আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৮- নবীগণের আঃ আলোচনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১০ টি

হাদীস নং: ৩১২৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৬১
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১২৩। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম ইবনে নাসর (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন নবী (ﷺ)- এর সামনে কিছু গোশত আনা হল। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ কিয়ামতের দিন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলকে একই সমতল ময়দানে সমবেত করবেন। তখন আহবানকারী তাদের সকলকে তাঁর আহবান সমভাবে শুনাতে পারবে। এবং তাদের সকলের উপর সমভাবে দর্শকদের দৃষ্টি পড়বে, আর সূর্য তাদের অতি নিকটবর্তী হবে। তারপর তিনি শাফাআতের হাদীস বর্ণনা করলেন যে, সকল মানুষ ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর নিকট আসবে এবং বলবে, পৃথিবীতে আপনি আল্লাহর নবী এবং তাঁর খলীল। অতএব আমাদের জন্য আপনি আপনার রবের নিকট সুপারিশ করুন। তখন তিনি ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলা উক্তির কথা স্মরণ করে বলবেন, নফসী! নফসী! তোমরা মুসার কাছে যাও। অনুরূপ হাদীস আনাস (রাযিঃ)- ও নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ (وأشار بما ذكر إلى ما في قصة إبراهيم عليه السلام مع قومه حين كسر أصنامهم فجاؤوا إليه مسرعين يسألونه عنها)
3361 - بَابٌ: حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ نَصْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ أَبِي حَيَّانَ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا بِلَحْمٍ فَقَالَ: " إِنَّ اللَّهَ يَجْمَعُ يَوْمَ القِيَامَةِ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ، فَيُسْمِعُهُمُ الدَّاعِي وَيُنْفِذُهُمُ البَصَرُ، وَتَدْنُو الشَّمْسُ مِنْهُمْ، - فَذَكَرَ حَدِيثَ الشَّفَاعَةِ - فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ فَيَقُولُونَ: أَنْتَ نَبِيُّ اللَّهِ وَخَلِيلُهُ مِنَ الأَرْضِ، اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ، فَيَقُولُ، فَذَكَرَ [ص:142] كَذَبَاتِهِ، نَفْسِي نَفْسِي، اذْهَبُوا إِلَى مُوسَى " تَابَعَهُ أَنَسٌ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হাদীস নং: ৩১২৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৬২ - ৩৩৬৩
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১২৪। আহমদ ইবনে সাঈদ আবু আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, ইসমাঈলের মায়ের প্রতি আল্লাহ রহম করুন। যদি তিনি তাড়াতাড়ি না করতেন, তবে যমযম একটি প্রবহমান ঝর্নায় পরিণত হত। আনসারী (রাহঃ) ইবনে জুরাইজ (রাহঃ) সূত্রে বলেন যে, কাসীর ইবনে কাসীর বলেছেন যে, আমি ও উসমান ইবনে আবু সুলাইমান (রাহঃ) সাঈদ ইবনে জুবাইর (রাহঃ)- এর নিকট বসা ছিলাম। তিনি বললেন, ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) আমাকে এরূপ বলেন নি, বরং তিনি বলেছেন, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর মাকে নিয়ে আসলেন। মা তখন তাঁকে দুধ পান করাতেন এবং তাঁর সাথে একটি মশক ছিল। এ অংশটি মারফুরূপে বর্ণনা করেন নি।
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ
حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَرْحَمُ اللَّهُ أُمَّ إِسْمَاعِيلَ، لَوْلاَ أَنَّهَا عَجِلَتْ لَكَانَ زَمْزَمُ عَيْنًا مَعِينًا ". قَالَ الأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَمَّا كَثِيرُ بْنُ كَثِيرٍ فَحَدَّثَنِي قَالَ إِنِّي وَعُثْمَانَ بْنَ أَبِي سُلَيْمَانَ جُلُوسٌ مَعَ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، فَقَالَ مَا هَكَذَا حَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ أَقْبَلَ إِبْرَاهِيمُ بِإِسْمَاعِيلَ وَأُمِّهِ عَلَيْهِمُ السَّلاَمُ وَهْىَ تُرْضِعُهُ، مَعَهَا شَنَّةٌ ـ لَمْ يَرْفَعْهُ ـ ثُمَّ جَاءَ بِهَا إِبْرَاهِيمُ وَبِابْنِهَا إِسْمَاعِيلَ.
হাদীস নং: ৩১২৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৬৪
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১২৫। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... সাঈদ ইবনে জুবাইর (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, নারী জাতি সর্বপ্রথম কোমরবন্দ বানানো শিখেছে ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর মায়ের (হাযেরা) নিকট থেকে। হাযেরা (আলাইহিস সালাম) কোমরবন্দ লাগাতেন সারাহ (আলাইহিস সালাম) থেকে নিজের মর্যাদা গোপন রাখার জন্য। তারপর (আল্লাহর হুকুমে) ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) হাযেরা (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর শিশু ছেলে ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- কে সাথে নিয়ে বের হলেন, এ অবস্থায় যে, হাযেরা (আলাইহিস সালাম) শিশুকে দুধ পান করাতেন। অবশেষে যেখানে কা‘বা ঘর অবস্থিত, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তাঁদের উভয়কে সেখানে নিয়ে এসে মসজিদের উঁচু অংশে যমযম কূপের উপরে অবস্থিত একটি বিরাট গাছের নীচে তাদেরকে রাখলেন। তখন মক্কায় না ছিল কোন মানুষ না ছিল কোনরূপ পানির ব্যবস্থা। পরে তিনি তাদেরকে সেখানেই রেখে গেলেন। আর এছাড়া তিনি তাদের কাছে রেখে গেলেন একটি থলের মধ্যে কিছু খেজুর এবং একটি মশকে কিছু পরিমাণ পানি।
এরপর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ফিরে চললেন। তখন ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর মা পিছু পিছু ছুটে আসলেন এবং বলতে লাগলেন, হে ইবরাহীম! আপনি কোথায় চলে যাচ্ছেন? আমাদেরকে এমন এক ময়দানে রেখে যাচ্ছেন, যেখানে না আছে কোন সাহায্যকারী আর না আছে (পানাহারের) কোন ব্যবস্থা। তিনি একথা তাকে বারবার বললেন। কিন্তু ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তাঁর দিকে তাকালেন না। তখন হাযেরা (আলাইহিস সালাম) তাঁকে বললেন, এ (নির্বাসনের) আদেশ কি আপনাকে আল্লাহ দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। হাযেরা (আলাইহিস সালাম) বললেন, তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে ধ্বংস করবেন না। তারপর তিনি ফিরে আসলেন। আর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-ও সামনে চললেন। চলতে চলতে যখন তিনি গিরিপথের বাঁকে পৌছলেন, যেখানে স্ত্রী ও সন্তান তাঁকে আর দেখতে পাচ্ছেন না, তখন কা‘বা ঘরের দিকে মুখ করে দাঁড়ালেন।
তারপর তিনি দু’হাত তুলে এ দু‘আ করলেন, আর বললেন, “হে আমার প্রতিপালক! আমি আমার পরিবারের কতকে আপনার সম্মানিত ঘরের নিকট এক অনুর্বর উপত্যকায় .... যাতে আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। (১৪ঃ ৩৭) (এ দু‘আ করে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) চলে গেলেন) আর ইসমাঈলের মা ইসমাঈলকে স্বীয় স্তন্যের দুধ পান করাতেন, এবং নিজে ঐ মশক থেকে পানি পান করতেন। অবশেষে মশকে যা পানি ছিল তা ফুরিয়ে গেল। তিনি নিজে পিপাসিত হলেন, এবং তাঁর (বুকের দুধ শুকিয়ে যাওয়ায়) শিশু পুত্রটি পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ল। তিনি শিশুটির প্রতি দেখতে লাগলেন। পিপাসায় তার বুক ধরফড় করছে অথবা রাবী বলেন, সে মাটিতে পড়ে ছটফট করছে। শিশুপুত্রের এ করুন অবস্থার প্রতি তাকানো অসহনীয় হয়ে পড়ায় তিনি সরে গেলেন আর তাঁর অবস্থানের সংলগ্ন পর্বত ‘সাফা’ কে একমাত্র তাঁর নিকটমত পর্বত হিসাবে পেলেন। এরপর তিনি তার উপর উঠে দাঁড়ালেন, আর ময়দানের দিকে তাকালেন। এদিকে সেদিকে তাকিয়ে দেখলেন, কোথাও কাউকে দেখা যায় কি না? কিন্তু তিনি কাউকে দেখতে পেলেন না।
তখন ‘সাফা’ পর্বত থেকে নেমে পড়লেন। এমন কি যখন তিনি নিচু ময়দান পর্যন্ত পৌছলেন, তখন তিনি তাঁর কামিজের এক প্রান্ত তুলে ধরে একজন শ্রান্ত-ক্লান্ত মানুষের ন্যায় ছুটে চললেন। অবশেষে ময়দানে অতিক্রম করে ‘মারওয়া’ পাহাড়ের নিকট এসে তার উপর উঠে দাঁড়ালেন। তারপর এদিকে সেদিকে তাকালেন, কাউকে দেখতে পান কি না? কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলেন না। এমনিভাবে সাতবার দৌড়াদৌড়ি করলেন। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, এজন্যই মানুষ (হজ্জ বা উমরার সময়) এ পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে সা‘ঈ করে থাকে। এরপর তিনি যখন মারওয়া পাহাড়ে উঠলেন, তখন একটি শব্দ শুনতে পেলেন এবং তিনি নিজেকেই নিজে বললেন, একটু অপেক্ষা কর। (মনোযোগ দিয়ে শুনি।) তিনি একাগ্রচিত্তে শুনলেন। তখন তিনি বললেন, তুমি তো তোমার শব্দ শুনিয়েছ, আর আমিও শুনেছি। যদি তোমার কাছে কোন সাহায্যকারী থাকে (তাহলে আমাকে সাহায্য কর)।
হঠাৎ যেখানে যমযম কূপ অবস্থিত সেখানে তিনি একজন ফিরিশতা দেখতে পেলেন। সেই ফিরিশতা আপন পায়ের গোড়ালি দ্বারা আঘাত করলেন অথবা তিনি বলছেন, আপন ডানা দ্বারা আঘাত করলেন। ফলে পানি বের হতে লাগল। তখন হাযেরা (আলাইহিস সালাম)- এর চারপাশে নিজ হাতে বাঁধা দিয়ে একে হাউযের ন্যায় করে দিলেন, এবং হাতের কোষভরে তাঁর মশকটিতে পানি ভরতে লাগলেন। তখনো পানি উপছে উঠতে থাকলো। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, ইসমাঈলের মাকে আল্লাহ রহম করুন। যদি তিনি বাঁধ না দিয়ে যমযমকে এভাবে ছেড়ে দিতেন কিংবা বলেছেন, যদি কোষে ভরে পানি মশকে জমা না করতেন, তাহলে যমযম একটি কূপ না হয়ে একটি প্রবহমান ঝর্ণায় পরিণত হতো।
রাবী বলেন, তারপর হাযেরা (আলাইহিস সালাম) পানি পান করলেন, আর শিশু পুত্রকেও দুধ পান করালেন, তখন ফিরিশতা তাঁকে বললেন, আপনি ধ্বংসের কোন আশঙ্কা করবেন না। কেননা এখানেই আল্লাহর ঘর রয়েছে। এ শিশুটি এবং তাঁর পিতা দু’জনে মিলে এখানে ঘর নির্মাণ করবে এবং আল্লাহ তাঁর আপনজনকে কখনও ধ্বংস করেন না। ঐ সময় আল্লাহর ঘরের স্থানটি যমীন থেকে টিলার ন্যায় উঁচু ছিল। বন্যা আসার ফলে তাঁর ডানে বামে ভেঙ্গে যাচ্ছিল। এরপর হাযেরা (আলাইহিস সালাম) এভাবেই দিন যাপন করছিলেন। অবশেষে (ইয়ামান দেশীয়) জুরহুম গোত্রের একদল লোক তাদের কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিল। অথবা রাবী বলেন, জুরহুম পরিবারের কিছু লোক কাদা নামক উঁচু ভুমির পথ ধরে এদিকে আসছিল। তারা মক্কার নিচু ভুমিতে অবতরণ করল এবং তারা দেখতে পেল একঝাঁক পাখি চক্রাকারে উড়ছে। তখন তারা বলল, নিশ্চয় এ পাখিগুলো পানির উপর উড়ছে। আমরা এ ময়দানের পথ হয়ে বহুবার অতিক্রম করেছি। কিন্তু এখানে কোন পানি ছিল না।
তখন তারা একজন কি দু’জন লোক সেখানে পাঠালো। তারা সেখানে গিয়েই পানি দেখতে পেল। তারা সেখান থেকে ফিরে এসে সকলকে পানির সংবাদ দিল। সংবাদ শুনে সবাই সেদিকে অগ্রসর হল। রাবী বলেন, ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর মা পানির নিকট ছিলেন। তারা তাঁকে বলল, আমরা আপনার নিকটবর্তী স্থানে বসবাস করতে চাই। আপনি আমাদেরকে অনুমতি দিবেন কি? তিনি জবাব দিলেন, হ্যাঁ। তবে, এ পানির উপর তোমাদের কোন অধিকার থাকবে না। তারা হ্যাঁ, বলে তাদের মত প্রকাশ করল। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, এ ঘটনা ইসমাঈলের মাকে একটি সুযোগ এনে দিল। আর তিনিও মানুষের সাহচর্য চেয়েছিলেন।
এরপর তারা সেখানে বসতি স্থাপন করল এবং তাদের পরিবার-পরিজনের নিকটও সংবাদ পাঠাল। তারপর তারাও এসে তাদের সাথে বসবাস করতে লাগল। পরিশেষে সেখানে তাদের কয়েকটি পরিবারের বসতি স্থাপিত হল। আর ইসমাঈলও যৌবনে উপনীত হলেন এবং তাদের থেকে আরবী ভাষা শিখলেন। যৌবনে পৌঁছে তিনি তাদের কাছে অধিক আকর্ষণীয় ও প্রিয়পাত্র হয়ে উঠলেন। এরপর যখন তিনি পূর্ণ যৌবন লাভ করলেন, তখন তারা তাঁর সঙ্গে তাদেরই একটি মেয়েকে বিবাহ দিল। এরই মধ্যে ইসমাঈলের মা হাযেরা (আলাইহিস সালাম) ইন্‌তিকাল করেন।
ইসমাঈলের বিবাহের পর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তাঁর পরিত্যক্ত পরিজনের অবস্থা দেখার জন্য এখানে আসলেন। কিন্তু তিনি ইসমাঈলকে পেলেন না। তিনি তাঁর স্ত্রীকে তাঁর সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলেন। স্ত্রী বলল, তিনি আমাদের জীবিকার খোঁজে বেরিয়ে গেছেন। এরপর তিনি পুত্রবধুকে তাদের জীবন যাত্রা এবং অবস্থা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলেন। সে বলল, আমরা অতি দুরাবস্থায়, অতি টানাটানি ও খুব কষ্টে আছি। সে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর নিকট তাদের দুর্দশার অভিযোগ করল। তিনি বললেন, তোমার স্বামী বাড়ী আসলে, তাঁকে আমার সালাম জানিয়ে বলবে, সে যেন তার ঘরের দরজার চৌকাঠ বদলিয়ে নেয়। এরপর যখন ইসমাঈল বাড়ী আসলেন, তখন তিনি যেন (তাঁর পিতা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর আগমনের) কিছুটা আভাস পেলেন।
তখন তিনি তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কাছে কেউ কি এসেছিল? স্ত্রী বলল, হ্যাঁ। এমন এমন আকৃতির একজন বৃদ্ধ লোক এসেছিলেন এবং আমাকে আপনার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। আমি তাঁকে আপনার সংবাদ দিলাম। তিনি আমাকে আমাদের জীবন যাত্রা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি তাঁকে জানালাম, আমরা খুব কষ্ট ও অভাবে আছি। ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি কি তোমাকে কোন উপদেশ দিয়েছেন? স্ত্রী বলল, হ্যাঁ। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমি যেন আপনাকে তাঁর সালাম পৌছাই এবং তিনি আরো বলেছেন, আপনি যেন আপনার ঘরের দরজার চৌকাঠ বদলিয়ে ফেলেন। ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, ইনি আমার পিতা। এ কথা দ্বারা তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়ে গেছেন, আমি যেন তোমাকে পৃথক করে দেই। অতএব তুমি তোমার আপন জনদের কাছে চলে যাও। এ কথা বলে, ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) তাকে তালাক দিয়ে দিলেন এবং ঐ লোকদের থেকে অপর একটি মেয়েকে বিবাহ করলেন।
এরপর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এদের থেকে দূরে রইলেন, আল্লাহ যতদিন চাইলেন। তারপর তিনি আবার এদের দেখতে আসলেন। কিন্তু এবারও তিনি ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর দেখা পেলেন না। তিনি ছেলের বউয়ের নিকট উপস্থিত হলেন এবং তাঁকে ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। সে বললো, তিনি আমাদের খাবারের খোঁজে বেরিয়ে গেছেন। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কেমন আছ? তিনি তাদের জীবনযাত্রা ও অবস্থা জানতে চাইলেন। তখন সে বলল, আমরা ভাল এবং স্বচ্ছলতার মধ্যেই আছি। আর সে আল্লাহর প্রশংসাও করলো। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের প্রধান খাদ্য কি? সে বলল, গোশত। তিনি আবার জানতে চাইলেন, তোমাদের পানীয় কি? সে বলল, পানি। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ! তাদের গোশত ও পানিতে বরকত দিন। নবী (ﷺ) বলেন, ঐ সময় তাদের সেখানে খাদ্যশস্য উৎপাদন হতো না। যদি হতো তাহলে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) সে বিষয়েও তাদের জন্য দু‘আ করতেন।
বর্ণনাকারী বলেন, মক্কা ব্যতীত অন্য কোথাও কেউ শুধু গোশত ও পানি দ্বারা জীবন ধারণ করতে পারে না। কেননা, শুধু গোশত ও পানি জীবনযাপনের অনুকূল হতে পারে না। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, যখন তোমার স্বামী ফিরে আসবে, তখন তাঁকে আমার সালাম দিবে, আর তাঁকে আমার পক্ষ থেকে হুকুম করবে যে, সে যেন তার ঘরের দরজার চৌকাঠ ঠিক রাখে। এরপর ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) যখন ফিরে আসলেন, তখন তিনি বললেন, তোমাদের নিকট কেউ এসেছিলেন কি? সে বলল, হ্যাঁ। একজন সুন্দর আকৃতির বৃদ্ধ লোক এসেছিলেন এবং সে তাঁর প্রশংসা করলো, (তারপর বললো) তিনি আমাকে আপনার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেছেন। আমি তাঁকে আপনার সংবাদ জানিয়েছি। এরপর তিনি আমার নিকট আমাদের জীবনযাপন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আমি তাঁকে জানিয়েছি যে, আমরা ভাল আছি। ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, তিনি কি তোমাকে আর কোন কিছুর জন্য আদেশ করেছেন? সে বললো, হ্যাঁ। তিনি আপনার প্রতি সালাম জানিয়ে আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, আপনি যেন আপনার ঘরের দরজার চৌকাঠ ঠিক রাখেন।
ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, ইনিই আমার পিতা। আর তুমি হলে আমার ঘরের দরজার চৌকাঠ। একথার দ্বারা তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমি যেন তোমাকে স্ত্রী হিসাবে বহাল রাখি। এরপর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এদের থেকে দূরে রইলেন, যদ্দিন আল্লাহ চাইলেন। এরপর তিনি আবার আসলেন। (দেখতে পেলেন) যমযম কূপের নিকটস্থ একটি বিরাট বৃক্ষের নীচে বসে ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) তাঁর একটি তীর মেরামত করছেন। যখন তিনি তাঁর পিতাকে দেখতে পেলেন, তিনি দাঁড়িয়ে তাঁর দিকে এগিয়ে গেলেন। এরপর একজন বাপ-বেটার সঙ্গে, একজন বেটা-বাপের সঙ্গে সাক্ষাত হলে যেরূপ করে থাকে তারা উভয়ে তাই করলেন। এরপর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, হে ইসমাঈল। আল্লাহ আমাকে একটি কাজের নির্দেশ দিয়েছেন। ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, আপনার রব! আপনাকে যা আদেশ করেছেন, তা করুন।
ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, তুমি আমাকে সাহায্য করবে কি ? ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, আমি আপনাকে সাহায্য করব।
ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, আল্লাহ আমাকে এখানে একটি ঘর বানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই বলে তিনি উঁচু টিলাটির দিকে ইশারা করলেন যে, এর চারপাশে ঘেরাও দিয়ে, তখনি তাঁরা উভয়ে কা‘বা ঘরের দেওয়াল উঠাতে লেগে গেলেন। ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) পাথর আনতেন, আর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) নির্মাণ করতেন। পরিশেষে যখন দেওয়াল উঁচু হয়ে গেল, তখন ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) (মাকামে ইবরাহীম নামে খ্যাত) পাথরটি আনলেন এবং ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর জন্য তা যথাস্থানে রাখলেন। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তার উপর দাঁড়িয়ে নির্মাণ কাজ করতে লাগলেন। আর ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) তাঁকে পাথর যোগান দিতে থাকেন।
তখন তারা উভয়ে দু‘আ করতে থাকলেন, “হে আমাদের রব। আমাদের থেকে (একাজ) কবুল করুন।” নিশ্চয়ই আপনি সব কিছু শুনেন ও জানেন। তাঁরা উভয়ে আবার কা‘বা ঘর তৈরী করতে থাকেন। এবং কাবা ঘরের চার দিকে ঘুরে ঘুরে এ দু‘আ করতে থাকেন। “হে আমাদের রব! আমাদের থেকে (এ শ্রমটুকু) কবুল করে নিন। নিশ্চয়ই আপনি সব কিছু শুনেন ও জানেন।” (২ঃ ১২৭)
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ
3364 - وحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ، وَكَثِيرِ بْنِ كَثِيرِ بْنِ المُطَّلِبِ بْنِ أَبِي وَدَاعَةَ، يَزِيدُ أَحَدُهُمَا عَلَى الآخَرِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: أَوَّلَ مَا اتَّخَذَ النِّسَاءُ المِنْطَقَ مِنْ قِبَلِ أُمِّ إِسْمَاعِيلَ، اتَّخَذَتْ مِنْطَقًا لِتُعَفِّيَ أَثَرَهَا عَلَى سَارَةَ، ثُمَّ جَاءَ بِهَا إِبْرَاهِيمُ وَبِابْنِهَا إِسْمَاعِيلَ وَهِيَ تُرْضِعُهُ، حَتَّى وَضَعَهُمَا عِنْدَ البَيْتِ عِنْدَ دَوْحَةٍ، فَوْقَ زَمْزَمَ فِي أَعْلَى المَسْجِدِ، وَلَيْسَ بِمَكَّةَ يَوْمَئِذٍ أَحَدٌ، وَلَيْسَ بِهَا مَاءٌ، فَوَضَعَهُمَا هُنَالِكَ، وَوَضَعَ عِنْدَهُمَا جِرَابًا فِيهِ تَمْرٌ، وَسِقَاءً فِيهِ مَاءٌ، ثُمَّ قَفَّى إِبْرَاهِيمُ مُنْطَلِقًا، فَتَبِعَتْهُ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ فَقَالَتْ: يَا إِبْرَاهِيمُ، أَيْنَ تَذْهَبُ وَتَتْرُكُنَا بِهَذَا الوَادِي، الَّذِي لَيْسَ فِيهِ إِنْسٌ وَلاَ شَيْءٌ؟ فَقَالَتْ لَهُ ذَلِكَ مِرَارًا، وَجَعَلَ لاَ يَلْتَفِتُ إِلَيْهَا، فَقَالَتْ لَهُ: آللَّهُ الَّذِي أَمَرَكَ بِهَذَا؟ قَالَ نَعَمْ، قَالَتْ: إِذَنْ لاَ يُضَيِّعُنَا، ثُمَّ رَجَعَتْ، فَانْطَلَقَ إِبْرَاهِيمُ حَتَّى إِذَا كَانَ عِنْدَ الثَّنِيَّةِ حَيْثُ لاَ يَرَوْنَهُ، اسْتَقْبَلَ بِوَجْهِهِ البَيْتَ، ثُمَّ دَعَا بِهَؤُلاَءِ الكَلِمَاتِ، وَرَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ: رَبِّ {إِنِّي أَسْكَنْتُ مِنْ ذُرِّيَّتِي بِوَادٍ غَيْرِ ذِي زَرْعٍ عِنْدَ بَيْتِكَ المُحَرَّمِ} [إبراهيم: 37]- حَتَّى بَلَغَ - {يَشْكُرُونَ} [إبراهيم: 37] " وَجَعَلَتْ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ تُرْضِعُ إِسْمَاعِيلَ وَتَشْرَبُ مِنْ ذَلِكَ المَاءِ، حَتَّى إِذَا نَفِدَ مَا فِي السِّقَاءِ عَطِشَتْ وَعَطِشَ ابْنُهَا، وَجَعَلَتْ تَنْظُرُ إِلَيْهِ يَتَلَوَّى، أَوْ قَالَ يَتَلَبَّطُ، فَانْطَلَقَتْ كَرَاهِيَةَ أَنْ تَنْظُرَ إِلَيْهِ، فَوَجَدَتِ الصَّفَا أَقْرَبَ جَبَلٍ فِي الأَرْضِ يَلِيهَا، فَقَامَتْ عَلَيْهِ، ثُمَّ اسْتَقْبَلَتِ الوَادِيَ تَنْظُرُ هَلْ تَرَى أَحَدًا فَلَمْ تَرَ أَحَدًا، فَهَبَطَتْ مِنَ الصَّفَا حَتَّى إِذَا بَلَغَتِ الوَادِيَ رَفَعَتْ طَرَفَ دِرْعِهَا، ثُمَّ سَعَتْ سَعْيَ الإِنْسَانِ المَجْهُودِ حَتَّى جَاوَزَتِ الوَادِيَ، ثُمَّ أَتَتِ المَرْوَةَ فَقَامَتْ عَلَيْهَا وَنَظَرَتْ هَلْ تَرَى أَحَدًا فَلَمْ تَرَ أَحَدًا [ص:143]، فَفَعَلَتْ ذَلِكَ سَبْعَ مَرَّاتٍ، قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَذَلِكَ سَعْيُ النَّاسِ بَيْنَهُمَا» فَلَمَّا أَشْرَفَتْ عَلَى المَرْوَةِ سَمِعَتْ صَوْتًا، فَقَالَتْ صَهٍ - تُرِيدُ نَفْسَهَا -، ثُمَّ تَسَمَّعَتْ، فَسَمِعَتْ أَيْضًا، فَقَالَتْ: قَدْ أَسْمَعْتَ إِنْ كَانَ عِنْدَكَ غِوَاثٌ، فَإِذَا هِيَ بِالْمَلَكِ عِنْدَ مَوْضِعِ زَمْزَمَ، فَبَحَثَ بِعَقِبِهِ، أَوْ قَالَ بِجَنَاحِهِ، حَتَّى ظَهَرَ المَاءُ، فَجَعَلَتْ تُحَوِّضُهُ وَتَقُولُ بِيَدِهَا هَكَذَا، وَجَعَلَتْ تَغْرِفُ مِنَ المَاءِ فِي سِقَائِهَا وَهُوَ يَفُورُ بَعْدَ مَا تَغْرِفُ. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " يَرْحَمُ اللَّهُ أُمَّ إِسْمَاعِيلَ، لَوْ تَرَكَتْ زَمْزَمَ - أَوْ قَالَ: لَوْ لَمْ تَغْرِفْ مِنَ المَاءِ -، لَكَانَتْ زَمْزَمُ عَيْنًا مَعِينًا " قَالَ: فَشَرِبَتْ وَأَرْضَعَتْ وَلَدَهَا، فَقَالَ لَهَا المَلَكُ: لاَ تَخَافُوا الضَّيْعَةَ، فَإِنَّ هَا هُنَا بَيْتَ اللَّهِ، يَبْنِي هَذَا الغُلاَمُ وَأَبُوهُ، وَإِنَّ اللَّهَ لاَ يُضِيعُ أَهْلَهُ، وَكَانَ البَيْتُ مُرْتَفِعًا مِنَ الأَرْضِ كَالرَّابِيَةِ، تَأْتِيهِ السُّيُولُ، فَتَأْخُذُ عَنْ يَمِينِهِ وَشِمَالِهِ، فَكَانَتْ كَذَلِكَ حَتَّى مَرَّتْ بِهِمْ رُفْقَةٌ مِنْ جُرْهُمَ، أَوْ أَهْلُ بَيْتٍ مِنْ جُرْهُمَ، مُقْبِلِينَ مِنْ طَرِيقِ كَدَاءٍ، فَنَزَلُوا فِي أَسْفَلِ مَكَّةَ فَرَأَوْا طَائِرًا عَائِفًا، فَقَالُوا: إِنَّ هَذَا الطَّائِرَ لَيَدُورُ عَلَى مَاءٍ، لَعَهْدُنَا بِهَذَا الوَادِي وَمَا فِيهِ مَاءٌ، فَأَرْسَلُوا جَرِيًّا أَوْ جَرِيَّيْنِ فَإِذَا هُمْ بِالْمَاءِ، فَرَجَعُوا فَأَخْبَرُوهُمْ بِالْمَاءِ فَأَقْبَلُوا، قَالَ: وَأُمُّ إِسْمَاعِيلَ عِنْدَ المَاءِ، فَقَالُوا: أَتَأْذَنِينَ لَنَا أَنْ نَنْزِلَ عِنْدَكِ؟ فَقَالَتْ: نَعَمْ، وَلَكِنْ لاَ حَقَّ لَكُمْ فِي المَاءِ، قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَأَلْفَى ذَلِكَ أُمَّ إِسْمَاعِيلَ وَهِيَ تُحِبُّ الإِنْسَ» فَنَزَلُوا وَأَرْسَلُوا إِلَى أَهْلِيهِمْ فَنَزَلُوا مَعَهُمْ، حَتَّى إِذَا كَانَ بِهَا أَهْلُ أَبْيَاتٍ مِنْهُمْ، وَشَبَّ الغُلاَمُ وَتَعَلَّمَ العَرَبِيَّةَ مِنْهُمْ، وَأَنْفَسَهُمْ وَأَعْجَبَهُمْ حِينَ شَبَّ، فَلَمَّا أَدْرَكَ زَوَّجُوهُ امْرَأَةً مِنْهُمْ، وَمَاتَتْ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ، فَجَاءَ إِبْرَاهِيمُ بَعْدَمَا تَزَوَّجَ إِسْمَاعِيلُ يُطَالِعُ تَرِكَتَهُ، فَلَمْ يَجِدْ إِسْمَاعِيلَ، فَسَأَلَ امْرَأَتَهُ عَنْهُ فَقَالَتْ: خَرَجَ يَبْتَغِي لَنَا، ثُمَّ سَأَلَهَا عَنْ عَيْشِهِمْ وَهَيْئَتِهِمْ، فَقَالَتْ نَحْنُ بِشَرٍّ، نَحْنُ فِي ضِيقٍ وَشِدَّةٍ، فَشَكَتْ إِلَيْهِ، قَالَ: فَإِذَا جَاءَ زَوْجُكِ فَاقْرَئِي عَلَيْهِ السَّلاَمَ، وَقُولِي لَهُ يُغَيِّرْ عَتَبَةَ بَابِهِ، فَلَمَّا جَاءَ إِسْمَاعِيلُ كَأَنَّهُ آنَسَ شَيْئًا، فَقَالَ: هَلْ جَاءَكُمْ مِنْ أَحَدٍ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، جَاءَنَا شَيْخٌ كَذَا وَكَذَا، فَسَأَلَنَا عَنْكَ فَأَخْبَرْتُهُ، وَسَأَلَنِي كَيْفَ عَيْشُنَا، فَأَخْبَرْتُهُ أَنَّا فِي جَهْدٍ وَشِدَّةٍ، قَالَ: فَهَلْ أَوْصَاكِ بِشَيْءٍ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، أَمَرَنِي أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْكَ السَّلاَمَ، وَيَقُولُ غَيِّرْ عَتَبَةَ بَابِكَ، قَالَ: ذَاكِ أَبِي، وَقَدْ أَمَرَنِي أَنْ أُفَارِقَكِ، الحَقِي بِأَهْلِكِ، فَطَلَّقَهَا، وَتَزَوَّجَ مِنْهُمْ أُخْرَى، فَلَبِثَ عَنْهُمْ إِبْرَاهِيمُ مَا شَاءَ اللَّهُ، ثُمَّ أَتَاهُمْ بَعْدُ فَلَمْ يَجِدْهُ، فَدَخَلَ عَلَى [ص:144] امْرَأَتِهِ فَسَأَلَهَا عَنْهُ، فَقَالَتْ: خَرَجَ يَبْتَغِي لَنَا، قَالَ: كَيْفَ أَنْتُمْ؟ وَسَأَلَهَا عَنْ عَيْشِهِمْ وَهَيْئَتِهِمْ، فَقَالَتْ: نَحْنُ بِخَيْرٍ وَسَعَةٍ، وَأَثْنَتْ عَلَى اللَّهِ، فَقَالَ: مَا طَعَامُكُمْ؟ قَالَتِ اللَّحْمُ، قَالَ فَمَا شَرَابُكُمْ؟ قَالَتِ المَاءُ. قَالَ: اللَّهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ فِي اللَّحْمِ وَالمَاءِ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ يَوْمَئِذٍ حَبٌّ، وَلَوْ كَانَ لَهُمْ دَعَا لَهُمْ فِيهِ» . قَالَ: فَهُمَا لاَ يَخْلُو عَلَيْهِمَا أَحَدٌ بِغَيْرِ مَكَّةَ إِلَّا لَمْ يُوَافِقَاهُ، قَالَ: فَإِذَا جَاءَ زَوْجُكِ فَاقْرَئِي عَلَيْهِ السَّلاَمَ، وَمُرِيهِ يُثْبِتُ عَتَبَةَ بَابِهِ، فَلَمَّا جَاءَ إِسْمَاعِيلُ قَالَ: هَلْ أَتَاكُمْ مِنْ أَحَدٍ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، أَتَانَا شَيْخٌ حَسَنُ الهَيْئَةِ، وَأَثْنَتْ عَلَيْهِ، فَسَأَلَنِي عَنْكَ فَأَخْبَرْتُهُ، فَسَأَلَنِي كَيْفَ عَيْشُنَا فَأَخْبَرْتُهُ أَنَّا بِخَيْرٍ، قَالَ: فَأَوْصَاكِ بِشَيْءٍ، قَالَتْ: نَعَمْ، هُوَ يَقْرَأُ عَلَيْكَ السَّلاَمَ، وَيَأْمُرُكَ أَنْ تُثْبِتَ عَتَبَةَ بَابِكَ، قَالَ: ذَاكِ أَبِي وَأَنْتِ العَتَبَةُ، أَمَرَنِي أَنْ أُمْسِكَكِ، ثُمَّ لَبِثَ عَنْهُمْ مَا شَاءَ اللَّهُ، ثُمَّ جَاءَ بَعْدَ ذَلِكَ، وَإِسْمَاعِيلُ يَبْرِي نَبْلًا لَهُ تَحْتَ دَوْحَةٍ قَرِيبًا مِنْ زَمْزَمَ، فَلَمَّا رَآهُ قَامَ إِلَيْهِ، فَصَنَعَا كَمَا يَصْنَعُ الوَالِدُ بِالوَلَدِ وَالوَلَدُ بِالوَالِدِ، ثُمَّ قَالَ يَا إِسْمَاعِيلُ، إِنَّ اللَّهَ أَمَرَنِي بِأَمْرٍ، قَالَ: فَاصْنَعْ مَا أَمَرَكَ رَبُّكَ، قَالَ: وَتُعِينُنِي؟ قَالَ: وَأُعِينُكَ، قَالَ: فَإِنَّ اللَّهَ أَمَرَنِي أَنْ أَبْنِيَ هَا هُنَا بَيْتًا، وَأَشَارَ إِلَى أَكَمَةٍ مُرْتَفِعَةٍ عَلَى مَا حَوْلَهَا، قَالَ: فَعِنْدَ ذَلِكَ رَفَعَا القَوَاعِدَ مِنَ البَيْتِ، فَجَعَلَ إِسْمَاعِيلُ يَأْتِي بِالحِجَارَةِ وَإِبْرَاهِيمُ يَبْنِي، حَتَّى إِذَا ارْتَفَعَ البِنَاءُ، جَاءَ بِهَذَا الحَجَرِ فَوَضَعَهُ لَهُ فَقَامَ عَلَيْهِ، وَهُوَ يَبْنِي وَإِسْمَاعِيلُ يُنَاوِلُهُ الحِجَارَةَ، وَهُمَا يَقُولاَنِ: {رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ العَلِيمُ} [البقرة: 127] ، قَالَ: فَجَعَلاَ يَبْنِيَانِ حَتَّى يَدُورَا حَوْلَ البَيْتِ وَهُمَا يَقُولاَنِ: {رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ العَلِيمُ} [البقرة: 127]
হাদীস নং: ৩১২৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৬৫
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১২৬। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- ও তাঁর স্ত্রী (সারার) মাঝে যা হওয়ার হয়ে গেল, তখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) (শিশুপুত্র) ইসমাঈল এবং তাঁর মাকে নিয়ে বের হলেন। তাদের সাথে একটি থলে ছিল, যাতে পানি ছিল। ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর মা মশক থেকে পানি পান করতেন। ফলে শিশুর জন্য তাঁর স্তন্যে দুধ বাড়তে থাকে। অবশেষে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) মক্কায় পৌছে হাযেরাকে (শিশুপুত্র ইসমাঈলসহ) একটি বিরাট বৃক্ষের নীচে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। এরপর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) আপন পরিবার (সারার) নিকট ফিরে চললেন। তখন ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর মা কিছু দূর পর্যন্ত তাঁর অনুসরণ করলেন। অবশেষে যখন কাদা নামক স্থানে পৌছলেন, তখন তিনি পিছন থেকে ডেকে বললেন, হে ইবরাহীম! আপনি আমাদেরকে কার কাছে রেখে যাচ্ছেন? ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, আল্লাহর কাছে। হাযেরা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আমি আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট।
রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, এরপর হাযেরা (আলাইহিস সালাম) ফিরে আসলেন, তিনি মশক থেকে পানি পান করতেন আর শিশুর জন্য (তাঁর স্তন্যের) দুধ বাড়ত। অবশেষে যখন পানি শেষ হয়ে গেল। তখন ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর মা বললেন, আমি যদি গিয়ে এদিকে সেদিকে তাকাতাম! তাহলে হয়ত কোন মানুষ দেখতে পেতাম। রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, এরপর ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর মা গেলেন এবং ‘সাফা’ পাহাড়ে উঠলেন আর এদিকে ওদিকে তাকালেন এবং কাউকে দেখেন কিনা এজন্য বিশেষভাবে তাকিয়ে দেখলেন। কিন্তু কাউকেও দেখতে পেলেন না। (এরপর যখন নীচু ভূমিতে পৌছলেন) তখন দ্রুত বেগে মারওয়া পাহাড়ে এসে গেলেন। এবং এভাবে তিনি কয়েক চক্কর দিলেন। পুনরায় তিনি (মনে মনে) বললেন, যদি গিয়ে দেখতাম যে, শিশুটি কি করছে। এরপর তিনি গেলেন এবং দেখতে পেলেন যে, সে তার অবস্থায়ই আছে। সে যেন মরণাপন্ন হয়ে গেছে। এতে তাঁর মন স্বস্তি পাচ্ছিল না।
তখন তিনি বললেন, যদি সেখানে (আবার) যেতাম এবং এদিকে সেদিকে তাকিয়ে দেখতাম। সম্ভবতঃ কাউকে দেখতে পেতাম। এরপর তিনি গেলেন, সাফা পাহাড়ের উপর উঠলেন এবং এদিক সেদিক দেখলেন এবং গভীরভাবে তাকিয়ে দেখলেন। কিন্তু কাউকে দেখতে পেলেন না। এমনকি তিনি সাতটি চক্কর পূর্ণ করলেন। এরপর তিনি মনে মনে বললেন, যদি যেতাম তখন দেখতাম যে, সে কি করছে। হঠাৎ তিনি একটি শব্দ শুনতে পেলেন। তখন তিনি বললেন, যদি আপনার কোন সাহায্য করার থাকে তবে আমাকে সাহায্য করুন। হঠাৎ তিনি জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)- কে দেখতে পেলেন। রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, তখন তিনি (জিবরাঈল) তাঁর পায়ের গোড়ালি দ্বারা এরূপ করলেন অর্থাৎ গোড়ালি দ্বারা যমীনের উপর আঘাত করলেন। রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, তখনই পানি বেরিয়ে আসল। এ দেখে ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর মা অস্থির হয়ে গেলেন এবং গর্ত খনন করতে লাগলেন।
রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, এ প্রসঙ্গে আবুল কাসিম (রাসূলুল্লাহ (ﷺ)) বলেছেন, হাযেরা (আলাইহিস সালাম) যদি একে তার অবস্থার উপর ছেড়ে দিতেন তাহলে পানি বিস্তৃত হয়ে যেত। রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, তখন হাযেরা (আলাইহিস সালাম) পানি পান করতে লাগলেন এবং তাঁর সন্তানের জন্য তাঁর দুধ বাড়তে থাকে। রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, এরপর জুরহুম গোত্রের (ইয়ামান দেশীয়) একদল লোক উপত্যকার নীচু ভূমি দিয়ে অতিক্রম করছিল। হঠাৎ তারা দেখল কিছু পাখি উড়ছে। তারা যেন তা বিশ্বাসই করতে পারছিল না আর তারা বলতে লাগল এসব পাখি তো পানি ছাড়া কোথাও থাকতে পারে না। তখন তারা সেখানে তাদের একজন দূত পাঠাল। সে সেখানে গিয়ে দেখল, সেখানে পানি মাওজুদ আছে। তখন সে তার দলের লোকদের কাছে ফিরে আসল এবং তাদেরকে সংবাদ দিল।
এরপর তারা হাযেরা (আলাইহিস সালাম)- এর কাছে এসে বলল, হে ইসমাঈলের মা। আপনি কি আমাদেরকে আপনার কাছে থাকা অথবা (রাবী বলেছেন), আপনার কাছে বসবাস করার অনুমতি দিবেন? (হাযেরা (আলাইহিস সালাম) তাদেরকে বসবাসের অনুমতি দিলেন এবং এভাবে অনেক দিন কেটে গেল)। এরপর তাঁর ছেলে বয়ঃপ্রাপ্ত হল। তখন তিনি (ইসমাঈল) জুরহুম গোত্রেরই একটি মেয়ে বিয়ে করলেন। রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, পুনরায় ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর মনে জাগল (ইসমাঈল এবং তাঁর মা হাযেরার কথা) তখন তিনি তাঁর স্ত্রীকে (সারা) বললেন, আমি আমার পরিত্যক্ত পরিজনের অবস্থা সম্পর্কে খবর নিতে চাই। রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, এরপর তিনি (তাদের কাছে) আসলেন এবং সালাম দিলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ইসমাঈল কোথায়? ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর স্ত্রী বলল, তিনি শিকারে গিয়েছেন। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, সে যখন আসবে তখন তুমি তাঁকে আমার এ নির্দেশের কথা বলবে, “তুমি তোমার ঘরের চৌকাঠখানা বদলিয়ে ফেলবে।”
ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) যখন আসলেন, তখন স্ত্রী তাঁকে খবরটি জানালেন, তখন তিনি স্ত্রীকে বললেন, তুমি সেই চৌকাঠ। অতএব তুমি তোমার পিতামাতার কাছে চলে যাও। রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, অতঃপর (তাদের কথা) ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর আবার মনে পড়ল। তখন তিনি তাঁর স্ত্রী (সারা) কে বললেন, আমি আমার নির্বাসিত পরিবারের খবর নিতে চাই। এরপর তিনি সেখানে আসলেন, এবং (পুত্রবধূকে) জিজ্ঞাসা করলেন, ইসমাঈল কোথায়? ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম)- এর স্ত্রী বলল, তিনি শিকারে গিয়েছেন। পুত্রবধু তাঁকে বললেন, আপনি কি আমাদের এখানে অবস্থান করবেন না? কিছু পানাহার করবেন না? তখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, তোমাদের খাদ্য এবং পানীয় কি? স্ত্রী বলল, আমাদের খাদ্য হল গোশত আর পানীয় হল পানি। তখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) দু‘আ করলেন, ‘হে আল্লাহ! তাদের খাদ্য এবং পানীয় দ্রব্যের মধ্যে বরকত দিন।’
রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আবুল কাসিম বলেছেন, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর দু‘আর কারণেই (মক্কার খাদ্য ও পানীয় দ্রব্যের মধ্যে) বরকত রয়েছে। রাবী ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আবার কিছুদিন পর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর মনে তাঁর নির্বাসিত পরিজনের কথা জাগল। তখন তিনি তাঁর স্ত্রী (সারা) কে বললেন, আমি আমার পরিত্যক্ত পরিজনের খবর নিতে চাই। এরপর তিনি এলেন এবং ইসমাঈলের দেখা পেলেন, তিনি যমযম কূপের পিছনে বসে তাঁর একটি তীর মেরামত করছেন। তখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ডেকে বললেন, হে ইসমাঈল! তোমার রব তাঁর জন্য একখানা ঘর নির্মাণ করতে আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, আপনার রবের নির্দেশ পালন করুন। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, তিনি আমাকে এও নির্দেশ দিয়েছেন যে, তুমি যেন আমাকে এ বিষয়ে সহায়তা কর।
ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, তাহলে আমি তা করব অথবা তিনি অনুরূপ কিছু বলেছিলেন। এরপর উভয়ে উঠে দাঁড়ালেন। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ইমারাত বানাতে লাগলেন আর ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) তাঁকে পাথর এনে দিতে লাগলেন আর তাঁরা উভয়ে এ দু‘আ করছিলেন, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের এ কাজ কবুল করুন। আপনি তো সব কিছু শুনেন এবং জানেন। রাবী বলেন, এরি মধ্যে প্রাচীর উঁচু হয়ে গেল আর বৃদ্ধ ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এতটা উঠতে দুর্বল হয়ে পড়লেন। তখন তিনি (মাকামে ইবরাহীমের) পাথরের উপর দাঁড়ালেন। ইসমাঈল তাঁকে পাথর এগিয়ে দিতে লাগলেন আর উভয়ে এ দু‘আ পড়তে লাগলেন, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের এ কাজটুকু কবুল করুন। নিঃসন্দেহে আপনি সবকিছু শুনেন ও জানেন। (২ঃ ১২৭)
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ
3365 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ عَبْدُ المَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ نَافِعٍ، عَنْ كَثِيرِ بْنِ كَثِيرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: لَمَّا كَانَ بَيْنَ إِبْرَاهِيمَ وَبَيْنَ أَهْلِهِ مَا كَانَ، خَرَجَ بِإِسْمَاعِيلَ وَأُمِّ إِسْمَاعِيلَ، وَمَعَهُمْ شَنَّةٌ فِيهَا مَاءٌ، فَجَعَلَتْ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ تَشْرَبُ مِنَ الشَّنَّةِ، فَيَدِرُّ لَبَنُهَا عَلَى صَبِيِّهَا، حَتَّى قَدِمَ مَكَّةَ فَوَضَعَهَا تَحْتَ دَوْحَةٍ، ثُمَّ رَجَعَ إِبْرَاهِيمُ إِلَى أَهْلِهِ، فَاتَّبَعَتْهُ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ، حَتَّى لَمَّا بَلَغُوا كَدَاءً نَادَتْهُ مِنْ وَرَائِهِ: يَا إِبْرَاهِيمُ إِلَى مَنْ تَتْرُكُنَا؟ قَالَ: إِلَى اللَّهِ، قَالَتْ: رَضِيتُ بِاللَّهِ، قَالَ: فَرَجَعَتْ فَجَعَلَتْ تَشْرَبُ مِنَ الشَّنَّةِ وَيَدِرُّ لَبَنُهَا عَلَى صَبِيِّهَا، حَتَّى لَمَّا فَنِيَ المَاءُ، قَالَتْ: لَوْ ذَهَبْتُ فَنَظَرْتُ لَعَلِّي أُحِسُّ أَحَدًا، قَالَ فَذَهَبَتْ فَصَعِدَتِ الصَّفَا فَنَظَرَتْ، وَنَظَرَتْ هَلْ تُحِسُّ [ص:145] أَحَدًا، فَلَمْ تُحِسَّ أَحَدًا، فَلَمَّا بَلَغَتِ الوَادِيَ سَعَتْ وَأَتَتِ المَرْوَةَ، فَفَعَلَتْ ذَلِكَ أَشْوَاطًا، ثُمَّ قَالَتْ: لَوْ ذَهَبْتُ فَنَظَرْتُ مَا فَعَلَ، تَعْنِي الصَّبِيَّ، فَذَهَبَتْ فَنَظَرَتْ فَإِذَا هُوَ عَلَى حَالِهِ كَأَنَّهُ يَنْشَغُ لِلْمَوْتِ، فَلَمْ تُقِرَّهَا نَفْسُهَا، فَقَالَتْ: لَوْ ذَهَبْتُ فَنَظَرْتُ، لَعَلِّي أُحِسُّ أَحَدًا، فَذَهَبَتْ فَصَعِدَتِ الصَّفَا، فَنَظَرَتْ وَنَظَرَتْ فَلَمْ تُحِسَّ أَحَدًا، حَتَّى أَتَمَّتْ سَبْعًا، ثُمَّ قَالَتْ: لَوْ ذَهَبْتُ فَنَظَرْتُ مَا فَعَلَ، فَإِذَا هِيَ بِصَوْتٍ، فَقَالَتْ: أَغِثْ إِنْ كَانَ عِنْدَكَ خَيْرٌ، فَإِذَا جِبْرِيلُ، قَالَ: فَقَالَ بِعَقِبِهِ هَكَذَا، وَغَمَزَ عَقِبَهُ عَلَى الأَرْضِ، قَالَ: فَانْبَثَقَ المَاءُ، فَدَهَشَتْ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ، فَجَعَلَتْ تَحْفِزُ، قَالَ: فَقَالَ أَبُو القَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ تَرَكَتْهُ كَانَ المَاءُ ظَاهِرًا» . قَالَ: فَجَعَلَتْ تَشْرَبُ مِنَ المَاءِ وَيَدِرُّ لَبَنُهَا عَلَى صَبِيِّهَا، قَالَ: فَمَرَّ نَاسٌ مِنْ جُرْهُمَ بِبَطْنِ الوَادِي، فَإِذَا هُمْ بِطَيْرٍ، كَأَنَّهُمْ أَنْكَرُوا ذَاكَ، وَقَالُوا: مَا يَكُونُ الطَّيْرُ إِلَّا عَلَى مَاءٍ، فَبَعَثُوا رَسُولَهُمْ فَنَظَرَ فَإِذَا هُمْ بِالْمَاءِ، فَأَتَاهُمْ فَأَخْبَرَهُمْ، فَأَتَوْا إِلَيْهَا فَقَالُوا: يَا أُمَّ إِسْمَاعِيلَ، أَتَأْذَنِينَ لَنَا أَنْ نَكُونَ مَعَكِ، أَوْ نَسْكُنَ مَعَكِ، فَبَلَغَ ابْنُهَا فَنَكَحَ فِيهِمُ امْرَأَةً، قَالَ: ثُمَّ إِنَّهُ بَدَا لِإِبْرَاهِيمَ، فَقَالَ لِأَهْلِهِ: إِنِّي مُطَّلِعٌ تَرِكَتِي، قَالَ: فَجَاءَ فَسَلَّمَ، فَقَالَ: أَيْنَ إِسْمَاعِيلُ؟ فَقَالَتِ امْرَأَتُهُ: ذَهَبَ يَصِيدُ، قَالَ: قُولِي لَهُ إِذَا جَاءَ غَيِّرْ عَتَبَةَ بَابِكَ، فَلَمَّا جَاءَ أَخْبَرَتْهُ، قَالَ: أَنْتِ ذَاكِ، فَاذْهَبِي إِلَى أَهْلِكِ، قَالَ: ثُمَّ إِنَّهُ بَدَا لِإِبْرَاهِيمَ، فَقَالَ لِأَهْلِهِ: إِنِّي مُطَّلِعٌ تَرِكَتِي، قَالَ: فَجَاءَ، فَقَالَ: أَيْنَ إِسْمَاعِيلُ؟ فَقَالَتِ امْرَأَتُهُ: ذَهَبَ يَصِيدُ، فَقَالَتْ: أَلاَ تَنْزِلُ فَتَطْعَمَ وَتَشْرَبَ، فَقَالَ: وَمَا طَعَامُكُمْ وَمَا شَرَابُكُمْ؟ قَالَتْ: طَعَامُنَا اللَّحْمُ وَشَرَابُنَا المَاءُ، قَالَ: اللَّهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ فِي طَعَامِهِمْ وَشَرَابِهِمْ، قَالَ: فَقَالَ أَبُو القَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَرَكَةٌ بِدَعْوَةِ إِبْرَاهِيمَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِمَا وَسَلَّمَ» قَالَ: ثُمَّ إِنَّهُ بَدَا لِإِبْرَاهِيمَ، فَقَالَ لِأَهْلِهِ: إِنِّي مُطَّلِعٌ تَرِكَتِي، فَجَاءَ فَوَافَقَ إِسْمَاعِيلَ مِنْ وَرَاءِ زَمْزَمَ يُصْلِحُ نَبْلًا لَهُ، فَقَالَ: يَا إِسْمَاعِيلُ، إِنَّ رَبَّكَ أَمَرَنِي أَنْ أَبْنِيَ لَهُ بَيْتًا، قَالَ: أَطِعْ رَبَّكَ، قَالَ: إِنَّهُ قَدْ أَمَرَنِي أَنْ تُعِينَنِي عَلَيْهِ، قَالَ: إِذَنْ أَفْعَلَ، أَوْ كَمَا قَالَ: قَالَ فَقَامَا فَجَعَلَ إِبْرَاهِيمُ يَبْنِي، وَإِسْمَاعِيلُ يُنَاوِلُهُ الحِجَارَةَ وَيَقُولاَنِ: {رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ العَلِيمُ} [البقرة: 127] . قَالَ: حَتَّى ارْتَفَعَ البِنَاءُ، وَضَعُفَ الشَّيْخُ عَنْ نَقْلِ الحِجَارَةِ، فَقَامَ عَلَى حَجَرِ المَقَامِ، فَجَعَلَ يُنَاوِلُهُ الحِجَارَةَ وَيَقُولاَنِ: {رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ العَلِيمُ} [البقرة: 127]
হাদীস নং: ৩১২৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৬৬
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১২৭। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... আবু যর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পৃথিবীতে সর্বপ্রথম কোন মসজিদ তৈরী করা হয়েছে? তিনি বললেন, মসজিদে হারাম। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদে আকসা। আমি বললাম, উভয় মসজিদের (তৈরীর) মাঝে কত ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, চল্লিশ বছর। (তিনি আরো বললেন) এরপর তোমার যেখানেই নামাযের সময় হবে, সেখানেই নামায আদায় করে নিবে। কেননা এর মধ্যে ফযীলত নিহিত রয়েছে।
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ
3366 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ [ص:146] رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَيُّ مَسْجِدٍ وُضِعَ فِي الأَرْضِ أَوَّلَ؟ قَالَ: «المَسْجِدُ الحَرَامُ» قَالَ: قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ «المَسْجِدُ الأَقْصَى» قُلْتُ: كَمْ كَانَ بَيْنَهُمَا؟ قَالَ: «أَرْبَعُونَ سَنَةً، ثُمَّ أَيْنَمَا أَدْرَكَتْكَ الصَّلاَةُ بَعْدُ فَصَلِّهْ، فَإِنَّ الفَضْلَ فِيهِ»
হাদীস নং: ৩১২৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৬৭
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১২৮। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, উহুদ পাহাড় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর দৃষ্টিগোচর হল। তিনি বললেন, এ পাহাড় আমাদের ভালবাসে আর আমরাও তাকে ভালবাসি। হে আল্লাহ! ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) মক্কাকে হারাম ঘোষণা করেছেন আর আমি হারাম ঘোষণা করছি এ পাহাড়ের উভয় পার্শ্বের মধ্যবর্তী স্থানকে (মদীনাকে)। এ হাদীসটি আব্দুল্লাহ ইবনে যায়দ (রাযিঃ)-ও নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ
3367 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي عَمْرٍو، مَوْلَى المُطَّلِبِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، طَلَعَ لَهُ أُحُدٌ فَقَالَ: «هَذَا جَبَلٌ يُحِبُّنَا وَنُحِبُّهُ، اللَّهُمَّ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ حَرَّمَ مَكَّةَ، وَإِنِّي أُحَرِّمُ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا» وَرَوَاهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হাদীস নং: ৩১২৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৬৮
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১২৯। আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) .... নবী (ﷺ)- এর সহধর্মিণী আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (আয়েশা (রাযিঃ))- কে বলেছেন, তুমি কি জান? তোমার কওম যখন কা‘বা ঘর নির্মাণ করেছে, তখন তারা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর ভিত্তি থেকে তা ছোট করেছে। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর ভিত্তির উপর পুনঃনির্মাণ করবেন না? তিনি বললেন, যদি তোমার কওম কুফরী থেকে সদ্য আগত না হতো, (তাহলে আমি তা করে দিতাম।)
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) বললেন, যদি আয়েশা (রাযিঃ) এ হাদীসটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনে থাকেন, তবে আমি মনে করি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হাতীমে কা‘বার সংলগ্ন দু’টি কোণকে চুমু দেওয়া একমাত্র এ কারণে পরিহার করেছেন যে, কা‘বা ঘর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর ভিত্তির উপর পুরাপুরি নির্মাণ করা হয় নি। রাবী ইসমাঈল (রাহঃ) বলেন, ইবনে আবু বকর হলেন আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আবু বকর (রাযিঃ)।
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ
3368 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ ابْنَ أَبِي بَكْرٍ، أَخْبَرَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «أَلَمْ تَرَيْ أَنَّ قَوْمَكِ لَمَّا بَنَوْا الكَعْبَةَ اقْتَصَرُوا عَنْ قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيمَ» ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ تَرُدُّهَا عَلَى قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيمَ؟ فَقَالَ: «لَوْلاَ حِدْثَانُ قَوْمِكِ بِالكُفْرِ» ، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ: لَئِنْ كَانَتْ عَائِشَةُ سَمِعَتْ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَا أُرَى أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، تَرَكَ اسْتِلاَمَ الرُّكْنَيْنِ اللَّذَيْنِ يَلِيَانِ الحِجْرَ، إِلَّا أَنَّ البَيْتَ لَمْ يُتَمَّمْ عَلَى قَوَاعِدِ إِبْرَاهِيمَ " وَقَالَ إِسْمَاعِيلُ: عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ
হাদীস নং: ৩১৩০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৬৯
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১৩০। আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) .... আবু হুমাঈদ সাঈদী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, সাহাবাগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কিভাবে আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এভাবে পড়বে, হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ(ﷺ)- এর উপর, তাঁর স্ত্রীগণের উপর এবং তাঁর বংশধরদের উপর রহমত নাযিল করুন, যেরূপ আপনি রহমত নাযিল করেছেন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর বংশধরদের উপর। আর আপনি মুহাম্মাদ(ﷺ)- এর উপর, তার স্ত্রীগণের উপর এবং তার বংশধরদের উপর এমনিভাবে বরকত নাযিল করুন যেমনি আপনি বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয় আপনি অতি প্রশংসিত এবং অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী।
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ
3369 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، أَخْبَرَنِي أَبُو حُمَيْدٍ السَّاعِدِيُّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُمْ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " قُولُوا: اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ "
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৩১৩১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৭০
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১৩১। কায়স ইবনে হাফস ও মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... আব্দুর রহমান ইবনে আবু লায়লা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কা‘ব ইবনে উজরা (রাযিঃ) আমার সাথে দেখা করে বললেন, আমি কি আপনাকে এমন একটি হাদীয়া দেব না, যা আমি নবী (ﷺ) থেকে শুনেছি? আমি বললাম হ্যাঁ, আপনি আমাকে সে হাদীয়াটি দিন। তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বায়তের উপর কিভাবে দরূদ পাঠ করতে হবে? কেননা, আল্লাহ তো (কেবল) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব।
তিনি বললেন, তোমরা এভাবে বল, “হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (ﷺ)- এর উপর এবং মুহাম্মাদ (ﷺ)- এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদ (ﷺ)- এর বংশধরদের উপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করেছেন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এবং ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী।
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ
3370 - حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ حَفْصٍ، وَمُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالاَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا أَبُو فَرْوَةَ مُسْلِمُ بْنُ سَالِمٍ الهَمْدَانِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عِيسَى، سَمِعَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي لَيْلَى، قَالَ: لَقِيَنِي كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ، فَقَالَ: أَلاَ أُهْدِي لَكَ هَدِيَّةً سَمِعْتُهَا مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقُلْتُ: بَلَى، فَأَهْدِهَا لِي، فَقَالَ: سَأَلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَيْفَ الصَّلاَةُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ البَيْتِ، فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ عَلَّمَنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ عَلَيْكُمْ؟ قَالَ: " قُولُوا: اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ [ص:147] عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ "
হাদীস নং: ৩১৩২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৭১
২০০৯. يَزِفُّونَ অর্থ দ্রুত চলা।
৩১৩২। উসমান ইবনে আবী শাঈবা (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) হাসান এবং হুসাইন (রাযিঃ)- এর জন্য নিম্নোক্ত দু‘আ পড়ে পানাহ চাইতেন আর বলতেন, তোমাদের পিতা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ইসমাঈল ও ইসহাক (আলাইহিস সালাম)- এর জন্য দু‘আ পড়ে পানাহ চাইতেন। (দুআটি হল,) আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট হতে পানাহ চাচ্ছি।
باب {يَزِفُّونَ} النَّسَلاَنُ فِي الْمَشْىِ
3371 - حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنِ المِنْهَالِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَوِّذُ الحَسَنَ وَالحُسَيْنَ، وَيَقُولُ: " إِنَّ أَبَاكُمَا كَانَ يُعَوِّذُ بِهَا إِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ: أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ "