আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
الجامع الصحيح للبخاري
৪৫- অছিয়াত সম্পর্কিত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১ টি
হাদীস নং: ২৫৯০
আন্তর্জাতিক নং: ২৭৮১
১৭৪০. আল্লাহ তাআলার বাণীঃ হে মুমিনগণ! তেমাদের কারো যখন মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয় তখন অসীয়াত করার সময় তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে অথবা অন্যদের মধ্য থেকে দু’জনকে সাক্ষী নিযুক্ত করবে। আল্লাহ তাআলা ফাসিকদের হিদায়াত করেন না। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাহম গোত্রের এক ব্যক্তি তামীম দারী ও আদী ইবনে বাদ্দা (রাহঃ) এর সঙ্গে সফরে বের হন এবং সাহম গোত্রের লোকটি এমন এক জায়গায় মারা যান, যেখানে কোন মুসলিম ছিল না। তারা দু’জন তার পরিত্যক্ত জিনিস পত্র নিয়ে ফিরে আসলে মৃতের আত্মীয়-স্বজন তার মধ্যে স্বর্ণখচিত একটি রূপার পেয়ালা পেলেন না। এ সম্পর্কে তাদের দু’জনকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কসম করালেন। তারপর তারা পেয়ালাটি মক্কায় পেল। (যাদের কাছে পাওয়া গেল) তারা বলল, আমরা এটি তামীম ও আদী (রাহঃ) এর নিকট থেকে ক্রয় করেছি। এরপর মৃতের আত্মীয়দের মধ্য থেকে দু’ব্যক্তি দাঁড়িয়ে কসম করে বলে, এ দু’জনের সাক্ষ্য থেকে আমাদের সাক্ষ্য অধিক গ্রহণীয়। নিশ্চয়ই এ পেয়ালাটি তাদের আত্মীয়ের। বর্ণনাকারী বলেন, তাদের সম্বন্ধে এই আয়াতটি বর্ণিত হয়ঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ
পরিচ্ছেদঃ ১৭৪১. অসীয়াতকারী কৃর্তক মৃতের ওয়ারিসদের অনুপস্থিতিতে মৃতের ঋণ পরিশোধ করা
পরিচ্ছেদঃ ১৭৪১. অসীয়াতকারী কৃর্তক মৃতের ওয়ারিসদের অনুপস্থিতিতে মৃতের ঋণ পরিশোধ করা
২৫৯০। মুহাম্মাদ ইবনে সাবিক (রাহঃ) কিংবা ফযল ইবনে ইয়াকুব (রাহঃ) .... মুহাম্মাদ ইবনে সাবিক (রাহঃ) এর মাধ্যমে .... জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার পিতাকে উহুদের যুদ্ধে শহীদ করা হয়। তিনি ছ’টি কন্যা সন্তান রেখে যান আর তাঁর উপর ঋণও রেখে যান। খেজুর কাটার সময় হলে আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এসে বললাম, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি জানেন যে, আমার পিতাকে উহুদের যুদ্ধে শহীদ করা হয়েছে আর তিনি অনেক ঋণ রেখে গেছেন। আমার মনে চায় যে, পাওনাদাররা আপনাকে দেখে নিক। (হয়ত এতে তারা কিছু ঋণ ছেড়ে দিতে পারে) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন তুমি যাও। (খেজুর কেটে) এক এক রকম খেজুর এক এক স্থানে জমা কর। আমি তা-ই করলাম। এরপর তাঁকে অনুরোধ করে নিয়ে এলাম। লোকেরা (পাওনাদাররা) যখন নবীজীকে দেখল, তখন তারা আমার কাছে জোর তাগাদা কারতে লাগল। তিনি তাদের এরূপ করতে দেখে খেজুরের বড় স্তুপটির চারদিকে তিনবার ঘুরলেন, এরপর তার উপর বসে পড়লেন।
তারপর বললেন, তোমার পাওনাদারদের ডাক। তিনি মেপে মেপে তাদের পাওনা আদায় করতে লাগলেন এবং শেষ পর্যন্ত আল্লাহ আমার পিতার সমস্ত ঋণ আদায় করে দিলেন। আর আল্লাহর কসম, আমি এতেই সন্তুষ্ট যে, আমার পিতার ঋণ আল্লাহ পরিশোধ করে দেন এবং আমি আমার বোনদের কাছে একটি খেজুরও নিয়ে না ফিরি। কিন্তু আল্লাহর কসম! সমস্ত স্তুুপই যেমন ছিল তেমন রয়ে গেল। আমি সেই স্তুপটির দিকে বিশেষ ভাবে তাকিয়ে ছিলাম, যার উপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বসে ছিলেন। মনে হল যে, তা থেকে একটি খেজুরও কমেনি।
আবু আব্দুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রাহঃ) বলেন,أُغْرُوا بِي এর অর্থ হলهيجُوا بِي অর্থাৎ আমার কাছে জোর তাগাদা করতে লাগল। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘আমি তাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ জাগরুক রেখেছি। ’’ (৫: ১৪)
তারপর বললেন, তোমার পাওনাদারদের ডাক। তিনি মেপে মেপে তাদের পাওনা আদায় করতে লাগলেন এবং শেষ পর্যন্ত আল্লাহ আমার পিতার সমস্ত ঋণ আদায় করে দিলেন। আর আল্লাহর কসম, আমি এতেই সন্তুষ্ট যে, আমার পিতার ঋণ আল্লাহ পরিশোধ করে দেন এবং আমি আমার বোনদের কাছে একটি খেজুরও নিয়ে না ফিরি। কিন্তু আল্লাহর কসম! সমস্ত স্তুুপই যেমন ছিল তেমন রয়ে গেল। আমি সেই স্তুপটির দিকে বিশেষ ভাবে তাকিয়ে ছিলাম, যার উপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বসে ছিলেন। মনে হল যে, তা থেকে একটি খেজুরও কমেনি।
আবু আব্দুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রাহঃ) বলেন,أُغْرُوا بِي এর অর্থ হলهيجُوا بِي অর্থাৎ আমার কাছে জোর তাগাদা করতে লাগল। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘আমি তাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ জাগরুক রেখেছি। ’’ (৫: ১৪)
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ، إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ المَوْتُ حِينَ الوَصِيَّةِ اثْنَانِ ذَوَا عَدْلٍ مِنْكُمْ، أَوْ آخَرَانِ مِنْ غَيْرِكُمْ إِنْ أَنْتُمْ ضَرَبْتُمْ فِي الأَرْضِ، فَأَصَابَتْكُمْ مُصِيبَةُ المَوْتِ تَحْبِسُونَهُمَا مِنْ بَعْدِ الصَّلاَةِ، فَيُقْسِمَانِ بِاللَّهِ إِنِ ارْتَبْتُمْ لاَ نَشْتَرِي بِهِ ثَمَنًا، وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَى، وَلاَ نَكْتُمُ شَهَادَةَ اللَّهِ إِنَّا إِذًا لَمِنَ الآثِمِينَ، فَإِنْ عُثِرَ عَلَى أَنَّهُمَا اسْتَحَقَّا إِثْمًا، فَآخَرَانِ يَقُومَانِ مَقَامَهُمَا مِنَ الَّذِينَ اسْتُحِقَّ عَلَيْهِمُ الأَوْلَيَانِ، فَيُقْسِمَانِ بِاللَّهِ لَشَهَادَتُنَا أَحَقُّ مِنْ شَهَادَتِهِمَا، وَمَا اعْتَدَيْنَا إِنَّا إِذًا لَمِنَ الظَّالِمِينَ، ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يَأْتُوا بِالشَّهَادَةِ عَلَى وَجْهِهَا، أَوْ يَخَافُوا أَنْ تُرَدَّ أَيْمَانٌ بَعْدَ أَيْمَانِهِمْ، وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاسْمَعُوا وَاللَّهُ لاَ يَهْدِي القَوْمَ الفَاسِقِينَ) {الأَوْلَيَانِ} [المائدة: 107 ] وَاحِدُهُمَا أَوْلَى وَمِنْهُ أَوْلَى بِهِ، عُثِرَ: أُظْهِرَ {أَعْثَرْنَا} [الكهف: 21] أَظْهَرْنَا
وَقَالَ لِي عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي القَاسِمِ، عَنْ عَبْدِ المَلِكِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: خَرَجَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سَهْمٍ مَعَ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، وَعَدِيِّ بْنِ بَدَّاءٍ، فَمَاتَ السَّهْمِيُّ بِأَرْضٍ لَيْسَ بِهَا مُسْلِمٌ، فَلَمَّا قَدِمَا بِتَرِكَتِهِ، فَقَدُوا جَامًا مِنْ فِضَّةٍ مُخَوَّصًا مِنْ ذَهَبٍ، «فَأَحْلَفَهُمَا رَسُولُ اللَّهِ صلّى الله عليه [ص:14] وسلم»، ثُمَّ وُجِدَ الجَامُ بِمَكَّةَ، فَقَالُوا: ابْتَعْنَاهُ مِنْ تَمِيمٍ وَعَدِيٍّ، فَقَامَ رَجُلاَنِ مِنْ أَوْلِيَائِهِ، فَحَلَفَا لَشَهَادَتُنَا أَحَقُّ مِنْ شَهَادَتِهِمَا، وَإِنَّ الجَامَ لِصَاحِبِهِمْ، قَالَ: وَفِيهِمْ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ المَوْتُ} [المائدة: 106]
بَابُ قَضَاءِ الوَصِيِّ دُيُونَ المَيِّتِ بِغَيْرِ مَحْضَرٍ مِنَ الوَرَثَةِ
وَقَالَ لِي عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي القَاسِمِ، عَنْ عَبْدِ المَلِكِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: خَرَجَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سَهْمٍ مَعَ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، وَعَدِيِّ بْنِ بَدَّاءٍ، فَمَاتَ السَّهْمِيُّ بِأَرْضٍ لَيْسَ بِهَا مُسْلِمٌ، فَلَمَّا قَدِمَا بِتَرِكَتِهِ، فَقَدُوا جَامًا مِنْ فِضَّةٍ مُخَوَّصًا مِنْ ذَهَبٍ، «فَأَحْلَفَهُمَا رَسُولُ اللَّهِ صلّى الله عليه [ص:14] وسلم»، ثُمَّ وُجِدَ الجَامُ بِمَكَّةَ، فَقَالُوا: ابْتَعْنَاهُ مِنْ تَمِيمٍ وَعَدِيٍّ، فَقَامَ رَجُلاَنِ مِنْ أَوْلِيَائِهِ، فَحَلَفَا لَشَهَادَتُنَا أَحَقُّ مِنْ شَهَادَتِهِمَا، وَإِنَّ الجَامَ لِصَاحِبِهِمْ، قَالَ: وَفِيهِمْ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ المَوْتُ} [المائدة: 106]
بَابُ قَضَاءِ الوَصِيِّ دُيُونَ المَيِّتِ بِغَيْرِ مَحْضَرٍ مِنَ الوَرَثَةِ
2781 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَابِقٍ، أَوِ الفَضْلُ بْنُ يَعْقُوبَ، عَنْهُ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ فِرَاسٍ، قَالَ: قَالَ الشَّعْبِيُّ: حَدَّثَنِي جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيُّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ أَبَاهُ اسْتُشْهِدَ يَوْمَ أُحُدٍ وَتَرَكَ سِتَّ بَنَاتٍ وَتَرَكَ عَلَيْهِ دَيْنًا، فَلَمَّا حَضَرَ جِدَادُ النَّخْلِ أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ عَلِمْتَ أَنَّ وَالِدِي اسْتُشْهِدَ يَوْمَ أُحُدٍ، وَتَرَكَ عَلَيْهِ دَيْنًا كَثِيرًا، وَإِنِّي أُحِبُّ أَنْ يَرَاكَ الغُرَمَاءُ، قَالَ: «اذْهَبْ فَبَيْدِرْ كُلَّ تَمْرٍ عَلَى نَاحِيَتِهِ» ، فَفَعَلْتُ ثُمَّ دَعَوْتُهُ، فَلَمَّا نَظَرُوا إِلَيْهِ أُغْرُوا بِي تِلْكَ السَّاعَةَ، فَلَمَّا رَأَى مَا يَصْنَعُونَ أَطَافَ حَوْلَ أَعْظَمِهَا بَيْدَرًا ثَلاَثَ مَرَّاتٍ، ثُمَّ جَلَسَ عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «ادْعُ أَصْحَابَكَ» ، فَمَا زَالَ يَكِيلُ لَهُمْ حَتَّى أَدَّى اللَّهُ أَمَانَةَ وَالِدِي، وَأَنَا وَاللَّهِ رَاضٍ أَنْ يُؤَدِّيَ اللَّهُ أَمَانَةَ وَالِدِي، وَلاَ أَرْجِعَ إِلَى أَخَوَاتِي بِتَمْرَةٍ، فَسَلِمَ وَاللَّهِ البَيَادِرُ كُلُّهَا حَتَّى أَنِّي أَنْظُرُ إِلَى البَيْدَرِ الَّذِي عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَأَنَّهُ لَمْ يَنْقُصْ تَمْرَةً وَاحِدَةً، قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: " أُغْرُوا بِي: يَعْنِي هِيجُوا بِي، {فَأَغْرَيْنَا بَيْنَهُمُ العَدَاوَةَ وَالبَغْضَاءَ} [المائدة: 14] "

তাহকীক: