অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
(সার কথা,) মুসলিম হোক বা ইয়াহুদী, খ্রিস্টান হোক বা সাবী, যে-কেউ আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান আনবে এবং সৎকর্ম করবে, তারা আল্লাহর নিকট নিজ প্রতিদানের উপযুক্ত হবে এবং তাদের কোনও ভয় থাকবে না আর তারা কোনও দুঃখেও ভুগবে না। ৫৩
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানীঃ
৫৩. বনী ইসরাঈলের প্রতি আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহরাজি ও তাদের অবাধ্যতা সম্পর্কিত আলোচনার মাঝখানে এ আয়াতে তাদের একটা মিথ্যা ধারণা রদ করা হয়েছে। তাদের বিশ্বাস ছিল যে, কেবল তাদের বংশই আল্লাহ তাআলার মনোনীত ও প্রিয় বান্দা। তাদের খান্দানের বাইরে অন্য কোনও মানুষ আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভের উপযুক্ত নয়। (আজও ইয়াহুদীরা এরূপ বিশ্বাসই পোষণ করে থাকে। এ কারণেই ইয়াহুদী ধর্ম মূলত একটি বংশভিত্তিক ধর্ম। এ বংশের বাইরে কোনও লোক যদি এ ধর্ম গ্রহণ করতে চায়, তবে প্রথমত তার সে সুযোগই নেই, আর যদি গ্রহণ করেও নেয়, তবে ইয়াহুদী বংশীয় কোনও ব্যক্তি যেসব অধিকার ভোগ করে থাকে, সে তা ভোগ করতে পারে না)। এ আয়াত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ‘সত্য’ কোনও বংশের একচেটিয়া ব্যাপার নয়। মূল বিষয় হচ্ছে ঈমান ও সৎকর্ম। যে ব্যক্তিই আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান আনয়ন ও সৎকর্মের মৌলিক শর্তাবলী পূরণ করবে, সে-ই আল্লাহ তাআলার নিকট পুরস্কারের হকদার হবে, তাতে পূর্বে সে যে ধর্ম ও বংশের সাথেই সম্পৃক্ত থাকুক। ইয়াহুদী ও খ্রিস্টান ছাড়া কিছু সংখ্যক নক্ষত্র পূজক লোকও আরবে বাস করত। তাদেরকে ‘সাবী’ বলা হত। তাই এ আয়াতে তাদেরও নাম নেওয়া হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন বলতে তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনয়নকেও বোঝায়। সুতরাং মুক্তি লাভের জন্য মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ঈমান আনাও জরুরী। পূর্বে ৪০-৪১ নং আয়াতে এ কারণেই সমস্ত বনী ইসরাঈলকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ঈমান আনার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আরও দ্র. কুরআন মাজীদ ৫ : ৬৫-৬৮; ৭ : ১৫৫-১৫৭।