প্রবন্ধ
ইসলামে মধ্যপন্থা ও পরিমিতিবোধের গুরুত্ব (৩য় পর্ব)
বিবাহের ক্ষেত্রে
বিবাহ মানবজীবনের এক অপরিহার্য অনুষংগ। মানব প্রজন্মের সুরক্ষা, সুষ্ঠু ও সুস্থ পরিবার গঠন এবং সামাজিক শান্তি-শৃংখলার জন্য বিবাহ এক নির্বিকল্প ব্যবস্থা। এর উপকার বহুমাত্রিক। ব্যক্তিজীবনের শৃংখলা, ব্যক্তির মানসিক ও দৈহিক সুস্থতা এবং ধৈর্য, সাহসিকতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণাবলীসহ তার সুপ্ত প্রতিভার বিকাশসাধনে বিবাহের ভূমিকা অভাবনীয়। বিবাহই জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে কঠোর পরিশ্রম এবং ব্যবহারিক ক্ষেত্রে মিতব্যয় ও মিতাচারের প্রধান চালিকাশক্তি। এটা স্বভাবগত কাম-চাহিদার নিষ্কলুষ সমাধান, মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘব ও শ্রান্তিমোচন এবং দেহে সজীবতা ও মনে শান্তি সঞ্চারের মোক্ষম দাওয়াই। পরিবারে-পরিবারে, খান্দানে-খান্দানে ও বংশ-গোত্রে প্রীতিবন্ধনের এক চমৎকার ব্যবস্থা নর-নারীর এই শরীআতী সম্মিলন। সর্বোপরি এটা আখিরাতের কল্যাণ লাভেরও এক উৎকৃষ্ট অবলম্বন। সুতরাং বিবাহ ইসলামের অন্যতম প্রধান সামাজিক বিধান এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।
মানবসভ্যতার জন্য অপরিহার্য ও অতি কল্যাণময় এ ব্যবস্থাটিকে স্বভাবধর্ম ইসলাম খুবই সহজসাধ্য করেছে, যাতে এর কল্যাণ থেকে কেউ বঞ্চিত না হয় এবং সর্বস্তরের মানুষই এর সুফল ভোগের সুযোগ পায়। সুতরাং এর জন্য খুব বেশি আচার-বিচার, উদ্যোগ-আয়োজন ও জাঁকজমকের দরকার হয় না। নেই কঠিন কোন শর্ত ও দুর্ভর ব্যয়ের ঝক্কি। খরচ বলতে কেবল স্ত্রীর মাহ্র। আর আচার-অনুষ্ঠান বলতে কেবল সাক্ষীদের সামনে বর-কনের পক্ষ হতে ইজাব-কবূল। ব্যস এতটুকুতেই বিবাহ হয়ে যায়। অতপর ওলীমা করা সুন্নত ও পুণ্যের কাজ বটে, কিন্তু বিবাহ সিদ্ধ হওয়ার জন্য তা শর্ত নয়। এছাড়া প্রচলিত কিছু কাজ কেবলই জায়েয পর্যায়ের। তা করা না করা সমান। করলেও কোন অসুবিধা নেই, না করলেও দোষ নেই। কেননা বিবাহ শুদ্ধ হওয়া-না হওয়া কিংবা উত্তম-অনুত্তম হওয়ার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।
কিন্তু আফসোস, মানুষ এমন কল্যাণকর অথচ সহজসাধ্য একটা বিষয়কে চিন্তা- চেতনা ও ব্যবহারিক বাড়াবাড়ির কঠিন গেড়াকলে আবদ্ধ করে ফেলেছে। যদ্দরুন সাধের বিবাহ আজ রীতিমত আতঙ্কের যূপকাষ্ঠ। বিবাহের নামোচ্চারণ মাত্র পাত্রপক্ষের চোখে ভেসে ওঠে এলোমেলো অর্থশ্রাদ্ধের মহামচ্ছব আর কন্যাপক্ষের তো নামই পড়ে গেছে কন্যাদায়গ্রস্ত।
মূল সমস্যা চিন্তা- চেতনাগত। মানুষ বিবাহকে দেখছে কেবলই পার্থিব দৃষ্টিকোণ থেকে। আরও সত্যি করে বলতে গেলে বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে। অথচ ইসলামী বিবাহ পার্থিব বিষয়মাত্র নয়। এর সাথে আখিরাতের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। এর আছে ইবাদতের মহিমা, যে কারণে এ প্রশ্নও উঠেছে যে, বিবাহ করে সাংসারিক জীবন-যাপন উত্তম, না সংসারবিমুখ হয়ে নামায-রোযা-যিকর ইত্যাদির জন্য নিজেকে উৎসর্গিত রাখা উত্তম। অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের মতে সাংসারিক জীবন যাপনই উত্তম। তার ফলে প্রত্যক্ষ ইবাদতের মাহাত্ম্য অনেক বেড়ে যায়। এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি বিবাহ করল সে তার দ্বীনের অর্ধেক পূর্ণ করে ফেলল, এখন বাকি অর্ধেকের জন্য সে আল্লাহকে ভয় করুক। (বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীস : ৫৪৮৬)
বিবাহের ফযীলত সম্পর্কে আরও অনেক হাদীস আছে। এটা সমস্ত নবীর আদর্শ। এরই মাধ্যমে মানব প্রজন্মের সূচনা ও বিস্তার ঘটেছে। এটা সদাকায়ে জারিয়ার মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন ছওয়াব লাভের প্রকৃষ্ট মাধ্যম। কিন্তু বর্তমান সমাজ বিবাহকে তার এ মহিমা থেকে অনেক নিচে নামিয়ে ফেলেছে। বিবাহের ব্যাপারে চিন্তা-চেতনার ঘটেছে দারুণ অবক্ষয়। মানুষ শিকার হয়ে পড়েছে শৈথিল্যমূলক প্রান্তিক ভাবনার। তারা এর পারলৌকিক যোগসূত্রকে ছিন্ন করে ফেলেছে। এর দ্বারা পুণ্যার্জনের কোন চেতনা তারা পোষণ করছে না। এক্ষেত্রে দুনিয়াই তাদের মুখ্য। বরং কেবল দুনিয়াবী লাভ-লোকসানেই নজর রাখা হচ্ছে। মেয়েপক্ষ দেখছে কেবলই ছেলের বা তার বাবার অর্থকড়ি, তার অবর্তমানে বড় চাকরি, তাও না থাকলে এমন কোন যোগ্যতা যার দৌলতে আশুদিনে অনেক কামাতে পারবে। ছেলেপক্ষের কাছেও বিচার্য মেয়ের বাবার অর্থ-সম্পদ বা কী মেয়ের নিজের উপার্জন-ক্ষমতা। যৌতুকের বহর কি হবে সেদিকে তো নজর থাকছেই। এসব বৈষয়িক ও অনৈতিক ভাবনার উৎপত্তি হয়েছে বিবাহ সম্পর্কে চিন্তাগত অবক্ষয় থেকেই এবং এ অবক্ষয় থেকেই বিবাহের সাথে যুক্ত হয়েছে আরও অনেক উপসর্গ। তা না হবে কেন? যে কাজের সাথে পারলৌকিক কোন সম্বন্ধ চিন্তা করা হয় না, তার সাথে বৈধ-অবৈধ নির্বিশেষে ভোগবাদিতার সব উপাদান যুক্ত হতে বাধ্য। সুতরাং বর্তমান সমাজের বিবাহগুলো তার সূচনা থেকে সমাপ্তি পর্যন্ত বিচিত্র ভোগলোলুপতায় ঠাসা। কারও বিবাহ যেন আর সকলের অবাধ-উদ্দাম-উৎকর্ষই ফূর্তির উপলক্ষ। চোখের হোক আদেখ দেখার বাহারী আয়োজন। কানে হোক বর্জ্য-অশ্রাব্যের ধারাবরিষণ। বল্গাহারা আনন্দে-নৃত্যে দেহমনের মৌজ-মৌতাতে সব একশা-একাকার হয়ে যাক, তবেই না এটা বিবাহ। এভাবেই ভাবনার দৈন্যে মুসলিম-জীবনের এক পবিত্র সূচনা আজ রকমারি পাপের মচ্ছবে পর্যবসিত। দৃষ্টিভংগীগত এ প্রান্তিকতা থেকে উৎপন্ন মোটাদাগের কয়েকটি অনর্থ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক, যার প্রত্যেকটি বৈবাহিক মধ্যপন্থার চরম সীমালংঘন।
পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে
পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশনা হল-
إذا خطب إليكم من ترضون دينه وخلقه فزوجوه إلا تفعلوا تكن فتنة في الأرض وفساد عريض.
‘যার দ্বীনদারী ও আখলাক-চরিত্রে তোমরা সন্তুষ্ট, এমন কেউ প্রস্তাব দিলে তার সাথে তোমরা বিবাহ সম্পন্ন কর। তা না করলে পৃথিবীতে ফিৎনা দেখা দেবে ও ব্যাপক ফ্যাসাদ ছড়িয়ে পড়বে।’ (তিরমিযী, হাদীস : ১০৮৪)
এবং ইরশাদ হয়েছে-
تنكح المرأة لأربع : لمالها ولحسبها ولجمالها ولدينها فاظفر بذات الدين تربت يداك.
‘নারীকে বিবাহ করা হয় চারটি জিনিস দেখে। তার সম্পদ দেখে, বংশমর্যাদা দেখে, রূপ দেখে এবং দ্বীনদারী দেখে। হে মুমিন! তুমি দ্বীনদার নারী বিবাহ করে ধন্য হয়ে যাও।’ (বুখারী, হাদীস : ৫০৯০; মুসলিম, হাদীস : ১৪৬৬)
অপর এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা নারীদের (কেবল) রূপ দেখে বিবাহ করো না। অসম্ভব নয় রূপই তাদের বরবাদ করে দেবে। তাদের অর্থ-সম্পদ দেখেও বিবাহ করো না। হতে পারে অর্থ-সম্পদ তাকে উদ্ধত করে তুলবে। বরং দ্বীন দেখেই তাদের বিবাহ কর। একজন নাক-কান-কাটা কালো দাসীও (রূপসী ধনবতী স্বাধীন নারী অপেক্ষা) শ্রেয়, যদি সে দ্বীনদার হয়। (ইবনে মাজাহ)
এসব হাদীসের শিক্ষা হল পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে দ্বীনদারী ও আখলাক-চরিত্রকেই পয়লা নম্বরে রাখতে হবে। চেহারা-সুরতও অবহেলার নয়। অর্থ-সম্পদ ও বংশীয় সমতাও বিচার্য বটে, কিন্তু সবই দ্বীনদারীর পরবর্তী স্তরে। দ্বীনদারী ও আখলাক-চরিত্র সন্তোষজনক হলে বাকিগুলোতে ছাড় দেওয়া যায়, কিন্তু বাকিগুলো যতই আকর্ষণীয় হোক, তার খাতিরে দ্বীনদারীতে ছাড় দেওয়ার অবকাশ নেই। হাঁ দ্বীনদারীর সাথে অন্যগুলোও যদি মিলে যায়, সে অতি সুন্দর মিলন বটে, কিন্তু তা খুব সহজলভ্যও নয়। তাই সে রকম আশার ক্ষেত্রে মাত্রাজ্ঞানের পরিচয় দেওয়া জরুরি। অর্থাৎ পয়লা নম্বরের শর্ত পূরণ হয়ে গেলে অন্যগুলোতে বেশি কড়াকড়ি না করে চলনসই পর্যায়ে চিন্তা করতে হবে। অর্থাৎ বংশ-মর্যাদা সমান-সমান না হলেও কাছাকাছিতেই সন্তুষ্ট থাকা, অর্থ-সম্পদে উনিশ-বিশ বা আরও কিছু বেশি তারতম্য থাকলেও তা উপেক্ষা করা এবং রূপ-সৌন্দর্যেও আকাশ-পাতাল পার্থক্য না হলে তা অগ্রাহ্য করা বাঞ্ছনীয়। আমাদের ফকীহগণ বলেছেন, স্ত্রীর নগদ মাহ্র এবং খোরপোশ ও থাকার স্থান দেওয়ার মতো সামর্থ্য যার আছে, ধনবতী কনের পক্ষে সে অনুপযুক্ত পাত্র নয়। হাঁ যার সেই সামর্থ্যও নেই, সে রকম হতদরিদ্র ধনবতীর পক্ষে অনুপযুক্তই বটে। এমনিভাবে বনূ হাশিম ও কুরায়শের বাইরে আর যত গোত্র-বংশ আছে, তারা বনূ হাশিম ও কুরায়শের সমমানের না হলেও তারা পরস্পরে সমমানেরই গণ্য হবে।
সুতরাং শেখ, চৌধুরী, তালুকদার, মল্লিক, হাওলাদার ইত্যাদি বংশসমূহের মধ্যে কৌলীন্যগত বিশেষ পার্থক্য নেই, তাতে তারা নিজেদেরকে নিজেদের দৃষ্টিতে অন্যদের অপেক্ষা যত অভিজাতই মনে করুক না কেন। যতটুকু পার্থক্য আছে, দ্বীনদারীর শর্ত পূরণ হওয়ার পর তার জন্য বিবাহকে আটকে রাখা সমীচীন নয়। আমাদের ফকীহগণ এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এ স্থলে আমাদের বলার উদ্দেশ্য কেবল এতটুকুই যে, দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দেওয়ার পর অন্যসব শর্তকে শিথিল পর্যায়েই বিবেচনা করা উচিত। একদম অগ্রাহ্য করাও নয়, যেমনটা কেউ কেউ বেহুঁশ জোশের কারণে করে থাকে। এবং মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়াও হয়। সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করার পরিণতিও অনেক সময় ভালো হয় না। কেননা কৌলীন্যে বেশি তফাৎ থাকলে বনিবনাও কঠিন হয়ে যায়। হযরত যায়নাব বিনতে জাহ্শ রা. ও হযরত যায়েদ ইবনে হারিছা রা.-এর বিবাহ থেকে আমরা সে শিক্ষা পাই। অভিজাত কুরায়শী নারীর পক্ষে একজন আযাদকৃত গোলামের সাথে মধুর দাম্পত্য রচনা কঠিন হয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত সে বিবাহ টিকতে পারেনি। সব সমাজেই এটা একটা অনস্বীকার্য বাস্তবতা।
অনুরূপ ধনী-নির্ধনের জোড়ও অনেক সময় টেকসই হয় না। রূপ ও সৌন্দর্যও হৃদয় কাড়ে বৈকি। এর মধ্যে দুস্তর ব্যবধানও শয়তান বা প্রবৃত্তির ছলনায় মদদ যোগাতে পারে। এ কারণেই তো শরীআত বিয়ের আগে দেখে নেওয়ার হুকুম দিয়েছে। মোদ্দাকথা, ইসলাম এসব ব্যাপারকে অবজ্ঞা করেনি; বরং গুরুত্বের মাত্রা অনুযায়ী এরও মূল্যায়ন করেছে। সুতরাং পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে এসবও বিবেচনায় রাখা চাই। তবে মাত্রাজ্ঞানের সাথে। অর্থাৎ এসব নিয়ে এতটা বাড়াবাড়ি সংগত নয়, যদ্দরুন আসল শর্ত দ্বীনদারীটাই চাপা পড়ে যায় এবং বিবাহের মূল উদ্দেশ্য ভেস্তে যায়।
কুরআন-হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী মানব প্রজন্ম রক্ষার সাথে সাথে চরিত্র রক্ষা ও মনের প্রশান্তিলাভও বিবাহের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। যে কোনও পক্ষে দ্বীনদারীর অভাব থাকলে এসব উদ্দেশ্যের সবটাই ঝুকিতে পড়ে যায়। মানব প্রজন্ম হতে পারে কলুষিত, চরিত্র হতে পারে কলঙ্কিত আর মনের শান্তি থেকে যেতে পারে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
এ কেবল আশংকাই নয়। অকাট্য বাস্তবতা। আজকের মানবসমাজ অশান্তির আগুনে পুড়ছে। মানুষের দাম্পত্য জীবন বড় যন্ত্রণাময়। মানুষ ঘরের বাইরে সুখ খুঁজছে। যুগলসমূহ তাদের ভক্তি-বিশ্বাসের শিকল ছিন্ন করে অন্ধকার পথে ছুটছে। পিপাসা নিবারণের জন্য মরিচিকার দ্বারস্থ হচ্ছে। দেহমনের অতৃপ্তি ঘোচানোর ব্যর্থ প্রয়াস কোথায় না চোখে পড়ছে? কেন আজ এ পরিস্থিতি? যে দাম্পত্যের ব্যবস্থাই দেওয়া হয়েছে বহির্জীবনের সংগ্রাম-সংঘাতে জর্জরিত, কঠোর-কঠিন মেহনতে ক্লান্ত শ্রান্ত দেহমনে শান্তির পরশ বুলানোর জন্য, মানুষের অমূল্য চরিত্রের হেফাযতের জন্য, তা কেন অশান্তির কাঁটা হয়ে
শান্তিকামী জুটিকে নিত্যদিন বিঁধছে? কারণ আর কিছুই নয়। বাছাইপর্বের ভুল। সেই ভুল-ই এ অনর্থের মূল। মানুষ দ্বীনের উপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দিচ্ছে। পয়লা নম্বরের শর্তকে হয় উপেক্ষা, নয়ত সবশেষে নিয়ে গেছে। এসব তারই খেসারত। এ খেসারত যে দিতেই হবে সে কথাও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীসে পরিষ্কার। তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোন নারীকে বিবাহ করবে (কেবল) তার ক্ষমতার কারণে আল্লাহ তাআলা তার অসহায়ত্বই বৃদ্ধি করবেন। যে ব্যক্তি কোন নারীকে বিবাহ করবে তার সম্পদের লোভে, আল্লাহ তাআলা তার দারিদ্র্যই বৃদ্ধি করবেন, যে ব্যক্তি কোন নারীকে বিবাহ করবে তার বংশমর্যাদার কারণে আল্লাহ তাআলা তার হীনতাই বৃদ্ধি করবেন আর যে ব্যক্তি কোন নারীকে বিবাহ করবে নিজ দৃষ্টি সংযতকরণ, চরিত্রের হেফাযত ও আত্মীয়তা রক্ষার উদ্দেশ্যে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য তার স্ত্রীকে এবং স্ত্রীর জন্য তাকে কল্যাণময় করবেন। (তবারানী, আলআওসাত, হাদীস : ২৩৪২)
অপর এক হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি চরিত্র রক্ষার উদ্দেশ্যে বিবাহ করে, আল্লাহ তাআলা তার সাহায্য করাকে নিজের প্রতি অবধারিত করে নিয়েছেন। (তিরমিযী, হাদীস : ১৬৫৫; নাসায়ী, হাদীস : ৩২১৮)
এসব হাদীস আমাদেরকে এ শিক্ষাই দেয় যে, পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে দ্বীনদারীকেই সর্বাপেক্ষা বেশি গুরুত্ব দিতে হবে এবং বিবাহের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পূরণ হওয়াটা তারই উপর নির্ভরশীল। এর অন্যথা করলে উপরে বর্ণিত অনর্থ অবশ্যম্ভাবী। বরং অনর্থ তারই মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বর্তমান সমাজে যে যৌবনোত্তীর্ণ বা প্রায়োত্তীর্ণ অবিবাহিতদের ক্রমবৃদ্ধি ঘটছে তাও ওই অন্যথাকরনেরই কুফল।
দেখা যায় অর্থ-বংশ ও রূপ নিয়ে অহেতুক বাড়াবাড়ি- খোড়াখুড়ির কারণে ছেলেমেয়ের বিয়েতে অনেক দেরিও হয়ে যায়। অর্থ আছে তো বংশ মেলে না, বংশ মেলে তো দেখতে-শুনতে সেরকম নয়। অর্থাৎ সব মেলানোর সোনার হরিণ খুঁজতে গিয়ে বছরের পর বছর পার হতে থাকে, ওদিকে ছেলেমেয়ের বয়সও বাড়তে থাকে। তো বয়স বাড়ুক, তাই বলে সামাজিক স্ট্যাটাচে তো ছাড় দেওয়া যায় না। কিন্তু সেই নাছোড় স্ট্যাটাচ তো কেবল বয়সই শেষ করে না, ঘুণের মত রূপ-লাবণ্যও তিলে তিলে নিঃশেষ করে। ফলে যেই ছাড় প্রথমেই স্বেচ্ছায় দেওয়া উচিত ছিল, শেষ পর্যন্ত নাচার তা দিতে বাধ্য হতে হয়। তাতেও সবক্ষেত্রে শেষরক্ষা হয় না। কারও কারও চিরটাকাল আইবুড়োই কাটিয়ে দিতে হয় আর অতটা দুর্গতি যার বরাতে লেখা হয়নি, তাকেও অন্তত দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হয়। সুতরাং অভিভাবককে ভাবতে হবে, সে অপেক্ষাকৃত লঘুকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে কিংবা বলা যায় নিজের অপরিমিত খাহেশ পূরণের পাকচক্রে ফেলে ছেলেমেয়ের জীবনকে এভাবে বিপর্যস্ত করবে, না নবী মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শিক্ষা অনুযায়ী পরিমিত চিন্তার সাথে পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের বৈতরনী পার হবে এবং প্রিয় সন্তানদের মধুর দাম্পত্য রচনায় অর্থপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মাহর নির্ধারণে
বিবাহের ক্ষেত্রে আরও একটি উল্লেখযোগ্য বাড়াবাড়ি হয়ে থাকে মাহর নির্ধারণে। এর মূল কারণ মাহরের হাকীকত সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং তারও গোড়ার কারণ, শুরুতে যা বলে এসেছি, বিবাহকে কেবল পার্থিব দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করা। বিবাহের একটা পারলৌকিক মহিমা আছে আর সেজন্য নর-নারীর দাম্পত্য জীবন মধুময় হওয়া, পারস্পরিক সম্পর্ক ভক্তি-শ্রদ্ধাপূর্ণ হওয়া এবং একে অন্যের প্রতি আন্তরিক ও বিশ্বস্ত থাকা একান্ত জরুরি। মাহর নির্ধারণ মূলত সে লক্ষ্যেই। অর্থাৎ এটা স্বামীর পক্ষ হতে নববধুকে প্রদত্ত নজরানা। যে-কোন মর্যাদাবান ব্যক্তির সাথে সাক্ষাতকালে তার মর্যাদার নিদর্শনস্বরূপ সেলামী-নজরানা পেশ করা হয়ে থাকে। এর ফলে উভয় পক্ষে হৃদ্যতা সৃষ্টি হয়। হাদীসেও আছে, ‘তোমরা পরস্পরে উপহার বিনিময় কর, তাতে পরস্পরে মহববত সৃষ্টি হবে।’ স্ত্রী হচ্ছে স্বামীর জীবন-সংগিনী। তার উষর জীবনের সঞ্জিবনী ও দীর্ঘ চলার পথের সহচরী। এমন আপনার ও মর্যাদাবান তার আর কতজন আছে? সুতরাং দর্শনী পাওয়ার হক যদি কারও থাকে তা স্ত্রীরই আছে। খোদ শরীআতই এ হক তার জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, এমনকি বিবাহকালে যদি তা ধার্য করা নাও হয়, তবুও আপনা-আপনিই তা ধার্য হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে মাহরুল-মিছল অর্থাৎ স্ত্রীর খান্দানভুক্ত তার মত নারীদের অনুরূপ মাহ্র তার প্রাপ্য হয়। সারকথা মাহর কোন বিনিময়মূল্য নয় যে, এর দ্বারা স্বামী তার স্ত্রীকে কিনে নেয়; বরং এটা তার শরীআতপ্রদত্ত মর্যাদার স্বীকৃতি। এ স্বীকৃতি প্রদান ব্যতিরেকে বিবাহই হয় না। সুতরাং মাহ্রকে গুরুত্বের সাথেই দেখতে হবে। কোনওক্রমেই এর মহিমাকে খাটো করার অবকাশ নেই।
পরিতাপের বিষয় হল মাহরের এ গুরুত্ব সমাজচোখে বলতে গেলে আর অবশিষ্ট নেই। এটাও এখন বাণিজ্যীকরণের শিকার। এ নিয়ে বড় দর কষাকষি। এ ব্যাপারে দুই পক্ষ দুই প্রান্তিক মানসিকতা পোষণ করে। পাত্রপক্ষ চায় মাহর কত কম দিয়ে পারা যায়। পাত্রীপক্ষের জিদ থাকে সর্বোচ্চ পরিমাণের। এই দর কষাকষিতে অনেক সময় বিবাহই ভেংগে যায়। আবার অনেক সময় উভয় পক্ষই সর্বোচ্চ পরিমাণে একমত হয়ে যায় কেবল বাহাদুরি ফলানোর লক্ষে। মোটকথা মাহ্রের ক্ষেত্রে শিথিলতা ও বাড়াবাড়ি দু’ রকম প্রান্তিকতাই ব্যাপক। মধ্যপন্থা অবলম্বনের লোক বড় কম।
যারা মাহর কম দিতে চায় তারা একটি হাদীসের মতলবি ব্যবহার করে। বলা হয়েছে-
إن أعظم النكاح بركة أيسرة مؤنة
‘যে বিবাহে খরচা কম হয়, তাই বেশি বরকতপূর্ণ হয়।’ (শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস : ৬৫৬৬) তারা খরচা কম বলতে প্রয়োজনীয় খরচারও সংকোচন বোঝাতে চায়। কিন্তু এটা একটা মারাত্মক বিভ্রান্তি। এর দৃষ্টান্ত হল নামাযের সংক্ষেপণ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদেশ রয়েছে, ‘ইমাম যেন নামায হালকা করে। যেহেতু তার পেছনে অসুস্থ, বৃদ্ধ ও বিশেষ প্রয়োজন-ব্যস্ত লোক থাকে।’ এ নির্দেশের ছলে অনেকে নামাযকে ইচ্ছামত সংক্ষেপ করে নিয়েছে। ব্যস যত তাড়াতাড়ি পার আদায় করে নাও, যেহেতু হাদীসের নির্দেশ। অথচ চিন্তা করে না অতটা ব্যস্তমমস্ত আদায়ের ফলে নামাযের প্রাণবস্ত্ত খুশূ’-খুযূ’ই নষ্ট হয়ে যায় এবং নামাযের রূপ-শোভা সুন্নত-মুস্তাহাব বাদ পড়ে যায়। ফলে মুসল্লী নামাযের কাঙ্খিত সুফল হতেও বঞ্চিত থেকে যায়। হাদীস দ্বারা মূলত বোঝানো উদ্দেশ্য সুন্নত-মুস্তাহাব ও আদাব রক্ষা করার পর যেন নামাযকে আরও দীর্ঘ করা না হয়। মুসল্লীদের সুবিধার্থে সুন্নত-মুস্তাহাবও ছেড়ে দিতে বলা হয়নি।
অনুরূপ বিবাহে খরচা কম করার মানে এ নয় যে, মাহ্রের পরিমাণ নির্ধারণে স্ত্রীর মর্যাদার বিষয়টাকেও অগ্রাহ্য করা হবে। বরং তার অর্থ হচ্ছে স্ত্রীর যথাযথ মর্যাদা রক্ষার সাথে স্বামীর পক্ষে যা আদায় করা সহজ সেই পরিমাণ মাহ্র ধার্য করা। সহজের প্রতি লক্ষ করতে গিয়ে যদি স্ত্রীর মর্যাদাকে উপেক্ষা করা হয় এবং এতটা কম মাহ্র ধার্য করা হয়, যা স্ত্রীর পক্ষে সম্মানজনক নয়, তবে তা স্ত্রীর মর্যাদাই খর্ব হয় না, মাহ্র ধার্যকরণের শরয়ী বিধানটিরও মহিমা ক্ষুণ্ণ হয় এবং বিধানটির কাঙ্খিত সুফলও হয় ব্যাহত। সূচনাতেই যে স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি যথাযথ মর্যাদা প্রদর্শন করতে পারল না, পরবর্তীতে উচ্ছ্বাসে যখন ভাটা পড়বে, সেই সঙ্গে যুক্ত হবে নানারকম পারিপার্শ্বিকতা, তখন তার পক্ষ হতে মর্যাদাপূর্ণ আচরণের কতটুকু আশা রাখা যায়? এ অবহেলাকে আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন একজন মানুষ কিছুতেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না। কম-বেশি আত্মসম্মানবোধ সব মানুষেরই আছে। বিশেষত অনেক আশা, অনেক স্বপ্ন নিয়ে যে নারী জীবনের নতুন সফরের সঙ্গীরূপে কাউকে বরণ করল, তার পক্ষে তো এরূপ অন্যায্যতা সুখকর হতে পারে না। এতে যে ধাক্কা সে খায় তাতে তার পরবর্তী গতি আর স্বচ্ছন্দ হয় না, অন্ততপক্ষে ছন্দময় তো নয়ই। একধরনের জড়তা ও কুণ্ঠাভাব উভয়ের দিক থেকেই থেকে যায়, যা তাদের পরস্পর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠার পক্ষে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাই বলি, মাহ্র নির্ধারণে একরোখাভাবে সহজতার প্রতি দৃষ্টি না রেখে পাত্রীর মর্যাদাকেও বিবেচনায় রাখা বাঞ্ছনীয়। উভয় পক্ষ হতেই উভয়ের প্রতি ন্যায্যদৃষ্টি কাম্য। এটাই মাহ্র নির্ধারণের মধ্যপন্থা। মাহ্রের কাঙ্খিত সুফল এরই মাধ্যমে পাওয়া যায়। একদিকে সাধ্যানুযায়ী হওয়ার কারণে তা পরিশোধ সহজ হয়, অন্যদিকে স্ত্রীর পক্ষে সম্মানজনক হওয়ার কারণে তার অন্তরে এটা রেখাপাত করবে, সে এর মূল্যায়ন করবে এবং স্বামীর প্রতি স্বচ্ছন্দ হবে। এভাবে পরিমিত মাহর নব দম্পতির মধ্যে মাধুর্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিত রচনা করবে।
এর বিপরীত প্রান্তিকতা হল মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে মাহ্র নির্ধারণ। এটা যেমন পাত্রীপক্ষের জেদের কারণে হয়, তেমনি ক্ষেত্রবিশেষে পাত্রপক্ষেরও তাতে আগ্রহ থাকে। এরূপ মাহর আকছার পরিশোধ করা উদ্দেশ্য থাকে না। উদ্দেশ্য কেবলই নাম ফলানো ও বাহাদুরি দেখানো এবং ক্ষেত্রবিশেষে পাত্রপক্ষকে বেকায়দায় ফেলা। অর্থাৎ নিয়তই সহীহ নয়। আমলের সুফল পাওয়ার জন্য নিয়ত সহীহ থাকা তো শর্ত। এখানে নিয়ত যখন সহীহ নয়, তখন মাহরের কাঙ্খিত সুফলেরও আশা রাখা যায় না; বরং কুফল অনিবার্য।
সবচে’ বড় কুফল তো এই যে, হাদীসের ভাষ্যমতে যে ব্যক্তি মাহ্র আদায়ের নিয়ত রাখে না, সে ব্যভিচারীরূপে মারা যাবে’ কি কঠিন সতর্কবাণী! বিবাহ করা সত্ত্বেও যদি ব্যভিচারী সাব্যস্ত হতে হয়, সে বিবাহের সার্থকতা কি? আর যদি আদায়ের নিয়ত থাকেও, তবু পরিমাণ ভারী হওয়ার কারণে আদায় করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়। এর পরিণাম দাঁড়ায় স্ত্রীর প্রতি বিতৃষ্ণা। মনে মনে তাকে দুষতে থাকে যে, তার কারণে এত বড় একটা দায় আমার মাথায় চেপে আছে। ফলে স্ত্রীর প্রতি সে আন্তরিক হতে পারে না, যার প্রকাশ আচার-আচরণেও ঘটতে থাকে। পরিণামে দাম্পত্য জীবন হয়ে পড়ে যন্ত্রণাময়। সে যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য যদি তালাকই অনিবার্য হয়ে পড়ে তখনও অতিরিক্ত মাহ্র সে পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। স্ত্রী হাজার বার মুক্তি চাইলেও মাহ্র পরিশোধের ভয়ে স্বামী তাকে তালাক দিতে প্রস্ত্তত হয় না। আর স্ত্রী না চাইলেও স্বামী নিজের পক্ষ থেকেও যে তালাক দিয়ে নিস্তার পাবে ওই একই কারণে তা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অগত্যা উপায় থাকে দু’টি। হয় তা পরিশোধ করে সর্বস্বান্ত হও, নয়ত সেই দুর্বিষহ জীবনের বোঝাই বয়ে বেড়াও যাবৎ না কোনও একজনের মৃত্যু ঘটে। এরূপ ক্ষেত্রে অনাকাঙ্খিত কোন দুর্ঘটনা ঘটাও বিচিত্র নয়। তখন তো ‘খাসিরাদ-দুনয়া ওয়াল-আখিরাহ’ (দুনিয়া-আখিরাত সবই বরবাদ)। সেক্ষেত্রে সেই দুর্ঘটনাজনিত দুর্ভোগ ছাড়াও মাহ্র অনাদায়ের দায় তো থেকেই যায়, যা আখিরাতে তার আমল থেকে কেটে নেওয়া হবে। মোটকথা অতিরিক্ত মাহ্র নির্ধারণের কুফল দু’ চারটি নয়। তার রয়েছে সুদীর্ঘ তালিকা। কাজেই মাহ্র নির্ধারণে অবশ্যই মাত্রাজ্ঞানের পরিচয় দিতে হবে। মনে রাখতে হবে মধ্যপন্থা সবক্ষেত্রেই কল্যাণকর।
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
শরীয়তে পীর মুরিদীর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব
রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতী দায়িত্ব বর্ণনায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুর...
শরীয়তের দৃষ্টিতে ফেসবুক ব্যবহার
সামাজিক যোগাযোগের অতি জনপ্রিয় মাধ্যম হিসেবে ডিজিটাল জগতে আগমন ঘটেছিল ফেসবুকের। কিন্তু ইতোমধ্যে ফেসব...
সাধারণ মানুষদের ইলম অর্জনের পথ ও পদ্ধতি
জেনারেল শিক্ষিত ভাই-বোনরা দ্বীনের পথে আসার পরে ইলম অর্জনের প্রতি সচেষ্ট হচ্ছেন এটি খুবই সুসংবাদের কথ...
বালা-মুসীবতের কারণ ও প্রতিকার
মহান রব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন- وَمَا أَصَابَكُمْ مِنْ مُصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَع...
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন