মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৪- পাক-পবিত্রতার অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ২৯৭
- পাক-পবিত্রতার অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
২৯৭। হযরত আব্দুল্লাহ ছুনাবেহী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, কোন মু'মিন বান্দা অজু করার সময়ে কুলি করলে তার মুখ হতে গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। নাক ঝাড়লে তার নাক হতে গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। অতঃপর মুখমণ্ডল ধৌত করলে মুখমণ্ডল হতে গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। এমনকি তার দুই চক্ষুর পাতার নীচ হতেও গুনাহ বের হয়ে যায়। তারপর যখন সে তার দুই হাত ধৌত করে তখন তার দুইহাত হতে গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। এমনকি তার দুই হাতের নখসমূহের নীচ হতেও গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। তারপর যখন সে তার মস্তক মাসেহ করে তখন তার মস্তক হতে গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। এমনকি তার দুই কান হতেও তা বের হয়ে যায়। অবশেষে যখন সে তার দুই পা ধৌত করে তখন তার দুই পা হতে গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। এমনকি তার দুই পায়ের নখসমূহের নীচ হতেও গুনাহ বের হয়ে যায়। অতঃপর তার মসজিদে গমন এবং নামায (আদায়) হয় তার জন্য অতিরিক্ত (ছওয়াবের কারণ)। -মালেক, নাসায়ী
كتاب الطهارة
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
عَن عبد الله الصنَابحِي قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: «إِذَا تَوَضَّأَ الْعَبْدُ الْمُؤْمِنُ فَمَضْمَضَ خَرَجَتِ الْخَطَايَا مِنْ فِيهِ وَإِذَا اسْتَنْثَرَ خَرَجَتِ الْخَطَايَا مِنْ أَنفه فَإِذَا غَسَلَ وَجْهَهُ خَرَجَتِ الْخَطَايَا مِنْ وَجْهِهِ حَتَّى تَخْرُجَ مِنْ تَحْتِ أَشْفَارِ عَيْنَيْهِ فَإِذَا غسل يَدَيْهِ خرجت الْخَطَايَا مِنْ تَحْتِ أَظْفَارِ يَدَيْهِ فَإِذَا مَسَحَ بِرَأْسِهِ خَرَجَتِ الْخَطَايَا مِنْ رَأْسِهِ حَتَّى تَخْرُجَ مِنْ أُذُنَيْهِ فَإِذَا غَسَلَ رِجْلَيْهِ خَرَجَتِ الْخَطَايَا مِنْ رِجْلَيْهِ حَتَّى تَخْرُجَ مِنْ تَحْتِ أَظْفَارِ رِجْلَيْهِ ثُمَّ كَانَ مَشْيُهُ إِلَى الْمَسْجِدِ وَصَلَاتُهُ نَافِلَةً لَهُ» . رَوَاهُ مَالك وَالنَّسَائِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২৯৮
- পাক-পবিত্রতার অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
২৯৮। হযরত আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলে পাক (ﷺ) (জান্নাতুল বাকী নামক) কবরস্থানে গেলেন এবং বললেন*, আসসালামু আলাইকুম দারা ক্বাওমিম মু'মিনীন ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুন। অর্থাৎ তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হউক হে মু'মিন অধিবাসীগণ! আমরাও আল্লাহর মর্জি তোমাদের সাথে এসে মিলিত হচ্ছি। আমার আকাঙ্ক্ষা আমরা যেন আমাদের ভাইদেরকে দেখতে পাই। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কি আপনার ভাই নই? তিনি বললেন, তোমরা আমার সঙ্গী সহচর। আমার ভাই তারাই যারা এখনও দুনিয়ায় আসে নি। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কিভাবে আপনার উম্মতের এইরূপ লোকদেরকে চিনবেন, যারা এখনও (দুনিয়ায়) আগমন করে নাই? তিনি বললেন, বলতো যদি কারো একেবারে কালো এক রংয়ের ঘোড়াসমূহের মধ্যে কতকগুলি ধবধবে সাদা ললাট ও সাদা হাত পা বিশিষ্ট ঘোড়া থাকে, সে কি তার ঘোড়াসমূহ চিনতে পারে না? তারা বললেন, হ্যাঁ নিশ্চয়ই পারে ইয়া রাসূলাল্লাহ! তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তারাও অজুর কারণে ধবধবে সাদা ললাট ও সাদা হাত-পা অবস্থায় উপস্থিত হবে এবং আমি হাউজে কাওছারের নিকট তাদের অগ্রবর্তী হিসাবে উপস্থিত থাকব। -মুসলিম

* উপরোক্ত হাদীস দ্বারা বুঝা যায় নবী করীম (ﷺ) কবরস্থানে এসে মৃতদেরকে সালাম দিয়েছেন। অথচ তারা মৃত এবং কিছুই শুনতে পায় না। কুরআন মজীদেও বলা হয়েছেঃ
إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ ٱلْمَوْتَىٰ অর্থাৎ নিশ্চয়ই তুমি মৃত ব্যক্তিদের কিছুই শুনতে পারবে না। হাদীস ও কুরআনের মধ্যে বিরোধ দেখা যাচ্ছে। এর সমাধান কল্পে হাদীস বিশারদগণ নিম্নোক্ত মতামত পেশ করেছেনঃ
১. কুরআন মজীদের ভাষাটি রূপকভাবে কাফিরদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অর্থাৎ কাফিরদেরকে আপনি দ্বীনের কথা শুনাতে পারবেন না। কারণ, তারা মৃতদের ন্যায়।
২. এক হাদীসে পাওয়া যায়, সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তারা (মৃতগণ) কি শুনতে পায়? হুজুর (ﷺ) বললেন, তোমাদের ন্যায় তারাও শুনতে পায়, কিন্তু জবাব দিতে পারে না।
كتاب الطهارة
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم أَتَى الْمَقْبَرَةَ فَقَالَ: «السَّلَامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لَاحِقُونَ وَدِدْتُ أَنَّا قَدْ رَأَيْنَا إِخْوَانَنَا قَالُوا أَوَلَسْنَا إِخْوَانَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ أَنْتُمْ أَصْحَابِي وَإِخْوَانُنَا الَّذِينَ لَمْ يَأْتُوا بَعْدُ فَقَالُوا كَيْفَ تَعْرِفُ مَنْ لَمْ يَأْتِ بَعْدُ مِنْ أُمَّتِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ رَجُلًا لَهُ خَيْلٌ غُرٌّ مُحَجَّلَةٌ بَيْنَ ظَهْرَيْ خَيْلٍ دُهْمٍ بُهْمٍ أَلَا يَعْرِفُ خَيْلَهُ قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ فَإِنَّهُمْ يَأْتُونَ غُرًّا مُحَجَّلِينَ مِنَ الْوُضُوءِ وَأَنَا فَرَطُهُمْ عَلَى الْحَوْض» . رَوَاهُ مُسلم
হাদীস নং: ২৯৯
- পাক-পবিত্রতার অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
২৯৯। হযরত আবু দারদা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, আমিই প্রথম ব্যক্তি, যাকে রোজ কিয়ামতে সিজদাহ করার অনুমতি দেয়া হবে এবং আমিই প্রথম ব্যক্তি যাকে সিজদাহ হতে মস্তক তোলার জন্য অনুমতি দেয়া হবে। তারপর আমি আমার সামনে দৃষ্টিপাত করব এবং সমস্ত উম্মতের মধ্য হতে আমার উম্মতকে চিনে নেব। অতঃপর আমার পিছনেও সেরূপ; ডানেও সেরূপ এবং বামেও সেরূপ (চিনে নেব)। একব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কিভাবে নূহ হতে আপনার উম্মত পর্যন্ত এত উম্মতের মধ্যে আপনার উম্মতকে চিনতে পারবেন? রাসূলে পাক (ﷺ) বললেন, আমার উম্মতের অজুর চিহ্নস্বরূপ ধবধবে সাদা ললাট এবং ধবধবে হাত পা বিশিষ্ট হবে। আর কেউ এরূপ হবে না। এছাড়া আমি তাদেরকে এভাবেও চিনব যে, তারা তাদের আমলনামা ডান হাতে পাবে। তাছাড়া তাদেরকে আমি এভাবেও চিনব যে, তাদের সন্তান-সন্ততিগণ তাদের সামনে ছুটাছুটি করবে। -আহমদ
كتاب الطهارة
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
عَن أبي الدَّرْدَاء قَالَ: قَالَ رَسُولُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (أَنَا أَوَّلُ مَنْ يُؤْذَنُ لَهُ بِالسُّجُودِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ يُؤْذَنُ لَهُ أَنْ يرفع رَأسه فَأنْظر إِلَى بَيْنَ يَدِي فَأَعْرِفُ أُمَّتِي مِنْ بَيْنِ الْأُمَمِ وَمِنْ خَلْفِي مِثْلُ ذَلِكَ وَعَنْ يَمِينِي مِثْلُ ذَلِك وَعَن شمَالي مثل ذَلِك . فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ تَعْرِفُ أُمَّتَكَ مِنْ بَيْنِ الْأُمَمِ فِيمَا بَيْنَ نُوحٍ إِلَى أُمَّتِكَ؟ قَالَ: «هُمْ غُرٌّ مُحَجَّلُونَ مِنْ أَثَرِ الْوُضُوءِ لَيْسَ أَحَدٌ كَذَلِكَ غَيْرَهُمْ وَأَعْرِفُهُمْ أَنَّهُمْ يُؤْتونَ كتبهمْ بأيمانهم وأعرفهم يسْعَى بَين أَيْديهم ذُرِّيتهمْ» . رَوَاهُ أَحْمد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৩০০
- পাক-পবিত্রতার অধ্যায়
১. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে কারণে উযূ করা ওয়াজিব হয়
৩০০। হযরত আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, তার নামায কবুল হয় না, যার অজু নষ্ট হয়েছে যে পর্যন্ত না সে অজু করে। - বুখারী, মুসলিম
كتاب الطهارة
بَابُ مَا يُوْجِبُ الْوَضُوْءَ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُقْبَلُ صَلَاةُ مَنْ أَحْدَثَ حَتَّى يتَوَضَّأ»