মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২- ঈমানের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৫ টি
হাদীস নং: ৯২
- ঈমানের অধ্যায়
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
৯২। হযরত আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, আল্লাহর হাত পরিপূর্ণ; রাত-দিনের দানের স্রোতধারা এতে ঘাটতি আনতে পারে না। তোমরা কি দেখ না, আসমান জমিন সৃষ্টির সূচনা থেকে কী পরিমাণ ব্যয় তিনি করেছেন, যা তাঁর হাতের মধ্যে কমতি আনতে পারে নি। তাঁর আরশ ছিল পানির উপর। তাঁর হাতে দাঁড়িপাল্লা, যা তিনি উঁচু-নীচু করেন। (বোখারী, মুসলিম) মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহর ডান হাত পরিপূর্ণ। হযরত ইবনে নুমাইর (রহ) বলেন, এমন পরিপূর্ণ, রাত দিনের স্রোতধারা যা এতটুকুও কমাতে পারে না।
كتاب الإيمان
بَابُ الْإِيْمَانِ بِالْقَدْرِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَدُ اللَّهِ مَلْأَى لَا تَغِيضُهَا نَفَقَةٌ سَحَّاءُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ أَرَأَيْتُمْ مَا أَنْفَقَ مُذْ خَلَقَ السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ؟ فَإِنَّهُ لَمْ يَغِضْ مَا فِي يَدِهِ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ وَبِيَدِهِ الْمِيزَانُ يَخْفِضُ وَيرْفَع» وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: «يَمِينُ اللَّهِ مَلْأَى قَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ مَلْآنُ سَحَّاءُ لَا يُغِيضُهَا شَيْءٌ اللَّيْل والنهار»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৩
- ঈমানের অধ্যায়
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
৯৩। হযরত আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে কাফির মুশরিকদের* শিশু সন্তানদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হল। (তাদের স্থান বেহেশতে না দোযখে হবে?) জবাবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, (বেঁচে থাকলে) কি আমল করত আল্লাহ পাকই তা ভাল জানেন? (বুখারী, মুসলিম)
* মুশরিক নাবালেগ সন্তানদের বিধানের ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে-
(১) কিছু সংখ্যক উলামায়ে কিরামের মতে, তারা পিতামাতার অনুসরণে জাহান্নামে যাবে। কেননা হযরত আয়েশা (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে এসেছে- ★★ অর্থাৎ আমি (আয়েশা রা) মুশরিকদের সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে রাসূল (ﷺ) বললেন, তারা তাদের পিতাসমূহের অনুগামী হবে।
(২) কেউ কেউ বলেন, তারা জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করবে।
(৩) ইমাম মালিক ও শাফেয়ী (রহ) এর মতে, কাফিরদের বাচ্চার ব্যাপারটি আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।
(৪) কারো কারো মতে, তারা জান্নাতে যাবে।
(৫) ইমাম আবু হানিফা (রহ) ও অধিকাংশ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত তাদের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি। সুতরাং নিশ্চিতভাবে কোন কিছু বলা যায় না। আল্লাহই তাদের ব্যাপারে ভালো জানেন।
* মুশরিক নাবালেগ সন্তানদের বিধানের ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে-
(১) কিছু সংখ্যক উলামায়ে কিরামের মতে, তারা পিতামাতার অনুসরণে জাহান্নামে যাবে। কেননা হযরত আয়েশা (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে এসেছে- ★★ অর্থাৎ আমি (আয়েশা রা) মুশরিকদের সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে রাসূল (ﷺ) বললেন, তারা তাদের পিতাসমূহের অনুগামী হবে।
(২) কেউ কেউ বলেন, তারা জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করবে।
(৩) ইমাম মালিক ও শাফেয়ী (রহ) এর মতে, কাফিরদের বাচ্চার ব্যাপারটি আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।
(৪) কারো কারো মতে, তারা জান্নাতে যাবে।
(৫) ইমাম আবু হানিফা (রহ) ও অধিকাংশ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত তাদের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি। সুতরাং নিশ্চিতভাবে কোন কিছু বলা যায় না। আল্লাহই তাদের ব্যাপারে ভালো জানেন।
كتاب الإيمان
بَابُ الْإِيْمَانِ بِالْقَدْرِ
وَعَنْهُ قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَرَّارِيِّ الْمُشْرِكِينَ قَالَ: «اللَّهُ أعلم بِمَا كَانُوا عاملين»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৪
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
৯৪। হযরত উবাদা ইবনস সামেত (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আল্লাহ্ পাক সর্বপ্রথম সৃষ্টি করেছেন কলম। অতঃপর কলমকে বললেন, লিখ। কলম বলল, কি লিখব? আল্লাহ্ বললেন, তাক্দীর লিখ। সুতরাং যা ছিল এবং যা হবে অনন্তকাল পর্যন্ত সবকিছু লিখে শেষ। ইমাম তিরমিযী বলেন, সনদের দিক দিয়ে হাদীসটি গরীব।
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَن عبَادَة بن الصَّامِت قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم يَقُول «إِنَّ أَوَّلَ مَا خَلَقَ اللَّهُ الْقَلَمُ فَقَالَ اكْتُبْ فَقَالَ مَا أَكْتُبُ قَالَ اكْتُبِ الْقَدَرَ مَا كَانَ وَمَا هُوَ كَائِنٌ إِلَى الْأَبَدِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِسْنَادًا
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৫
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
৯৫। হযরত মুসলিম বিন্ ইয়াসার (রাযিঃ) বলেন, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ)-কে এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল, إِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنۢ بَنِىٓ ءَادَمَ مِن ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ “যখন আপনার প্রভু বনি আদমের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাদের সন্তানদের বের করলেন" ....। হযরত উমর (রাযিঃ) জবাবে বললেন, আমি শুনলাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলো, তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ পাক হযরত আদম (আ)-কে সৃষ্টি করে নিজ ডান হাত তাঁর পৃষ্ঠে বুলান এবং তা থেকে বের করে নিলেন কিছু সন্তান এবং বললেন, এসবকে আমি বেহেশতের জন্য সৃষ্টি করেছি এবং তারা বেহেশতবাসীর আমলই করবে। তারপর আবারও তাঁর পৃষ্ঠে হাত বুলান এবং কিছু সন্তান বের করে আনলেন আর বললেন, এদের আমি দোযখের জন্য সৃষ্টি করেছি এবং তারা জাহান্নামীদের আমলই করবে। তখন এক ব্যক্তি বলল, তা হলে আমল কি জন্য হে আল্লাহর রাসূল! তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ কোন বান্দাকে যখন বেহেশতের জন্য সৃষ্টি করেন তখন তাকে দিয়ে বেহেশতবাসীদের আমল করান এবং বেহেশতবাসীদের আমল করতে করতে সে মৃত্যুবরণ করে, অতঃপর আল্লাহ তাকে বেহেশতে দাখিল করেন। আর যখন কোন বান্দাকে দোযখের জন্য সৃষ্টি করেন তখন তাকে দিয়ে দোযখবাসীদের কাজ করান এবং সে মৃত্যু পর্যন্ত দোযখবাসীদের কাজ করে, তখন আল্লাহ তাকে দোযখে দাখিল করেন। (মালেক, তিরমিযী, আবু দাউদ)
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَن مُسلم بن يسَار قَالَ سُئِلَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ هَذِهِ الْآيَةِ (إِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنۢ بَنِىٓ ءَادَمَ مِن ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ)
قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يسْأَل عَنْهَا فَقَالَ: «خلق آدم ثمَّ مسح ظَهره بِيَمِينِهِ فأاستخرج مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقَتُ هَؤُلَاءِ لِلْجَنَّةِ وَبِعَمَلِ أهل الْجنَّة يعْملُونَ ثمَّ مسح ظَهره فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقَتُ هَؤُلَاءِ لِلنَّارِ وبعمل أهل النَّار يعْملُونَ فَقَالَ رجل يَا رَسُول الله فَفِيمَ الْعَمَل يَا رَسُول الله قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ إِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ لِلْجَنَّةِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ من أَعمال أهل الْجنَّة فيدخله الله الْجَنَّةَ وَإِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ لِلنَّارِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ مِنْ أَعمال أهل النَّار فيدخله الله النَّار» . رَوَاهُ مَالك وَالتِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد
قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يسْأَل عَنْهَا فَقَالَ: «خلق آدم ثمَّ مسح ظَهره بِيَمِينِهِ فأاستخرج مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقَتُ هَؤُلَاءِ لِلْجَنَّةِ وَبِعَمَلِ أهل الْجنَّة يعْملُونَ ثمَّ مسح ظَهره فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً فَقَالَ خَلَقَتُ هَؤُلَاءِ لِلنَّارِ وبعمل أهل النَّار يعْملُونَ فَقَالَ رجل يَا رَسُول الله فَفِيمَ الْعَمَل يَا رَسُول الله قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ إِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ لِلْجَنَّةِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ من أَعمال أهل الْجنَّة فيدخله الله الْجَنَّةَ وَإِذَا خَلَقَ الْعَبْدَ لِلنَّارِ اسْتَعْمَلَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى يَمُوتَ عَلَى عَمَلٍ مِنْ أَعمال أهل النَّار فيدخله الله النَّار» . رَوَاهُ مَالك وَالتِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৬
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
৯৬। হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) বলেন, হুযুর (ﷺ) তাঁর হাতে দু'খানা কিতাব নিয়ে বের হলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি বলতে পার এ দু'টি কি কিতাব? আমরা বললাম, না, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তবে আপনি যদি আমাদের বলে দেন। অতঃপর তিনি ডান হাতের কিতাব সম্পর্কে বললেন, এটা বিশ্বপ্রতিপালকের পক্ষ থেকে। এতে সমস্ত বেহেশতবাসীর নাম লেখা আছে। তাদের পিতার নাম, গোত্রের নাম, অতঃপর সর্বশেষ ব্যক্তির নাম লিখে যোগ করা হয়েছে। সুতরাং আর কখনো এতে বাড়ানো বা কমানো যাবে না। তারপর বাম হাতের কিতাব সম্বন্ধে বলেন, এটিও বিশ্বপ্রতিপালকের নিকট হতে প্রাপ্ত। এতে সমস্ত দোযখবাসীর নাম, তাদের পিতার নাম, বংশের নাম লেখা আছে। অতঃপর সর্বশেষ ব্যক্তির নাম লিখে যোগ করা হয়েছে। সুতরাং এতে আর কখনো বাড়ানো বা কমানো যাবে না। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! যদি সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে গিয়ে থাকে তবে আর আমলের প্রয়োজন কোথায়? তিনি বললেন, তোমরা সঠিক পথে চলতে থাক এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা কর। কেননা বেহেশতী ব্যক্তি, তার সর্বশেষ কাজ বেহেশতবাসীদের কাজ হবে, সে যা-ই করুক না কেন। আর দোযখী ব্যক্তি তার সর্বশেষ কাজ করবে দোযখবাসীদের, সে যাই করুক না কেন। অতঃপর হুযুর (ﷺ) তাঁর দুহাতে ইশারা করে কিতাব দু'টি দিলেন এবং বললেন, তোমাদের প্রভু বান্দার সব কাজ চূড়ান্ত করে শেষ করেছেন। সুতরাং একদল যাবে বেহেশতে আর আরেক দল যাবে দোযখে। -তিরমিযী (রহ) বলেন, এ হাদীসটি হাসান-গরীব-সহীহ।
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي يَده كِتَابَانِ فَقَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا هَذَانِ الكتابان فَقُلْنَا لَا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِلَّا أَنْ تُخْبِرَنَا فَقَالَ لِلَّذِي فِي يَدِهِ الْيُمْنَى هَذَا كِتَابٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ فِيهِ أَسْمَاءُ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَأَسْمَاء آبَائِهِم وقبائلهم ثمَّ أجمل على آخِرهم فَلَا يُزَادُ فِيهِمْ وَلَا يُنْقَصُ مِنْهُمْ أَبَدًا ثُمَّ قَالَ لِلَّذِي فِي شِمَالِهِ هَذَا كِتَابٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ فِيهِ أَسْمَاءُ أَهْلِ النَّارِ وَأَسْمَاء آبَائِهِم وقبائلهم ثمَّ أجمل على آخِرهم فَلَا يُزَادُ فِيهِمْ وَلَا يُنْقَصُ مِنْهُمْ أَبَدًا فَقَالَ أَصْحَابُهُ فَفِيمَ الْعَمَلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ كَانَ أَمْرٌ قَدْ فُرِغَ مِنْهُ فَقَالَ سَدِّدُوا وَقَارِبُوا فَإِنَّ صَاحِبَ الْجَنَّةِ يُخْتَمُ لَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنْ عَمِلَ أَيَّ عَمَلٍ وَإِنَّ صَاحِبَ النَّارِ يُخْتَمُ لَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ وَإِنْ عَمِلَ أَيَّ عَمَلٍ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدَيْهِ فَنَبَذَهُمَا ثُمَّ قَالَ فَرَغَ رَبُّكُمْ مِنَ الْعِبَادِ فريق فِي الْجنَّة وفريق فِي السعير» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيح
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৭
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
৯৭। হযরত আবু খোযামা তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা ঝাড় ফুঁক করি, চিকিৎসা করি, আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করি, তা কি আল্লাহর তাকদীর একটুও রদ করতে পারে? তিনি বললেন ও সবই আল্লাহ্ তাকদীর। (আহমদ, তিরমিযী, ইবনে মাজা)
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَن أبي خزامة عَن أَبِيه قَالَ سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ رُقًى نَسْتَرْقِيهَا وَدَوَاءً نَتَدَاوَى بِهِ وَتُقَاةً نَتَّقِيهَا هَلْ تَرُدُّ مِنْ قَدَرِ اللَّهِ شَيْئًا قَالَ: «هِيَ مِنْ قَدَرِ الله» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৮
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
৯৮। হযরত আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের নিকট এসে দেখেন আমরা তাকদীর সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত আছি। তখন তিনি এমন রাগ হলেন যে, তাঁর চেহারা মোবারক লাল হয়ে গেল। যেন একটি আনার নিংড়িয়ে তাঁর গণ্ডদ্বয়ে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের কি এ কাজের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, না কি আমি এজন্য প্রেরিত হয়েছি? তোমাদের পূর্ববর্তীগণ তো ধ্বংস হয়েছে যখন তারা এসব নিয়ে বিতর্কে নেমেছে। আমি তোমাদের কসম দিয়ে বলছি, আমি তোমাদের কসম দিয়ে বলছি তোমরা এ ব্যাপারে বিতর্ক করো না। (তিরমিযী)
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَن أبي هُرَيْرَة قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ نَتَنَازَعُ فِي الْقَدَرِ فَغَضِبَ حَتَّى احْمَرَّ وَجْهُهُ حَتَّى كَأَنَّمَا فُقِئَ فِي وجنتيه الرُّمَّانِ فَقَالَ أَبِهَذَا: «أُمِرْتُمْ أَمْ بِهَذَا أُرْسِلْتُ إِلَيْكُمْ إِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلُكُمْ حِينَ تنازعوا فِي هَذَا الْأَمر عزمت عَلَيْكُم أَلا تتنازعوا فِيهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৯৯
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
৯৯। ইবন মাজা 'আমর ইবন শুআইব তার পিতা থেকে তিনি তার দাদা থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وروى ابْن مَاجَه فِي الْقدر نَحْوَهُ عَنْ عَمْرٍو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০০
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
১০০। হযরত আবু মুসা (রাযিঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ্ পাক আদম (আ)-কে এক মুষ্টি মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যা তিনি সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠ থেকে নিয়েছেন, ফলে আদম-এর বংশধর বিভিন্ন বর্ণের হয়েছে- লাল, সাদা, কালো ও এর মধ্যবর্তী রংয়ের। কেউ কোমল, কেউ কঠোর, কেউ অসৎ আবার কেউ সৎ। (আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ)
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ آدَمَ مِنْ قَبْضَةٍ قَبَضَهَا مِنْ جَمِيعِ الْأَرْضِ فَجَاءَ بَنُو آدَمَ عَلَى قَدْرِ الْأَرْضِ مِنْهُمُ الْأَحْمَرُ وَالْأَبْيَضُ وَالْأَسْوَدُ وَبَيْنَ ذَلِكَ وَالسَّهْلُ وَالْحَزْنُ وَالْخَبِيثُ وَالطَّيِّبُ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০১
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
১০১। হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাযিঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ্ পাক স্বীয় সৃষ্টিকে পয়দা করেছেন অন্ধকারে। অতঃপর তাদের উপর স্বীয় নূর নিক্ষেপ করেন। সুতরাং যার প্রতি তাঁর নূর পৌঁছেছে সে হেদায়াত পেয়েছে, আর যার প্রতি পৌঁছেনি সে পথভ্রষ্ট হয়েছে। এজন্য আমি বলি, আল্লাহর ইলম অনুসারে কলম শুকিয়ে গেছে অর্থাৎ যা হবার তা হয়ে গেছে। (আহমদ, তিরমিযী)
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٌو قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ خَلْقَهُ فِي ظُلْمَةٍ فَأَلْقَى عَلَيْهِمْ مِنْ نُورِهِ فَمَنْ أَصَابَهُ مِنْ ذَلِكَ النُّورِ اهْتَدَى وَمَنْ أَخْطَأَهُ ضَلَّ فَلذَلِك أَقُول: جف الْقلب على علم الله . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০২
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
১০২। হযরত আনাস (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) প্রায়শ এ দুআ করতেন-হে অন্তর পরিবর্তনকারী। আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী (ﷺ) , আমরা আপনার উপর এবং আপনি যা কিছু এনেছেন তার উপর ঈমান এনেছি। আপনি কি আমাদের উপর আশঙ্কা করছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, নিশ্চয় সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে অবস্থিত, আল্লাহ যেভাবে চান তা ঘুরিয়ে থাকেন। (তিরমিযী, ইবনে মাজা)
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُكْثِرُ أَنْ يَقُولَ: «يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ» فَقُلْتُ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ آمَنَّا بِكَ وَبِمَا جِئْتَ بِهِ فَهَلْ تَخَافُ عَلَيْنَا؟ قَالَ: «نَعَمْ إِنَّ الْقُلُوبَ بَيْنَ أُصْبُعَيْنِ مِنْ أَصَابِعِ اللَّهِ يُقَلِّبُهَا كَيْفَ يَشَاءُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০৩
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
১০৩। হযরত আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, মানুষের হৃদয় তৃণশূন্য মাঠে পাখীর একটি পালকের ন্যায়। যাকে প্রবল বায়ু এদিকে-সেদিকে ওলট-পালট করে থাকে। (আহমদ)
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَثَلُ الْقَلْبِ كَرِيشَةٍ بِأَرْضِ فَلَاةٍ يُقَلِّبُهَا الرِّيَاحُ ظَهْرًا لِبَطْنٍ» . رَوَاهُ أَحْمد
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০৪
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
১০৪। হযরত আলী (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, কোন বান্দা মু'মিন হতে পারবে না যতক্ষণ না চারটি বিষয় বিশ্বাস করবে, ১। সাক্ষ্য দিবে আল্লাহ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল, আমাকে আল্লাহ সত্য বিধান সহকারে পাঠিয়েছেন, ২। মৃত্যুকে বিশ্বাস করবে, ৩। মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস করবে এবং ৪। তাকদীরে বিশ্বাস রাখবে। (তিরমিযী, ইবনে মাজা)
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتَّى يُؤْمِنَ بِأَرْبَعٍ: يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ بَعَثَنِي بِالْحَقِّ وَيُؤْمِنُ بِالْمَوْتِ وَالْبَعْثِ بَعْدَ الْمَوْتِ وَيُؤْمِنُ بِالْقَدَرِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০৫
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
১০৫। হযরত ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, নামার উম্মতের দু' লোক-তাদের জন্য ইসলামে কোন অংশ নেই, ১। মুরজিয়াহ, ২। কাদরিয়াহ। (তিরমিযী) তিনি বলেছেন, এ হাদীসটি গরীব।
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صِنْفَانِ مِنْ أُمَّتِي لَيْسَ لَهُمَا فِي الْإِسْلَامِ نَصِيبٌ: الْمُرْجِئَةُ وَالْقَدَرِيَّةُ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
তাহকীক:
হাদীস নং: ১০৬
- ঈমানের অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
১০৬। হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের মধ্যে ভূমিধস ও আকৃতি পরিবর্তন এর ঘটনা ঘটবে। তবে এটা তাক্দীরে অবিশ্বাসীদের উপরই ঘটবে। (আবু দাউদ) তিরমিযী এ ধরনের একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
كتاب الإيمان
باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «يَكُونُ فِي أُمَّتِي خَسْفٌ وَمَسْخٌ وَذَلِكَ فِي الْمُكَذِّبِينَ بِالْقَدَرِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وروى التِّرْمِذِيّ نَحوه
তাহকীক: