আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৬- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ২৮৪০
আন্তর্জাতিক নং: ৩০৫৫ - ৩০৫৭
১৯১৯. কিভাবে শিশু-কিশোরদের নিকট ইসলাম পেশ করা হবে?
২৮৪০। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর (রাযিঃ) কয়েকজন সাহাবীসহ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সঙ্গে ইবনে সাইয়াদের কাছে যান। তাঁরা তাকে বনী মাগালার টিলার উপর ছেলে-পেলেদের সঙ্গে খেলা-ধুলা করতে দেখতে পান। আর এ সময় ইবনে সাইয়াদ বালিগ হওয়ার নিকটবর্তী হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর (আগমন সম্পর্কে) সে কোন কিছু টের না পেতেই নবী (ﷺ) তার পিঠে হাত দিয়ে মৃদু আঘাত করলেন। এরপর নবী (ﷺ) বললেন, (হে ইবনে সাইয়াদ!) তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আমি আল্লাহর প্রেরিত রাসূল? তখন ইবনে সাইয়াদ তাঁর প্রতি তাকিয়ে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি উম্মি লোকদের রাসূল। ইবনে সাইয়াদ নবী (ﷺ)- কে বলল, আপনি কি এ সাক্ষ্য দেন যে, আমি আল্লাহর রাসূল? নবী (ﷺ) তাকে বললেন, আমি আল্লাহ তাআলা ও তাঁর সকল রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি।
নবী (ﷺ) তাকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কি দেখ? ইবনে সাইয়াদ বলল, আমার নিকট সত্য সংবাদ ও মিথ্যা সংবাদ সবই আসে। নবী (ﷺ) বললেন, প্র্রকৃত অবস্থা তোমার নিকট সত্য-মিথ্যা মিশ্রিত হয়ে আছে। নবী (ﷺ) আরো বললেন, আচ্ছা! আমি আমার অন্তরে তোমার জন্য কিছু কথা গোপন রেখেছি (বলতো তা’ কি?) ইবনে সাইয়াদ বলল, তা’ হচ্ছে ধুয়া। নবী (ﷺ) বললেন, আরে থাম, তুমি তোমার সীমার বাইরে যেতে পার না। উমর (রাযিঃ) বলে উঠলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই।
নবী (ﷺ) বললেন, যদি সে প্রকৃত দাজ্জাল হয়, তবে তুমি তাকে কাবু করতে পারবে না আর যদি সে দাজ্জাল না হয়, তবে তাকে হত্যা করে তোমার কোন লাভ নেই। ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও উবাই ইবনে কা‘ব (রাযিঃ) উভয়ে সে খেজুর বৃক্ষের নিকট গমন করেন, যেখানে ইবনে সাইয়াদ অবস্থান করছিল। যখন নবী (ﷺ) সেখানে পৌঁছলেন, তখন তিনি খেজুর ডালের আড়ালে চলতে লাগলেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল যে, ইবনে সাইয়াদের অজ্ঞাতসারে তিনি তার কিছু কথা শুনে নিবেন। ইবনে সাইয়াদ নিজ বিছানা পেতে চাঁদর মুড়ি দিয়ে শুয়েছিল এবং কি কি যেন গুণ গুণ করছিল। তার মা নবী (ﷺ)- কে দেখে ফেলেছিল যে, তিনি খেজুর বৃক্ষের আড়ালে আসছেন।
তখন সে ইবনে সাইয়াদকে বলে উঠল, হে সাফ! আর এ ছিল তার নাম। সে দ্রুত উঠে দাঁড়াল। তখন নবী (ﷺ) বললেন, মহিলাটি যদি তাকে নিজ অবস্থায় ছেড়ে দিত, তবে তার ব্যাপারটা প্রকাশ পেয়ে যেত। আর সালিম (রাহঃ) বলেন, ইবনে উমর (রাযিঃ) বর্ণনা করেছেন যে, এরপর নবী (ﷺ) লোকদের মাঝে দাঁড়ালেন। প্রথমে তিনি আল্লাহ তাআলার যথাযথ প্রশংসা করলেন। তারপর দাজ্জাল সম্পর্কে উল্লেখ করলেন। আর বললেন, আমি তোমাদের দাজ্জাল থেকে সতর্ক করে দিচ্ছি। প্রত্যেক নবীই তার সম্প্রদায়কে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। নূহ (আলাইহিস সালাম) তাঁর সম্প্রদায়কেও দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। কিন্তু আমি তোমাদেরকে তার সম্পর্কে এমন একটি কথা জানিয়ে দিব, যা কোন নবী তাঁর সম্প্রদায়কে জানান নি। তোমরা যেন রেখ যে, সে হবে কানা আর অবশ্যই আল্লাহ কানা নন।
باب كَيْفَ يُعْرَضُ الإِسْلاَمُ عَلَى الصَّبِيِّ
3055 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ: أَنَّ عُمَرَ انْطَلَقَ فِي رَهْطٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قِبَلَ ابْنِ صَيَّادٍ، حَتَّى وَجَدُوهُ يَلْعَبُ مَعَ الغِلْمَانِ، عِنْدَ أُطُمِ بَنِي مَغَالَةَ، وَقَدْ قَارَبَ يَوْمَئِذٍ ابْنُ صَيَّادٍ يَحْتَلِمُ، فَلَمْ يَشْعُرْ بِشَيْءٍ حَتَّى ضَرَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ظَهْرَهُ بِيَدِهِ، ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَتَشْهَدُ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ؟» ، فَنَظَرَ إِلَيْهِ ابْنُ صَيَّادٍ، فَقَالَ: أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ الأُمِّيِّينَ، فَقَالَ ابْنُ صَيَّادٍ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَتَشْهَدُ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ؟ قَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «آمَنْتُ بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ» ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَاذَا تَرَى؟» قَالَ ابْنُ صَيَّادٍ: يَأْتِينِي صَادِقٌ وَكَاذِبٌ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خُلِطَ عَلَيْكَ الأَمْرُ؟» قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي قَدْ خَبَأْتُ لَكَ خَبِيئًا» ، قَالَ ابْنُ صَيَّادٍ: هُوَ الدُّخُّ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اخْسَأْ، فَلَنْ [ص:71] تَعْدُوَ قَدْرَكَ» ، قَالَ عُمَرُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، ائْذَنْ لِي فِيهِ أَضْرِبْ عُنُقَهُ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ يَكُنْهُ، فَلَنْ تُسَلَّطَ عَلَيْهِ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْهُ، فَلاَ خَيْرَ لَكَ فِي قَتْلِهِ» ،

3056 - قَالَ ابْنُ عُمَرَ انْطَلَقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ يَأْتِيَانِ النَّخْلَ الَّذِي فِيهِ ابْنُ صَيَّادٍ، حَتَّى إِذَا دَخَلَ النَّخْلَ طَفِقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَّقِي بِجُذُوعِ النَّخْلِ، وَهُوَ يَخْتِلُ ابْنَ صَيَّادٍ أَنْ يَسْمَعَ مِنْ ابْنِ صَيَّادٍ شَيْئًا قَبْلَ أَنْ يَرَاهُ، وَابْنُ صَيَّادٍ مُضْطَجِعٌ عَلَى فِرَاشِهِ فِي قَطِيفَةٍ لَهُ فِيهَا رَمْزَةٌ، فَرَأَتْ أُمُّ ابْنِ صَيَّادٍ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَتَّقِي بِجُذُوعِ النَّخْلِ، فَقَالَتْ لِابْنِ صَيَّادٍ: أَيْ صَافِ وَهُوَ اسْمُهُ، فَثَارَ ابْنُ صَيَّادٍ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ تَرَكَتْهُ بَيَّنَ»،

3057 - وَقَالَ سَالِمٌ، قَالَ ابْنُ عُمَرَ: ثُمَّ قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي النَّاسِ، فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ ذَكَرَ الدَّجَّالَ فَقَالَ: «إِنِّي أُنْذِرُكُمُوهُ وَمَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا قَدْ أَنْذَرَهُ قَوْمَهُ، لَقَدْ أَنْذَرَهُ نُوحٌ قَوْمَهُ، وَلَكِنْ سَأَقُولُ لَكُمْ فِيهِ قَوْلًا لَمْ يَقُلْهُ نَبِيٌّ لِقَوْمِهِ، تَعْلَمُونَ أَنَّهُ أَعْوَرُ، وَأَنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِأَعْوَرَ»