আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
الجامع الصحيح للبخاري
৭৪- আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৪ টি
হাদীস নং: ৬৪৬৭
আন্তর্জাতিক নং: ৬৯৩৬
২৯০৬. ব্যাখ্যা প্রদানকারীদের সম্পর্কে যা বর্ণনা করা হয়েছে।
৬৪৬৭। আবু আব্দুল্লাহ বুখারী (রাহঃ) ......... উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হিশাম ইবনে হাকীম (রাযিঃ) কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর জীবদ্দশায় সূরা ফুরকান পড়তে শুনেছি। আমি তার পড়ার প্রতি মনোযোগ দিলাম (আমি লক্ষ্য করলাম) যে, তিনি সূরার অনেকগুলো অক্ষর এমন পদ্ধতিতে পড়ছেন, যে পদ্ধতিতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে পড়ান নি। ফলে আমি তাকে নামাযের মধ্যেই আক্রমণ করতে উদ্যত হলাম, কিন্তু সালাম ফিরানো পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। সালাম ফিরানোর পর আমি তাকে তার চাঁদর দিয়ে অথবা বললেন, আমার চাঁদর দিয়ে জড়িয়ে নিলাম। আর বললাম, তোমাকে এ সূরা কে পড়িয়েছে? তিনি বললেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে পড়িয়েছেন। আমি তাকে বললাম, তুমি মিথ্যা বলছ। আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে এ সূরা পড়িয়েছেন, যা তোমাকে পড়তে শুনেছি।তারপর আমি তাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট টেনে নিয়ে গেলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এ ব্যক্তিকে সূরা ফুরকান এরূপ অক্ষর দিয়ে পড়তে শুনেছি, যা আপনি আমাকে পড়াননি। আর আপনি তো আমাকে সূরা ফুরকান পড়িয়েছেন। তিনি বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে উমর! তাকে ছেড়ে দাও। (আর বললেন) হে হিশাম! তুমি পড় তো। হিশাম তার কাছে সেভাবেই পড়লেন, যেভাবে তাকে তা পড়তে আমি শুনেছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এভাবেই নাযিল করা হয়েছে। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে উমর! তুমিও পড়। আমি পড়লাম। তখন তিনি বললেনঃ এভাবেও নাযিল করা হয়েছে। অতঃপর তিনি বললেনঃ এ কুরআন সাত ভাষায় (রকমে কিরাআতের দিক দিয়ে) নাযিল করা হয়েছে। তাই যে পদ্ধতিতেই সহজ হবে, সে পদ্ধতিতেই তোমরা তা পড়বে।
باب مَا جَاءَ فِي الْمُتَأَوِّلِينَ
6936 - قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَقَالَ اللَّيْثُ: حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ المِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ، وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَبْدٍ القَارِيَّ، أَخْبَرَاهُ: أَنَّهُمَا سَمِعَا عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ، يَقُولُ: سَمِعْتُ هِشَامَ بْنَ حَكِيمٍ يَقْرَأُ سُورَةَ الفُرْقَانِ فِي حَيَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَاسْتَمَعْتُ لِقِرَاءَتِهِ، فَإِذَا هُوَ يَقْرَؤُهَا عَلَى حُرُوفٍ كَثِيرَةٍ لَمْ يُقْرِئْنِيهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:18] كَذَلِكَ، فَكِدْتُ أُسَاوِرُهُ فِي الصَّلاَةِ، فَانْتَظَرْتُهُ حَتَّى سَلَّمَ، ثُمَّ لَبَّبْتُهُ بِرِدَائِهِ أَوْ بِرِدَائِي، فَقُلْتُ: مَنْ أَقْرَأَكَ هَذِهِ السُّورَةَ؟ قَالَ: أَقْرَأَنِيهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قُلْتُ لَهُ: كَذَبْتَ، فَوَاللَّهِ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْرَأَنِي هَذِهِ السُّورَةَ الَّتِي سَمِعْتُكَ تَقْرَؤُهَا، فَانْطَلَقْتُ أَقُودُهُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي سَمِعْتُ هَذَا يَقْرَأُ بِسُورَةِ الفُرْقَانِ عَلَى حُرُوفٍ لَمْ تُقْرِئْنِيهَا، وَأَنْتَ أَقْرَأْتَنِي سُورَةَ الفُرْقَانِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَرْسِلْهُ يَا عُمَرُ، اقْرَأْ يَا هِشَامُ» فَقَرَأَ عَلَيْهِ القِرَاءَةَ الَّتِي سَمِعْتُهُ يَقْرَؤُهَا، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَكَذَا أُنْزِلَتْ» ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اقْرَأْ يَا عُمَرُ» فَقَرَأْتُ، فَقَالَ: «هَكَذَا أُنْزِلَتْ» ثُمَّ قَالَ: «إِنَّ هَذَا القُرْآنَ أُنْزِلَ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ، فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ»

তাহকীক:
হাদীস নং: ৬৪৬৮
আন্তর্জাতিক নং: ৬৯৩৭
২৯০৬. ব্যাখ্যা প্রদানকারীদের সম্পর্কে যা বর্ণনা করা হয়েছে।
৬৪৬৮। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম ও ইয়াহয়া (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল হলঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি (৬ঃ ৮২), তখন তা নবী (ﷺ) এর সাহাবাদের জন্য গুরুতর মনে হল। তারা বললেন, আমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে তার ঈমানকে যুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি? তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তোমরা যেভাবে ধারণা করছ, তা তেমন নয়। বরং এটা হচ্ছে তদ্রূপ, যেমন লুকমান (আলাইহিস সালাম) তার পুত্রকে বলেছিলেনঃ হে বৎস! আল্লাহর সাথে কোন শরীক করো না, নিশ্চয়ই শিরক তো বড় যুলুম (সীমালংঘন) (৩১ঃ ১৩)।
باب مَا جَاءَ فِي الْمُتَأَوِّلِينَ
6937 - حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، ح وحَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ: {الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا} [الأنعام: 82] إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ شَقَّ ذَلِكَ عَلَى أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَالُوا: أَيُّنَا لَمْ يَظْلِمْ نَفْسَهُ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " لَيْسَ كَمَا تَظُنُّونَ، إِنَّمَا هُوَ كَمَا قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ: {يَا بُنَيَّ لاَ تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ} [لقمان: 13] "

তাহকীক:
হাদীস নং: ৬৪৬৯
আন্তর্জাতিক নং: ৬৯৩৮
২৯০৬. ব্যাখ্যা প্রদানকারীদের সম্পর্কে যা বর্ণনা করা হয়েছে।
৬৪৬৯। আবদান (রাহঃ) ......... ইতবান ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) প্রত্যূষে আমার কাছে আগমন করলেন। তখন এক ব্যক্তি বলল, মালিক ইবনে দুখশুন কোথায়? আমাদের এক ব্যক্তি বলল, সে তো মুনাফিক; সে আল্লাহ ও তার রাসূলকে ভালোবাসে না। তা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি এ কথা বলনি যে, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে। তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ যেকোনো বান্দা কিয়ামতের দিন ঐ কথা নিয়ে উপস্থিত হবে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।
باب مَا جَاءَ فِي الْمُتَأَوِّلِينَ
6938 - حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ، قَالَ: سَمِعْتُ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: غَدَا عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ رَجُلٌ: أَيْنَ مَالِكُ بْنُ الدُّخْشُنِ؟ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَّا: ذَلِكَ مُنَافِقٌ، لاَ يُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَلاَ تَقُولُوهُ: يَقُولُ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ " قَالَ: بَلَى، قَالَ: «فَإِنَّهُ لاَ يُوَافَى عَبْدٌ يَوْمَ القِيَامَةِ بِهِ، إِلَّا حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ النَّارَ»
হাদীস নং: ৬৪৭০
আন্তর্জাতিক নং: ৬৯৩৯
২৯০৬. ব্যাখ্যা প্রদানকারীদের সম্পর্কে যা বর্ণনা করা হয়েছে।
৬৪৭০। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) ......... জনৈক রাবী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন এক কারণে আবু আব্দুর রহমান ও হিব্বান ইবনে আতিয়্যার মাঝে ঝগড়া বাঁধে। আবু আব্দুর রহমান হিব্বান কে বললেন, আমি অবশ্যই জানি যে, কোন বিষয়টি আপনার সাথীকে রক্তপাতে দুঃসাহসী করে তুলেছে। –সাথী অর্থাৎ আলী (রাযিঃ)– সে বলল, সেটা কি! তোমার পিতা জীবিত না থাকুক। আবু আব্দুর রহমান বলল, তা আলী (রাযিঃ) কে বলতে শুনেছি। হিব্বান বলল, সেটা কি? আবু আব্দুর রহমান বলল, (আলী রাযিঃ র বর্ণনাঃ) যুবাইর, আবু মারছাদ এবং আমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পাঠালেন। আমরা সকলেই অশ্বারোহী ছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমরা রওযায়ে হাজ (‘খাখ' বিশুদ্ধতম) পর্যন্ত যাবে। –আবু সালামা (রাহঃ) বলেন, আবু আওয়ানা (রাহঃ) ‘হাজ’ অনুরূপই বলেছেন– তথায় একজন মহিলা রয়েছে, যার কাছে হাতিব ইবনে আবু বালতাআর তরফ থেকে (মক্কার) মুশরিকদের কাছে প্রেরিত একখানা চিঠি আছে, তোমরা তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে।
আমরা আমাদের ঘোড়ায় চড়ে রওয়ানা দিলাম। অবশেষে আমরা তাকে ঐ স্থানেই পেলাম, যে স্থানের কথা আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছিলেন। সে তার উটে চলছিল। হাতিব ইবনে আবু বালতাআ (রাযিঃ) মক্কাবাসীদের কাছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের দিকে রওয়ানা হওয়া সম্পর্কিত সংবাদ জানিয়ে পত্র লিখেছিলেন। আমরা বললাম, তোমার সাথে যে পত্র রয়েছে, তা কোথায়? সে বলল, আমার সাথে কোন পত্র নেই। আমরা তার উটকে বসালাম এবং তার হাওদায় খোঁজাখুজি করলাম। কিন্তু কিছুই পেলাম না। তখন আমার সঙ্গী দু’জন বললেন, তার সাথে তো আমরা কোন পত্র দেখছি না। আমি বললাম, আমরা অবশ্যই জানি যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অসত্য বলেননি।
তারপর আলী (রাযিঃ) কসম করে বললেনঃ ঐ সত্তার কসম! যার নামে কসম করা হয়, অবশ্যই তোমাকে চিঠি বের করে দিতে হবে, নতুবা তোমাকে উলঙ্গ করে ছাড়ব। তখন সে তার চাদরে বাঁধা কোমরের প্রতি নিবিষ্ট হল এবং (সেখান থেকে) পত্রটি বের করে দিল। তাঁরা পত্রটি নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট উপস্থিত হলেন। তখন উমর (রাযিঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনদের সাথে খিয়ানত করেছে। আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে হাতিব! এ কাজে তোমাকে কিসে প্রবৃত্ত করেছে? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কেন আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান রাখব না! আসল কথা হচ্ছে, আমি চাচ্ছিলাম যে, কওমের (মক্কাবাসী) প্রতি আমার কিছুটা অনুগ্রহসূচক কাজ হোক, যার বদৌলতে আমার পরিবারবর্গ ও মাল সম্পদ রক্ষা পায়। আপনার সাথীদের প্রত্যেকেরই সেখানে স্বগোত্রীয় এমন লোক রয়েছে, যাদের মাধ্যমে আল্লাহ তার পরিবারবর্গ ও মাল সম্পদ রক্ষার ব্যবস্থা করবেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ সে ঠিকই বলেছে। সুতরাং তোমরা তার সম্পর্কে ভালো ছাড়া মন্দ কোন মন্তব্য করো না।
বর্ণনাকারী বলেন, উমর (রাযিঃ) পূনরায় বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে আল্লাহ, তার রাসূল ও মুমিনদের সাথে খিয়ানত করেছে। আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেনঃ সে কি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নয়? তোমার কি জানা নেই? আল্লাহ তাদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ "তোমরা যা ইচ্ছা তা কর। তোমাদের জন্য জান্নাত নির্ধারিত করে ফেলেছি।" এ কথা শুনে উমর (রাযিঃ)-এর চক্ষুযুগল অশ্রুসিক্ত হয়ে গেল এবং তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই সর্বাধিক জ্ঞাত।
আবু আব্দুল্লাহ [বুখারী (রাহঃ)] বলেন, خاخ ‘খাখ' বিশুদ্ধতম। তবে আবু আওয়ানা (রাহঃ) حاج অনুরূপ বলেছেন। আর حاج বিকৃতি। আর এটি একটি স্থানের নাম। হুশায়ম (রাহঃ) خاخ বলেছেন।
আমরা আমাদের ঘোড়ায় চড়ে রওয়ানা দিলাম। অবশেষে আমরা তাকে ঐ স্থানেই পেলাম, যে স্থানের কথা আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছিলেন। সে তার উটে চলছিল। হাতিব ইবনে আবু বালতাআ (রাযিঃ) মক্কাবাসীদের কাছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের দিকে রওয়ানা হওয়া সম্পর্কিত সংবাদ জানিয়ে পত্র লিখেছিলেন। আমরা বললাম, তোমার সাথে যে পত্র রয়েছে, তা কোথায়? সে বলল, আমার সাথে কোন পত্র নেই। আমরা তার উটকে বসালাম এবং তার হাওদায় খোঁজাখুজি করলাম। কিন্তু কিছুই পেলাম না। তখন আমার সঙ্গী দু’জন বললেন, তার সাথে তো আমরা কোন পত্র দেখছি না। আমি বললাম, আমরা অবশ্যই জানি যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অসত্য বলেননি।
তারপর আলী (রাযিঃ) কসম করে বললেনঃ ঐ সত্তার কসম! যার নামে কসম করা হয়, অবশ্যই তোমাকে চিঠি বের করে দিতে হবে, নতুবা তোমাকে উলঙ্গ করে ছাড়ব। তখন সে তার চাদরে বাঁধা কোমরের প্রতি নিবিষ্ট হল এবং (সেখান থেকে) পত্রটি বের করে দিল। তাঁরা পত্রটি নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট উপস্থিত হলেন। তখন উমর (রাযিঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনদের সাথে খিয়ানত করেছে। আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে হাতিব! এ কাজে তোমাকে কিসে প্রবৃত্ত করেছে? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কেন আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান রাখব না! আসল কথা হচ্ছে, আমি চাচ্ছিলাম যে, কওমের (মক্কাবাসী) প্রতি আমার কিছুটা অনুগ্রহসূচক কাজ হোক, যার বদৌলতে আমার পরিবারবর্গ ও মাল সম্পদ রক্ষা পায়। আপনার সাথীদের প্রত্যেকেরই সেখানে স্বগোত্রীয় এমন লোক রয়েছে, যাদের মাধ্যমে আল্লাহ তার পরিবারবর্গ ও মাল সম্পদ রক্ষার ব্যবস্থা করবেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ সে ঠিকই বলেছে। সুতরাং তোমরা তার সম্পর্কে ভালো ছাড়া মন্দ কোন মন্তব্য করো না।
বর্ণনাকারী বলেন, উমর (রাযিঃ) পূনরায় বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে আল্লাহ, তার রাসূল ও মুমিনদের সাথে খিয়ানত করেছে। আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেনঃ সে কি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নয়? তোমার কি জানা নেই? আল্লাহ তাদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ "তোমরা যা ইচ্ছা তা কর। তোমাদের জন্য জান্নাত নির্ধারিত করে ফেলেছি।" এ কথা শুনে উমর (রাযিঃ)-এর চক্ষুযুগল অশ্রুসিক্ত হয়ে গেল এবং তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই সর্বাধিক জ্ঞাত।
আবু আব্দুল্লাহ [বুখারী (রাহঃ)] বলেন, خاخ ‘খাখ' বিশুদ্ধতম। তবে আবু আওয়ানা (রাহঃ) حاج অনুরূপ বলেছেন। আর حاج বিকৃতি। আর এটি একটি স্থানের নাম। হুশায়ম (রাহঃ) خاخ বলেছেন।
باب مَا جَاءَ فِي الْمُتَأَوِّلِينَ
6939 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ فُلَانٍ، قَالَ: تَنَازَعَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَحِبَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، فَقَالَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ، لِحِبَّانَ: لَقَدْ عَلِمْتُ مَا الَّذِي جَرَّأَ صَاحِبَكَ عَلَى الدِّمَاءِ، يَعْنِي عَلِيًّا، قَالَ: مَا هُوَ لَا أَبَا لَكَ؟ قَالَ: شَيْءٌ سَمِعْتُهُ يَقُولُهُ، قَالَ: مَا هُوَ؟ قَالَ: بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالزُّبَيْرَ وَأَبَا مَرْثَدٍ، وَكُلُّنَا فَارِسٌ، قَالَ: " انْطَلِقُوا حَتَّى تَأْتُوا رَوْضَةَ حَاجٍ - قَالَ أَبُو سَلَمَةَ: هَكَذَا قَالَ أَبُو عَوَانَةَ: حَاجٍ - فَإِنَّ فِيهَا امْرَأَةً مَعَهَا صَحِيفَةٌ مِنْ حَاطِبِ بْنِ أَبِي بَلْتَعَةَ إِلَى المُشْرِكِينَ، فَأْتُونِي بِهَا " فَانْطَلَقْنَا عَلَى أَفْرَاسِنَا حَتَّى أَدْرَكْنَاهَا حَيْثُ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، تَسِيرُ عَلَى بَعِيرٍ لَهَا، وَقَدْ كَانَ كَتَبَ إِلَى أَهْلِ مَكَّةَ بِمَسِيرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهِمْ، فَقُلْنَا: أَيْنَ الكِتَابُ الَّذِي مَعَكِ؟ قَالَتْ: مَا مَعِي كِتَابٌ، فَأَنَخْنَا بِهَا بَعِيرَهَا، فَابْتَغَيْنَا فِي رَحْلِهَا فَمَا وَجَدْنَا [ص:19] شَيْئًا، فَقَالَ صَاحِبَايَ: مَا نَرَى مَعَهَا كِتَابًا، قَالَ: فَقُلْتُ: لَقَدْ عَلِمْنَا مَا كَذَبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ حَلَفَ عَلِيٌّ: وَالَّذِي يُحْلَفُ بِهِ، لَتُخْرِجِنَّ الكِتَابَ أَوْ لَأُجَرِّدَنَّكِ، فَأَهْوَتِ الى حُجْزَتِهَا، وَهِيَ مُحْتَجِزَةٌ بِكِسَاءٍ، فَأَخْرَجَتِ الصَّحِيفَةَ، فَأَتَوْا بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ عُمَرُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَدْ خَانَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالمُؤْمِنِينَ، دَعْنِي فَأَضْرِبَ عُنُقَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا حَاطِبُ، مَا حَمَلكَ عَلَى مَا صَنَعْتَ» قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا لِي أَنْ لَا أَكُونَ مُؤْمِنًا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ؟ وَلَكِنِّي أَرَدْتُ أَنْ يَكُونَ لِي عِنْدَ القَوْمِ يَدٌ يُدْفَعُ بِهَا عَنْ أَهْلِي وَمَالِي، وَلَيْسَ مِنْ أَصْحَابِكَ أَحَدٌ إِلَّا لَهُ هُنَالِكَ مِنْ قَوْمِهِ مَنْ يَدْفَعُ اللَّهُ بِهِ عَنْ أَهْلِهِ وَمَالِهِ، قَالَ: «صَدَقَ، لَا تَقُولُوا لَهُ إِلَّا خَيْرًا» قَالَ: فَعَادَ عُمَرُ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَدْ خَانَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالمُؤْمِنِينَ، دَعْنِي فَلِأَضْرِبْ عُنُقَهُ، قَالَ: " أَوَلَيْسَ مِنْ أَهْلِ بَدْرٍ، وَمَا يُدْرِيكَ، لَعَلَّ اللَّهَ اطَّلَعَ عَلَيْهِمْ فَقَالَ: اعْمَلُوا مَا شِئْتُمْ، فَقَدْ أَوْجَبْتُ لَكُمُ الجَنَّةَ " فَاغْرَوْرَقَتْ عَيْنَاهُ، فَقَالَ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: " خَاخٍ أَصَحُّ، وَلَكِنْ كَذَا قَالَ أَبُو عَوَانَةَ: حَاجٍ، وَحَاجٍ تَصْحِيفٌ، وَهُوَ مَوْضِعٌ، وَهُشَيْمٌ يَقُولُ: خَاخٍ "

তাহকীক: