ইমাম যামাখশারী রহঃ
ইমাম যামাখশারী রহঃ
আল ইমাম, আবূল কাসেম, জারুল্লাহ, মাহমূদ বিন উমার বিন মুহাম্মদ বিন উমার, আল-খুওয়ারিয্মী, (خُوَارِزْمٍيْ : أوله بين الضمة والفتحة والألف مسترقة محتلسة ليست بألف صحيحة هكذا يتلفظون به.) (معجم البلدان)
আয-যামাখশারী। খুরাসানের অন্তর্গত খুওয়ারিয্ম এলাকায় জন্ম গ্রহণের কারণে খুওয়ারিয্মী আর খুওয়ারিয্ম এলাকার অন্তর্গত যামাখশার অঞ্চলে জন্ম গ্রহণের কারণে যামাখশারী বলা হয়। তিনি মক্কা মুকাররমায় বাইতুল্লাহর নিকট কয়েক বৎসর অবস্থানের কারণে তাঁকে ‘জারুল্লাহ’ উপাধি দেয়া হয়।
জন্ম: তিনি চারশত সাতষট্টি (৪৬৭) হিজরীর সাতাশ (২৭) রজব বুধবার যামাখশার অঞ্চলে জন্মলাভ করেন এবং পাঁচশত আটত্রিশ (৫৩৮) হিজরীর ৯ জিলহজ্জ খুওয়ারিযম এর রাজধানী জিরজানিয়ায় একাত্তর (৭১) বৎসর বয়সে ইহধাম ত্যাগ করেন।
শিক্ষা: তিনি হিফজুল কুরআনসহ ইলমে দ্বীনের প্রাথমিক শিক্ষা তারঁ পিতা হযরত উমার রহ. এর নিকট অর্জন করেছেন এবং খুওয়ারিয্ম, বুখারার যুগশ্রেষ্ঠ উলামায়ে কিরামের নিকট ইলম অর্জন করেন। শৈশব থেকেই তার পা কাটা ছিল। ফকীহ দামেগানী হানাফী রহ. তাকে এর কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন মায়ের বদ দু‘আ অর্থাৎ শৈশবে আমি একটি চড়–ই পাখি আটকিয়ে সূতা দিয়ে পা বেধে রেখেছিলাম। পাখিটি আমার হাত থেকে পালিয়ে যায়। অতপর আমি সেটি এক গর্তে পেয়ে সূতা ধরে এমন টান দিয়েছি যে, চড়–ই পাখিটির পা ছিড়ে গিয়েছে। ফলে আমার মা কষ্ট পেয়ে বলেছেন : قطع الله رِجل الأبعد كما قطعتَ رجلَه
অতপর যখন আমি ইলম অর্জনের উদ্দেশ্যে বুখারা সফর করলাম তখন বাহন জন্তু থেকে পড়ে গিয়ে আমার পা ভেঙ্গে গেল। এরপর বাধ্য হয়ে আমার পা কেটে ফেলতে হল।
রচনা: তিনি ইলমুল লুগাহ, ইলমুল আদব, ইলমুন নাহুসহ আরো বিভিন্œ বিষয়ের উপর পঞ্চাশের কাছাকাছি কিতাব রচনা করেছেন। তারঁ অধিকাংশ কিতাব মসজিদে হারামের নিকট লিখেছেন। এগুলোর মাঝে উল্লেখযোগ্য হল তাফসীরে কাশ্শাফ। ঐতিহাসিকগণের কেউই তারঁ ব্যাপারে ই‘তিযাল ব্যতিত কোন দোষারোপ করেননি। ইবনে হাজার আসকালানী রহ. তারঁ ব্যাপারে বলেন যে, তিনি সৎ লোক কিন্তু ই‘তিযালের দিকে আহ্বানকারী। তিনি বাদশাহ ও আমীর-উমারাদের সাথে মেলামেশা করতেন, তাদের প্রশংসা করতেন, তাদেরকে ন্যায়-নীতির দিকে ডাকতেন এবং নসীহত করতেন। ৪৫ বৎসর বয়সে মরণাপন্ন রোগে আক্রান্ত হন। রোগ মুক্তির পর আমীর-উমারাদের মজলিস ছেড়ে ই‘তিযালকে প্রাধান্য দেন এবং ইলমে দ্বীন অর্জন ও লেখনীর কাজে মশগুল হন। তিনি বলেন: আমি প্রতিজ্ঞা করেছি যে, আমার পা বাদশাহদের চৌকাঠ অতিক্রম করবে না এবং আমি তাদের প্রশংসা বৃদ্ধি করব না। আর আমি কেবল ইলম শিখা-শিখানো ও গ্রন্থ রচনার কাজে লিপ্ত থাকব। আল্লামা যামাখশারী রহ. সম্পর্কে কয়েকটি গ্রন্থ রচিত হয়েছে- যেমন: ১. আয-যামাখশরী লেখক: ড. আহমাদ মুহাম্মদ হুফী। যা ১৯৬৬ ইং সনে মিশর থেকে মুদ্রিত হয়েছে। ২. মানহাজুয যামাখশারী, লেখক: ড. মুস্তফা সাবী, জুওয়ায়নি, যা মিশর থেকে মুদ্রিত হয়েছে। ৩. শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবূগুদ্দাহ রহ. কর্তৃক রচিত কিতাব ‘আল-উলামাউল উয্যাব আল্লাযীনা আ-সারুল ইলমা আলাযযিওয়াজ’ এর মাঝে আল্লামা যামাখশারী রহ. এর চমৎকার জীবনী উল্লেখ করেছেন। আল্লামা যামাখশারী রহ. এর প্রশংসায় কোন কবি বলেছেন:
مافهم القرآن إلاالأعرجان أحدهما الزَمخشرى والآخر جرجان