মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১২- ক্রয় - বিক্রয়ের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৭ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ২৯০৭

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯০৭। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতেই বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : সক্ষম ব্যক্তির জন্য (অন্যের প্রাপ্য পরিশোধে) টাল বাহানা করা অন্যায়। তোমাদের কাহারও প্রাপ্য পরিশোধে ঋণী ব্যক্তি অপর সক্ষম ব্যক্তির উপর দায়িত্ব দিলে তাহা অনুমোদন করা কর্তব্য। —মোত্তা

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৯০৮

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯০৮। হযরত কা'ব ইবনে মালেক (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমলে একদা মসজিদের মধ্যে ইবনে আবী হাদরাদ (রাঃ) নামীয় ব্যক্তির নিকট স্বীয় প্রাপ্য ঋণের তাগাদা করিলেন। উভয়ের কথাবার্তায় উচ্চ আওয়ায সৃষ্টি হইল; রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ গৃহে ছিলেন; তিনি তাহাদের উচ্চ আওয়ায শুনিয়া বাহিরের দিকে আসিলেন এবং দরওয়াজার পর্দা উঠাইয়া হে কা'ব বলিয়া ডাকিলেন। কা'ব (রাঃ) 'উপস্থিত আছি ইয়া রাসূলাল্লাহ্' বলিয়া ছুটিয়া আসিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) হাতের ইশারায় তাহাকে তাহার প্রাপ্য ঋণের অর্ধভাগ ক্ষমা করিয়া দিতে বলিলেন। কা'ব (রাঃ) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমি তাহাই করিয়া দিলাম। তখন রাসুলুল্লাহ্ (ছাঃ) ঋণী ব্যক্তিকে বলিলেন, যাও, অবশিষ্ট ঋণ পরিশোধ করিয়া দাও। –মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৯০৯

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯০৯। হযরত সালামা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) বলেন, একদা আমরা নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসা ছিলাম, এমতাবস্থায় একটি জানাযা উপস্থিত করা হইল। লোকেরা নবী করীম (ছাঃ)-কে জানাযার নামায পড়াইবার অনুরোধ জ্ঞাপন করিল। নবী করীম (ছাঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন, মৃত ব্যক্তির উপর ঋণ আছে কি ? তাহারা বলিল, না। নবী করীম (ছাঃ) ঐ জানাযার নামায পড়াইয়া দিলেন। অতঃপর আর একটি জানাযা উপস্থিত করা হইল। উহা সম্পর্কেও নবী করীম (ছাঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন, তাহার উপর ঋণ আছে কি? বলা হইল, হ্যাঁ—আছে। জিজ্ঞাসা করিলেন, (ঋণ পরিশোধের) কোন বস্তু রাখিয়া গিয়াছে কি? লোকেরা বলিল, হা—তিনটি স্বর্ণ-মুদ্রা রাখিয়া গিয়াছে। নবী করীম (ছাঃ) তাহার জানাযার নামাযও পড়াইয়া দিলেন। অতঃপর তৃতীয় আর একটি জানাযা উপস্থিত করা হইল। উহা সম্পর্কেও নবী করীম (ছাঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন, তাহার উপর ঋণ আছে কি? লোকগণ বলিল, তিনটি স্বর্ণ-মুদ্রা তাহার উপর ঋণ আছে। নবী করীম (ছাঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন, (ঋণ পরিশোধের) কিছু রাখিয়া গিয়াছে কি? লোকেরা বলিল, না। তখন নবী করীম (ছাঃ) বলিলেন, তোমরাই তোমাদের সাথীর জানাযার নামায পড়িয়া নাও। (অর্থাৎ, নবী করীম [ছাঃ] ঋণের দরুন ঐ ব্যক্তির জানাযার নামায পড়িতে সম্মত হইলেন না।) সাহাবী আবু কাতাদা (রাঃ) বলিলেন, ইহার জানাযার নামায পড়াইয়া দিন ইয়া রাসূলাল্লাহ্ । তাহার ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব আমি গ্রহণ করিলাম। তখন নবী করীম (ছাঃ) তাহার জানাযার নামায পড়াইয়া দিলেন। -বোখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৯১০

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১০। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : যে ব্যক্তি অপর লোকের মাল (ঋণরূপে) গ্রহণ করে উহা পরিশোধ করার নিয়তের সহিত, আল্লাহ্ তা'আলা তাহার ঋণ পরিশোধ করায় সাহায্য করিবেন। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি উহা গ্রহণ করে ঋণদাতার মাল হালাক (নষ্ট ও আত্মসাৎ করার নিয়তে, আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে হালাক করিবেন। -বোখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৯১১

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১১। হযরত আবু কাতাদা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। বলুন ত—যদি আমি আল্লাহর পথে শহীদ হই দৃঢ় পদ থাকিয়া, সওয়াব লাভের উদ্দেশ্য করিয়া, সম্মুখপানে অগ্রগামী থাকিয়া — পশ্চাদপদ না হইয়া, তবে আল্লাহ্ আমার সমস্ত - গোনাহ্ মাফ করিয়া দিবেন কি? রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, হ্যাঁ। অতঃপর ঐ ব্যক্তি চলিয়া যাইতে লাগিলে পিছন হইতে রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) তাহাকে ডাকিয়া বলিলেন, কিন্তু ঋণ মাফ হইবে না। জিবরাঈল (আঃ) আসিয়া এই কথাই বলিয়া গেলেন। -মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৯১২

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১২। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: শহীদের সমস্ত গোনাহ্ই মাফ করা হয়—ঋণ ব্যতীত। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৯১৩

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১৩। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জানাযা উপস্থিত করা হইলে তিনি জিজ্ঞাসা করিতেন, ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা রাখিয়া গিয়াছে কি? যদি বলা হইত যে, ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা রাখিয়া গিয়াছে, তবে তিনি তাহার জানাযার নামায পড়িতেন। অন্যথায় (নিজে ঐ জানাযার নামাযে শরীক না হইয়া) মুসলমানগণকে বলিয়া দিতেন, তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযার নামায পড়িয়া নেও।
অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা যখন তাঁহাকে বিভিন্ন জেহাদে বিজয় দান করিলেন (এবং তিনি গনীমত তথা যুদ্ধলব্ধ মাল-সম্পদের দ্বারা বাইতুল মাল সরকারী ধন-ভাণ্ডার প্রতিষ্ঠা করিলেন,) তখন (উহার সর্বপ্রথম ব্যয়-বরাদ্দের বলিষ্ঠ ঘোষণা প্রদানে) বলিলেন, আমি মু'মিনদের জন্য তাহাদের নিজ অপেক্ষা অধিক মঙ্গলকামী। সেমতে মু'মিনদের মধ্য হইতে যে কেহ ঋণ রাখিয়া দুনিয়া ত্যাগ করিবে, ঐ ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব (বাইতুল মালের পক্ষে) আমার (তথা রাষ্ট্র প্রধানের) উপর ন্যস্ত থাকিবে। পক্ষান্তরে মৃত ব্যক্তির ধন-সম্পদ থাকিলে (উহার উপর বাইতুল মালের দাবী আসিবে না, বরং ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট থাকিলে) তাহা তাহার ওয়ারিসগণ পাইবে। —মোত্তাঃ
অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা যখন তাঁহাকে বিভিন্ন জেহাদে বিজয় দান করিলেন (এবং তিনি গনীমত তথা যুদ্ধলব্ধ মাল-সম্পদের দ্বারা বাইতুল মাল সরকারী ধন-ভাণ্ডার প্রতিষ্ঠা করিলেন,) তখন (উহার সর্বপ্রথম ব্যয়-বরাদ্দের বলিষ্ঠ ঘোষণা প্রদানে) বলিলেন, আমি মু'মিনদের জন্য তাহাদের নিজ অপেক্ষা অধিক মঙ্গলকামী। সেমতে মু'মিনদের মধ্য হইতে যে কেহ ঋণ রাখিয়া দুনিয়া ত্যাগ করিবে, ঐ ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব (বাইতুল মালের পক্ষে) আমার (তথা রাষ্ট্র প্রধানের) উপর ন্যস্ত থাকিবে। পক্ষান্তরে মৃত ব্যক্তির ধন-সম্পদ থাকিলে (উহার উপর বাইতুল মালের দাবী আসিবে না, বরং ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট থাকিলে) তাহা তাহার ওয়ারিসগণ পাইবে। —মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান