মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৮১৬
প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা
৫৮১৬। আসওয়াদ (রহঃ) বলেন, আমি হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করিলাম, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহের অভ্যন্তরে কি কাজ করিতেন? তিনি বলিলেন, তিনি পারিবারিক কাজ করিতেন। অর্থাৎ, পরিবারের কাজ আঞ্জাম দিতেন। আর যখন নামাযের সময় হইত তখন নামাযের দিকে বাহির হইয়া যাইতেন। বুখারী
وَعَنِ الْأَسْوَدِ قَالَ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ: مَا كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُ فِي بَيْتِهِ؟ قَالَتْ: كَانَ يَكُونُ فِي مَهْنَةِ أَهْلِهِ - تَعْنِي خدمَة أَهله - فَإِذا حضرت الصَّلَاة خرج إِلَى الصَّلَاة. رَوَاهُ البُخَارِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আসওয়াদ ইবন ইয়াযীদ রহ. একজন শীর্ষস্থানীয় তাবি'ঈ। একজন বড় ইবাদতগুযার, মুহাদ্দিছ, ফকীহ ও পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গার্হস্থ্য জীবন সম্পর্কে জানার আগ্রহ হলে তিনি উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর নিকট চলে আসেন এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে কী কাজ করতেন? এর উত্তরে আম্মাজান বললেন-
كَانَ يَكُونُ فِي مِهْنَةِ أَهْلِهِ (তিনি পরিবারবর্গের সেবায় থাকতেন)। অর্থাৎ গার্হস্থ্য কাজকর্মে স্ত্রীদের সহযোগিতা করতেন। কেমন কেমন কাজ তিনি করতেন? বিভিন্ন বর্ণনা দ্বারা জানা যায়, তিনি ছেঁড়া কাপড় সেলাই করতেন, রিপু করতেন, বকরীর দুধ দোয়াতেন, জুতা ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করতেন, ঘর ঝাড়ু দিতেন, উট বাঁধতেন, উটকে ঘাস খাওয়াতেন, খাদেমের সঙ্গে আটার খামিরা বানাতেন, বাজার থেকে মালামাল বয়ে আনতেন এবং ব্যক্তিগত কাজকর্ম করতেন। অর্থাৎ তাঁর জীবনে অলসতা ছিল না। বাইরের অপরিসীম ব্যস্ততা তো ছিলই, এমনকি ঘরে যতক্ষণ থাকতেন, ততক্ষণও কাজে ব্যস্ত থাকতেন।
বলাই বাহুল্য, এভাবে গার্হস্থ্য কাজে সহযোগিতা করাটা ছিল তাঁর উচ্চতর বিনয়ের নিদর্শন। অহংকারী লোকেরা এসব করতে পারে না। তারা এসব কাজকে নিজের উচ্চাসনের পক্ষে বেমানান মনে করে। ভাবখানা এমন যে, এসব তো ঘরের মেয়েদের কাজ কিংবা এসব তো দাস-দাসী করবে। এসব ছোট ছোট কাজ করা কি আমার মানায়? কিন্তু নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঠিকই মানাত। তিনি এসব কাজকে নিজের জন্য অমর্যাদাকর মনে করতেন না। বরং এগুলো করাকে দায়িত্ব মনে করতেন। স্ত্রীদের কাজে সহযোগিতা করাকে কর্তব্য জ্ঞান করতেন। বস্তুত দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করাতেই মহত্ত্ব। তিনি ছিলেন মহানবী। ঘরে-বাইরে তিনি যা-কিছুই করেছেন, তার প্রত্যেকটিই করণীয় কাজ এবং খুশিমনে তা করার ভেতরই জীবনের পরিপূর্ণতা।
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. বলেন- فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ خَرَجَ إِلَى الصَّلَاةِ (যখন নামাযের সময় হতো, নামাযে বের হয়ে যেতেন)। অর্থাৎ তাঁর যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, নামাযের সময় হয়ে গেলে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে মসজিদে চলে যেতেন এবং নামায আদায় করতেন। নামায ছিল তাঁর চোখের শীতলতা। নামায সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। তিনি সর্বাপেক্ষা বেশি গুরুত্বের সঙ্গে এ আমল সম্পন্ন করতেন। এমন নয় যে, ব্যক্তিগত কাজের জন্য নামায পিছিয়ে দিতেন। বরং নামায যথাসময়ে আদায় করতেন এবং সেজন্য ব্যক্তিগত কাজ স্থগিত রাখতেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গার্হস্থ্য কাজে অংশগ্রহণ বিনয়ের পরিচায়ক।
খ. প্রত্যেক পুরুষের গার্হস্থ্য কাজে স্ত্রীদের সহযোগিতা করা উচিত।
গ. কাজে যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, নামাযের সময় হয়ে গেলে সব স্থগিত রেখে আগে নামায আদায় করে নেওয়া উচিত।
كَانَ يَكُونُ فِي مِهْنَةِ أَهْلِهِ (তিনি পরিবারবর্গের সেবায় থাকতেন)। অর্থাৎ গার্হস্থ্য কাজকর্মে স্ত্রীদের সহযোগিতা করতেন। কেমন কেমন কাজ তিনি করতেন? বিভিন্ন বর্ণনা দ্বারা জানা যায়, তিনি ছেঁড়া কাপড় সেলাই করতেন, রিপু করতেন, বকরীর দুধ দোয়াতেন, জুতা ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করতেন, ঘর ঝাড়ু দিতেন, উট বাঁধতেন, উটকে ঘাস খাওয়াতেন, খাদেমের সঙ্গে আটার খামিরা বানাতেন, বাজার থেকে মালামাল বয়ে আনতেন এবং ব্যক্তিগত কাজকর্ম করতেন। অর্থাৎ তাঁর জীবনে অলসতা ছিল না। বাইরের অপরিসীম ব্যস্ততা তো ছিলই, এমনকি ঘরে যতক্ষণ থাকতেন, ততক্ষণও কাজে ব্যস্ত থাকতেন।
বলাই বাহুল্য, এভাবে গার্হস্থ্য কাজে সহযোগিতা করাটা ছিল তাঁর উচ্চতর বিনয়ের নিদর্শন। অহংকারী লোকেরা এসব করতে পারে না। তারা এসব কাজকে নিজের উচ্চাসনের পক্ষে বেমানান মনে করে। ভাবখানা এমন যে, এসব তো ঘরের মেয়েদের কাজ কিংবা এসব তো দাস-দাসী করবে। এসব ছোট ছোট কাজ করা কি আমার মানায়? কিন্তু নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঠিকই মানাত। তিনি এসব কাজকে নিজের জন্য অমর্যাদাকর মনে করতেন না। বরং এগুলো করাকে দায়িত্ব মনে করতেন। স্ত্রীদের কাজে সহযোগিতা করাকে কর্তব্য জ্ঞান করতেন। বস্তুত দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করাতেই মহত্ত্ব। তিনি ছিলেন মহানবী। ঘরে-বাইরে তিনি যা-কিছুই করেছেন, তার প্রত্যেকটিই করণীয় কাজ এবং খুশিমনে তা করার ভেতরই জীবনের পরিপূর্ণতা।
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. বলেন- فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ خَرَجَ إِلَى الصَّلَاةِ (যখন নামাযের সময় হতো, নামাযে বের হয়ে যেতেন)। অর্থাৎ তাঁর যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, নামাযের সময় হয়ে গেলে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে মসজিদে চলে যেতেন এবং নামায আদায় করতেন। নামায ছিল তাঁর চোখের শীতলতা। নামায সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। তিনি সর্বাপেক্ষা বেশি গুরুত্বের সঙ্গে এ আমল সম্পন্ন করতেন। এমন নয় যে, ব্যক্তিগত কাজের জন্য নামায পিছিয়ে দিতেন। বরং নামায যথাসময়ে আদায় করতেন এবং সেজন্য ব্যক্তিগত কাজ স্থগিত রাখতেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গার্হস্থ্য কাজে অংশগ্রহণ বিনয়ের পরিচায়ক।
খ. প্রত্যেক পুরুষের গার্হস্থ্য কাজে স্ত্রীদের সহযোগিতা করা উচিত।
গ. কাজে যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, নামাযের সময় হয়ে গেলে সব স্থগিত রেখে আগে নামায আদায় করে নেওয়া উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
