মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১২- ক্রয় - বিক্রয়ের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১১ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ২৮১২

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১২। হযরত ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন স্বর্ণের বিনিময় স্বর্ণের সহিত যদি উভয়পক্ষ হইতে নগদ লেনদেন না হয়, তবে উহা সুদী বিনিময় হইবে। রূপার বিনিময় রূপার সহিত যদি উভয়পক্ষ হইতে নগদ লেনদেন না হয়, তবে উহা সুদী লেনদেন হইবে। গমের বিনিময় গমের সহিত যদি উভয়পক্ষ হইতে নগদ লেনদেন না হয়, তবে উহা সুদী লেনদেন হইবে। যবের বিনিময় যবের সহিত যদি উভয়পক্ষ হইতে নগদ লেনদেন না হয়, তবে উহা সুদী লেনদেন হইবে। খুর্মার বিনিময় খুর্মার সহিত যদি উভয়পক্ষ হইতে নগদ লেনদেন না হয়, তবে উহা সুদী লেনদেন হইবে। — মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮১৩

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৩। হযরত আবু সায়ীদ (রাঃ) এবং হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে 'খায়বর' এলাকায় চাকরি দিলেন। ঐ ব্যক্তি তথা হইতে খুব ভাল খুর্মা নিয়া আসিল। রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) উহা দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, খায়বরের সব খুর্মাই কি এইরূপ উত্তম হয়? ঐ ব্যক্তি বলিল, না— ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমরা এইরূপ এক ছা' (প্রায় চার সেরী ধামা) খুর্মা (খারাপ) দুই ছা' খুর্মার বিনিময়ে গ্রহণ করিয়া থাকি। কিম্বা ভাল দুই ছা' খারাব তিন ছা'-এর বিনিময়ে গ্রহণ করিয়া থাকি।
রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন, এইরূপ বিনিময় করিও না; বরং খারাব খুর্মা (দুই ছা' বা তিন ছা") মুদ্রার বিনিময়ে বিক্রি কর। অতঃপর ঐ মুদ্রা দ্বারা ভাল খুর্মা ক্রয় কর। রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) ইহাও বলিলেন—বাটখারায় ওজন করা বস্তুনিচয় সম্পর্কেও এই বিধানই (যে, এক জাতীয় বস্তুদ্বয়ে বিনিময় হইলে বস্তুদ্বয়ে ভাল-মন্দের বিরাট ব্যবধান থাকিলেও ঐ বস্তুদ্বয়ের সরাসরি বিনিময়ে বেশী কমী করা যাইবে না করিলে তাহা সুদী লেনদেনে গণ্য হইয়া হারাম হইবে। ভাল-মন্দের পার্থক্য করিতে হইলে ঐ বস্তুদ্বয়ে সরাসরি বিনিময় না করিয়া উপরোল্লিখিত নিয়মে মুদ্রার দ্বারা ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে বিনিময় করিবে—তাহাতে ভাল-মন্দের ব্যবধানও হইবে এবং জায়েযও হইবে)। — মোত্তাঃ
রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন, এইরূপ বিনিময় করিও না; বরং খারাব খুর্মা (দুই ছা' বা তিন ছা") মুদ্রার বিনিময়ে বিক্রি কর। অতঃপর ঐ মুদ্রা দ্বারা ভাল খুর্মা ক্রয় কর। রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) ইহাও বলিলেন—বাটখারায় ওজন করা বস্তুনিচয় সম্পর্কেও এই বিধানই (যে, এক জাতীয় বস্তুদ্বয়ে বিনিময় হইলে বস্তুদ্বয়ে ভাল-মন্দের বিরাট ব্যবধান থাকিলেও ঐ বস্তুদ্বয়ের সরাসরি বিনিময়ে বেশী কমী করা যাইবে না করিলে তাহা সুদী লেনদেনে গণ্য হইয়া হারাম হইবে। ভাল-মন্দের পার্থক্য করিতে হইলে ঐ বস্তুদ্বয়ে সরাসরি বিনিময় না করিয়া উপরোল্লিখিত নিয়মে মুদ্রার দ্বারা ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে বিনিময় করিবে—তাহাতে ভাল-মন্দের ব্যবধানও হইবে এবং জায়েযও হইবে)। — মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮১৪

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৪। হযরত আবু সায়ীদ (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, একদা বেলাল (রাঃ) নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট 'বনী' (এক প্রকার) খুর্মা নিয়া আসিলেন। নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, এই প্রকার খুর্মা কোথা হইতে পাইলে? তিনি বলিলেন, আমার নিকট খারাব খুর্মা ছিল। আমি উহার দুই ছা' (প্রায় আট সের) এই খুর্মা এক ছা' (প্রায় চার সের )- এর বিনিময়ে বিক্রি করিয়াছি।
এতশ্রবণে নবী করীম (ছাঃ) বলিলেন : ওহ্। ইহা তো প্রকৃত সুদী লেনদেন হইয়াছে। ওহ্! ইহা তো সুদী লেনদেন হইয়াছে। এইরূপ করিও না; বরং তুমি ইহা (তথা মন্দ খুর্মা পরিমাণে বেশী দিয়া কম পরিমাণে উত্তম খুর্মা লাভ করিতে চাহিলে (মুদ্রার বিনিময়ে) মন্দ খুর্মা ভিন্নভাবে বিক্রয় করিবে, অতঃপর (সেই মুদ্রায়) উত্তম খুর্মা ক্রয় করিবে। —মোত্তাঃ
এতশ্রবণে নবী করীম (ছাঃ) বলিলেন : ওহ্। ইহা তো প্রকৃত সুদী লেনদেন হইয়াছে। ওহ্! ইহা তো সুদী লেনদেন হইয়াছে। এইরূপ করিও না; বরং তুমি ইহা (তথা মন্দ খুর্মা পরিমাণে বেশী দিয়া কম পরিমাণে উত্তম খুর্মা লাভ করিতে চাহিলে (মুদ্রার বিনিময়ে) মন্দ খুর্মা ভিন্নভাবে বিক্রয় করিবে, অতঃপর (সেই মুদ্রায়) উত্তম খুর্মা ক্রয় করিবে। —মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮১৫

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৫। হযরত জাবের (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, একজন ক্রীতদাস (কোন এলাকা হইতে মদীনায় পৌঁছিল এবং সে (নবীজীর সাহচর্যে থাকিবার উদ্দেশ্যে) হিজরত করিয়া সর্বদার জন্য মদীনায় অবস্থান অবলম্বন করিবে—এই অঙ্গীকারের উপর নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হস্তে দীক্ষা গ্রহণ করিল। তাহার ক্রীতদাস হওয়া নবীজীর নিকট প্রকাশ পায় নাই । [নতুবা মনিবের কাজ ছাড়িয়া মদীনায় অবস্থান করার দীক্ষা গ্রহণ নবী করীম (ছাঃ) মঞ্জুর করিতেন না।]
ইতিমধ্যেই ঐ ক্রীতদাসের মনিব নবীজীর নিকট উপস্থিত হইল এবং তাহাকে নিয়া যাওয়ার ইচ্ছা করিল। [মদীনায় অবস্থান করার দীক্ষা যেহেতু নবী করীম (ছাঃ) মঞ্জুর করিয়াছিলেন, তাই তিনি উহা রক্ষা করার চেষ্টা করিলেন।] নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মনিবকে অনুরোধ করিলেন, ক্রীতদাসটি আমার নিকট বিক্রি করিয়া ফেল। সেমতে তিনি উহাকে দুইটি হাবশী ক্রীতদাসের বিনিময়ে ক্রয় করিয়া নিলেন। (এইভাবে তাহার মদীনায় অবস্থানের ব্যবস্থা করিয়া মঞ্জুরকৃত দীক্ষা রক্ষা করিলেন। ইহা নবীজীর অমায়িকতার একটি দৃষ্টান্ত।)
এই ঘটনার পর নবী করীম (ছাঃ) কাহারও ঐরূপ দীক্ষা মঞ্জুর করিতেন না; যাবৎ না তাহাকে জিজ্ঞাসা করিয়া লইতেন — সে ক্রীতদাস না মুক্ত। —মুসলিম
ইতিমধ্যেই ঐ ক্রীতদাসের মনিব নবীজীর নিকট উপস্থিত হইল এবং তাহাকে নিয়া যাওয়ার ইচ্ছা করিল। [মদীনায় অবস্থান করার দীক্ষা যেহেতু নবী করীম (ছাঃ) মঞ্জুর করিয়াছিলেন, তাই তিনি উহা রক্ষা করার চেষ্টা করিলেন।] নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মনিবকে অনুরোধ করিলেন, ক্রীতদাসটি আমার নিকট বিক্রি করিয়া ফেল। সেমতে তিনি উহাকে দুইটি হাবশী ক্রীতদাসের বিনিময়ে ক্রয় করিয়া নিলেন। (এইভাবে তাহার মদীনায় অবস্থানের ব্যবস্থা করিয়া মঞ্জুরকৃত দীক্ষা রক্ষা করিলেন। ইহা নবীজীর অমায়িকতার একটি দৃষ্টান্ত।)
এই ঘটনার পর নবী করীম (ছাঃ) কাহারও ঐরূপ দীক্ষা মঞ্জুর করিতেন না; যাবৎ না তাহাকে জিজ্ঞাসা করিয়া লইতেন — সে ক্রীতদাস না মুক্ত। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮১৬

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৬। হযরত জাবের (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এইরূপ বিনিময় নিষেধ করিয়াছেন যে, একদিকে খুর্মার একটি স্তূপ যাহা ধামা দ্বারা (সঠিকরূপে) পরিমাণ করা হয় নাই; অপর দিকেও খুর্মা (যদিও উহা) নির্দিষ্ট পরিমিত। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮১৭

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৭। হযরত ফাযালা ইবনে আবু ওবায়দ (রাঃ) বলেন, আমি খায়বর বিজয়ের সময়ে একটি মালা ক্রয় করিলাম বার দীনার (স্বর্ণমুদ্রা)-এর বিনিময়ে; ঐ মালায় স্বর্ণ-দানাও ছিল এবং পুঁতিও ছিল। আমি স্বর্ণদানাগুলি ভিন্ন করিয়া দেখিলাম, উহা বার দীনারের পরিমাণ হইতে অধিক। আমি ঐ ক্রয় সম্পর্কে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করিলাম। তিনি বলিলেন: এইরূপ ক্ষেত্রে ভিন্নভাবে স্বর্ণকে লক্ষ্য করা ব্যতিরেকে ক্রয়-বিক্রয় জায়েয নহে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮১৮

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৮। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ লোকদের উপর এমন যুগ আসিবে যখন (সুদী কারবার ব্যাপক হইয়া পড়িবে, এমন কি) একটি লোকও সুদের ব্যবহার হইতে অব্যাহতি পাইবে না। সে সরাসরি না খাইলেও সুদের ধোঁয়া বা ধুলা তাহাকে স্পর্শ করিবে। —আহমদ, আবু দাউদ, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮১৯

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮১৯। হযরত ওবাদা ইবনে সামেত (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ, রৌপ্যের বিনিময়ে রৌপ্য, গমের বিনিময়ে গম, যবের বিনিময়ে যব, খুর্মার বিনিময়ে খুর্মা, নিমকের বিনিময়ে নিমক বিক্রি করিও না—যাবৎ না উভয় দিকের বস্তু সমপরিমাণের হয়, উভয় দিক হইতে নগদ লেনদেন হয় এবং উপস্থিত মজলিসে হস্তগত হয়। — হ্যাঁ, রূপার বিনিময়ে স্বর্ণ, স্বর্ণের বিনিময়ে রূপা, যবের বিনিময়ে গম, গমের বিনিময়ে যব, নিমকের বিনিময়ে খুর্মা, খুর্মার বিনিময়ে নিমক উভয়পক্ষ হইতে উপস্থিত আদান-প্রদানে (পরিমাণে ) যেরূপ ইচ্ছা বিক্রি করিতে পার। —শাফেয়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮২০

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮২০। হযরত সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, আমি (নিজ কানে) শুনিয়াছি, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করা হইল—পাকা খেজুরের বিনিময়ে খুর্মা ক্রয় করা সম্পর্কে। তিনি বলিলেন, পাকা খেজুর শুকাইলে নিশ্চয় ঘাটতি হয় । জিজ্ঞাসাকারী বলিল, হ্যাঁ। সেমতে তিনি ঐরূপ ক্রয় করিতে নিষেধ করিলেন। —মালেক, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮২১

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮২১। তাবেয়ী সায়ীদ ইবনে মুসাইয়্যাব (রঃ) হইতে মুরসালরূপে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নিষেধ করিয়াছেন— জীবের বিনিময়ে গোশত বিক্রি করিতে।
তাবেয়ী সায়ীদ (রঃ) বলিয়াছেন, অন্ধকার যুগে এক প্রকার জুয়ার প্রচলন ছিল; উহাতে ঐরূপ ক্রয়-বিক্রয় হইত। —শরহে সুন্নাহ্
তাবেয়ী সায়ীদ (রঃ) বলিয়াছেন, অন্ধকার যুগে এক প্রকার জুয়ার প্রচলন ছিল; উহাতে ঐরূপ ক্রয়-বিক্রয় হইত। —শরহে সুন্নাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৮২২

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সুদ
২৮২২। হযরত সামুরা ইবনে জুন্দুব (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, নবী করীম (ﷺ) নিষেধ করিয়াছেন——জীবের বিনিময়ে জীব ধারে বিক্রি করিতে । —তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান