আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৩৮৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৪১
২১৯৮. ইফকের ঘটনা [ইমাম বুখারী (রাহঃ) বলেন] إِفْك শব্দটি نِجْس ও نَجَس এর মত إِفْك ও أَفك উভয়ভাবেই ব্যবহৃত হয়। তাই আরবীয় লোকেরা বলেন, أَفْكُهُمْ - إِفْكُهُمْ ও أَفْكَهُمْ
৩৮৩৫। আব্দুল আযীয ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... উরওয়া ইবনে যুবাইর, সাঈদ ইবনে মুস্যায়িব, আলকামা ইবনে ওয়াক্কাস ও উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উতবা ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) সূত্রে নবী কারীম (ﷺ)- এর সহধর্মিনী আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, যখন অপবাদ রটনাকারীগণ তাঁর প্রতি অপবাদ রটিয়েছিল। রাবী যুহরী (রাহঃ) বলেন, তারা প্রত্যেকেই হাদীসটির অংশবিশেষ আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি স্মরণ রাখা ও সঠিকভাবে বর্ণনা করার ক্ষেত্রে তাদের কেউ কেউ একে অন্যের চেয়ে অধিকতর অগ্রগামী ও নির্ভরযোগ্য। আয়েশা (রাযিঃ) সম্পর্কে তারা আমার কাছে যা বর্ণনা করেছেন আমি তাদের প্রত্যেকের কথাই যাথাযথভাবে স্মরণ রেখেছি। তাদের একজনের বর্ণিত হাদীসের অংশবিশেষ অপরের বর্ণিত হাদীসের অংশবিশেষের সত্যতা প্রমাণ করে। যদিও তাদের একজন অন্যজনের চেয়ে অধিক স্মৃতিশক্তির অধিকারী।
বর্ণনাকারীগণ বলেন, আয়েশা (রাযিঃ) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন সফরের ইচ্ছা করতেন তখন তিনি তাঁর স্ত্রীগণের (নামের জন্য) কোরা (লটারী) ব্যবহার করতেন। এতে যার নাম আসত তাকেই তিনি সাথে করে সফরে বের হতেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, এমনি এক যুদ্ধে (মুরায়সীর যুদ্ধ) তিনি আমাদের মাঝে কোরা ব্যবহার করেন এবং এতে আমার নাম বেরিয়ে আসে। তাই আমিই রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাথে সফরে বের হলাম। এ ঘটনাটি পর্দার হুকুম নাযিল হওয়ার পর সংঘটিত হয়েছিল। তখন আমাকে হাওদাজ সহ সওয়ারীতে উঠানো ও নামানো হত। এমনি করে আমরা চলতে থাকলাম। অবশেষে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন এ যুদ্ধ থেকে অবসর হলেন, তখন তিনি (বাড়ির দিকে) ফিরলেন।
ফেরার পথে আমরা মদীনার নিকটবর্তী হলে তিনি একদিন রাতের বেলা রওয়ানা হওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন। রওয়ানা হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর আমি উঠলাম এবং (প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য) পায়ে হেঁটে সেনা ছাউনি অতিক্রম করে (একটু সামনে) গেলাম। এরপর প্রয়োজন সেরে আমি আমার সওয়ারীর কাছে ফিরে এসে বুকে হাত দিয়ে দেখলাম যে, (ইয়ামানের অন্তর্গত) যিফার শহরের পুতি দ্বারা তৈরী করা আমার গলার হারটি ছিঁড়ে কোথাও পড়ে গিয়েছে। তাই আমি ফিরে গিয়ে আমার হারটি তালাশ করতে আরম্ভ করলাম। হার তালাশ করতে করতে আমার আসতে বিলম্ব হয়ে যায়। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, যে সমস্ত লোক উটের পিঠে আমাকে উঠিয়ে দিতেন তারা এসে আমার হাওদাজ উঠিয়ে তা আমার উটের পিঠে তুলে দিলেন যার উপর আমি আরোহণ করতাম। তারা মনে করেছিলেন যে, আমি এর মধ্যেই আছি, কারণ খাদ্যাভাবে মহিলাগণ তখন খুবই হালকা পাতলা হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের দেহে গোশত বহুল ছিল না। তাঁরা খুবই স্বল্প পরিমাণে খাবার খেতে পেত। তাই তারা যখন হাওদাজ উঠিয়ে উপরে রাখেন তখন তা হালকা হওয়ায় বিষয়টিকে কোনো প্রকার অস্বাভাবিক মনে করেননি। অধিকন্তু আমি ছিলাম একজন অল্প বয়স্কা কিশোরী।
এরপর তারা উট হাঁকিয়ে নিয়ে চলে যায়। সৈন্যদল রওয়ানা হওয়ার পর আমি আমার হারটি খুঁজে পাই এবং নিজস্ব স্থানে ফিরে এসে দেখি তাঁদের (সৈন্যদের) কোনো আহবায়ক এবং কোনো উত্তরদাতা তথায় নেই। (নিরুপায় হয়ে) তখন আমি পূর্বে যেখানে ছিলাম সেখানে বসে রইলাম। ভাবছিলাম, তাঁরা আমাকে দেখতে না পেলে অবশ্যই আমার কাছে ফিরে আসবে। ঐ স্থানে বসে থাকা অবস্থায় ঘুম চেপে আসলে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। বনু সুলামী গোত্রের যাকওয়ান শাখার সাফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল (রাযিঃ) [যাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফেলে যাওয়া আসবাবপত্র কুড়িয়ে নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন।] সৈন্যদল চলে যাওয়ার পর সেখানে ছিলেন। তিনি প্রত্যূষে আমার অবস্থানস্থলের কাছে পৌঁছে একজন ঘুমন্ত মানুষ দেখে আমার দিকে তাকানোর পর আমাকে চিনে ফেললেন। তিনি আমাকে দেখেছিলেন পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পূর্বে।
তিনি আমাকে চিনতে পেরে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়লে আমি তা শুনতে পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠলাম এবং চাঁদর টেনে আমার চেহারা ঢেকে ফেললাম। আল্লাহর কসম! আমি আর কথা বলিনি এবং তাঁর থেকে ইন্নালিল্লাহ .... পাঠ ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাইনি। এরপর তিনি সওয়ারী থেকে অবতরণ করলেন এবং সওয়ারীকে বসিয়ে তার সামনের পা নিচু করে দিলে আমি গিয়ে তাতে আরোহণ করলাম। পরে তিনি আমাকে সহ সওয়ারীকে টেনে আগে আগে চলতে লাগলেন, পরিশেষে ঠিক দ্বিপ্রহরে প্রচণ্ড গরমের সময় আমরা গিয়ে সেনাদলের সাথে মিলিত হলাম। সে সময় তাঁরা একটি জায়গায় অবতরণ করছিলেন।।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, এরপর যাদের ধ্বংস হওয়ার ছিল তারা (আমার প্রতি অপবাদ আরোপ করে) ধ্বংস হয়ে গেল। তাদের মধ্যে এ অপবাদ আরোপের ব্যাপারে যে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিল সে হল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সুলুল। বর্ণনাকারী উরওয়া (রাযিঃ) বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে, তার (আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সুলুল) সামনে অপবাদের কথাগুলো প্রচার করা হত এবং আলোচনা করা হত আর অমনি সে এগুলোকে বিশ্বাস করত, খুব ভালভাবে শ্রবণ করত এবং শোনা কথার ভিত্তিতেই বিষয়টিকে প্রমাণ করার চেষ্টা করত। উরওয়া (রা) আরো বর্ণনা করেছেন যে, অপবাদ আরোপকারী ব্যক্তিদের মধ্যে হাসান ইবনে সাবিত, মিসতাহ ইবনে উসাসা এবং হামনা বিনতে জাহাশ (রাযিঃ) ব্যতীত আর কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তারা গুটিকয়েক ব্যক্তির একটি দল ছিল, এতটুকু ব্যতীত তাদের সম্পর্কে আমার আর কিছু জানা নেই। যেমন (আল কুরআনে) মহান আল্লাহ পাক বলেছেন, এ ব্যাপারে যে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিল তাকে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সুলূল বলে ডাকা হয়ে থাকে। বর্ণনাকারী উরওয়া (রাযিঃ) বলেন, আয়েশা (রাযিঃ)- এর ব্যাপারে হাসান ইবনে সাবিত (রাযিঃ)- কে গালমন্দ করাকে পছন্দ করতেন না। তিনি বলতেন, হাসান ইবনে সাবিত তো ঐ ব্যক্তি যিনি তার এক কবিতায় বলেছেন, আমার মান সম্মান এবং আমার বাপ দাদা মুহাম্মাদ (ﷺ)- এর মান সম্মান রক্ষায় নিবেদিত। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, এরপর আমরা মদীনায় আসলাম। মদীনায় আগমন করার পর একমাস পর্যন্ত আমি অসুস্থ থাকলাম। এদিকে অপবাদ রটনাকারীদের কথা নিয়ে লোকদের মধ্যে আলোচনা ও চর্চা হতে লাগলো। কিন্তু এসবের কিছুই আমি জানি না। তবে আমার সন্দেহ হচ্ছিল এবং তা আরো দৃঢ় হচ্ছিল আমার এ অসুখের সময়। কেননা এর পূর্বে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে যেরূপ স্নেহ- ভালবাসা লাভ করতাম আমার এ অসুখের সময় তা আমি পাচ্ছিলাম না।
তিনি আমার কাছে এসে সালাম করে কেবল “তুমি কেমন আছ” জিজ্ঞাসা করে চলে যেতেন। তাঁর এ আচরণই আমার মনে চরম সন্দেহের উদ্রেক করে। তবে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাইরে বের হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ জঘন্য অপবাদ সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। উম্মে মিসতাহ (রাযিঃ) (মিসতাহর মা) একদা আমার সাথে টয়লেটের দিকে বের হন। আর প্রকৃতির ডাকে আমাদের বের হওয়ার অবস্থা এই ছিলে যে, এক রাতে বের হলে আমরা আবার পরের রাতে বের হতাম। এ ছিল আমাদের ঘরের পার্শ্বে টয়লেট তৈরী করার পূর্বের ঘটনা। আমাদের অবস্থা প্রাচীন আরবীয় লোকদের অবস্থার মত ছিল। তাদের মত আমরাও টয়লেট করার জন্য ঝোঁপঝাড়ে চলে যেতাম। এমনকি (অভ্যাস না থাকার কারণে) বাড়ির পার্শ্বে টয়লেট তৈরী করলে আমরা খুব কষ্ট পেতাম।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, একদা আমি এবং উম্মে মিসতাহ (যিনি ছিলেন আবু রূহম ইবনে মুত্তালিব ইবনে আব্দে মুনাফের কন্যা, যার মা সাখার ইবনে আমির এর কন্যা ও আবু বকর সিদ্দীকের খালা এবং মিসতাহ ইবনে উসাসা ইবনে আব্বাদ ইবনে মুত্তালিব যার পুত্র” একত্রে বের হলাম। আমরা আমাদের কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে উম্মে মিসতাহ তার কাপড়ে জড়িয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে বললেন, মিসতাহ ধ্বংস হোক! আমি তাকে বললাম, আপনি খুব খারাপ কথা বলেছেন। আপনি কি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিকে গালি দিচ্ছেন? তিনি আমাকে বললেন, ওগো অবলা, সে তোমার সম্পর্কে কি বলে বেড়াচ্ছে তুমি তো তা শুনোনি। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, সে আমার সম্পর্কে কি বলছে? তখন তিনি অপবাদ রটনাকারীদের কথাবার্তা সম্পর্কে আমাকে জানালেন।
আয়েশা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, এরপর আমার পুরানো রোগ আরো বেড়ে গেল। আমি বাড়ি ফেরার পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার কাছে আসলেন এবং সালাম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কেমন আছ? আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আমি আমার পিতা-মাতার কাছে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক খবর জানতে চাচ্চিলাম, তাই আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে বললাম আপনি কি আমাকে আমার পিতা-মাতার কাছে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিবেন? আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে অনুমতি দিলেন। তখন (বাড়িতে গিয়ে) আমি আমার আম্মাকে বললাম আম্মাজান, লোকজন কি আলোচনা করছে? তিনি বললেন, বেটি এ বিষয়টিকে হালকা করে ফেল। আল্লাহর কসম, সতীন আছে এমন স্বামী সোহাগিনী সুন্দরী রমণীকে তাঁর সতীনরা বদনাম করবে না, এমন খুব কমই হয়ে থাকে।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আমি বিস্ময়ের সাথে বললাম, সুবাহানাল্লাহ! লোকজন কি এমন গুজবই রটিয়েছে। আয়েশা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন রাতভর আমি কাঁদলাম। কাঁদতে কাঁদতে ভোর হয়ে গেল। এর মধ্যে আমার অশ্রুও বন্ধ হল না এবং আমি ঘুমাতেও পারলাম না। এরপর ভোরবেলাও আমি কাঁদছিলাম। তিনি আরো বলেন যে, এ সময় ওহী নাযিল হতে বিলম্ব হলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার স্ত্রীর (আমার) বিচ্ছেদের বিষয়টি সম্পর্কে পরামর্শ ও আলোচনা করার নিমিত্তে আলী ইবনে আবু তালিব এবং উসামা ইবনে যায়দ (রাযিঃ)- কে ডেকে পাঠালেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, উসামা (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর স্ত্রীদের পবিত্রতা এবং তাদের প্রতি (নবীজির) ভালবাসার কারণে বললেন, (হে আল্লাহর রাসূল) তাঁরা আপনার স্ত্রী, তাদের সম্পর্কে আমি ভাল ছাড়া আর কিছুই জানি না।
আর আলী (রাযিঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ তো আপনার জন্য সংকীর্ণতা রাখেননি। তাঁকে (আয়েশা) ব্যতীত আরো বহু মহিলা রয়েছে। তবে আপনি এ ব্যাপারে দাসী [বারীরা (রাযিঃ)]- কে জিজ্ঞাসা করুন। সে আপনার কাছে সত্য কথাই বলবে। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বারীরা (রাযিঃ)-কে ডেকে বললেন, হে বারীরা, তুমি তাঁর মধ্যে কোনো সন্দেহমূলক আচরণ দেখেছ কি? বারীরা (রাযিঃ) তাঁকে বললেন, সেই আল্লাহর শপথ, যিনি আপনাকে সত্য বিধানসহ পাঠিয়েছেন, আমি তার মধ্যে কখনো এমন কিছু দেখিনি যার দ্বারা তাঁকে দোষী বলা যায়। তবে তাঁর ব্যাপারে শুধু এতটুকু বলা যায় যে, তিনি হলেন অল্প বয়স্কা যুবতী, রুটি তৈরী করার জন্য আটা খামির করে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। আর বকরী এসে অমনি তা খেয়ে ফেলে।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, (এ কথা শুনে) সেদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাথে সাথে উঠে গিয়ে মিম্বরে বসে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এর ক্ষতি থেকে রক্ষার আহবান জানিয়ে বলেন, হে মুসলিম সম্প্রদায়, যে আমার স্ত্রীর ব্যাপারে অপবাদ ও বদনাম রটিয়ে আমাকে কষ্ট দিয়েছে তার এ অপবাদ থেকে আমাকে কে মুক্ত করবে? আল্লাহর কসম, আমি আমার স্ত্রী সম্পর্কে ভাল ছাড়া আর কিছুই জানি না। তার তাঁরা (অপবাদ রটনাকারীরা) এমন এক ব্যক্তির (সাফওয়ান ইবনে মু‘আত্তাল) নাম উল্লেখ করছে যার সম্বন্ধেও আমি ভাল ছাড়া আর কিছুই জানি না। সে তো আমার সাথেই আমার ঘরে যায়। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, (এ কথা শুনে) বনী আব্দুল আশহাল গোত্রের সা‘দ (ইবনে মুআয) (রাযিঃ) উঠে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনাকে এ অপবাদ থেকে মুক্তি দেব। সে যদি আউস গোত্রের লোক হয় তা হলে তার শিরশ্ছেদ করব। আর যদি সে আমাদের ভাই খাযরাজের লোক হয় তাহলে তার ব্যাপারে আপনি যা বলবেন তাই পালন করব।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, এ সময় হাসসান ইবনে সাবিত (রাযিঃ)- এর মায়ের চাচাতো ভাই খাযরাজ গোত্রের সর্দার সাঈদ ইবনে উবাদা (রাযিঃ) দাঁড়িয়ে এ কথার প্রতিবাদ করলেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেনঃ এ ঘটনার পূর্বে তিনি একজন সৎ এবং নেককার লোক ছিলেন। কিন্তু (এ সময়) গোত্রীয় অহমিকায় উত্তেজিত হয়ে তিনি সা‘দ ইবনে মু‘আয (রাযিঃ)- কে বললেন, তুমি মিথ্যা কথা বলছ। আল্লাহর কসম, তুমি তাকে হত্যা করতে পারবে না এবং তাকে হত্যা করার ক্ষমতাও তোমার নেই। যদি সে তোমার গোত্রের লোক হত তাহলে তুমি তার হত্যা হওয়া কখনো পছন্দ করতে না। তখন সা‘দ ইবনে মু‘আয (রাযিঃ)- এর চাচাতো ভাই উসাঈদ ইবনে হুযাইর (রাযিঃ) সা‘দ ইবনে ওবায়দা (রাযিঃ)- কে বললেন, বরং তুমিই মিথ্যা কথা বললে। আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই তাকে হত্যা করব। তুমি হলে মুনাফিক। তাই মুনাফিকদের পক্ষ অবলম্বন করে কথা বলছ।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, এ সময় আউস ও খাযরাজ উভয় গোত্র খুব উত্তেজিত হয়ে উঠে। এমনকি তারা যুদ্ধের সংকল্প পর্যন্ত করে বসে। এ সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মিম্বরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের থামিয়ে শান্ত করলেন এবং নিজেও চুপ হয়ে গেলেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আমি সেদিন সারাক্ষণ কেঁদে কাটালাম। অশ্রুঝরা আমার বন্ধ হয়নি এবং একটু ঘুমও আমার আসেনি। তিনি বলেন, আমি ক্রন্দনরত ছিলাম আর আমার পিতা-মাতা আমার পার্শ্বে বসা ছিলেন। এমনি করে একদিন দুই রাত কেঁদে কেঁদে কাটিয়ে দেই। এর মাঝে আমার কোন ঘুম আসেনি। বরং অবারিত ধারায় আমার চোখ থেকে অশ্রুপাত হতে থাকে। মনে হচ্ছিল যেন, কান্নার ফলে আমার কলিজা ফেটে যাবে।
আমি ক্রন্দনরত ছিলাম আর আমার আব্বা-আম্মা আমার পাশে বসা ছিলেন। এমতাবস্থায় একজন আনসারী মহিলা আমার কাছে আসার অনুমতি চাইলে আমি তাকে আসার অনুমতি দিলাম। সে এসে বসল এবং আমার সাথে কাঁদতে আরম্ভ করল। তিনি বলেন, আমরা ক্রন্দনরত ছিলাম ঠিক এ সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের কাছে এসে সালাম করলেন এবং আমাদের পাশে বসে গেলেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, অপবাদ রটানোর পর আমার কাছে এসে এভাবে তিনি আর কখনো বসেননি। এদিকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দীর্ঘ একমাস অপেক্ষা করার পরও আমার বিষয়ে তাঁর নিকট কোনো ওহী আসেনি।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, বসার পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কালিমা শাহাদাত পাঠ করলেন। এরপর বললেন, যা হোক আয়েশা তোমার সম্বন্ধে আমার কাছে অনেক কথাই পৌঁছেছে, যদি তুমি এর থেকে মুক্ত হও তাহলে শীঘ্রই আল্লাহ তোমাকে এ অপবাদ থেকে মুক্ত করে দেবেন। আর যদি তুমি কোনো গুনাহ করে থাক তাহলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তাওবা কর। কেননা বান্দা গুনাহ স্বীকার করে তাওবা করলে আল্লাহ তাআলা তাওবা কবুল করেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার কথা বলে শেষ করলে আমার অশ্রুপাত বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি এক ফোঁটা অশ্রুও আমি আর অনুভব করলাম না। তখন আমি আমার আব্বাকে বললাম, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যা বলেছেন আমার পক্ষ থেকে আপনি তার জবাব দিন।
তখন আমার আব্বা বললেন, আল্লাহর কসম! রাসূল (ﷺ)- কে কি জবাব দিব আমি তা জানি না। তখন আমি আমার আম্মাকে বললাম, রাসূল (ﷺ) যা বলেছেন আমার পক্ষ থেকে আপনি তার জবাব দিন। তখন আমার আম্মা বললেন, আল্লাহর কসম! রাসূল (ﷺ)- কে কি জবাব দিব আমি তা জানি না। তখন আমি ছিলাম অল্প বয়স্কা কিশোরী। কুরআনও বেশী পড়তে পারতাম না। তথাপিও এ অবস্থা দেখে আমি নিজেই বললাম, আমি জানি আপনারা এ অপবাদের ঘটনা শুনেছেন, আপনারা তা বিশ্বাস করেছেন এবং বিষয়টি আপনাদের মনে সুদৃঢ় হয়ে আছে। এখন যদি আমি বলি যে, এর থেকে আমি পবিত্র এবং আমি নিষ্কলুষ তাহলে আপনারা আমাকে বিশ্বাস করবেন না। আর যদি আমি এ অপরাধের কথা স্বীকার করে নেই যা সম্পর্কে আমার আল্লাহ জানেন যে, আমি এর থেকে পবিত্র, তাহলে আপনারা তা বিশ্বাস করবেন। আল্লাহর কসম, আমি ও আপনারা যে অবস্থার স্বীকার হয়েছি এর জন্য (নবী) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)- এর পিতার কথার উদাহরণ ব্যতীত আমি আর কোনো উদাহরণ খুঁজে পাচ্ছিনা। তিনি বলেছিলেনঃ “সুতরাং পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ, সে বিষয়ে আল্লাহই একমাত্র আমার আশ্রয়স্থল।”
এরপর আমি মুখ ফিরিয়ে আমার বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম। আল্লাহ তাআলা জানেন যে, সে মূহুর্তেও আমি পবিত্র। অবশ্যই আল্লাহ আমার পবিত্রতা প্রকাশ করে দেবেন (এ কথার প্রতি আমার বিশ্বাস ছিল) তবে আল্লাহর কসম, আমি কখনো ধারণা করিনি যে, আমার ব্যাপারে আল্লাহ ওহী নাযিল করবেন যা পঠিত হবে। আমার ব্যাপারে আল্লাহ কোনো কথা বলবেন আমি নিজেকে এতখানি যোগ্য মনে করিনি বরং আমি নিজেকে এর চেয়ে অধিক অযোগ্য বলে মনে করতাম। তবে আমি আশা করতাম যে, হয়তো রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে এমন স্বপ্ন দেখানো হবে যার দ্বারা আল্লাহ আমার পবিত্রতা প্রকাশ করে দেবেন। আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখনো তাঁর বসার জায়গা ছাড়েননি এবং ঘরের লোকদের থেকেও কেউ ঘর থেকে বাইরে যাননি। এমতাবস্থায় তাঁর উপর ওহী নাযিল হতে শুরু হল। ওহী নাযিল হওয়ার সময় তাঁর যে বিশেষ কষ্ট হত তখনও সে অবস্থা তাঁর হল। এমনকি প্রচন্ড শীতের দিনেও তাঁর দেহ থেকে মোতির দানার মত বিন্দু বিন্দু ঘাম গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ত ঐ বাণীর গুরুভারের কারণে, যা তাঁর প্রতি নাযিল করা হয়েছে।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর এ অবস্থা দূরীভূত হলে তিনি হাসিমুখে প্রথমে যে কথাটি বললেন, তা হল, হে আয়েশা! আল্লাহ তোমার পবিত্রতা জাহির করে দিয়েছেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, এ কথা শুনে আমার আম্মা আমাকে বললেন, তুমি উঠে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর। আমি বললাম, আল্লাহর কসম আমি এখন তাঁর দিকে উঠে যাব না। মহান আল্লাহ ব্যতীত আর কারো প্রশংসা আমি করব না। আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহ (আমার পবিত্রতা ঘোষণা করে) যে দশটি আয়াত নাযিল করেছেন, তাহল এই,
“যারা এ অপবাদ রটনা করেছে তারা তো তোমাদেরই একটা দল; এ ঘটনাকে তোমরা তোমাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করো না; বরং এও তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে তাদের কৃত পাপকর্মের ফল এবং তাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছে তার জন্য আছে কঠিন শাস্তি। এ কথা শোনার পর মু’মিন পুরুষ এবং নারীগণ কেন নিজেদের বিষয়ে সৎ ধারণা করেনি এবং বলেনি, এটা তো সুস্পষ্ট অপবাদ। তারা কেন এ ব্যাপারে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করেনি? যেহেতু তারা সাক্ষী উপস্থিত করেনি, সেহেতু তারা আল্লাহর বিধানে মিথ্যাবাদী। দুনিয়া ও আখিরাতে তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমরা যাতে লিপ্ত ছিলে তার জন্য কঠিন শাস্তি তোমাদেরকে স্পর্শ করত। যখন তোমরা মুখে মুখে এ মিথ্যা ছাড়াচ্ছিলে এবং এমন বিষয় মুখে উচ্চারণ করছিলে যার কোনো জ্ঞান তোমাদের ছিলনা এবং একে তোমরা তুচ্ছ ব্যাপার বলে ভাবছিলে, অথচ আল্লাহর কাছে তা ছিল খুবই গুরুতর ব্যাপার। এবং এ কথা শোনামাত্র তোমরা কেন বললে না যে, এ বিষয়ে বলাবলি করা আমাদের জন্য উচিত নয়। আল্লাহ পবিত্র, মহান! এ তো এক গুরুতর অপবাদ। আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন, যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাকো তাহলে কখনো অনুরূপ আচরণের পুনরাবৃত্তি করবে না, আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বিবৃত করেন এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতের মর্মন্তুদ শাস্তি। আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেউই অব্যাহতি পেত না। আল্লাহ দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। (২৪ঃ ১১-২০)
এরপর আমার পবিত্রতা ঘোষণা করে আল্লাহ এ আয়াতগুলো নাযিল করলেন। আত্মীয়তা এবং দারিদ্রের কারণে আবু বকর সিদ্দিক (রাযিঃ) মিসতাহ ইবনে উসাসা কে আর্থিক ও বৈষয়িক সাহায্য করতেন। কিন্তু আয়েশা (রাযিঃ) সম্পর্কে তিনি যে অপবাদ রটিয়েছিলেন এ কারণে আবু বকর সিদ্দিক (রাযিঃ) কসম করে বললেন, আমি আর কখনো মিসতাহকে আর্থিক কোনো সাহায্য করব না। তখন আল্লাহ তাআলা নাযিল করলেন- তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্থকে এবং আল্লাহর রাস্তায় যারা গৃহত্যাগ করেছে তাদের কে কিছুই দিবে না। তারা যেন তাদের কে ক্ষমা করে এবং তাদের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করে। শোন! তোমরা কি পছন্দ কর না যে, আল্লাহ তোমাদের কে ক্ষমা করেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল; পরম দয়ালু! (২৪ঃ ২২)
(এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর) আবু বকর সিদ্দীক (রাযিঃ) বলে উঠলেন হ্যাঁ, আল্লাহর কসম অবশ্যই আমি পছন্দ করি যে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দিন। এরপর তিনি মিসতাহ (রাযিঃ)- এর জন্য যে অর্থ খরচ করতেন তা পুনঃ দিতে আরম্ভ করলেন এবং বললেন, আল্লাহর কসম, আমি তাঁকে এ অর্থ দেয়া আর কখনো বন্ধ করব না। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আমার এ বিষয় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাযিঃ) কেও জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তিনি যায়নাব (রাযিঃ)- কে বলেছিলেন, তুমি আয়েশা (রাযিঃ) সম্পর্কে কী জানো অথবা বলেছিলেন তুমি কি দেখেছ? তখন তিনি বলেছিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার চোখ এবং কানকে সংরক্ষণ করেছি। আল্লাহর কসম! আমি তার সম্পর্কে ভাল ছাড়া আর কিছুই জানি না।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, নবী কারীম (ﷺ)- এর স্ত্রীগণের মধ্যে তিনি আমার সমকক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। আল্লাহ তাঁকে আল্লাহ ভীতির ফলে রক্ষা করেছেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, অথচ তাঁর বোন হামনা (রাযিঃ) তাঁর পক্ষ অবলম্বন করে অপবাদ রটনাকারীদের মত অপবাদ রটনা করে বেড়াচ্ছিলেন। ফলে তিনি ধ্বংসপ্রাপ্তদের সাথে ধ্বংস হয়ে গেলেন।
বর্ণনাকারী ইবনে শিহাব (রাহঃ) বলেন, ঐ সমস্ত লোকের ঘটনা সম্পর্কে আমার কাছে যা পৌঁছেছে তা হল এইঃ উরওয়া (রাযিঃ) বলেন, আয়েশা (রাযিঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর কসম! যে ব্যক্তি সম্পর্কে অপবাদ দেয়া হয়েছিল, তিনি এসব কথা শুনে বলতেন, আল্লাহ মহান! ঐ সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, আমি কোনো স্ত্রীলোকের কাপড় খুলেও কোনোদিন দেখিনি। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, পরে তিনি আল্লাহর পথে শাহাদাত লাভ করেছিলেন।
باب حَدِيثُ الإِفْكِ الإِفْك وَالأَفَكِ، بِمَنْزِلَةِ النِّجْسِ وَالنَّجَسِ، يُقَالُ: إِفْكُهُمْ، وَأَفْكُهُمْ، وَأَفْكَهُمْ،
4141 - حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، وَسَعِيدُ بْنُ المُسَيِّبِ، وَعَلْقَمَةُ بْنُ وَقَّاصٍ، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حِينَ قَالَ لَهَا: أَهْلُ الإِفْكِ مَا قَالُوا، وَكُلُّهُمْ حَدَّثَنِي طَائِفَةً مِنْ حَدِيثِهَا، وَبَعْضُهُمْ كَانَ أَوْعَى لِحَدِيثِهَا مِنْ بَعْضٍ، وَأَثْبَتَ لَهُ اقْتِصَاصًا، وَقَدْ وَعَيْتُ عَنْ كُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمُ الحَدِيثَ الَّذِي حَدَّثَنِي عَنْ عَائِشَةَ، وَبَعْضُ حَدِيثِهِمْ يُصَدِّقُ بَعْضًا، وَإِنْ كَانَ بَعْضُهُمْ أَوْعَى لَهُ مِنْ بَعْضٍ، قَالُوا: قَالَتْ عَائِشَةُ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَرَادَ سَفَرًا أَقْرَعَ بَيْنَ أَزْوَاجِهِ، فَأَيُّهُنَّ خَرَجَ سَهْمُهَا خَرَجَ بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَهُ، قَالَتْ عَائِشَةُ: فَأَقْرَعَ بَيْنَنَا فِي غَزْوَةٍ غَزَاهَا فَخَرَجَ فِيهَا سَهْمِي، فَخَرَجْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ مَا أُنْزِلَ الحِجَابُ، فَكُنْتُ أُحْمَلُ فِي هَوْدَجِي وَأُنْزَلُ فِيهِ، فَسِرْنَا حَتَّى إِذَا فَرَغَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ غَزْوَتِهِ تِلْكَ وَقَفَلَ، دَنَوْنَا مِنَ المَدِينَةِ قَافِلِينَ، آذَنَ لَيْلَةً بِالرَّحِيلِ، فَقُمْتُ حِينَ آذَنُوا بِالرَّحِيلِ، فَمَشَيْتُ حَتَّى جَاوَزْتُ الجَيْشَ، فَلَمَّا قَضَيْتُ شَأْنِي أَقْبَلْتُ إِلَى رَحْلِي، فَلَمَسْتُ صَدْرِي، فَإِذَا عِقْدٌ لِي مِنْ جَزْعِ ظَفَارِ قَدِ انْقَطَعَ، فَرَجَعْتُ فَالْتَمَسْتُ عِقْدِي فَحَبَسَنِي ابْتِغَاؤُهُ، قَالَتْ: وَأَقْبَلَ [ص:117] الرَّهْطُ الَّذِينَ كَانُوا يُرَحِّلُونِي، فَاحْتَمَلُوا هَوْدَجِي فَرَحَلُوهُ عَلَى بَعِيرِي الَّذِي كُنْتُ أَرْكَبُ عَلَيْهِ، وَهُمْ يَحْسِبُونَ أَنِّي فِيهِ، وَكَانَ النِّسَاءُ إِذْ ذَاكَ خِفَافًا لَمْ يَهْبُلْنَ، وَلَمْ يَغْشَهُنَّ اللَّحْمُ، إِنَّمَا يَأْكُلْنَ العُلْقَةَ مِنَ الطَّعَامِ، فَلَمْ يَسْتَنْكِرِ القَوْمُ خِفَّةَ الهَوْدَجِ حِينَ رَفَعُوهُ وَحَمَلُوهُ، وَكُنْتُ جَارِيَةً حَدِيثَةَ السِّنِّ، فَبَعَثُوا الجَمَلَ فَسَارُوا، وَوَجَدْتُ عِقْدِي بَعْدَ مَا اسْتَمَرَّ الجَيْشُ، فَجِئْتُ مَنَازِلَهُمْ وَلَيْسَ بِهَا مِنْهُمْ دَاعٍ وَلاَ مُجِيبٌ، فَتَيَمَّمْتُ مَنْزِلِي الَّذِي كُنْتُ بِهِ، وَظَنَنْتُ أَنَّهُمْ سَيَفْقِدُونِي فَيَرْجِعُونَ إِلَيَّ، فَبَيْنَا أَنَا جَالِسَةٌ فِي مَنْزِلِي، غَلَبَتْنِي عَيْنِي فَنِمْتُ، وَكَانَ صَفْوَانُ بْنُ المُعَطَّلِ السُّلَمِيُّ ثُمَّ الذَّكْوَانِيُّ مِنْ وَرَاءِ الجَيْشِ، فَأَصْبَحَ عِنْدَ مَنْزِلِي، فَرَأَى سَوَادَ إِنْسَانٍ نَائِمٍ فَعَرَفَنِي حِينَ رَآنِي، وَكَانَ رَآنِي قَبْلَ الحِجَابِ، فَاسْتَيْقَظْتُ بِاسْتِرْجَاعِهِ حِينَ عَرَفَنِي، فَخَمَّرْتُ وَجْهِي بِجِلْبَابِي، وَوَاللَّهِ مَا تَكَلَّمْنَا بِكَلِمَةٍ، وَلاَ سَمِعْتُ مِنْهُ كَلِمَةً غَيْرَ اسْتِرْجَاعِهِ، وَهَوَى حَتَّى أَنَاخَ رَاحِلَتَهُ، فَوَطِئَ عَلَى يَدِهَا، فَقُمْتُ إِلَيْهَا فَرَكِبْتُهَا، فَانْطَلَقَ يَقُودُ بِي الرَّاحِلَةَ حَتَّى أَتَيْنَا الجَيْشَ مُوغِرِينَ فِي نَحْرِ الظَّهِيرَةِ وَهُمْ نُزُولٌ، قَالَتْ: فَهَلَكَ مَنْ هَلَكَ، وَكَانَ الَّذِي تَوَلَّى كِبْرَ الإِفْكِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُولَ، قَالَ عُرْوَةُ: أُخْبِرْتُ أَنَّهُ كَانَ يُشَاعُ وَيُتَحَدَّثُ بِهِ عِنْدَهُ، فَيُقِرُّهُ وَيَسْتَمِعُهُ وَيَسْتَوْشِيهِ، وَقَالَ عُرْوَةُ أَيْضًا: لَمْ يُسَمَّ مِنْ أَهْلِ الإِفْكِ أَيْضًا إِلَّا حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ، وَمِسْطَحُ بْنُ أُثَاثَةَ، وَحَمْنَةُ بِنْتُ جَحْشٍ، فِي نَاسٍ آخَرِينَ لاَ عِلْمَ لِي بِهِمْ، غَيْرَ أَنَّهُمْ عُصْبَةٌ، كَمَا قَالَ اللَّهُ تَعَالَى، وَإِنَّ كِبْرَ ذَلِكَ يُقَالُ لَهُ: عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَيٍّ ابْنُ سَلُولَ، قَالَ عُرْوَةُ: كَانَتْ عَائِشَةُ تَكْرَهُ أَنْ يُسَبَّ عِنْدَهَا حَسَّانُ، وَتَقُولُ: إِنَّهُ الَّذِي قَالَ:
[البحر الوافر]
فَإِنَّ أَبِي وَوَالِدَهُ وَعِرْضِي لِعِرْضِ مُحَمَّدٍ مِنْكُمْ وِقَاءُ قَالَتْ عَائِشَةُ: فَقَدِمْنَا المَدِينَةَ، فَاشْتَكَيْتُ حِينَ قَدِمْتُ شَهْرًا، وَالنَّاسُ يُفِيضُونَ فِي قَوْلِ أَصْحَابِ الإِفْكِ، لاَ أَشْعُرُ بِشَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ، وَهُوَ يَرِيبُنِي فِي وَجَعِي أَنِّي لاَ أَعْرِفُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللُّطْفَ الَّذِي كُنْتُ أَرَى مِنْهُ حِينَ أَشْتَكِي، إِنَّمَا يَدْخُلُ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيُسَلِّمُ، ثُمَّ يَقُولُ: «كَيْفَ تِيكُمْ» ، ثُمَّ يَنْصَرِفُ، فَذَلِكَ يَرِيبُنِي وَلاَ أَشْعُرُ بِالشَّرِّ، حَتَّى خَرَجْتُ حِينَ نَقَهْتُ، فَخَرَجْتُ مَعَ أُمِّ مِسْطَحٍ قِبَلَ المَنَاصِعِ، وَكَانَ مُتَبَرَّزَنَا، وَكُنَّا لاَ نَخْرُجُ إِلَّا لَيْلًا إِلَى لَيْلٍ، وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ نَتَّخِذَ الكُنُفَ قَرِيبًا مِنْ بُيُوتِنَا، قَالَتْ: وَأَمْرُنَا [ص:118] أَمْرُ العَرَبِ الأُوَلِ فِي البَرِّيَّةِ قِبَلَ الغَائِطِ، وَكُنَّا نَتَأَذَّى بِالكُنُفِ أَنْ نَتَّخِذَهَا عِنْدَ بُيُوتِنَا، قَالَتْ: فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ، وَهِيَ ابْنَةُ أَبِي رُهْمِ بْنِ المُطَّلِبِ بْنِ عَبْدِ مَنَافٍ، وَأُمُّهَا بِنْتُ صَخْرِ بْنِ عَامِرٍ، خَالَةُ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ، وَابْنُهَا مِسْطَحُ بْنُ أُثَاثَةَ بْنِ عَبَّادِ بْنِ المُطَّلِبِ، فَأَقْبَلْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ قِبَلَ بَيْتِي حِينَ فَرَغْنَا مِنْ شَأْنِنَا، فَعَثَرَتْ أُمُّ مِسْطَحٍ فِي مِرْطِهَا فَقَالَتْ: تَعِسَ مِسْطَحٌ، فَقُلْتُ لَهَا: بِئْسَ مَا قُلْتِ، أَتَسُبِّينَ رَجُلًا شَهِدَ بَدْرًا؟ فَقَالَتْ: أَيْ هَنْتَاهْ وَلَمْ تَسْمَعِي مَا قَالَ؟ قَالَتْ: وَقُلْتُ: مَا قَالَ؟ فَأَخْبَرَتْنِي بِقَوْلِ أَهْلِ الإِفْكِ، قَالَتْ: فَازْدَدْتُ مَرَضًا عَلَى مَرَضِي، فَلَمَّا رَجَعْتُ إِلَى بَيْتِي دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَلَّمَ، ثُمَّ قَالَ: «كَيْفَ تِيكُمْ» ، فَقُلْتُ لَهُ: أَتَأْذَنُ لِي أَنْ آتِيَ أَبَوَيَّ؟ قَالَتْ: وَأُرِيدُ أَنْ أَسْتَيْقِنَ الخَبَرَ مِنْ قِبَلِهِمَا، قَالَتْ: فَأَذِنَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ لِأُمِّي: يَا أُمَّتَاهُ، مَاذَا يَتَحَدَّثُ النَّاسُ؟ قَالَتْ: يَا بُنَيَّةُ، هَوِّنِي عَلَيْكِ، فَوَاللَّهِ لَقَلَّمَا كَانَتِ امْرَأَةٌ قَطُّ وَضِيئَةً عِنْدَ رَجُلٍ يُحِبُّهَا، لَهَا ضَرَائِرُ، إِلَّا كَثَّرْنَ عَلَيْهَا، قَالَتْ: فَقُلْتُ: سُبْحَانَ اللَّهِ، أَوَلَقَدْ تَحَدَّثَ النَّاسُ بِهَذَا؟ قَالَتْ: فَبَكَيْتُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ حَتَّى أَصْبَحْتُ لاَ يَرْقَأُ لِي دَمْعٌ وَلاَ أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ، ثُمَّ أَصْبَحْتُ أَبْكِي، قَالَتْ: وَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ وَأُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ حِينَ اسْتَلْبَثَ الوَحْيُ، يَسْأَلُهُمَا وَيَسْتَشِيرُهُمَا فِي فِرَاقِ أَهْلِهِ، قَالَتْ: فَأَمَّا أُسَامَةُ فَأَشَارَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالَّذِي يَعْلَمُ مِنْ بَرَاءَةِ أَهْلِهِ، وَبِالَّذِي يَعْلَمُ لَهُمْ فِي نَفْسِهِ، فَقَالَ أُسَامَةُ: أَهْلَكَ، وَلاَ نَعْلَمُ إِلَّا خَيْرًا، وَأَمَّا عَلِيٌّ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَمْ يُضَيِّقِ اللَّهُ عَلَيْكَ، وَالنِّسَاءُ سِوَاهَا كَثِيرٌ، وَسَلِ الجَارِيَةَ تَصْدُقْكَ، قَالَتْ: فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَرِيرَةَ، فَقَالَ: «أَيْ بَرِيرَةُ، هَلْ رَأَيْتِ مِنْ شَيْءٍ يَرِيبُكِ؟» . قَالَتْ لَهُ بَرِيرَةُ: وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ، مَا رَأَيْتُ عَلَيْهَا أَمْرًا قَطُّ أَغْمِصُهُ غَيْرَ أَنَّهَا جَارِيَةٌ حَدِيثَةُ السِّنِّ، تَنَامُ عَنْ عَجِينِ أَهْلِهَا، فَتَأْتِي الدَّاجِنُ فَتَأْكُلُهُ، قَالَتْ: فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ يَوْمِهِ فَاسْتَعْذَرَ مِنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُبَيٍّ، وَهُوَ عَلَى المِنْبَرِ، فَقَالَ: «يَا مَعْشَرَ المُسْلِمِينَ، مَنْ يَعْذِرُنِي مِنْ رَجُلٍ قَدْ بَلَغَنِي عَنْهُ أَذَاهُ فِي أَهْلِي، وَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ عَلَى أَهْلِي إِلَّا خَيْرًا، وَلَقَدْ ذَكَرُوا رَجُلًا مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِ إِلَّا خَيْرًا، وَمَا يَدْخُلُ عَلَى أَهْلِي إِلَّا مَعِي» . قَالَتْ: فَقَامَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ أَخُو بَنِي عَبْدِ الأَشْهَلِ، فَقَالَ [ص:119]: أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَعْذِرُكَ، فَإِنْ كَانَ مِنَ الأَوْسِ ضَرَبْتُ عُنُقَهُ، وَإِنْ كَانَ مِنْ إِخْوَانِنَا مِنَ الخَزْرَجِ أَمَرْتَنَا فَفَعَلْنَا أَمْرَكَ، قَالَتْ: فَقَامَ رَجُلٌ مِنَ الخَزْرَجِ، وَكَانَتْ أُمُّ حَسَّانَ بِنْتَ عَمِّهِ مِنْ فَخِذِهِ، وَهُوَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ، وَهُوَ سَيِّدُ الخَزْرَجِ، قَالَتْ: وَكَانَ قَبْلَ ذَلِكَ رَجُلًا صَالِحًا، وَلَكِنِ احْتَمَلَتْهُ الحَمِيَّةُ، فَقَالَ لِسَعْدٍ: كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللَّهِ لاَ تَقْتُلُهُ، وَلاَ تَقْدِرُ عَلَى قَتْلِهِ، وَلَوْ كَانَ مِنْ رَهْطِكَ مَا أَحْبَبْتَ أَنْ يُقْتَلَ. فَقَامَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ، وَهُوَ ابْنُ عَمِّ سَعْدٍ، فَقَالَ لِسَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ: كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللَّهِ لَنَقْتُلَنَّهُ، فَإِنَّكَ مُنَافِقٌ تُجَادِلُ عَنِ المُنَافِقِينَ، قَالَتْ: فَثَارَ الحَيَّانِ الأَوْسُ، وَالخَزْرَجُ حَتَّى هَمُّوا أَنْ يَقْتَتِلُوا، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمٌ عَلَى المِنْبَرِ، قَالَتْ: فَلَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُخَفِّضُهُمْ، حَتَّى سَكَتُوا وَسَكَتَ، قَالَتْ: فَبَكَيْتُ يَوْمِي ذَلِكَ كُلَّهُ لاَ يَرْقَأُ لِي دَمْعٌ وَلاَ أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ، قَالَتْ: وَأَصْبَحَ أَبَوَايَ عِنْدِي، وَقَدْ بَكَيْتُ لَيْلَتَيْنِ وَيَوْمًا، لاَ يَرْقَأُ لِي دَمْعٌ وَلاَ أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ، حَتَّى إِنِّي لَأَظُنُّ أَنَّ البُكَاءَ فَالِقٌ كَبِدِي، فَبَيْنَا أَبَوَايَ جَالِسَانِ عِنْدِي وَأَنَا أَبْكِي، فَاسْتَأْذَنَتْ عَلَيَّ امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَأَذِنْتُ لَهَا، فَجَلَسَتْ تَبْكِي مَعِي، قَالَتْ: فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْنَا فَسَلَّمَ ثُمَّ جَلَسَ، قَالَتْ: وَلَمْ يَجْلِسْ عِنْدِي مُنْذُ قِيلَ مَا قِيلَ قَبْلَهَا، وَقَدْ لَبِثَ شَهْرًا لاَ يُوحَى إِلَيْهِ فِي شَأْنِي بِشَيْءٍ، قَالَتْ: فَتَشَهَّدَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ جَلَسَ، ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ، يَا عَائِشَةُ، إِنَّهُ بَلَغَنِي عَنْكِ كَذَا وَكَذَا، فَإِنْ كُنْتِ بَرِيئَةً، فَسَيُبَرِّئُكِ اللَّهُ، وَإِنْ كُنْتِ أَلْمَمْتِ بِذَنْبٍ، فَاسْتَغْفِرِي اللَّهَ وَتُوبِي إِلَيْهِ، فَإِنَّ العَبْدَ إِذَا اعْتَرَفَ ثُمَّ تَابَ، تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ» ، قَالَتْ: فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَقَالَتَهُ قَلَصَ دَمْعِي حَتَّى مَا أُحِسُّ مِنْهُ قَطْرَةً، فَقُلْتُ لِأَبِي: أَجِبْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِّي فِيمَا قَالَ: فَقَالَ أَبِي: وَاللَّهِ مَا أَدْرِي مَا أَقُولُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ لِأُمِّي: أَجِيبِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا قَالَ: قَالَتْ أُمِّي: وَاللَّهِ مَا أَدْرِي مَا أَقُولُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: وَأَنَا جَارِيَةٌ حَدِيثَةُ السِّنِّ: لاَ أَقْرَأُ مِنَ القُرْآنِ كَثِيرًا: إِنِّي وَاللَّهِ لَقَدْ عَلِمْتُ: لَقَدْ سَمِعْتُمْ هَذَا الحَدِيثَ حَتَّى اسْتَقَرَّ فِي أَنْفُسِكُمْ وَصَدَّقْتُمْ بِهِ، فَلَئِنْ قُلْتُ لَكُمْ: إِنِّي بَرِيئَةٌ، لاَ تُصَدِّقُونِي، وَلَئِنِ اعْتَرَفْتُ لَكُمْ بِأَمْرٍ، وَاللَّهُ يَعْلَمُ أَنِّي مِنْهُ بَرِيئَةٌ، لَتُصَدِّقُنِّي، فَوَاللَّهِ لاَ أَجِدُ لِي وَلَكُمْ مَثَلًا إِلَّا أَبَا يُوسُفَ حِينَ قَالَ: {فَصَبْرٌ جَمِيلٌ وَاللَّهُ المُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ} [يوسف: 18] ثُمَّ تَحَوَّلْتُ وَاضْطَجَعْتُ عَلَى فِرَاشِي، وَاللَّهُ يَعْلَمُ أَنِّي حِينَئِذٍ بَرِيئَةٌ، وَأَنَّ اللَّهَ مُبَرِّئِي [ص:120] بِبَرَاءَتِي، وَلَكِنْ وَاللَّهِ مَا كُنْتُ أَظُنُّ أَنَّ اللَّهَ مُنْزِلٌ فِي شَأْنِي وَحْيًا يُتْلَى، لَشَأْنِي فِي نَفْسِي كَانَ أَحْقَرَ مِنْ أَنْ يَتَكَلَّمَ اللَّهُ فِيَّ بِأَمْرٍ، وَلَكِنْ كُنْتُ أَرْجُو أَنْ يَرَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي النَّوْمِ رُؤْيَا يُبَرِّئُنِي اللَّهُ بِهَا، فَوَاللَّهِ مَا رَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَجْلِسَهُ، وَلاَ خَرَجَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ البَيْتِ، حَتَّى أُنْزِلَ عَلَيْهِ، فَأَخَذَهُ مَا كَانَ يَأْخُذُهُ مِنَ البُرَحَاءِ، حَتَّى إِنَّهُ لَيَتَحَدَّرُ مِنْهُ مِنَ العَرَقِ مِثْلُ الجُمَانِ، وَهُوَ فِي يَوْمٍ شَاتٍ مِنْ ثِقَلِ القَوْلِ الَّذِي أُنْزِلَ عَلَيْهِ، قَالَتْ: فَسُرِّيَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَضْحَكُ، فَكَانَتْ أَوَّلَ كَلِمَةٍ تَكَلَّمَ بِهَا أَنْ قَالَ: «يَا عَائِشَةُ، أَمَّا اللَّهُ فَقَدْ بَرَّأَكِ» . قَالَتْ: فَقَالَتْ لِي أُمِّي: قُومِي إِلَيْهِ، فَقُلْتُ: وَاللَّهِ لاَ أَقُومُ إِلَيْهِ، فَإِنِّي لاَ أَحْمَدُ إِلَّا اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ، قَالَتْ: وَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: {إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ عُصْبَةٌ مِنْكُمْ} العَشْرَ الآيَاتِ، ثُمَّ أَنْزَلَ اللَّهُ هَذَا فِي بَرَاءَتِي، قَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ: وَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى مِسْطَحِ بْنِ أُثَاثَةَ لِقَرَابَتِهِ مِنْهُ وَفَقْرِهِ: وَاللَّهِ لاَ أُنْفِقُ عَلَى مِسْطَحٍ شَيْئًا أَبَدًا، بَعْدَ الَّذِي قَالَ لِعَائِشَةَ مَا قَالَ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ: {وَلاَ يَأْتَلِ أُولُو الفَضْلِ مِنْكُمْ} - إِلَى قَوْلِهِ - {غَفُورٌ رَحِيمٌ} [البقرة: 173] ، قَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ: بَلَى وَاللَّهِ إِنِّي لَأُحِبُّ أَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لِي، فَرَجَعَ إِلَى مِسْطَحٍ النَّفَقَةَ الَّتِي كَانَ يُنْفِقُ عَلَيْهِ، وَقَالَ: وَاللَّهِ لاَ أَنْزِعُهَا مِنْهُ أَبَدًا، قَالَتْ عَائِشَةُ: وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَأَلَ زَيْنَبَ بِنْتَ جَحْشٍ عَنْ أَمْرِي، فَقَالَ لِزَيْنَبَ: «مَاذَا عَلِمْتِ، أَوْ رَأَيْتِ» . فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَحْمِي سَمْعِي وَبَصَرِي، وَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ إِلَّا خَيْرًا، قَالَتْ عَائِشَةُ: وَهِيَ الَّتِي كَانَتْ تُسَامِينِي مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَصَمَهَا اللَّهُ بِالوَرَعِ، قَالَتْ: وَطَفِقَتْ أُخْتُهَا حَمْنَةُ تُحَارِبُ لَهَا، فَهَلَكَتْ، فِيمَنْ هَلَكَ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ: «فَهَذَا الَّذِي بَلَغَنِي مِنْ حَدِيثِ هَؤُلاَءِ الرَّهْطِ» ثُمَّ قَالَ عُرْوَةُ، قَالَتْ عَائِشَةُ: " وَاللَّهِ إِنَّ الرَّجُلَ الَّذِي قِيلَ لَهُ مَا قِيلَ لَيَقُولُ: سُبْحَانَ اللَّهِ، فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا كَشَفْتُ مِنْ كَنَفِ أُنْثَى قَطُّ، قَالَتْ: ثُمَّ قُتِلَ بَعْدَ ذَلِكَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ "
হাদীস নং: ৩৮৩৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৪২
২১৯৮. ইফকের ঘটনা [ইমাম বুখারী (রাহঃ) বলেন] إِفْك শব্দটি نِجْس ও نَجَس এর মত إِفْك ও أَفك উভয়ভাবেই ব্যবহৃত হয়। তাই আরবীয় লোকেরা বলেন, أَفْكُهُمْ - إِفْكُهُمْ ও أَفْكَهُمْ
৩৮৩৬। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... যুহরী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, ওয়ালীদ ইবনে আব্দুল মালিক (রাহঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার নিকট কি এ সংবাদ পৌঁছেছে যে, আয়েশা (রাযিঃ)- এর প্রতি অপবাদ আরোপকারীদের মধ্যে আলী (রাযিঃ)-ও শামিল ছিলেন? আমি বললাম, না, তবে আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান ও আবু বকর ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে হারিস নামক তোমার গোত্রের দুই ব্যক্তি আমাকে জানিয়েছে যে, আয়েশা (রাযিঃ) তাদের দু’জনকে বলেছেন যে, আলী (রাযিঃ) তার ব্যাপারে সম্পূর্ণভাবে নির্দোষ ছিলেন।
باب حَدِيثُ الإِفْكِ الإِفْك وَالأَفَكِ، بِمَنْزِلَةِ النِّجْسِ وَالنَّجَسِ، يُقَالُ: إِفْكُهُمْ، وَأَفْكُهُمْ، وَأَفْكَهُمْ،
4142 - حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: أَمْلَى عَلَيَّ هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ مِنْ حِفْظِهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: قَالَ لِي الوَلِيدُ بْنُ عَبْدِ المَلِكِ: أَبَلَغَكَ أَنَّ عَلِيًّا، كَانَ فِيمَنْ قَذَفَ عَائِشَةَ؟ قُلْتُ: لاَ، وَلَكِنْ قَدْ أَخْبَرَنِي رَجُلاَنِ مِنْ قَوْمِكَ، أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الحَارِثِ، أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ لَهُمَا: " كَانَ عَلِيٌّ مُسَلِّمًا فِي شَأْنِهَا فَرَاجَعُوهُ، فَلَمْ يَرْجِعْ وَقَالَ: مُسَلِّمًا، بِلاَ شَكٍّ فِيهِ وَعَلَيْهِ، كَانَ فِي أَصْلِ العَتِيقِ كَذَلِكَ "
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৩৮৩৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৪৩
২১৯৮. ইফকের ঘটনা [ইমাম বুখারী (রাহঃ) বলেন] إِفْك শব্দটি نِجْس ও نَجَس এর মত إِفْك ও أَفك উভয়ভাবেই ব্যবহৃত হয়। তাই আরবীয় লোকেরা বলেন, أَفْكُهُمْ - إِفْكُهُمْ ও أَفْكَهُمْ
৩৮৩৭। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... আয়েশা (রাযিঃ)- এর মা উম্মে রুমান (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও আয়েশা (রাযিঃ) বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় একজন আনসারী মহিলা প্রবেশ করে বলতে লাগল আল্লাহ অমুক অমুককে ধ্বংস করুন। এ কথা শুনে উম্মে রুমান (রাযিঃ) বললেন, তুমি কি বলছ? সে বলল, যারা অপবাদ রটিয়েছে তাদের মধ্যে আমার ছেলেও আছে। উম্মে রুমান (রাযিঃ) পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, কি অপবাদ রটিয়েছে? সে বলল এই অপবাদ রটিয়েছে। আয়িশা (রাযিঃ) বললেন। (এ কথা কি) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) শুনেছেন? সে বলল, হ্যাঁ। আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, আবু বকরও শুনেছেন? সে বল, হ্যাঁ। এ কথা শুনে আয়েশা (রাযিঃ) বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন। হুঁশ ফিরে আসার পর তাঁর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসল। এরপর আমি একটি চাঁদর দিয়ে তাঁকে ঢেকে দিলাম। এরপর নবী কারীম (ﷺ) এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তাঁর কি অবস্থা? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাঁর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এসেছে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হয়তো সে অপবাদের ঘটনার কারণে। তিনি বললেন, হ্যাঁ। এ সময় আয়েশা (রাযিঃ) উঠে বসলেন এবং বললেন, আল্লাহর কসম! (আমার পবিত্রতার ব্যাপারে) আমি যদি কসম করি, তাহলেও আপানারা আমাকে বিশ্বাস করবেন না, আর যদি আমি ওযর পেশ করি তবুও আমার ওযর আপনারা কবুল করবেন না, আমার এবং আপনাদের উদাহরণ নবী ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর ছেলেদের উদাহরণের মতই। তিনি বলেছিলেন, “তোমরা যা বলেছ সে বিষয়ে আল্লাহই একমাত্র আমার সাহায্যস্থল।” উম্মে রুমান (রাযিঃ) বলেন, তখন নবী কারীম (ﷺ) আমাকে কিছু না বলেই চলে গেলেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁর [আয়েশা (রাযিঃ)] পবিত্রতা বর্ণনা করে আয়াত নাযিল করলেন। আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, একমাত্র আল্লাহরই প্রশংসা করি আর কারো না, আপনারও না।
باب حَدِيثُ الإِفْكِ الإِفْك وَالأَفَكِ، بِمَنْزِلَةِ النِّجْسِ وَالنَّجَسِ، يُقَالُ: إِفْكُهُمْ، وَأَفْكُهُمْ، وَأَفْكَهُمْ،
4143 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَسْرُوقُ بْنُ الأَجْدَعِ، قَالَ: حَدَّثَتْنِي أُمُّ رُومَانَ، وَهِيَ أُمُّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَتْ بَيْنَا أَنَا قَاعِدَةٌ أَنَا وَعَائِشَةُ، إِذْ وَلَجَتْ امْرَأَةٌ [ص:121] مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَتْ: فَعَلَ اللَّهُ بِفُلاَنٍ وَفَعَلَ، فَقَالَتْ أُمُّ رُومَانَ: وَمَا ذَاكَ؟ قَالَتْ: ابْنِي فِيمَنْ حَدَّثَ الحَدِيثَ، قَالَتْ: وَمَا ذَاكَ؟ قَالَتْ: كَذَا وَكَذَا، قَالَتْ عَائِشَةُ: سَمِعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، قَالَتْ: وَأَبُو بَكْرٍ؟ قَالَتْ: نَعَمْ: فَخَرَّتْ مَغْشِيًّا عَلَيْهَا، فَمَا أَفَاقَتْ إِلَّا وَعَلَيْهَا حُمَّى بِنَافِضٍ، فَطَرَحْتُ عَلَيْهَا ثِيَابَهَا فَغَطَّيْتُهَا، فَجَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «مَا شَأْنُ هَذِهِ؟» . قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخَذَتْهَا الحُمَّى بِنَافِضٍ، قَالَ: «فَلَعَلَّ فِي حَدِيثٍ تُحُدِّثَ بِهِ» ، قَالَتْ: نَعَمْ، فَقَعَدَتْ عَائِشَةُ فَقَالَتْ: وَاللَّهِ لَئِنْ حَلَفْتُ لاَ تُصَدِّقُونِي، وَلَئِنْ قُلْتُ لاَ تَعْذِرُونِي، مَثَلِي وَمَثَلُكُمْ كَيَعْقُوبَ وَبَنِيهِ: {وَاللَّهُ المُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ} [يوسف: 18] قَالَتْ: وَانْصَرَفَ وَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا، فَأَنْزَلَ اللَّهُ عُذْرَهَا، قَالَتْ: بِحَمْدِ اللَّهِ لاَ بِحَمْدِ أَحَدٍ وَلاَ بِحَمْدِكَ
হাদীস নং: ৩৮৩৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৪৪
২১৯৮. ইফকের ঘটনা [ইমাম বুখারী (রাহঃ) বলেন] إِفْك শব্দটি نِجْس ও نَجَس এর মত إِفْك ও أَفك উভয়ভাবেই ব্যবহৃত হয়। তাই আরবীয় লোকেরা বলেন, أَفْكُهُمْ - إِفْكُهُمْ ও أَفْكَهُمْ
৩৮৩৮। ইয়াহয়া (রাহঃ) .... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি আয়াতাংশ إِذْ تَلِقُونَهُ بِأَلْسِنَتِكُمْ পড়তেন এবং বলতেন الْوَلْقُ অর্থ الْكَذِبُ। ইবনে আবু মুলায়কা (রাহঃ) বলেছেন, এ আয়াতের ব্যাখ্যা আয়েশা (রাযিঃ) অন্যদের তুলনায় বেশী জানতেন। কেননা এ আয়াত তারই ব্যাপারে নাযিল হয়েছিল।
باب حَدِيثُ الإِفْكِ الإِفْك وَالأَفَكِ، بِمَنْزِلَةِ النِّجْسِ وَالنَّجَسِ، يُقَالُ: إِفْكُهُمْ، وَأَفْكُهُمْ، وَأَفْكَهُمْ،
4144 - حَدَّثَنِي يَحْيَى، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ نَافِعِ بْنِ عُمَرَ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: " كَانَتْ تَقْرَأُ: إِذْ تَلِقُونَهُ بِأَلْسِنَتِكُمْ، وَتَقُولُ: الوَلْقُ الكَذِبُ " قَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ: «وَكَانَتْ أَعْلَمَ مِنْ غَيْرِهَا بِذَلِكَ لِأَنَّهُ نَزَلَ فِيهَا»
হাদীস নং: ৩৮৩৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৪৫
২১৯৮. ইফকের ঘটনা [ইমাম বুখারী (রাহঃ) বলেন] إِفْك শব্দটি نِجْس ও نَجَس এর মত إِفْك ও أَفك উভয়ভাবেই ব্যবহৃত হয়। তাই আরবীয় লোকেরা বলেন, أَفْكُهُمْ - إِفْكُهُمْ ও أَفْكَهُمْ
৩৮৩৯। উসমান ইবনে আবী শাঈবা (রাহঃ) .... হিশামের পিতা [উরওয়া (রাযিঃ)] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আয়েশা (রাযিঃ)- এর সম্মুখে হাসসান ইবনে সাবিত (রাযিঃ)- কে গালি দিতে আরম্ভ করলে তিনি বললেন, তাঁকে গালি দিও না। কেননা তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর পক্ষ অবলম্বন করে কাফিরদের বিরুদ্ধে লড়াই করতেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেছেন, হাসসান ইবনে সাবিত (রাযিঃ) কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দাবাদ করার জন্য নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে অনুমতি চাইলে তিনি বললেন, তুমি কুরাইশদের নিন্দাসূচক কবিতা রচনা করলে আমার বংশ কে কি করে রক্ষা করবে? তিনি বললেন, আমি আপনাকে তাদের থেকে এমনিভাবে পৃথক করে রাখব যেমনি ভাবে আটার খামির থেকে চুলকে পৃথক করে রাখা হয়।
মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেছেন, উসমান ইবনে ফারকাদ (রাহঃ) আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, আমি হিশাম (রাহঃ)- কে তার পিতা উরওয়া (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি হাসসান ইবনে সাবিত (রাযিঃ)- কে গালি দিয়েছি। কেননা তিনি ছিলেন, আয়েশা (রাযিঃ)- এর প্রতি অপবাদ রটনাকারীদের মধ্যে অন্যতম।
باب حَدِيثُ الإِفْكِ الإِفْك وَالأَفَكِ، بِمَنْزِلَةِ النِّجْسِ وَالنَّجَسِ، يُقَالُ: إِفْكُهُمْ، وَأَفْكُهُمْ، وَأَفْكَهُمْ،
4145 - حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: ذَهَبْتُ أَسُبُّ حَسَّانَ عِنْدَ عَائِشَةَ، فَقَالَتْ: لاَ تَسُبَّهُ، فَإِنَّهُ كَانَ يُنَافِحُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَالَتْ عَائِشَةُ: اسْتَأْذَنَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي هِجَاءِ المُشْرِكِينَ، قَالَ «كَيْفَ بِنَسَبِي؟» قَالَ: لَأَسُلَّنَّكَ مِنْهُمْ كَمَا تُسَلُّ الشَّعَرَةُ مِنَ العَجِينِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُقْبَةَ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ فَرْقَدٍ، سَمِعْتُ هِشَامًا، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سَبَبْتُ حَسَّانَ وَكَانَ مِمَّنْ كَثَّرَ عَلَيْهَا
হাদীস নং: ৩৮৪০
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৪৬
২১৯৮. ইফকের ঘটনা [ইমাম বুখারী (রাহঃ) বলেন] إِفْك শব্দটি نِجْس ও نَجَس এর মত إِفْك ও أَفك উভয়ভাবেই ব্যবহৃত হয়। তাই আরবীয় লোকেরা বলেন, أَفْكُهُمْ - إِفْكُهُمْ ও أَفْكَهُمْ
৩৮৪০। বিশর ইবনে খালিদ (রাহঃ) .... মাসরূক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাযিঃ)- এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তাঁর কাছে হাসসান ইবনে সাবিত (রাযিঃ) তাঁকে তাঁর নিজের রচিত কবিতা আবৃত্তি করে শোনাচ্ছিলেন। তিনি আয়েশা (রাযিঃ)- এর প্রশংসা করে বলছেন, “তিনি সতী, ব্যক্তিত্বসম্পন্না ও জ্ঞানবতী, তাঁর প্রতি কোনো সন্দেহই আরোপ করা যায় না। তিনি অভুক্ত থাকেন, তবুও অনুপস্থিত লোকের গোশত খান না বা গীবত করেন না। এ কথা শুনে আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, কিন্তু আপনি তো এরূপ নন। মাসরুক (রাহঃ) বলেছেন যে, আমি আয়েশা (রাযিঃ)- কে বললাম যে, আপনি কেন তাকে আপনার কাছে আসতে অনুমতি দেন? অথচ আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “তাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছে, তার জন্য আছে কঠিন শাস্তি”। আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, অন্ধত্ব থেকে কঠিন শাস্তি আর কি হতে পারে? তিনি তাকে আরো বলেন যে, হাসসান ইবনে সাবিত (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর পক্ষ হয়ে কাফেরদের সাথে মুকাবিলা করতেন অথবা কাফেরদের বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক কবিতা রচনা করতেন।
باب حَدِيثُ الإِفْكِ الإِفْك وَالأَفَكِ، بِمَنْزِلَةِ النِّجْسِ وَالنَّجَسِ، يُقَالُ: إِفْكُهُمْ، وَأَفْكُهُمْ، وَأَفْكَهُمْ،
4146 - حَدَّثَنِي بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ: دَخَلْنَا عَلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، وَعِنْدَهَا حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ يُنْشِدُهَا شِعْرًا، يُشَبِّبُ بِأَبْيَاتٍ لَهُ: وَقَالَ: حَصَانٌ رَزَانٌ مَا تُزَنُّ بِرِيبَةٍ وَتُصْبِحُ غَرْثَى مِنْ لُحُومِ الغَوَافِلِ، فَقَالَتْ لَهُ عَائِشَةُ: لَكِنَّكَ لَسْتَ كَذَلِكَ، قَالَ مَسْرُوقٌ: فَقُلْتُ لَهَا لِمَ تَأْذَنِينَ لَهُ أَنْ يَدْخُلَ عَلَيْكِ؟ وَقَدْ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: {وَالَّذِي تَوَلَّى كِبْرَهُ مِنْهُمْ لَهُ عَذَابٌ عَظِيمٌ} [النور: 11] فَقَالَتْ: " وَأَيُّ عَذَابٍ أَشَدُّ مِنَ العَمَى؟ قَالَتْ لَهُ: إِنَّهُ كَانَ يُنَافِحُ، أَوْ يُهَاجِي عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "