আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

২১- হজ্জ্বের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ১৫৪১
আন্তর্জাতিক নং: ১৬৪৩
১০৩৯. সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সা’য়ী করা ওয়াজিব এবং একে আল্লাহর নিদর্শন বানানো হয়েছে
১৫৪১। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) ......... উরওয়া (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাযিঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, মহান আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? (অনুবাদ) সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। কাজেই যে কেউ কাবাঘরে হজ্জ বা উমরা সম্পন্ন করে, এ দু’টির মাঝে যাতায়াত করলে তাঁর কোন দোষ নেই। (২ঃ ১৫৮)
(আমার ধারণা যে,) সাফা-মারওয়ার মাঝে কেউ সা’ঈ না করলে তাঁর কোন দোষ নেই। তখন তিনি [আয়িশা (রাযিঃ)] বললেন, হে ভাতিজা! তুমি যা বললে, তা ঠিক নয়। কেননা, যা তুমি তাফসীর করলে, যদি আয়াতের মর্ম তাই হতো, তাহলে আয়াতের শব্দবিন্যাস এভাবে হতো لاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ لاَ يَتَطَوَّفَ بِهِمَا দুটোর মাঝে সা’ঈ না করায় কোন দোষ নেই!
কিন্তু আয়াতটি আনসারদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মুশাল্লাল নামক স্থানে স্থাপিত মানাত নামের মূর্তির পূজা করত, তার নামেই তাঁরা ইহরাম বাঁধত। সে মূর্তির নামে যারা ইহরাম বাঁধত তাঁরা সাফা-মারওয়া সা’ঈ করাকে দোষ মনে করত। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পূর্বে আমরা সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করাকে দূষণীয় মনে করতাম (এখন কি করবো?) এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ পাক (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ;) অবতীর্ণ করেন।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, (সাফা ও মারওয়া) উভয় পাহাড়ের মাঝে সা’ঈ করা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিধান দিয়েছেন। কাজেই কারো পক্ষে এ দু’য়ের সা’ঈ পরিত্যাগ করা ঠিক নয়।
(রাবী বলেন) এ বছর আবু বকর ইবনে আব্দুর রহমান (রাযিঃ) কে ঘটনাটি জানালাম। তখন তিনি বললেন, আমি তো এ কথা শুনিনি, তবে আয়িশা (রাযিঃ) ব্যতীত বহু আলিমকে উল্লেখ করতে শুনেছি যে, মানাতের নামে যারা ইহরাম বাঁধত তাঁরা সকলেই সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করত, যখন আল্লাহ কুরআনে বায়তুল্লাহ তাওয়াফের কথা উল্লেখ করলেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার আলোচনা তাতে হল না, তখন সাহাবাগণ বলতে লাগলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করতাম, এখন দেখি আল্লাহ কেবল বায়তুল্লাহ তাওয়াফের কথা অবতীর্ণ করেছেন, সাফার উল্লেখ করেন নি। কাজেই সাফা ও মারওয়ার মাঝে সা’ঈ করলে আমাদের দোষ হবে কি? এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেন (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ)

আবু বকর (রাযিঃ) আরো বলেন, আমি শুনতে পেয়েছি, আয়াতটি দু’ প্রকার লোকদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করেই অবতীর্ণ হয়েছে, অর্থাৎ যারা জাহিলী যুগে সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করা হতে বিরত থাকত, আর যারা তৎকালে সা’ঈ করত বটে, কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর সা’ঈ করার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের দ্বিধার কারণ ছিল আল্লাহ বায়তুল্লাহ তাওয়াফের নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার কথা উল্লেখ করেন নি? অবশেষে বায়তুল্লাহ তাওয়াফের কথা আলোচনা করার পর আল্লাহ সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করার কথা উল্লেখ করেন।
باب وُجُوبِ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَجُعِلَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ
1643 - حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ [ص:158]، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ عُرْوَةُ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا فَقُلْتُ لَهَا: أَرَأَيْتِ قَوْلَ اللَّهِ تَعَالَى: {إِنَّ الصَّفَا وَالمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ فَمَنْ حَجَّ البَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا} [البقرة: 158] ، فَوَاللَّهِ مَا عَلَى أَحَدٍ جُنَاحٌ أَنْ لاَ يَطُوفَ بِالصَّفَا وَالمَرْوَةِ، قَالَتْ: بِئْسَ مَا قُلْتَ يَا ابْنَ أُخْتِي، إِنَّ هَذِهِ لَوْ كَانَتْ كَمَا أَوَّلْتَهَا عَلَيْهِ، كَانَتْ: لاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ لاَ يَتَطَوَّفَ بِهِمَا، وَلَكِنَّهَا أُنْزِلَتْ فِي الأَنْصَارِ، كَانُوا قَبْلَ أَنْ يُسْلِمُوا يُهِلُّونَ لِمَنَاةَ الطَّاغِيَةِ، الَّتِي كَانُوا يَعْبُدُونَهَا عِنْدَ المُشَلَّلِ، فَكَانَ مَنْ أَهَلَّ يَتَحَرَّجُ أَنْ يَطُوفَ بِالصَّفَا وَالمَرْوَةِ، فَلَمَّا أَسْلَمُوا، سَأَلُوا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا كُنَّا نَتَحَرَّجُ أَنْ نَطُوفَ بَيْنَ الصَّفَا وَالمَرْوَةِ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: {إِنَّ الصَّفَا وَالمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ} [البقرة: 158] . الآيَةَ قَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «وَقَدْ سَنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الطَّوَافَ بَيْنَهُمَا، فَلَيْسَ لِأَحَدٍ أَنْ يَتْرُكَ الطَّوَافَ بَيْنَهُمَا» ، ثُمَّ أَخْبَرْتُ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ فَقَالَ: إِنَّ هَذَا لَعِلْمٌ مَا كُنْتُ سَمِعْتُهُ، وَلَقَدْ سَمِعْتُ رِجَالًا مِنْ أَهْلِ العِلْمِ يَذْكُرُونَ: أَنَّ النَّاسَ، - إِلَّا مَنْ ذَكَرَتْ عَائِشَةُ - مِمَّنْ كَانَ يُهِلُّ بِمَنَاةَ، كَانُوا يَطُوفُونَ كُلُّهُمْ بِالصَّفَا وَالمَرْوَةِ، فَلَمَّا ذَكَرَ اللَّهُ تَعَالَى الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ، وَلَمْ يَذْكُرِ الصَّفَا وَالمَرْوَةَ فِي القُرْآنِ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كُنَّا نَطُوفُ بِالصَّفَا وَالمَرْوَةِ وَإِنَّ اللَّهَ أَنْزَلَ الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ فَلَمْ يَذْكُرِ الصَّفَا، فَهَلْ عَلَيْنَا مِنْ حَرَجٍ أَنْ نَطَّوَّفَ بِالصَّفَا وَالمَرْوَةِ؟ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: {إِنَّ الصَّفَا وَالمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ} [البقرة: 158] الآيَةَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ: «فَأَسْمَعُ هَذِهِ الآيَةَ نَزَلَتْ فِي الفَرِيقَيْنِ كِلَيْهِمَا، فِي الَّذِينَ كَانُوا يَتَحَرَّجُونَ أَنْ يَطُوفُوا بِالْجَاهِلِيَّةِ بِالصَّفَا وَالمَرْوَةِ، وَالَّذِينَ يَطُوفُونَ ثُمَّ تَحَرَّجُوا أَنْ يَطُوفُوا بِهِمَا فِي الإِسْلاَمِ، مِنْ أَجْلِ أَنَّ اللَّهَ تَعَالَى أَمَرَ بِالطَّوَافِ بِالْبَيْتِ، وَلَمْ يَذْكُرِ الصَّفَا، حَتَّى ذَكَرَ ذَلِكَ، بَعْدَ مَا ذَكَرَ الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ»