আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৬২- চিকিৎসা - তদবীরের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৫৩০৩
আন্তর্জাতিক নং: ৫৭০৯ - ৫৭১২
৩০২২. রোগীর মুখের ভিতর ঔষধ ঢেলে দেয়া
৫৩০৩। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) ও আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবু বকর (রাযিঃ) নবী কারীম (ﷺ)- এর মৃতদেহ মুবারকে চুমু নিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন আয়েশা (রাযিঃ) আরো বলেন, নবী কারীম (ﷺ)- এর অসুখের সময় আমরা তার মুখে ঔষধ ঢেলে দিলাম। তখন তিনি আমাদের ইশারা দিতে থাকলেন যে, তোমরা আমার মুখে ঔষধ ঢেল না। আমরা মনে করলাম এটা ঔষধের প্রতি একজন রোগীর অরুচির প্রকাশ মাত্র। এরপর তিনি যখন সুস্থবোধ করলেন তখন বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে আমার মুখে ঔষধ ঢেলে দিতে নিষেধ করিনি? আমরা বললামঃ আমরাতো ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারণ অনীহা মনে করেছিলাম। তখন তিনি বললেন আমি এখন যাদের এ ঘরে দেখতে পাচ্ছি তাদের সকলের মুখেই ঔষুধ ঢালা হবে। আব্বাস (রাযিঃ) ছাড়া কেউ বাদ যাবে না। কেননা, তিনি তোমাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন না।
بَابُ اللَّدُودِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنِي مُوسَى بْنُ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَائِشَةَ، أَنَّ أَبَا بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ قَبَّلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ مَيِّتٌ. قَالَ وَقَالَتْ عَائِشَةُ لَدَدْنَاهُ فِي مَرَضِهِ، فَجَعَلَ يُشِيرُ إِلَيْنَا، أَنْ لاَ تَلُدُّونِي. فَقُلْنَا كَرَاهِيَةُ الْمَرِيضِ لِلدَّوَاءِ. فَلَمَّا أَفَاقَ قَالَ " أَلَمْ أَنْهَكُمْ أَنْ تَلُدُّونِي ". قُلْنَا كَرَاهِيَةَ الْمَرِيضِ لِلدَّوَاءِ. فَقَالَ " لاَ يَبْقَى فِي الْبَيْتِ أَحَدٌ إِلاَّ لُدَّ ـ وَأَنَا أَنْظُرُ ـ إِلاَّ الْعَبَّاسَ فَإِنَّهُ لَمْ يَشْهَدْكُمْ ".
হাদীস নং: ৫৩০৪
আন্তর্জাতিক নং: ৫৭১৩
৩০২২. রোগীর মুখের ভিতর ঔষধ ঢেলে দেয়া
৫৩০৪। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... উম্মে কায়স (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার এক পুত্র সন্তানকে নিয়ে নবী কারীম (ﷺ)- এর নিকট গেলাম। ছেলেটির আলাজিহ্বা ফোলার কারণে আমি তা দাবিয়ে দিয়েছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ এ ধরনের রোগ-ব্যাধি দমনে তোমরা নিজেদের সন্তানদের কেন কষ্ট দিয়ে থাক? তোমরা ভারতীয় চন্দন কাঠ ব্যবহার কর। কেননা তাতে সাত রকমের নিরাময় বিদ্যমান। তন্মধ্যে আছে পাজরের ব্যাথা। আলাজিহ্বা ফোলার কারণে এটির ধোয়া নাক দিয়ে টেনে নেয়া যায়। পাজরের ব্যথার রোগীকে তা সেবন করান যায়।*
সুফিয়ান বলেনঃ আমি যুহরীকে বলতে শুনেছি যে, তিনি আমাদের কাছে দুটির কথা বর্ণনা করেছেন। আর পাঁচটির কথা বর্ণনা করেননি। বর্ণনাকারী আলী বলেনঃ আমি সুফিয়ানকে বললাম মা‘মার স্মরণ রাখতে পারেন নি। তিনি বলেছেনঃ علقت عَلَيْهِ আর যুহরী তো বলেছেন أَعْلَقْتُ عَنْهُ শব্দ দ্বারা। আমি তার মুখ থেকে শুনে মুখস্থ করেছি। আর সুফিয়ানের রেওয়াতে তিনি ছেলেটির অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন যে, আঙ্গুলের সাহায্যে যার তালু দাবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় সুফিয়ান নিজের তালুতে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে দেখিয়েছেন অর্থাৎ তিনি তাঁর আঙ্গুলের দ্বারা তালুকে তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু أَعْلِقُوا عَنْهُ شَيْئًا এভাবে কেউ বর্ণনা করেন নি।
*ঘষে পানি মিশিয়ে তা সেবন করা যেতে পারে।
بَابُ اللَّدُودِ
5713 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أُمِّ قَيْسٍ، قَالَتْ: دَخَلْتُ بِابْنٍ لِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَدْ أَعْلَقْتُ عَلَيْهِ مِنَ العُذْرَةِ، فَقَالَ: " عَلَى مَا تَدْغَرْنَ أَوْلاَدَكُنَّ بِهَذَا العِلاَقِ، عَلَيْكُنَّ بِهَذَا العُودِ الهِنْدِيِّ، فَإِنَّ فِيهِ سَبْعَةَ أَشْفِيَةٍ، مِنْهَا ذَاتُ الجَنْبِ: يُسْعَطُ مِنَ العُذْرَةِ، وَيُلَدُّ مِنْ ذَاتِ الجَنْبِ " فَسَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ يَقُولُ: بَيَّنَ لَنَا اثْنَيْنِ، وَلَمْ يُبَيِّنْ لَنَا خَمْسَةً، قُلْتُ لِسُفْيَانَ: فَإِنَّ مَعْمَرًا يَقُولُ: أَعْلَقْتُ عَلَيْهِ؟ قَالَ: لَمْ يَحْفَظْ، إِنَّمَا قَالَ: أَعْلَقْتُ عَنْهُ، حَفِظْتُهُ مِنْ فِي الزُّهْرِيِّ، وَوَصَفَ سُفْيَانُ الغُلاَمَ يُحَنَّكُ بِالإِصْبَعِ، وَأَدْخَلَ سُفْيَانُ فِي حَنَكِهِ، إِنَّمَا يَعْنِي رَفْعَ حَنَكِهِ بِإِصْبَعِهِ، وَلَمْ يَقُلْ: أَعْلِقُوا عَنْهُ شَيْئًا
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৩০৫
আন্তর্জাতিক নং: ৫৭১৪
৩০২২. রোগীর মুখের ভিতর ঔষধ ঢেলে দেয়া
৫৩০৫। বিশর ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) ......... নবী করীম (ﷺ) -এর সহধর্মিণী ‘আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর রোগ-যন্ত্রণা বেড়ে গেল এবং তীব্র আকার ধারণ করল, তখন তিনি তার সহধর্মিণীগণের কাছে অনুমতি চাইলেন যে, তিনি যেন আমার গৃহে অসুস্থকালীন সময় অবস্থান করতে পারেন। এরপর তাঁরা অনুমতি দিলে তিনি দু’ব্যক্তি অর্থাৎ ‘আব্বাস (রাযিঃ) ও আরেকজনের সাহায্যে এভাবে বেরিয়ে আসলেন যে, যমীনের উপর তাঁর দু’পা হেঁচড়াতে ছিলেন। আমি ইবনে ‘আব্বাস (রাযিঃ) কে হাদীসটি অবহিত করলে তিনি বলেনঃ আপনি কি জানেন আরেক ব্যক্তি যার নাম ‘আয়েশা (রাযিঃ) উল্লেখ করেননি, তিনি কে ছিলেন? আমি উত্তর দিলামঃ না। তিনি বললেনঃ ‘আলী (রাযিঃ)।

আয়েশা (রাযিঃ) বলেনঃ যখন তাঁর রোগ-যন্ত্রণা আরো তীব্র হল তখন তিনি বললেন, যে সব মশকের মুখ এখনো খোলা হয়নি এমন সাত মশক পানি আমার গায়ের উপর ঢেলে দাও। আমি লোকজনের কাছে কিছু অসীয়ত করে আসার ইচ্ছা পোষণ করছি। তিনি বলেন, তখন আমরা তাকে তার সহধর্মিণী হাফসা (রাযিঃ) -এর একটি কাপড় কাচার জায়গায় নিয়ে গিয়ে বসালাম। এরপর তার গায়ের উপর সেই মশকগুলো থেকে পানি ঢালতে লাগলাম। অবশেষে তিনি আমাদের দিকে ইশারা দিলেন যে, তোমরা কাজ সমাধা করেছ। তিনি বলেনঃ এরপর লোকজনের দিকে বেরিয়ে গেলেন। আর তাদের নিরে নামায আদায় করলেন এবং তাদের সামনে খুতবা দিলেন।
بَابُ اللَّدُودِ
5714 - حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، وَيُونُسُ: قَالَ الزُّهْرِيُّ: أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ: أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ: لَمَّا ثَقُلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاشْتَدَّ وَجَعُهُ، اسْتَأْذَنَ أَزْوَاجَهُ فِي أَنْ يُمَرَّضَ فِي بَيْتِي، فَأَذِنَّ لَهُ، فَخَرَجَ بَيْنَ رَجُلَيْنِ تَخُطُّ رِجْلاَهُ فِي الأَرْضِ، بَيْنَ عَبَّاسٍ وَآخَرَ، فَأَخْبَرْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، قَالَ: هَلْ تَدْرِي مَنِ الرَّجُلُ الآخَرُ الَّذِي لَمْ تُسَمِّ عَائِشَةُ؟ قُلْتُ: لاَ، قَالَ: هُوَ عَلِيٌّ، قَالَتْ عَائِشَةُ: فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ مَا دَخَلَ بَيْتَهَا، وَاشْتَدَّ بِهِ وَجَعُهُ: «هَرِيقُوا عَلَيَّ مِنْ سَبْعِ قِرَبٍ لَمْ تُحْلَلْ أَوْكِيَتُهُنَّ، لَعَلِّي أَعْهَدُ إِلَى النَّاسِ» قَالَتْ: فَأَجْلَسْنَاهُ فِي مِخْضَبٍ لِحَفْصَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ طَفِقْنَا نَصُبُّ عَلَيْهِ مِنْ تِلْكَ القِرَبِ، حَتَّى جَعَلَ يُشِيرُ إِلَيْنَا: «أَنْ قَدْ فَعَلْتُنَّ» قَالَتْ: وَخَرَجَ إِلَى النَّاسِ، فَصَلَّى لَهُمْ وَخَطَبَهُمْ