রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৮৮
ভূমিকা অধ্যায়
নেক কাজে অগ্রগামী হওয়া এবং নেক কাজের প্রতি অভিমুখী ব্যক্তিকে উৎসাহ দেওয়া, যাতে সে দোদুল্যমানতা ত্যাগ করে দৃঢ়সংকল্পের সাথে তা শুরু করে দেয়।
সোনা-রুপার প্রতি মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিতৃষ্ণা
হাদীছ নং : ৮৮
হযরত আবূ সিরওয়াআহ উকবা ইবনুল হারিছ রাযি. বলেন, আমি মদীনায় নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের পেছনে আসরের নামায পড়লাম। তিনি সালাম ফেরালেন। তারপর উঠে মানুষের কাঁধ ডিঙিয়ে অতিদ্রুত তাঁর কোনও এক স্ত্রীর হুজরার দিকে গেলেন। লোকজন তাঁর দ্রুত বের হয়ে যাওয়ার কারণে ঘাবড়ে গেল। তারপর তিনি তাদের কাছে বের হয়ে আসলেন। এসে দেখলেন, তাঁর দ্রুত বের হয়ে যাওয়ার কারণে তারা আশ্চর্য হয়ে গেছে। তাই তিনি বললেন, আমাদের কাছে কিছু সোনা রয়ে গিয়েছিল। সে কথা আমার মনে পড়ে যায়। আমার এটা অপসন্দ হল যে, (আল্লাহর দিকে অভিমুখী হওয়া থেকে) তা আমাকে আটকে রাখবে। তাই আমি তা বণ্টন করে দেওয়ার আদেশ করলাম। -বুখারী
বুখারীর অপর এক বর্ণনায় আছে, আমি ঘরে সদাকার কিছু সোনা ফেলে রেখেছিলাম। রাতভর তা নিজের কাছে রেখে দেওয়া আমার অপসন্দ হল।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৮৫১, ১২২১, ১৪৩০, ৬২৭৫; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ১৩৬৫)
হাদীছ নং : ৮৮
হযরত আবূ সিরওয়াআহ উকবা ইবনুল হারিছ রাযি. বলেন, আমি মদীনায় নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের পেছনে আসরের নামায পড়লাম। তিনি সালাম ফেরালেন। তারপর উঠে মানুষের কাঁধ ডিঙিয়ে অতিদ্রুত তাঁর কোনও এক স্ত্রীর হুজরার দিকে গেলেন। লোকজন তাঁর দ্রুত বের হয়ে যাওয়ার কারণে ঘাবড়ে গেল। তারপর তিনি তাদের কাছে বের হয়ে আসলেন। এসে দেখলেন, তাঁর দ্রুত বের হয়ে যাওয়ার কারণে তারা আশ্চর্য হয়ে গেছে। তাই তিনি বললেন, আমাদের কাছে কিছু সোনা রয়ে গিয়েছিল। সে কথা আমার মনে পড়ে যায়। আমার এটা অপসন্দ হল যে, (আল্লাহর দিকে অভিমুখী হওয়া থেকে) তা আমাকে আটকে রাখবে। তাই আমি তা বণ্টন করে দেওয়ার আদেশ করলাম। -বুখারী
বুখারীর অপর এক বর্ণনায় আছে, আমি ঘরে সদাকার কিছু সোনা ফেলে রেখেছিলাম। রাতভর তা নিজের কাছে রেখে দেওয়া আমার অপসন্দ হল।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৮৫১, ১২২১, ১৪৩০, ৬২৭৫; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ১৩৬৫)
مقدمة الامام النووي
10 - باب في المبادرة إلى الخيرات وحث من توجه لخير على الإقبال عليه بالجد من غير تردد
88 - الثَّاني: عن أبي سِروْعَة - بكسر السين المهملة وفتحها - عُقبةَ بن الحارث - رضي الله عنه - قَالَ: صَلَّيتُ وَرَاءَ النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - بالمَدِينَةِ العَصْرَ، فَسَلَّمَ ثُمَّ قَامَ مُسْرِعًا، فَتَخَطَّى رِقَابَ النَّاسِ إِلَى بعْضِ حُجَرِ نِسَائِهِ، فَفَزِعَ النَّاسُ مِنْ سُرْعَتِهِ، فَخَرَجَ عَلَيهمْ، فَرأى أنَّهُمْ قَدْ عَجبُوا مِنْ سُرعَتهِ، قَالَ: «ذَكَرتُ شَيئًا مِنْ تِبرٍ عِندَنَا فَكَرِهتُ أَنْ يَحْبِسَنِي فَأمَرتُ بِقِسْمَتِهِ» (1) رواه البخاري. (2)
وفي رواية لَهُ: «كُنتُ خَلَّفتُ في البَيْتِ تِبرًا مِنَ الصَّدَقةِ فَكَرِهتُ أَنْ أُبَيِّتَهُ». «التِّبْرُ»: قِطَعُ ذَهَبٍ أَوْ فِضَّةٍ.
وفي رواية لَهُ: «كُنتُ خَلَّفتُ في البَيْتِ تِبرًا مِنَ الصَّدَقةِ فَكَرِهتُ أَنْ أُبَيِّتَهُ». «التِّبْرُ»: قِطَعُ ذَهَبٍ أَوْ فِضَّةٍ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যায় সোনা ও রুপা জমা করার প্রতি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কী পরিমাণ অনীহা ছিল। সোনা-রুপার সামান্য একটু পরিমাণও মাত্র একটা রাত তাঁর ঘরে থাকবে, তাও তিনি বরদাশত করতে পারছিলেন না। নামাযের ভেতর যখন তাঁর স্মরণ হল যে, ঘরে সামান্য কিছু সোনা রয়ে গেছে যা বণ্টন করা হয়নি, তখন তিনি অস্থির হয়ে পড়লেন এবং নামায শেষ করে অতিদ্রুত নিজ ঘরে চলে গেলেন আর তা বিলিবণ্টনের ব্যবস্থা করে আসলেন। তিনি যে কী পরিমাণ অস্থির হয়ে উঠেছিলেন, হাদীছটির বর্ণনা দ্বারা তা উপলব্ধি করা যায়। তাঁর দ্রুত চলে যাওয়া দেখে সাহাবায়ে কিরাম ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। কী ব্যাপার! তিনি এতটা অস্থিরভাবে চলে গেলেন কেন? কোথায় কী ঘটেছে? বিশেষ কিছু না ঘটলে তো তাঁর এমন অস্থির হয়ে পড়ার কথা নয়। তারা অস্থির হয়ে নানা জল্পনাকল্পনা করছিলেন। এ অবস্থায় তিনি ফিরে আসলেন এবং অস্থিরতার রহস্য তাদের কাছে প্রকাশ করলেন। সামান্য একটু সোনা ঘরে থেকে যাওয়ায় তিনি যেভাবে অস্থিরতা প্রকাশ করেছিলেন তা সাহাবায়ে কিরামের অন্তরে দাগ কাটে, যে কারণে ঘটনাটি তারা মনে রাখেন এবং পরবর্তীকালে অন্যদের কাছে প্রকাশ করেন।
এই ছিল মহানবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্মোহ চরিত্রের অবস্থা। দুনিয়া ও এর অর্থসম্পদের প্রতি তাঁর মনে বিন্দুমাত্র আকর্ষণ ছিল না। তিনি একে আল্লাহর দিকে ঝোঁক, আখিরাতমুখিতা ও মানুষের আত্মিক বিকাশের পক্ষে অনেক বড় বাধা মনে করতেন। এ হাদীছটিতে তিনি তা প্রকাশও করেছেন। তিনি বলেন, তা আমাকে আটকে রাখবে এটা আমার পসন্দ হল না।
প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁকে তা কিসের থেকে আটকে রাখবে বলে আশঙ্কা বোধ করেছিলেন? “উলামায়ে কিরাম ব্যাখ্যা করেন, আল্লাহর প্রতি অভিমুখিতা ও 'ইবাদত-বন্দেগীতে মনোযোগ দেওয়া থেকে।
কেউ কেউ বলেন, এর দ্বারা কিয়ামতের দিন হিসাবনিকাশের জন্য আটকে পড়ার কথা বোঝানো হয়েছে। যাকাত ও সদাকার মালামাল যদি সময়মত বণ্টন না করে নিজের কাছে আটকে রাখা হয়, তবে কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে তার হিসাব দেওয়ার জন্য আটক থাকতে হবে। এর জন্য কিছুটা হলেও তার জান্নাতে যাওয়া বিলম্বিত হয়ে পড়বে। একজন আল্লাহপ্রেমিকের তো সে বিলম্ব পসন্দ হওয়ার কথা নয়।
আসলে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দ্বারা উম্মতকে শিক্ষা দিতে চেয়েছেন। তাঁর তো ধনের কোনও লোভ ছিল না। সদাকার যে সোনা তাঁর কাছে ছিল, তা তিনি নিজে তো ভোগ করার ছিলেন না। তাঁর নিজের ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং বংশধরদের জন্য সদাকা যাকাত হালাল ছিল না। সুতরাং তিনি তা বণ্টন করে দিতেনই। রাতটুকু তাঁর ঘরে থাকলে এমন কিছু ক্ষতি হত না। সুতরাং ভোরেও তা বণ্টন করতে পারতেন। তা সত্ত্বেও রাতের বেলা বণ্টনের জন্য তিনি এতটা ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন উম্মতকে এ কথা শেখানোর জন্য যে, তারা যেন কিছুতেই ধনসম্পদের মোহে না পড়ে যায়, অর্থসঞ্চয়কে যেন তারা জীবনের লক্ষ্যবস্তু না বানায় এবং যাকাত- সদাকা বণ্টনে বিন্দুমাত্র গড়িমসি না করে।
তাঁর এ শিক্ষা মোতাবেক সাহাবায়ে কিরামও নিজেদের জীবনকে দুনিয়াবিমুখ ও ধনসম্পদের প্রতি নির্মোহরূপে গড়ে তুলেছিলেন। তারা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন তাদের পক্ষে এবং গোটা উম্মতের পক্ষে শ্রেষ্ঠতম আদর্শ। সকলের উচিত সে আদর্শ অনুযায়ী নিজ জীবন গড়ে তোলা। সে উপলব্ধি থেকে তারা কেবল নিজেদের জীবন গড়েই ক্ষান্ত হননি, কিয়ামত পর্যন্ত সমস্ত মানুষও যেন এ আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়, সে লক্ষ্যে তারা পূর্ণ বিশ্বস্ততার সাথে এ শিক্ষা প্রচারও করে গেছেন।
আফসোস! নির্মোহ জীবনের এ শিক্ষা আজ আমরা ভুলে গেছি। আজ সম্পদের মোহ, খ্যাতির লোভ এবং পদ ও ক্ষমতার লালসা আমাদেরকে পুরোপুরি পেয়ে বসেছে। এর পেছনে পড়ে আমরা নিজেদের দীন ও ঈমান নষ্ট করছি। হালাল-হারাম ও জায়েয- নাজায়েযের বিচারবোধ হারিয়ে ফেলেছি। আমরা নির্বিচারে ইহলোক গোছানোর পেছনে পড়ে গেছি। আজ মুসলিম জাতির যে সর্বগ্রাসী অবক্ষয়, এটাই তার প্রকৃত কারণ। এ অবক্ষয় থেকে নিস্তার পেতে হলে আমাদেরকে পার্থিব জীবনের প্রতি নিরাসক্তির সবক পুনরায় গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ তা'আলা আমাদের তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছের প্রধান শিক্ষা হচ্ছে, কোনও নেক কাজের সুযোগ আসলে গড়িমসি না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা করে ফেলা উচিত।
খ. সদাকা ও যাকাতের মাল ঘরে জমা করে রাখা পসন্দনীয় নয়। যথাশীঘ্র তা বণ্টন
করে ফেলাই শরী'আতের শিক্ষা।
গ. কারও কাছে আমানতের মাল থাকলে তা আদায়ে গড়িমসি করা সমীচীন নয়। সময় হওয়ামাত্র আদায় করে ফেলা চাই।
ঘ. এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যায় নামাযের মধ্যে কোনও ভালো কাজের সংকল্প করলে তাতে নামাযের কোনও ক্ষতি হয় না।
ঙ. সদাকা যাকাত আদায়ে বিলম্ব করলে আখিরাতে আটকা পড়ার আশঙ্কা থাকে।
চ. এ হাদীছ দ্বারা আরও জানা যায়, কারও কোনও কাজে অন্যদের মনে প্রশ্ন দেখা দিলে তার উচিত তাদের কাছে সে কাজের ব্যাখ্যা দিয়ে দেওয়া।
এই ছিল মহানবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্মোহ চরিত্রের অবস্থা। দুনিয়া ও এর অর্থসম্পদের প্রতি তাঁর মনে বিন্দুমাত্র আকর্ষণ ছিল না। তিনি একে আল্লাহর দিকে ঝোঁক, আখিরাতমুখিতা ও মানুষের আত্মিক বিকাশের পক্ষে অনেক বড় বাধা মনে করতেন। এ হাদীছটিতে তিনি তা প্রকাশও করেছেন। তিনি বলেন, তা আমাকে আটকে রাখবে এটা আমার পসন্দ হল না।
প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁকে তা কিসের থেকে আটকে রাখবে বলে আশঙ্কা বোধ করেছিলেন? “উলামায়ে কিরাম ব্যাখ্যা করেন, আল্লাহর প্রতি অভিমুখিতা ও 'ইবাদত-বন্দেগীতে মনোযোগ দেওয়া থেকে।
কেউ কেউ বলেন, এর দ্বারা কিয়ামতের দিন হিসাবনিকাশের জন্য আটকে পড়ার কথা বোঝানো হয়েছে। যাকাত ও সদাকার মালামাল যদি সময়মত বণ্টন না করে নিজের কাছে আটকে রাখা হয়, তবে কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে তার হিসাব দেওয়ার জন্য আটক থাকতে হবে। এর জন্য কিছুটা হলেও তার জান্নাতে যাওয়া বিলম্বিত হয়ে পড়বে। একজন আল্লাহপ্রেমিকের তো সে বিলম্ব পসন্দ হওয়ার কথা নয়।
আসলে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দ্বারা উম্মতকে শিক্ষা দিতে চেয়েছেন। তাঁর তো ধনের কোনও লোভ ছিল না। সদাকার যে সোনা তাঁর কাছে ছিল, তা তিনি নিজে তো ভোগ করার ছিলেন না। তাঁর নিজের ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং বংশধরদের জন্য সদাকা যাকাত হালাল ছিল না। সুতরাং তিনি তা বণ্টন করে দিতেনই। রাতটুকু তাঁর ঘরে থাকলে এমন কিছু ক্ষতি হত না। সুতরাং ভোরেও তা বণ্টন করতে পারতেন। তা সত্ত্বেও রাতের বেলা বণ্টনের জন্য তিনি এতটা ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন উম্মতকে এ কথা শেখানোর জন্য যে, তারা যেন কিছুতেই ধনসম্পদের মোহে না পড়ে যায়, অর্থসঞ্চয়কে যেন তারা জীবনের লক্ষ্যবস্তু না বানায় এবং যাকাত- সদাকা বণ্টনে বিন্দুমাত্র গড়িমসি না করে।
তাঁর এ শিক্ষা মোতাবেক সাহাবায়ে কিরামও নিজেদের জীবনকে দুনিয়াবিমুখ ও ধনসম্পদের প্রতি নির্মোহরূপে গড়ে তুলেছিলেন। তারা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন তাদের পক্ষে এবং গোটা উম্মতের পক্ষে শ্রেষ্ঠতম আদর্শ। সকলের উচিত সে আদর্শ অনুযায়ী নিজ জীবন গড়ে তোলা। সে উপলব্ধি থেকে তারা কেবল নিজেদের জীবন গড়েই ক্ষান্ত হননি, কিয়ামত পর্যন্ত সমস্ত মানুষও যেন এ আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়, সে লক্ষ্যে তারা পূর্ণ বিশ্বস্ততার সাথে এ শিক্ষা প্রচারও করে গেছেন।
আফসোস! নির্মোহ জীবনের এ শিক্ষা আজ আমরা ভুলে গেছি। আজ সম্পদের মোহ, খ্যাতির লোভ এবং পদ ও ক্ষমতার লালসা আমাদেরকে পুরোপুরি পেয়ে বসেছে। এর পেছনে পড়ে আমরা নিজেদের দীন ও ঈমান নষ্ট করছি। হালাল-হারাম ও জায়েয- নাজায়েযের বিচারবোধ হারিয়ে ফেলেছি। আমরা নির্বিচারে ইহলোক গোছানোর পেছনে পড়ে গেছি। আজ মুসলিম জাতির যে সর্বগ্রাসী অবক্ষয়, এটাই তার প্রকৃত কারণ। এ অবক্ষয় থেকে নিস্তার পেতে হলে আমাদেরকে পার্থিব জীবনের প্রতি নিরাসক্তির সবক পুনরায় গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ তা'আলা আমাদের তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছের প্রধান শিক্ষা হচ্ছে, কোনও নেক কাজের সুযোগ আসলে গড়িমসি না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা করে ফেলা উচিত।
খ. সদাকা ও যাকাতের মাল ঘরে জমা করে রাখা পসন্দনীয় নয়। যথাশীঘ্র তা বণ্টন
করে ফেলাই শরী'আতের শিক্ষা।
গ. কারও কাছে আমানতের মাল থাকলে তা আদায়ে গড়িমসি করা সমীচীন নয়। সময় হওয়ামাত্র আদায় করে ফেলা চাই।
ঘ. এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যায় নামাযের মধ্যে কোনও ভালো কাজের সংকল্প করলে তাতে নামাযের কোনও ক্ষতি হয় না।
ঙ. সদাকা যাকাত আদায়ে বিলম্ব করলে আখিরাতে আটকা পড়ার আশঙ্কা থাকে।
চ. এ হাদীছ দ্বারা আরও জানা যায়, কারও কোনও কাজে অন্যদের মনে প্রশ্ন দেখা দিলে তার উচিত তাদের কাছে সে কাজের ব্যাখ্যা দিয়ে দেওয়া।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)