির্দেশ দেন? তিনি বলিলেন; সেই সময় তোমরা আপন আপন গৃহের চট্ হইয়া যাও (বিছানা যেমন ঘরে পড়িয়া থাকে, তদ্রূপ তোমরাও ঘরে বসিয়া থাকিবে। অর্থাৎ, ফিতনায় জড়িত হইবে না।) আর তিরমিযীর বর্ণনায় আছে—রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ ফিতনার সময় তোমরা নিজেদের ধনুক ভাঙ্গিয়া ফেল এবং উহার রশি কাটিয়া ফেল। গৃহের অভ্যন্তরে আব্দ্ধ থাক এবং আদমের পুত্র (হাবিল)-এর নীতি অবলম্বন কর। তিরমিযী বলেন; হাদীসটি সহীহ্ ও গরীব।
আবু দাউদের অপর এক বর্ণনায় خَيْرٌ مِنَ السَّاعِي (দ্রুতগামী অপেক্ষা উত্তম) পর্যন্ত বর্ণনা করা হইয়াছে। অতঃপর সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাদিগকে তখন কি করিতে নির্দেশ দেন? তিনি বলিলেন; সেই সময় তোমরা আপন আপন গৃহের চট্ হইয়া যাও (বিছানা যেমন ঘরে পড়িয়া থাকে, তদ্রূপ তোমরাও ঘরে বসিয়া থাকিবে। অর্থাৎ, ফিতনায় জড়িত হইবে না।) আর তিরমিযীর বর্ণনায় আছে—রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ ফিতনার সময় তোমরা নিজেদের ধনুক ভাঙ্গিয়া ফেল এবং উহার রশি কাটিয়া ফেল। গৃহের অভ্যন্তরে আব্দ্ধ থাক এবং আদমের পুত্র (হাবিল)-এর নীতি অবলম্বন কর। তিরমিযী বলেন; হাদীসটি সহীহ্ ও গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪০০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০০। হযরত উম্মে মালেক বাহযিয়্যাহ্ (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফিতনার আলোচনা করিলেন এবং উহা খুবই নিকটে বলিয়াও বর্ণনা করিলেন। তখন আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। সেই সময় উত্তম ব্যক্তি কে? তিনি বলিলেনঃ যে ব্যক্তি নিজের গবাদিপশুর মধ্যে থাকিয়া উহার হক্ (যাকাত ইত্যাদি) আদায় করিবে এবং আপন পরওয়ারদেগারের এবাদতে মশগুল থাকিবে। আর যে ব্যক্তি নিজের ঘোড়ার উপর আরোহণ করিয়া শত্রুদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করিবে এবং শত্রুরা তাহাকে ভয় দেখাইবে — তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪০১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০১। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ নিকট ভবিষ্যতে এমন ভয়াবহ ফিতনা দেখা দিবে, যাহা গোটা আরবভূমিকে গ্রাস করিয়া ফেলিবে। উহাতে যাহারা নিহত হইবে তাহারা জাহান্নামী। উক্ত গোলযোগের সময় মুখের ভাষা হইবে তলোয়ারের আঘাত অপেক্ষা অধিক ক্ষতিকর। —তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪০২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০২। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ অদূর ভবিষ্যতে বোবা, বধির ও অন্ধ ফিতনা দেখা দিবে। যে ব্যক্তি উহার দিকে তাকাইবে, উক্ত ফিতনাও তাহার দিকে তাকাইবে, উহাতে কথা-বার্তায় অংশগ্রহণ করা তলোয়ারের আঘাতের ন্যায় ক্ষতিকর হইবে। ——আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪০৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০৩। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট বসা ছিলাম। তখন তিনি ফিতনা সম্পর্কে আলোচনা করিলেন এবং বহুবিধ ফিতনার আলোচনা করিলেন, এমন কি 'ফিতনায়ে আহলাস'-এরও উল্লেখ করিলেন। জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করিল, “ফিতনায়ে আহলাস' কি? তিনি বলিলেনঃ উহাতে পলায়ন হইবে (অর্থাৎ, পরস্পরের মধ্যে এমন শত্রুতা দেখা দিবে যে, একে অন্য হইতে পলায়ন করিতে থাকিবে।) এবং ছিনতাই হইবে। অতঃপর দেখা দিবে 'ফিতনাতুস্ সাররা' (অর্থাৎ, ধনের প্রাচুর্যের কারণে বিলাসিতায় লিপ্ত হইয়া পড়ার ফিতনা), উক্ত ফিতনার ধোয়া আমার পরিবারস্থ এক ব্যক্তির পায়ের নীচ হইতে নির্গত হইবে। (অর্থাৎ, সেই ব্যক্তিই উক্ত ফিতনার নায়ক হইবে।) সে আমার খান্দানের লোক বলিয়া দাবী করিবে, অথচ প্রকৃতপক্ষে সে আমার আপনজনদের মধ্যে হইবে না। প্রকৃতপক্ষে পরহেজগার লোকই হইলেন আমার বন্ধু। অতঃপর লোকেরা এমন এক ব্যক্তির উপর ক্ষমতা অর্পণে একমত হইবে, যে পাজরের হাড়ের উপর নিতম্বের মত হইবে (অর্থাৎ, অনভিজ্ঞ ও অযোগ্য ব্যক্তিই হইবে তাহাদের অধিনায়ক)। তারপর আরম্ভ হইবে অন্ধকারাচ্ছন্ন ফিতনা, উহা কাহাকেও রেহাই দিবে না; বরং প্রত্যেক ব্যক্তিকে এক একটি চপেটাঘাত লাগাইবেই। (অর্থাৎ, প্রত্যেক ব্যক্তিই সেই ফিতনার শিকার হইয়া পড়িবে।) আর যখন বলা হইবে, ফিতনা শেষ হইয়া গিয়াছে, তখন উহা এত প্রসারিত হইবে যে, মানুষ ভোরে ঈমানদার হইয়া উঠিবে, কিন্তু সন্ধ্যায় সে কাফের হইয়া যাইবে। অবশেষে সকল মানুষ দুইটি তাঁবুতে (দলে) বিভক্ত হইয়া যাইবে। এক দল হইবে ঈমানের, এইখানে মুনাফেকী থাকিবে না। আর অপর দল হইবে মুনাফেকীর, যাহার মধ্যে ঈমান থাকিবে না। যখন অবস্থা এই পর্যায়ে পৌঁছিবে, তখন তোমরা দাজ্জালের আগমনের অপেক্ষা কর, সে ঐ দিনই অথবা পরের দিন আবির্ভূত হইবে । —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪০৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০৪। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ দুর্ভাগ্য আরবদের জন্য যে, এক বিরাট ফিতনা তাহাদের নিকটবর্তী। সে ব্যক্তিই সাফল্যমণ্ডিত হইবে, যে (উহা হইতে) নিজের হাতকে গুটাইয়া রাখিবে। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪০৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০৫। হযরত মিকদাদ ইবনে আওয়াদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি — সৌভাগ্যবান ঐ ব্যক্তি, যাহাকে ফিনা হইতে দূরে রাখা হইয়াছে, সৌভাগ্যবান ঐ ব্যক্তি যাহাকে ফিতনা হইতে দূরে রাখা হইয়াছে, সৌভাগ্যবান ঐ ব্যক্তি যাহাকে ফিতনা হইতে দূরে রাখা হইয়াছে এবং সেই ব্যক্তিও সৌভাগ্যবান যে উহাতে পতিত হইয়া ধৈর্যধারণ করিয়াছে। তাহার জন্য মোবারকবাদ। – আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪০৬

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০৬। হযরত সাওবান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমার উম্মতের মধ্যে যখন একবার তলোয়ার চালিত হইবে, তখন আর উহা কিয়ামত পর্যন্ত উঠিবে না। আর কিয়ামত সেই পর্যন্ত কায়েম হইবে না যেই পর্যন্ত না আমার উম্মতের কোন কোন গোত্র মুশরিকদের সহিত মিলিত হইবে এবং যেই পর্যন্ত না আমার উম্মতের কোন কোন গোত্র মূর্তিপূজা করিবে। তিনি আরও বলিয়াছেন; অদূর ভবিষ্যতে আমার উম্মতের মাঝে ত্রিশ জন মিথ্যাবাদীর আবির্ভাব ঘটিবে এবং তাহারা প্রত্যেকেই আল্লাহ্ নবী হওয়ার দাবী করিবে। অথচ প্রকৃত কথা হইল, 'আমিই শেষ নবী, আমার পরে আর কোন নবী নাই । তিনি আরও বলিয়াছেন; আমার উম্মতের একটি দল সত্যের উপর অবিচল থাকিবে, যাহারা তাহাদের বিরোধিতা করিবে, তাহারা উহাদের কোনই ক্ষতিসাধন করিতে পারিবে না কিয়ামত আসা পর্যন্ত। —আবু দাউদ ও তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪০৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০৭। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ ইসলামের চাকা পঁয়ত্রিশ অথবা ছত্রিশ অথবা সাঁইত্রিশ বৎসর সঠিকভাবে ঘুরিতে থাকিবে। ইহার পরে যদি লোকজন ধ্বংসের সম্মুখীন হয়, তবে তাহারা পূর্ববর্তী লোকদের পথে চলার কারণেই ধ্বংস হইবে। অতঃপর দ্বীনের নেযাম যদি আবার প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে উহা তাহাদের মধ্যে সত্তর বৎসর পর্যন্ত বহাল থাকিবে। ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, সেই সত্তর বৎসর কি উল্লিখিত (পঁয়ত্রিশ) বৎসরের পরে আসিবে, নাকি অতীতের সেই বৎসরগুলিসহ? তিনি বলিলেন অতীতের বৎসরগুলিসহ। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৪০৮

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০৮। হযরত আবু ওয়াকিদ লাইসী (রাঃ) বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হোনাইনের যুদ্ধে বাহির হইলেন, তখন তিনি মুশরিকদের এমন একটি বৃক্ষের নিকট দিয়া গমন করিলেন, যাহাতে তাহারা নিজেদের অস্ত্রসমূহ ঝুলাইয়া রাখিত। উক্ত বৃক্ষটিকে ‘যাতা-আনওয়াত' বলা হইত। ইহা দেখিয়া কোন কোন নব্য মুসলমানরা বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ঐ সমস্ত মুশরিকদের ন্যায় আমাদের জন্যও একটি ‘যাতা-আনওয়াত' নির্ধারণ করিয়া দিন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) (বিস্ময় প্রকাশে) বলিলেনঃ ‘সোবহানাল্লাহ্' হযরত মুসা (আঃ)-এর কওম তাঁহাকে বলিয়াছিল, আমাদের জন্য এইরূপ মা'বূদ নির্ধারণ করিয়া দিন যেইরূপ ঐ কাফের সম্প্রদায়ের মা'বূদ রহিয়াছে। তোমরাও তো সেইরূপ কথা বলিলে, সেই মহান সত্তার কসম, যাঁহার হাতে আমার প্রাণ। নিশ্চয় তোমরা ঐ সমস্ত লোকদের পথ অনুসরণ করিয়া চলিবে, যাহারা তোমাদের পূর্বে অতীত হইয়া গিয়াছে। —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান