আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৭৮- কিয়ামত ও ফিতনাসমূহের বিবরণ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৬৬১৫
আন্তর্জাতিক নং: ৭০৯৬
২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিতনা তরঙ্গায়িত হবে।
ইবনে উয়াইনা (রাহঃ) খালফ ইবনে হাওশাব (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ববর্তী লোকেরা নিম্নোক্ত কবিতার দ্বারা ফিতনার উপমা পেশ করতে পছন্দ করতেন, যুদ্ধের প্রাথমিক অবস্থা যুবতীর মত, যে তার রূপ-লাবণ্য দিয়ে অপরিণামদর্শীর উদ্দেশ্যে ছুটাছুটি করে। কিন্তু যখন যুদ্ধের দাবানল দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে এবং তার ফুলকিগুলো হয় পূর্ব যৌবনা, তখন সে বৃদ্ধা বিধবার ন্যায় পালিয়ে যায়, যার চুল অধিকাংশই সাদা হয়ে গেছে, রং হয়ে গেছে ফিকে ও পরিবর্তিত, যার ঘ্রাণ নিতে ও চুমু খেতে ঘৃণা লাগে।
৬৬১৫। উমর ইবনে হাফস ইবনে গিয়াস (রাহঃ) ......... হুযাইফা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, এক সময় আমরা উমর (রাযিঃ) এর নিকট বসা ছিলাম। হঠাৎ তিনি বললেন, ফিতনা সম্পর্কে নবী (ﷺ) এর বক্তব্য তোমাদের মধ্যে কে স্মরণ রেখেছে? হুযাইফা (রাযিঃ) বললেন, (নবী (ﷺ) বলেছেন) মানুষ নিজের পরিবার, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ও প্রতিবেশী সংক্রান্ত ব্যাপারে যে ফিতনায় নিপতিত হয়, নামায, সাদ্‌কা, সৎকাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ তার সে পাপকে মোচন করে দেয়। তিনি বললেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিনি, বরং সে ফিতনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি যা সাগর লহরীর মত ঢেউ খেলবে। হুযাইফা (রাযিঃ) বললেনঃ হে আমীরুল মু'মিনীন! সে ফিতনায় আপনার কোন অসুবিধা হবে না। কেননা, সে ফিতনা ও আপনার মাঝে একটি বন্ধ দরজা রয়েছে। উমর (রাযিঃ) বললেন, দরজাটি কি ভেঙ্গে ফেলা হবে, না খুলে দেওয়া হবে? তিনি বললেন, না বরং ভেঙ্গে ফেলা হবে। উমর (রাযিঃ) বললেনঃ তাহলে তো সেটা আর কখনো বন্ধ করা যাবে না। (হুযাইফা বলেন) আমি বললাম, হ্যাঁ। (শাকীক বলেন) আমরা হুযাইফা (রাযিঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, উমর (রাযিঃ) কি দরজাটি সম্পর্কে জানতেন? উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যেরূপ আমি সুনিশ্চিতভাবে জানি যে আগামী দিনের পর রাত আসবে। কেননা আমি তাকে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করেছি যা ভ্রান্তিমুক্ত।
(শাকীক বলেন) দরজাটি কে সে সম্পর্কে হুযাইফা (রাযিঃ) কে জিজ্ঞাসা করতে আমরা ভয় পাচ্ছিলাম, তাই আমরা মাসরুককে জিজ্ঞাসা করতে বললাম। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, দরজাটি কে? উত্তরে তিনি বললেনঃ উমর (রাযিঃ) (নিজেই)।
بَابُ الفِتْنَةِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِوَقَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ: عَنْ خَلَفِ بْنِ حَوْشَبٍ: كَانُوا يَسْتَحِبُّونَ أَنْ يَتَمَثَّلُوا بِهَذِهِ الأَبْيَاتِ عِنْدَ الفِتَنِ، قَالَ امْرُؤُ القَيْسِ:
[البحر الكامل]
الحَرْبُ أَوَّلُ مَا تَكُونُ فَتِيَّةً ... تَسْعَى بِزِينَتِهَا لِكُلِّ جَهُولِ
حَتَّى إِذَا اشْتَعَلَتْ وَشَبَّ ضِرَامُهَا ... وَلَّتْ عَجُوزًا غَيْرَ ذَاتِ حَلِيلِ
شَمْطَاءَ يُنْكَرُ لَوْنُهَا وَتَغَيَّرَتْ ... مَكْرُوهَةً لِلشَّمِّ وَالتَّقْبِيلِ
7096 - حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا شَقِيقٌ، سَمِعْتُ حُذَيْفَةَ، يَقُولُ: بَيْنَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ عُمَرَ، إِذْ قَالَ: أَيُّكُمْ يَحْفَظُ قَوْلَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الفِتْنَةِ؟ قَالَ: «فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَوَلَدِهِ وَجَارِهِ، تُكَفِّرُهَا الصَّلاَةُ وَالصَّدَقَةُ، وَالأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْيُ عَنِ المُنْكَرِ» قَالَ: لَيْسَ عَنْ هَذَا أَسْأَلُكَ، وَلَكِنِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِ، قَالَ: لَيْسَ عَلَيْكَ مِنْهَا بَأْسٌ يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ، إِنَّ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بَابًا مُغْلَقًا، قَالَ عُمَرُ: أَيُكْسَرُ البَابُ أَمْ يُفْتَحُ؟ قَالَ: بَلْ يُكْسَرُ، قَالَ عُمَرُ: إِذًا لاَ يُغْلَقَ أَبَدًا، قُلْتُ: أَجَلْ. قُلْنَا لِحُذَيْفَةَ: أَكَانَ عُمَرُ يَعْلَمُ البَابَ؟ قَالَ: نَعَمْ، كَمَا يَعْلَمُ أَنَّ دُونَ غَدٍ لَيْلَةً، وَذَلِكَ أَنِّي حَدَّثْتُهُ حَدِيثًا لَيْسَ بِالأَغَالِيطِ. فَهِبْنَا أَنْ نَسْأَلَهُ: مَنِ البَابُ؟ فَأَمَرْنَا مَسْرُوقًا فَسَأَلَهُ، فَقَالَ: مَنِ البَابُ؟ قَالَ: عُمَرُ
হাদীস নং: ৬৬১৬
আন্তর্জাতিক নং: ৭০৯৭
২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিতনা তরঙ্গায়িত হবে।
৬৬১৬। সাঈদ ইবনে আবু মারিয়াম (রাহঃ) ......... আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী (ﷺ) প্রয়োজনবশত মদীনার (দেওয়াল ঘেরা) বাগানসমূহের কোন একটি বাগানের উদ্দেশ্যে বের হলেন, আমি তার পিছনে গেলাম। তিনি যখন বাগানে প্রবেশ করলেন, আমি এর দরজায় বসে রইলাম এবং মনে মনে বললাম, অদ্য আমি নবী (ﷺ) এর প্রহরীর কাজ আঞ্জাম দিব। অবশ্য তিনি আমাকে এর নির্দেশ দেননি। নবী (ﷺ) ভিতরে গেলেন এবং স্বীয় প্রয়োজন সেরে নিলেন। এরপর একটি কূপের পোস্তার (পাড়) উপর বসে পড়লেন এবং হাঁটুর নীচের অংশের কাপড় তুলে নিয়ে উভয় পা কূপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন।
এমন সময় আবু বকর (রাযিঃ) এসে তার নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমি বললাম, আপনি অপেক্ষা করুন, যতক্ষণ না আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসছি। তিনি অপেক্ষা করলেন। আমি নবী (ﷺ) এর নিকট আসলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর নবী! আবু বকর (রাযিঃ) আপনার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইছেন। তিনি বললেনঃ তাকে আসার অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের শুভ সংবাদ দাও। আবু বকর (রাযিঃ) প্রবেশ করলেন এবং নবী (ﷺ) এর ডান পার্শ্বে গিয়ে বসলেন। এরপর তিনিও হাঁটুর নীচের অংশ অনাবৃত করে উভয় পা কূপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন।
এরপর উমর (রাযিঃ) আসলেন। আমি বললাম, আপনি স্বস্থানে অপেক্ষা করুন। আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসি। (অনুমতি প্রার্থনা করলে) নবী (ﷺ) বললেনঃ তাঁকে আসার অনুমতি দাও এবং জান্নাতের সুসংবাদ দাও। তিনি এসে নবী (ﷺ) এর বাম দিকে বসলেন এবং তিনি হাঁটুর নীচের অংশ অনাবৃত করে উভয় পা কূপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন। এতে কূপের পোস্তা পরিপূর্ণ হয়ে গেল এবং সেখানে বসার আর কোন স্থান অবশিষ্ট রইল না।
এরপর উসমান (রাযিঃ) আসলেন। আমি বললাম, আপনি স্বস্থানে অপেক্ষা করুন, যতক্ষণ আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে না আসি। নবী (ﷺ) বলেনঃ তাঁকে আসার অনুমতি দাও এবং তাকে বিপদাক্রান্ত হওয়াসহ জান্নাতের সুসংবাদ দাও। তিনি প্রবেশ করলেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে বসার কোন স্থান পেলেন না। ফলতঃ তিনি বিপরীত দিকে এসে তাদের মুখোমুখী হয়ে কুয়ার পাড়ে বসে গেলেন এবং হাঁটুদ্বয়ের নীচের অংশ অনাবৃত করে উভয় পা কুয়ার অভ্যন্তরে ঝুলিয়ে দিলেন। আমি তখন আমার অপর এক ভাইয়ের (আগমন) কামনা করছিলাম এবং আল্লাহর নিকট দু'আ করছিলাম, যেন সে (এ মুহূর্তে) আগমন করে।
ইবনে মুসাইয়্যাব বলেন, আমি এ ঘটনার মর্মার্থ এভাবে গ্রহণ করেছি যে, তাহল তাদের তিনজনের কবরের নমুনা যা এখানে একসঙ্গে হয়েছে। আর উসমান (রাযিঃ)-র ভিন্ন স্থানে।
بَابُ الفِتْنَةِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِ
7097 - حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ [ص:55] شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، قَالَ: خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا إِلَى حَائِطٍ مِنْ حَوَائِطِ المَدِينَةِ لِحَاجَتِهِ، وَخَرَجْتُ فِي إِثْرِهِ، فَلَمَّا دَخَلَ الحَائِطَ جَلَسْتُ عَلَى بَابِهِ، وَقُلْتُ: لَأَكُونَنَّ اليَوْمَ بَوَّابَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَمْ يَأْمُرْنِي، فَذَهَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَضَى حَاجَتَهُ، وَجَلَسَ عَلَى قُفِّ البِئْرِ، فَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ وَدَلَّاهُمَا فِي البِئْرِ، فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ يَسْتَأْذِنُ عَلَيْهِ لِيَدْخُلَ، فَقُلْتُ: كَمَا أَنْتَ حَتَّى أَسْتَأْذِنَ لَكَ، فَوَقَفَ فَجِئْتُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ، أَبُو بَكْرٍ يَسْتَأْذِنُ عَلَيْكَ، قَالَ: «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ» فَدَخَلَ، فَجَاءَ عَنْ يَمِينِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ وَدَلَّاهُمَا فِي البِئْرِ، فَجَاءَ عُمَرُ فَقُلْتُ: كَمَا أَنْتَ حَتَّى أَسْتَأْذِنَ لَكَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ» فَجَاءَ عَنْ يَسَارِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ فَدَلَّاهُمَا فِي البِئْرِ، فَامْتَلَأَ القُفُّ، فَلَمْ يَكُنْ فِيهِ مَجْلِسٌ، ثُمَّ جَاءَ عُثْمَانُ فَقُلْتُ: كَمَا أَنْتَ حَتَّى أَسْتَأْذِنَ لَكَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ، مَعَهَا بَلاَءٌ يُصِيبُهُ» فَدَخَلَ فَلَمْ يَجِدْ مَعَهُمْ مَجْلِسًا، فَتَحَوَّلَ حَتَّى جَاءَ مُقَابِلَهُمْ عَلَى شَفَةِ البِئْرِ، فَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ ثُمَّ دَلَّاهُمَا فِي البِئْرِ، فَجَعَلْتُ أَتَمَنَّى أَخًا لِي، وَأَدْعُو اللَّهَ أَنْ يَأْتِيَ قَالَ ابْنُ المُسَيِّبِ: «فَتَأَوَّلْتُ ذَلِكَ قُبُورَهُمْ، اجْتَمَعَتْ هَا هُنَا، وَانْفَرَدَ عُثْمَانُ»
হাদীস নং: ৬৬১৭
আন্তর্জাতিক নং: ৭০৯৮
২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিতনা তরঙ্গায়িত হবে।
৬৬১৭। বিশর ইবনে খালিদ (রাহঃ) ......... আবু ওয়ায়িল (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উসামা (রাযিঃ) কে বলা হল, আপনি কি এ ব্যাপারে কিছু বলবেন না? তিনি বললেন, আমি এ ব্যাপারে বলেছি, তবে এমন পন্থায় নয় যে, আমি তোমার জন্য একটি দ্বার (ফিতনার) উন্মোচিত করব যাতে আমিই হব এর প্রথম উন্মোচনকারী এবং আমি এমন ব্যক্তি নই যে, কোন লোক দুই ব্যক্তির আমীর নিযুক্ত হওয়ার পর তার সম্পর্কে বলব, আপনি উত্তম। কেননা, আমি নবী (ﷺ) কে বলতে শুনেছি যে, (কিয়ামতের দিন) এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। এরপর তাকে গাঁধা দিয়ে চাকা ঘুরিয়ে যেমন গম পিষা হয়, সেরূপ পিষে ফেলা হবে। দোযখবাসীরা তার পাশে এসে সমবেত হবে এবং বলবে, হে অমুক! তুমিই কি আমাদের ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করতে না? তখন সে বলবে, হ্যাঁ, আমি ভাল কাজের আদেশ করতাম, তবে আমি নিজে তা করতাম না এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করতাম, তবে আমি নিজেই তা করতাম।
بَابُ الفِتْنَةِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِ
7098 - حَدَّثَنِي بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ، سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ، قَالَ: قِيلَ لِأُسَامَةَ: أَلاَ تُكَلِّمُ هَذَا؟ قَالَ: قَدْ كَلَّمْتُهُ مَا دُونَ أَنْ أَفْتَحَ بَابًا أَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يَفْتَحُهُ، وَمَا أَنَا بِالَّذِي أَقُولُ لِرَجُلٍ، بَعْدَ أَنْ يَكُونَ أَمِيرًا عَلَى رَجُلَيْنِ: أَنْتَ خَيْرٌ، بَعْدَ مَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " يُجَاءُ بِرَجُلٍ فَيُطْرَحُ فِي النَّارِ، فَيَطْحَنُ فِيهَا كَطَحْنِ الحِمَارِ بِرَحَاهُ، فَيُطِيفُ بِهِ أَهْلُ النَّارِ فَيَقُولُونَ: أَيْ فُلاَنُ، أَلَسْتَ كُنْتَ تَأْمُرُ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَى عَنِ المُنْكَرِ؟ فَيَقُولُ: إِنِّي كُنْتُ آمُرُ بِالْمَعْرُوفِ وَلاَ أَفْعَلُهُ، وَأَنْهَى عَنِ المُنْكَرِ وَأَفْعَلُهُ "
হাদীস নং: ৬৬১৮
আন্তর্জাতিক নং: ৭০৯৯
২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিতনা তরঙ্গায়িত হবে।
৬৬১৮। উসমান ইবনে হায়সাম (রাহঃ) ......... আবু বাকরা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একটি কথা দ্বারা আল্লাহ তাআলা জঙ্গে জামাল (উটের যুদ্ধ) এর সময় আমাকে বড়ই উপকৃত করেছেন। (সে কথাটি হল) নবী (ﷺ) এর নিকট যখন এ সংবাদ পৌছল যে, পারস্যের লোকেরা কিসরার কন্যাকে তাদের শাসক নিযুক্ত করেছে, তখন তিনি বললেনঃ সে জাতি কখনোই সফলকাম হবে না, যারা তাদের শাসনভার কোন রমণীর হাতে অর্পণ করে।
بَابُ الفِتْنَةِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِ
7099 - حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ الهَيْثَمِ، حَدَّثَنَا عَوْفٌ، عَنِ الحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ: لَقَدْ نَفَعَنِي اللَّهُ بِكَلِمَةٍ أَيَّامَ الجَمَلِ، لَمَّا بَلَغَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ فَارِسًا مَلَّكُوا ابْنَةَ كِسْرَى قَالَ: «لَنْ يُفْلِحَ قَوْمٌ وَلَّوْا أَمْرَهُمُ امْرَأَةً»
হাদীস নং: ৬৬১৯
আন্তর্জাতিক নং: ৭১০০
২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিতনা তরঙ্গায়িত হবে।
৬৬১৯। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) ......... আবু মারিয়াম আব্দুল্লাহ ইবনে যিয়াদ আসাদী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তালহা, যুবাইর ও আয়েশা (রাযিঃ) যখন বসরার দিকে গমন করলেন, তখন আলী (রাযিঃ) আম্মার ইবনে ইয়াসির ও হাসান ইবনে আলী (রাযিঃ) কে প্রেরণ করলেন। তাঁরা আমাদের কুফায় আগমন করলেন এবং (মসজিদের) মিম্বরে উপবেশন করলেন। হাসান ইবনে আলী (রাযিঃ) মিম্বরের সর্বোচ্চ ধাপে উপবিষ্ট ছিলেন, আর আম্মার (রাযিঃ) হাসান (রাযিঃ) এর নীচের ধাপে দণ্ডায়মান ছিলেন। আমরা এসে তার নিকট সমবেত হলাম। এ সময় আমি শোনলাম, আম্মার (রাযিঃ) বলছেন, আয়েশা (রাযিঃ) বসরা অভিমুখে রওয়ানা হয়ে গেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি দুনিয়া ও আখিরাতে তোমাদের (আমাদের) নবী (ﷺ) এর পত্নী। কিন্তু আল্লাহ তাআলা এ কথা স্পষ্ট করে জেনে নেয়ার জন্য তোমাদের পরীক্ষায় ফেলেছেন যে, তোমরা কি তাঁরই আনুগত্য কর, না তার অর্থাৎ আয়েশা (রাযিঃ) এর আনুগত্য কর।
بَابُ الفِتْنَةِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِ
7100 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنَا أَبُو حَصِينٍ، حَدَّثَنَا أَبُو [ص:56] مَرْيَمَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زِيَادٍ الأَسَدِيُّ، قَالَ: لَمَّا سَارَ طَلْحَةُ وَالزُّبَيْرُ وَعَائِشَةُ إِلَى البَصْرَةِ، بَعَثَ عَلِيٌّ عَمَّارَ بْنَ يَاسِرٍ وَحَسَنَ بْنَ عَلِيٍّ، فَقَدِمَا عَلَيْنَا الكُوفَةَ، فَصَعِدَا المِنْبَرَ، فَكَانَ الحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ فَوْقَ المِنْبَرِ فِي أَعْلاَهُ، وَقَامَ عَمَّارٌ أَسْفَلَ مِنَ الحَسَنِ، فَاجْتَمَعْنَا إِلَيْهِ، فَسَمِعْتُ عَمَّارًا، يَقُولُ: «إِنَّ عَائِشَةَ قَدْ سَارَتْ إِلَى البَصْرَةِ، وَوَاللَّهِ إِنَّهَا لَزَوْجَةُ نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ، وَلَكِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى ابْتَلاَكُمْ، لِيَعْلَمَ إِيَّاهُ تُطِيعُونَ أَمْ هِيَ»
হাদীস নং: ৬৬২০
আন্তর্জাতিক নং: ৭১০১
২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিতনা তরঙ্গায়িত হবে।
৬৬২০। আবু নুআয়ম (রাহঃ) ......... আবু ওয়ায়িল (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আাম্মার (রাযিঃ) কুফার (মসজিদের) মিম্বরে দণ্ডায়মান হলেন এবং তিনি আয়েশা (রাযিঃ) ও তার সফরের কথা উল্লেখ করলেন। এরপর তিনি বললেন, তিনি [আয়েশা (রাযিঃ)] ইহলোক ও পরলোকে তোমাদের নবী (ﷺ) এর পত্নী। কিন্তু বর্তমানে তোমরা তাঁকে নিয়ে ভীষণ পরীক্ষার মুখোমুখী হয়েছ।
بَابُ الفِتْنَةِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِ
7101 - حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي غَنِيَّةَ، عَنِ الحَكَمِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، قَامَ عَمَّارٌ، عَلَى مِنْبَرِ الكُوفَةِ، فَذَكَرَ عَائِشَةَ، وَذَكَرَ مَسِيرَهَا، وَقَالَ: «إِنَّهَا زَوْجَةُ نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ، وَلَكِنَّهَا مِمَّا ابْتُلِيتُمْ»
হাদীস নং: ৬৬২১
আন্তর্জাতিক নং: ৭১০২ - ৭১০৪
২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিতনা তরঙ্গায়িত হবে।
৬৬২১। বাদাল ইবনে মুহাব্বার (রাহঃ) ......... আবু ওয়ায়িল (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী (রাযিঃ) যখন আম্মার (রাযিঃ) কে যুদ্ধে অংশগ্রহণের আহবান জানাতে কুফাবাসীদের নিকট প্রেরণ করলেন, তখন আবু মুসা ও আবু মাসউদ (রাযিঃ) তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, তোমার ইসলাম গ্রহণের পর থেকে আমাদের জানামতে বর্তমান বিষয়ে (যুদ্ধের জন্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করার বিষয়ে) দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করার চেয়ে অপছন্দনীয় কোন কাজ করতে আমরা তোমাকে দেখিনি। তখন আম্মার (রাযিঃ) বললেন, যখন থেকে আপনারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন আমি আপনাদের কোন কাজ দেখিনি যা আমার কাছে অপছন্দনীয় বিবেচিত হয়েছে বর্তমানের এ কাজে দেরী করা ব্যতীত। তখন আবু মাসউদ (রাযিঃ) তাদের দু’জনকেই একজোড়া করে পোশাক পরিধান করিয়ে দিলেন। এরপর সকলেই (কুফা) মসজিদের দিকে রওয়ানা হলেন।
بَابُ الفِتْنَةِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِ
7102-04 - حَدَّثَنَا بَدَلُ بْنُ المُحَبَّرِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ، يَقُولُ: دَخَلَ أَبُو مُوسَى وَأَبُو مَسْعُودٍ عَلَى عَمَّارٍ، حَيْثُ بَعَثَهُ عَلِيٌّ إِلَى أَهْلِ الكُوفَةِ يَسْتَنْفِرُهُمْ، فَقَالاَ: مَا رَأَيْنَاكَ أَتَيْتَ أَمْرًا أَكْرَهَ عِنْدَنَا مِنْ إِسْرَاعِكَ فِي هَذَا الأَمْرِ مُنْذُ أَسْلَمْتَ؟ فَقَالَ عَمَّارٌ: «مَا رَأَيْتُ مِنْكُمَا مُنْذُ أَسْلَمْتُمَا أَمْرًا أَكْرَهَ عِنْدِي مِنْ إِبْطَائِكُمَا عَنْ هَذَا الأَمْرِ» وَكَسَاهُمَا حُلَّةً حُلَّةً، ثُمَّ رَاحُوا إِلَى المَسْجِدِ
হাদীস নং: ৬৬২২
আন্তর্জাতিক নং: ৭১০৫ - ৭১০৭
২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিতনা তরঙ্গায়িত হবে।
৬৬২২। আবদান (রাহঃ) ......... শাকীক ইবনে সালামা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবু মাসউদ (রাযিঃ), আবু মুসা (রাযিঃ) ও আম্মার (রাযিঃ) এর কাছে বসা ছিলাম। তখন আবু মাসউদ (রাযিঃ) বললেন, তুমি ব্যতীত তোমার সঙ্গীদের মাঝে এমন কেউ নেই, যার সম্পর্কে আমি ইচ্ছা করলে কিছু না কিছু বলতে না পারি। তবে নবী (ﷺ) এর সঙ্গ লাভ করার পর থেকে এ ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগী হওয়ার চাইতে আমার দৃষ্টিতে দূষনীয় কোন কাজ তোমার কাছ থেকে দেখিনি। তখন আাম্মার (রাযিঃ) বললেন, হে আবু মাসউদ! নবী (ﷺ) এর সাথে তোমাদের সঙ্গ লাভ করার পর থেকে এ ব্যাপারে গড়িমসি করার চাইতে আমার দৃষ্টিতে অধিক দূষনীয় কোন কাজ তোমার থেকে এবং তোমার এ সঙ্গী থেকে দেখিনি। আবু মাসউদ (রাযিঃ) ধনবান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি (তার চাকরকে) বললেন, হে বৎস! দু’জোড়া পোশাক নিয়ে এস। এরপর তিনি তার একটি আবু মুসা (রাযিঃ) কে ও অপরটি আম্মার (রাযিঃ) কে দিলেন এবং বললেন, এগুলো পরিধান করে জুমআর নামাযে যাও।
بَابُ الفِتْنَةِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِ
7105-07 - حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقِ بْنِ سَلَمَةَ، كُنْتُ جَالِسًا مَعَ أَبِي مَسْعُودٍ، وَأَبِي مُوسَى، وَعَمَّارٍ، فَقَالَ أَبُو مَسْعُودٍ: مَا مِنْ أَصْحَابِكَ أَحَدٌ إِلَّا لَوْ شِئْتُ لَقُلْتُ فِيهِ غَيْرَكَ، وَمَا رَأَيْتُ مِنْكَ شَيْئًا مُنْذُ صَحِبْتَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَعْيَبَ عِنْدِي مِنَ اسْتِسْرَاعِكَ فِي هَذَا الأَمْرِ، قَالَ عَمَّارٌ: «يَا أَبَا مَسْعُودٍ، وَمَا رَأَيْتُ مِنْكَ وَلاَ مِنْ صَاحِبِكَ هَذَا شَيْئًا مُنْذُ صَحِبْتُمَا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَعْيَبَ عِنْدِي مِنْ إِبْطَائِكُمَا فِي هَذَا الأَمْرِ» فَقَالَ أَبُو مَسْعُودٍ، وَكَانَ مُوسِرًا: يَا غُلاَمُ هَاتِ حُلَّتَيْنِ، فَأَعْطَى إِحْدَاهُمَا أَبَا مُوسَى وَالأُخْرَى عَمَّارًا، وَقَالَ: رُوحَا فِيهِ إِلَى الجُمُعَةِ