আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৩২৫১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫০০
২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫১। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) .... মুহাম্মাদ ইবনে জুবায়ের ইবনে মুত‘ঈম (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মু‘আবিয়া (রাযিঃ)- এর নিকট কুরাইশ প্রতিনিধিদের সহিত তার উপস্থিতিতে সংবাদ পৌছলো যে, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, অচিরেই কাহতান বংশীয় একজন বাদশাহর আবির্ভাব ঘটবে। ইহা শুনে মু‘আবীয়া (রাযিঃ) ক্রোধান্বিত হয়ে খুতবা দেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য হামদ ও সানার পর তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি, তোমাদের মধ্য হতে কিছু সংখ্যক লোক এমন সব কথাবার্তা বলতে শুরু করছে যা আল্লাহর কিতাবে নেই এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকেও বর্ণিত হয়নি। এরাই মূর্খ, এদের থেকে সাবধান থাক এবং এরূপ কাল্পনিক ধারণা হতে সতর্ক থাক যা- এর পোষণকারীকে বিপথগামী করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে আমি বলতে শুনেছি যে, যতদিন তারা (কুরাইশ) দ্বীন কায়েমে নিয়োজিত থাকবে ততদিন খিলাফত ও শাসন ক্ষমতা কুরাইশদের হাতেই থাকবে। এ বিষয়ে যে-ই তাদের সহিত শত্রুতা করবে আল্লাহ তাকে অধঃমুখে নিক্ষেপ করবেন (অর্থাৎ লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবেন)।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
3500 - حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: كَانَ مُحَمَّدُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ يُحَدِّثُ أَنَّهُ بَلَغَ مُعَاوِيَةَ وَهُوَ عِنْدَهُ فِي وَفْدٍ مِنْ قُرَيْشٍ: أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ العَاصِ يُحَدِّثُ أَنَّهُ سَيَكُونُ مَلِكٌ مِنْ قَحْطَانَ، فَغَضِبَ مُعَاوِيَةُ، فَقَامَ فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ رِجَالًا مِنْكُمْ يَتَحَدَّثُونَ أَحَادِيثَ لَيْسَتْ فِي كِتَابِ اللَّهِ، وَلاَ تُؤْثَرُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأُولَئِكَ جُهَّالُكُمْ، فَإِيَّاكُمْ وَالأَمَانِيَّ الَّتِي تُضِلُّ أَهْلَهَا، فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ «إِنَّ هَذَا الأَمْرَ فِي قُرَيْشٍ لاَ يُعَادِيهِمْ أَحَدٌ، إِلَّا كَبَّهُ اللَّهُ عَلَى وَجْهِهِ، مَا أَقَامُوا الدِّينَ»
হাদীস নং: ৩২৫২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫০১
২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫২। আবুল ওয়ালীদ (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, এ বিষয় (খিলাফত ও শাসন ক্ষমতা) সর্বদাই কুরাইশদের হাতে ন্যস্ত থাকবে, যতদিন তাদের দু’জন লোকও বেঁচে থাকবে।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
3501 - حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبِي، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لاَ يَزَالُ هَذَا الأَمْرُ فِي قُرَيْشٍ مَا بَقِيَ مِنْهُمُ اثْنَانِ»
হাদীস নং: ৩২৫৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫০৪
২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫৩। আবু নু‘য়াঈম ও ইয়া‘কুব ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, কুরাইশ, আনসার, জুহায়না, মুযায়না, আসলাম, আশজা’ ও গিফার গোত্রগুলো আমার সাহায্যকারী। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ব্যতীত তাঁদের সাহায্যকারী আর কেউ নেই।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
3504 - حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَعْدٍ، قَالَ: يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ هُرْمُزَ الأَعْرَجُ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ [ص:180]، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قُرَيْشٌ، وَالأَنْصَارُ، وَجُهَيْنَةُ، وَمُزَيْنَةُ، وَأَسْلَمُ، وَأَشْجَعُ، وَغِفَارُ مَوَالِيَّ، لَيْسَ لَهُمْ مَوْلًى دُونَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ»
হাদীস নং: ৩২৫৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫০২ - ৩৫০৩
২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫৪। ইয়াহয়া ইবনে বুকায়র (রাহঃ) .... জুবাইর ইবনে মুত‘ঈম (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং উসমান ইবনে আফফান (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর নিকটে হাজির হলাম। উসমান (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি মুত্তালিবের সন্তানগণকে দান করলেন এবং আমাদেরকে বাদ দিলেন। অথচ তারা ও আমরা আপনার বংশগতভাবে সমপর্যায়ের। নবী (ﷺ) বললেন, বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিব এক ও অভিন্ন।
লাঈস .... উরওয়া ইবনে যুবাইর (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রাযিঃ) বনু যোহরার কতিপয় লোকের সাথে আয়েশা (রাযিঃ)- এর খেদমতে হাজির হলেন। আয়েশা (রাযিঃ) তাদের প্রতি অত্যন্ত নম্র ও দয়ার্দ্র ছিলেন। কেননা, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাথে তাঁদের আত্মীয়তা ছিল।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، قَالَ مَشَيْتُ أَنَا وَعُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ،، فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَعْطَيْتَ بَنِي الْمُطَّلِبِ وَتَرَكْتَنَا، وَإِنَّمَا نَحْنُ وَهُمْ مِنْكَ بِمَنْزِلَةٍ وَاحِدَةٍ. فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّمَا بَنُو هَاشِمٍ وَبَنُو الْمُطَّلِبِ شَىْءٌ وَاحِدٌ ".
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي أَبُو الأَسْوَدِ، مُحَمَّدٌ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، قَالَ ذَهَبَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ مَعَ أُنَاسٍ مِنْ بَنِي زُهْرَةَ إِلَى عَائِشَةَ، وَكَانَتْ أَرَقَّ شَىْءٍ لِقَرَابَتِهِمْ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم.
হাদীস নং: ৩২৫৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫০৫
২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫৫। আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) .... উরওয়া ইবনে যুবাইর (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) নবী (ﷺ) ও আবু বকর (রাযিঃ)- এর পর আয়েশা (রাযিঃ)- এর নিকট সকল লোকদের মধ্যে সর্বাধিক প্রিয়পাত্র ছিলেন এবং তিনি সকল লোকদের মধ্যে আয়েশা (রাযিঃ)-এর সবচেয়ে বেশী সদাচারী ছিলেন। আয়েশা (রাযিঃ)- এর নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক স্বরূপ যা কিছু আসত তা জমা না রেখে সাদ্‌কা করে দিতেন। এতে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) বললেন, অধিক দান খয়রাত করা থেকে তাকে বারণ করা উচিত। তখন আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, আমাকে দান করা থেকে বারণ করা হবে? আমি যদি তার সাথে কথা বলি, তাহলে আমাকে কাফফারা দিতে হবে এবং আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) তাঁর নিকট কুরাইশের কতিপয় লোক, বিশেষ করে নবী (ﷺ)- এর মাতৃবংশের কিছু লোক দ্বারা সুপারিশ করালেন। তবুও তিনি তাঁর সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকলেন।
নবী (ﷺ)- এর মাতৃবংশ বনী যোহরার কতিপয় বিশিষ্ট লোক যাদের মধ্যে আব্দুর রহমান ইবনে আসওয়াদ এবং মিসওয়ার ইবনে মাখরামা (রাযিঃ) ছিলেন তারা বললেন, আমরা যখন আয়েশা (রাযিঃ)-এর গৃহে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করব তখন তুমি পর্দার ভিতরে ঢুকে পড়বে। তিনি তাই করলেন। পরে ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) কাফফারা আদায়ের জন্য তার কাছে দশটি ক্রীতদাস পাঠিয়ে দিলেন। আয়েশা (রাযিঃ) তাদের সকলকে আযাদ করে দিলেন। এরপর তিনি বরাবর আযাদ করতে থাকলেন। এমনকি তার সংখ্যা চল্লিশে পৌছে। আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, আমি যখন কোন কাজ করার শপথ করি, তখন আমার সংকল্প থাকে যে, আমি যেন সে কাজটা করে দায়িত্ব মুক্ত হয়ে যাই এবং তিনি আরো বলেন, আমি যখন কোন কার্য সম্পাদনের শপথ করি উহা যথাযথ পূরণের ইচ্ছা রাখি।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
3505 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو الأَسْوَدِ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، قَالَ: كَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ أَحَبَّ البَشَرِ إِلَى عَائِشَةَ بَعْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِي بَكْرٍ، وَكَانَ أَبَرَّ النَّاسِ بِهَا، وَكَانَتْ لاَ تُمْسِكُ شَيْئًا مِمَّا جَاءَهَا مِنْ رِزْقِ اللَّهِ إِلَّا تَصَدَّقَتْ، فَقَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ: يَنْبَغِي أَنْ يُؤْخَذَ عَلَى يَدَيْهَا، فَقَالَتْ: «أَيُؤْخَذُ عَلَى يَدَيَّ، عَلَيَّ نَذْرٌ إِنْ كَلَّمْتُهُ» ، فَاسْتَشْفَعَ إِلَيْهَا بِرِجَالٍ مِنْ قُرَيْشٍ، وَبِأَخْوَالِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَاصَّةً فَامْتَنَعَتْ، فَقَالَ لَهُ الزُّهْرِيُّونَ أَخْوَالُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مِنْهُمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الأَسْوَدِ بْنِ عَبْدِ يَغُوثَ، وَالمِسْوَرُ بْنُ مَخْرَمَةَ: إِذَا اسْتَأْذَنَّا فَاقْتَحِمُ الحِجَابَ، فَفَعَلَ فَأَرْسَلَ إِلَيْهَا بِعَشْرِ رِقَابٍ فَأَعْتَقَتْهُمْ، ثُمَّ لَمْ تَزَلْ تُعْتِقُهُمْ حَتَّى بَلَغَتْ أَرْبَعِينَ، فَقَالَتْ: «وَدِدْتُ أَنِّي جَعَلْتُ حِينَ حَلَفْتُ عَمَلًا أَعْمَلُهُ فَأَفْرُغُ مِنْهُ»