ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৯. দাসমুক্তির অধ্যায়

হাদীস নং: ১৭৩৭
ক্রীতদাস-দাসী মুক্ত করার ফযীলত
(১৭৩৭) আবু হুরাইরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে কোনো মানুষ যদি একজন মুসলিম দাসকে মুক্ত করে তবে আল্লাহ আযাদকৃত ব্যক্তির প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে আযাদকারী ব্যক্তির একটি করে অঙ্গ জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন।
عن أبي هريرة رضي الله عنه مرفوعا: أيما رجل أعتق امرأ مسلما استنقذ الله بكل عضو منه عضوا منه من النار

হাদীসের ব্যাখ্যা:

প্রাচীনকাল থেকে সকল সমাজে দাসপ্রথা প্রচলিত ছিল। পূর্ববর্তী ধর্মে তা নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা করা হয় নি। ইসলামে দাসপ্রথাকে সম্পূর্ণ রহিত করা হয় নি, কিন্তু বিভিন্নভাবে দাসমুক্তির নির্দেশ বা উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। তৎকালীন সমাজের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের ভিত্তি ছিল দাসপ্রথার উপরে। সকল ব্যবসা, বাণিজ্য, চাষাবাদ ইত্যাদি দাসপ্রথার উপর নির্ভরশীল ছিল। মদের মতো দাসপ্রথাকে একবারে হারাম করে দিলে একদিকে সমাজের অগণিত সচ্ছল মানুষ অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে যেতেন। অপরদিকে হাজার হাজার বেকার দাসদাসী একবারে সমাজে অভিভাবকহীন কর্মহীন হয়ে সমাজের বোঝা সৃষ্টি করত এজন্য ক্রমান্বয়ে সমাজ থেকে দাসপ্রথা উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হয়। একমাত্র যুদ্ধবন্দি ছাড়া কাউকে দাস করা নিষিদ্ধ করা হয়। অপরদিকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে এমন দাসদেরকে অর্থের বিনিময়ে নিজেকে মুক্ত করার সুযোগ প্রদানের এবং তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়া হয় (সূরা নূর, ৩৩ আয়াত)। বিভিন্ন অপরাধ ও ভুলের জন্য দাসমুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। দাসীদেরকে স্ত্রীরূপে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয় এবং মালিকের সন্তানধারণকারিণী দাসী মুক্ত হয়ে যাবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। যাকাতের টাকা দাসমুক্তির খাতে ব্যয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া সর্বাবস্থায় দাসমুক্ত করাকে শ্রেষ্ঠতম ইবাদত ও সাওয়াবের কাজ বলে উৎসাহ দেওয়া হয়। এই অধ্যায়ে গ্রন্থকার এ বিষয়ক কিছু হাদীস আলোচনা করেছেন। (অনুবাদক)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
ফিকহুস সুনান - হাদীস নং ১৭৩৭ | মুসলিম বাংলা