আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
الجامع الصحيح للبخاري
৮- নামাযের ওয়াক্তের বিবরণ - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৪ টি
হাদীস নং: ৫৩২
আন্তর্জাতিক নং: ৫৫৯
৩৬৯। মাগরিবের ওয়াক্ত।
আতা (রাহঃ) বলেন, রুগ্ন ব্যক্তি মাগরিব ও ইশার নামায একত্রে আদায় করতে পারবে।
আতা (রাহঃ) বলেন, রুগ্ন ব্যক্তি মাগরিব ও ইশার নামায একত্রে আদায় করতে পারবে।
৫৩২। মুহাম্মাদ ইবনে মিহরান (রাহঃ) .... রাফি’ ইবনে খাদীজ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী (ﷺ) এর সঙ্গে মাগরিবের নামায আদায় করে এমন সময় ফিরে আসতাম যে, আমাদের কেউ (তীর নিক্ষেপ করলে) নিক্ষিপ্ত তীর পতিত হওয়ার স্থান দেখতে পেত।
باب وَقْتِ الْمَغْرِبِ - وَقَالَ عَطَاءٌ يَجْمَعُ الْمَرِيضُ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ
559 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مِهْرَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا الوَلِيدُ، قَالَ: حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو النَّجَاشِيِّ صُهَيْبٌ مَوْلَى رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَافِعَ بْنَ خَدِيجٍ، يَقُولُ: «كُنَّا نُصَلِّي المَغْرِبَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَيَنْصَرِفُ أَحَدُنَا وَإِنَّهُ لَيُبْصِرُ مَوَاقِعَ نَبْلِهِ»
হাদীস নং: ৫৩৩
আন্তর্জাতিক নং: ৫৬০
৩৬৯। মাগরিবের ওয়াক্ত।
৫৩৩। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... মুহাম্মাদ ইবনে আমর ইবনে হাসান ইবনে আলী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, মুহাম্মাদ ইবনে আমর (রাহঃ) বলেন, হাজ্জাজ (ইবনে ইউসুফ) (মদীনা শরীফে) এলে আমরা জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ)-কে নামাযের ওয়াক্ত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম, (কেননা, হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ বিলম্ব করে নামায আদায় করতেন)। তিনি বললেন, নবী (ﷺ) যোহরের নামায প্রচন্ড গরমের সময় আদায় করতেন। আর আসরের নামায সূর্য উজ্জ্বল থাকতে আদায় করতেন, মাগরিবের নামায সূর্য অস্ত যেতেই আর ইশার নামায বিভিন্ন সময়ে আদায় করতেন। যদি দেখতেন, সবাই সমবেত হয়েছেন, তাহলে আগে আগে আদায় করতেন। আর যদি দেখতেন, লোকজন আসতে দেরী করছে, তাহলে বিলম্বে আদায় করতেন। আর ফজরের নামায তাঁরা কিংবা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অন্ধকার থাকতে আদায় করতেন।*
*হানাফী মাযহাব অনুসারীগণ সুবহে সাদিকের পর ভোরের আলো ফর্সা হয়ে গেলে ফজরের জামাত আদায় করা মুস্তাহাব বলে থাকেন এবং তিরমিযী শরীফে উদ্ধৃত রাফে' ইবনে খাদীজ (রাযিঃ) সূত্রের সহীহ হাদীসখানা প্রমাণরূপে গ্রহণ করেন। যাতে বলা হয়েছে- “তোমরা ফর্সা হয়ে গেলে ফজর আদায় করো। কেননা, তাতে সাওয়াব অনেক বেশী।” ইমাম তিরমিযী (রাহঃ) হাদীসখানাকে উত্তম ও বিশুদ্ধ বলে অভিমত দিয়েছেন এবং তার আরও অনেক রাবীর নাম উল্লেখ করেছেন। তবে মাহে রমযানে, ব্যাপকভাবে রাত জাগরণের পর্বে, মুসাফির ও রোগীর জন্য এবং একাকী নামায আদায়কারী নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে আলোচ্য হাদীসের আমল যথার্থ। (দ্রষ্টব্য: মূল আরবী তিরমিযী শরীফ, খ-১, পৃ-৪০)
*হানাফী মাযহাব অনুসারীগণ সুবহে সাদিকের পর ভোরের আলো ফর্সা হয়ে গেলে ফজরের জামাত আদায় করা মুস্তাহাব বলে থাকেন এবং তিরমিযী শরীফে উদ্ধৃত রাফে' ইবনে খাদীজ (রাযিঃ) সূত্রের সহীহ হাদীসখানা প্রমাণরূপে গ্রহণ করেন। যাতে বলা হয়েছে- “তোমরা ফর্সা হয়ে গেলে ফজর আদায় করো। কেননা, তাতে সাওয়াব অনেক বেশী।” ইমাম তিরমিযী (রাহঃ) হাদীসখানাকে উত্তম ও বিশুদ্ধ বলে অভিমত দিয়েছেন এবং তার আরও অনেক রাবীর নাম উল্লেখ করেছেন। তবে মাহে রমযানে, ব্যাপকভাবে রাত জাগরণের পর্বে, মুসাফির ও রোগীর জন্য এবং একাকী নামায আদায়কারী নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে আলোচ্য হাদীসের আমল যথার্থ। (দ্রষ্টব্য: মূল আরবী তিরমিযী শরীফ, খ-১, পৃ-৪০)
باب وَقْتِ الْمَغْرِبِ
560 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ، قَالَ: قَدِمَ الحَجَّاجُ فَسَأَلْنَا جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، فَقَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الظُّهْرَ بِالهَاجِرَةِ، وَالعَصْرَ وَالشَّمْسُ نَقِيَّةٌ، وَالمَغْرِبَ إِذَا [ص:117] وَجَبَتْ، وَالعِشَاءَ أَحْيَانًا وَأَحْيَانًا، إِذَا رَآهُمُ اجْتَمَعُوا عَجَّلَ، وَإِذَا رَآهُمْ أَبْطَؤُوا أَخَّرَ، وَالصُّبْحَ كَانُوا - أَوْ كَانَ - النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّيهَا بِغَلَسٍ»

তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৩৪
আন্তর্জাতিক নং: ৫৬১
৩৬৯। মাগরিবের ওয়াক্ত।
৫৩৪। মক্কী ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ..... সালামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সূর্য পর্দার আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়ার সাথে সাথেই আমরা নবী (ﷺ) এর সঙ্গে মাগরিবের নামায আদায় করতাম।
باب وَقْتِ الْمَغْرِبِ
561 - حَدَّثَنَا المَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي عُبَيْدٍ، عَنْ سَلَمَةَ، قَالَ: «كُنَّا نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَغْرِبَ إِذَا تَوَارَتْ بِالحِجَابِ»

তাহকীক:

বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৫৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৫৬২
৩৬৯। মাগরিবের ওয়াক্ত।
৫৩৫। আদম (রাহঃ) ..... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) (মাগরিব ও ইশার) সাত রাকআত ও (যোহর ও আসরের) আট রাক'আত একসাথে আদায় করেছেন।*
*হাদীসটির ভাষা ব্যতিক্রম ও বিশেষ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এর মানে এ রকম নয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যোহর ও আসরের নামায একসাথে একই ওয়াক্তে এবং মাগরিব ও ইশার নামায একসাথে একই ওয়াক্তে আদায় করেছেন, যেমনটি কেউ কেউ মনে করে থাকেন। এরূপ মনে করার সুযোগ এ কারণে নেই যে, আল্লাহ্ তা'আলা প্রত্যেক নামাযকে সুনির্দিষ্ট ওয়াক্তে আদায় করাকেই ফরয করেছেন। ইরশাদ হয়েছে- “নির্ধারিত সময়ে নামায আদায় করা মু'মিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য" (৪:১০৩)।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এ আদেশ অনুযায়ী সর্বদা প্রত্যেক নামাযকে তার নির্ধারিত সময়েই আদায় করতেন। 'আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) বলেন: “যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই তাঁর শপথ, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কখনো কোন নামাযকে তার অন্য ওয়াক্তে আদায় করেননি। ব্যতিক্রম কেবল (হজ্জের সময়ে) আরাফা-মুযদালিফা” (বুখারী, খ-১, পৃ-২২৮; মুসলিম, খ-১, পৃ-৪১৭)।
এ কারণেই হানাফীগণ বলেন যে, হজ্জের সময়ে আরাফা ও মুযদালিফা ছাড়া অন্য কোথাও কখনো দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে এক ওয়াক্তে আদায় করা জায়িয নয়। তারা এ হাদীসের ব্যাখ্যা দান করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যোহরের নামায যোহরের ওয়াক্তের শেষপ্রান্তে এবং আসরের নামায আসরের ওয়াক্তের একদম শুরুর দিকে আদায় করেন। ফলে উভয় নামায খুব কাছাকাছি সময়ে আদায় করা হয়েছে। বর্ণনাকারী একেই যোহর ও আসরের আট রাক'আত নামায একত্রে আদায় করেছেন- শব্দে ব্যক্ত করেছেন। একই ব্যাখ্যা মাগরির ও ইশার সাত রাকআতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এ ব্যাখ্যাও হাদীস দ্বারাই প্রমাণিত । যেমন হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক দুই নামায একত্রে আদায় করা সম্পর্কিত হাদীস বর্ণিত আছে, কিন্তু সে একত্রীকরণ কিভাবে হত নিজ আমল দ্বারাই তিনি তা দেখিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং সালিম (রাহঃ) বলেন, “সফরে হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ)-এর যখন ব্যস্ততা দেখা দিত, মাগরিবের তিন রাক'আত আদায়ের পর সামান্য একটু দেরি করতেন। তারপর যখন পশ্চিমাকাশের লালিমা অস্ত যেত, অমনি ইশার নামায আদায় করতেন” (বুখারী: হাদীস নং- ১১০৯; আবু দাউদ : ১২১২)। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, উভয় নামায আপাতদৃষ্টিতে একত্র করা হত বটে, কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে তা আদায় করা হত আপন আপন ওয়াক্তে।
*হাদীসটির ভাষা ব্যতিক্রম ও বিশেষ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এর মানে এ রকম নয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যোহর ও আসরের নামায একসাথে একই ওয়াক্তে এবং মাগরিব ও ইশার নামায একসাথে একই ওয়াক্তে আদায় করেছেন, যেমনটি কেউ কেউ মনে করে থাকেন। এরূপ মনে করার সুযোগ এ কারণে নেই যে, আল্লাহ্ তা'আলা প্রত্যেক নামাযকে সুনির্দিষ্ট ওয়াক্তে আদায় করাকেই ফরয করেছেন। ইরশাদ হয়েছে- “নির্ধারিত সময়ে নামায আদায় করা মু'মিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য" (৪:১০৩)।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এ আদেশ অনুযায়ী সর্বদা প্রত্যেক নামাযকে তার নির্ধারিত সময়েই আদায় করতেন। 'আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) বলেন: “যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই তাঁর শপথ, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কখনো কোন নামাযকে তার অন্য ওয়াক্তে আদায় করেননি। ব্যতিক্রম কেবল (হজ্জের সময়ে) আরাফা-মুযদালিফা” (বুখারী, খ-১, পৃ-২২৮; মুসলিম, খ-১, পৃ-৪১৭)।
এ কারণেই হানাফীগণ বলেন যে, হজ্জের সময়ে আরাফা ও মুযদালিফা ছাড়া অন্য কোথাও কখনো দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে এক ওয়াক্তে আদায় করা জায়িয নয়। তারা এ হাদীসের ব্যাখ্যা দান করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যোহরের নামায যোহরের ওয়াক্তের শেষপ্রান্তে এবং আসরের নামায আসরের ওয়াক্তের একদম শুরুর দিকে আদায় করেন। ফলে উভয় নামায খুব কাছাকাছি সময়ে আদায় করা হয়েছে। বর্ণনাকারী একেই যোহর ও আসরের আট রাক'আত নামায একত্রে আদায় করেছেন- শব্দে ব্যক্ত করেছেন। একই ব্যাখ্যা মাগরির ও ইশার সাত রাকআতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এ ব্যাখ্যাও হাদীস দ্বারাই প্রমাণিত । যেমন হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক দুই নামায একত্রে আদায় করা সম্পর্কিত হাদীস বর্ণিত আছে, কিন্তু সে একত্রীকরণ কিভাবে হত নিজ আমল দ্বারাই তিনি তা দেখিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং সালিম (রাহঃ) বলেন, “সফরে হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ)-এর যখন ব্যস্ততা দেখা দিত, মাগরিবের তিন রাক'আত আদায়ের পর সামান্য একটু দেরি করতেন। তারপর যখন পশ্চিমাকাশের লালিমা অস্ত যেত, অমনি ইশার নামায আদায় করতেন” (বুখারী: হাদীস নং- ১১০৯; আবু দাউদ : ১২১২)। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, উভয় নামায আপাতদৃষ্টিতে একত্র করা হত বটে, কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে তা আদায় করা হত আপন আপন ওয়াক্তে।
باب وَقْتِ الْمَغْرِبِ
562 - حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ زَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: «صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَبْعًا جَمِيعًا وَثَمَانِيًا جَمِيعًا»

তাহকীক: