মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৭- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৫ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫১৫৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৫৯। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: আল্লাহ্ তা'আলা কোন মু'মিনের নেক কাজকে নষ্ট করেন না, দুনিয়াতেও উহার বিনিময় প্রদান করেন এবং আখেরাতেও উহার প্রতিদান দেন। আর কাফের আল্লাহর জন্য যেইসব ভাল কাজ করে দুনিয়াতে সে উহার বিনিময় ভোগ করে, অবশেষে যখন সে আখেরাতে পৌঁছিবে, তখন তাহার (আমলনামায়) কোন ভাল কাজ থাকিবে না যাহার প্রতিদান সে পাইতে পারে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬০। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন দোযখকে কামনা-বাসনা দ্বারা ঢাকিয়া রাখা হইয়াছে। আর জান্নাতকে ঢাকিয়া রাখা হইয়াছে বিপদ-মুছীবত দ্বারা। — মোত্তাঃ। মুসলিমের বর্ণনায় -এর স্থলে (ঘিরিয়া) রহিয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬১। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : ধ্বংস হউক দীনারের গোলাম, দিরহামের গোলাম, উত্তম পোশাকের গোলাম। যদি তাহাকে দেওয়া হয় তবে সন্তুষ্ট হয়; আর না দেওয়া হইলে অসন্তুষ্ট হয়। সে ধ্বংস হউক, অধঃপতিত হউক। যদি তাহার পায়ে কাঁটা বিধে উহা খুলিয়া দেওয়ার মতও কেহ না হউক। ঐ বান্দার জন্য সুসংবাদ, যে ঘোড়ার লাগাম ধরিয়া আল্লাহর পথে (জিহাদের জন্য) প্রস্তুত রহিয়াছে, যাহার কেশ বিক্ষিপ্ত, পদযুগল ধূলি-মিশ্রিত। তাহাকে পাহারার কাজে নিয়োজিত করা হইলে সে পাহারার কাজে রত থাকে। আর তাহাকে সৈন্যদলের পশ্চাতে নিয়োজিত করিলে পশ্চাতে থাকে, কাহারও সাক্ষাতের অনুমতি চাহিলে তাহাকে অনুমতি দেওয়া হয় না। কাহারও জন্য সুপারিশ করিলে তাহা কবুল করা হয় না। -বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬২। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: আমি আমার পর তোমাদের জন্য সবচাইতে বেশী যেই ব্যাপারে ভয় করি তাহা হইল দুনিয়ার চাকচিক্য ও উহার সৌন্দর্য, যাহা তোমাদের উপর উন্মুক্ত করিয়া দেওয়া হইবে। তখন এক ব্যক্তি বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। কল্যাণ কি মন্দের কারণ হইতে পারে? তখন তিনি কিছুক্ষণ চুপ রহিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা ধারণা করিলাম, তাহার উপর অহী নাযিল হইতেছে। অতঃপর তিনি ঘাম মুছিয়া বলিলেন সেই প্রশ্নকারী কোথায় ? বর্ণনাকারী বলেন, যেন তিনি প্রশ্নকারীর কথাটি প্রশংসার যোগ্য মনে করিয়াছেন। তখন হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ কল্যাণ কখনও মন্দ আনে না। (ইহার উদাহরণ,) বসন্ত ঋতু যাহা উৎপাদন করে তাহা মূলতঃ (ভক্ষণকারীকে) ধ্বংস করে না বা ধ্বংসের নিকটবর্তী নিয়া যায় না; কিন্তু তৃণভোজী জানোয়ার যখন অতিমাত্রায় খায়, অবশেষে যখন কোমরের উভয় পার্শ্ব ফুলিয়া উঠে তখন সূর্যের সামনে রৌদ্রে যাইয়া বসে এবং মলমূত্র ত্যাগ করে। পরে আবার তৃণভূমির দিকে ফিরিয়া যাইতে থাকে। বস্তুতঃ দুনিয়ার মাল-সম্পদ শ্যামল-সবুজ সুস্বাদু বটে। যে উহা বৈধভাবে উপার্জন করে এবং বৈধ পথে ব্যয় করে তখন উহা তাহার পক্ষে উত্তম সাহায্যকারী। কিন্তু যে উহা অবৈধ পথে উপার্জন করে তখন তাহার উদাহরণ ঐ জন্তুর ন্যায়, যে যায় কিন্তু পরিতৃপ্ত হয় না। এবং এই দুনিয়াবী মাল-সম্পদ কিয়ামতের দিন তাহার বিরুদ্ধে সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত হইবে। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬৩। হযরত আমর ইবনে আওফ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের সম্পর্কে দরিদ্রতার ভয় করি না; কিন্তু আমি ভয় করি যে, তোমাদের উপর দুনিয়াকে প্রশস্ত করিয়া দেওয়া হইবে যেমনি প্রশস্ত করা হইয়াছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। আর তোমরা উহা লাভ করার জন্য ঐরূপ প্রতিযোগিতা করিবে যেরূপ তাহারা প্রতিযোগিতা করিয়াছিল। ফলে উহা তোমাদিগকে ধ্বংস করিবে যেরূপ তাহাদিগকে ধ্বংস করিয়াছিল। --মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬৪। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বলিয়া দো'আ করিয়াছেন: হে আল্লাহ্ । তুমি মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিবার-পরিজনকে জীবিকা নির্বাহ পরিমাণ রিযক দান কর। অপর এক বর্ণনায় আছে, প্রয়োজন পরিমাণ। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬৫। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন সে ব্যক্তিই সফলকাম হইয়াছে, যে ইসলাম গ্রহণ করিল এবং তাহাকে প্রয়োজনমাফিক রিযক প্রদান করা হইল এবং আল্লাহ্ তাহাকে যাহা দিয়াছেন তাহাতে সন্তুষ্ট রাখিয়াছেন। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬৬। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: বান্দা আমার মাল, আমার সম্পদ বলে (তথা গর্ব করে), প্রকৃতপক্ষে তাহার মাল হইতে তাহার (উপকারে আসে) মাত্র তিনটি। যাহা খাইয়া সে শেষ করিয়া দিয়াছে বা পরিধান করিয়া ছিড়িয়া ফেলিয়াছে অথবা দান করিয়া (পরকালের জন্য) সংরক্ষণ করিয়াছে। এতদ্ভিন্ন যাহা আছে তাহা তাহার কাজে আসিবে না এবং সে লোকদের (ওয়ারিসদের) জন্য ছাড়িয়া চলিয়া যাইবে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬৭। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : তিনটি জিনিস মৃত লাশের সঙ্গে যায়। দুইটি ফিরিয়া আসে এবং একটি তাহার সঙ্গে থাকিয়া যায়। তাহার সঙ্গে গমন করে আত্মীয়-স্বজন, কিছু মাল-সম্পদ এবং তাহার আমল। পরে জ্ঞাতি-গোষ্ঠী ও মাল-সম্পদ ফিরিয়া আসে এবং থাকিয়া যায় তাহার আমল। – মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬৮। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করিলেন: তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে নিজের মাল অপেক্ষা আপন উত্তরাধিকারীদের সম্পদকে অধিক ভালবাসে ? তাহারা বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ । আমাদের মধ্যে এমন কেহই নাই; বরং ওয়ারিসের সম্পদ অপেক্ষা নিজের নিজের সম্পদকেই বেশী ভালবাসে। তিনি বলিলেনঃ যে (আল্লাহর পথে খরচ করিয়া) যাহা অগ্রিম পাঠায় উহাই তাহার সম্পদ। আর যাহা সে পিছনে রাখিয়া যায় উহা তাহার ওয়ারিসের সম্পদ। -বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৬৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৬৯। মুতাররিফ তাহার পিতা (আব্দুল্লাহ্ ইবন শিখীর [রাঃ] ) হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেন, একদা আমি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে আসিলাম, এই সময় তিনি সূরা أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ (অর্থ: ধনের প্রাচুর্য তোমাদিগকে গাফেল করিয়া রাখিয়াছে) পাঠ করিতেছিলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন: আদম সন্তান বলে- 'আমার মাল, আমার মাল রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: হে আদম সন্তান। তোমার মাল তো উহাই যাহা তুমি খাইয়া শেষ করিয়া ফেলিয়াছ অথবা পরিধান করিয়া ছিঁড়িয়া ফেলিয়াছ অথবা দান সদকা করিয়া (আখেরাতের জন্য) সঞ্চয় করিয়াছ। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৭০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৭০। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ ধনী হওয়া সম্পদের প্রাচুর্যের নাম নহে; বরং প্রকৃত সম্পদশালী সে-ই, যাহার অন্তর সম্পদশালী। —মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৭১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৭১। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ কে এই কয়েকটি বাক্য (বিধান) আমার নিকট হইতে গ্রহণ করিবে ? অতঃপর নিজে সেইমত আমল করিবে অথবা এমন ব্যক্তিকে শিখাইয়া দিবে, যে উহার প্রতি আমল করে। আমি বলিলাম, আমি প্রস্তুত আছি ইয়া রাসূলাল্লাহ্। ইহার পর তিনি আমার হাত ধরিলেন এবং পাঁচটি গণনা করাইলেন। তিনি বলিলেনঃ (১) আল্লাহ্ যাহা হারাম করিয়াছেন তাহা হইতে বাঁচিয়া থাক ইহাতে তুমি হইবে উত্তম এবাদতকারী। (২) আল্লাহ্ তোমার কিসমতে যাহা বন্টন করিয়াছেন তাহাতেই সন্তুষ্ট থাকিবে, ইহাতে তুমি হইবে সর্বাপেক্ষা ধনবান। (৩) তোমার প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার করিবে, ইহাতে তুমি হইবে পূর্ণ ঈমানদার। (৪) নিজের জন্য যাহা পছন্দ কর মানুষের জন্যও তাহা পছন্দ করিবে, তখন তুমি হইবে পূর্ণ মুসলমান। এবং (৫) অধিক হাসিবে না। কেননা, অধিক হাসি অন্তরকে মারিয়া ফেলে। —আহমদ ও তিরমিযী। এবং তিনি বলিয়াছেন হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৭২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৭২। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে আদম সন্তান! আমার এবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করিয়া লও। আমি তোমার অন্তরকে অভাব-মুক্তি দ্বারা পরিপূর্ণ করিয়া দিব এবং তোমার দরিদ্রতার পথ বন্ধ করিয়া দিব। আর যদি তাহা না কর, তবে আমি তোমার হাতকে (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করিয়া দিব এবং তোমার অভাব মিটাইব না। —আহমদ ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫১৭৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৭৩। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট এমন এক ব্যক্তির আলোচনা করা হইল, যে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগীতে খুব চেষ্টা করে (কিন্তু গুনাহ্ হইতে বাঁচিয়া থাকার প্রতি তেমন লক্ষ্য রাখে না) এবং এমন আরেক ব্যক্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হইল (যে এবাদত-বন্দেগী কম করে) কিন্তু সে পরহেযগারী অবলম্বন করে (অর্থাৎ, গুনাহ্ হইতে বাঁচিয়া চলে), তখন নবী (ﷺ) বলিলেনঃ উহা (অর্থাৎ, এবাদত করা এবং এবাদতে সচেষ্ট থাকা) পরহেযগারীব সমতুল্য হইতে পারিবে না। —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান