আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১৪ টি

হাদীস নং: ৩৯৮৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩২৪
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ। মুসা ইবনে উকবা (রাযিঃ)- এর মতে এ যুদ্ধ অষ্টম হিজরীর শাওয়াল মাসে সংঘটিত হয়েছে
৩৯৮৮। হুমাইদী (রাহঃ) .... উম্মে সালামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমার কাছে এক হিজড়া ব্যক্তি বসা ছিল, এমন সময়ে নবী কারীম (ﷺ) আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। আমি শুনলাম, সে (হিজড়া ব্যক্তি) আব্দুল্লাহ ইবনে আবু উমাইয়া (রাযিঃ)-কে বলছে, হে আব্দুল্লাহ! কি বলো, আগামীকাল যদি আল্লাহ্ তোমাদেরকে তায়েফের উপর বিজয় দান করেন তা হলে গায়লানের কন্যাকে অবশ্যই তুমি লুফে নেবে। কেননা সে (এতই স্থুলদেহ ও কোমল যে), সামনের দিকে আসার সময়ে তার পিঠে চারটি ভাঁজ পড়ে আবার পিঠ ফিরালে সেখানে আটটি ভাঁজ পড়ে। [উম্মে সালামা (রাযিঃ) বলেন] তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেনঃ এদেরকে (হিজড়াদেরকে) তোমাদের কাছে প্রবেশ করতে দিও না। ইবনে উয়াইনা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, ইবনে জুরায়জ (রাযিঃ) বলেছেন, হিজড়া লোকটির নাম ছিলো হীত।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ فِي شَوَّالٍ سَنَةَ ثَمَانٍ قَالَهُ مُوسَى بْنُ عُقَبْةَ
4324 - حَدَّثَنَا الحُمَيْدِيُّ، سَمِعَ سُفْيَانَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أُمِّهَا أُمِّ سَلَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعِنْدِي مُخَنَّثٌ، فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أُمَيَّةَ: يَا عَبْدَ اللَّهِ، أَرَأَيْتَ إِنْ فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْكُمُ الطَّائِفَ غَدًا، فَعَلَيْكَ بِابْنَةِ غَيْلاَنَ، فَإِنَّهَا تُقْبِلُ بِأَرْبَعٍ، وَتُدْبِرُ بِثَمَانٍ، وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لاَ يَدْخُلَنَّ هَؤُلاَءِ عَلَيْكُنَّ» قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ: وَقَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ: المُخَنَّثُ: هِيتٌ،
হাদীস নং: ৩৯৮৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩২৪
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৮৯। মাহমুদ (রাহঃ) .... হিশাম (রাহঃ) থেকে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি এ হাদীসে এতটুকু বৃদ্ধি করেছেন যে, সেদিন তিনি [নবী কারীম (ﷺ) ] তায়িফ অবরোধ করা অবস্থায় ছিলেন।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4324 - حَدَّثَنَا مَحْمُودٌ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ: بِهَذَا، وَزَادَ وَهُوَ مُحَاصِرُ الطَّائِفِ يَوْمَئِذٍ
হাদীস নং: ৩৯৯০
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩২৫
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯০। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তায়েফ অবরোধ করলেন। (এবং দীর্ঘ পনেরোরও অধিক দিন পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে গেলেন) কিন্তু তাদের কাছ থেকে কিছুই হাসিল করতে পারেননি। তাই তিনি বললেন, ইনশাআল্লাহ্ আমরা (অবরোধ উঠিয়ে মদীনার দিকে) ফিরে যাবো। কথাটি সাহাবীদের মনে ভারী অনুভূত হল। তাঁরা বললেন, আমরা চলে যাবো, তায়েফ বিজয় করবো না? বর্ণনাকারী একবার কাফিলুন শব্দের স্থলে নাকফুলো (অর্থাৎ আমরা ‘যুদ্ধবিহীন ফিরে যাবো’) বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ঠিক আছে, সকালে গিয়ে লড়াই করো। তাঁরা (পরদিন) সকালে লড়াই করতে গেলেন, এতে তাঁদের অনেকেই আহত হলেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ইনশাআল্লাহ্ আমরা আগামীকাল ফিরে চলে যাবো। তখন সাহাবাদের কাছে কথাটি মনঃপূত হল। এ অবস্থা দেখে নবী কারীম (ﷺ) হেসে দিলেন। বর্ণনাকারী সুফিয়ান (রাহঃ) একবার বর্ণনা করেছেন যে, তিনি মুচকি হাসি হেসেছেন। হুমায়দী (রাহঃ) বলেন, সুফিয়ান আমাদিগকে এ হাদীসের পূর্ণ সূত্রটিতে ‘খবর’ শব্দ প্রয়োগ করে বর্ণনা করেছেন (অর্থাৎ কোথাও ‘আন’ শব্দ প্রয়োগ করেন নি)।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4325 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي العَبَّاسِ الشَّاعِرِ الأَعْمَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: لَمَّا حَاصَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الطَّائِفَ، فَلَمْ يَنَلْ مِنْهُمْ شَيْئًا، قَالَ: «إِنَّا قَافِلُونَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ» . فَثَقُلَ عَلَيْهِمْ، وَقَالُوا: نَذْهَبُ وَلاَ نَفْتَحُهُ، وَقَالَ مَرَّةً: «نَقْفُلُ» . فَقَالَ: «اغْدُوا عَلَى القِتَالِ» . فَغَدَوْا فَأَصَابَهُمْ جِرَاحٌ، فَقَالَ: «إِنَّا قَافِلُونَ غَدًا إِنْ شَاءَ اللَّهُ» . فَأَعْجَبَهُمْ، فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً، فَتَبَسَّمَ، قَالَ: قَالَ الحُمَيْدِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الخَبَرَ كُلَّهُ
হাদীস নং: ৩৯৯১
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩২৬
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯১। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আবু উসমান [নাহদী (রাহঃ)] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হাদীসটি শুনেছি সা‘দ থেকে, যিনি আল্লাহর পথে গিয়ে সর্বপ্রথম তীর নিক্ষেপ করেছিলেন এবং আবু বকর (রাযিঃ) থেকেও শুনেছি যিনি (তায়েফ অবরোধকালে) সেখানকার স্থানীয় কয়েকজনসহ তায়েফের পাঁচিলের উপর চড়ে নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে এসেছিলেন। তাঁরা দু’জনই বলেছেন, আমরা নবী কারীম (ﷺ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি তার জানাথাকা সত্ত্বেও অন্যকে নিজের পিতা বলে দাবি করে, তার জন্য জান্নাত হারাম।
হিশাম (রাহঃ) বলেন, মা‘মার (রাহঃ) আমাদের কাছে আসিম-আবুল আলিয়া (রাহঃ) অথবা আবু উসমান নাহদী (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমি সা‘দ এবং আবু বকর (রাযিঃ)-এর মাধ্যমে নবী কারীম (ﷺ) থেকে হাদীসটি শুনেছি। আসিম (রাহঃ) বলেন, আমি (আবুল আলিয়া অথবা আবু উসমান) (রাহঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম, নিশ্চয় আপনাকে হাদীসটি এমন দু’জন রাবী বর্ণনা করেছেন যাদেরকে আপনি আপনার নিশ্চয়তার জন্য যথেষ্ট মনে করেন। তিনি উত্তরে বললেন, অবশ্যই, কেননা তাদের একজন হলেন সেই ব্যক্তি যিনি আল্লাহর রাস্তায় সর্বপ্রথম তীর নিক্ষেপ করেছিলেনl আর অপরজন হলেন যিনি তায়েফের (নগরপাঁচিল টপকিয়ে) এসে নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে সাক্ষাতকারী তেইশ জনের একজন।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4326 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَاصِمٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا عُثْمَانَ، قَالَ: سَمِعْتُ سَعْدًا، وَهُوَ أَوَّلُ مَنْ رَمَى بِسَهْمٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، وَأَبَا بَكْرَةَ، وَكَانَ تَسَوَّرَ حِصْنَ الطَّائِفِ فِي أُنَاسٍ فَجَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالاَ: سَمِعْنَا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ، وَهُوَ يَعْلَمُ فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ»
وَقَالَ [ص:157] هِشَامٌ: وَأَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي العَالِيَةِ، أَوْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، قَالَ: سَمِعْتُ سَعْدًا وَأَبَا بَكْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: عَاصِمٌ قُلْتُ: " لَقَدْ شَهِدَ عِنْدَكَ رَجُلاَنِ حَسْبُكَ بِهِمَا، قَالَ: أَجَلْ، أَمَّا أَحَدُهُمَا فَأَوَّلُ مَنْ رَمَى بِسَهْمٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، وَأَمَّا الآخَرُ فَنَزَلَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَالِثَ ثَلاَثَةٍ وَعِشْرِينَ مِنَ الطَّائِفِ "
হাদীস নং: ৩৯৯২
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩২৮
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯২। মুহাম্মাদ ইবনে আলা (রাহঃ) .... আবু মুসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) বিলাল (রাযিঃ)- সহ মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী জিরানা নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তখন আমি তাঁর কাছে ছিলাম। এমন সময়ে নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে এক বেদুঈন এসে বলল, আপনি আমাকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন তা পূরণ করবেন না? তিনি তাঁকে বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ করো। সে বললো, সুসংবাদ গ্রহণ কর কথাটি তো আপনি আমাকে অনেকবারই বলেছেন। তখন তিনি আবু মুসা ও বিলাল (রাযিঃ)- এর দিকে ফিরে সক্রোধে বললেন, লোকটি সুসংবাদ ফিরিয়ে দিয়েছে। তোমরা দু’জন তা গ্রহণ করো। তাঁরা উভয়ে বললেন, আমরা তা গ্রহণ করলাম।
এরপর তিনি পানি ভরে একটি পাত্র আনতে বললেন। (পানি আনা হল) তিনি এর মধ্যে নিজের উভয় হাত ও মুখমণ্ডল ধুয়ে কুলি করলেন। তারপর [আবু মুসা ও বিলাল (রাযিঃ)-কে] বললেন, তোমরা উভয়ে এ থেকে পান করো এবং নিজেদের মুখমণ্ডলি ও বুকে ছিটিয়ে দাও। আর সুসংবাদ গ্রহণ করো। তাঁরা উভয়ে পাত্রটি তুলে নিয়ে যথা নির্দেশ কাজ করলেন। এমন সময় উম্মে সালামা (রাযিঃ) পর্দার আড়াল থেকে ডেকে বললেন, তোমাদের মায়ের জন্যও কিছু অবশিষ্ট রেখে দিও। অতএব তাঁরা এ থেকে অবশিষ্ট কিছু উম্মে সালামা (রাযিঃ)- এর জন্য রেখে দিলেন।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4328 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ العَلاَءِ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كُنْتُ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ نَازِلٌ بِالْجِعْرَانَةِ بَيْنَ مَكَّةَ وَالمَدِينَةِ، وَمَعَهُ بِلاَلٌ فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ: أَلاَ تُنْجِزُ لِي مَا وَعَدْتَنِي؟ فَقَالَ لَهُ: «أَبْشِرْ» فَقَالَ: قَدْ أَكْثَرْتَ عَلَيَّ مِنْ أَبْشِرْ، فَأَقْبَلَ عَلَى أَبِي مُوسَى وَبِلاَلٍ كَهَيْئَةِ الغَضْبَانِ، فَقَالَ: «رَدَّ البُشْرَى، فَاقْبَلاَ أَنْتُمَا» قَالاَ: قَبِلْنَا، ثُمَّ دَعَا بِقَدَحٍ فِيهِ مَاءٌ، فَغَسَلَ يَدَيْهِ وَوَجْهَهُ فِيهِ وَمَجَّ فِيهِ، ثُمَّ قَالَ: «اشْرَبَا مِنْهُ، وَأَفْرِغَا عَلَى وُجُوهِكُمَا وَنُحُورِكُمَا وَأَبْشِرَا» . فَأَخَذَا القَدَحَ فَفَعَلاَ، فَنَادَتْ أُمُّ سَلَمَةَ مِنْ وَرَاءِ السِّتْرِ: أَنْ أَفْضِلاَ لِأُمِّكُمَا، فَأَفْضَلاَ لَهَا مِنْهُ طَائِفَةً
হাদীস নং: ৩৯৯৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩২৯
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯৩। ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) .... সাফওয়ান ইবনে ইয়া‘লা ইবনে উমাইয়া (রাহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইয়া‘লা (রাযিঃ) (অনেক সময়) বলতেন যে, আহা, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর উপর ওহী অবতীর্ণ হওয়ার মুহূর্তে যদি তাঁকে দেখতে পেতাম। ইয়া‘লা (রাযিঃ) বলেন, এরই মধ্যে একদা নবী কারীম (ﷺ) জি'রানা নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তাঁর (মাথার) উপর একটি কাপড় টানিয়ে ছায়া করে দেয়া হয়েছিল। আর সেখানে তাঁর সঙ্গে সাহাবীদের কয়েকজনও উপস্থিত ছিলেন।
এমন সময় তাঁর কাছে এক বেদুঈন আসলো। তার গায়ে খুশবু মাখানো ছিলো এবং পরনে ছিলো একটি জোব্বা। সে বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন যে গায়ে খুশবু মাখানোর পর জোব্বা পরিধান করা অবস্থায় উমরা আদায়ের জন্য ইহরাম বেঁধেছে? [প্রশ্নকারীর জবাব দেয়ার পূর্বেই উমর (রাযিঃ) দেখলেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর চেহারায় ওহী অবতীর্ণ হওয়ার চিহ্ন দেখা যাচ্ছে] তাই উমর (রাযিঃ) হাত দিয়ে ইশারা করে ইয়া‘লা (রাযিঃ)-কে আসতে বললেন।
ইয়া‘লা (রাযিঃ) এলে উমর (রাযিঃ) তাঁর মাথাটি (ছায়ার নীচে) ঢুকিয়ে দিলেন। তখন তিনি (ইয়া‘লা) দেখতে পেলেন যে, নবী কারীম (ﷺ)- এর চেহারা লাল বর্ণ হয়ে রয়েছে। আর ভিতরে শ্বাস দ্রুত যাতায়াত করছে। এ অবস্থা কিছুক্ষণ পর্যন্ত ছিল, তারপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলো। তখন তিনি নবী কারীম (ﷺ) বললেন, সে লোকটি কোথায়, কিছুক্ষণ আগে যে আমাকে উমরার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল। এরপর লোকটিকে খুঁজে আনা হলে তিনি বললেনঃ তোমার গায়ে যে খুশবু রযেছে তা তুমি তিনবার ধুয়ে ফেল এবং জোব্বাটি খুলে ফেল। তারপর হজ্জ আদায়ে যা কিছু করে থাক উমরাতেও সেগুলোই পালন কর।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4329 - حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، أَنَّ صَفْوَانَ بْنَ يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ، أَخْبَرَهُ: أَنَّ يَعْلَى كَانَ يَقُولُ: لَيْتَنِي أَرَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ يُنْزَلُ عَلَيْهِ، قَالَ: فَبَيْنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْجِعْرَانَةِ وَعَلَيْهِ ثَوْبٌ قَدْ أُظِلَّ بِهِ، مَعَهُ فِيهِ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ، إِذْ جَاءَهُ أَعْرَابِيٌّ عَلَيْهِ جُبَّةٌ مُتَضَمِّخٌ بِطِيبٍ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَيْفَ تَرَى فِي رَجُلٍ أَحْرَمَ بِعُمْرَةٍ فِي جُبَّةٍ بَعْدَمَا تَضَمَّخَ بِالطِّيبِ؟ فَأَشَارَ عُمَرُ إِلَى يَعْلَى بِيَدِهِ: أَنْ تَعَالَ، فَجَاءَ يَعْلَى فَأَدْخَلَ رَأْسَهُ، فَإِذَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُحْمَرُّ الوَجْهِ، يَغِطُّ كَذَلِكَ سَاعَةً، ثُمَّ سُرِّيَ عَنْهُ، فَقَالَ: «أَيْنَ الَّذِي يَسْأَلُنِي عَنِ العُمْرَةِ آنِفًا» فَالْتُمِسَ الرَّجُلُ فَأُتِيَ بِهِ، فَقَالَ: «أَمَّا الطِّيبُ الَّذِي بِكَ فَاغْسِلْهُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ، وَأَمَّا الجُبَّةُ فَانْزِعْهَا، ثُمَّ اصْنَعْ فِي عُمْرَتِكَ كَمَا تَصْنَعُ فِي حَجِّكَ»
হাদীস নং: ৩৯৯৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৩০
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯৪। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে যায়দ ইবনে আসিম (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনায়নের দিবসে আল্লাহ্ যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে গনীমতের সম্পদ দান করলেন তখন তিনি ঐগুলো সেসব মানুষের মধ্যে বন্টন করে দিলেন যাদের হৃদয়কে ঈমানের উপর সুদৃঢ় করার প্রয়োজন তিনি অনুভব করেছিলেন। আর আনসারগণকে কিছুই তিনি দেননি। ফলে তাঁরা যেন নাখোশ হয়ে গেলেন। কেননা অন্যান্য লোক যা পেয়েছে তাঁরা তা পান নি। অথবা তিনি বলেছেনঃ তাঁরা যেন দুঃখিত হয়ে গেলেন।
কেননা অন্যান্য লোক যা পেয়েছে তারা তা পাননি। কাজেই নবী কারীম (ﷺ) তাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, হে আনসারগণ! আমি কি তোমাদেরকে গুমরাহীর মধ্যে লিপ্ত পাইনি, যার পরে আল্লাহ্ আমার দ্বারা তোমাদেরকে হেদায়েত দান করেছেন? তোমরা ছিলে পরস্পর বিচ্ছিন্ন, যার পর আল্লাহ্ আমার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরকে জুড়ে দিয়েছেন। তোমরা ছিলে রিক্তহস্ত, যার ফলে আল্লাহ্ আমার মাধ্যমে তোমাদেরকে অভাবমুক্ত করেছেন। এভাবে যখনই তিনি কোন কথা বলেছেন তখন আনসারগণ জবাবে বলতেন, আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলই আমাদের উপর অধিক ইহসানকারী।
তিনি বললেনঃ আল্লাহর রাসূলের জবাব দিতে তোমাদেরকে বাধা দিচ্ছে কিসে? তাঁরা তখনও তিনি যা কিছু বলছেন তার উত্তরে বলে গেলেন, আল্লাহ্ এবাং তাঁর রাসূলই আমাদের উপর অধিক ইহসানকারী। তিনি বললেন, তোমরা ইচ্ছা করলে বলতে পার যে, আপনি আমাদের কাছে এমন এমন (সংকটময়) সময়ে এসেছিলেন (যেগুলোকে আমরা বিদূরিত করেছি এবং আপনাকে সাহায্য করেছি) কিন্তু তোমরা কি এ কথায় সন্তুষ্ট নও যে, অন্যান্য লোক বকরী ও উট নিয়ে ফিরে যাবে আর তোমরা তোমাদের বাড়ি ফিরে যাবে আল্লাহর নবী কারীম (ﷺ)- কে সাথে নিয়ে।
যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে হিজরত করানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত না থাকত তা হলে আমি আনসারদের মধ্যকারই একজন থাকতাম। যদি লোকজন কোন উপত্যকা ও গিরিপথ দিয়ে চলে তা হলে আমি আনসারদের উপত্যকা ও গিরিপথ দিয়েই চলব। আনসারগণ হল (নববী) দেহসংযুক্ত গেঞ্জি আর অন্যান্য লোক হল উপরের জামা। আমার বিদায়ের পর অচিরেই তোমরা দেখতে পাবে অন্যদের অগ্রাধিকার। তখন ধৈর্য ধারণ করবে (দ্বীনের উপর টিকে থাকবে) অবশেষে তোমরা হাউজে কাউসারে আমার সঙ্গে সাক্ষাত করবে।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4330 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ يَحْيَى، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَاصِمٍ، قَالَ: لَمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ، قَسَمَ فِي النَّاسِ فِي المُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ، وَلَمْ يُعْطِ الأَنْصَارَ شَيْئًا، فَكَأَنَّهُمْ وَجَدُوا إِذْ لَمْ يُصِبْهُمْ مَا أَصَابَ النَّاسَ، فَخَطَبَهُمْ فَقَالَ: «يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ، أَلَمْ أَجِدْكُمْ ضُلَّالًا فَهَدَاكُمُ [ص:158] اللَّهُ بِي، وَكُنْتُمْ مُتَفَرِّقِينَ فَأَلَّفَكُمُ اللَّهُ بِي، وَعَالَةً فَأَغْنَاكُمُ اللَّهُ بِي» كُلَّمَا قَالَ شَيْئًا قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمَنُّ، قَالَ: «مَا يَمْنَعُكُمْ أَنْ تُجِيبُوا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» . قَالَ: كُلَّمَا قَالَ شَيْئًا، قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمَنُّ، قَالَ: " لَوْ شِئْتُمْ قُلْتُمْ: جِئْتَنَا كَذَا وَكَذَا، أَتَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالشَّاةِ وَالبَعِيرِ، وَتَذْهَبُونَ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى رِحَالِكُمْ، لَوْلاَ الهِجْرَةُ لَكُنْتُ امْرَأً مِنَ الأَنْصَارِ، وَلَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَشِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الأَنْصَارِ وَشِعْبَهَا، الأَنْصَارُ شِعَارٌ وَالنَّاسُ دِثَارٌ، إِنَّكُمْ سَتَلْقَوْنَ بَعْدِي أُثْرَةً، فَاصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوْنِي عَلَى الحَوْضِ "
হাদীস নং: ৩৯৯৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৩১
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯৫। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আল্লাহ্ তাঁর রাসূল (ﷺ)-কে হাওয়াযিন গোত্রের সম্পদ থেকে গনীমত হিসেবে যতটুকু দান করতে চেয়েছেন দান করলেন, তখন নবী কারীম (ﷺ) কতিপয় লোককে এক একশ’ করে উট দান করতে লাগলেন। (এ অবস্থা দেখে) আনসারদের কিছুসংখ্যক লোক বলে ফেললেন, আল্লাহ্ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে ক্ষমা করুন, তিনি আমাদেরকে বাদ দিয়ে কুরাইশদেরকে (গনীমতের মাল) দিচ্ছেন। অথচ আমাদের তরবারি থেকে এখনো তাদের তাজা রক্ত টপকাচ্ছে।
আনাস (রাযিঃ) বলেন, তাঁদের এ কথা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে বর্ণনা করা হলে তিনি আনসারদের কাছে সংবাদ পাঠালেন এবং তাদেরকে একটি চামড়ার তৈরী তাঁবুতে জমায়েত করলেন। এবং তাঁরা ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে উপস্থিত থাকতে অনুমতি দেননি। এরপর তাঁরা সবাই জমায়েত হলে নবী কারীম (ﷺ) দাঁড়িয়ে বললেন, তোমাদের কাছ থেকে কি কথা আমার নিকট পৌঁছলো? আনসারদের বিজ্ঞ উলামাবৃন্দ বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের নেতৃস্থানীয় কেউ তো কিছু বলেনি, তবে আমাদের কতিপয় কমবয়সী লোকেরা বলেছে যে, আল্লাহ্ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে ক্ষমা করুন, তিনি আমাদেরকে বাদ দিয়ে কুরাইশদেরকে (গনীমতের মাল) দিচ্ছেন। অথচ আমাদের তরবারিগুলো থেকে এখনো তাদের তাজা রক্ত টপকাচ্ছে।
তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেন, আমি অবশ্য এমন কিছু লোককে (গনীমতের মাল) দিচ্ছি যারা সবেমাত্র কুফর ত্যাগ করে ইসলামে প্রবেশ করেছে। আর তা এ জন্য যেন তাদের মনকে আমি ঈমানের উপর সুদৃঢ় করতে পারি। তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, অন্যান্য লোক ফিরে যাবে ধন-সম্পদ নিয়ে আর তোমরা বাড়ি ফিরে যাবে (আল্লাহর) নবী কারীম (ﷺ)- কে সঙ্গে নিয়ে? আল্লাহর কসম, তোমরা যে জিনিস নিয়ে ফিরে যাবে তা অনেক উত্তম ঐ ধন-সম্পদ অপেক্ষা, যা নিয়ে তারা ফিরে যাচ্ছে। আনসারগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা এতে সন্তুষ্ট থাকলাম। নবী কারীম (ﷺ) তাদের বললেন, অচিরেই তোমরা (নিজেদের উপর) অন্যদের প্রাধান্য প্রবলভাবে অনুভব করতে থাকবে। অতএব, আমার মৃত্যুর পর আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সঙ্গে সাক্ষাত করা পর্যন্ত তোমরা সবর করে থাকবে। আমি হাউজে কাউসারের নিকট থাকব। আনাস (রাযিঃ) বলেন, কিন্তু তাঁরা (আনসাররা) সবর করেননি।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4331 - حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ نَاسٌ مِنَ الأَنْصَارِ، حِينَ أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا أَفَاءَ مِنْ أَمْوَالِ هَوَازِنَ، فَطَفِقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْطِي رِجَالًا المِائَةَ مِنَ الإِبِلِ، فَقَالُوا: يَغْفِرُ اللَّهُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْطِي قُرَيْشًا وَيَتْرُكُنَا، وَسُيُوفُنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ، قَالَ أَنَسٌ: فَحُدِّثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَقَالَتِهِمْ، فَأَرْسَلَ إِلَى الأَنْصَارِ فَجَمَعَهُمْ فِي قُبَّةٍ مِنْ أَدَمٍ، وَلَمْ يَدْعُ مَعَهُمْ غَيْرَهُمْ، فَلَمَّا اجْتَمَعُوا قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «مَا حَدِيثٌ بَلَغَنِي عَنْكُمْ» ، فَقَالَ فُقَهَاءُ الأَنْصَارِ: أَمَّا رُؤَسَاؤُنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ فَلَمْ يَقُولُوا شَيْئًا، وَأَمَّا نَاسٌ مِنَّا حَدِيثَةٌ أَسْنَانُهُمْ فَقَالُوا: يَغْفِرُ اللَّهُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْطِي قُرَيْشًا وَيَتْرُكُنَا، وَسُيُوفُنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَإِنِّي أُعْطِي رِجَالًا حَدِيثِي عَهْدٍ بِكُفْرٍ أَتَأَلَّفُهُمْ، أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالأَمْوَالِ، وَتَذْهَبُونَ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى رِحَالِكُمْ، فَوَاللَّهِ لَمَا تَنْقَلِبُونَ بِهِ خَيْرٌ مِمَّا يَنْقَلِبُونَ بِهِ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ رَضِينَا، فَقَالَ لَهُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سَتَجِدُونَ أُثْرَةً شَدِيدَةً، فَاصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوُا اللَّهَ وَرَسُولَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِنِّي عَلَى الحَوْضِ» قَالَ أَنَسٌ: «فَلَمْ يَصْبِرُوا»
হাদীস নং: ৩৯৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৩২
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯৬। সুলাইমান ইবনে হারব (রাহঃ) .... আনাস (ইবনে মালিক) (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের দিনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরাইশদের মধ্যে গনীমতের মাল বন্টন করে দিলেন। এতে আনসারগণ নাখোশ হয়ে গেলেন। তখন নবী কারীম (ﷺ) বলেছেন, তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট থাকবে না যে, লোকজন পার্থিব সম্পদ নিয়ে ফিরে যাবে আর তোমরা আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে ফিরবে? তাঁরা উত্তর দিলেন, অবশ্যই (সন্তুষ্ট থাকবো)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, যদি লোকজন কোন উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে অতিক্রম করে তা হলে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে অতিক্রম করবো।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4332 - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمُ فَتْحِ مَكَّةَ قَسَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:159] غَنَائِمَ بَيْنَ قُرَيْشٍ، فَغَضِبَتِ الأَنْصَارُ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالدُّنْيَا، وَتَذْهَبُونَ بِرَسُولِ اللَّهِ - صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -» قَالُوا: بَلَى، قَالَ: «لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا أَوْ شِعْبًا، لَسَلَكْتُ وَادِيَ الأَنْصَارِ أَوْ شِعْبَهُمْ»
হাদীস নং: ৩৯৯৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৩৩
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯৭। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... আনাস (ইবনে মালিক) (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনায়নের দিন নবী কারীম (ﷺ) হাওয়াযিন গোত্রের মুখোমুখি হলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল দশ হাজার (মুহাজির ও আনসার সৈনিক) এবং (মক্কা বিজয়ের দিন ইসলাম গ্রহণকারী) নও-মুসলিমগণ। যুদ্ধে এরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করল। এ মুহূর্তে তিনি [নবী কারীম (ﷺ)] বললেন, ওহে আনসার সকল! তাঁরা জওয়াব দিলেন, আমরা হাযির, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত এবং আপনার সামনেই আমরা উপস্থিত। (অবস্থা আরো তীব্র আকার ধারণ করলে) নবী কারীম (ﷺ) তাঁর সওয়ারী থেকে নেমে পড়লেন আর বলতে থাকলেন, আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। (শেষ পর্যন্ত) মুশরিকরাই পরাজিত হল।
(যুদ্ধশেষে) তিনি নও-মুসলিম এবং মুহাজিরদেরকে (গনীমতের সম্পূর্ণ সম্পদ) বন্টন করে দিলেন। আর আনসারদেরকে কিছুই দিলেন না। এতে তারা নিজেদের মধ্যে সে কথা বলাবলি করছিল। তখন তিনি তাদেরকে ডেকে এনে একটি তাঁবুর ভিতর একত্রিত করলেন এবং বললেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট থাকবে না যে, লোকজন তো বকরী ও উট নিয়ে চলে যাবে আর তোমরা চলে যাবে আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে। এরপর নবী কারীম (ﷺ) আরো বললেন, যদি লোকজন একটি উপত্যকা দিয়ে গমন করে আর আনসারগণ একটি গিরিপথ দিয়ে গমন করে তা হলে আমি আমার জন্য আনসারদের গিরিপথকেই গ্রহণ করবো।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4333 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا أَزْهَرُ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، أَنْبَأَنَا هِشَامُ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ، التَقَى هَوَازِنُ وَمَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشَرَةُ آلاَفٍ، وَالطُّلَقَاءُ، فَأَدْبَرُوا، قَالَ: «يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ» . قَالُوا: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ لَبَّيْكَ نَحْنُ بَيْنَ يَدَيْكَ، فَنَزَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَنَا عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ» . فَانْهَزَمَ المُشْرِكُونَ، فَأَعْطَى الطُّلَقَاءَ وَالمُهَاجِرِينَ وَلَمْ يُعْطِ الأَنْصَارَ شَيْئًا، فَقَالُوا، فَدَعَاهُمْ فَأَدْخَلَهُمْ فِي قُبَّةٍ، فَقَالَ: «أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالشَّاةِ وَالبَعِيرِ، وَتَذْهَبُونَ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا، وَسَلَكَتِ الأَنْصَارُ شِعْبًا، لاَخْتَرْتُ شِعْبَ الأَنْصَارِ»
হাদীস নং: ৩৯৯৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৩৪
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯৮। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) আনসারদের লোকজনকে জমায়েত করে বললেন, কুরাইশরা অতি সম্প্রতিকালের জাহিলীয়াত বর্জনকারী (নও-মুসলিম) এবং দুর্দশাগ্রস্ত। তাই আমি তাদেরকে অনুদান দিয়ে তাদের মন জয় করার ইচ্ছা করেছি। তোমরা কি সন্তুষ্ট থাকবে না যে, অন্যান্য লোক পার্থিব ধন-সম্পদ নিয়ে ফিরে যাবে আর তোমরা তোমাদের ঘরে ফিরে যাবে আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে। তারা বললেন, অবশ্যই (সন্তুষ্ট থাকবো)। তিনি আরো বললেন, যদি লোকজন একটি উপত্যকা দিয়ে অতিক্রম করে আর আনসারগণ একটি গিরিপথ দিয়ে অতিক্রম করে যায়, তা হলে আমি আনসারদের গিরিপথ অথবা তিনি বলেছেন, আনসারদের উপত্যকা দিয়েই অতিক্রম করে যাবো।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4334 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: سَمِعْتُ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: جَمَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَاسًا مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ: «إِنَّ قُرَيْشًا حَدِيثُ عَهْدٍ بِجَاهِلِيَّةٍ وَمُصِيبَةٍ، وَإِنِّي أَرَدْتُ أَنْ أَجْبُرَهُمْ وَأَتَأَلَّفَهُمْ، أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَرْجِعَ النَّاسُ بِالدُّنْيَا، وَتَرْجِعُونَ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى بُيُوتِكُمْ» قَالُوا: بَلَى، قَالَ: «لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا، وَسَلَكَتِ الأَنْصَارُ شِعْبًا، لَسَلَكْتُ وَادِيَ الأَنْصَارِ، أَوْ شِعْبَ الأَنْصَارِ»
হাদীস নং: ৩৯৯৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৩৫
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯৯। কাবীসা (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন নবী কারীম (ﷺ) হুনায়নের গনীমত বন্টন করে দিলেন, তখন আনসারদের এক ব্যক্তি বলে ফেলল যে, এই বন্টনের ব্যাপারে তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখেন নি। কথাটি শুনে আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে আসলাম এবং তাঁকে কথাটি জানিয়ে দিলাম। তখন তাঁর চেহারার রং পরিবর্তিত হয়ে গেল। তারপর তিনি বললেন, আল্লাহ্, মুসা (আলাইহিস সালাম)- এর উপর রহমত বর্ষণ করুন। তাঁকে এর চেয়েও অধিক কষ্ট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সবর করেছিলেন।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4335 - حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: لَمَّا قَسَمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِسْمَةَ حُنَيْنٍ، قَالَ: رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ: مَا أَرَادَ بِهَا وَجْهَ اللَّهِ، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرْتُهُ، فَتَغَيَّرَ وَجْهُهُ ثُمَّ قَالَ: «رَحْمَةُ اللَّهِ عَلَى مُوسَى، لَقَدْ أُوذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبَرَ»
হাদীস নং: ৪০০০
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৩৬
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৪০০০। কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনায়নের দিন নবী কারীম (ﷺ) কোন কোন লোককে (গনীমতের মাল) বেশী বেশী করে দিয়েছিলেন। যেমন আকরা’কে একশ’ উট দিয়েছিলেন। উয়াইনাকে অনুরূপ (একশ’ উট) দিয়েছিলেন। এভাবে আরো কয়েকজনকে দিয়েছেন। এতে এক ব্যক্তি বলে উঠলো, এ বন্টন পদ্ধতিতে আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্য রাখা হয়নি। (রাবী বলেন) আমি বললাম, অবশ্যই আমি নবী কারীম (ﷺ)- কে এ কথা জানিয়ে দিব। এরপর [নবী কারীম (ﷺ) কথাটি শুনে] বললেন, আল্লাহ্ মুসা (আলাইহিস সালাম)- এর উপর করুণা বর্ষণ করুন। তাঁকে এর চেয়েও অধিক কষ্ট দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4336 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ آثَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَاسًا، أَعْطَى الأَقْرَعَ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ، وَأَعْطَى عُيَيْنَةَ مِثْلَ ذَلِكَ، وَأَعْطَى نَاسًا، فَقَالَ رَجُلٌ: مَا أُرِيدَ بِهَذِهِ القِسْمَةِ وَجْهُ اللَّهِ، فَقُلْتُ: لَأُخْبِرَنَّ [ص:160] النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «رَحِمَ اللَّهُ مُوسَى، قَدْ أُوذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبَرَ»
হাদীস নং: ৪০০১
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৩৭
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৪০০১। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনায়নের দিন হাওয়াযিন, গাতফান ইত্যাদি গোত্র নিজেদের গৃহপালিত চতুষ্পদ প্রাণী ও সন্তান-সন্ততিসহ যুদ্ধক্ষেত্রে এলো। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সঙ্গে ছিলো দশ হাজার তুলাকা*সৈনিক। যুদ্ধে তারা সবাই তাঁর পাশ থেকে পিছনে সরে গেল। ফলে তিনি একাকী রয়ে যান। সেই সংকটময় মূহুর্তে তিনি আলাদা-আলাদাভাবে দু’টি ডাক দিয়েছিলেন, তিনি ডান দিক ফিরে বলেছিলেন, ওহে আনসারসকল, তাঁরা সবাই উত্তরে বললেন, আমরা হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি সুসংবাদ নিন, আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। এরপর তিনি বাম দিকে ফিরে বলেছিলেন, ওহে আনসারসকল। তাঁরা সবাই উত্তরে বললেন, আমরা হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি সুসংবাদ নিন, আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর সাদা রংয়ের খচ্চরটির পিঠে ছিলেন। (অবস্থা আরো তীব্র হলে) তিনি নীচে নেমে পড়লেন এবং বললেন, আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। (শেষ পর্যন্ত) মুশরিক দলই পরাজিত হল।
সে যুদ্ধে বিপুল পরিমাণ গনীমত হস্তগত হল। তিনি [নবী কারীম (ﷺ)] সেসব সম্পদ মুহাজির এবং নও-মুসলিমদের মধ্যে বন্টন করে দিলেন। আর আনসারদেরকে তার কিছুই দেননি। তখন আনসারদের (কেউ কেউ) বললেন, কঠিন মূহুর্ত আসলে আমাদেরকে ডাকা হয় আর গনীমত অন্যদেরকে দেওয়া হয়। কথাটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছে গেলো। তাই তিনি তাদেরকে একটি তাঁবুতে জমায়েত করে বললেন, হে আনসারগণ! একি কথা আমার কাছে পৌঁছলো? তাঁরা চুপ করে থাকলেন। তিনি বললেন, হে আনসারগণ! তোমরা কি খুশি থাকবে না যে, লোকজন দুনিয়ার ধন-সম্পদ নিয়ে ফিরে যাবে আর তোমরা (বাড়ি) ফিরে যাবে আল্লাহর রাসূলকে সঙ্গে নিয়ে? তাঁরা বললেনঃ অবশ্যই। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, যদি লোকজন একটি উপত্যকা দিয়ে চলে আর আনসারগণ একটি গিরিপথ দিয়ে চলে তাহলে আমি আনসারদের গিরিপথকেই গ্রহণ করে নেবো।
বর্ণনাকারী হিশাম (রাহঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আবু হামযা (আনাস ইবনে মালিক) আপনি কি এ ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন? উত্তরে তিনি বললেন, আমি তাঁর কাছ থেকে আলাদা থাকতাম বা কখন? (যে আমি তখন সেখানে থাকবো না)।
*‘তুলাকা’ শব্দটি ‘তালীক’- এর বহুবচন। এর অর্থ হল মুক্তিপ্রাপ্ত। মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কাবাসীদের কয়েকজন ব্যতীত অবশিষ্ট সবাইকে সাধারণভাবে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। তুলাকা শব্দ দিয়ে সে সব ক্ষমাপ্রাপ্তদেরকে বুঝানো হয়েছে। হুনায়ন যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিপ্রাপ্তদের সংখ্যা আলোচ্য হাদীসে দশ হাজার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বস্তুত দশ হাজার ছিলো আনসার ও মুহাজিরদের সৈনিক সংখ্যা। আর ‘তুলাকা’দের সংখ্যা ছিলো এর এক-দশমাংশেরও অনেক কম। এ জন্য ইবনে হাজার আসকালানী ও অন্যান্য হাদীসবিদদের মতানুসারে এখানে ‘তুলাকা’ শব্দের পূর্বে একটি ‘ওয়া’ হরফ উহ্য আছে। অর্থাৎ দশ হাজার আনসার ও মুহাজির এবং মুক্তিপ্রাপ্ত লোকজন।
باب غَزْوَةُ الطَّائِفِ
4337 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ زَيْدِ بْنِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمَ حُنَيْنٍ، أَقْبَلَتْ هَوَازِنُ وَغَطَفَانُ وَغَيْرُهُمْ بِنَعَمِهِمْ وَذَرَارِيِّهِمْ، وَمَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشَرَةُ آلاَفٍ، وَمِنَ الطُّلَقَاءِ، فَأَدْبَرُوا عَنْهُ حَتَّى بَقِيَ وَحْدَهُ، فَنَادَى يَوْمَئِذٍ نِدَاءَيْنِ لَمْ يَخْلِطْ بَيْنَهُمَا، التَفَتَ عَنْ يَمِينِهِ فَقَالَ: «يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ» . قَالُوا: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَبْشِرْ نَحْنُ مَعَكَ، ثُمَّ التَفَتَ عَنْ يَسَارِهِ فَقَالَ: «يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ» قَالُوا: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَبْشِرْ نَحْنُ مَعَكَ، وَهُوَ عَلَى بَغْلَةٍ بَيْضَاءَ فَنَزَلَ فَقَالَ: «أَنَا عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ» . فَانْهَزَمَ المُشْرِكُونَ، فَأَصَابَ يَوْمَئِذٍ غَنَائِمَ كَثِيرَةً، فَقَسَمَ فِي المُهَاجِرِينَ وَالطُّلَقَاءِ وَلَمْ يُعْطِ الأَنْصَارَ شَيْئًا، فَقَالَتِ الأَنْصَارُ: إِذَا كَانَتْ شَدِيدَةٌ فَنَحْنُ نُدْعَى، وَيُعْطَى الغَنِيمَةَ غَيْرُنَا، فَبَلَغَهُ ذَلِكَ فَجَمَعَهُمْ فِي قُبَّةٍ، فَقَالَ: «يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ، مَا حَدِيثٌ بَلَغَنِي عَنْكُمْ» فَسَكَتُوا، فَقَالَ: «يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ، أَلاَ تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالدُّنْيَا، وَتَذْهَبُونَ بِرَسُولِ اللَّهِ تَحُوزُونَهُ إِلَى بُيُوتِكُمْ» قَالُوا: بَلَى، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا، وَسَلَكَتِ الأَنْصَارُ شِعْبًا، لَأَخَذْتُ شِعْبَ الأَنْصَارِ» وَقَالَ هِشَامٌ: قُلْتُ: يَا أَبَا حَمْزَةَ وَأَنْتَ شَاهِدٌ ذَاكَ قَالَ: «وَأَيْنَ أَغِيبُ عَنْهُ»