আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৩৯৮০
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩১৪
২২১৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিন যখন তোমাদেরকে (মুসলমানদিগকে) উৎফুল্ল করেছিল তোমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল শেষে তোমরা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে। এরপর আল্লাহ তার কাছ থেকে তার রাসুল ও মু’মিনের উপর প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং (তাদের সাহায্যার্থে) এমন এক সৈন্যবেহিনী নাযিল করেন যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি এবং তিনি তাদের দ্বারা কাফেরদিগকে শাস্তি প্রদান করেছেন। এটাই কাফিরদের কর্মফল। এরপরও (মু’মিনদের মধ্যে) যার প্রতি তিনি ইচ্ছা করবেন তার ক্ষেত্রে তিনি ক্ষমাপরায়ণও হতে পারেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ২৫-২৭)
৩৯৮০। মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে নুমাইর (রাহঃ) .... ইসমাঈল (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আবু আউফা (রাযিঃ)- এর হাতে একটি আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। (আঘাতের ব্যাপারে) তিনি বলেছেন, হুনাইনের (যুদ্ধের) দিন নবী কারীম (ﷺ)- এর সঙ্গে থাকা অবস্থায় আমাকে এ আঘাত করা হয়েছিল। আমি বললাম, আপনি কি হুনাইন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? তিনি বললেন, এর পূর্বের যুদ্ধগুলোতেও অংশগ্রহণ করেছি।
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَيَوْمَ حُنَيْنٍ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ} إِلَى قَوْلِهِ: {غَفُورٌ رَحِيمٌ
4314 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ، رَأَيْتُ بِيَدِ ابْنِ أَبِي أَوْفَى ضَرْبَةً قَالَ: «ضُرِبْتُهَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ» قُلْتُ: شَهِدْتَ حُنَيْنًا؟ قَالَ: قَبْلَ ذَلِكَ
হাদীস নং: ৩৯৮১
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩১৫
২২১৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিন যখন তোমাদেরকে (মুসলমানদিগকে) উৎফুল্ল করেছিল তোমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল শেষে তোমরা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে। এরপর আল্লাহ তার কাছ থেকে তার রাসুল ও মু’মিনের উপর প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং (তাদের সাহায্যার্থে) এমন এক সৈন্যবেহিনী নাযিল করেন যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি এবং তিনি তাদের দ্বারা কাফেরদিগকে শাস্তি প্রদান করেছেন। এটাই কাফিরদের কর্মফল। এরপরও (মু’মিনদের মধ্যে) যার প্রতি তিনি ইচ্ছা করবেন তার ক্ষেত্রে তিনি ক্ষমাপরায়ণও হতে পারেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ২৫-২৭)
৩৯৮১। মুহাম্মাদ ইবনে কাসীর (রাহঃ) .... আবু ইসহাক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি বারা ইবনে আযিব (রাযিঃ)- কে বলতে শুনেছি যে, এক ব্যক্তি এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলো, হে আবু উমর! হুনাইনের যুদ্ধের দিন আপনি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছিলেন কি? তখন তিনি বলেন যে, আমি তো নিজেই নবী কারীম (ﷺ) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেননি। তবে মুজাহিদদের অগ্রবর্তী যোদ্ধাগণ (গনীমত কুড়ানোর কাজে) তাড়াহুড়া করলে হাওয়াযিন গোত্রের লোকেরা তাঁদের প্রতি তীর নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় আবু সুফিয়ান ইবনুল হারিস (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাদা খচ্চরটির মাথা ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। আর রাসূলুল্লাহ তখন বলছিলেন, আমি যে আল্লাহর নবী তাতে কোন মিথ্যা নেই, আমি তো (কুরাইশ নেতা) মুত্তালিবের সন্তান।
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَيَوْمَ حُنَيْنٍ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ} إِلَى قَوْلِهِ: {غَفُورٌ رَحِيمٌ
4315 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ: سَمِعْتُ البَرَاءَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، وَجَاءَهُ رَجُلٌ، فَقَالَ: يَا أَبَا عُمَارَةَ أَتَوَلَّيْتَ يَوْمَ حُنَيْنٍ؟ فَقَالَ: أَمَّا أَنَا فَأَشْهَدُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ لَمْ يُوَلِّ، وَلَكِنْ عَجِلَ سَرَعَانُ القَوْمِ، فَرَشَقَتْهُمْ هَوَازِنُ، وَأَبُو سُفْيَانَ بْنُ الحَارِثِ آخِذٌ بِرَأْسِ بَغْلَتِهِ البَيْضَاءِ، يَقُولُ: «أَنَا النَّبِيُّ لاَ كَذِبْ، أَنَا ابْنُ عَبْدِ المُطَّلِبْ»
হাদীস নং: ৩৯৮২
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩১৬
২২১৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিন যখন তোমাদেরকে (মুসলমানদিগকে) উৎফুল্ল করেছিল তোমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল শেষে তোমরা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে। এরপর আল্লাহ তার কাছ থেকে তার রাসুল ও মু’মিনের উপর প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং (তাদের সাহায্যার্থে) এমন এক সৈন্যবেহিনী নাযিল করেন যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি এবং তিনি তাদের দ্বারা কাফেরদিগকে শাস্তি প্রদান করেছেন। এটাই কাফিরদের কর্মফল। এরপরও (মু’মিনদের মধ্যে) যার প্রতি তিনি ইচ্ছা করবেন তার ক্ষেত্রে তিনি ক্ষমাপরায়ণও হতে পারেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ২৫-২৭)
৩৯৮২। আবুল ওয়ালীদ (রাহঃ) .... আবু ইসহাক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, আমি শুনলাম যে, বারা ইবনে আযিব (রাযিঃ)- কে জিজ্ঞাসা করা হল, হুনাইন যুদ্ধের দিন আপনারা কি নবী কারীম (ﷺ)- এর সঙ্গে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিলেন? তিনি বললেন, কিন্তু নবী কারীম (ﷺ) পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেন নি। তবে তারা (হাওয়াযিন গোত্রের লোকেরা) ছিল দক্ষ তীরন্দাজ, [এ কারণে তারা তীর বর্ষণ আরম্ভ করলে সবাইকে পেছনে হেঁটে যেতে হয়েছে তবে নবী কারীম (ﷺ) পেছনে হটেননি]। তিনি (অটলভাবে দাঁড়িয়ে) বলছিলেন, আমি যে আল্লাহর নবী এতে কোন মিথ্যা নেই। আমি (তো কুরাইশ নেতা) আব্দুল মুত্তালিবের সন্তান।
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَيَوْمَ حُنَيْنٍ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ} إِلَى قَوْلِهِ: {غَفُورٌ رَحِيمٌ
4316 - حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قِيلَ لِلْبَرَاءِ: وَأَنَا أَسْمَعُ أَوَلَّيْتُمْ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ؟ فَقَالَ: أَمَّا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلاَ كَانُوا رُمَاةً، فَقَالَ: «أَنَا النَّبِيُّ لاَ كَذِبْ، أَنَا ابْنُ عَبْدِ المُطَّلِبْ»
হাদীস নং: ৩৯৮৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩১৭
২২১৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিন যখন তোমাদেরকে (মুসলমানদিগকে) উৎফুল্ল করেছিল তোমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল শেষে তোমরা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে। এরপর আল্লাহ তার কাছ থেকে তার রাসুল ও মু’মিনের উপর প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং (তাদের সাহায্যার্থে) এমন এক সৈন্যবেহিনী নাযিল করেন যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি এবং তিনি তাদের দ্বারা কাফেরদিগকে শাস্তি প্রদান করেছেন। এটাই কাফিরদের কর্মফল। এরপরও (মু’মিনদের মধ্যে) যার প্রতি তিনি ইচ্ছা করবেন তার ক্ষেত্রে তিনি ক্ষমাপরায়ণও হতে পারেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ২৫-২৭)
৩৯৮৩। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আবু ইসহাক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বারা (রাযিঃ)- কে বলতে শুনেছেন যে, তাঁকে কায়স গোত্রের জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেছিল যে, হুনায়ন যুদ্ধের দিন আপনারা কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কাছ থেকে পালিয়েছিলেন? তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালান নি। তবে হাওয়াযিন গোত্রের লোকেরা ছিল সুদক্ষ তীরন্দাজ। আমরা যখন তাদের উপর আক্রমণ চালালাম তখন তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালাতে আরম্ভ করে। আমরা গনীমত তুলতে শুরু করলাম ঠিক সেই মুহূর্তে আমরা (অতর্কিতভাবে) তাদের তীরন্দাজ বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হলাম। তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে তাঁর সাদা রংয়ের খচ্চরটির পিঠে আরোহণ অবস্থায় দেখেছি। আর আবু সুফিয়ান (রাযিঃ) তাঁর খচ্চরের লাগাম ধরেছিলেন, তিনি বলছিলেন, আমি আল্লাহর নবী এতে কোন মিথ্যা নেই। বর্ণনাকারী ইসরাঈল এবং যুহাইর (রাহঃ) বলেছেন যে, তখন নবী কারীম (ﷺ) তাঁর খচ্চরটির (পিঠ থেকে) নীচে অবতরণ করেছিলেন।
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَيَوْمَ حُنَيْنٍ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ} إِلَى قَوْلِهِ: {غَفُورٌ رَحِيمٌ
4317 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، سَمِعَ البَرَاءَ، وَسَأَلَهُ رَجُلٌ مِنْ قَيْسٍ أَفَرَرْتُمْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ؟ فَقَالَ: لَكِنْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَفِرَّ، كَانَتْ هَوَازِنُ رُمَاةً، وَإِنَّا لَمَّا حَمَلْنَا عَلَيْهِمْ انْكَشَفُوا، فَأَكْبَبْنَا عَلَى الغَنَائِمِ، فَاسْتُقْبِلْنَا بِالسِّهَامِ، وَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى بَغْلَتِهِ البَيْضَاءِ، وَإِنَّ أَبَا سُفْيَانَ بْنَ الحَارِثِ آخِذٌ بِزِمَامِهَا، وَهُوَ يَقُولُ: «أَنَا النَّبِيُّ لاَ كَذِبْ» قَالَ إِسْرَائِيلُ، وَزُهَيْرٌ: «نَزَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَغْلَتِهِ»
হাদীস নং: ৩৯৮৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩১৮
২২১৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিন যখন তোমাদেরকে (মুসলমানদিগকে) উৎফুল্ল করেছিল তোমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল শেষে তোমরা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে। এরপর আল্লাহ তার কাছ থেকে তার রাসুল ও মু’মিনের উপর প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং (তাদের সাহায্যার্থে) এমন এক সৈন্যবেহিনী নাযিল করেন যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি এবং তিনি তাদের দ্বারা কাফেরদিগকে শাস্তি প্রদান করেছেন। এটাই কাফিরদের কর্মফল। এরপরও (মু’মিনদের মধ্যে) যার প্রতি তিনি ইচ্ছা করবেন তার ক্ষেত্রে তিনি ক্ষমাপরায়ণও হতে পারেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ২৫-২৭)
৩৯৮৪। সাঈদ ইবনে উফাইর ও ইসহাক (রাহঃ) .... মারওয়ান এবং মিসওয়ার ইবনে মাখরামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, হাওয়াযিন গোত্রের প্রতিনিধিগণ যখন ইসলাম কবুল করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর নিকটে এলো এবং তাদের (যুদ্ধ লুন্ঠিত) সম্পদ ও বন্দীদেরকে ফেরত দেওয়ার প্রার্থনা জানালো তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং তাদের বললেন, আমার সঙ্গে যারা আছে (সাহাবাগণ) তাদের অবস্থা তো তোমরা দেখতে পাচ্ছ। সত্য কথাই আমার কাছে বেশী প্রিয়। কাজেই তোমরা যুদ্ধবন্দী অথবা সম্পদের যে কোন একটিকে গ্রহণ করতে পার। আমি তোমাদের জন্য (পথেই) অপেক্ষা করছিলাম। বস্তুত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তায়েফ থেকে প্রত্যাবর্তন করার পথে (জি'রানা জায়গায়) দশ রাতেরও অধিক সময় পর্যন্ত তাদের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন।
(বর্ণনাকারী বলেন) হাওয়াযিন গোত্রের প্রতিনিধিদের কাছে যখন এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদেরকে এ দু’টির মধ্যে একটির বেশী ফেরত দিতে সম্মত নন তখন তারা বললেন, আমরা আমাদের বন্দীদেরকে গ্রহণ করতে চাই। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মুসলমানদের সম্মুখে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর যথাযোগ্য হামদ ও সানা পাঠ করে বললেন, আম্মা বাদ, তোমাদের (হাওয়াযিন গোত্রের মুসলিম) ভাইয়েরা তওবা করে আমাদের কাছে এসেছে, আমি তাদের বন্দীদেরকে তাদের নিকট ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত করেছি। অতএব তোমাদের মধ্যে যে আমার এ সিদ্ধান্তকে খুশি মনে গ্রহণ করে নেবে সে (তার অংশের বন্দীকে) ফেরত দাও। আর তোমাদের মধ্যে যে তার অংশের অধিকারকে অবশিষ্ট রেখে তা এভাবে ফেরত দিতে চাইবে যে, ফাইয়ের সম্পদ থেকে (আগামীতে) আল্লাহ্ আমাকে সর্বপ্রথম যা দান করবেন তা দিয়ে আমি তার এ বন্দীর মূল্য পরিশোধ করবো, তবে সেও তাই করো। তখন সকল লোক উত্তর দিলোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আপনার প্রথম সিদ্ধান্ত খুশিমনে গ্রহণ করলাম।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমাদের মধ্যে এ ব্যাপারে কে খুশিমনে অনুমতি দিয়েছে আর কে খুশিমনে অনুমতি দেয়নি আমি তা বুঝতে পারিনি। তাই তোমরা ফিরে যাও এব তোমাদের মধ্যকার বিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে আলাপ কর। তাঁরা আমার কাছে বিষয়টি পেশ করবে। সবাই ফিরে গেল। পরে তাদের বিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে আলাপ কর। তাঁরা আমার কছে বিষয়টি পেশ করবে। সবাই ফিরে গেল। পরে তাদের বিজ্ঞ ব্যক্তিগণ তাদের সাথে (আলাদা আলাদাভাবে) আলাপ করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর নিকট ফিরে এসে জানালো যে, সবাই তাঁর (প্রথম) সিদ্ধান্তকেই খুশি মনে মেনে নিয়েছে এবং (ফেরত দেয়া) অনুমতি দিয়েছে। [ইমাম ইবনে শিহাব যুহরী (রাহঃ) বলেন] হাওয়াযিন গোত্রের বন্দীদের বিষয়ে এ হাদীসটিই আমি অবহিত হয়েছি।
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَيَوْمَ حُنَيْنٍ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ} إِلَى قَوْلِهِ: {غَفُورٌ رَحِيمٌ
4318 - حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، ح وحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ [ص:154]، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: مُحَمَّدُ بْنُ شِهَابٍ، وَزَعَمَ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ مَرْوَانَ، وَالمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ، أَخْبَرَاهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ حِينَ جَاءَهُ وَفْدُ هَوَازِنَ مُسْلِمِينَ، فَسَأَلُوهُ أَنْ يَرُدَّ إِلَيْهِمْ أَمْوَالَهُمْ وَسَبْيَهُمْ، فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " مَعِي مَنْ تَرَوْنَ، وَأَحَبُّ الحَدِيثِ إِلَيَّ أَصْدَقُهُ، فَاخْتَارُوا إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ: إِمَّا السَّبْيَ، وَإِمَّا المَالَ، وَقَدْ كُنْتُ اسْتَأْنَيْتُ بِكُمْ ". وَكَانَ أَنْظَرَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِضْعَ عَشْرَةَ لَيْلَةً حِينَ قَفَلَ مِنَ الطَّائِفِ، فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَيْرُ رَادٍّ إِلَيْهِمْ إِلَّا إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ، قَالُوا: فَإِنَّا نَخْتَارُ سَبْيَنَا، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي المُسْلِمِينَ، فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّ إِخْوَانَكُمْ قَدْ جَاءُونَا تَائِبِينَ، وَإِنِّي قَدْ رَأَيْتُ أَنْ أَرُدَّ إِلَيْهِمْ سَبْيَهُمْ، فَمَنْ أَحَبَّ مِنْكُمْ أَنْ يُطَيِّبَ ذَلِكَ فَلْيَفْعَلْ، وَمَنْ أَحَبَّ مِنْكُمْ أَنْ يَكُونَ عَلَى حَظِّهِ حَتَّى نُعْطِيَهُ إِيَّاهُ مِنْ أَوَّلِ مَا يُفِيءُ اللَّهُ عَلَيْنَا فَلْيَفْعَلْ» فَقَالَ النَّاسُ: قَدْ طَيَّبْنَا ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّا لاَ نَدْرِي مَنْ أَذِنَ مِنْكُمْ فِي ذَلِكَ مِمَّنْ لَمْ يَأْذَنْ، فَارْجِعُوا حَتَّى يَرْفَعَ إِلَيْنَا عُرَفَاؤُكُمْ أَمْرَكُمْ» فَرَجَعَ النَّاسُ، فَكَلَّمَهُمْ عُرَفَاؤُهُمْ، ثُمَّ رَجَعُوا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرُوهُ أَنَّهُمْ قَدْ طَيَّبُوا وَأَذِنُوا هَذَا الَّذِي بَلَغَنِي عَنْ سَبْيِ هَوَازِنَ
হাদীস নং: ৩৯৮৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩২০
২২১৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিন যখন তোমাদেরকে (মুসলমানদিগকে) উৎফুল্ল করেছিল তোমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল শেষে তোমরা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে। এরপর আল্লাহ তার কাছ থেকে তার রাসুল ও মু’মিনের উপর প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং (তাদের সাহায্যার্থে) এমন এক সৈন্যবেহিনী নাযিল করেন যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি এবং তিনি তাদের দ্বারা কাফেরদিগকে শাস্তি প্রদান করেছেন। এটাই কাফিরদের কর্মফল। এরপরও (মু’মিনদের মধ্যে) যার প্রতি তিনি ইচ্ছা করবেন তার ক্ষেত্রে তিনি ক্ষমাপরায়ণও হতে পারেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ২৫-২৭)
৩৯৮৫। আবু নু‘মান (রাহঃ) .... নাফি (সাখতিয়ানী) (রাহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! .... হাদসিটি অন্য সনদে মুহাম্মাদ ইবনে মুকাতিল (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা হুনায়নের যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করার কালে উমর (রাযিঃ) নবী কারীম (ﷺ)- কে জাহিলীয়্যাতের যুগে মান্নত করা তাঁর একটি ই’তিকাফ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। নবী কারীম (ﷺ) তাঁকে সেটি পূরণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন হাদীসটি হাম্মাদ-আইয়ুব-নাফে (রাহঃ) ইবনে উমর (রাযিঃ) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। তাছাড়া জারীর ইবনে হাযিম এবং হাম্মাদ ইবনে সালাম (রাহঃ)-ও এ হাদীসটি আইয়ুব, নাফে (রাহঃ) ইবনে উমর (রাযিঃ) সূত্রে নবী কারীম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَيَوْمَ حُنَيْنٍ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ} إِلَى قَوْلِهِ: {غَفُورٌ رَحِيمٌ
4320 - حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عُمَرَ، قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ. ح حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: لَمَّا قَفَلْنَا مِنْ حُنَيْنٍ، سَأَلَ عُمَرُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ نَذْرٍ كَانَ نَذَرَهُ فِي الجَاهِلِيَّةِ، اعْتِكَافٍ: «فَأَمَرَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِوَفَائِهِ» وَقَالَ: بَعْضُهُمْ، حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ ابْنِ عُمَرَ، وَرَوَاهُ جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، وَحَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হাদীস নং: ৩৯৮৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩২১ - ৪৩২২
২২১৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং হুনায়নের যুদ্ধের দিন যখন তোমাদেরকে (মুসলমানদিগকে) উৎফুল্ল করেছিল তোমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল শেষে তোমরা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে। এরপর আল্লাহ তার কাছ থেকে তার রাসুল ও মু’মিনের উপর প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং (তাদের সাহায্যার্থে) এমন এক সৈন্যবেহিনী নাযিল করেন যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি এবং তিনি তাদের দ্বারা কাফেরদিগকে শাস্তি প্রদান করেছেন। এটাই কাফিরদের কর্মফল। এরপরও (মু’মিনদের মধ্যে) যার প্রতি তিনি ইচ্ছা করবেন তার ক্ষেত্রে তিনি ক্ষমাপরায়ণও হতে পারেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ২৫-২৭)
৩৯৮৬। আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) .... আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনায়নের বছর আমরা নবী কারীম (ﷺ)- এর সঙ্গে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমরা যখন (যুদ্ধের জন্য) শত্রুদের মুখোমুখি হলাম তখন মুসলিমদের মধ্যে বিশৃংখলা দেখা দিল। এ সময় আমি মুশরিকদের এক ব্যক্তিকে দেখলাম সে মুসলিমদের এক ব্যক্তিকে পরাভূত করে ফেলেছে। তাই আমি কাফের লোকটির পশ্চাৎ দিকে গিয়ে তরবারি দিয়ে তার কাঁধ ও ঘাড়ের মধ্যবর্তী শক্ত শিরার উপর আঘাত হানলাম এবং লোকটির পরিহিত লৌহ বর্মটি কেটে ফেললাম। এ সময় সে আমার উপর আক্রমণ করে বসলো এবং আমাকে এত জোরে চাপ দিয়ে জড়িয়ে ধরল যে, আমি আমার মৃত্যুর গন্ধ অনুভব করতে লাগলাম। এরপর লোকটিই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো আর আমাকে ছেড়ে দিল।
এরপর আমি উমর [ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ)]-এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, লোকজনের (মুসলিমদের) কি হল, (যে সবাই বিশৃংখল হয়ে গেলো)? তিনি বললেন, মহান ও শক্তিশালী আল্লাহর ইচ্ছা। এরপর সবাই (আবার) ফিরে এলো (এবং মুশরিকদের উপর হামলা চালিয়ে যুদ্ধে জয়ী হল) যুদ্ধের পর নবী কারীম (ﷺ) (এক স্থানে) বসলেন এবং ঘোষণা দিলেন, যে ব্যক্তি কোন মুশরিক যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং তার কাছে এর প্রমাণ রয়েছে তাঁকে তার (নিহত ব্যক্তির) পরিত্যক্ত সব সম্পদ প্রদান করা হবে। এ ঘোষণা শুনে আমি (দাঁড়িয়ে সবাইকে লক্ষ করে) বললাম, আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার মতো কেউ আছে কি? (কিন্তু কোন জবাব না পেয়ে) আমি বসে পড়লাম।
আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেনঃ (তারপর) আবার নবী কারীম (ﷺ) অনুরূপ ঘোষণা দিলেন। আমি দাঁড়িয়ে বললাম, আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার মতো কেউ আছে কি? কিন্তু (এবারও কোন সাড়া না পেয়ে) আমি বসে পড়লাম। নবী কারীম (ﷺ) তারপর অনুরূপ ঘোষণা দিলে আমি দাঁড়ালাম। আমাকে দেখে তিনি বললেন, আবু কাতাদা! তোমার কি হয়েছে? আমি তাঁকে ব্যাপারটি জানালাম। এ সময়ে এক ব্যক্তি বললো, আবু কাতাদা (রাযিঃ) ঠিকই বলেছেন, তবে নিহত ব্যক্তির পরিত্যক্ত দ্রব্যগুলো আমার কাছে আছে। সুতরাং সেগুলো আমাকে দিয়ে দেওয়ার জন্য আপনি তাঁকে সম্মত করে দিন।
তখন আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, না, আল্লাহর শপথ, তা হতে পারে না। আল্লাহর সিংহদের এক সিংহ যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করেছে তার যুদ্ধলব্ধ দ্রব্যাদি তোমাকে দিয়ে দেয়ার ইচ্ছা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) করতে পারেন না। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, আবু বকর (রাযিঃ) ঠিকই বলছে। সুতরাং এসব দ্রব্য তুমি তাঁকে (আবু কাতাদা) দিয়ে দাও। [আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন] তখন সে আমাকে পরিত্যক্ত দ্রব্যগুলো দিয়ে দিল। এ দ্রব্যগুলোর বিনিময়ে আমি বনী সালিমার এলাকায় একটি বাগান খরিদ করলাম। আর ইসলাম কবুল করার পর এটাই ছিল প্রথম উপার্জিত মাল যা দিয়ে আমি আমার অর্থের বুনিয়াদ রেখেছি।
অপর সনদে লাইস (রাহঃ) আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনাইন যুদ্ধের দিন আমি দেখতে পেলাম যে, একজন মুসলিম এক মুশরিকের সাথে লড়াই করছে। অপর এক মুশরিক মুসলিম ব্যক্তির পেছন দিক থেকে তাকে হত্যা করার জন্য আক্রমণ করছে। আমি আক্রমণকারীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়লাম। সে আমাকে আঘাত করার জন্য তার হাত উঠাল। আমি তার হাতের উপর আঘাত করলাম এবং তা কেটে ফেললাম। সে আমাকে ধরে সজোরে চাপ দিল। এমনকি আমি (মৃত্যুর) ভয় পেয়ে গেলাম। এরপর সে আমাকে ছেড়ে দিল ও সে দুর্বল হয়ে পড়ল। আমি তাকে আক্রমণ করে মেরে ফেললাম। মুসলিমগণ পালাতে লাগলেন। আমিও তাঁদের সাথে পালালাম। হঠাৎ লোকদের মাঝে উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ)- কে দেখতে পেয়ে আমি তাকে বললাম, লোকজনের অবস্থা কি? তিনি বললেন, আল্লাহর যা ইচ্ছা তাই হয়েছে। এরপর লোকেরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর নিকট ফিরে এলেন।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, “যে মুসলিম ব্যক্তি (শত্রুদলের) কাউকে হত্যা করেছে বলে প্রমাণ পেশ করতে পারবে নিহত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ সে-ই পাবে। আমি যে একজনকে হত্যা করেছি সে ব্যাপারে আমি দাঁড়িয়ে সাক্ষী খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার কাউকে পেলাম না। তখন আমি বসে পড়লাম। এরপর আমি ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কাছে বর্ণনা করলাম। তখন তাঁর সঙ্গীদের একজন বললেন, উল্লিখিত নিহত ব্যক্তির (পরিত্যক্ত) হাতিয়ার আমার কাছে আছে। তা আমাকে দিয়ে দেওয়ার জন্য আপনি তাকে সম্মত করে দিন। তখন আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, না, তা হতে পারে না। আল্লাহর সিংহদের এক সিংহ যে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করেছে তাকে না দিয়ে এ কুরাইশী দুর্বল ব্যক্তিকে তিনি [নবী কারীম (ﷺ)] দিতে পারেন না। রাবী বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দাঁড়ালেন এবং আমাকে তা দিয়ে দিলেন। আমি এর দ্বারা একটি বাগান খরিদ করলাম। আর ইসলাম কবুল করার পর এটাই ছিল প্রথম উপার্জিত মাল, যা দিয়ে আমি আমার অর্থের বুনিয়াদ রেখেছি।
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَيَوْمَ حُنَيْنٍ إِذْ أَعْجَبَتْكُمْ كَثْرَتُكُمْ فَلَمْ تُغْنِ عَنْكُمْ شَيْئًا وَضَاقَتْ عَلَيْكُمُ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ ثُمَّ وَلَّيْتُمْ مُدْبِرِينَ ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ} إِلَى قَوْلِهِ: {غَفُورٌ رَحِيمٌ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ، عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ، مَوْلَى أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَامَ حُنَيْنٍ، فَلَمَّا الْتَقَيْنَا كَانَتْ لِلْمُسْلِمِينَ جَوْلَةٌ، فَرَأَيْتُ رَجُلاً مِنَ الْمُشْرِكِينَ، قَدْ عَلاَ رَجُلاً مِنَ الْمُسْلِمِينَ، فَضَرَبْتُهُ مِنْ وَرَائِهِ عَلَى حَبْلِ عَاتِقِهِ بِالسَّيْفِ، فَقَطَعْتُ الدِّرْعَ، وَأَقْبَلَ عَلَىَّ فَضَمَّنِي ضَمَّةً وَجَدْتُ مِنْهَا رِيحَ الْمَوْتِ، ثُمَّ أَدْرَكَهُ الْمَوْتُ فَأَرْسَلَنِي، فَلَحِقْتُ عُمَرَ فَقُلْتُ مَا بَالُ النَّاسِ قَالَ أَمْرُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ. ثُمَّ رَجَعُوا وَجَلَسَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " مَنْ قَتَلَ قَتِيلاً لَهُ عَلَيْهِ بَيِّنَةٌ فَلَهُ سَلَبُهُ ". فَقُلْتُ مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ ـ قَالَ ـ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ فَقُمْتُ فَقُلْتُ مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ قَالَ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ، فَقُمْتُ فَقَالَ " مَالَكَ يَا أَبَا قَتَادَةَ ". فَأَخْبَرْتُهُ. فَقَالَ رَجُلٌ صَدَقَ وَسَلَبُهُ عِنْدِي، فَأَرْضِهِ مِنِّي. فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ لاَهَا اللَّهِ، إِذًا لاَ يَعْمِدُ إِلَى أَسَدٍ مِنْ أُسْدِ اللَّهِ يُقَاتِلُ عَنِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم فَيُعْطِيَكَ سَلَبَهُ. فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " صَدَقَ فَأَعْطِهِ ". فَأَعْطَانِيهِ فَابْتَعْتُ بِهِ مَخْرَفًا فِي بَنِي سَلِمَةَ، فَإِنَّهُ لأَوَّلُ مَالٍ تَأَثَّلْتُهُ فِي الإِسْلاَمِ.
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ، عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ، مَوْلَى أَبِي قَتَادَةَ أَنَّ أَبَا قَتَادَةَ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ نَظَرْتُ إِلَى رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يُقَاتِلُ رَجُلاً مِنَ الْمُشْرِكِينَ، وَآخَرُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ يَخْتِلُهُ مِنْ وَرَائِهِ لِيَقْتُلَهُ، فَأَسْرَعْتُ إِلَى الَّذِي يَخْتِلُهُ فَرَفَعَ يَدَهُ لِيَضْرِبَنِي، وَأَضْرِبُ يَدَهُ، فَقَطَعْتُهَا، ثُمَّ أَخَذَنِي، فَضَمَّنِي ضَمًّا شَدِيدًا حَتَّى تَخَوَّفْتُ، ثُمَّ تَرَكَ فَتَحَلَّلَ، وَدَفَعْتُهُ ثُمَّ قَتَلْتُهُ، وَانْهَزَمَ الْمُسْلِمُونَ، وَانْهَزَمْتُ مَعَهُمْ، فَإِذَا بِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فِي النَّاسِ، فَقُلْتُ لَهُ مَا شَأْنُ النَّاسِ قَالَ أَمْرُ اللَّهِ، ثُمَّ تَرَاجَعَ النَّاسُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَقَامَ بَيِّنَةً عَلَى قَتِيلٍ قَتَلَهُ فَلَهُ سَلَبُهُ ". فَقُمْتُ لأَلْتَمِسَ بَيِّنَةً عَلَى قَتِيلِي، فَلَمْ أَرَ أَحَدًا يَشْهَدُ لِي فَجَلَسْتُ، ثُمَّ بَدَا لِي، فَذَكَرْتُ أَمْرَهُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ جُلَسَائِهِ سِلاَحُ هَذَا الْقَتِيلِ الَّذِي يَذْكُرُ عِنْدِي فَأَرْضِهِ مِنْهُ. فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ كَلاَّ لاَ يُعْطِهِ أُصَيْبِغَ مِنْ قُرَيْشٍ، وَيَدَعَ أَسَدًا مِنْ أُسْدِ اللَّهِ يُقَاتِلُ عَنِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَدَّاهُ إِلَىَّ، فَاشْتَرَيْتُ مِنْهُ خِرَافًا فَكَانَ أَوَّلَ مَالٍ تَأَثَّلْتُهُ فِي الإِسْلاَمِ.