৭২. আল জ্বিন ( আয়াত নং - ২ )

bookmark
یَّہۡدِیۡۤ اِلَی الرُّشۡدِ فَاٰمَنَّا بِہٖ ؕ  وَلَنۡ نُّشۡرِکَ بِرَبِّنَاۤ اَحَدًا ۙ
ইয়াহদীইলাররুশদি ফাআ-মান্না- বিহী ওয়া লান নুশরিকা বিরাব্বিনাআহাদা- ।

অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যা সঠিক পথ প্রদর্শন করে। সুতরাং আমরা তার প্রতি ঈমান এনেছি। এখন আর আমরা আমাদের প্রতিপালকের সাথে (ইবাদতে) কখনও কাউকে শরীক করব না।

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানীঃ

১. মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যেমন মানব জাতির কাছে নবী করে পাঠানো হয়েছিল, তেমনি তিনি জিন জাতিরও নবী ছিলেন। কাজেই তিনি তাদের মধ্যেও দীনের প্রচার করেছিলেন। জিনদের মধ্যে তাঁর দাওয়াতী কার্যক্রম শুরু হয়েছিল এভাবে যে, তাঁর নবুওয়াত প্রাপ্তির আগে জিনেরা আসমান পর্যন্ত যেতে পারত, তাতে তাদেরকে কোন বাধা দেওয়া হত না, কিন্তু মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াত লাভের পর তাদের আসমানের কাছে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হল। কোন জিন বা শয়তান সেখানে যেতে চাইলে উল্কাপিণ্ড নিক্ষেপের মাধ্যমে তাড়িয়ে দেওয়া শুরু হল, যেমন সূরা হিজর (১৫ : ১৭) ও সূরা সাফফাত (৩৭ : ১০)-এ গত হয়েছে। সহীহ বুখারীর এক বর্ণনায় আছে, জিনরা যখন পরিস্থিতির এই পরিবর্তন লক্ষ করল, তখন তাদেরকে আসমানে যেতে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে, কী এর রহস্য, তা জানার জন্য তাদের অন্তরে কৌতূহল দেখা দিল। এ উদ্দেশ্যে তাদের একটি দল সারা পৃথিবী পরিভ্রমণে বের হল। এটা সেই সময়কার কথা, যখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফ থেকে মক্কা মুকাররমায় ফিরে আসছিলেন। পথে তিনি নাখলা নামক স্থানে যখন ফজরের নামায পড়ছিলেন ও তাতে কুরআন মাজীদের তেলাওয়াত করছিলেন, ঠিক সেই সময় জিনদের উল্লেখিত দলটি সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। কুরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ তাদের কানে পৌঁছলে তাদের আগ্রহ জন্মাল এবং বিষয়টা কী তা জানার লক্ষে তারা সেখানে থেমে গেল। তারা গভীর মনোযোগের সাথে তাঁর তেলাওয়াত শুনতে লাগল। ভোরের শান্ত-স্নিগ্ধ পরিবেশে খোদ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখে পবিত্র কালামের তিলাওয়াত! স্বাভাবিকভাবেই তারা তাতে চমৎকৃত হল এবং তাদের অন্তরে তা এমনই প্রভাব বিস্তার করল যে, তারা তখনই ইসলাম গ্রহণ করে ফেলল। তারপর তারা নিজ কওমের কাছেও ইসলামের দাওয়াত নিয়ে গেল। তারা তাদের কাছে গিয়ে যা-যা বলেছিল, আল্লাহ তাআলা এখানে তার সার সংক্ষেপ উল্লেখ করেছেন, সূরা আহকাফেও (৪৬ : ৩০) এ ঘটনার দিকে সংক্ষেপে ইশারা করা হয়েছে। এরপর জিনদের কয়েকটি প্রতিনিধি দল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাত করে এবং তিনি তাদেরকে দীনের দাওয়াত দেন ও ইসলামের বিধি-বিধান শিক্ষা দান করেন।
সূরা আল জ্বিন, আয়াত ৫৪৪৯