আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১১ টি

হাদীস নং: ৩৭৮৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৬
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা। ইবনে ইসহাক (রাহঃ) বলেন, আসিম ইবনে উমর (রাযিঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাজীর যুদ্ধ উহুদের যুদ্ধের পর সংঘটিত হয়েছিল
৩৭৮৬। ইবরাহীম ইবনে মুসা (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) (মুশরীকদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য) আসিম ইবনে উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ)- এর নানা আসিম ইবনে সাবিত আনসারী (রাযিঃ)- এর নেতৃত্বে একটি গোয়েন্দা দল কোথাও প্রেরণ করলেন। যেতে যেতে তারা উসফান ও মক্কার মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছলে হুযায়ল গোত্রের একটি শাখা বনী লিহইয়ানের নিকট তাঁদের আগমনের কথা জানিয়ে দেওয়া হল। এ সংবাদ পাওয়ার পর বনী লিহইয়ানের প্রায় একশ তীরন্দাজ সমভিব্যাহারে তাদের প্রতি ধাওয়া করল। দলটি তাদের (মুসলিম গোয়েন্দা দলের) পদচিহ্ন অনুসরণ করে এমন এক স্থানে গিয়ে পৌঁছলো, যে স্থানে অবতরণ করে সাহাবীগণ খেজুর খেয়েছিলেন। তারা সেখানে খেজুরের আটি দেখতে পেল যা সাহাবীগণ মদীনা থেকে পাথেয়রূপে এনেছিলেন। তখন তারা বলল, এগুলো তো ইয়াসরিবের খেজুর (এর আঁটি)।
এরপর তারা পদচিহ্ন ধরে খুঁজতে খুঁজতে শেষ পর্যন্ত তাঁদেরকে ধরে ফেলল। আসিম ও তাঁর সাথীগণ বুঝতে পেরে ফাদফাদ নামক টিলায় উঠে আশ্রয় নিলেন। এবার শত্রুদল এসে তাঁদেরকে ঘিরে ফেলল এবং বলল, আমরা তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যদি তোমরা নেমে আস তাহলে আমরা তোমাদের একজনকেও হত্যা করব না। আসিম (রাযিঃ) বললেন, আমি কোনো কাফেরের প্রতিশ্রুতিতে আশ্বস্ত হয়ে এখান থেকে অবতরণ করব না। হে আল্লাহ! আমাদের এ সংবাদ আপনার রাসূলের নিকট পৌঁছিয়ে দিন। এরপর তারা মুসলিম গোয়েন্দা দলের প্রতি আক্রমণ করল এবং তীর বর্ষণ করতে শুরু করল। এভাবে তারা আসিম (রাযিঃ)-সহ সাতজনকে তীর নিক্ষেপ করে শহীদ করে দিল।
এখন শুধু বাকী রইলেন খুবাইব (রাযিঃ), যায়দ (রাযিঃ) এবং অপর একজন সাহাবী (আব্দুল্লাহ ইবনে তারিক) (রাযিঃ)। পুনরায় তারা তাদের কে ওয়াদা দিল। এই ওয়াদায় আশ্বস্ত হয়ে তাঁরা তাদের কাছে নেমে এলেন। এবার তারা তাঁদেরকে কাবু করে ফেলার পর নিজেদের ধনুকের তার খুলে এর দ্বারা তাঁদেরকে বেঁধে ফেলল। এ দেখে তাঁদের সাথী তৃতীয় সাহাবী (আব্দুল্লাহ ইবনে তারিক) (রাযিঃ) বললেন, এটাই প্রথম বিশ্বাসঘাতকতা। তাই তিনি তাদের সাথে যেতে অস্বীকার করলেন। তারা তাঁকে তাদের সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য বহু টানা-হেঁচড়া করল এবং বহু চেষ্টা করল। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হলেন না। অবশেষে কাফেররা তাঁকে শহীদ করে দিল এবং খুবাইব ও যায়দ (রাযিঃ)- কে মক্কার বাজারে নিয়ে বিক্রয় করে দিল।
বনী হারিস ইবনে আমির ইবনে নাওফাল গোত্রের লোকেরা খুবাইব (রাযিঃ)- কে কিনে নিল। কেননা বদর যুদ্ধের দিন খুবাইব (রাযিঃ) হারিস কে হত্যা করেছিলেন। তাই তিনি তাদের নিকট বেশ কিছু দিন বন্দী অবস্থায় কাটান। অবশেষে তারা তাঁকে হত্যা করার দৃঢ় পরিকল্পনা করলে তিনি নাভির নীচের পশম পরিষ্কার করার জন্য হারিসের কোন এক কন্যার নিকট থেকে একখানা ক্ষুর চাইলেন। সে তাঁকে তা দিল। (পরবর্তীকালে মুসলমান হওয়ার পর) হারিসের উক্ত কন্যা বর্ণনা করেছেন যে, আমি আমার একটি শিশু বাচ্চা সম্পর্কে অসাবধান থাকায় সে পায়ে হেঁটে তাঁর কাছে চলে যায় এবং তিনি তাকে স্বীয় উরুর উপর বসিয়ে রাখেন। এ সময় তাঁর হাতে ছিল সেই ক্ষুর। এ দেখে আমি অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি।
খুবাইব (রাযিঃ) তা বুঝতে পেরে বললেন, তাকে মেরে ফেলব বলে তুমি কি ভয় পাচ্ছ? ইনশাআল্লাহ আমি তা করার নই। সে (হারিসের কন্যা) বলত, আমি খুবাইব (রাযিঃ) থেকে উত্তম বন্দী আর কখনো দেখিনি। আমি তাকে আঙ্গুরের থোকা থেকে আঙ্গুর খেতে দেখেছি। অথচ তখন মক্কায় কোনো ফলই ছিল না। অধিকন্তু তিনি তখন লোহার শিকলে আব্দ্ধ ছিলেন। এ আঙ্গুর তার জন্য আল্লাহর তরফ থেকে প্রদত্ত রিযিক ব্যতীত আর কিছুই নয়। এরপর তারা তাঁকে হত্যা করার জন্য হারাম শরীফের বাইরে নিয়ে গেল। তিনি তাদেরকে বললেন, আমাকে দু’রাকআত নামায আদায় করার সুযোগ দাও। (নামায আদায় করে) তিনি তাদের কাছে ফিরে এসে বললেন, আমি মৃত্যুর ভয়ে শংকিত হয়ে পড়ছি, তোমরা যদি এ কথা মনে না করতে তাহলে আমি (নামাযকে) আরো দীর্ঘায়িত করতাম। হত্যার পূর্বে দু’রাকআত নামায আদায়ের সুন্নত প্রবর্তন করেছেন সর্বপ্রথম তিনিই।
এরপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ, তাদেরকে এক এক করে গুণে রাখুন। এরপর তিনি দু’টি পঙ্‌ক্তি আবৃত্তি করলেন, “যেহেতু আমি মুসলিম হিসেবে মৃত্যুবরণ করছি তাই আমার কোনো শংকা নেই। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যেকোনো পার্শ্বে আমি ঢলে পড়ি”। “আমি যেহেতু আল্লাহর পথেই মৃত্যুবরণ করছি, তাই তিনি ইচ্ছা করলে আমার ছিন্নভিন্ন প্রতিটি অঙ্গে বরকত দান করতে পারেন”। এরপর উকবা ইবনে হারিস তাঁর দিকে এগিয়ে গেল এবং তাঁকে শহীদ করে দিল। কুরাইশ গোত্রের লোকেরা আসিম (রাযিঃ)- এর শাহাদাতের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁর মৃতদেহ থেকে কিছু অংশ নিয়ে আসার জন্য লোক পাঠিয়েছিল। কারণ আসিম (রাযিঃ) বদর যুদ্ধের দিন তাদের একজন বড় নেতাকে হত্যা করেছিলেন। তখন আল্লাহ মেঘের মত এক ঝাঁক মৌমাছি পাঠিয়ে দিলেন, যা তাদের প্রেরিত লোকদের হাত থেকে আসিম (রাযিঃ)-কে রক্ষা করল। ফলে তারা তাঁর দেহ থেকে কোনো অংশ নিতে সক্ষম হল না।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ قَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ: حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ عُمَرَ: «أَنَّهَا بَعْدَ أُحُدٍ»
4086 - حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي سُفْيَانَ الثَّقَفِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «بَعَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَرِيَّةً عَيْنًا، وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ عَاصِمَ بْنَ ثَابِتٍ» وَهُوَ جَدُّ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ، فَانْطَلَقُوا حَتَّى إِذَا كَانَ بَيْنَ عُسْفَانَ وَمَكَّةَ ذُكِرُوا لِحَيٍّ مِنْ هُذَيْلٍ يُقَالُ لَهُمْ: بَنُو لَحْيَانَ، فَتَبِعُوهُمْ بِقَرِيبٍ مِنْ مِائَةِ رَامٍ، فَاقْتَصُّوا [ص:104] آثَارَهُمْ حَتَّى أَتَوْا مَنْزِلًا نَزَلُوهُ، فَوَجَدُوا فِيهِ نَوَى تَمْرٍ تَزَوَّدُوهُ مِنَ المَدِينَةِ، فَقَالُوا: هَذَا تَمْرُ يَثْرِبَ، فَتَبِعُوا آثَارَهُمْ حَتَّى لَحِقُوهُمْ، فَلَمَّا انْتَهَى عَاصِمٌ وَأَصْحَابُهُ لَجَئُوا إِلَى فَدْفَدٍ، وَجَاءَ القَوْمُ فَأَحَاطُوا بِهِمْ، فَقَالُوا: لَكُمُ العَهْدُ وَالمِيثَاقُ إِنْ نَزَلْتُمْ إِلَيْنَا، أَنْ لاَ نَقْتُلَ مِنْكُمْ رَجُلًا، فَقَالَ عَاصِمٌ: أَمَّا أَنَا فَلاَ أَنْزِلُ فِي ذِمَّةِ كَافِرٍ، اللَّهُمَّ أَخْبِرْ عَنَّا نَبِيَّكَ، فَقَاتَلُوهُمْ حَتَّى قَتَلُوا عَاصِمًا فِي سَبْعَةِ نَفَرٍ بِالنَّبْلِ، وَبَقِيَ خُبَيْبٌ وَزَيْدٌ وَرَجُلٌ آخَرُ، فَأَعْطَوْهُمُ العَهْدَ وَالمِيثَاقَ، فَلَمَّا أَعْطَوْهُمُ العَهْدَ وَالمِيثَاقَ نَزَلُوا إِلَيْهِمْ، فَلَمَّا اسْتَمْكَنُوا مِنْهُمْ حَلُّوا أَوْتَارَ قِسِيِّهِمْ، فَرَبَطُوهُمْ بِهَا، فَقَالَ الرَّجُلُ الثَّالِثُ الَّذِي مَعَهُمَا: هَذَا أَوَّلُ الغَدْرِ، فَأَبَى أَنْ يَصْحَبَهُمْ فَجَرَّرُوهُ وَعَالَجُوهُ عَلَى أَنْ يَصْحَبَهُمْ فَلَمْ يَفْعَلْ فَقَتَلُوهُ، وَانْطَلَقُوا بِخُبَيْبٍ، وَزَيْدٍ حَتَّى بَاعُوهُمَا بِمَكَّةَ، فَاشْتَرَى خُبَيْبًا بَنُو الحَارِثِ بْنِ عَامِرِ بْنِ نَوْفَلٍ، وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ قَتَلَ الحَارِثَ يَوْمَ بَدْرٍ، فَمَكَثَ عِنْدَهُمْ أَسِيرًا، حَتَّى إِذَا أَجْمَعُوا قَتْلَهُ، اسْتَعَارَ مُوسًى مِنْ بَعْضِ بَنَاتِ الحَارِثِ لِيَسْتَحِدَّ بِهَا فَأَعَارَتْهُ، قَالَتْ: فَغَفَلْتُ عَنْ صَبِيٍّ لِي، فَدَرَجَ إِلَيْهِ حَتَّى أَتَاهُ فَوَضَعَهُ عَلَى فَخِذِهِ، فَلَمَّا رَأَيْتُهُ فَزِعْتُ فَزْعَةً عَرَفَ ذَاكَ مِنِّي وَفِي يَدِهِ المُوسَى، فَقَالَ: أَتَخْشَيْنَ أَنْ أَقْتُلَهُ؟ مَا كُنْتُ لِأَفْعَلَ ذَاكِ إِنْ شَاءَ اللَّهُ، وَكَانَتْ تَقُولُ: مَا رَأَيْتُ أَسِيرًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ خُبَيْبٍ، لَقَدْ رَأَيْتُهُ يَأْكُلُ مِنْ قِطْفِ عِنَبٍ وَمَا بِمَكَّةَ يَوْمَئِذٍ ثَمَرَةٌ، وَإِنَّهُ لَمُوثَقٌ فِي الحَدِيدِ، وَمَا كَانَ إِلَّا رِزْقٌ رَزَقَهُ اللَّهُ، فَخَرَجُوا بِهِ مِنَ الحَرَمِ لِيَقْتُلُوهُ، فَقَالَ: دَعُونِي أُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَيْهِمْ، فَقَالَ: لَوْلاَ أَنْ تَرَوْا أَنَّ مَا بِي جَزَعٌ مِنَ المَوْتِ لَزِدْتُ، فَكَانَ أَوَّلَ مَنْ سَنَّ الرَّكْعَتَيْنِ عِنْدَ القَتْلِ هُوَ، ثُمَّ قَالَ: اللَّهُمَّ أَحْصِهِمْ عَدَدًا، ثُمَّ قَالَ:
[البحر الطويل]
مَا أُبَالِي حِينَ أُقْتَلُ مُسْلِمًا ... عَلَى أَيِّ شِقٍّ كَانَ لِلَّهِ مَصْرَعِي،
وَذَلِكَ فِي ذَاتِ الإِلَهِ وَإِنْ يَشَأْ ... يُبَارِكْ عَلَى أَوْصَالِ شِلْوٍ مُمَزَّعِ
ثُمَّ قَامَ إِلَيْهِ عُقبَةُ بْنُ الحَارِثِ فَقَتَلَهُ، وَبَعَثَتْ قُرَيْشٌ إِلَى عَاصِمٍ لِيُؤْتَوْا بِشَيْءٍ مِنْ جَسَدِهِ يَعْرِفُونَهُ، وَكَانَ عَاصِمٌ قَتَلَ عَظِيمًا مِنْ عُظَمَائِهِمْ يَوْمَ بَدْرٍ، فَبَعَثَ اللَّهُ عَلَيْهِ مِثْلَ الظُّلَّةِ مِنَ الدَّبْرِ، فَحَمَتْهُ مِنْ رُسُلِهِمْ، فَلَمْ يَقْدِرُوا مِنْهُ عَلَى شَيْءٍ
হাদীস নং: ৩৭৮৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৭
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৮৭। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খুবাইব (রাযিঃ)- এর হত্যাকারী হল আবু সিরও‘আ (উকবা ইবনে হারিস)।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4087 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، سَمِعَ جَابِرًا، يَقُولُ: «الَّذِي قَتَلَ خُبَيْبًا، هُوَ أَبُو سِرْوَعَةَ»
হাদীস নং: ৩৭৮৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৮
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৮৭। আবু মা‘মার (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) কোনো এক প্রয়োজনে সত্তরজন সাহাবীকে (এক জায়গায়) পাঠালেন, যাদের ক্বারী বলা হত। বনী সুলাইম গোত্রের দু’টি শাখা - রিল ও যাকওয়ান বি’রে মাউনা নামক একটি কূপের নিকট তাদেরকে আক্রমণ করলে তাঁরা বললেন, আল্লাহর কসম, আমরা তোমাদের সাথে লড়াই করার উদ্দেশ্যে আসিনি। আমরা তো কেবল নবী কারীম (ﷺ)- এর নির্দেশিত একটি কাজের জন্য এ পথ দিয়ে যাচ্ছি। এতদসত্ত্বেও তারা তাদের কে হত্যা করল। তাই নবী কারীম (ﷺ) এক মাস পর্যন্ত ফজর নামাযে তাদের জন্য বদদু'আ করলেন। এভাবেই কুনূত পড়া আরম্ভ হয়। (রাবী বলেনঃ এর পূর্বে আমরা) কখনো আর কুনুত (এ নাযিলা) পড়িনি। আব্দুল আযীয (রাহঃ) বলেন, এক ব্যক্তি আনাস (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, কুনূত কি রুকূর পর পড়তে হবে না কিরাত শেষ করে পড়তে হবে? উত্তরে তিনি বললেন, না, কিরাত শেষ করে পড়তে হবে।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4088 - حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: بَعَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَبْعِينَ رَجُلًا لِحَاجَةٍ، يُقَالُ لَهُمْ القُرَّاءُ، فَعَرَضَ لَهُمْ حَيَّانِ مِنْ بَنِي سُلَيْمٍ، رِعْلٌ، وَذَكْوَانُ، عِنْدَ بِئْرٍ [ص:105] يُقَالُ لَهَا بِئْرُ مَعُونَةَ، فَقَالَ القَوْمُ: وَاللَّهِ مَا إِيَّاكُمْ أَرَدْنَا، إِنَّمَا نَحْنُ مُجْتَازُونَ فِي حَاجَةٍ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَتَلُوهُمْ «فَدَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْهِمْ شَهْرًا فِي صَلاَةِ الغَدَاةِ، وَذَلِكَ بَدْءُ القُنُوتِ، وَمَا كُنَّا نَقْنُتُ» قَالَ عَبْدُ العَزِيزِ وَسَأَلَ رَجُلٌ أَنَسًا عَنِ القُنُوتِ أَبَعْدَ الرُّكُوعِ أَوْ عِنْدَ فَرَاغٍ مِنَ القِرَاءَةِ؟ قَالَ: «لاَ بَلْ عِنْدَ فَرَاغٍ مِنَ القِرَاءَةِ»
হাদীস নং: ৩৭৮৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৯
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৮৯। মুসলিম (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এক মাস পর্যন্ত আরবের কয়েকটি গোত্রের প্রতি বদদু'আ করার জন্য নামাযে রুকূর পর কুনূত পাঠ করেছেন।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4089 - حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: «قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَهْرًا، بَعْدَ الرُّكُوعِ يَدْعُو عَلَى أَحْيَاءٍ مِنَ العَرَبِ»
হাদীস নং: ৩৭৯০
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৯০
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৯০। আব্দুল আলা ইবনে হাম্মাদ (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রি‘ল, যাকওয়ান, উসায়্যা ও বনু লিহইয়ানের লোকেরা শত্রুর মোকাবেলা করার জন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলে সত্তরজন আনসার সাহাবী পাঠিয়ে তিনি তাদেরকে সাহায্য করলেন। সেকালে আমরা তাদেরকে ক্বারী নামে অভিহিত করতাম। তারা দিনের বেলা লাকড়ি কুড়াতেন এবং রাতের বেলা নামাযে কাটাতেন। যেতে যেতে তাঁরা বি’রে মাউনার নিকট পৌঁছলে তারা (আমির ইবনে তোফায়েলের আহবানে ঐ গোত্র চতুষ্টয়ের লোকেরা) তাঁদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং তাঁদেরকে শহীদ করে দেয়। এ সংবাদ নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে পৌঁছলে তিনি এক মাস পর্যন্ত ফজরের নামাযে আরবের কতিপয় গোত্র তথা রি‘ল, যাকওয়ান, উসায়্যা এবং বনু লিহইয়ানের প্রতি বদদু'আ করে কুনূত পাঠ করেন। আনাস (রাযিঃ) বর্ণনা করেছেন যে, তাদের সম্পর্কিত কিছু আয়াত আমরা পাঠ করতাম। অবশ্য পরে এর তিলাওয়াত রহিত হয়ে যায়।
একটি আয়াত ছিল- بَلِّغُوا عَنَّا قَوْمَنَا، أَنَّا لَقِينَا رَبَّنَا، فَرَضِيَ عَنَّا وَأَرْضَانَا “অর্থাৎ আমাদের কওমের লোকদেরকে জানিয়ে দাও। আমরা আমাদের প্রভুর সান্নিধ্যে পৌঁছে গিয়েছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং আমাদেরকেও সন্তুষ্ট করেছেন। কাতাদা (রাহঃ) আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি তাঁকে বলেছেন, আল্লাহর নবী হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) এক মাস পর্যন্ত ফজরের নামাযে আরবের কতিপয় গোত্র- তথা রি‘ল, যাকওয়ান, উসায়্যা এবং বনু লিহইয়ানের প্রতি বদদু'আ করে কুনূত পাঠ করেছেন।
[ইমাম বুখারী (রাহঃ)-এর উস্তাদ] খলীফা (রাহঃ) এতটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, ইবনে যুরায় (রাহঃ) সাঈদ ও কাতাদা (রাহঃ)- এর মাধ্যমে আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁরা ৭০ জন সকলেই ছিলেন আনসার। তাঁদেরকে বি’রে মাউনা নামক স্থানে শহীদ করা হয়েছিল। [ইমাম বুখারী (রাহঃ)] বলেন, এখানে قُرْآن শব্দটি কিতাব বা অনুরূপ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4090 - حَدَّثَنِي عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رِعْلًا، وَذَكْوَانَ، وَعُصَيَّةَ، وَبَنِي لَحْيَانَ، اسْتَمَدُّوا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى عَدُوٍّ، فَأَمَدَّهُمْ بِسَبْعِينَ مِنَ الأَنْصَارِ، كُنَّا نُسَمِّيهِمْ القُرَّاءَ فِي زَمَانِهِمْ، كَانُوا يَحْتَطِبُونَ بِالنَّهَارِ، وَيُصَلُّونَ بِاللَّيْلِ، حَتَّى كَانُوا بِبِئْرِ مَعُونَةَ قَتَلُوهُمْ وَغَدَرُوا بِهِمْ، فَبَلَغَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «فَقَنَتَ شَهْرًا يَدْعُو فِي الصُّبْحِ عَلَى أَحْيَاءٍ مِنْ أَحْيَاءِ العَرَبِ، عَلَى رِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَعُصَيَّةَ، وَبَنِي لَحْيَانَ» قَالَ أَنَسٌ: " فَقَرَأْنَا فِيهِمْ قُرْآنًا، ثُمَّ إِنَّ ذَلِكَ رُفِعَ: بَلِّغُوا عَنَّا قَوْمَنَا أَنَّا لَقِينَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَأَرْضَانَا "
وَعَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ حَدَّثَهُ أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قَنَتَ شَهْرًا فِي صَلاَةِ الصُّبْحِ يَدْعُو عَلَى أَحْيَاءٍ مِنْ أَحْيَاءِ العَرَبِ، عَلَى رِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَعُصَيَّةَ، وَبَنِي لِحْيَانَ» زَادَ خَلِيفَةُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ: «أَنَّ أُولَئِكَ السَّبْعِينَ مِنَ الأَنْصَارِ قُتِلُوا بِبِئْرِ مَعُونَةَ قُرْآنًا كِتَابًا» نَحْوَهُ
হাদীস নং: ৩৭৯১
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৯১
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৯১। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম (ﷺ) তাঁর মামা উম্মে সুলাইমের (আনাসের মা) ভাই [হারাম ইবনে মিলহান (রাযিঃ)]- কে সত্তরজন অশ্বারোহীসহ (আমির ইবনে তুফাইলের নিকট) পাঠালেন। মুশরিকদের দলপতি আমির ইবনে তুফাইল (পূর্বে) নবী কারীম (ﷺ)- কে তিনটি বিষয়ের যেকোন একটি গ্রহণ করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। সে বলেছিল, পল্লী এলাকায় আপনার কর্তৃত্ব থাকবে এবং শহর এলাকায় আমার কর্তৃত্ব থাকবে। অথবা আমি আপনার খলীফা হব বা গাতফান গোত্রের দুই হাজার সৈন্য নিয়ে আমি আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। এরপর আমির উম্মে ফুলানের গৃহে মহামারীতে আক্রান্ত হল। সে বলল, অমুক গোত্রের মহিলার বাড়িতে উটের যেমন ফোঁড়া হয় আমারও তেমন ফোঁড়া হয়েছে। তোমরা আমার ঘোড়া নিয়ে আস। তারপর (ঘোড়ায় আরোহণ করে) অশ্বপৃষ্ঠেই সে মৃত্যুবরণ করে। উম্মে সুলায়ম (রাযিঃ)- এর ভাই হারাম [ইবনে মিলহান (রাযিঃ)] এক খোঁড়া ব্যক্তি ও কোন এক গোত্রের অপর এক ব্যক্তি সহ সে এলাকার দিকে রওয়ানা করলেন।
[হারাম ইবনে মিলহান (রাযিঃ)] তার দুই সাথীকে লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা নিকটেই অবস্থান কর। আমিই তাদের নিকট যাচ্ছি। তারা যদি আমাকে নিরাপত্তা দেয়, তাহলে তোমরা এখানেই থাকবে। আর যদি তারা আমাকে শহীদ করে দেয় তাহলে তোমরা তোমাদের নিজেদের সাথীর কাছে চলে যাবে। এরপর তিনি (তাদের নিকট গিয়ে) বললেন, তোমরা (আমাকে) নিরাপত্তা দিবে কি? দিলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর একটি পয়গাম তোমাদের কাছে পৌঁছিয়ে দিতাম। তিনি তাদের সাথে এ ধরণের আলাপ-আলোচনা করছিলেন। এমতাবস্থায় তারা এক ব্যক্তিকে ইঙ্গিত করলে সে পেছন দিক থেকে এসে তাঁকে বর্শা দ্বারা আঘাত করল।
হাম্মাম (রাহঃ) বলেন, আমার মনে হয় আমার শায়খ [ইসহাক (রাহঃ)] বলেছিলেন যে, বর্শা দ্বারা আঘাত করে এপার ওপার করে দিয়েছিল। (আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে) হারাম ইবনে মিলহান (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহু আকবার, কা‘বার প্রভুর শপথ! আমি সফলকাম হয়েছি। এরপর উক্ত (হারামের সঙ্গী) লোকটি (অপেক্ষমান সাথীদের সাথে) মিলিত হলেন। তারা হারামের সঙ্গীদের উপর আক্রমণ করলে খোঁড়া ব্যক্তি ব্যতীত সকলেই নিহত হলেন। খোঁড়া লোকটি ছিলেন পাহাড়ের চূড়ায়। এরপর আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রতি (একখানা) আয়াত নাযিল করলেন যা পরে মনসূখ হয়ে যায়। আয়াতটি ছিল এইঃ إِنَّا قَدْ لَقِينَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَأَرْضَانَا “আমরা আমাদের প্রতিপালকের সান্নিধ্যে পৌঁছে গিয়েছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং আমাদেরকেও সন্তুষ্ট করেছেন”। তাই নবী কারীম (ﷺ) ত্রিশ দিন পর্যন্ত ফজরের নামাযে রি‘ল, যাকওয়ান, উসায়্যা এবং বনু লিহইয়ান গোত্রের জন্য বদদু'আ করেছেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য হয়েছিল।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4091 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَنَسٌ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَعَثَ خَالَهُ، أَخٌ لِأُمِّ سُلَيْمٍ، فِي سَبْعِينَ رَاكِبًا» وَكَانَ رَئِيسَ المُشْرِكِينَ عَامِرُ بْنُ الطُّفَيْلِ، خَيَّرَ بَيْنَ ثَلاَثِ خِصَالٍ، فَقَالَ: يَكُونُ لَكَ أَهْلُ السَّهْلِ وَلِي أَهْلُ المَدَرِ، أَوْ أَكُونُ خَلِيفَتَكَ، أَوْ أَغْزُوكَ بِأَهْلِ غَطَفَانَ بِأَلْفٍ وَأَلْفٍ؟ فَطُعِنَ عَامِرٌ فِي بَيْتِ أُمِّ فُلاَنٍ، فَقَالَ: غُدَّةٌ كَغُدَّةِ البَكْرِ، فِي بَيْتِ امْرَأَةٍ مِنْ آلِ فُلاَنٍ، ائْتُونِي بِفَرَسِي، فَمَاتَ عَلَى ظَهْرِ فَرَسِهِ، فَانْطَلَقَ حَرَامٌ أَخُو أُمِّ سُلَيْمٍ وَهُوَ رَجُلٌ أَعْرَجُ، وَرَجُلٌ مِنْ بَنِي فُلاَنٍ، قَالَ: كُونَا قَرِيبًا حَتَّى آتِيَهُمْ فَإِنْ آمَنُونِي كُنْتُمْ، وَإِنْ قَتَلُونِي أَتَيْتُمْ أَصْحَابَكُمْ، فَقَالَ: أَتُؤْمِنُونِي أُبَلِّغْ رِسَالَةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَعَلَ يُحَدِّثُهُمْ، وَأَوْمَئُوا إِلَى رَجُلٍ، فَأَتَاهُ مِنْ خَلْفِهِ فَطَعَنَهُ، - قَالَ هَمَّامٌ أَحْسِبُهُ - حَتَّى أَنْفَذَهُ بِالرُّمْحِ، قَالَ: اللَّهُ أَكْبَرُ [ص:106]، فُزْتُ وَرَبِّ الكَعْبَةِ، فَلُحِقَ الرَّجُلُ، فَقُتِلُوا كُلُّهُمْ غَيْرَ الأَعْرَجِ، كَانَ فِي رَأْسِ جَبَلٍ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَيْنَا، ثُمَّ كَانَ مِنَ المَنْسُوخِ: إِنَّا قَدْ لَقِينَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَأَرْضَانَا «فَدَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْهِمْ ثَلاَثِينَ صَبَاحًا، عَلَى رِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبَنِي لَحْيَانَ، وَعُصَيَّةَ، الَّذِينَ عَصَوُا اللَّهَ وَرَسُولَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»
হাদীস নং: ৩৭৯২
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৯২
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৯২। হিব্বান (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাঁর মামা হারাম ইবনে মিলহান (রাযিঃ)-কে বি’রে মাউনার দিন বর্শা বিদ্ধ করা হলে তিনি এভাবে দু’হাতে রক্ত নিয়ে নিজের চেহারা এবং মাথায় মেখে বললেন, কা‘বার প্রভুর কসম, আমি সফলকাম হয়েছি।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4092 - حَدَّثَنِي حِبَّانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، قَالَ: حَدَّثَنِي ثُمَامَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: " لَمَّا طُعِنَ حَرَامُ بْنُ مِلْحَانَ، وَكَانَ خَالَهُ يَوْمَ بِئْرِ مَعُونَةَ، قَالَ: بِالدَّمِ هَكَذَا فَنَضَحَهُ عَلَى وَجْهِهِ وَرَأْسِهِ، ثُمَّ قَالَ: فُزْتُ وَرَبِّ الكَعْبَةِ "
হাদীস নং: ৩৭৯৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৯৩
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৯৩। উবাইদ ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (মক্কার কাফেরদের) অত্যাচার চরম আকার ধারণ করলে আবু বকর (রাযিঃ) মক্কা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে অনুমতি চাইলে তিনি তাঁকে বললেন, (আরো কিছুদিন) অবস্থান কর। তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি আশা করেন যে, আপনাকে অনুমতি দেওয়া হোক? তিনি বললেন, আমি তো তাই আশা করি। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আবু বকর (রাযিঃ)- এর জন্য অপেক্ষা করলেন।
একদিন যোহরের নামাযের সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এসে তাঁকে [আবু বকর (রাযিঃ)-কে] ডেকে বললেন, তোমার কাছে যারা আছে তাদেরকে সরিয়ে দাও। তখন আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, এরা তো আমার দু’মেয়ে (আয়েশা এবং আসমা)। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তুমি কি জানো আমাকে চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে? আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কি আপনার সাথে যেতে পারবো? নবী কারীম (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ আমার সাথে যেতে পারবে।
আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার কাছে দু’টি উটনী আছে। এখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্যই এ দু’টিকে আমি প্রস্তুত করে রেখেছি। এরপর তিনি নবী কারীম (ﷺ)- কে দুটি উটের একটি উট প্রদান করলেন। এ উটটি ছিল কান-নাক কাটা। তাঁরা উভয়ে সওয়ার হয়ে রওয়ানা হলেন এবং গারে সাওরে পৌঁছে সেখানে আত্মগোপন করলেন। আয়েশা (রাযিঃ)-এর বৈমাত্রেয় ভাই আমির ইবনে ফুহায়রা ছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে তুফায়ল ইবনে সাখবারার গোলাম। আবু বকর (রাযিঃ)-এর একটি দুধের গাভী ছিল। তিনি (আমির ইবনে ফুহায়রা) সেটিকে সন্ধ্যাবেলা চরাতে নিয়ে গিয়ে রাতের অন্ধকারে তাদের (মক্কার কাফেরদের) কাছে নিয়ে যেতেন এবং ভোরবেলা তাঁদের উভয়ের কাছে নিয়ে যেতেন। কোনো রাখালই এ বিষয়টি বুঝতে পারতো না। নবী কারীম (ﷺ) ও আবু বকর (রাযিঃ) গারে সাওর থেকে বের হলে তিনিও তাদের সাথে রওয়ানা হলেন। তাঁরা মদীনা পৌঁছে যান। আমির ইবনে ফুহায়রা পরবর্তীকালে বি’রে মাউনার যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন।
(অন্য সনদে) আবু উসামা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হিশাম ইবনে উরওয়া (রাহঃ) বলেন, আমার পিতা [উরওয়া (রাযিঃ)] আমাকে বলেছেন, রি’রে মাউনার যুদ্ধে শাহাদাতবরণকারীগণ শহীদ হলে আমর ইবনে উমাইয়া যামরী বন্ধী হলেন। তাঁকে আমির ইবনে তুফায়ল নিহত আমির ইবনে ফুহায়রার লাশ দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করল, এ ব্যক্তি কে? আমর ইবনে উমাইয়া বললেন, ইনি হচ্ছেন আমির ইবনে ফুহায়রা। তখন সে (আমির ইবনে তুফায়ল) বলল, আমি দেখলাম, নিহত হওয়ার পর তার লাশ আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। এমনকি আমি তার লাশ আসমান যমীনের মাঝে দেখেছি। এরপর তা রেখে দেয়া হল (যমীনের উপর)। এ সংবাদ নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে পৌঁছলে তিনি সাহাবীগণকে তাদের শাহাদাতের সংবাদ জানিয়ে বললেন, তোমাদের সাথীদেরকে হত্যা করা হয়েছে।
মৃত্যুর পূর্বে তারা তাদের প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট এবং আপনিও আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট- এ সংবাদ আমাদের ভাইদের কাছে পৌঁছে দিন। তাই মহান আল্লাহ তাঁদের এ সংবাদ মুসলমানদের কাছে পৌঁছিয়ে দিলেন। ঐ দিনের নিহতদের মধ্যে উরওয়া ইবনে আসমা ইবনে সাল্লাত (রাযিঃ)-ও ছিলেন। তাই এ নামেই উরওয়া (ইবনে যুবায়েরের)- এর নামকরণ করা হয়েছে। আর মুনযির ইবনে আমর (রাযিঃ)-ও এ দিন শাহাদাত বরণ করেছিলেন। তাই এ নামেই মুনযির-এর নামকরণ করা হয়েছে।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4093 - حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: اسْتَأْذَنَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَبُو بَكْرٍ فِي الخُرُوجِ حِينَ اشْتَدَّ عَلَيْهِ الأَذَى، فَقَالَ لَهُ: أَقِمْ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَتَطْمَعُ أَنْ يُؤْذَنَ لَكَ؟ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنِّي لَأَرْجُو ذَلِكَ» قَالَتْ: فَانْتَظَرَهُ أَبُو بَكْرٍ، فَأَتَاهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ ظُهْرًا، فَنَادَاهُ فَقَالَ: «أَخْرِجْ مَنْ عِنْدَكَ» فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: إِنَّمَا هُمَا ابْنَتَايَ، فَقَالَ «أَشَعَرْتَ أَنَّهُ قَدْ أُذِنَ لِي فِي الخُرُوجِ» فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ الصُّحْبَةَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الصُّحْبَةَ» قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، عِنْدِي نَاقَتَانِ، قَدْ كُنْتُ أَعْدَدْتُهُمَا لِلْخُرُوجِ، فَأَعْطَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِحْدَاهُمَا - وَهِيَ الجَدْعَاءُ - فَرَكِبَا، فَانْطَلَقَا حَتَّى أَتَيَا الغَارَ - وَهُوَ بِثَوْرٍ - فَتَوَارَيَا فِيهِ، فَكَانَ عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ غُلاَمًا لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الطُّفَيْلِ بْنِ سَخْبَرَةَ، أَخُو عَائِشَةَ لِأُمِّهَا، وَكَانَتْ لِأَبِي بَكْرٍ مِنْحَةٌ، فَكَانَ يَرُوحُ بِهَا وَيَغْدُو عَلَيْهِمْ وَيُصْبِحُ، فَيَدَّلِجُ إِلَيْهِمَا ثُمَّ يَسْرَحُ، فَلاَ يَفْطُنُ بِهِ أَحَدٌ مِنَ الرِّعَاءِ، فَلَمَّا خَرَجَ خَرَجَ مَعَهُمَا يُعْقِبَانِهِ حَتَّى قَدِمَا المَدِينَةَ، فَقُتِلَ عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ يَوْمَ بِئْرِ مَعُونَةَ

وَعَنْ أَبِي أُسَامَةَ، قَالَ: قَالَ هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، فَأَخْبَرَنِي أَبِي، قَالَ: لَمَّا قُتِلَ الَّذِينَ بِبِئْرِ مَعُونَةَ، وَأُسِرَ عَمْرُو بْنُ أُمَيَّةَ الضَّمْرِيُّ، قَالَ: لَهُ عَامِرُ بْنُ الطُّفَيْلِ مَنْ هَذَا؟ فَأَشَارَ إِلَى قَتِيلٍ، فَقَالَ لَهُ عَمْرُو بْنُ أُمَيَّةَ: هَذَا عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ، فَقَالَ: لَقَدْ رَأَيْتُهُ بَعْدَ مَا قُتِلَ رُفِعَ إِلَى السَّمَاءِ، حَتَّى إِنِّي لَأَنْظُرُ إِلَى السَّمَاءِ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الأَرْضِ، ثُمَّ وُضِعَ، فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَبَرُهُمْ فَنَعَاهُمْ، فَقَالَ: " إِنَّ أَصْحَابَكُمْ قَدْ أُصِيبُوا، وَإِنَّهُمْ قَدْ سَأَلُوا رَبَّهُمْ، فَقَالُوا: رَبَّنَا أَخْبِرْ عَنَّا إِخْوَانَنَا بِمَا رَضِينَا عَنْكَ، وَرَضِيتَ عَنَّا، فَأَخْبَرَهُمْ عَنْهُمْ " وَأُصِيبَ يَوْمَئِذٍ فِيهِمْ عُرْوَةُ بْنُ أَسْماءَ بْنِ الصَّلْتِ، فَسُمِّيَ عُرْوَةُ، بِهِ وَمُنْذِرُ [ص:107] بْنُ عَمْرٍو، سُمِّيَ بِهِ مُنْذِرًا
হাদীস নং: ৩৭৯৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৯৪
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৯৪। মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) এক মাস পর্যন্ত নামাযে রুকূর পরে কুনূত পাঠ করেছেন। এতে তিনি রি‘ল, যাকওয়ান গোত্রের জন্য বদদু'আ করেছেন। তিনি বলেন, উসায়্যা গোত্র আল্লাহ ও তার রাসূলের নাফরমানী করেছে।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4094 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي مِجْلَزٍ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «قَنَتَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ الرُّكُوعِ شَهْرًا يَدْعُو عَلَى رِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَيَقُولُ عُصَيَّةُ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ»
হাদীস নং: ৩৭৯৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৯৫
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৯৫। ইয়াহয়া ইবনে বুকায়র (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যারা বি’রে মাউনার নিকট নবী কারীম (ﷺ)- এর সাহাবীগণকে শহীদ করেছিল সে হত্যাকারী রি‘ল, যাকওয়ান, বনী লিহইয়ান এবং উসায়্যা গোত্রের প্রতি নবী কারীম (ﷺ) ত্রিশদিন পর্যন্ত ফজরের নামাযে বদদু'আ করেছেন। তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করেছে। আনাস (রাযিঃ) বর্ণনা করেছেন যে, বি’রে মাউনা নামক স্থানে যারা শাহাদাতবরণ করেছেন তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাঁর নবীর প্রতি আয়াত নাযিল করেছিলেন। আমরা তা পাঠ করতাম। আয়াতটি হল- بَلِّغُوا قَوْمَنَا فَقَدْ لَقِينَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَرَضِينَا عَنْهُ অর্থাৎ আমাদের কওমের কাছে এ সংবাদ পৌঁছিয়ে দাও যে, আমরা আমাদের প্রতিপালকের সান্নিধ্যে পৌঁছে গিয়েছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং আমরাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছি।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4095 - حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الَّذِينَ قَتَلُوا يَعْنِي أَصْحَابَهُ بِبِئْرِ مَعُونَةَ ثَلاَثِينَ صَبَاحًا حِينَ يَدْعُو عَلَى رِعْلٍ، وَلَحْيَانَ، وَعُصَيَّةَ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» قَالَ أَنَسٌ: " فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى لِنَبِيِّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الَّذِينَ قُتِلُوا - أَصْحَابِ بِئْرِ مَعُونَةَ - قُرْآنًا قَرَأْنَاهُ حَتَّى نُسِخَ بَعْدُ: بَلِّغُوا قَوْمَنَا فَقَدْ لَقِينَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَرَضِينَا عَنْهُ "
হাদীস নং: ৩৭৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৯৬
২১৯২. রাজী, রিল, যাকওয়ান, বিরে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনে সাবিত, খুবাইব (রাযিঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা।
৩৭৯৬। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... আসিম আল আহওয়াল (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ)- কে নামাযে (দু'আ) কুনূত পড়তে হবে কি না- এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার পর তিনি বললেন, হ্যাঁ পড়তে হবে। আমি বললাম, রুকূর আগে পড়তে হবে, না পরে? তিনি বললেন, রুকূর আগে। আমি বললাম, অমুক ব্যক্তি আপনার সূত্রে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, আপনি রুকূর পর কুনূত পাঠ করার কথা বলেছেন। তিনি বললেন, সে মিথ্যা বলেছে। কেননা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মাত্র একমাস পর্যন্ত রুকুর পর কুনূত পাঠ করেছেন। এর কারণ ছিল এই যে, নবী কারীম (ﷺ) সত্তরজন কারীর একটি দলকে মুশরিকদের নিকট কোন এক কাজে পাঠিয়েছিলেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও তাদের মধ্যে চুক্তি ছিল। তারা (আক্রমণ করে সাহাবীগণের উপর) বিজয়ী হল। তাই রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদের প্রতি বদদোয়া করে নামাযে রুকূর পর এক মাস পর্যন্ত কুনূত পাঠ করেছেন।
بَابُ غَزْوَةِ الرَّجِيعِ، وَرِعْلٍ، وَذَكْوَانَ، وَبِئْرِ مَعُونَةَ، وَحَدِيثِ عَضَلٍ، وَالقَارَةِ، وَعَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ، وَخُبَيْبٍ وَأَصْحَابِهِ
4096 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ الأَحْوَلُ، قَالَ: سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ القُنُوتِ فِي الصَّلاَةِ؟ فَقَالَ: نَعَمْ، فَقُلْتُ: كَانَ قَبْلَ الرُّكُوعِ أَوْ بَعْدَهُ؟ قَالَ: قَبْلَهُ، قُلْتُ: فَإِنَّ فُلاَنًا أَخْبَرَنِي عَنْكَ أَنَّكَ قُلْتَ بَعْدَهُ، قَالَ: كَذَبَ «إِنَّمَا قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ الرُّكُوعِ شَهْرًا أَنَّهُ كَانَ بَعَثَ نَاسًا يُقَالُ لَهُمْ القُرَّاءُ، وَهُمْ سَبْعُونَ رَجُلًا إِلَى نَاسٍ مِنَ المُشْرِكِينَ، وَبَيْنَهُمْ وَبَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَهْدٌ قِبَلَهُمْ، فَظَهَرَ هَؤُلاَءِ الَّذِينَ كَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَهْدٌ، فَقَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ الرُّكُوعِ شَهْرًا يَدْعُو عَلَيْهِمْ»