প্রবন্ধ

সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা

১৪ আগস্ট, ২০২৪
৬১১৮৩৫

সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখাঃ 
ইবাদত-বন্দেগীর মধ্যে দুটি প্রকার রয়েছে :  এক. যা অবশ্য পালনীয়, দুই. যা ঐচ্ছিক। 
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অবশ্য-পালনীয় ইবাদতসমূহের গুরুত্ব ঐচ্ছিক ইবাদতসমূহের চেয়ে বেশি। হাদীস শরীফে পরিষ্কার বর্ণিত হয়েছে, ‘বান্দা আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি নৈকট্য অর্জন করে ফরয ইবাদতের মাধ্যমে।’  তবে নফল ও ঐচ্ছিক ইবাদতের ফযীলতও এত বেশি যে, তা মুমিনকে উদ্দীপ্ত ও আগ্রহী করে তোলে। তন্মধ্যে সোমবার ও বৃহস্পতিবার নফল রোযা রাখা অন্যতম। হাদীস শরীফে নফল রোযার অনেক প্রকার ও অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও নফল রোযা রেখেছেন, উম্মতকেও এর ফযীলত শুনিয়েছেন। এ দুই দিনের রোযার সবচেয়ে বড় ফযীলত হল, এর মাধ্যমে আল্লাহ গোনাহ মাফ করেন।

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজী (ﷺ) (গুরুত্বের সাথে) সোম ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন। ফলে নবীজীকে জিজ্ঞাসা করা হল- আল্লাহর রাসূল! আপনি (গুরুত্বের সাথে) সোম ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখেন! (এর কারণ কী?)। তখন নবীজী বললেন- সোম ও বৃহস্পতিবারে আল্লাহ সকল মুসলিমকে ক্ষমা করে দেন। তবে ঐ দুই ব্যক্তি ছাড়া, যারা একে অপরকে বর্জন করেছে। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তারা পরস্পর মিলে যাওয়া পর্যন্ত এদেরকে আপন অবস্থায় ছেড়ে দাও।’ -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৭৪০ 

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. বলেছেন- নবী (ﷺ) সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোযা রাখার ইহতিমাম করতেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৪৫ 

হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন- সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমলসমূহ পেশ করা হয়। আমার এটা অধিক পছন্দ, আমার আমল যেন পেশ করা হয় আমি রোযাদার অবস্থায়। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৪৭ 

সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে সোম ও বৃহস্পতিবার গুরুত্বপূর্ণ। আমলের মাধ্যমে কল্যাণ লাভের বিচারে সপ্তাহের সব দিনই গুরুত্বপূর্ণ, তবে কিছু দিবস একটু বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। সোমবার তো বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ; যাঁর মাধ্যমে আমরা আমাদের রবকে চিনেছি, যাঁর মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দিয়েছেন, যাঁর মাধ্যমে আমরা ওহীর আলোর সন্ধান পেয়েছি, সারকারে দো আলম, সায়্যিদুল মুরসালীন মুহাম্মাদ (ﷺ) এ দিনেই জন্মগ্রহণ করেছেন। যে কিতাবের মাধ্যমে আমরা রবের কালাম লাভ করেছি, আসমানী নূরে স্নাত হয়েছি, হেদায়েতের বাণী লাভ করেছি- সে কিতাবও নাযিল হয়েছে সোমবারে। 

হযরত আবু কাতাদা আনসারী রা. থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ (ﷺ)  কে সোমবারের রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। (এ দিনের রোযার ফযীলত কী? বা কেন আপনি গুরুত্বের সাথে এদিন রোযা রাখেন?) তিনি তখন উত্তরে বললেন- এ দিনেই অমি জন্মলাভ করেছি এবং এ দিনেই আমার উপর ওহী নাযিল হয়েছে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬২


প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (...)

এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ

রোযা রাখার বিধান ও উপকারীতা

...

আল্লামা মনযুর নোমানী রহঃ
১০ নভেম্বর, ২০২৪
৬২০২ বার দেখা হয়েছে

লেখকবৃন্দ

সকল লেখক →

আল্লামা শাব্বীর আহমাদ উসমানী রহঃ

শাহ আব্দুল আযীয দেহলভী রহঃ

শাইখুল ইসলাম আল্লামা কাসেম নানুতুবী রহঃ

মাওঃ উবাইদুল্লাহ সিন্ধী রহঃ

সায়্যিদ সাবেক রহঃ

আল্লামা আব্দুল মজীদ নাদীম রহঃ

মাওলানা আসলাম শাইখুপুরী

শাইখুল ইসলাম হুসাইন আহমাদ মাদানী রহঃ

মাওঃ আবু আম্মার যাহেদ রাশেদী

মাওঃ নুরুল হাসান রাশেদ কান্ধলভী

মুফতী হাবীবুর রহমান খাইরাবাদী

আল্লামা আবুল কালাম আযাদ রহঃ

মাওলানা সাঈদ আহমদ

মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েত উদ্দীন দাঃ

হযরত মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী রহঃ

মাওলানা হাবীবুর রহমান খান

মাওলানা সাঈদ আহমাদ বিন গিয়াসুদ্দীন

মাওঃ আবু বকর সিরাজী

শায়েখ আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ ইবনে উমার [রহ.]

মাওঃ এনামুল হাসান