আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
الجامع الصحيح للبخاري
৬৪- আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৯ টি
হাদীস নং: ৫৬৫৫
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৮৪
৩২৩০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাযিঃ) বলেন, একবার নবী (ﷺ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক।
৫৬৫৫। হিব্বান ইবনে মুসা (রাহঃ) ......... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রিফাআ কুরাযী (রাযিঃ) তাঁর স্ত্রীকে তালাক দেন এবং অকাট্য তালাক দেন। এরপর আব্দুর রহমান ইবনে যাবির তাকে বিয়ে করেন। পরে তিনি নবী (ﷺ) এর কাছে এসে বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি পূর্বে রিফাআর কাছে ছিলেন এবং রিফাআ তাকে শেষ তিন তালাক দিয়ে দেন এবং তাঁকে আব্দুর রহমান ইবনে যাবির বিয়ে করেন। আল্লাহর কসম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এর কাছে তো শুধু এ কাপড়ের মত রয়েছে। (একথা বলে) তিনি তাঁর ওড়নার আঁচল ধরে উঠালেন।
রাবী বলেনঃ তখন আবু বকর (রাযিঃ) নবী (ﷺ) এর নিকট বসা ছিলেন এবং খালিদ ইবনে সাঈদ ইবনে আসও ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি লাভের অপেক্ষায় হুজরার দরজার কাছে বসা ছিলেন। তখন খালিদ (রাযিঃ) আবু বকর (রাযিঃ) কে উচ্চস্বরে ডেকে বললেনঃ হে আবু বকর, আপনি এই মহিলাকে কেন ধমক দিচ্ছেন না, যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সামনে (প্রকাশ্যে) এসব কথাবার্তা বলছে, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কেবল মুচকি হাসছিলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ সম্ভবত তুমি আবার রিফাআ (রাযিঃ) এর নিকট ফিরে যেতে চাও। তা হবে না, যতক্ষণ না তুমি তার এবং সে তোমার মিলন স্বাদ গ্রহণ করবে।
রাবী বলেনঃ তখন আবু বকর (রাযিঃ) নবী (ﷺ) এর নিকট বসা ছিলেন এবং খালিদ ইবনে সাঈদ ইবনে আসও ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি লাভের অপেক্ষায় হুজরার দরজার কাছে বসা ছিলেন। তখন খালিদ (রাযিঃ) আবু বকর (রাযিঃ) কে উচ্চস্বরে ডেকে বললেনঃ হে আবু বকর, আপনি এই মহিলাকে কেন ধমক দিচ্ছেন না, যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সামনে (প্রকাশ্যে) এসব কথাবার্তা বলছে, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কেবল মুচকি হাসছিলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ সম্ভবত তুমি আবার রিফাআ (রাযিঃ) এর নিকট ফিরে যেতে চাও। তা হবে না, যতক্ষণ না তুমি তার এবং সে তোমার মিলন স্বাদ গ্রহণ করবে।
بَابُ التَّبَسُّمِ وَالضَّحِكِ وَقَالَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلاَمُ: «أَسَرَّ إِلَيَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَضَحِكْتُ» وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: «إِنَّ اللَّهَ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَى»
6084 - حَدَّثَنَا حِبَّانُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ رِفَاعَةَ القُرَظِيَّ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ فَبَتَّ طَلاَقَهَا، فَتَزَوَّجَهَا بَعْدَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الزَّبِيرِ، فَجَاءَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:23] فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّهَا كَانَتْ عِنْدَ رِفَاعَةَ فَطَلَّقَهَا آخِرَ ثَلاَثِ تَطْلِيقَاتٍ، فَتَزَوَّجَهَا بَعْدَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الزَّبِيرِ، وَإِنَّهُ وَاللَّهِ مَا مَعَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِلَّا مِثْلُ هَذِهِ الهُدْبَةِ، لِهُدْبَةٍ أَخَذَتْهَا مِنْ جِلْبَابِهَا، قَالَ: وَأَبُو بَكْرٍ جَالِسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَابْنُ سَعِيدِ بْنِ العَاصِ جَالِسٌ بِبَابِ الحُجْرَةِ لِيُؤْذَنَ لَهُ، فَطَفِقَ خَالِدٌ يُنَادِي أَبَا بَكْرٍ: يَا أَبَا بَكْرٍ، أَلاَ تَزْجُرُ هَذِهِ عَمَّا تَجْهَرُ بِهِ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَا يَزِيدُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى التَّبَسُّمِ، ثُمَّ قَالَ: «لَعَلَّكِ تُرِيدِينَ أَنْ تَرْجِعِي إِلَى رِفَاعَةَ، لاَ، حَتَّى تَذُوقِي عُسَيْلَتَهُ، وَيَذُوقَ عُسَيْلَتَكِ»

তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৬৫৬
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৮৫
৩২৩০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে।
৫৬৫৬। ইসমাঈল (রাহঃ) ......... সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট (প্রবেশের) অনুমতি চাইলেন। তখন তার নিকট কুরাইশের কয়েকজন মহিলা প্রশ্নাদি করছিলেন এবং তাঁদের আওয়াজ তাঁর আওয়াজের উপর চড়া ছিল। যখন উমর (রাযিঃ) অনুমতি চাইলেন। তখন তাঁরা তাড়াতাড়ি পর্দার আড়ালে চলে গেলেন। নবী (ﷺ) তাকে অনুমতি দেওয়ার পর যখন তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন, তখন নবী (ﷺ) হাসছিলেন। উমর (রাযিঃ) বললেনঃ আল্লাহ আপনাকে হাসি মুখে রাখুন; ইয়া রাসূলাল্লাহ! তখনই নবী (ﷺ) বললেনঃ আমার নিকট যেসব মহিলা ছিলেন, তাদের প্রতি আমি আশ্চর্যান্বিত যে, তারা তোমার আওয়াজ শোনামাত্রই তাড়াতাড়ি পর্দার আড়ালে চলে গেলেন।
উমর (রাযিঃ) বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! এদের ভয় করার জন্য আপনিই অধিক যোগ্য ছিলেন। এরপর তিনি মহিলাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, হে নিজের জানের দুশমনরা! তোমরা কি আমাকে ভয় কর, আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে ভয় কর না? তারা জবাব দিলেনঃ আপনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে অনেক বেশী কঠিন ও কঠোর ব্যক্তি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে উমর ইবনে খাত্তাব! শোনো, সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন; যখন শয়তান পথ চলতে তোমার সম্মুখীন হয়, তখন শয়তান তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথ ধরে।
উমর (রাযিঃ) বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! এদের ভয় করার জন্য আপনিই অধিক যোগ্য ছিলেন। এরপর তিনি মহিলাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, হে নিজের জানের দুশমনরা! তোমরা কি আমাকে ভয় কর, আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে ভয় কর না? তারা জবাব দিলেনঃ আপনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে অনেক বেশী কঠিন ও কঠোর ব্যক্তি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে উমর ইবনে খাত্তাব! শোনো, সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন; যখন শয়তান পথ চলতে তোমার সম্মুখীন হয়, তখন শয়তান তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথ ধরে।
باب التَّبَسُّمِ وَالضَّحِكِ
6085 - حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الحَمِيدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ الخَطَّابِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: اسْتَأْذَنَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعِنْدَهُ نِسْوَةٌ مِنْ قُرَيْشٍ يَسْأَلْنَهُ وَيَسْتَكْثِرْنَهُ، عَالِيَةً أَصْوَاتُهُنَّ عَلَى صَوْتِهِ، فَلَمَّا اسْتَأْذَنَ عُمَرُ تَبَادَرْنَ الحِجَابَ، فَأَذِنَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَخَلَ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَضْحَكُ، فَقَالَ: أَضْحَكَ اللَّهُ سِنَّكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي؟ فَقَالَ: «عَجِبْتُ مِنْ هَؤُلاَءِ اللَّاتِي كُنَّ عِنْدِي، لَمَّا سَمِعْنَ صَوْتَكَ تَبَادَرْنَ الحِجَابَ» فَقَالَ: أَنْتَ أَحَقُّ أَنْ يَهَبْنَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْهِنَّ، فَقَالَ: يَا عَدُوَّاتِ أَنْفُسِهِنَّ، أَتَهَبْنَنِي وَلَمْ تَهَبْنَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقُلْنَ: إِنَّكَ أَفَظُّ وَأَغْلَظُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِيهٍ يَا ابْنَ الخَطَّابِ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، مَا لَقِيَكَ الشَّيْطَانُ سَالِكًا فَجًّا إِلَّا سَلَكَ فَجًّا غَيْرَ فَجِّكَ»

তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৬৫৭
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৮৬
৩২৩০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে।
৫৬৫৭। কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তায়েফে (অবরোধ করে) ছিলেন, তখন একদিন তিনি বললেনঃ ইনশাআল্লাহ আগামীকাল আমরা ফিরে যাব। নবী (ﷺ) এর কয়েকজন সাহাবী বললেনঃ আমরা তায়েফ জয় না করা পর্যন্ত স্থান ত্যাগ করব না। তখন নবী (ﷺ) বললেনঃ তবে ভোর হলেই তোমরা যুদ্ধে নেমে পড়বে। রাবী বলেনঃ তারা ভোর থেকেই তাদের সাথে ভীষণ লড়াই আরম্ভ করলেন। এতে তাদের মধ্যে বহুলোক জখম হয়ে পড়লেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ ইয়া আল্লাহ, আমরা আগামীকাল ফিরে যাবো এবং তারা সবাই তখন নীরব রইলেন। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হেসে দিলেন।
باب التَّبَسُّمِ وَالضَّحِكِ
6086 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي العَبَّاسِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: لَمَّا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالطَّائِفِ، قَالَ: «إِنَّا قَافِلُونَ غَدًا إِنْ شَاءَ اللَّهُ» فَقَالَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ نَبْرَحُ أَوْ نَفْتَحَهَا، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَاغْدُوا عَلَى القِتَالِ» قَالَ: فَغَدَوْا فَقَاتَلُوهُمْ قِتَالًا شَدِيدًا، وَكَثُرَ فِيهِمُ الجِرَاحَاتُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّا قَافِلُونَ غَدًا إِنْ شَاءَ اللَّهُ» قَالَ: فَسَكَتُوا، فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ الحُمَيْدِيُّ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ: بِالخَبَرِ كُلِّهِ

তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৬৫৮
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৮৭
৩২৩০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে।
৫৬৫৮। মুসা (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (ﷺ) এর নিকট এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি, আমি রমযানে (দিনে) আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ তুমি একটি গোলাম আযাদ করে দাও। সে বলল আমার কোনো গোলাম নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে একাধারে দু’মাস রোযা পালন কর। সে বললঃ এতেও আমি সক্ষম নই। নবী (ﷺ) বললেনঃ তবে ষাটজন মিসকীনকে খাবার খাওয়াও। সে বললঃ তারও আমার সামর্থ্য নেই। তখন নবীজীর দরবারে এক ঝুড়ি খেজুর এল।
নবী (ﷺ) বললেনঃ প্রশ্নকারী ব্যক্তিটি কোথায়? এইটি নিয়ে সাদ্কা করে দাও। লোকটি বললঃ আমার চেয়ে বেশী অভাবগ্রস্ত আর কে আছে? আল্লাহর কসম! মদীনার উভয় প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থলে এমন কোন পরিবার নেই, যে আমাদের চেয়ে বেশী অভাবগ্রস্ত। তখন নবী (ﷺ) এমনভাবে হেসে দিলেন যে, তার চোয়ালের দাঁতগুলো প্রকাশ পেল। এবং তিনি বললেনঃ তাহলে এটা তোমরাই খেয়ে নাও।
নবী (ﷺ) বললেনঃ প্রশ্নকারী ব্যক্তিটি কোথায়? এইটি নিয়ে সাদ্কা করে দাও। লোকটি বললঃ আমার চেয়ে বেশী অভাবগ্রস্ত আর কে আছে? আল্লাহর কসম! মদীনার উভয় প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থলে এমন কোন পরিবার নেই, যে আমাদের চেয়ে বেশী অভাবগ্রস্ত। তখন নবী (ﷺ) এমনভাবে হেসে দিলেন যে, তার চোয়ালের দাঁতগুলো প্রকাশ পেল। এবং তিনি বললেনঃ তাহলে এটা তোমরাই খেয়ে নাও।
باب التَّبَسُّمِ وَالضَّحِكِ
6087 - حَدَّثَنَا مُوسَى، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَتَى رَجُلٌ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: هَلَكْتُ، وَقَعْتُ عَلَى أَهْلِي فِي رَمَضَانَ، قَالَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَيْسَ لِي، قَالَ: «فَصُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» [ص:24] قَالَ: لاَ أَسْتَطِيعُ، قَالَ: «فَأَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا» قَالَ: لاَ أَجِدُ، فَأُتِيَ بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ - قَالَ إِبْرَاهِيمُ: العَرَقُ المِكْتَلُ - فَقَالَ: «أَيْنَ السَّائِلُ، تَصَدَّقْ بِهَا» قَالَ: عَلَى أَفْقَرَ مِنِّي، وَاللَّهِ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَهْلُ بَيْتٍ أَفْقَرُ مِنَّا، فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ، قَالَ: «فَأَنْتُمْ إِذًا»

তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৬৫৯
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৮৮
৩২৩০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে।
৫৬৫৯। আব্দুল আযীয ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একবার আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে হেঁটে চলছিলাম। তখন তার গায়ে একখানা গাঢ় পাড়যুক্ত নাজরানী চাদর ছিল। এক বেদুঈন তাঁকে পেয়ে চাদরখানা ধরে ভীষণ জোরে টান দিল। আমি নবী (ﷺ) এর কাঁধের উপর তাকিয়ে দেখলাম যে, জোরে চাদরখানা টানার কারণে তার কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। তারপর বেদুঈনটি বললঃ হে মুহাম্মাদ! তোমার কাছে আল্লাহর দেওয়া যে সম্পদ আছে, তা থেকে আমাকে দেওয়ার নির্দেশ দাও। তখন নবী (ﷺ) তার দিকে ফিরে হেসে দিলেন এবং তাকে কিছু দান করার নির্দেশ দিলেন।
باب التَّبَسُّمِ وَالضَّحِكِ
6088 - حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأُوَيْسِيُّ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كُنْتُ أَمْشِي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِ بُرْدٌ نَجْرَانِيٌّ غَلِيظُ الحَاشِيَةِ» ، فَأَدْرَكَهُ أَعْرَابِيٌّ فَجَبَذَ بِرِدَائِهِ جَبْذَةً شَدِيدَةً، قَالَ أَنَسٌ: «فَنَظَرْتُ إِلَى صَفْحَةِ عَاتِقِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَدْ أَثَّرَتْ بِهَا حَاشِيَةُ الرِّدَاءِ مِنْ شِدَّةِ جَبْذَتِهِ» ، ثُمَّ قَالَ: يَا مُحَمَّدُ مُرْ لِي مِنْ مَالِ اللَّهِ الَّذِي عِنْدَكَ، «فَالْتَفَتَ إِلَيْهِ فَضَحِكَ ثُمَّ أَمَرَ لَهُ بِعَطَاءٍ»
হাদীস নং: ৫৬৬০
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৮৯ - ৬০৯০
৩২৩০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে।
৫৬৬০। ইবনে নুমাইর (রাহঃ) ......... জারীর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি ইসলাম গ্রহণ করার পর থেকে নবী (ﷺ) আমাকে তার কাছে যেতে বাঁধা দেননি। তিনি আমাকে দেখামাত্রই আমার সামনে মুচকি হাসি হাসতেন। একদিন আমি অভিযোগ করে বললামঃ আমি ঘোড়ার পিঠে চেপে আঁকড়ে ধরে বসে থাকতে পারি না। তখন তিনি আমার বুকে হাত রেখে দুআ করলেনঃ হে আল্লাহ! তাকে দৃঢ়মনা করে দিন এবং তাকে হেদায়েতকারী ও হেদায়েতপ্রাপ্ত বানিয়ে দিন।
باب التَّبَسُّمِ وَالضَّحِكِ
حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ مَا حَجَبَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُنْذُ أَسْلَمْتُ، وَلاَ رَآنِي إِلاَّ تَبَسَّمَ فِي وَجْهِي.
وَلَقَدْ شَكَوْتُ إِلَيْهِ أَنِّي لاَ أَثْبُتُ عَلَى الْخَيْلِ، فَضَرَبَ بِيَدِهِ فِي صَدْرِي وَقَالَ " اللَّهُمَّ ثَبِّتْهُ وَاجْعَلْهُ هَادِيًا مَهْدِيًّا ".
وَلَقَدْ شَكَوْتُ إِلَيْهِ أَنِّي لاَ أَثْبُتُ عَلَى الْخَيْلِ، فَضَرَبَ بِيَدِهِ فِي صَدْرِي وَقَالَ " اللَّهُمَّ ثَبِّتْهُ وَاجْعَلْهُ هَادِيًا مَهْدِيًّا ".

তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৬৬১
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৯১
৩২৩০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে।
৫৬৬১। মুহাম্মাদ ইবনে মুসান্না (রাহঃ) ......... যায়নাব বিনতে উম্মে সালামা (রাযিঃ) তার মাতা উম্মে সালামা রাঃ থেকে বর্ণিত যে, একবার উম্মে সুলায়ম (রাযিঃ) বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ তো সত্য কথা বলতে লজ্জা করেন না। মেয়েলোকের স্বপ্নদোষ হলে তাদেরও কি গোসল করতে হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যদি সে পানি (বীর্য) দেখতে পায়। তখন উম্মে সালামা (রাযিঃ) হেসে দিলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেনঃ মেয়ে লোকেরও কি স্বপ্নদোষ হতে পারে? নবী (ﷺ) বললেনঃ তা না হলে, সন্তানের মধ্যে সাদৃশ্য হয় কেমন করে?
باب التَّبَسُّمِ وَالضَّحِكِ
6091 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أُمِّ سَلَمَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ: أَنَّ أُمَّ سُلَيْمٍ قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ اللَّهَ لاَ يَسْتَحِي مِنَ الحَقِّ، هَلْ عَلَى المَرْأَةِ غُسْلٌ إِذَا احْتَلَمَتْ؟ قَالَ: «نَعَمْ، إِذَا رَأَتِ المَاءَ» فَضَحِكَتْ أُمُّ سَلَمَةَ، فَقَالَتْ: أَتَحْتَلِمُ المَرْأَةُ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَبِمَ شَبَهُ الوَلَدِ»

তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৬৬২
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৯২
৩২৩০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে।
৫৬৬২। ইয়াহয়া ইবনে সুলাইমান (রাহঃ) ......... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি নবী (ﷺ) কে এমনভাবে মুখভরে হাসতে দেখিনি যে, তার আলা জিহ্বা দেখা যেত। তিনি তো মুচকি হাসতেন।
باب التَّبَسُّمِ وَالضَّحِكِ
6092 - حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا عَمْرٌو، أَنَّ أَبَا النَّضْرِ، حَدَّثَهُ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُسْتَجْمِعًا قَطُّ ضَاحِكًا، حَتَّى أَرَى مِنْهُ لَهَوَاتِهِ، إِنَّمَا كَانَ يَتَبَسَّمُ»
হাদীস নং: ৫৬৬৩
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৯৩
৩২৩০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে।
৫৬৬৩। মুহাম্মাদ ইবনে মাহবুব ও খলীফা (রাহঃ) ......... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী (ﷺ) এর নিকট জুমআর দিন মদীনায় এল, যখন তিনি খুতবা দিচ্ছিলেন। সে বললঃ বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে, আপনি বৃষ্টিপাতের জন্য আপনার রবের নিকট দুআ করুন। তখন নবীজী আকাশের দিকে তাকালেন, তখন আমরা আকাশে কোন মেঘ দেখছিলাম না। তখন তিনি বৃষ্টিপাতের জন্য দুআ করলেন। এ সময় মেঘ এসে মিলিত হতে লাগল। তারপর এমন বৃষ্টিপাত হল যে, মদীনার খাল-নালাগুলো প্রবাহিত হতে লাগল এবং ক্রমাগত পরবর্তী জুমআ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে থাকল, মাঝে আর বিরতি হয়নি।
পরবর্তী জুমআয় যখন নবী (ﷺ) খুতবা দিচ্ছিলেন, তখন ঐ ব্যক্তি অথবা অন্য এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, আমরা তো ডুবে গেছি। আপনি আপনার রবের কাছে দুআ করুন, যেন তিনি আমাদের উপর থেকে বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দেন। তখন তিনি হেসে দিলেন এবং দু’বার অথবা তিনবার দুআ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! (বৃষ্টি) আশেপাশে নিয়ে যান, আমাদের উপর নয়। তখন মেঘপুঞ্জ দূর হয়ে গিয়ে মদীনার আশে-পাশে বর্ষণ করতে লাগল। আমাদের উপর আর বর্ষিত হল না। এতে আল্লাহ তাঁর নবী (ﷺ) এর মুজিযা ও তার দুআ কবুল হওয়ার নিদর্শন দেখান।
পরবর্তী জুমআয় যখন নবী (ﷺ) খুতবা দিচ্ছিলেন, তখন ঐ ব্যক্তি অথবা অন্য এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, আমরা তো ডুবে গেছি। আপনি আপনার রবের কাছে দুআ করুন, যেন তিনি আমাদের উপর থেকে বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দেন। তখন তিনি হেসে দিলেন এবং দু’বার অথবা তিনবার দুআ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! (বৃষ্টি) আশেপাশে নিয়ে যান, আমাদের উপর নয়। তখন মেঘপুঞ্জ দূর হয়ে গিয়ে মদীনার আশে-পাশে বর্ষণ করতে লাগল। আমাদের উপর আর বর্ষিত হল না। এতে আল্লাহ তাঁর নবী (ﷺ) এর মুজিযা ও তার দুআ কবুল হওয়ার নিদর্শন দেখান।
باب التَّبَسُّمِ وَالضَّحِكِ
6093 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَحْبُوبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، ح وَقَالَ لِي خَلِيفَةُ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَجُلًا جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، وَهُوَ يَخْطُبُ بِالْمَدِينَةِ، فَقَالَ: قَحَطَ المَطَرُ، فَاسْتَسْقِ رَبَّكَ. فَنَظَرَ إِلَى السَّمَاءِ وَمَا نَرَى مِنْ سَحَابٍ، فَاسْتَسْقَى، فَنَشَأَ السَّحَابُ بَعْضُهُ إِلَى بَعْضٍ، ثُمَّ مُطِرُوا حَتَّى سَالَتْ مَثَاعِبُ المَدِينَةِ، فَمَا زَالَتْ إِلَى الجُمُعَةِ المُقْبِلَةِ مَا تُقْلِعُ، ثُمَّ قَامَ ذَلِكَ الرَّجُلُ أَوْ غَيْرُهُ، وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، فَقَالَ: غَرِقْنَا، فَادْعُ رَبَّكَ يَحْبِسْهَا عَنَّا، فَضَحِكَ ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا» مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، فَجَعَلَ السَّحَابُ يَتَصَدَّعُ عَنِ المَدِينَةِ يَمِينًا وَشِمَالًا، يُمْطَرُ مَا حَوَالَيْنَا وَلاَ يُمْطِرُ مِنْهَا شَيْءٌ [ص:25]، يُرِيهِمُ اللَّهُ كَرَامَةَ نَبِيِّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَإِجَابَةَ دَعْوَتِهِ

তাহকীক: